ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী আজ। প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তির এই দিনে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ডাকা জনসমাবেশে ১০ লাখ লোকের উপস্থিতি ঘটাতে চায় সংগঠনটি।
নির্বাচনের এক বছর আগেই জনসমাবেশ করে শক্তি দেখাতে শুরু করেছে রাজনৈতিক দলগুলো। দেশের প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বড় সমাবেশ আয়োজনের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এমন বাস্তবতায় সমাবেশ যুবলীগের হলেও এটি ক্ষমতাসীন দলটির মর্যাদার বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
আয়োজক সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, শুক্রবারের এই সমাবেশ জনসমুদ্রে রূপ নেবে। জড়ো হবে সংগঠনের দশ লাখ নেতা-কর্মী ও শুভানুধ্যায়ী। সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সার্বিক প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।
যুবলীগের এই আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। বেলা দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে সভামঞ্চে উপস্থিত হবেন তিনি।
এ সমাবেশের মধ্যে দিয়ে কার্যত দীর্ঘদিন পর জনসমাবেশে আসছেন যুবলীগের সাংগঠনিক নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা মহামারির পর ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন তিনি একটি জনসভায় বক্তব্য দেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এসব সমাবেশের মধ্য দিয়ে দেশের রাজনীতি নির্বাচনমুখী হচ্ছে। তবে সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা যাতে তৈরি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে দুই দলকেই। কর্মসূচি পালনে তাদেরকে সহনশীল হতে হবে।
১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক যুব কনভেনশনের মাধ্যমে দেশের প্রথম যুব সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে যুবলীগ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে তার ভাগ্নে বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক মনি সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে সংগঠনটির নেতৃত্বে রয়েছে শেখ মনির সন্তান শেখ ফজলে শামস পরশ।
যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে, সংগঠনের সুবর্ণজয়ন্তীতে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় যুব মহাসমাবেশ করার লক্ষ্যে প্রতিদিনই ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা দফায় দফায় প্রস্তুতি সভা করেছেন। প্রস্তুতি সভা হয়েছে দেশের সব জেলা-উপজেলায়। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সঙ্গেও যুবলীগ প্রস্তুতি সভা করেছে।
গত কয়েকদিন ধরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলেছে সভামঞ্চ তৈরির কাজ। শুক্রবার সন্ধ্যায় দেখা গেছে সমাবেশের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। যেহেতু সরকারপ্রধান এই সমাবেশে যোগ দেবেন, তাই সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বুধবার থেকে উদ্যানে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে কাউকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। উদ্যানের প্রবেশমুখগুলোতে রয়েছে পুলিশের সতর্ক উপস্থিতি। প্রবেশমুখ ঘিরে থাকা খাবারের দোকানগুলোও এদিন বসতে দেখা যায়নি। দর্শনার্থীদেরও আনাগোনা ছিল অনেক কম।
সমাবেশের আগের রাতে উদ্যানের আশপাশে যুবলীগ কর্মীদের উপস্থিতি খুব বেশি দেখা যায়নি। উপস্থিত নেতাকর্মীরা সবাই ব্যানার-ফেস্টুন টানানোর কাজে ব্যস্ত। তারা বলছেন, ঢাকার বাইরে থেকে যারা এসেছেন তারা সবাই ক্লান্ত। নগরীর বিভিন্ন হোটেলে তারা বিশ্রাম নিচ্ছেন। তবে শুক্রবার সকাল থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে যোগ দেবেন তারা।
সমাবেশ ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের মধ্যে এক ধরনের রাজনৈতিক প্রস্তুতির পরিবেশ রয়েছে। রাজু ভাস্কর্য চত্বরসহ উদ্যানের গেটের আশপাশ এলাকায় শুধু ব্যানার আর ফেস্টুন। এত ব্যানার ঝোলানোরও পরও সন্তুষ্ট নন যেন কর্মীরা। ফাঁকা থাকা জায়গাগুলোতে সন্ধ্যার দিকেও ব্যানার ঝুলাতে দেখা গেছে। অনেকে আবার ব্যানার হাতে ফাঁকা জায়গা খুঁজছিলেন।
বরগুনা জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি এলমান উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের অবস্থান জানান দেয়ার জন্য এই ব্যানার ঝোলানো হচ্ছে।
