দিনটি ছিল এ বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি। বাবার মৃত্যু-পরবর্তী আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাড়ি ফিরছিলেন ৫ ভাই। ফেরার পথে কক্সবাজারের চকরিয়ায় পিকআপের চাপায় পিষ্ট হয়ে মারা যান তারা সবাই।
এ খবর নাড়া দেয় সারা দেশের মানুষকে। সড়ক দুর্ঘটনা শুধু একটি পারিবারিক ট্র্যাজেডিতেই শেষ হয় না। দেখা গেছে, সড়ক দুর্ঘটনার কারণে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপির) প্রায় ৫ দশমিক ১ শতাংশ ক্ষতি হয়। অর্থাৎ উৎপাদনশীলতা কমে যায়।
অনিরাপদ সড়ক অবকাঠামোকে দুর্ঘটনার প্রধান কারণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ছাড়া সড়কে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় বিশৃঙ্খলা থেকে। বিজ্ঞানভিত্তিক সড়ক ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি ছোট গাড়ির রেজিস্ট্রেশনে কম উৎসাহ দেখিয়ে বড় গাড়ির বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে বলে তারা মনে করেন।
রাস্তা দখল করে বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ, রাস্তার যেখানে-সেখানে আবর্জনার স্তূপ, গাড়ি পার্কিং, বেপরোয়া গাড়ি চালানো, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অপরিপক্ব চালক, আইন না মেনে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপারসহ বিভিন্ন কারণে ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা।
এমন বাস্তবতায় ২০ নভেম্বর জাতিসংঘ ঘোষণা অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণ করছে সারা বিশ্ব। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর ওপর জোর দিয়েছে জাতিসংঘ।
ভয় জাগানিয়া পরিসংখ্যান
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, ২০১৯ সালে দেশের সড়কে ৪ হাজার ৬৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় ৫ হাজার ২১১ জন। ওই বছর শুধু মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাই হয়েছে ১ হাজার ১৮৯টি, যাতে প্রাণ হারান ৯৪৫ জন।
পরের বছর দুর্ঘটনা বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৭৩৫টি। দুর্ঘটনায় মারা যান ৫ হাজার ৪৩১ জন। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা হয়েছে ১ হাজার ৩৮১টি, যাতে নিহত হন ১ হাজার ৪৬৩ জন।
২০২১ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৩৭১টি। এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ৬ হাজার ২৮৪ জন। ওই বছর সড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটে ২ হাজার ৭৮টি, মৃত্যু বেড়ে হয় ২ হাজার ২১৪ জনের।
চলতি ২০২২ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত ১০ মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪ হাজার ৬৫৫টি। এ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫ হাজার ৫৪০ জন। এই ১০ মাসে ২ হাজার ৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২ হাজার ৯৭ জন নিহত হয়েছেন।
এই সংগঠনের তথ্য বলছে, মোটরসাইকেল ছাড়া অন্য কোনো একক বাহনে এত যাত্রী মারা যাননি এবং মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ক্রমাগত বাড়ছে।
মোটরসাইকেলের ব্যবহার বাড়ায় দুর্ঘটনা বাড়ছে
বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শুধু স্বল্প দূরত্ব না, দূরপাল্লার যাত্রায়ও মোটরসাইকেল ব্যবহৃত হচ্ছে। আর এ কারণেই বাইক দুর্ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে। এটা কখনোই কাম্য না। ঢাকা শহরে মোটরসাইকেল চালানো আর মহাসড়কে চালানোর মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে।’
জাপানেও একসময় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল বলে জানান এ পরিবহন বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, ‘জাপান গত ১০ বছরে সড়ক থেকে প্রায় ২৫ লাখ মোটরসাইকেল সরিয়ে ফেলেছে বিভিন্ন পলিসির মাধ্যমে। সংখ্যা কমানোর পর তাদের দুর্ঘটনা ৫০ শতাংশ কমে গেছে। এখান থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়ার অনেক কিছু আছে।’
তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ন্ত্রণের যে পলিসি থাকার কথা, সেখানেও আমরা মনোযোগী হচ্ছি না, রাজস্ব আয়ের কথা বলে অনায়াসে অনিয়ন্ত্রিতভাবে রেজিস্ট্রেশন দিয়ে যাচ্ছি। ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে, যত বাইক সড়কে চলে, তার বেশির ভাগেরই নিবন্ধন নেই।’
এ বিষয়ে সড়ক পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. শামসুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দেয়ার ক্ষেত্রেও আমরা বিজ্ঞানটাকে মানি না। যে আসতেছে তাকেই দিয়ে দিচ্ছি। প্রায় ৩৭ লাখ মোটরসাইকেল হয়ে গেল। সড়ক দুর্ঘটনার প্রায় ৫০ শতাংশ তরুণ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা যাচ্ছে। এত মোটর বাইক দুর্ঘটনার পরও যদি আপনারা তাদের রেজিস্ট্রেশন দিয়েই যান, রেজিস্ট্রেশন ফি অর্ধেক করে দেন, তাহলে বুঝতে হবে এখানে পাগলামি ছাড়া আর কিছুই নেই।’
তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনা কমানোর কথা যাদের, তারাই দুর্ঘটনার আয়োজন করছে। যারা গাড়ি রেজিস্ট্রেশন দেয়, তাদের জানার কথা চার চাকার গাড়ির তুলনায় দুই চাকার যান ৩০ গুণ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। অন্যান্য দেশে মোটরসাইকেলটাকে কিন্তু রেজিস্ট্রেশন ফি বাড়িয়ে নিরুৎসাহিত করা হয় এবং চমৎকার গণপরিবহন ব্যবস্থা করা হয়। এ রকম ছোট ছোট সমস্যাগুলোকে রেখে বিনিয়োগ করে সমাধান করা যাবে না।’
শৃঙ্খলার অভাবে সড়কে নিরাপত্তা বিঘ্নিত
অধ্যাপক ড. শামসুল হক মনে করেন, সড়কে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় বিশৃঙ্খলা থেকে। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘রাস্তায় দিন দিন বিশৃঙ্খলা বাড়ছে। এক সড়কে দ্রুতগতি ও ধীরগতির যানবাহন চলে। রাস্তার ওপরে হাট-বাজার বসে। অর্থাৎ ভূমি ব্যবহার সড়কের সঙ্গে যে শৃঙ্খলায় হওয়ার কথা ছিল, সেই শৃঙ্খলাটা নাই। পুরা পৃথিবী বলে, দ্রুতগতির কারণে দুর্ঘটনা ঘটে না। গতির পার্থক্যের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। গতির পার্থক্য দিন দিন বাড়ছে। ছোট গাড়ির সংখ্যা, স্থানীয় গাড়ির সংখ্যা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। পথচারীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘অসংগতিপূর্ণ ব্যবহার বেড়ে যাচ্ছে রাস্তার। রাস্তার পাশে ভূমি ব্যবহার অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়ছে। প্রত্যেকটাই বিশৃঙ্খলার কারণ। এসব বিশৃঙ্খলার কারণেই দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। আমাদের হাইওয়েতে যে দুর্ঘটনাগুলো ঘটে, এর কারণে আমরা সড়ক উন্নয়ন করি দ্রুতগতির জন্য, কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটে গেলে আমরা স্পিড ব্রেকার বানিয়ে দুর্ঘটনাটাকে কমানোর চেষ্টা করি। আর শহর এলাকায় যানবাহন বাড়তে বাড়তে গতি এত কমে যায় যে ঠোকাঠুকি হয়।
‘আমরা বিশৃঙ্খলা রেখে যদি স্বপ্নের দ্রুতগতির উন্নয়নের দিকে যেতে চাই, তাহলে সড়কব্যবস্থাকে সুশৃঙ্খল করতে হবে। আমরা যে বিনিয়োগগুলো করছি, সেগুলো কিন্তু সেই উদ্দেশ্যেই। কিন্তু আমরা বিশৃঙ্খলা থেকে বের হতে পারছি না, কারণ আমরা নিয়ন্ত্রণ করি না। সারা বছর ধরে যে নিবিড় পর্যবেক্ষণ রাখা দরকার, সেটাও করি না।’
রাজধানীতে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ গণপরিবহনের প্রতিযোগিতামূলক আচরণ। পরিবহন শ্রমিকদের এমন আচরণের কারণে সড়কে অনেক প্রাণ ঝরেছে।
অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, ‘এক রুটে ১০ কোম্পানির বাস নামিয়ে অসুস্থ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। যারা এসি রুমে বসে এক করিডরে ১০টি কোম্পানিকে অ্যালাও করল, তারাই কিন্তু সমস্যাটাকে তৈরি করে।’
জবাবদিহির অভাব
অধ্যাপক ড. শামসুল হক মনে করেন, যারা কর্তৃপক্ষ, তাদের সারা বছর ধরে নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে। কিন্তু তারা তা করেন না। বরং তারা নিজেদের সুযোগ-সুবিধার দিকে বেশি মনোযোগী। সেভাবেই প্রজেক্ট সাজান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সমাজ হয়ে গেছে দায়বদ্ধতাহীন। পুরা চেইনের ভেতরে সবাই সুবিধাবাদী। কোনো কিছু অর্জন করতে হলে সেখানে দরদ লাগবে। দরদি কেউ সহজে হতে চায় না। তারা ভাবে, আমি যাই করি না কেন, এটার জন্য আমাকে জবাবদিহি হতে হবে না। তাহলে আমি কেন খাটতে যাব।’
দুর্ঘটনা কমার উপায় সরকারের পরিকল্পনাতেই উল্লেখ করা আছে জানিয়ে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘দুর্ঘটনা কমাতে শ্রমভিত্তিক অল্প খরচে যা করা যাবে, সেই কাজগুলো কেউ করবে না। তারা চায় মেগা প্রজেক্ট। সরকারও তাদের সঙ্গে ঢোলের বাড়ি দেয়। মেগা প্রজেক্টে গেলে তাদের লাভ, সরকারের লাভ। কিন্তু জনগণের কোনো লাভ হয় না। কারণ এগুলো সমন্বিত হয় না। ছোট কাজগুলো না করে অর্থাৎ ফাউন্ডেশনের কাজ না করে আমি আকাশে চলে গেলে তো এটা বেশি দিন থাকবে না।’
‘সড়কের উন্নয়নগুলো লোকদেখানো। এ কারণে আমরা টেকসই উন্নয়ন পাচ্ছি না। ফলে সড়ক দ্রুতগতির হলে দুর্ঘটনা বেড়ে যায়।’
দুর্ঘটনা কমাতে করণীয়
অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, ‘যদি দুর্ঘটনা কমাতে চাই, তাহলে রাস্তার পরিবেশটাকে সুশৃঙ্খল করতে হবে। নিবিড় ধারাবাহিক নজরদারির পাশাপাশি রেজিস্ট্রেশনের সময়ও ছোট গাড়িকে অনুৎসাহী করা এবং বড় গাড়িকে উৎসাহিত করা। তাহলে ছোট গাড়ির সংখ্যা কমে গেলে সাংঘর্ষিক পরিবেশটাও কমে যাবে।
‘পাশাপাশি রাস্তা স্বতন্ত্র থাকবে। রাস্তা সুশৃঙ্খল হলে বিশৃঙ্খলা কমে যাবে, বিশৃঙ্খলা কমে গেলে নিরাপদে দ্রুতগতিতে চলা যাবে। এ ছাড়া সব পরিকল্পনা বিজ্ঞানভিত্তিক করতে হবে।’
