কৃষ্ণধন (কেডি) সরকারি উচ্চবিদ্যালয় নওগাঁর সবচেয়ে পুরোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ১৩৮ বছরের পথচলায় সময়ের সঙ্গে শুধু জেলা শহরই নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়েছে এই বিদ্যালয়। এর আলোয় আলোকিত হয়ে দেশ-বিদেশে অবস্থান করছেন অনেকেই।
রাষ্ট্র ও সমাজে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনকারী অনেকেই এই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।
১৯৭৭ সালে নওগাঁ মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হয়। কৃষিসমৃদ্ধ এই মহকুমার লোকজনের মোটা ভাত-কাপড়ের অভাব ছিল না বলেই তারা লেখাপড়া শেখায় তেমন তাগিদ অনুভব করেনি। স্থানীয় জমিদাররা উচ্চশিক্ষার জন্য তাদের সন্তানদের দেশ-বিদেশের স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাতেন। জনসাধারণের মধ্যেও শিক্ষা বিস্তারে উদাসীনতা ছিল।
এই পরিস্থিতিতে ১৮৮৪ সালে একটি উচ্চবিদ্যালয় (পরবর্তী সময়ে কেডি উচ্চবিদ্যালয় নামে খ্যাত) প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন তৎকালীন সাব ডেপুটি কালেক্টর কৃষ্ণধন বাগচি। সহযোগিতায় এগিয়ে আসে মহকুমার জমিদার, বিত্তশালী মানুষ ও কৃষকরা। বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর নামকরণ নিয়ে বিতণ্ডা দেখা দেয়। তবে এর নামকরণ করা হয় কৃষ্ণধন বাগচির নামেই। পরবর্তী সময়ে এই নামের কোনো পরিবর্তন হয়নি।
১৯৬০ সালে দ্বিতীয় পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অধীনে বিদ্যালয়টিকে একটি বহুমুখী বিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সরকার অনুদান দেয়। তারপর নতুন ব্যবস্থা অনুযায়ী বিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, মানবিক এবং কৃষি বিভাগের পড়াশোনা চালু করা হয়। ১৯৭০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা লাভ করে।
১৯৮৪ সালে নওগাঁ জেলা ঘোষণা হওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এই বিদ্যালয়কে জিলা স্কুল নামকরণের প্রস্তাব পাঠানো হয়। সে সময় কর্তৃপক্ষ এই প্রস্তাবকে ফিরিয়ে দেয়। কারণ কেডি উচ্চবিদ্যালয় যদি জিলা স্কুলে পরিণত হতো, তাহলে কৃষ্ণধন বাগচির অবদান হারিয়ে যেত।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন কেডি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সে সময়ের প্রাক্তন ও অধ্যয়নরত অনেক শিক্ষার্থীই যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। বেশ কয়েকজন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন।
নওগাঁর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘একুশে পরিষদ নওগাঁ’র সহসভাপতি ও ‘নওগাঁর বরেণ্য ব্যক্তি’ শিরোনামের বইয়ের লেখক মোস্তফা-আল-মেহমুদ রাসেল বলেন, ‘আমি আমার লিখা নওগাঁর বরেণ্য ব্যক্তি বইতে এই বিদ্যালয়ের ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের কথাও তুলে আনা হয়েছে। বিদ্যালয়টির অনেক শিক্ষার্থী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাদের মধ্যে ১১ জন শহীদ হন। তারা হলেন নজমুল হক, কুদরত-ই-এলাহী, কাজী নুরুন নবী, আব্দুল্লাহ আল মামুন, ইদ্রীস আলী, ইব্রাহিম আলী খন্দকার, এস এম মতিউল ইসলাম, জয়নাল আবেদীন, সানা উল্লাহ, হিম্মত আলী এবং আব্দুর রাজ্জাক।’
এই বিদ্যালয় থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিরা হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন তরফদার, আখতারুজ্জামান রঞ্জু, খন্দকার মকবুল হোসেন, আফজাল হোসেন, শফিকুল ইসলাম খান, মমিনুল হক ফুটি, তৌফিক এলাহী এবং আলতাফুল হক চৌধুরী আরব।
বিদ্যালয়ে গিয়ে কথা হয় ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রহমতুল্লাহ ও সপ্তম শ্রেণির সোহরাব হোসেনের সঙ্গে। তারা জানায়, জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠে পড়তে পেরে তারা গর্বিত। এখান থেকে পাস করে অনেক শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছেন। ভবিষ্যতে ভালো ফলাফল অর্জন করে তারা দেশকে জানিয়ে দিতে চায়, তারা নওগাঁ কেডি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র।
বিদ্যালয়টির বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ মামুন অর রশীদের সঙ্গে কথা হলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিদ্যালয়টি চালুর পর যোগেশ্বর, শ্রীনরেন্দ্রনাথ, শশীকিশোর চাকদারসহ অনেক নামকরা শিক্ষক এখানে শিক্ষকতা করেছেন। বিদ্যালয়ে দীর্ঘস্থায়ী প্রধান শিক্ষক ছিলেন ব্রজবল্লভ। তিনি ১৮৯৬ থেকে ১৯২৪ সালে মৃত্যুর আগপর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। এরপর হাতেম আলী প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব থাকাকালীন ১৯৪১ সালে স্কুলে প্রথম ম্যাগাজিন প্রকাশ পায়। তৎকালীন গভর্নর সার্জন হার্ডবাক বিদ্যালয়টি একবার পরিদর্শন করেছিলেন। প্রতিবছর বিদ্যালয়টি থেকে এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় শতভাগ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়ে আসছে।’
এখন এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীসংখ্যা ১ হাজার ৯৮৫। ১৬টি কক্ষে পাঠদান চলে। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলার জন্য প্রধান শিক্ষক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান। একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি নিয়মিত সংস্কৃতি, ক্রীড়া, মানবিক গুণাবলি ও উন্নত মানসিকতা বিকাশে এটি যত্নশীল।
অবকাঠামোগত সমস্যার কথা তুলে ধরে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘বিদ্যালয়টিতে চারটি ভবনে মোট ৪২টি কক্ষ থাকলেও ব্যবহার হয় ১৬টি। বাকিগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী। এ ছাড়া বিদ্যালয়টিতে রয়েছে সীমানাদেয়ালের সমস্যা, বেঞ্চ সংকট। একটি ছাত্রাবাস থাকলেও তা ব্যবহার হয় না।’
জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) আবু সাঈদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কেডি সরকারি উচ্চবিদ্যালয় অনেক পুরাতন একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেখানে কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রয়োজন। স্কুল কর্তৃপক্ষ চাহিদাপত্র দিয়েছে। আমরা সেটা শিক্ষা অধিদপ্তরকে অবহিত করেছি। বরাদ্দ পেলে অবশ্যই সমস্যাগুলোর সমাধান করা হবে।’
আরও পড়ুন:জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
মন্তব্য