করোনাভাইরাস মহামারির অভিঘাত কাটিয়ে না উঠতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং একে ঘিরে দেয়া নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞায় বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার পাশাপাশি নানা অসুবিধা মোকাবিলা করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গোটা বিশ্বের সাধারণ মানুষের শাান্তির কথা ভেবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রোববার সকালে তৈরি পোশাক মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ আয়োজিত ‘মেড ইন বাংলাদেশ উইক’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমানে আমরা একটা কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। শুধু আমরা না, সারা বিশ্ব। একদিকে করোনার ভয়াবহতা, তার অভিঘাতে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, মূল্যস্ফীতি। তার ওপর আজকে শুরু হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা), কাউন্টার স্যাংশন (পাল্টা নিষেধাজ্ঞা)। ফলে শুধু বাংলাদেশ নয়, উন্নত দেশগুলোও আজকে অর্থনৈতিকভাবে হিমশিম খাচ্ছে। নানা ধরনের অসুবিধা আমাদের মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
‘কাজেই যুদ্ধ বন্ধ হোক, সেটা আমরা চাই। এই স্যাংশন, কাউন্টার স্যাংশন বন্ধ হোক, সহজভাবে প্রতিটি দেশের মানুষ যেন তার ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারে, আমরা সেটাই চাই। কারণ ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আজকে সব বিশ্বব্যাপী ব্যবসা-বাণিজ্য অনেকটা স্থবির হয়ে গেছে।’
কঠিন অবস্থা থেকে উত্তরণে ব্যবসায়ীদের সম্মিলিত উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন সেই পদক্ষেপ নিতে হবে, এই যে একটা ভয়াবহ পরিস্থিতি কীভাবে উত্তরণ ঘটানো যায়। ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, রপ্তানিকারক সবাইকে সম্মিলিত উদ্যোগ নেয়ার জন্য আমি আহ্বান জানাই।’
দেশে বিনিয়োগের আহ্বান
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন, এক দিনে শত সেতুর উদ্বোধনসহ দেশে শক্তিশালী যোগাযোগ নেটওয়ার্ক তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
সারা দেশে নির্মাণাধীন ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আশা করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নীতিমালা হচ্ছে বিনিয়োগবান্ধব নীতি। একই সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত, কোটামুক্ত সুবিধা বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরও আকর্ষণ করছে। আমি কূটনীতিক ও বিদেশি ব্যবসায়ীদের কাছে আহ্বান করব, উইন উইন পরিস্থিতির জন্য ব্যবসার সুবিধার্থে বিনিয়োগ এবং সোর্সিংয়ের জন্য বাংলাদেশকে বেছে নিন। সব থেকে উপযুক্ত জায়গা বাংলাদেশ।
‘বিদেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানাতে আমি দেশের ব্যবসায়ীদেরও আহ্বান করব যে, আপনারাও বিদেশি পার্টনার খুঁজে নেন। আপনারা তাদের প্রযুক্তিজ্ঞান আমাদের শিল্প খাতে ব্যবহার করতে পারেন, আমাদের দেশেও চমৎকার একটা পরিবেশ বিনিয়োগের জন্য বিদ্যমান রয়েছে। সেই সুযোগটা নেবেন।’
যুদ্ধের প্রভাবে বিরাজমান অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও ‘মেড ইন বাংলাদেশ উইক’-এ অংশ নিতে আসা বিদেশি বিনিয়োগকারী, ক্রেতা ও প্রতিনিধিদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকবিলায় প্রস্তুতি নিন
চলমান সংকটের মধ্যে তৈরি পোশাক খাতের আয় আগের বছরের চেয়ে বেড়েছে বলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘২০৩০ সাল নাগাদ ১০০ বিলিয়ন ডলারের একটি মাইলেজ বিজিএমইএ কর্তৃক নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্য অর্জনে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করতে হবে। সেই চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠা বা মোকাবিলা করার দক্ষতাও কিন্তু অর্জন করতে হবে। শুধু ঘোষণা দিলেই হবে না, কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।’
বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পাওয়ায় স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে যেসব বাণিজ্যিক সুবিধা পাওয়া যেত, তা কিছুটা কমতে পারে বলে তৈরি পোশাক ব্যবসায়ীদের সতর্ক করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেছেন, ২০২৯ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেদের প্রস্তুত করতে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা ভালো কথা হলো, ২০২৪-এ আমাদের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন কার্যকর করার কথা, দুই বছর সময় নিয়েছি; ২০২৬ পর্যন্ত। এ ছাড়া ২০২৯ পর্যন্ত আমাদের হাতে সময় আছে। এর মধ্যে আমাদের সব প্রস্তুতি নিতে হবে যে উন্নয়নশীল দেশের একজন ব্যবসায়ী হিসেবে হয়তো কিছু ক্ষেত্রে আমরা সুবিধা পাব না, কিন্তু এর চেয়ে অনেক বেশি সুবিধা পাব উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে। সেটাও আমাদের মনে রাখতে হবে।’
