অন্য বিভাগীয় সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সম্মানে মঞ্চে চেয়ার ফাঁকা রাখা হলেও কুমিল্লায় তার বড় ছেলে ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্যও রাখা হয়েছে চেয়ার।
এর আগে দলটির ৭টি বিভাগীয় গণসমাবেশের মঞ্চে খালেদা জিয়ার সম্মানে চেয়ার ফাঁকা রাখা হয়েছিল।
দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগে কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে রয়েছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
অন্যদিকে বিদেশে অর্থ পাচার, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কটূক্তির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন।
২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে গ্রেপ্তারের পরের বছর চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে গিয়ে আর ফেরেননি বিএনপির এই নেতা।
কুমিল্লার টাউন হল মাঠে চলছে বিএনপির বিভাগীয় এই গণসমাবেশ। বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় নেতারা আসতে শুরু করেন মঞ্চে।
সকাল ১০টায় সমাবেশস্থলে দেখা যায়, মিছিলে মিছিলে পুরো মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে।
কুমিল্লা মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপিসহ চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নেতা-কর্মীরা যোগ দিচ্ছেন।
এর আগে গতকাল রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশস্থল ঘুরে গেছেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজি আমিনুর রশীদ ইয়াছিন।
নিত্যপণ্যের মূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ ও দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ বিভিন্ন দাবিতে গত ৮ অক্টোবর থেকে প্রতি শনিবার দেশজুড়ে বিভাগীয় সমাবেশ করছে বিএনপি। এ পর্যন্ত ৭টি সমাবেশ সম্পন্ন হয়েছে। অষ্টম সমাবেশটি হচ্ছে কুমিল্লায়।
আরও পড়ুন:ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের আমন্ত্রণেই আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল তার বাসায় মধ্যাহ্নভোজে গিয়েছিল জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, আর বিএনপি যায় পদলেহনে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের আমন্ত্রণে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল তার বাসায় গিয়েছে। বিএনপির মতো পদলেহন করতে গিয়ে রাত-বিরাতে বসে থাকেনি।
‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র। গত ৫১ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে তাদের অবদান আছে। নিরাপত্তা থেকে জঙ্গি দমনে তারা আমাদের সহযোগিতা করছে। বহুমাত্রিক সহযোগিতা তাদের সঙ্গে আছে। সেই দেশের রাষ্ট্রদূত যখন আমন্ত্রণ জানায়, সেখানে তো যেতেই হয়।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি ২০১৪ সালের নির্বাচন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করেছে। ২০১৪ সালে তাদের আন্দোলনের নমুনা আমরা দেখেছি। তাদের সেই কাজ আবার বাংলাদেশের মানুষ করতে দেবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারও কখনো ফিরে আসবে না।’
সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘দেশে ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকট চলছে ’বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশে কোনো রাজনৈতিক সংকট নেই। বিএনপির মধ্যে ভয়ঙ্কর সংকট চলছে। তাদের চেয়ারপারসন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পলাতক।
‘তারপর তাদের মধ্যে অনেকে আছেন, যারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নেতৃত্ব মানতে নারাজ। আবার অনেকেই আছেন, যারা মির্জা ফখরুলের নেতৃত্ব মানতে নারাজ।’
এ সময় প্রধান তথ্য কর্মকর্তা শাহেনুর মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের মতো এবারও ভোটকে সামনে রেখে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে অভিযোগ করে বিনা পরোয়ানায় সেটি না করতে পুলিশকে অনুরোধ করেছে বিএনপি।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের সঙ্গে বৃহস্পতিবার দুপুরে সাক্ষাৎ করে এ অনুরোধ করে বিএনপির পাঁচ সদস্যদের প্রতিনিধি দল।
