কৃষ্ণধন (কেডি) সরকারি উচ্চবিদ্যালয় নওগাঁর সবচেয়ে পুরোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৩৮ বছরের পথচলায় সময়ের সঙ্গে শুধু জেলা শহরই নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়েছে এই বিদ্যালয়। এর আলোয় আলোকিত হয়ে দেশ-বিদেশে অবস্থান করছেন অনেকেই।
রাষ্ট্র ও সমাজে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকারী অনেকেই এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।
১৯৭৭ সালে নওগাঁ মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হয়। কৃষিসমৃদ্ধ এই মহকুমার লোকজনের মোটা ভাত-কাপড়ের অভাব ছিল না বলেই তারা লেখাপড়া শেখায় তেমন তাগিদ অনুভব করেনি। স্থানীয় জমিদাররা উচ্চশিক্ষার জন্য তাদের সন্তানদের দেশ-বিদেশের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাতেন। জনসাধারণের মধ্যেও শিক্ষা বিস্তারে উদাসীনতা ছিল।
এই পরিস্থিতিতে ১৮৮৪ সালে একটি উচ্চবিদ্যালয় (পরবর্তী সময়ে কেডি উচ্চবিদ্যালয় নামে খ্যাত) প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন তৎকালীন সাব ডেপুটি কালেক্টর কৃষ্ণধন বাগচি। সহযোগিতায় এগিয়ে আসে মহকুমার জমিদার, বিত্তশালী মানুষ ও কৃষকরা। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর নামকরণ নিয়ে বিতণ্ডা দেখা দেয়। তবে এর নামকরণ করা হয় কৃষ্ণধন বাগচির নামেই। পরবর্তী সময়ে এই নামের কোনো পরিবর্তন হয়নি।
১৯৬০ সালে দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অধীনে বিদ্যালয়টিকে একটি বহুমুখী বিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সরকার অনুদান দেয়। তারপর নতুন ব্যবস্থা অনুযায়ী বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, মানবিক এবং কৃষি বিভাগের পড়াশোনা চালু করা হয়। ১৯৭০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা লাভ করে।
১৯৮৪ সালে নওগাঁ জেলা ঘোষণা হওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এই বিদ্যালয়কে জিলা স্কুল নামকরণের প্রস্তাব পাঠানো হয়। সে সময় কর্তৃপক্ষ এই প্রস্তাবকে ফিরিয়ে দেয়। কারণ কেডি উচ্চবিদ্যালয় যদি জিলা স্কুলে পরিণত হতো, তাহলে কৃষ্ণধন বাগচির অবদান হারিয়ে যেত।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন কেডি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সে সময়ের প্রাক্তন ও অধ্যয়নরত অনেক শিক্ষার্থীই যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। বেশ কয়েকজন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন।
নওগাঁর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘একুশে পরিষদ নওগাঁ’র সহসভাপতি ও ‘নওগাঁর বরেণ্য ব্যক্তি’ শিরোনামের বইয়ের লেখক মোস্তফা-আল-মেহমুদ রাসেল বলেন, ‘আমি আমার লিখা নওগাঁর বরেণ্য ব্যক্তি বইতে এই বিদ্যালয়ের ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের কথাও তুলে আনা হয়েছে। বিদ্যালয়টির অনেক শিক্ষার্থী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাদের মধ্যে ১১ জন শহীদ হন। তারা হলেন নজমুল হক, কুদরত-ই-এলাহী, কাজী নুরুন নবী, আব্দুল্লাহ আল মামুন, ইদ্রীস আলী, ইব্রাহিম আলী খন্দকার, এস এম মতিউল ইসলাম, জয়নাল আবেদীন, সানা উল্লাহ, হিম্মত আলী এবং আব্দুর রাজ্জাক।’
এই বিদ্যালয় থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিরা হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন তরফদার, আখতারুজ্জামান রঞ্জু, খন্দকার মকবুল হোসেন, আফজাল হোসেন, শফিকুল ইসলাম খান, মমিনুল হক ফুটি, তৌফিক এলাহী এবং আলতাফুল হক চৌধুরী আরব।
বিদ্যালয়ে গিয়ে কথা হয় ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রহমতুল্লাহ ও সপ্তম শ্রেণির সোহরাব হোসেনের সঙ্গে। তারা জানায়, জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠে পড়তে পেরে তারা গর্বিত। এখান থেকে পাস করে অনেক শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছেন। ভবিষ্যতে ভালো ফলাফল অর্জন করে তারা দেশকে জানিয়ে দিতে চায়, তারা নওগাঁ কেডি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র।
বিদ্যালয়টির বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মামুন অর রশীদের সঙ্গে কথা হলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিদ্যালয়টি চালুর পর যোগেশ্বর, শ্রীনরেন্দ্রনাথ, শশীকিশোর চাকদারসহ অনেক নামকরা শিক্ষক এখানে শিক্ষকতা করেছেন। বিদ্যালয়ে দীর্ঘস্থায়ী প্রধান শিক্ষক ছিলেন ব্রজবল্লভ। তিনি ১৮৯৬ থেকে ১৯২৪ সালে মৃত্যুর আগপর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। এরপর হাতেম আলী প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব থাকাকালীন ১৯৪১ সালে স্কুলে প্রথম ম্যাগাজিন প্রকাশ পায়। তৎকালীন গভর্নর সার্জন হার্ডবাক বিদ্যালয়টি একবার পরিদর্শন করেছিলেন। প্রতিবছর বিদ্যালয়টি থেকে এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় শতভাগ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়ে আসছে।’