দেশের জনগণই সাহসের উৎস জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘…বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হচ্ছে, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২ হাজার ৮২৪ ডলার এখন মাথাপিছু আয়। ক্রয়ক্ষমতা কিন্তু এ দেশের মানুষের বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের নিজস্ব বাজারও কিন্তু তৈরি হচ্ছে। সেটাও কিন্তু মনে রাখতে হবে।
‘শুধু রপ্তানি করব, তা না। আমাদের নিজের দেশের ভেতরে বাজার সৃষ্টি করতে হবে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়াতে হবে, আর্থিক স্বাবলম্বিতা বাড়াতে হবে।’
চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে
চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আসন্ন জানিয়ে প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘যারা শ্রম দেয় তারা এই বাংলাদেশেরই মানুষ। সেই শ্রমিকদের, যারা আমার শ্রমিক ভাই-বোন তাদেরও আমরা চাই আরও উন্নত ট্রেনিং দিতে। কারণ এখন বিজ্ঞানের কারণে, প্রযুক্তির নতুন নতুন আবির্ভাবে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। কাজেই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করতে হবে।
‘চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের পদধ্বনি শুনছি আমরা। কাজেই এই চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে উপযুক্ত, দক্ষ মানবসম্পদ আমাদের গড়ে তুলতে হবে। সেদিকে আমরা ইতিমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা নতুন নতুন উদ্যোক্তাও সৃষ্টি করছি। কাজেই চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আমাদের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানে যে প্রভাবটা ফেলবে তা আমাদের পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করতে হবে।’
তৈরি পোশাক শিল্পে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন রোবট প্রযুক্তির ব্যবহারে প্রস্তুতি নেয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মানুষের ভেতর এই চিন্তাটা ঢোকাতে হবে যে প্রযুক্তি এগোবে, দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য স্কিলড লেবার আমাদের দরকার।’
শ্রমিকদের প্রতি সরকারের দৃষ্টি রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করা এবং পরিবেশসম্মত পণ্য উৎপাদনের ব্যবস্থা, সেটা নেয়া। তারা কাজ করবে যেখানে, যে শ্রম দেবে সে যেন সুস্থভাবে বাঁচতে পারে, সুন্দরভাবে কাজ করতে পারে, আরও মনোযোগ দিতে পারে, সেই পরিবেশটা তৈরি করা একান্তভাবে প্রয়োজন।
‘আমি জানি আপনারা অনেকে শ্রমবান্ধব। আবার কোনো কোনো জায়গায় হয়তো একটু অবহেলিত হয়। এই বিষয়ে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ আপনি জানেন আমরা রাজনীতি হচ্ছে এ দেশের কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষের জন্য। তাদের কল্যাণটা আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মেড ইন বাংলাদেশ উইক-২০২২ দেশীয় শিল্পের ব্র্যান্ডিংকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশি পণ্যের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে—এ আমি বিশ্বাস করি।’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা এবং ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে ছয় বছরের শরণার্থী জীবনের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘৮১ সালে ফিরে এসেছিলাম একটি প্রত্যয় নিয়ে, যে দেশ আমার বাবা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন, সে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করবই। এ দেশকে উন্নত করবই।’
দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করে দেয়া হয় বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের জিডিপিতে রপ্তানি খাতে সব থেকে বেশি অবদান রেখে যাচ্ছে আমরা মনে করি গার্মেন্টেস বিনিয়োগ। এটা অবশ্যই স্বীকার করতেই হবে।’
মেড ইন বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সরকারে এসে সবসময় রপ্তানি খাতকে গুরুত্ব দিই। এই রপ্তানি খাতে যেন আরও প্রবৃদ্ধি অর্জন হয়, আরও প্রসারিত হয়, তার জন্য আমরা পণ্য ও সেবাকে দীর্ঘমেয়াদি কর প্রণোদনা প্রদান করি।
