বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ হত্যায় তার বন্ধু আমাতুল বুশরার জড়িত থাকার প্রমাণ এখনও পায়নি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তদন্তে ফারদিনের সঙ্গে বুশরার নিছক পরিচয় ও বন্ধুত্বের তথ্যই পাওয়া গেছে।
তদন্তকারীরা বলছেন, মঙ্গলবার রিমান্ড শেষে আদালতে পাঠানো হবে বুশরাকে।
বুয়েট ছাত্র ফারদিন গত ৪ নভেম্বর নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পর ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। বর্তমানে হত্যা মামলাটির তদন্ত করছে ডিবি। পাশাপাশি র্যাবসহ আরও কয়েকটি সংস্থা ছায়াতদন্ত করছে।
পুলিশি তদন্তে জানা যায়, নিখোঁজ হওয়ার দিন বিকেল থেকে রাত ১০টা নাগাদ বুশরাকে নিয়ে রাজধানীর কয়েকটি জায়গায় ঘোরাঘুরি করেন ফারদিন। এরপর রামপুরায় বুশরা যে মেসে থাকেন তার কাছাকাছি তাকে পৌঁছে দেন। এরপর আর ফারদিন বুয়েট ক্যাম্পাস বা নিজের বাসায় ফেরেননি।
ফারদিনের মরদেহ উদ্ধারের তিন দিনের মাথায় ১০ নভেম্বর আমাতুল্লাহ বুশরার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা ও পরিকল্পিতভাবে লাশ গোপন করার অভিযোগ এনে রামপুরা থানায় মামলা করেন তার বাবা কাজী নুরুউদ্দিন রানা।
ওই দিনই তাকে গ্রেপ্তার করে রামপুরা থানা পুলিশ। তাকে সাত দিনের রিমান্ডে চেয়ে পুলিশ আবেদন করলে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ডে দেয়। মামলাটির তদন্তভার ডিবি কাছে যাওয়ায় রিমান্ডে বুশরাকে জিজ্ঞাসাবাদের দায়িত্বও পায় গোয়েন্দা পুলিশ।
তবে বুশরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এখন পর্যন্ত ফারদিন হত্যায় তার কোনো যোগসাজস পাননি গোয়েন্দারা।
ডিবির মতিঝিল বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) রাজিব আল মাসুদ সোমবার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ফারদিন হত্যায় বুশরার সম্পৃক্ততার বিষয়ে কোনো কংক্রিট প্রমাণ পাইনি। তবে আমাদের তদন্ত চলমান। পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে উপস্থাপন করা হবে।’
মামলায় বুশরাকে আসামি করা ও গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে রামপুরা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ফারদিনের বান্ধবী বুশরার সেই ধরনের কোনো সম্পৃক্ততার তথ্য না পাওয়ায় মামলায় তার নাম উল্লেখ না করতে অনুরোধ করেছিলাম। আমরা তাকে (মামলার বাদি) পরামর্শ দিয়েছিলাম, যেহেতু সেও (বুশরা) একজন শিক্ষার্থী, পরবর্তী অনুসন্ধানে তার সংশ্লিষ্টতা উঠে এলে আমরা আসামি হিসেবে তাকে যুক্ত করব।
‘তবে তিনি (বাদি) কোনো কথা মানতেই রাজি ছিলেন না। তার বক্তব্য ছিল, যেহেতু ওই মেয়ে শেষ সময়ে আমার ছেলের সঙ্গে ছিল তা্ই অবশ্যই তাকে মামলার আসামি করতে হবে।
‘অগত্যা তিনি এজাহারটি যেভাবে লিখে দিয়েছেন, সেভাবেই আমরা নিয়েছি। মামলার একমাত্র আসামি হওয়ায় তাকে (বুশরা) সেদিনই গ্রেপ্তার করি।’
ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পরেও আমরা তার কোনো সংশ্লিষ্ট পাইনি। পরে তাকে ডিবিতে পাঠানো হয়। ডিবি কর্মকর্তারাই তাকে এখন জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।’
রারধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী বুশরার বাবা মঞ্জুরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার মেয়েকে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বানানো হয়েছে। আমার মেয়ে ফারদিন হত্যায় জড়িত নয়।
‘আমার মেয়েকে বিনা দোষে মামলার আসামি ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফারদিন হত্যায় প্রকৃত দোষীকে শাস্তি দেয়া হোক। আমার নির্দোষ মেয়েকে মুক্তি দিতে সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’
এর আগে বুশরার মা ইয়াসমিন নিউজবাংলাকে জানান, স্কুল ও কলেজে পড়ার সময় থেকেই বিভিন্ন বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন বুশরা। সে জন্য যারা বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় বা পারদর্শী, তাদের সঙ্গে বুশরা নিজে থেকেই যোগাযোগ রাখতেন।
তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের শেষের দিকে ফেসবুকে একটি গ্রুপের মাধ্যমে বুশরার পরিচয় হয় ফারদিন নূর পরশের সঙ্গে। পরিচয়ের পর থেকে মেসেঞ্জার ও মোবাইলে কলে বিভিন্ন সময়ে একে অপরের সঙ্গে কথা বলত। আর এভাবেই তাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।’
আরও পড়ুন: ফারদিন ও বুশরার পরিচয় চার বছরের
বুশরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা পুলিশের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ফারদিন হত্যার বুশরার কোনো সম্পৃক্ততা আমরা পাইনি।’
