হেনস্তা, হয়রানির হুমকি ও ঘুষ দাবির অভিযোগে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভূমি অধিগ্রহণ শাখা) এহসান মুরাদসহ ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে মঙ্গলবার দুপুরে মামলাটি করেন হেমায়েত হোসেন নামে এক ব্যক্তি। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী নূর এ খোদা।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন ভূমি সার্ভেয়ার মো. আব্দুল মোমেন, সার্ভেয়ার মো. ইমাম হোসেন গাজী, সার্ভেয়ার মোক্তার হোসেন, সার্ভেয়ার আবু কায়সার সোহেল ও অফিস সহকারী বেলায়েত হোসেন বুলু।
এজাহারে বলা হয়, বিরোধপূর্ণ একটি জমি নিয়ে মালিক দাবি করা পক্ষের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলেন বাদী ও তার ভাই। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, জমি নিয়ে চলমান মামলার খরচ বহন করবেন বাদী ও তার ভাই। বিনিময়ে মামলা নিষ্পত্তির পর জমি বুঝে পেয়ে অর্ধেক অংশ বাদী ও তার ভাইকে দেয়া হবে।
বাদী হেমায়েতের অভিযোগ, চুক্তি অনুযায়ী তিনি মামলার খরচ বহন করলেও অপরপক্ষ প্রতারণার চেষ্টা করে। এরই মধ্যে ওই জমির কিছু অংশ কর্ণফুলী টানেল প্রকল্পের আওতায় হওয়ায় তা সরকার অধিগ্রহণ করে। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের টাকা মালিক দাবি করা পক্ষকে যেন না দেয়া হয়- সেজন্য জেলা প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (ভূমি অধিগ্রহণ শাখা) এহসান মুরাদের কাছে লিখিত আবেদন করেন হেমায়েত। তবে দীর্ঘ সময়েও এর কোনো উত্তর পাননি।
হেমায়েত জানান, সবশেষ গত ১০ অক্টোবর বিকেলে তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান। সেখানে সার্ভেয়ার মোক্তার হোসেনের কাছে তিনি অধিগ্রহণ করা জমির ক্ষতিপূরণের বিষয়ে সবশেষ তথ্য জানতে চান। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে সার্ভেয়ার মোক্তার, আব্দুল মোমেন, ইমাম হোসেন গাজী, আবু কায়সার ও অফিস সহকারী বেলায়েত তাকে লাঞ্ছিত করেন। এরপর তাকে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা এহসান মুরাদের কক্ষে নেয়া হয়।
হেমায়েতের অভিযোগ, সেখানে এহসান মুরাদ তাকে ভূমিদস্যু, দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা বলে গালাগাল করেন। অধিগ্রহণের তথ্য জানানোর বিনিময়ে ১০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে দুদকের মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। পরে তাকে অফিস থেকে বের করে দেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে এহসান মুরাদকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (ভূমি অধিগ্রহণ) মাসুদ কামাল এই বিষয়ে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওনার (এহসান মুরাদ) অফিস থেকে আমার অফিস খুব বেশি দূরে না। আমি ওইদিন অফিসেই ছিলাম। সেদিন উচ্চবাচ্যের কিছু আমি শুনিনি। আমাকে কেউ জানায়ওনি।
‘আরেকটা বিষয় হলো জমির মূল মালিক যিনি, তিনি আমাদের এখানে এসেছিলেন, তিনি জানালেন যে হেমায়েতের স্বত্বের দাগে (অধিগ্রহণ করা) নেই। তিনি (হেমায়েত) মূলত দালালি করতে এসেছিলেন এখানে।’
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় হরতাল সমর্থনে বিএনপি নেতা-কর্মীদের মশাল মিছিল থেকে গাড়িতে আগুন, ককটেল বিস্ফোরণ ও দোকানপাটে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এ সময় ফতুল্লা থানা স্বেচ্চাসেবক দলের সদস্য সচিবকে আটক করে পুলিশ।
ফতুল্লার পঞ্চবটী মুক্তারপুর সড়কের ভুলাইল এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
ফতু্ল্লা মডেল থানার ওসি নূরে আজম মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে পুলিশ জানায়, রাত আটটার দিকে বিসিক সড়কের ভুলাইল এলাকা থেকে মশাল মিছিল বের করে থানা যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের শতাধিক নেতা-কর্মী। মশাল মিছিল থেকে হরতালের সমর্থনে স্লোগান দিয়ে নেতা-কর্মীরা একটি তেলবাহী ট্রাকসহ তিনটি যানবাহন ভাংচুর করে।
মিছিল থেকে একটি কাভার্ডভ্যানে আগুন দেয় এবং কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় নেতা-কর্মীরা। এ সময় রাস্তার পাশের কয়েকটি দোকানেও ভাঙচুর চালানো হয়।
খবর পেয়ে ফতুল্লা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে ধাওয়া করে ফতুল্লা থানা স্বেচ্চাসেবক দলের সদস্য সচিব রাসেল মাহমুদকে আটক করে।