ডিএমপি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রশাসন আবারও গ্রেপ্তার শুরু করেছে। আপনার দেখেছেন, বিনা ওয়ারেন্টে যুবদলের সাধারণ সম্পাদককে গ্রেপ্তার করেছে। বনানীর একটি ক্লাবে সামাজিক অনুষ্ঠানে থেকে ৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এমনিভাবে অনেক নেতা-কর্মী তারা গ্রেপ্তার করেছে। আমরা তাদেরকে অনুরোধ করেছি রমজানে বিনা ওয়ারেন্টে নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার না করতে।’
আমানউল্লাহ বলেন, ‘যেখানে কথা বলছি, সবাই বলছে ওপরের নির্দেশে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আমরা বলেছি, এই গ্রেপ্তার বন্ধ করতে হবে। যদি ওয়ারেন্ট থাকে দেখিয়ে গ্রেপ্তার করবেন।
‘যাদের নামে ওয়ারেন্ট নেই, বাসায় ঘুমাচ্ছে তাদেরকে রাত ৩টায় তুলে নিয়ে আসবেন, এটা হবে না।’
এর আগে বেলা ১১টার দিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কার্যালয়ে যায় বিএনপির পাঁচ সদস্যের দল। সেখানে ডিএমপির কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন বিএনপি নেতারা।
ওই সময় আমান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু এবং দলটির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি।
আরও পড়ুন:দেশে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকায় উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২৩’ পাওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখন সরকারে আসে তখনই কিন্তু ধীরে ধীরে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটতে শুরু করে। কারণ ক্ষমতাকে আমরা বাংলাদেশের মানুষের সেবা করার সুযোগ হিসেবেই দেখি।
‘অনেক চড়াই-উতড়াই, অনেক ঘটনা ঘটে গেছে। ২০০৮-এ নির্বাচিত হয়ে ২০২৩; এই একটানা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই কিন্তু আজকের উন্নয়নটা সম্ভব হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বলেছিলেন, মহান অর্জনের জন্য মহৎ ত্যাগ প্রয়োজন। যে কোনো অর্জনের জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করতে হয়, সেই ত্যাগ স্বীকার করতে পেরেছি বলেই আমাদের অর্জনগুলো একে একে আমরা জনগণের কল্যাণে আনতে পেরেছি।’
৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পরের সময়ের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বারবার গণতন্ত্র থমকে দাঁড়িয়েছে, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকতে পারেনি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অব্যাহত থাকতে পারেনি; কাজেই বাংলাদেশও সেভাবে এগোতে পারেনি। ক্ষমতাসীন যারা ছিল তাদের বাংলাদেশ নিয়ে কী চিন্তা-ভাবনা ছিল সেটা নিয়েও প্রশ্ন আছে।’
বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত ছিল কিন্তু করোনা ভাইরাসের অতিমারি সে অগ্রযাত্রা কিছুটা স্থিমিত করে দেয়। এরপর আসলো রাশিয়া ক্রেন যুদ্ধ, উন্নত দেশগুলোও এখন হিমশিম খাচ্ছে। আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে।’
বিগত বছরগুলোতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে দারিদ্র্য কমে আসার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দারিদ্র্যের হার যেখানে ৪০ ভাগের ওপরে ছিল সেখানে আমরা কমিয়ে এনেছি ২০ ভাগে। আরও একটি সুখবর দিতে পারব, আমাদের দারিদ্র্যের হার আরও হ্রাস পেয়েছে। যেটা সঠিকভাবে এখন তথ্য নেয়া হচ্ছে।
‘সেই সঙ্গে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদাকে ধরে রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা সরকার গ্রহণ করেছে।’
আরও পড়ুন:
ফেসবুকসহ সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পরিচালনাকারী আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশে আইনানুগভাবে নিবন্ধনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনার সুপারিশ করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদীয় কমিটির ১২তম বৈঠকে এমন সুপারিশের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
বৈঠকে কমিটির সদস্য এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সদস্য বেগম সিমিন হোসেন (রিমি), মুহম্মদ শফিকুর রহমান, মো. মুরাদ হাসান ও খ. মমতা হেনা লাভলী অংশ নেন।
কমিটির ১১তম বৈঠকের কার্যবিবরণী নিশ্চিতকরণ ও গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা করা হয়।
বৈঠকে জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনে প্রদর্শিত অডিও-ভিডিও প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সংগ্রহ করে সারাদেশে প্রচারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
