কৃষ্ণধন (কেডি) সরকারি উচ্চবিদ্যালয় নওগাঁর সবচেয়ে পুরোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৩৮ বছরের পথচলায় সময়ের সঙ্গে শুধু জেলা শহরই নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়েছে এই বিদ্যালয়। এর আলোয় আলোকিত হয়ে দেশ-বিদেশে অবস্থান করছেন অনেকেই।
রাষ্ট্র ও সমাজে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকারী অনেকেই এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।
১৯৭৭ সালে নওগাঁ মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হয়। কৃষিসমৃদ্ধ এই মহকুমার লোকজনের মোটা ভাত-কাপড়ের অভাব ছিল না বলেই তারা লেখাপড়া শেখায় তেমন তাগিদ অনুভব করেনি। স্থানীয় জমিদাররা উচ্চশিক্ষার জন্য তাদের সন্তানদের দেশ-বিদেশের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাতেন। জনসাধারণের মধ্যেও শিক্ষা বিস্তারে উদাসীনতা ছিল।
এই পরিস্থিতিতে ১৮৮৪ সালে একটি উচ্চবিদ্যালয় (পরবর্তী সময়ে কেডি উচ্চবিদ্যালয় নামে খ্যাত) প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন তৎকালীন সাব ডেপুটি কালেক্টর কৃষ্ণধন বাগচি। সহযোগিতায় এগিয়ে আসে মহকুমার জমিদার, বিত্তশালী মানুষ ও কৃষকরা। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর নামকরণ নিয়ে বিতণ্ডা দেখা দেয়। তবে এর নামকরণ করা হয় কৃষ্ণধন বাগচির নামেই। পরবর্তী সময়ে এই নামের কোনো পরিবর্তন হয়নি।
১৯৬০ সালে দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অধীনে বিদ্যালয়টিকে একটি বহুমুখী বিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সরকার অনুদান দেয়। তারপর নতুন ব্যবস্থা অনুযায়ী বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, মানবিক এবং কৃষি বিভাগের পড়াশোনা চালু করা হয়। ১৯৭০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা লাভ করে।
১৯৮৪ সালে নওগাঁ জেলা ঘোষণা হওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এই বিদ্যালয়কে জিলা স্কুল নামকরণের প্রস্তাব পাঠানো হয়। সে সময় কর্তৃপক্ষ এই প্রস্তাবকে ফিরিয়ে দেয়। কারণ কেডি উচ্চবিদ্যালয় যদি জিলা স্কুলে পরিণত হতো, তাহলে কৃষ্ণধন বাগচির অবদান হারিয়ে যেত।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন কেডি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সে সময়ের প্রাক্তন ও অধ্যয়নরত অনেক শিক্ষার্থীই যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। বেশ কয়েকজন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন।
নওগাঁর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘একুশে পরিষদ নওগাঁ’র সহসভাপতি ও ‘নওগাঁর বরেণ্য ব্যক্তি’ শিরোনামের বইয়ের লেখক মোস্তফা-আল-মেহমুদ রাসেল বলেন, ‘আমি আমার লিখা নওগাঁর বরেণ্য ব্যক্তি বইতে এই বিদ্যালয়ের ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের কথাও তুলে আনা হয়েছে। বিদ্যালয়টির অনেক শিক্ষার্থী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাদের মধ্যে ১১ জন শহীদ হন। তারা হলেন নজমুল হক, কুদরত-ই-এলাহী, কাজী নুরুন নবী, আব্দুল্লাহ আল মামুন, ইদ্রীস আলী, ইব্রাহিম আলী খন্দকার, এস এম মতিউল ইসলাম, জয়নাল আবেদীন, সানা উল্লাহ, হিম্মত আলী এবং আব্দুর রাজ্জাক।’
এই বিদ্যালয় থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিরা হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন তরফদার, আখতারুজ্জামান রঞ্জু, খন্দকার মকবুল হোসেন, আফজাল হোসেন, শফিকুল ইসলাম খান, মমিনুল হক ফুটি, তৌফিক এলাহী এবং আলতাফুল হক চৌধুরী আরব।
বিদ্যালয়ে গিয়ে কথা হয় ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রহমতুল্লাহ ও সপ্তম শ্রেণির সোহরাব হোসেনের সঙ্গে। তারা জানায়, জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠে পড়তে পেরে তারা গর্বিত। এখান থেকে পাস করে অনেক শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছেন। ভবিষ্যতে ভালো ফলাফল অর্জন করে তারা দেশকে জানিয়ে দিতে চায়, তারা নওগাঁ কেডি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র।