ওসি নূরে আজম মিয়া বলেন, ‘মশাল মিছিলসহ রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে ট্রাকে ভাংচুর করা হচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তারা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ ধাওয়া করে ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিবকে আটক করেছে। যারা হরতালের নামে সড়কে নাশকতা চালিয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন ও তা নিয়ে প্রশ্ন করতে গিয়ে চট্টগ্রাম-১৬ আসনের এমপি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর রোষের শিকার হয়েছেন সংবাদকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে ক্ষেপে যান তিনি। এ সময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন সাংবাদিকদের।
বিপুল পরিমাণ নেতা-কর্মী নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসায় নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে কি না- এমন প্রশ্ন করতেই তিনি প্রশ্নকারী ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক রাকিব উদ্দিনকে ঘুষি দেন। এসময় তার কাছ থেকে মাইক্রোফোন কেড়ে নিয়ে মারধর শুরু করেন সংসদ সদস্যের কর্মী-সমর্থকরা। এ সময় তারা মাছরাঙা টেলিভিশনের মাইক্রোফোন ও ট্রাইপড আছড়ে ভেঙে ফেলেন। পাশাপাশি আরও কয়েকজন সাংবাদিকের মাইক্রোফোন ও ক্যামেরা ভাঙচুর করেন।
এ ঘটনায় দুই সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
মারধরের শিকার সাংবাদিক রাকিব উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী ৫ জনের বেশি নেতা-কর্মী নিয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দেয়ার সুযোগ নেই। তিনি অনেক নেতা-কর্মী নিয়ে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে আসেন। এ নিয়ে প্রশ্ন করায় আমার ওপর হামলা করেন এবং মাইক্রোফোন কেড়ে নিয়ে ফেলে দেন। তিনি আমাকে পরবর্তীতে দেখে নেয়ারও হুমকি দিয়েছেন।’
এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের কাছে সাংবাদিকরা মৌখিক অভিযোগ দিলে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।
এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে একাধিকবার মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
তবে এই বিষয়ে অভিযোগ পেলে ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘ভুক্তভোগীর অভিযোগসাপেক্ষে ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ভুক্তভোগী সাংবাদিককে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছেন এ কর্মকর্তা।
চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের সংসদ সদস্য প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে মিছিলের নেতৃত্বদান, দলের কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে বাজে মন্তব্য করাসহ বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে বেশ কয়েকবার খবরের শিরোনাম হয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের পর আবারও ‘নৌকা ভাগিয়ে নিয়ে’ আরও আগ্রাসী হয়ে উঠছেন বিতর্কত এই নেতা।
আরও পড়ুন:সিলেটে নির্বাচনি প্রচার শুরুর আগেই আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক পড়েছে। বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিনে আচরণবিধি ভেঙে শোডাউন করেন প্রার্থীরা।
আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের পাশপাশি জাতীয় পার্টি (জাপা) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রেও আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী নিয়ে মিছিল করে এসে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন তারা।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, প্রার্থীরা মনোনয়পত্র জমার সময় কোনো ধরনের মিছিল বা শোডাউন করতে পারবেন না।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল আহসানের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে ভিড় করেন প্রার্থীরা। সকালেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী এবং সিলেট-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ।
বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন শফিকুর রহমান চৌধুরী। ওই সময় শফিকুর রহমানের সমর্থকদের নৌকা মার্কার সমর্থনে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে স্লোগান দিতে দেখা যায়। শফিকুর রহমান ও মাসুক উদ্দিনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের অনন্ত ২০ নেতা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ঢুকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