অনলাইন নিউজ পোর্টাল, অনলাইন/আইপি টেলিভিশন এবং অনলাইন রেডিও নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সচেতনভাবে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করে কমিটি।
‘The Censorship of Films Act, 1963 (Amended 2006)’ যুগোপযোগী করার জন্য ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন আইন’ দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রণয়নে কার্যক্রম গ্রহণেরও সুপারিশ করা হয় বৈঠকে।
এছাড়া বাংলাদেশ বেতারের অর্গানোগ্রাম (পদ সৃজন) ফাইলটি দ্রুত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা মহাপরিচালকসহ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্থার প্রধানগণ, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:ছাত্রলীগের যারা খারাপ ও কুকর্মে জড়িত তাদের সংগঠন থেকে বের করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন অভিভাবক সংগঠন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘যারা খারাপ তাদের সংশোধন না করে বের করে দাও। যে কমিটি চাঁদাবাজি করে ওই কমিটির কোনো প্রয়োজন নেই।’
বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ নির্দেশ দেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ছাত্রলীগ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ছাত্রলীগের নামে কেউ অপকর্ম করলে তাকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু কয়েকদিন পর তা তুলেও নেয়া হয়। এদের শাস্তি হতে হবে স্থায়ী। প্রয়োজনে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। জেলে দিতে হবে।
‘অনেক দিনের পচা গলিত জিনিস এখনও রয়ে গেছে। এই অংশকে বাদ দিতে হবে। তাতে ছাত্রলীগের কোনো ক্ষতি হবে না। ভালো ছেলেমেয়ে থাকলে আরও অনেক ভালো ছেলেমেয়ে ছাত্রলীগে আকৃষ্ট হবে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কোথাও কোথাও অনেকে লাগামছাড়া হয়ে গেছে। এদের লাগাম টেনে ধরতে হবে। কোনো ছাড় দেয়া যাবে না। অপকর্মকারী স্মার্ট কর্মীর দরকার নেই। ভালো কাজের স্মার্টনেস দরকার। আবেগের নয় চেতনার সৈনিক হতে হবে।’
ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী অনেক আশা করে অনেক যাচাই-বাছাই করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণ ছাত্রলীগের কমিটি দিয়েছেন। তোমরা তাকে হতাশ করো না। আমাদের আশার প্রদীপ যেন নিভে না যায়।’
পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়ে কাদের বলেন, ‘আমি আশা করি অনতিবিলম্বে কমিটি ঘোষণা করা হবে। তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে খারাপ ছেলেমেয়েদের আমাদের দরকার নেই। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, মাদক আর সিট বাণিজ্যের মানসিকতা যাদের আছে তারা যেই হোক পরিহার করতে হবে। অপকর্মে জড়িত কাউকে নেতা বানানো যাবে না।’
কাদের আরও বলেন, তোমাদের এই আয়োজন বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে হলে ভালো হয়। একবার স্টেজ ভাঙছে দেখে সবাই ভয় পেয়ে গেছে। ভয় পাওয়ার দরকার নেই। স্টেজ ভেঙে আমার দুই পা রক্তাক্ত। তখনও কিন্তু আমি দাঁড়িয়ে পুনরায় বক্তব্য দিয়েছি। কাউকে বুঝতে দেয়নি যে আমার কোনো ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু ক্ষতি হয়েছে অনেক বেশি। পাঁচবার আমার ড্রেসিং করতে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধানমণ্ডি পার্টি অফিসে কেন ঘুরে বেড়াতে হবে? ছাত্রলীগের অফিস কি সভাপতির কার্যালয়ে? ছাত্রলীগের জায়গা ২৩ নম্বর আর মধুর ক্যান্টিনে।’
ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য তারানা হালিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শাওন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সভা সঞ্চালনা করেন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান।
আরও পড়ুন:জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলে অতিথি এক শিক্ষার্থীকে চড় মেরে কান ফাটিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হাসান মাহমুদ ফরিদ এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম সজিব আহমেদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত ফরিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বহিরাগতদের সঙ্গে মীর মশাররফ হোসেন হলের শিক্ষার্থীদের বাগবিতণ্ডা হয়। বহিরাগতদের একজন ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনিন্দ্য দিব্য। তাকে মীর মশাররফ হোসেন হলে নিয়ে যান হলের শিক্ষার্থীরা। অনিন্দ্য দিব্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি এবং মীর মশাররফ হোসেন হল ছাত্রলীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের পূর্বপরিচিত।