তাহলে কেন তাকে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রেপ্তার- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ঘটনার দিন বুশরা ফারদিনের সঙ্গে ছিলেন। আর ফারদিনের বাবা তাকে আসামি করতে চাচ্ছিলেন। সে কারণেই তাকে আসামি করতে হয়েছে। এজহারও বাদি নিজে লিখেছেন, যে কারণে তার নাম রাখতে হয়েছে।
‘এছাড়া বুয়েট শিক্ষার্থী হত্যার ইস্যুটি সেনসেটিভ। আমাদের সামনে বুশরাকে মামলার আসামি ও গ্রেপ্তার করা ছাড়া উপায় ছিল না।‘
এর আগে শনিবার ডিবি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘মাদকের কারণে সে (ফারদিন) খুন হয়েছেন, এমন কথা আমরা বলছি না, আবার এক নম্বর আসামি যাকে করা হয়েছে, তিনি খুন করেছেন সেটাও আমরা বলছি না।’
আরও পড়ুন:
এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদের বিরুদ্ধে ২৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে মামলা করেছেন এক নারী ব্যবসায়ী। মামলায় মাসুদের ব্যক্তিগত সহকারী আকিজ উদ্দিনকেও আসামি করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরীর আসকারদিঘির পাড়ে ফিউশন ইটস্ নামে এক রেস্তোরাঁ মালিক নাজমে নওরোজ ২৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বক্কর সিদ্দিকের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
ফিউশন ইটস্ নামের এই রেস্তোরাঁ প্রথমে ‘এরিস্টোক্র্যাট’ ও পরে ‘লা এরিস্টোক্রেসি’ নামে চালাতেন নাজমে নওরোজ।
মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, একজন নারী উদ্যোক্তা হওয়ার সুবাদে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল আলম (এস আলম) মাসুদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এ পরিচয়ের সূত্র ধরে তাকে ব্যবসা বাড়ানোর জন্য আসামি তার মালিকানাধীন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক কাজীর দেউড়ি মহিলা শাখা থেকে প্রথমে দুই কোটি টাকা ঋণ নেয়ার ব্যবস্থা করে দেন। এরপর কয়েক দফায় তাকে মোট ৩০ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হয়। ২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে এই ঋণগুলো নেয়া হয়।
বাদী অভিযোগ করেন, ঋণের বিপরীতে ব্যাংকে তার সই করা বেশ কয়েক পাতা খালি চেক দিতে হয়েছিল। সাইফুল আলম মাসুদ ও তার ব্যক্তিগত সহকারী আকিজ উদ্দিন এসব খালি চেকের মাধ্যমে ও ধার হিসেবে তার কাছ থেকে ২৯ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। গত ২২ জুলাই টাকাগুলো ফেরত চাইলে বাদীকে অপহরণের হুমকি দেয়া হয়।
বাদীর আইনজীবী শুভঙ্কর ঘোষ সাংবাদিকদের জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
আরও পড়ুন:র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) এ কে এম শহিদুর রহমান বলেছেন, র্যাবের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ আছে গুম ও খুনের। নারায়ণগঞ্জের সাত খুনসহ সেসব বিষয়ে সবার কাছে ক্ষমা চাইছি। পাশাপাশি স্বীকার করছি যে র্যাবে আয়নাঘর ছিল, আছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক এসব কথা বলেন। যদিও ৭ অক্টোবর তিনি দাবি করেছিলেন যে র্যাবে আয়নাঘর বলে কিছু নেই।
র্যাবের গোপন বন্দিশালা বা আয়নাঘরের বিষয়ে মহাপরিচালক বলেন, ‘র্যাবে আয়নাঘর ছিল, আছে। সেটা সেভাবেই রাখা হয়েছে। গুম, খুন কমিশন নির্দেশ দিয়েছে আয়নাঘরসহ যা যে অবস্থায় আছে সেভাবেই রাখার জন্য। আমরা কোনো পরিবর্তন, পরিবর্ধন করিনি।’
তিনি বলেন, ‘র্যাব সৃষ্টির পর থেকে যারা র্যাব সদস্যদের দ্বারা নির্যাতিত, অত্যাচারিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের কাছে এবং নারায়ণগঞ্জের সাত খুনসহ যারা র্যাবের দ্বারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, তাদের পরিবারের কাছে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি এবং ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘আপনাদের নিশ্চয়তা দিচ্ছি- আমি যতদিন দায়িত্ব পালন করব এবং আমার এই কর্মকর্তারা যারা দায়িত্বে আছেন, তারা কখনও কারও নির্দেশে গুম-খুনের মতো ফৌজদারি অপরাধে জড়িত হবেন না। র্যাব সদস্যদের দ্বারা নির্যাতন ও অত্যাচারের মতো ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে যেন বিচার হয়, সেটা আমরা প্রত্যাশা করি।’
বিচারের মাধ্যমে দায়মুক্তি চেয়ে র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গুমের ঘটনা তদন্তে কমিশন করেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ ধরনের অপরাধ আমলে নিয়ে বিচার কাজ পরিচালনা করছে।’
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে র্যাবের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগগুলোর বিচার হবে বলে জানান তিনি। এভাবেই র্যাবের দায়মুক্তি সম্ভব বলেও উল্লেখ করেন ডিজি শহিদুর রহমান।
সম্প্রতি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল (বিএনপি) র্যাব বিলুপ্তির দাবি তুলেছে। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে, তা-ই মেনে নেয়া হবে। সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আমরা থাকলাম।’