‘আমরা এখন কয়েকজন আগে আগে বরগুনা থেকে চলে এসেছি। থাকছি গুলিস্তানের রমনা হোটেলে। বাকিদের লঞ্চগুলোও বরগুনা থেকে এতক্ষণে ছেড়ে দিছে। তারা আজ রাতে রমনা হোটেলে থাকবে। এরপর সেখান থেকে কাল সকালে সবাই সমাবেশে যোগ দিব।’
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ থানার কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মাহবুব আলম স্বপন বলেন, ‘আমরা সাত-আটজন বিকেলেই ঢাকায় চলে আসি। একটু আগে বাকিদের লঞ্চ ঘাট ছেড়েছে বলে শুনেছি। শুধু পটুয়াখালী থেকেই ১৫ হাজার লোক আসছে। রাতের মধ্যে সবাই ঢাকায় এসে যাবে।’
সবাই মিলে জনসমাবেশকে জনসমুদ্রে রূপান্তরের প্রত্যয় তার কণ্ঠে। মাহবুব বলেন, ‘বিএনপি ছোট ছোট সমাবেশ করে মহাসমুদ্র বলে। আমরা কাল বিএনপিকে দেখিয়ে দিতে চাই, জনসমুদ্র কাকে বলে।’
নিরাপত্তা বলয়
সমাবেশস্থলের বাইরে ও ভেতরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় তিন হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মো. শহিদুল্লাহ।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আমরা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে রেখেছি। সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছি। সমাবেশের আশপাশে ২৯টি পয়েন্টে আমাদের ফোর্স মোতায়েন থাকবে।’
সমাবেশ ঘিরে কোনো ধরনের সন্ত্রাস কর্মকাণ্ডের হুমকি নেই বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।
বন্ধ থাকবে কিছু সড়ক
প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশের কয়েকটি এলাকার রাস্তা বন্ধ বা রোড ডাইভারশনের কথা জানিয়েছে ডিএমপি। নগরবাসীকে এজন্য বিকল্প সড়ক ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়েছে পুলিশ।
যে সড়কগুলো বন্ধ করা হবে
কাঁটাবন ক্রসিং, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ক্রসিং, পুলিশ ভবন ক্রসিং, কাকরাইল চার্চ ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টার, জগন্নাথ হল ক্রসিং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভাস্কর্য ক্রসিং ও উপাচার্য ভবন ক্রসিং।
জনসভায় প্রবেশ যে পথে
সমাবেশে প্রবেশের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সবুজ কার্ডধারী অতিথিরা ৩ নম্বর গেট বা রমনা কালি মন্দির দিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করবেন। রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগ এবং ঢাকা মহানগর উত্তর, টাঙ্গাইল, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও ঢাকা জেলা উত্তরের নেতাকর্মীরা প্রবেশ করবেন ১ ও ২ নম্বর গেট দিয়ে।
খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগ এবং বৃহত্তর ফরিদপুর, ঢাকা জেলা দক্ষিণ, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের নেতাকর্মীরা প্রবেশ করবেন ৩, ৪ ও ৫ নম্বর গেট দিয়ে।
চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের নেতাকর্মীদের মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার হয়ে গুলিস্তান, জিরো পয়েন্ট, হাইকোর্ট, দোয়েল চত্বর, শহীদ মিনার, পলাশী হয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসতে হবে।
বৃহত্তর ফরিদপুর, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের যারা বাসে আসবেন তাদের পদ্মা সেতু হয়ে বাবুবাজার ব্রিজ দিয়ে গুলিস্তান হয়ে নগর ভবনের সামনের রাস্তা, বঙ্গবাজার-সংলগ্ন রাস্তাগুলো এবং জিরো পয়েন্ট-ওসমানী উদ্যান সংলগ্ন এলাকা দিয়ে সমাবেশে আসতে হবে।
ময়মনসিংহ বিভাগের নেতাকর্মীরা মহাখালী, মগবাজার ফ্লাইওভার, কাকরাইল চার্চের বামে মোড়সংলগ্ন রাস্তা হয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করবেন।
রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের নেতাকর্মীদের গাবতলী, মিরপুর রোড, সায়েন্স ল্যাব ক্রসিং, নিউমার্কেট ক্রসিং অথবা গাবতলী, মিরপুর রোড সায়েন্স ল্যাব, কাঁটাবন, নীলক্ষেত ক্রসিং, পলাশী ক্রসিং হয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যেতে হবে।
যুবলীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাংবাদিকরা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্দেশনা অনুযায়ী ভিআইপি গেট অর্থাৎ শিখা চিরন্তনী গেট দিয়ে প্রবেশ করবেন।
আরও পড়ুন:ঈদুল আজহায় টানা ছুটির মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় ঢাকার বাতাস মোটামুটি স্বাস্থ্যকর ছিল। তবে গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিহীন শুষ্ক পরিবেশ আর ক্রমেই রাজধানীর পুরনো ভিড় বাড়তে থাকায় দূষণও বাড়ছে সমান তালে।