‘সেই সঙ্গে মেড ইন বাংলাদেশ ব্র্যান্ডকে গ্লোবাল ব্র্যান্ডে পরিণত করার লক্ষ্যে রপ্তানির নতুন ক্ষেত্র সৃষ্টি এবং পণ্যের বৈচিত্র্যকরণ ও নতুন পণ্যের বাজার তৈরিকেও আমরা উৎসাহিত করছি। এই উদ্যোগের ক্ষেত্রে তৈরি পোশাক ক্ষেত্রের করহার সাধারণত কারখানায় যেখানে ১২ শতাংশ, সেখানে যারা গ্রিন কারখানা তৈরি করেছেন তাদের জন্য সেই আমরা হ্রাস করে ১০ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। কারণ আমরা জানি যেকোনো শিল্প-কলকারখানা পরিবেশবান্ধব হওয়া প্রয়োজন।’
কারখানাকে অগ্নিকাণ্ড মুক্ত রাখতে শুল্কমুক্ত সুবিধায় গ্রিন কারাখানা গড়ে তোলার জন্য সব ধরনের সুযোগ দেয়া হয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘ফলে আজকে সারা বিশ্বে যে ১০টা পরিবেশবান্ধব কারখানা তার ৯টি বাংলাদেশে। আমি অভিনন্দন জানাই। সুযোগ বা প্রণোদনা অনেককেই দেয়া হয়, কিন্তু সবাই কাজে লাগাতে পারে না, কিন্তু গার্মেন্টস সেটা কাজে লাগিয়েছে।’
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে অর্থনৈতিক স্থবিরতা ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় ধস নামার প্রসঙ্গটি সামনে এনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি আমাদের ব্যবসায়ীরা অনেক উদ্বিগ্ন ছিলেন। সেই সময় আওয়ামী লীগ সরকার পদক্ষেপ নেয়। আমরা তখন বিশেষ আর্থিক প্রণোদনা ও নীতি সহায়তা দিয়েছিলাম, যার ফলে করোনা মহামারি অত্যন্ত সফলভাবে আমরা মোকাবিলা করতে পেরেছি। এই প্রণোদনা প্যাকেজর মাধ্যমে আমাদের শিল্পের মালিক, শ্রমিক সবাই যেন সুস্থভাবে তাদের কার্যক্রম চালাতে পারে, সেই ব্যবস্থাটা আমরা দিয়েছি।’
প্রণোদনা প্যাকেজে সুদের হার কমিয়ে সরকার ভর্তুকি দিয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বাড়িয়ে রেকর্ড ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের সাড়ে তিন মাসে অষ্টমবারের মতো স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হলো।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৃহস্পতিবার বৈঠক করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। নতুন নির্ধারিত এই দাম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী- ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৫ টাকা বেড়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বেড়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ২০২ টাকা, ১৮ ক্যারেট প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৬৫৬ টাকা বেড়ে ৯৭ হাজার ৮৮৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণ ১ হাজার ৩৮৮ টাকা কমে ৭৮ হাজার ৮০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সবশেষ দশ দিন আগে ৮ এপ্রিল বাজুস ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৭৪৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা নির্ধারণ করে। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণের সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়। ১০ দিনের ব্যবধানে আবারও দাম বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দেশের স্বর্ণের বাজারে উচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হলো।
অবশ্য স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের আরও বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের গহনা বিক্রি করা হয়। সেসঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় ন্যূনতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে ১ লাখ ২৯ হাজার ১১৯ টাকা।
এদিকে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা আছে।
আরও পড়ুন:ভারতে লোকসভা নির্বাচনের কারণে ১৭, ১৮ ও ১৯ এপ্রিল পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে পাথরসহ সকল প্রকার আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ ঘোষণা করেছে ভারত। পাশাপাশি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপারও বন্ধ থাকবে।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শামা পারভীন স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয় ।
এদিকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর লিমিটেডের ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বুধবার দুপুরে ৩ দিন বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ভারতের লোকসভা নির্বাচন কারনে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে আজ (বুধবার) থেকে শুক্রবার বন্দর দিয়ে দুই দেশের মাঝে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে এ সময় অফিস যথারীতি খোলা থাকবে।’
শনিবার (২০ এপ্রিল) সকালে স্থলবন্দর দিয়ে পুনরায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট কর্মকর্তা অমৃত অধিকারী জানান, দুই দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধের সঙ্গে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাওয়া-আসাও বন্ধ থাকবে।
হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্তের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এই বন্দর দিয়ে পার হতে আসা যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। বিশেষ করে, জরুরি চিকিৎসার জন্য যাতায়াতকারী মানুষের দূর্ভোগ বেড়েছে।
আরও পড়ুন:বিষয়বস্তু অবহিত না করে ওয়ালটনের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থিভাবে ‘রূপান্তর’ শিরোনামের একটি নাটক প্রচার করায় বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’কে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে ওয়ালটন।
পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সব ধরনের বিজ্ঞাপনী চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিষয়টির জন্য ওয়ালটন গ্রুপ ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিকট আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।
ওয়ালটনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’ এর স্বত্বাধিকারী মোহন আহমেদকে মঙ্গলবার ওই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।
ওয়ালটনের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট রাইসুল ইসলাম রিয়াদ স্বাক্ষরিত আইনি নোটিশে উল্লেখ করে যা বলা হয়, ‘আপনি লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান এর স্বত্বাধিকারী। আপনার প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে আপনার নির্মিত ছয়টি নাটকে ওয়ালটন ফ্রিজ ব্র্যান্ডিং করতে সম্মত হয়। শর্ত থাকে যে, উক্ত নাটকসমূহে দেশের আইন, নীতি, নৈতিকতা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হয় এরকম কোনো বিষয় অর্ন্তভুক্ত হবে না। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক যে, উক্ত নাটকসমূহের মধ্যে ‘রূপান্তর’ নাটকটিতে এমন কিছু বিষয় অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে, যাতে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে ও মানুষের অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে।’
নোটিশে আরও বলা হয়, ‘ওয়ালটন কর্তৃপক্ষকে নাটকটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে পূর্বে অবহিত না করে রূপান্তর নাটক প্রচার করায় আপনার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হলো এবং সেই সঙ্গে কেন আপনার বিরুদ্ধে ওয়ালটনের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থিভাবে নাটক প্রচারের জন্য আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে জানানোর জন্য বলা হলো।’
এর আগে ফেসবুক-ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম থেকে ‘রূপান্তর’ নাটকটি প্রত্যাহারের জন্য বিজ্ঞাপনী সংস্থাকে নির্দেশ দেয় ওয়ালটন। তাৎক্ষণিকভাবে ফেসবুক-ইউটিউবসহ সব মাধ্যম থেকে নাটকটি প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
এরপর বিজ্ঞাপনী সংস্থার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে ওয়ালটন গ্রুপের আদর্শ ও নীতিমালার পরিপন্থি নাটকে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য কেন আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘লোকাল বাস এন্টারটেইনমেন্ট’কে লিগাল নোটিশ দেয় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।
আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে ওয়ালটনের ভাষ্য, দেশের মানুষের ধর্মীয় ও সামাজিক অনুভূতিতে আঘাত করে এমন কোনো কর্মকাণ্ড কখনও তারা সমর্থন করে না এবং এসব কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকে না। অনাকাঙ্ক্ষিত এই বিষয়টির জন্য ওয়ালটন গ্রুপ মর্মাহত এবং সম্মানিত ক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিকট আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন রূপালী ব্যাংক পিএলসির মহাব্যবস্থাপক মো. ফয়েজ আলম। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সরকার কর্তৃক পদোন্নতিপ্রাপ্ত হয়ে তিনিসহ রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন ব্যাংকের আট জন মহাব্যবস্থাপককে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদোন্নতি দেয়া হয়।
ডিএমডি হিসেবে পদোন্নতি হওয়ার আগে তিনি রূপালী ব্যাংক পিএলসিতে মহাব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
মো. ফয়েজ আলম ১৯৯৮ সালে বিআরসির মাধ্যমে সিনিয়র অফিসার পদে রূপালী ব্যাংকে যোগদান করেন। কর্মজীবনে ব্যাংকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শাখার শাখা ব্যবস্থাপক, জোনাল অফিস এবং প্রধান কার্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। পেশাগত প্রয়োজনে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপ ও আরব অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ ভ্রমণসহ দেশ-বিদেশে ব্যাংকিং বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করেছেন।
