দুদক থেকে অপসারিত কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারই করা বিভিন্ন মামলার তিন আসামি।
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে বুধবার বিকেলে তারা সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করেন, শরীফ দুদকে থাকা অবস্থায় নানা অনিয়মে জড়িত ছিলেন; হয়রানি করার জন্য মিথ্যা মামলায় তাদের ফাঁসিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলন করা তিনজন হলেন- কেজিডিসিএল-এর অবসরপ্রাপ্ত মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. সারওয়ার হোসেন, একই প্রতিষ্ঠানের সার্ভেয়ার দিদারুল আলম ও আরএফ বিল্ডার্সের মালিক দেলোয়ার হোসেন।
তাদের মধ্যে সারওয়ার ও দিদারুলের বিরুদ্ধে গ্যাস জালিয়াতি এবং দেলোয়ারের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করেছিলেন দুদকের সাবেক সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন।
সারওয়ারের বিরুদ্ধে নূরজাহান নামে এক নারীর জন্য বরাদ্দ গ্যাসের সংযোগ সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলামের ছেলে মুজিবুর রহমানের বাড়িতে দেয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছিল।
তিনি সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে তাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নগরীর আকবর শাহ এলাকায় শরীফের শাশুড়ির বাসার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে আমার বিরুদ্ধে মামলা করেন। ভুয়া শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার সনদ দেখিয়ে নিজের ভাই শিহাব উদ্দিনকে কেজিডিসিএল-এ ডেটা এন্ট্রি অপারেটর পদে অস্থায়ী নিয়োগের ব্যবস্থা করেন।
‘শুধু তাই নয়, শিহাবের চাকরী স্থায়ী করার জন্য কর্মকর্তাদের চাপও দিতেন। এক নিকটাত্মীয়কেও কেজিডিসিএল-এ গাড়িচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন।’
কক্সবাজারের বেলায়েত হোসেন নামে এক দালালের মাধ্যমে শরীফ ঘুষ নিতেন বলে দাবি সারওয়ারের। তিনি অভিযোগ করেন, কেজিডিসিএলের কর্মকর্তাদের পদোন্নতিও আটকে রাখতেন শরীফ, অবৈধভাবে কর্মকর্তাদের ব্যাংক হিসাবও জব্দ করতেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরএফ বিল্ডার্সের মালিক দেলোয়ার দাবি করেন, প্রবাস জীবনের বৈধ আয় দিয়ে তিনি সম্পদ উপার্জন করেছেন। তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মিথ্যা মামলা দিয়েছেন শরীফ। মূলত চট্টগ্রাম নগরীর ২ নম্বর গেট এলাকায় তার মালিকানাধীন দুটি দোকান নিতে চেয়েছিলেন শরীফ।
তাতে রাজি না হওয়ায় মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ দেলোয়ারের।
এসব বিষয়ে শরীফ বলেন, ‘তারা আমার মামলার আসামি। মামলাগুলো যেহেতু দুদকের অনুমোদনের হয়, তাই মূলত তারা দুদকের মামলার আসামি। মামলাগুলো এখনো চলমান। বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না।
‘আসামিরা অনেক কিছুই বলে। কমিশনের অনুমোদন ছাড়া অন্যায়ভাবে কারও বিরুদ্ধে মামলা করার সুযোগ নেই।’
তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নাকচ করে শরীফ বলেন, ‘শাশুড়ির বাসার গ্যাসের কথা বললো, সম্পূর্ণ মিথ্যা। প্রয়োজনে একটু খোঁজ নিয়ে দেখেন। আর ভাই তো কেজিডিসিএলে ছিল না, সে মূলত কেজিডিসিএলের অধীনে একটা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে অস্থায়ী হিসেবে ছিল। তার সেখানে চাকরি কেন লাগবে? সে তো রেলওয়েতে পোষ্য কোটায় চাকরির জন্য অপেক্ষমান ছিল।
‘আর ঘুষের কথা বলছে। বেলায়েত আসলে নিজেই মামলার আসামি। তার সঙ্গে আমার খাতির থাকলে সে কীভাবে আসামি হয়?’
পদোন্নতি আটকে রাখার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কেজিডিসিএলের কোনো কর্মকর্তার পদোন্নতির বিষয়ে কোনো চিঠি কখনও আমার হাতে পড়েনি। ৩ বছর পদোন্নতি আটকে রাখার মতো এত ক্ষমতা আছে নাকি আমার?’