বিদ্যালয়টির বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মামুন অর রশীদের সঙ্গে কথা হলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিদ্যালয়টি চালুর পর যোগেশ্বর, শ্রীনরেন্দ্রনাথ, শশীকিশোর চাকদারসহ অনেক নামকরা শিক্ষক এখানে শিক্ষকতা করেছেন। বিদ্যালয়ে দীর্ঘস্থায়ী প্রধান শিক্ষক ছিলেন ব্রজবল্লভ। তিনি ১৮৯৬ থেকে ১৯২৪ সালে মৃত্যুর আগপর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। এরপর হাতেম আলী প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব থাকাকালীন ১৯৪১ সালে স্কুলে প্রথম ম্যাগাজিন প্রকাশ পায়। তৎকালীন গভর্নর সার্জন হার্ডবাক বিদ্যালয়টি একবার পরিদর্শন করেছিলেন। প্রতিবছর বিদ্যালয়টি থেকে এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় শতভাগ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়ে আসছে।’
এখন এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীসংখ্যা ১ হাজার ৯৮৫। ১৬টি কক্ষে পাঠদান চলে। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য প্রধান শিক্ষক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান। একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি নিয়মিত সংস্কৃতি, ক্রীড়া, মানবিক গুণাবলি ও উন্নত মানসিকতা বিকাশে এটি যত্নশীল।
অবকাঠামোগত সমস্যার কথা তুলে ধরে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘বিদ্যালয়টিতে চারটি ভবনে মোট ৪২টি কক্ষ থাকলেও ব্যবহার হয় ১৬টি। বাকিগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী। এ ছাড়া বিদ্যালয়টিতে রয়েছে সীমানাদেয়ালের সমস্যা, বেঞ্চ সংকট। একটি ছাত্রাবাস থাকলেও তা ব্যবহার হয় না।’
জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) আবু সাঈদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কেডি সরকারি উচ্চবিদ্যালয় অনেক পুরাতন একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেখানে কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন। স্কুল কর্তৃপক্ষ চাহিদাপত্র দিয়েছে। আমরা সেটা শিক্ষা অধিদপ্তরকে অবহিত করেছি। বরাদ্দ পেলে অবশ্যই সমস্যাগুলোর সমাধান করা হবে।’
আরও পড়ুন:কেশবপুরের ঐতিহ্য কালোমুখো হনুমান খাদ্য সংকট ও বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় খাবার না পেয়ে মারাও যাচ্ছে। কালোমুখো হনুমান রক্ষার দাবি উঠেছে।
জানা গেছে, একসময় কেশবপুরে ছিল কালোমুখো হনুমানের অভয়ারণ্য। বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় এবং খাদ্য সংকটে সময়ের গতির সঙ্গে কমে যাচ্ছে হনুমান। বর্তমানে ১৮০ থেকে ২০০টি হনুমান কেশবপুরে রয়েছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ জানায়। এখান থেকে ৪/৫ বছর আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশ বিভক্তির আগে ভারতের মাড়োয়াররা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যশোরের কেশবপুরে বসবাসের পাশাপাশি আসা-যাওয়া করত। এ সময় তাদের যানবাহনে করে দুটি কালোমুখো হনুমান ভারত থেকে কেশবপুরে আসে। সেই থেকে হনুমানের এখানে পত্তন শুরু হয়। ওই এক জোড়া হনুমান থেকে এখানে শত শত হনুমানের কালের আবর্তনে ওরা আজ বিলুপ্তির পথে। একসময় কেশবপুর অঞ্চলে ঘন বনজঙ্গল ছিল। এসব বনের ফল ও লতাপাতা খেয়ে ওরা জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বন উজাড়সহ ঘনবসতি এবং এলাকায় অবৈধ ইটভাটায় গিলে খাচ্ছে এসব বনের কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে বন। এদিকে কেশবপুর উপজেলায় পল্লীবিদ্যুতের তারে কভার সিস্টেম না থাকায় প্রায়ই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ওরা মারা যাচ্ছে। খাদ্য সংকটের কারণে কেশবপুরের হনুমান দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে।
উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, কেশবপুর এলাকায় বনজঙ্গল কমে যাওয়ার কারণে হনুমানের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ওদের রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, হনুমান রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও ব্যক্তি গত ভাবেও অনেকেই খাদ্য দেয়, যার কারণে ওরা গ্রামাঞ্চল ছেড়ে বর্তমানে শহরে বেশি বিচরণ করছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সচরতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশ গ্রহণের সমন্বিত পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে (২৫ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তৃতীয় তলায় মিনি কনফারেন্স হলরুমে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন,নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসিন, গ্রাম আদালত নোয়াখালী ম্যানেজার আহসানুল্লাহ চৌধুরী মামুনসহ এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।
এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’
আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।
মন্তব্য