ফয়েজ আলমের জন্ম ১৯৬৮ সালে নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার যোগীরনগুয়া গ্রামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে বিএ অনার্সসহ এমএ পাশ করার পর এমফিল ডিগ্রিও অর্জন করেন খ্যাতিমান এই ব্যাংকার।
পেশাগত জীবনের বাইরে ফয়েজ আলম একজন সফল লেখকও। বাংলাদেশে তিনি অগ্রণী উত্তর উপনিবেশী তাত্ত্বিক, প্রাবন্ধিক ও কবি হিসেবে বিশেষ খ্যাতিমান। এডওয়ার্ড সাঈদের বিখ্যাত গ্রন্থ অরিয়েন্টালিজম-এর অনুবাদক হিসেবেও তার আলাদা খ্যাতি আছে। তার পনেরটির বেশি গ্রন্থ এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে।
হাতে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার ক্রমিক নম্বর নিয়ে বুথ-৪ এ প্রবেশ করে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ব্যালট সংগ্রহ করলেন ভোটার। গোপন কক্ষে গিয়ে নিজের ভোট প্রদানও করলেন। ভোট দেয়া শেষে কক্ষের বাইরে গণমাধ্যমকর্মীরা ওই ভোটারের কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি জানালেন, ‘ভোটার কীভাবে হলাম নিজেও বলতে পারি না।’
মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির নির্বাচনে ভোট দিয়ে এক তরুণ ভোটার নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
ঠাকুরগাঁও চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির ভোটার কীভাবে হওয়া যায়- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি নিজেও জানি না কীভাবে ভোটার হলাম। আমাকে ফোনে নিশ্চিত করা হয়েছে যে আমি চেম্বারের একজন ভোটার, তাই ভোট দিতে এসেছি।’
তার কাছে আরও জানতে চাওয়া হয়, তার নিজস্ব কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে কি না? জবাবে তিনি জানান, তিনি একজন বাইক (মোটরসাইকেল) মেকানিক। তার নিজস্ব একটি প্রতিষ্ঠান আছে, কিন্তু প্রতিষ্ঠানের এখনও নামকরণও করা হয়নি।
প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা না হলে ট্রেড লাইসেন্স কীভাবে হলো বা আদৌ ট্রেড লাইসেন্স হয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি আর কোনো জবাব না দিয়ে সরে পড়েন।
ভোট দিয়ে বের হচ্ছিলেন লিমন নামের আরেক ভোটার। তিনি জানান, সদর উপজেলার নারগুণ থেকে তিনি এসেছেন ভোট দিতে। তার ছোটখাটো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
ট্রেড লাইসেন্স আছে কি না এবং কী প্রক্রিয়ায় ভোটার হলেন- জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি৷ এ সময় তাকে ক্যামরার সামনে কথা বলতে না করেন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্যানেলের এক প্রার্থী।
ভোট দিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন দুলালি ইসলাম। তিনি জানান, তার মামা একটি হিমাগারের ম্যানেজার। তিনিই তাকে ভোটার হতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। ‘দুলালি ফার্মেসী’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে তার।
চেম্বারের ভোটার হতে প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্যান্য কাগজপত্র জমা দিয়েছেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন মনে নেই।’
এদিকে ভোটের একদিন আগে সোমবার রাতে সংবাদ সম্মেলনে ৭ কারণ উল্লেখ করে ঠাকুরগাঁও চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দুটি প্যানেলের মধ্যে আলমগীর-মুরাদ ও সুদাম প্যানেল ভোট বর্জন করে। এ সময় প্রার্থীরা নির্বাচনের অনিয়ম, ভোটার তালিকা নিয়ে অসঙ্গতিসহ নানা কারণ উল্লেখ করেন।
এর আগে, গত ১৩ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে ভোটার তালিকা সংশোধন ও নির্বাচনের তারিখ পেছানোর জন্য নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের কাছে আবেদন জানিয়েছিল প্যানেলটি। সে সময় ভোটের মাঠে থাকার কথা জানালেও অবশেষে ভোটের আগের রাতে তারা ভোট বর্জন করেন। ফলে এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী ছাড়াই অংশ নিয়েছে দুলাল-বাবলু ও আরমান প্যানেল।
চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির নির্বাচন নিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের সচেতন মহলে মিশ্র প্রতিত্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে।
জাতীয় তেল গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ঠাকুরগাঁও সদস্য সচিব মো. মাহবুব আলম রুবেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ ঠাকুরগাঁও চেম্বারের ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক, আমরা দেখছি এখানে সাধারণ শ্রমিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ভোটার হয়েছেন। অনেকেই আছেন যারা কোনো ব্যবসার সঙ্গেই জড়িত না।