আরও পড়ুন:দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে ওয়েস্টিন পারনাস হোটেলে আজ থেকে ০৩(তিন) দিনব্যাপী (১৬-১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫) গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার কো-অপারেশন কনফারেন্স (জিআইসিসি)-২০২৫ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন। সম্মেলনে সেতু সচিব সেতু বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের উপর প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। সেতু সচিব প্রেজেন্টেশনে উল্লেখ করেন সেতু বিভাগের কয়েকটি প্রকল্পে কোরিয়ান ইডিসিএফ/ইডিপিএফ (EDCF/EDPF) অর্থানয়ের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের পরিবহন খাতে দক্ষিণ কোরিয়ার কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে।
জিআইসিসি-২০২৫ সম্মেলনের লক্ষ্য কোরিয়ান নির্মাণ সংস্থাগুলোর জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি করা এবং বিভিন্ন দেশের প্রকল্প বাস্থবায়নকারীদের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপন করা। এটি মূলত একটি বিজনেস-টু-বিজনেস প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে, যেখানে কোরিয়ান কোম্পানিগুলো বিদেশী সরকার, প্রজেক্ট ডেভেলপার এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে। সম্মেলনে প্রায় ৫০০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে ৩০টি দেশের মন্ত্রী ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এবং কোরিয়ান শীর্ষস্থানীয় নির্মাণ সংস্থাগুলির কর্মকর্তারা রয়েছেন।
এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্যগুলো হলো: বিভিন্ন দেশের আসন্ন অবকাঠামো প্রজেক্ট সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ ও আদান-প্রদান, বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন, নতুন প্রজেক্টে অংশগ্রহণের জন্য চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং কোরিয়ান উন্নত প্রযুক্তি যেমন স্মার্ট সিটি, হাই-স্পিড রেল, এবং স্মার্ট পোর্ট সিস্টেমের সাথে পরিচিতি করা।
এছাড়াও সম্মেলনের বাকী অংশে বিভিন্ন দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের প্যানেল আলোচনা, বিভিন্ন দেশের প্রজেক্ট ব্রিফিং, ব্যক্তিগত বিজনেস মিটিং, কোরিয়ান শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলো তাদের নতুন প্রযুক্তি প্রদর্শন করবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, সারা দেশে দেশীয় মাছের সংকট প্রকট হয়ে উঠছে। এই সংকট নিরসনে উন্মুক্ত জলাশয়ের কোন বিকল্প নাই। সরকার দেশের নদ-নদীতে মাছের অভয়ারণ্য তৈরি করতে কার্যক্রম গ্রহণ করছে।
উপদেষ্টা আজ সকালে কুড়িগ্রামে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান,নারী কৃষক এবং স্হানীয় এনজিও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, বন্যায় নদীগুলোতে পলি পরার কারণে নাব্যতা হ্রাস, পানি দূষণ, চায়না জাল ব্যবহার ও ইলেকট্রিক শর্ট দিয়ে মাছ কারণে দিনদিন মাছের পরিমাণ কমছে। জোরালো অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ মাছ ধরার যন্ত্রপাতি উদ্ধার করতে হবে। অভিযান চলমান রাখতে নদীগুলোতে স্পীড বোটের ব্যবহার করা হবে।
চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে তারা সরকারি অনেক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া তিনি প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের আহ্বান জানান।
খামারিদের উৎপাদিত দুধ সংরক্ষণ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, যথাযথ সংগ্রহ ও সংরক্ষণের অভাবে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই এই অঞ্চলে চিলিং সেন্টার স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।
জুলাই যোদ্ধাদের আত্মত্যাগ প্রসঙ্গে বলেন, জুলাই যোদ্ধাগণ অনেকে জীবন উৎসর্গ করেছেন আবার অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। তাদের এই ঋণ ভুলবার নয়। এজন্য তিনি সরকারি ও এনজিওর উদ্যোগে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে আহ্বান জানান।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সিফাত মেহনাজের সভাপতিত্বে আরো উপস্হিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. স্বপন কুমার বিশ্বাস, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোক্তাদির খান, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণের অতিরিক্ত উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ রানাসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
এরপর উপদেষ্টা কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছি ইউনিয়নের ছড়ারপাড় গ্রামে নারী কৃষকের বাড়ি পরিদর্শন করেন।