এখন এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীসংখ্যা ১ হাজার ৯৮৫। ১৬টি কক্ষে পাঠদান চলে। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য প্রধান শিক্ষক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান। একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি নিয়মিত সংস্কৃতি, ক্রীড়া, মানবিক গুণাবলি ও উন্নত মানসিকতা বিকাশে এটি যত্নশীল।
অবকাঠামোগত সমস্যার কথা তুলে ধরে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘বিদ্যালয়টিতে চারটি ভবনে মোট ৪২টি কক্ষ থাকলেও ব্যবহার হয় ১৬টি। বাকিগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী। এ ছাড়া বিদ্যালয়টিতে রয়েছে সীমানাদেয়ালের সমস্যা, বেঞ্চ সংকট। একটি ছাত্রাবাস থাকলেও তা ব্যবহার হয় না।’
জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) আবু সাঈদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কেডি সরকারি উচ্চবিদ্যালয় অনেক পুরাতন একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেখানে কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন। স্কুল কর্তৃপক্ষ চাহিদাপত্র দিয়েছে। আমরা সেটা শিক্ষা অধিদপ্তরকে অবহিত করেছি। বরাদ্দ পেলে অবশ্যই সমস্যাগুলোর সমাধান করা হবে।’
আরও পড়ুন:গাইবান্ধায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন আশরাফ আলী নামের এক রিকশাচালক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার সুন্দরগঞ্জ-কুপতলা সড়কের ৭৫ নম্বর রেলগেট নামক এলাকায় এ ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড ঘটে। পরে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে সাদেকুলকে কারাগারে পাঠানো হয়।
৫০ বছর বয়সী রিকশাচালক আশরাফ আলী সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের সাহার ভিটার গ্রামের মৃত ফয়জার রহমানের ছেলে। অন্যদিকে ছিনতাই ও হত্যায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলাম কুপতলা ইউনিয়নের রামপ্রসাদ গ্রামের বাসিন্দা।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাসুদ রানা।
ওসি জানান, প্রতিদিনের মতোই বৃহস্পতিবার রাতে রিকশা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন আশরাফ আলী। তিনি কুপতলা এলাকার ৭৫ নম্বর রেলগেটে পৌঁছালে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সাদেকুল ইসলাম তার পথ রোধ করে ছুরি ধরে রিকশা এবং চাবি কেড়ে নিয়ে তাকে চলে যেতে বলেন। আশরাফ আলী এতে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে প্রথমে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত সাদেকুল আশরাফ আলীর পেটে ছুরিকাঘাত করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে চিকিৎসার জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি বলেন, ‘এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ওই রাতেই অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে রিকশাটিও উদ্ধার করা হয়। পরে আজ (শুক্রবার) দুপুরে সাদেকুলকে একমাত্র আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।’
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখায় প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে শাখা ম্যানেজারসহ ৩ কর্মকর্তাকে আটকের পর কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর। এদিন দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরণ করে সাঁথিয়া থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের জিআরও এএসআই মাহবুবুর রহমান জানান, বিকেলে সাঁথিয়া থানা থেকে এনে তাদের আদালতে তোলা হয়। এ সময় কেউ তাদের জন্য জামিন আবেদন করেননি। ফলে আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আটককৃতরা হলেন- অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) সুজানগর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর এবং ক্যাশিয়ার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত চক্রবর্তী।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় অফিস থেকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট অডিট টিম কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে আসে। দিনভর অডিট করে তারা ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আর্থিক অনিয়ম পান। এ বিষয়ে সাঁথিয়া থানায় ওই শাখার ম্যানেজার (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী ও সিনিয়র অফিসার আবু জাফরকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দিলে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে তাদের তিনজনকে আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অডিটে অনিয়ম ধরা পড়লে তাদের আটক করে সাঁথিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আজ (শুক্রবার) দুপুরে জিডির ভিত্তিতে আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে দুদক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