বাগবিতণ্ডার ওই ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থীদের হলের গেস্টরুমে ডেকে নেন ছাত্রলীগ নেতারা। তারা দিব্য ও অন্যদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে সজীবের কানে এলোপাথাড়ি থাপ্পড় মারতে থাকেন হাসান মাহমুদ ফরিদ। এতে সজীবের কান দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে।
আহত সজীবকে তার বন্ধুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল ফারুক ইমরান বাধা দেন। পরে সজীবের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নেয়া হয়। পরে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মীর মশাররফ হোসেন হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘অতিথি কক্ষে আমাদের পাঁচজনকে সামনে দাঁড় করিয়ে কানে থাপ্পড় মারতে থাকেন ভাইয়েরা। সজিবের কানে একটু আগে থেকেই সমস্যা ছিল। থাপ্পড়ের কারণে তার কান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল।’
অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ আল ফারুক ইমরান বলেন, ‘আমরা হলে প্রতি সপ্তাহে গেস্টরুম করি। সাংগঠনিক বিভিন্ন কাজকর্ম করার জন্য সেখানে দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়। গতকালও (মঙ্গলবার) তেমনটিই হয়েছিল।’
তবে অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘তাকে তো মারা হয়নি। তার কানে আগে থেকেই একটু সমস্যা ছিল। ডাক্তার তাকে পানি লাগাতে নিষেধ করেছে। গেস্টরুমে একটু চিৎকার হয়েছিল, তাতেই তার কানে সমস্যা দেখা দেয়। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য আমরাই দায়িত্ব নিয়ে মেডিক্যালে পাঠিয়েছিলাম। সে আমাদের ছোট ভাই। তাকে কেন আটকে রাখব?’
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা হাসান মাহমুদ ফরিদ বলেন, ‘কাল (মঙ্গলবার) রাতে গেস্টরুম হয়েছিল। সেখানে স্বাভাবিক কথাবার্তা হয়েছে। কাউকে কানে থাপ্পড় দেয়া বা মারা হয়নি। ওই ছেলে গেস্টরুমে অসুস্থ বোধ করছিল। তাই তাকে আমরা তার বন্ধুদের সঙ্গে হাসপাতালে পাঠিয়েছি।’
অতিথি কক্ষে এ ঘটনার সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও শাহ পরান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, উপ-ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক আল রাজি সরকার প্রমুখ।
তারা সবাই মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘অতিথি কক্ষে নির্যাতন কিংবা মারধর হয়ে থাকলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ বিষয়ে মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক এম ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি সম্পর্কে জানতে পেরেছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। স্বপ্রণোদিত হয়ে দুই পক্ষকে ডেকে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করব।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের আমন্ত্রণে তার বাসভবনে মধ্যাহ্ন ভোজে অংশ নিয়েছে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল।
বুধবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে নেতারা এতে অংশ নেন।
আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ফারুক খান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মি আহমেদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য প্রফেসর মোহাম্মদ এ আরাফাত।
এ সময় দুই পক্ষের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াদি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে আলোচনায় ছিলেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কাউন্সিলর স্কট ব্রেন্ডন, রাজনৈতিক শাখা প্রধান আর্তুরো হাইনস, যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডির সুশাসন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ে টিম লিডার মেধাউই গিরি এবং যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা মেথিউ বেহ।
মন্তব্য