সরকার দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেছে। বৃহস্পতিবার তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খাদিজা তাহের ববির সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রেস কাউন্সিলের ৫ নম্বর ক্রমিকের প্রতিনিধি নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীর পদত্যাগ করায় তার পরিবর্তে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক সমিতির প্রতিনিধি হিসেবে দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করা হলো।’
বর্তমান কাউন্সিলের অবশিষ্ট মেয়াদের জন্য এ মনোনয়ন কার্যকর থাকবে। জনস্বার্থে জারিকৃত এ প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
প্রেস কাউন্সিলের বর্তমান চেয়ারম্যান বিচারপতি একেএম আব্দুল হাকিম, সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর।
এছাড়া ১২ জন সদস্য হচ্ছেন—১. বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ২. ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মিস দৌলত আকতার মালা, ৩. ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, ৪. ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম, ৫. দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, ৬. দৈনিক বণিক বার্তার প্রকাশক ও সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, ৭. দ্য ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, ৮. দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী, ৯. নিউজপেপার্স ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়ার) উপদেষ্টা আখতার হোসেন খান, ১০. বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ১১. বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. মো. ফখরুল ইসলাম এবং ১২. বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন।
অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয়া শাহবাজ শরিফের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। পাকিস্তানের ইসলামাবাদে পিএম হাউসে উভয়ের এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা ও তার প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং সখ্যের বন্ধনে আবদ্ধ। এ সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও জোরদার হবে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক ও কায়রোতে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অনুষ্ঠিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে তার অবদানের প্রশংসা করেন। এছাড়া তিনি পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ককে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার আকাঙ্ক্ষাকে সাধুবাদ জানান।
এদিকে ধর্ম উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি পত্র পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এ পত্রে প্রধান উপদেষ্টা পাকিস্তানে নজিরবিহীন বন্যায় সে দেশের সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সহমর্মিতা ও আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভয়াবহ এ দুর্যোগে নিহতদের পরিবার ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
এ পত্রে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কঠিন এ সময়ে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে রয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আপনার সুদক্ষ নেতৃত্বে পাকিস্তানের জনগণ তাদের অসাধারণ ধৈর্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে এ চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করবে। প্রয়োজনে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে বাংলাদেশ সর্বাত্মক সহযোগিতা ও সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
সাক্ষাৎকালে ঢাকা ও করাচীর মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল দ্রুত পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসা বিষয়ে উভয়দেশের শিক্ষার্থী বিনিময়ে বৃত্তি প্রদানের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, ধর্মবিষয়ক ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি মন্ত্রী সরদার ইউসুফ খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতা তারার, ইসলামাবাদে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও শরীফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রভাষক মুফতি জাহিদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন।
পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশের একটি স্বাধীন তদন্ত সার্ভিস গঠন করা হবে, যাতে কোনো রাজনৈতিক বা অন্য কোনো প্রভাব ছাড়াই তদন্ত সম্পন্ন করা যায়।’ এর পাশাপাশি পুলিশের ভেতরে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য একটি কমিশন গঠনের বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ‘এই দুই সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য আইন মন্ত্রণালয় কাজ করবে। এ কাজে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, আদিলুর রহমান খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী যুক্ত থাকবেন।’
সভায় স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বারবার জোর দিয়েছেন যে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও ক্ষমতায়িত করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন যেন নিজস্ব তহবিল সংগ্রহ ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করতে পারে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
স্বাস্থ্য খাত নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। শফিকুল আলম জানান, ‘কিছু মেডিকেল কলেজে যোগ্য শিক্ষকের সংকট রয়েছে। তাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পরামর্শক বা অন্যভাবে সম্পৃক্ত করে শিক্ষা কার্যক্রমের মান উন্নত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’
নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের বিষয়েও সভায় আলোকপাত করা হয়। প্রেস সচিব বলেন, ‘নেপালে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা ভালো আছেন, দূতাবাস তাদের দেখভাল করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিশেষ ফ্লাইটে জাতীয় ফুটবল দলকে দেশে আনার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
এ বৈঠক প্রসঙ্গে শফিকুল আলম আরও বলেন, ‘আজকের বৈঠকের প্রতিটি সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি, শাসনব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।’
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
ক্যাডার কর্মকর্তাদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের মেয়াদ ছয় মাস থেকে কমিয়ে চার মাস করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাস প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে এবং এক মাস মাঠপর্যায়ে ওরিয়েন্টেশন ও গ্রাম সংযুক্তি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রশিক্ষণ কাউন্সিলের নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান উপস্থিত ছিলেন।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, কর্মকর্তাদের মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে ভর্তির সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৭ বছর করা হবে। পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নকালে প্রতি বছর তত্ত্বাবধায়কের অগ্রগতিমূলক প্রত্যয়ন মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে, অন্যথায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বেতন বন্ধ রাখা হবে।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সরকারি যত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করতে হবে। কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, প্রশিক্ষণের ধরন-মান ইত্যাদির মানদণ্ড নির্ধারণ করে ক্যাটাগরিভিত্তিক প্রতিটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রকে র্যাংকিং করতে হবে এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বাধীন ইউনিট গঠন করতে হবে। তারা সমস্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের ওপর পদ্ধতিগতভাবে, স্বাধীনভাবে মূল্যায়ন করবে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামগ্রিক দর্শন জানতে হবে। সেগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কি না দেখতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা যারা বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছেন তাদের তথ্য সেখানে থাকবে।’
সভায় সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণের নাম পরিবর্তন করে ‘দক্ষতা নবায়ন প্রশিক্ষণ’ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ প্রশিক্ষণ হালনাগাদকৃত কারিক্যুলামে মাঠপর্যায়ে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে আয়োজন করা হবে। এছাড়া উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মকর্তারা আংশিক বৃত্তিপ্রাপ্ত হলেও প্রেষণ অনুমোদন করা যাবে।
কর্মচারীদের সততা ও নৈতিকতা বিকাশ এবং দুর্নীতি বিরোধী মনোভাব তৈরিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে সদ্গুণ, নৈতিকতা, আচরণবিজ্ঞান ও আচরণবিধি অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্বিক মূল্যায়ন এবং প্রশিক্ষণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে গবেষণা, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি (ইসিএনটিসি) গঠন করা হয়।
জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।
মন্তব্য