দুপুরে মিছিল নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন সিলেট-৩ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব। শতাধিক নেতা-কর্মী নিয়ে রিটার্নি কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে শোডাউন করেন তিনি।
শোডাউন দেয়ার কথা অস্বীকার করে হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আগেই এখানে জড়ো হয়েছিলেন। আমি মাত্র চার-পাঁচজন নেতা নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। বাকি যারা এসেছেন, তাদের আমি নিয়ে আসিনি।’
শোডাউন করে মনোনয়নপত্র জমা দেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদও। তিনি সিলেট-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। দুপুরে রিটার্নি কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমাদানকালে তার সঙ্গে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পদধারী অর্ধশতাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন।
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও সিলেট-৬ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরুল ইসলাম নাহিদ বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
সিলেট-২ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া মনোনয়পত্র জমা দেন দুপুরে। তিনিও শতাধিক নেতা-কর্মীসহ মিছিল নিয়ে এসে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এ ব্যাপারে ইয়াহইয়া চৌধুরী বলেন, ‘আমি কোনো শোডাউন নিয়ে আসিনি। আমাকে দেখে কর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে জড়ো হয়ে কিছু স্লোগান দিয়েছেন, তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে কয়েকজন নেতা নিয়েই আমি প্রবেশ করি।’
সিলেট-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। দুপুরে তিনি শোডাউন করে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন।
জানতে চাইলে শোডাউন করার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচনি আচরণবিধির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আচরণবিধি মেনেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি।’
বিকেলে মনোনয়নপত্র জমা দেন সিলেট-৬ আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ও দলটির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী। তিনি চার থেকে পাঁচজন নেতা-কর্মী নিয়েই মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এ বিষয়ে সিলেটের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল আহসান বলেন, ‘আমি সকাল থেকেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে ব্যস্ত। এখানে কেউ শোডাউন করেননি, তবে বাইরে কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন কি না, তা খেয়াল করিনি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’
আরও পড়ুন:সিরাজগঞ্জের কাজিপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি নিজাম উদ্দিনকে কোপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে বর্তমান প্যানেল মেয়র শফিকুল ইসলাম কুড়ানের সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
বুধবার রাতে নিজ বাড়িতে এ হামলার শিকার হন নিজাম উদ্দিন। ঘটনার পর গুরুতর অবস্থায় তাকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
এর আগে, নিজাম উদ্দিনের লোকজন শফিকুল ইসলাম কুড়ান আলীকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ আনেন তার (কুড়ান) সমর্থকরা। আহত কুড়ানকেও বগুড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কাজিপুর থানার ওসি শ্যামল দত্ত জানান, বুধবার সন্ধ্যায় কাজিপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র নিজাম উদ্দিনের ভগ্নীপতি হবি শেখ পৌরসভার বর্তমান প্যানেল মেয়র কুড়ান আলীকে মারধর করেন। আহত অবস্থায় তাকে বগুড়া একটি হাসপাতালে নেয়া হয়। মারধরের খবর পেয়ে কুড়ানের লোকজন উত্তেজিত হয়ে হবিকে মারতে যান। কিন্তু তাকে না পেয়ে সাবেক মেয়র নিজাম উদ্দিনকে কুপিয়ে আহত করেন।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
এদিকে কাজীপুর উপজেলার সাবেক মেয়র নিজাম উদ্দীনকে কুপিয়ে আহত করায় দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ অফিসে বৃহস্পতিবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।