আরও পড়ুন:দীর্ঘ এক যুগ বন্ধ থাকার পর পুনরায় শ্রীমঙ্গল-পাত্রখোলা সড়কে বাস পরিষেবা চালু করেছে শ্রীমঙ্গল-শমশেরনগর-কুলাউড়া বাস মালিক সমিতি।
বৃহস্পতিবার সকালে কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসিদ আলী ও ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোলেমান মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে বাস সার্ভিস উদ্বোধন করেন শ্রীমঙ্গল বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
প্রাথমিক পর্যায়ে এই রুটে ৫০ মিনিট পরপর ২৪টি বাস চলাচল করবে বলে সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শ্রীমঙ্গল থেকে ভানুগাছ মাধবপুর সড়ক দিয়ে ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা চা বাগান পর্যন্ত এ বাস চলাচল করবে।
কুরমা থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত বাসভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ টাকা। এছাড়া পাত্রখোলা থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত ৫০ টাকা, মাধবপুর থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত ৪০ টাকা, কুরমা থেকে ভানুগাছ পর্যন্ত ৪০ টাকা, পাত্রখোলা থেকে ভানুগাছ পর্যন্ত ২৫ টাকা, মাধবপুর থেকে ভানুগাছ পর্যন্ত ১৫ টাকা এবং ভানুগাছ থেকে শ্রীমঙ্গল ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ টাকা।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় কুরমা নতুন বাস স্ট্যান্ডে বাস চলাচলের উদ্বোধন শেষে মতবিনিময় সভায় শ্রীমঙ্গল-শমসেরনগর-কুলাউড়া বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. তসলিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রকৌশলী যোগেশ্বর চন্দ্র সিংহের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপি চেয়ারম্যান সোলেমান মিয়া, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান শাওন, ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ, নুরুল হক, বাস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দুলাল, সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক, গ্রুপ সভাপতি কাসেম মিয়া ও আব্দুস সালাম প্রমুখ।
এর আগে মাধবপুর বাজারে বাস প্রবেশ করলে এলাকাবাসী বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এ সময় যাত্রীদের মানসম্পন্ন সেবা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
এদিকে সিএনজি থেকে ভাড়া কম করে বাস সার্ভিস চালু হওয়ায় যাত্রীসহ স্কুল কলেজ শিক্ষার্থীরা বেজায় খুশি।
পঞ্চগড় সদর উপজেলায় চাওয়াই নদীতে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে আলমি আক্তার ও ইসরাত জাহান সিফাত নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে জেলার সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের চাওয়াই নদীর চৈতন্যপাড়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
১২ বছরের আলমি ওই এলাকার আব্দুল আজিজের মেয়ে এবং ৯ বছরের সিফাত সাইফুল ইসলামের মেয়ে। তারা দুজনে সম্পর্কে ফুফু-ভাতিজি।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শুক্রবার দুপুরে আলমি ও সিফাত বাড়ির পাশে চাওয়াই নদীতে গোসল করতে যায়৷ গোসল করতে গিয়ে সিফাত পানিতে ডুবে যেতে থাকলে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যায় আলমি৷ পরে দুজনেই পানিতে ডুবে যায়। এ সময় নদীর পাড়ে থাকা অন্য আরেক শিশু ঘটনাটি দেখে দৌড়ে তাদের পরিবারের লোকজনকে খবর দিলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে মৃত অবস্থায় নদী থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে।
খবর পেয়ে পুলিশ দুই শিশুর মরদেহের সুরতহাল করে।
পঞ্চগড় সদর থানার উপ-পরিদর্শক পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘দুই শিশুর মধ্যে একজন সাঁতার জানত, আরেকজন জানত না। একজন আরেকজনকে বাঁচাতে গিয়ে দুজনেই একসঙ্গে ডুবে মারা গেছে বলে জানিয়েছে স্থনীয়রা।’
মরদেহের সুরতহাল শেষে ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:আনসার সদস্য তরিকুল ইসলাম। বাড়ি তার বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর গ্রামে। বর্তমানে ঢাকার সুত্রাপুর থানায় কর্মরত।
৩৮ বছর বয়সী এ যুবকের নেশা বিয়ে করা। যেখানেই যান সেখানেই তিনি বিয়ে করেন। এ পর্যন্ত ৭টি বিয়ে করেছেন।
সর্বশেষ তিনি বিয়ে করেন ঝিনাইদহ শহরের পবহাটি এলাকার। ঢাকায় থাকাকালে সেঁজুতি নামের পবহাটির একটি মেয়ের সঙ্গে সপ্তমবারের মতো সংসার শুরু করেন তিনি।