র্যাব ডিজি বলেন, ‘দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে প্রত্যাশিত জায়গায় এখনও পৌঁছায়নি। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে র্যাব তার দায়িত্ব আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবে।’
মহাপরিচালক বলেন, ‘৫ আগস্টের পর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। পরে র্যাবের সদস্যরা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ শুরু করে। এ কাজ করতে গিয়ে র্যাবের ১৬ জন সদস্য বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, মাদক ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া যায়।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে র্যাবের ৫৮ জন কর্মকর্তা ও চার হাজার ২৪৬ জন সদস্যকে বিভিন্ন অপরাধে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। ৫ আগস্টের পর আমাদের কিছু চ্যালেঞ্জ ছিল। আনসার বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে বিদ্রোহ, গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিতিশীলতা, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে কর্মবিরতিসহ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে র্যাব।’
র্যাবের পোশাক পরিবর্তনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘র্যাবের পোশাক পরিবর্তনের ব্যাপারে দাবি উঠেছে। আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি। আর র্যাবের নিজস্ব কোনো আইন নেই। পুলিশ আইনে র্যাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। র্যাবের জন্য আমরা আলাদা একটি আইন করার চিন্তা-ভাবনা করছি। এছাড়া আর কোন কোন বিষয় সংস্কার করা যায় সেজন্য গণমাধ্যম ও জনসাধারণের মতামতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘মামলাটি হাইকোর্টের আদেশে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই কমিটিতে র্যাবের প্রতিনিধিও রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে র্যাবের সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’
আরও পড়ুন:রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টিকে (বিডিপি) নিবন্ধন দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা (এব্যাসিলিউট) করে বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই রায় দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) আদালতের এই রায় বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী।
এর আগে রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টিকে (বিডিপি) নিবন্ধন দিতে রুল জারি করেছিল হাইকোর্ট। নিবন্ধন চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন দলটির চেয়ারম্যান এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম।
২০২২ সালের ২৬ অক্টোবর রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি। দলের চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম ইসির কাছে নথিসহ আবেদনপত্র জমা দেন।
স্ত্রী-সন্তানসহ সাবেক পাঁচ সংসদ সদস্যের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের নতুন কমিশনের প্রথম কার্যদিবসেই সাবেক পাঁচ সংসদ সদস্য এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের বিদেশযাত্রার এই নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত হয়।
বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া এসব সাবেক সংসদ সদস্য হলেন- ফেনী-১ আসনের আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, ভোলা-৩ আসনের নূর নবী চৌধুরী শাওন, হবিগঞ্জ-৩ আসনের আবু জাহির, নোয়াখালী-১ আসনের এইচ এম ইব্রাহিম এবং লক্ষ্মীপুর-২ আসনের নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন।
কক্সবাজারের টেকনাফে জামায়াত নেতা মো. ইসমাইলকে প্রধান আসামি করে মামলা করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
মামলায় সরকারি কাজে বাধা, কর্মকর্তাদের মারধর ও অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
টেকনাফ মডেল থানায় মঙ্গলবার মামলাটি করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের টেকনাফ বিশেষ জোন।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, গত ৯ ডিসেম্বর দুপুরে পৌরসভার কুলালপাড়া এলাকায় চিহ্নিত মাদক কারবারি আলমগীরের বসতঘরে অভিযান চালিয়ে ১ লাখ ১০ হাজার ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করে ডিএনসি। এ ঘটনায় আলমগীরকে আসামি করে মামলা করা হয়।