জাপানে পাঠানোর নামে প্রতারণার অভিযোগে মো. সাইদুল ইসলাম নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার সাইদুল মেহেরুন্নেছা গার্লস হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক ছিলেন। অধ্যাপনা করেছেন ঢাকা মডেল ডিগ্রি কলেজেও।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, জাপানে পাঠানোর নামে ৫০ জনের কাছ থেকে ৭৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সাইদুল।
মিরপুর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গ্রেপ্তার সাইদুল বর্তমানে ওয়েসিস নেটলিংক লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। প্রতিষ্ঠানটি থেকে এসএসডাব্লিউ এবং টিআইটিপি ক্যাটাগরিতে ওয়ার্কিং ভিসায় জাপানে লোক পাঠানো হয় বলে বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। অথচ তার প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র জাপানি ভাষা শিক্ষা দেয়ার জন্যই লাইসেন্সপ্রাপ্ত। জাপানে পাঠানোর জন্য রেজিস্ট্রেশন, ভিসা প্রসেসিং ফি, মেডিক্যাল ফি সহ অন্যান্য খরচ বাবদ প্রতিজনের কাছ থেকে ১ থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। এভাবে ৫০ জনের কাছ থেকে ৭৫ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে ভূক্তভোগীদের দাবি।’
তিনি আরও বলেন, ‘টাকা পাওয়ার দুই মাসের মধ্যেই তাদের জাপান পাঠানোর কথা। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলে তারা নানারকম তালবাহানা শুরু করে। অবশেষে বুধবার ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ করলে গ্রেপ্তার করা হয় সাইদুলকে।’
ওসি মহসীন বলেন, সাইদুল এক সময় শিক্ষকতা করতেন। তিনি ২০০৫ সালে মেহেরুন্নেছা মহিলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। এরপর তিনি যোগ দেন ঢাকা মডেল ডিগ্রি কলেজে। সেখানে তিনি সহযোগী অধ্যাপক ও রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯ সালে তিনি ব্যবসায় নামেন। কয়েকটি ব্যবসায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর তিনি এই পথ বেছে নেন।
সাইদুলের বিরুদ্ধে এর আগেও ৩টি মামলা রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:বিএনপির ডাকা সর্বাত্মক অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচির মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় আটটি গাড়িতে আগুন ধরার খবর পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
বাহিনীর মিডিয়া সেলের এক বার্তায় বলা হয়, ‘গত ২৯ নভেম্বর সকাল ছয়টা থেকে অদ্য ৩০ নভেম্বর ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ সকাল ছয়টা পর্যন্ত দুর্বৃত্ত কর্তৃক আটটি যানবাহনে আগুন লাগানোর সংবাদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে তিনটি, রাজশাহীতে একটি, বগুড়ায় একটি, কুমিল্লায় তিনটি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
‘এ ঘটনায় একটি কন্টেইনার, পাঁচটি বাস ও দুটি ট্রাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই আগুন নির্বাপণ করতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ১১টি ইউনিট ও ৬৮ জন জনবল কাজ করে।’
বার্তায় উল্লেখ করা হয়, ‘উল্লেখ্য, ২৮ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর সকাল ছয়টা পর্যন্ত দুর্বৃত্ত কর্তৃক মোট ২৩৬টি অগ্নিসংযোগের (কয়েকটি স্থাপনাসহ যানবাহনে) সংবাদ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস।’
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসত ঘরে ঢুকে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত যুবক উখিয়ার ক্যাম্পের বাসিন্দা মো. মুচির ছেলে সৈয়দ আলম (২৪)।
বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার দিকে উখিয়া ক্যাম্প-০৪ এর ই/৪ ব্লকে ভিকটিমের নিজ বসত ঘরে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন উখিয়া থানার ওসি শামীম হোসাইন।
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৪ এ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সৈয়দ আলম নামের এক যুবককে বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার দিকে তার বসত ঘরে ডুকে ১০/১৫ জন অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে তাকে ক্যাম্প-৩ এ অবস্থিত আইএমও হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
ওসি জানান, ঘটনার খবর পেয়ে থানা থেকে পুলিশের একটি টিম সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠায়।
মন্তব্য