দায়িত্বরত অবস্থায় কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া, সরকারি প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডে দুর্নীতিসহ নানা স্পর্শকাতর বিষয়ে অনুসন্ধান ও মামলা করে আলোচিত হন দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন।
চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করে দুদক।
আরও পড়ুন:দুর্গাপূজার আগে দেশজুড়ে প্রায় সাড়ে ৩১ হাজার পূজামণ্ডপে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ময়নুল ইসলাম বলেছেন, এ উৎসবে থাকবে তিন স্তরের নিরাপত্তা।
প্রতিটি মণ্ডপে নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণ উৎসব নিশ্চিত করতে আনসার ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা ২৪ ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করবেন বলেও জানান তিনি।
ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে আইজিপি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বিঘ্ন উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টিতে ব্যাপক পদক্ষেপ নিচ্ছে।
প্রতিটি স্তরে নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেয়ার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘সব পূজামণ্ডপে ধর্মীয় উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন পরিবেশে এ উৎসব উদযাপন করা হবে।’
আইজিপি তিন স্তরের নিরাপত্তা পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘পূজা সামনে রেখে আমরা প্রতিটি জায়গায় টহল বাড়িয়েছি। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপে আনসার ও বিজিবি সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রতিটি জেলায় সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন রয়েছে এবং সীমান্তে বিজিবি সদস্যরা তৎপর রয়েছে। এ ছাড়া উপকূলীয় ও নৌ অঞ্চল মনিটরিং করছে কোস্টগার্ড ও বিশেষায়িত পুলিশ ইউনিট।’
আইজিপি বাধাবিপত্তির বিষয়ে সতর্ক করে তিনি বলেন, বিশেষত সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়া রোধে সাইবার নজরদারি বাড়ানো হবে।
তিনি বলেন, ‘এখানে বিশৃঙ্খলার কোনো জায়গা নেই। কেউ নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ কর্মকর্তা আরও জানান, নিরাপত্তা জোরদার করতে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় পুলিশ কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে, যাতে নাগরিকরা উৎসব চলাকালীন যেকোনো ঘটনা বা উদ্বেগের কথা জানাতে পারেন।
আরও পড়ুন:খুলনা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দেয়ার সময় রোববার সন্ধ্যায় তাকে আটক করা হয়েছে।
বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম জানান, অবৈধভাবে ভারতে পালানোর সময় ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত থেকে রোববার সন্ধ্যায় সাবেক এমপি নারায়ণ চন্দ্র চন্দকে আটক করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান খুলনা-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। এর আগে ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি তিনি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। কিছুদিন পর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছায়েদুল হকের মৃত্যু হলে তিনি ওই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি জান্নাত আরা হেনরীর ক্যাডার আবু মুছা ওরফে কিলার মুছাকে কক্সবাজারের কলাতলী বিচ থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে সিরাজগঞ্জ সদরে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর ৪ আগস্ট প্রকাশ্যে গুলি ছুড়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া তিন মামলার অন্যতম আসামি এই সন্ত্রাসী। আবু মুছা সদর উপজেলার দত্তবাড়ী মহল্লার মৃত ছানোয়ার হোসেনের ছেলে।
আন্দোলন চলাকালে সিরাজগঞ্জে ছাত্র-জনতার ওপর সশস্ত্র হামলার ঘটনায় একাধিক মামলা দায়ের হয়। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর দায়ের হওয়া এসব মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারে র্যাব-১২, সদর কোম্পানির অপারেশন টিম ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় সিরাজগঞ্জ সদর থানার তিনটি হত্যা মামলায় এজাহারনামীয় পলাতক আসামি আবু মুছা ওরফে কিলার মুছাকে শনিবার (৫ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টায় র্যাব-১২ ও র্যাব-১৫ এর একটি দল কক্সবাজার শহরের কলাতলী বিচ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব-১২, সদর কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার বিএন এম আবুল হাশেম সবুজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, গ্রেপ্তার হওয়া আসামি বিগত সময়ে সাবেক এমপির প্রধান ক্যাডার হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সিরাজগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় অস্ত্র ও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জোরপূর্বক ভূমি দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। এছাড়াও গত ৪ আগস্ট সরকার পতনের এক দফা দাবিতে সিরাজগঞ্জ সদরে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে হামলা চালানোর কথাও সে স্বীকার করেছে।
ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আবু মুছা আরও জানান, বর্ণিত হত্যা মামলাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার এড়াতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে তিনি বেড়াচ্ছিলেন।
সিরাজগঞ্জের সাবেক এমপি হেনরীর এই ক্যাডার কক্সবাজারে আত্মগোপনে থেকে সুযোগ বুঝে সীমান্ত দিয়ে দেশের বাইরে পালানোর চেষ্টা করছিল বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন:নওগাঁয় পৃথক ঘটনা-দুর্ঘটনায় চারজন প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়, একজন ছোট ভাইয়ের আঘাতে এবং একটি শিশু রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকচাপায় প্রাণ হারায়।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার ধনজইল মোড়ে মোটরসাইকেলের সঙ্গে ব্যাটারিচালিত চার্জারের ধাক্কায় মনিরুল ইসলাম ও সারাফাত হোসেন নামে দুই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
মহাদেবপুর থানার ওসি হাসমত আলী জানান, সারাফাত উপজেলার জয়পুর সরদারপাড়া গ্রামের মাহমুদুল হাসানের ছেলে ও ঢাকা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের ছাত্র। আর মনিরুল ইসলাম উপজেলার গোঁফানগর গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে ও শিবপুর বরেন্দ্র ডিগ্রি কলেজের ছাত্র।
সারাফাতুল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ছিলেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।
অপর ঘটনায় ধামইরহাট উপজেলার রসুলবিল রাঙ্গামাটি গ্রামে বাবলু হোসেনের ছেলে মামুনুর রশীদ ও ছোট ভাই মাইনুর রহমান রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে বাক-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে মারামারি শুরু হয়। এতে ছোট ভাই মাইনুর রহমানের আঘাতে বড় ভাই মামুনুর রশীদ গুরুত্র জখম হন। তাকে পত্নীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে চিকিৎসক মামুনুর রশীদকে মৃত ঘোষণা করেন।
ধামইরহাট থানার ওসি রাইসুল ইসলাম জানান, উপজেলার রসুলবিল রাঙ্গামাটি গ্রামে বাবলু হোসেনের ছেলে মামুনুর রশীদ ও ছোট ভাই মাইনুর রহমান রোববার মাগরিবের আজানের সময় জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে মারামারিতে লিপ্ত হয়। এ সময় ছোট ভাই মাইনুর রহমানের আঘাতে বড় ভাই মামুনুর রশীদ গুরুতর জখম হন। পরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মাইনুরকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
অন্যদিকে বিকেল ৫টার দিকে বদলগাছীতে রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাকচাপায় মরিয়ম আক্তার নামে ছয় বছর বয়সী এক শিশু প্রাণ হারায়।
বদলগাছী থানার ওসি শাহজাহান আলী জানান, মিঠাপুর পশ্চিমপাড়া দইভান্ডার মোড়ে সানোয়ার হোসেনের বাড়ির সামনে রাস্তা পার হওয়ার সময় গোবরচাঁপা থেকে আক্কেলপুরগামী শসা বোঝাই একটি ট্রাক শিশু মরিয়মকে চাপা দিলে সে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে আক্কেলপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পথে মারা যায়। উত্তেজিত জনতা ট্রাকচালক ফিদাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
তিনি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক গ্রামের আফসার হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন:নওগাঁর মান্দায় একটি ঘর থেকে স্বামী ও স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
উপজেলার ভারশোঁ ইউনিয়নের ভারশোঁ পশ্চিমপাড়া গ্রামে থেকে শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
নিথর অবস্থায় উদ্ধার হওয়া দুজন হলেন ওই গ্রামের আতাউর রহমান (৭২) ও তার স্ত্রী মারুনি বিবি (৬৫)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর রহমান।
প্রতিবেশী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পারিবারিক বিষয় নিয়ে নিহতদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ চলে আসছিল। গতকাল শনিবার গভীর রাতে আতাউর রহমানের মেয়ে কাজলি বিবি আমাকে ফোনে জানায়, তার বাবা আত্মহত্যা করতে পারেন। বিষয়টি জরুরিভাবে দেখার জন্য আমাকে অনুরোধ করেন।
‘কাজলি বিবির এমন সংবাদে আশাপাশের লোকজনকে নিয়ে আতাউরের বাড়িতে গিয়ে ডাকাডাকির পরও তাদের কোনো শব্দ পাওয়া যায়নি। পরে দরজা ভেঙে ঘরের ভেতর দুইজনের মরদেহ পাওয়া যায়। এরপর পুলিশকে খবর দেয়া হয়।’
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর রহমান বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধারের সময় মারুনি বিবির মাথায় একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মরদেহ উদ্ধারের সময় পাশ থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে।
‘সেখানে মৃত্যুর পরে তাদের দাফন কীভাবে হবে এবং কোথায় টাকা রাখা আছে, এ বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।’
ওসি আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামী আতাউর রহমান আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আসন্ন দুর্গাপূজা ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
রোববার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শ্রীশ্রী রমনা কালীমন্দির পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আসন্ন দুর্গাপূজা নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ইতোমধ্যে আট দফা নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।