‘তাহলে অন্য যে প্যানেলটি অভিযোগ করেছে- নিরপেক্ষ ভোটার তালিকা হয়নি। সেটার প্রমাণ আমরা পাচ্ছি। এই নির্বাচনে ব্যবসায়ীরা তাদের সঠিক প্রতিনিধি নির্বাচনে ব্যর্থ হয়েছেন।’
ভোটারদের প্রসঙ্গে ঠাকুরগাঁও চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি নির্বাচনি বোর্ডের আহ্বায়ক ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘ভোটার তালিকা নিয়ে বেশ কিছু প্রার্থী অভিযোগ করছেন। খসড়া তালিকা প্রকাশের পর অভিযোগ আপিল কর্তৃপক্ষের নিকট জানানোর সুযোগ ছিল। নির্ধারিত সময়র মধ্যে করা আপিলগুলো নিষ্পত্তি করা হয়েছে। আপিল নিষ্পত্তির পর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের পর অভিযোগ করায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু দীর্ঘ বছর যাবৎ ঠাকুরগাঁও চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির কমিটি ছিল না, তাই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে চেম্বারের প্রশাসনের দায়িত্ব দিয়েছিল। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা আছে, একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।’
আরও পড়ুন:ভোজ্যতেলের ওপর শুল্ক অব্যাহতির সময়সীমা শেষ হয়েছে সোমবার (১৫ এপ্রিল)। এ অবস্থায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেছেন, ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।
বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিভিওআরভিএমএফএ) সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।
বিভিওআরভিএমএফএ’র নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম মোল্লার পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, কাঁচামাল আমদানি ও ভোজ্যপণ্য উৎপাদনে কর অব্যাহতির মেয়াদ ১৫ এপ্রিল শেষ হচ্ছে বিধায় পরদিন ১৬ এপ্রিল থেকে ভ্যাট অব্যাহতির আগের নির্ধারিত মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা হবে।
নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের বোতল ১৭৩ টাকা, পাঁচ লিটারের বোতল ৮৪৫ টাকা ও এক লিটার পাম তেল ১৩২ টাকায় বিক্রি করা হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গত ফেব্রুয়ারিতে পরিশোধিত ও অপরিশোধিত (অপরিশোধিত) সয়াবিন ও পাম তেলের মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে।
এদিকে মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ভোজ্যতেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে সমন্বয় করা যেতে পারে, তবে সময় লাগবে।
‘ভোজ্যতেলের নতুন চালান আমদানির ক্ষেত্রে দাম বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’
আরও পড়ুন:প্রবাসীদের আয়ের একটি বড় অংশই আসে ঢাকায় অবস্থিত ব্যাংকের শাখাগুলোতে। অর্থাৎ প্রবাসীদের পরিবারের বেশিরভাগই ঢাকায় থাকেন বা তাদের অধিকাংশ অ্যাকাউন্ট ঢাকার ব্যাংক শাখায়।
ইউএনবি জানায়, রেমিট্যান্সের জেলাভিত্তিক চিত্র নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বিশ্লেষণে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম। সিলেট তৃতীয় এবং কুমিল্লা চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।
এরপরে রয়েছে উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, মৌলভীবাজার, চাঁদপুর ও নরসিংদীর অবস্থান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জেলাভিত্তিক প্রবাসী আয় প্রতিবেদনে গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হিসাব প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ মাসে প্রবাসীরা ১ হাজার ৫০৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ২১৬ কোটি ডলার। তার আগের মাস জানুয়ারিতে দেশে প্রবাসী আয় ছিল ২১০ কোটি ডলার।
জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়কালে ঢাকা জেলায় এসেছে ৫২৩ কোটি ডলার এবং চট্টগ্রাম জেলায় এসেছে ১৪২ কোটি ডলার।
এই সময়ে সিলেট জেলা ৮৭০ মিলিয়ন ডলার, কুমিল্লা ৮১০ মিলিয়ন ডলার এবং নোয়াখালী ৪৬০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ কোটি, ফেনীতে ৩৭ কোটি, মৌলভীবাজারে ৩৬ কোটি, চাঁদপুরে ৩৫ কোটি ডলার এবং নরসিংদীতে ২৫০ মিলিয়ন ডলার এসেছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, প্রবাসী অধ্যুষিত জেলাগুলো থেকে বেশি প্রবাসী আয় আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু এমনটা হচ্ছে না। কারণ অনেক প্রবাসী বিদেশে স্থায়ী হয়েছেন। বরং তারা (প্রবাসীরা) দেশে থাকা সম্পদ বিক্রি করে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছেন। ফলে অর্থ পাচার বাড়ছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য