এ অভিযানের কিছুক্ষণ পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী টেকনাফ পৌরসভার সহসভাপতি ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ ইসমাইলের বাড়িতে আরও কিছু ইয়াবা মজুত আছে–এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই দিন সন্ধ্যায় অভিযানে যায় ডিএনসি কর্মকর্তারা।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ওই সময় ইসমাইল অভিযানে বাধা প্রদান করেন এবং লোকজন জড়ো করে অভিযানিক টিমের ওপর হামলা চালায়। এ সময় ডিএনসির তিন সদস্য আহত হন। পরে তার অনুসারীরা সংঘবদ্ধ হয়ে ডিএনসি অফিসে ভাঙচুর চালায়।
এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন উল্লেখ করে অভিযুক্ত জামায়াত নেতা মোহাম্মদ ইসমাইল অভিযোগ করেন, ‘সন্ধ্যা ছয়টার দিকে চারজন ব্যক্তি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা পরিচয়ে আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন। তখন স্থানীয় কিছু লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে।
‘ওই কর্মকর্তারা সাদা পোশাকে এসেছিলেন। স্থানীয় লোকজনের বাধার মুখে তারা দ্রুত চলে যান। কারা অফিস ভাঙচুর করছে, আমার জানা নেই।’
মামলার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিষয়টি তিনি আইনিভাবে মোকাবিলা করবেন বলেও জানান।
জানতে চাইলে ডিএনসি টেকনাফ বিশেষ জোনের সহকারী পরিচালক সিফাত তাসনিম বলেন, ‘ইসমাইলকে প্রধান আসামি করে ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভিডিও ও সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বাকিদের শনাক্ত করা হবে।
‘এ ঘটনা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে জানানো হয়েছে। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বুধবার বলেছে, মঙ্গলবার ঢাকার উত্তরা এলাকায় একজন ইসকন সদস্যের ওপর হামলা হয়েছে বলে দাবি করে বেশ কয়েকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদটি ভুয়া।
১০ ডিসেম্বর এবিপি আনন্দ এবং সংবাদ প্রতিদিনসহ বেশ কয়েকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, ঢাকার উত্তরায় একজন ইসকন সদস্যের ওপর হামলা হয়েছে।
সিএর প্রেস উইংয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টসে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঢাকার উত্তরা এলাকার রাধারমণ মন্দিরের (ইসকন উত্তরা) পুরোহিত কৃষ্ণ প্রিয়া নিতাই দাস বলেছেন, তিনি উত্তরা এলাকায় কোনো ইসকন ভক্ত বা সদস্যের ওপর হামলার ঘটনা সম্পর্কে অবগত নন।’
ঢাকার পুলিশও জানিয়েছে, তারা এ ধরনের কোনো অভিযোগ পায়নি।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ভারতীয় মিডিয়া ‘ভুক্তভোগীর’ কোনো বক্তব্য বা পরিচয় প্রকাশ করেনি। বাংলাদেশ পুলিশ অথবা কোনো ইসকন নেতারও বক্তব্য নেই এসব প্রতিবেদনে, যা সার্বিক বিবেচনায় খবরগুলোকে অসত্য, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সাংবাদিকতার নীতি বহির্ভূত হিসেবে চিহ্নিত করে।
প্রেস উইং জানায়, বাংলাদেশ ইসকনের কেন্দ্রীয় নেতা হৃষিকেশ গৌরাঙ্গ দাস বলেছেন, উত্তরায় সাম্প্রতিক একটি পারিবারিক ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পারিবারিক বিষয়ে জড়িত যুবকরা ইসকনের সদস্য নন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে বদলি ও রদবদলের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন জেলার ১২ পুলিশ সুপারকে (এসপি) একযোগে বদলি করা হয়েছে।
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখার উপসচিব আবু সাঈদের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এই বদলির আদেশ দেয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পুলিশ অধিদপ্তরের (টিআর) পুলিশ সুপার আবু সাইমকে রংপুরের পুলিশ সুপার, গাইবান্ধার কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার আবু সায়েম প্রধানকে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমকে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার জাকির হোসেনকে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার শরিফ উদ্দীনকে বরিশালের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলামকে রাজশাহীর পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া পুলিশ অধিদপ্তরের পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেককে গাজীপুরের পুলিশ সুপার, এন্টি টেররিজম ইউনিটের ঢাকার পুলিশ সুপার ইয়াছমিন খাতুনকে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার, এপিবিএন সদর দপ্তরের পুলিশ সুপার নিশাত অ্যাঞ্জেলাকে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার আসলাম শাহাজাদাকে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এহতেশামুল হককে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার এবং এসবির বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ারকে নওগাঁর পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মন্তব্য