তাছাড়া দুর্গাপূজায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, র্যাব ও আনসারের পর্যাপ্ত সদস্যের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী মোতায়েন থাকবে। কোথাও কোনো ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে তথ্য পেতে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এবার সব পূজামণ্ডপে পূজা উদযাপন কমিটির মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। অনেক সময় দেখা যায়, স্বেচ্ছাসেবকদের রাত ৩টার পর পূজামণ্ডপে পাওয়া যায় না। এবার কোনো স্বেচ্ছাসেবক কোনো পূজামণ্ডপ ছেড়ে যাবেন না। তারা ২৪ ঘন্টাই দায়িত্ব পালন করবেন। তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করবেন। তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য আদান-প্রদান করতে সুবিধা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী দেশ অনেক কিছুই বলছে- সেটা আপনারা জানেন। আপনাদের অনুরোধ করব, আপনারা সত্যি ঘটনা মিডিয়ায় তুলে ধরবেন। আমরা সত্যি ঘটনা সবাইকে জানাতে চাই।’
হিন্দুদের নিয়ে বছরের পর বছর যে নীলনকশা ও ষড়যন্ত্র হচ্ছে সেগুলো বন্ধ হবে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘এ বিষয়ে আপনারাই আমাদের সাহায্য করতে পারেন। আপনারা বিষয়টি জনগণের কাছে তুলে ধরতে পারেন। অনুরোধ করবো, আপনারা সবসময় সত্যিটা প্রকাশ করবেন। যদি কোথাও আমাদের ঘাটতি থাকে, সেটা আমরা ঠিক বা পূরণ করে নেব। ভুল থাকলে সংশোধন করে নেব।’
বিগত ১৫ বছরে রামু ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও সহিংস ঘটনার বিচার হয়নি। সেসব ঘটনার পুনঃতদন্ত ও বিচার হবে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ‘এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের অবশ্যই বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। বর্তমান সরকার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে।’
পরিদর্শনকালে শ্রীশ্রী রমনা কালীমন্দির ও আনন্দময়ী আশ্রম পূজা পরিচালনা পরিষদের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস ও সদস্য সচিব বিশ্বজিৎ ভদ্রসহ মন্দিরের পূজা পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় চৌদ্দকাউনিয়া গ্রামে পূর্ব শত্রুতার জেরে বাউল গানের আসরে প্রতিপক্ষের হামলায় একজনের হাতের কব্জি বিচ্ছিন্নসহ চারজন আহত হওয়ায় হয়েছেন।
আহত চারজনকেই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে, যাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আহত চারজন হলেন চৌদ্দকাউনিয়া গ্রামের নুরুজ্জামান (৬৫), মুক্তার হোসেন (৩৭), শাকিল (২৩) ও হামিম (১৪)।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সীমানা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গজারিয়া উপজেলা বাউশিয়া ইউনিয়নের চৌদ্দকাউনিয়া গ্রামের ফজলুল করিমের সঙ্গে প্রতিবেশী বাসেত মিয়ার বিরোধ চলছিল। এসব বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ গত রজমান মাসে ফজলুল করিমের ভাতিজা সজিব চায়নিজ কুড়াল দিয়ে বাসেত মিয়াকে কুপিয়ে জখম করেন।
আহত বাসেতকে হাসপাতালে নিয়ে যান আরেক প্রতিবেশী নুরুজ্জামান। এ ঘটনায় নুরুজ্জামানের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল ফজলুল করিম ও তার স্বজনরা।
ওই ঘটনার জের ধরে শনিবার রাত ৯টার দিকে বাউল গানের আসরে প্রতিপক্ষের সজিব, জাহাঙ্গীর, ফজলুল করিম, নান্নু, বাবু, রবিউল আউয়াল, হাসানসহ আরও কয়েকজন বগি দা, রামদা, ছুরি নিয়ে হামলা করে নুরুজ্জামানের ওপর। এ সময় তারা তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। তাকে বাঁচাতে তার ছোট ভাই মুক্তার এবং পরিবারের লোকজন এগিয়ে এলে তাদেরও কুপিয়ে জখম করা হয়।
হামলাকারীরা নুরুজ্জামানের এক হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। ওই সময় আহত লোকজনের চিৎকারে আশেপাশে লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান।
হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হওয়া নুরুজ্জামান বলেন, ‘আমি ঝগড়ার মধ্যে ছিলাম না। আর এ ব্যাপারে আমি কিছু জানিও না। সন্ত্রাসীরা শুধু শুধু আমার ওপর হামলা চালিয়েছে।
‘আমি শুধু একজন আহত মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। এটা ছিল আমার অপরাধ। সন্ত্রাসী সজীব বগি দা দিয়ে কোপ দিয়ে আমার হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে।’
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, তাদের হাসপাতালে আগত তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। আহত লোকজনের মধ্যে নুরুজ্জামান ও মুক্তার হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের মধ্যে নুরুজ্জামানের এক হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে।
অন্যদিকে মুক্তার হোসেনের গায়ের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। আহত অপরজন হামিমকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘খবর পাওয়ার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে হামলাকারীরা সবাই পলাতক।
‘এখনও পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য