তবে এর মানে এই নয় যে, তার আগের সব স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। বর্তমানে তৃতীয় স্ত্রী পারভীন তার গ্রামের বাড়িতে এবং ষষ্ঠ স্ত্রী রয়েছেন যশোরের বেনাপোলে। ২ স্ত্রীর ঘরে ২টি সন্তানও রয়েছে তরিকুলের।
সম্প্রতি সংসার জীবন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এই যুবক। স্বামীকে ফিরে পেতে আড়াই বছরের মেয়েকে নিয়ে ঝিনাইদহের পবহাটিতে আসেন ষষ্ঠ স্ত্রী হোসনে আরা আক্তার সাথী। তরিকুলকে স্বামী দাবি করলে সেখানে বেঁধে যায় রণক্ষেত্র। স্বামীকে নিয়ে সেঁজুতির সঙ্গে শুরু হয় তার কাড়াকাড়ি। কোনো উপায় না পেয়ে পালিয়ে যান আনসার সদস্য তরিকুল ইসলাম।
নিউজবাংলাকে সাথী জানান, বেনাপোল বন্দরে কর্মরত থাকা অবস্থায় নিজেকে এতিম পরিচয় দিয়ে তাকে বিয়ে করেন তরিকুল। ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তাদের বিয়ের পর থেকে একসঙ্গেই ছিলেন দুজন। তবে ২০২২ সালে বদলি হয়ে ঢাকায় চলে যান তরিকুল। তার কিছুদিন পর থেকে সাথীর সঙ্গে তার সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ।
তিনি জানান, ঢাকায় বদলি হওয়ার পর থেকে তার ও তাদের সন্তানের কোনো খরচ পাঠাতেন না তরিকুল। এরই মধ্যে সেঁজুতির সঙ্গে তার ইমোতে পরিচয় হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে সেঁজুতিকে বিয়ে করেন তিনি।
সাথী বলেন, ‘গত ঈদে আমার কাছে গিয়ে ৬ দিন ছিল। সেখানে আমাকে ভুলিয়ে আমার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে চলে আসে। তারপর আবার সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। আমার আড়াই বছরের মেয়েটি বাবার জন্য সব সময় কান্নাকাটি করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামী ঝিনাইদহ আছে- এমন খবর পেয়ে আমরা ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আর এর মধ্যে আবার পালিয়েছে সে (তরিকুল)। আমি তরিকুল ও সেঁজুতির বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে জানতে আনসার সদস্য তরিকুলের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে একটি পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের পাইপের মধ্যে পড়ে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১১টার পর থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের পূর্ব নেমাজপুর গ্রামে মাঠের মধ্যে থাকা ওই পাইপ থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করছিলেন।
বিকেল সোয়া ৪টার দিকে মানসিক প্রতিবন্ধী রনি বর্মনকে (২৩) অবশেষে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, বিএমডিএর গভীর নলকূপটির পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায়, নতুন করে আরেকটি গভীর নলকূপ কিছুদিন আগে বসানো হয়, ফলে আগেরটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে ছিল। ওই পরিত্যক্ত নলকূপের পাইপের মধ্যেই পড়ে যান রনি বর্মন।
নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তারেকুর রহমান জানান, প্রায় ৫ ঘণ্টার বেশি সময়ের চেষ্টায় বিকেলে সোয়া ৪টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রনি বর্মনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। এখন আইনি প্রক্রিয়া শেষে পুলিশ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবে।
স্থানীয়রা জানান, রনি বর্মন গভীর নলকূপের ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করতেন। সকালে পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের পাইপের কাছে গেলে,পড়ে যান। এ সময় মাঠের কয়েকজন কৃষক ওই নলকূপের কাছে পানি খাওয়ার জন্য এসেছিলেন, তারা ছেলেটির কান্নার আওয়াজ শুনে সবাইকে জানান, খবর দেয়া হয় ফায়ার সার্ভিসকে।
মানিকগঞ্জে মাদ্রাসার ছাদে খেলার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাটিতে পড়ে মাহিয়া আক্তার নামের এক ছাত্রী নিহত হয়েছে।
শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার বাসস্ট্যান্ডের কাছে অবস্থিত আয়েশা সিদ্দিকা মহিলা মাদ্রাসায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
১৭ বছর বয়সী মাহিয়া আক্তার মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বড় কালিয়াকৈর এলাকার আল মামুনের মেয়ে। সে আয়েশা সিদ্দিকা মহিলা মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্রী ছিল।
মাদ্রাসার শিক্ষিকা শারমিন আক্তার জানান, সকালে ক্লাসের ফাঁকে মাদ্রাসার ছাদে খেলাধুলা করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাদ্রাসার ভবনের চার তলা থেকে নিচে পড়ে যায়। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছিল, কিন্তু ঢাকায় নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. হাবিল হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মন্তব্য