রবিবার (১৫ জুন) সকাল ৯টার দিকে দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ফের শীর্ষস্থানগুলোতে জায়গা করে নিয়েছে ঢাকা। এ সময়ে ১৪২ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় দূষিত বাতাসের শহর ছিল বাংলাদেশের রাজধানী, সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য যা অস্বাস্থ্যকর।
এ সময় ১৫৩ স্কোর নিয়ে শীর্ষ দূষিত শহর ছিল ইন্দোনেশিয়ার মেদান। এ ছাড়া ১২৬ ও ১২৪ স্কোর নিয়ে ঢাকার পরেই ছিল যথাক্রমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও মিসরের কায়রো।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
রাজধানীর উত্তরায় র্যাব পরিচয়ে মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান ‘নগদের’ এক পরিবেশকের এক কোটি ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর সড়কে এই ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানায়, ‘আব্দুল খালেক নয়ন নগদের একজন পরিবেশক। তিনি উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের একটি ফ্লাটে থাকেন। শনিবার সকালে তিনি তার চারজন এমপ্লয়িকে দুইটি মোটরসাইকেলযোগে বাসার পাশেই পরিবেশক অফিসে পাঠাচ্ছিলেন। সাথে এক কোটি টাকার বেশি ছিল।’
‘তাদের বহনকারী মোটরসাইকেল দুটি বারো নম্বর রোড ক্রস করে যখন তেরো নম্বর রোডে ঢুকছিল, তখন ওৎপেতে থাকা একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাস তাদের গতি রোধ করে। মাইক্রোবাস থেকে র্যাবের পোশাক পরিহিত তিন থেকে চারজন নেমে এসে টাকার ব্যাগ বহনকারী মোটরসাইকেল আরোহীদের ধাওয়া করে।’
পুলিশ আরও জানায়, এদের মধ্যে একজন আরোহী দৌড়ে পালিয়ে গেলেও তিনজনকে টাকার ব্যাগসহ তারা মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। পরবর্তীতে তারা উত্তরা সতেরো নম্বর সেক্টরে নগদ মাইক্রোবাস থেকে তাদের ফেলে দিয়ে টাকার ব্যাগ সহ পালিয়ে যায়।
যোগাযোগ করা হলে উত্তরা ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার মইদুল ইসলাম ইউএনবিকে জানান, ‘ঘটনার পরপরই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সিসিটিভির ফোটেজ সংগ্রহ করেছেন। ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’
ঈদ উপলক্ষে লম্বা ছুটিতে বেশ কিছুদিন ধরে একপ্রকার ফাঁকা হয়ে গেছে শহর ঢাকা। সড়কগুলোতে নেই যানবাহনের চাপ; স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতও বন্ধ; রাস্তায় লোকজনও হাতেগোনা। এই অবস্থায় গত কয়েকদিন বৃষ্টি কমে গেলেও রাজধানীর বাতাসের মানে খুব বেশি অবনতি হয়নি।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল ১০টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল মাত্র ৬৬। আর দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান আরও অবাক হওয়ার মতো। প্রতিনিয়ত বায়ুদূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় জায়গা করে নিলেও ঢাকার অবস্থান আজ ৫৫তম।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’। ঢাকার বাতাস আজ মাঝারি হলেও ‘ভালো’ থেকে খুব বেশি দূরে নয়।
এই সময়ে ৬৭ একিউআই স্কোর নিয়ে দূষিত শহরের তালিকার ৫২তম স্থানে ছিল স্পেনের বার্সেলোনা, ৫০তম স্থানে সুইজারল্যান্ডের বেয়ার্ন, ৬৮ স্কোর নিয়ে ৪৯তম স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের সল্ট লেক সিটি, ৭০ ও ৭১ স্কোর নিয়ে ৪৪ ও ৪৩তম স্থানে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসি, ৭৩ স্কোর নিয়ে ৩৮তম স্থানে কানাডার টরেন্টো, ৮০ স্কোর নিয়ে ২৭তম দূষিত শহর শিকাগো, ৯৯ স্কোর নিয়ে ১৫তম স্থানে ইতালির রোম এবং ১২৮ স্কোর নিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছে মিলান।
তবে ১৬৮ একিউইউ স্কোর নিয়ে এই সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর ছিল ভারতের দিল্লি। ১৬২, ১৫৬ ও ১৩৭ স্কোর নিয়ে এর পরের তিন দূষিত শহর যথাক্রমে ইরাকের বাগদাদ, পাকিস্তানের লাহোর ও সৌদি আরবের রিয়াদ।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
এডিস মশার বিস্তার রোধে তাৎক্ষণিক ফল পেতে ১৪ জুন থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন(ডিএসসিসি) এলাকায় দ্বিগুণহারে কীটনাশক প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এডিস মশার বিস্তার রোধে করণীয় নির্ধারণ ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও করোনা প্রতিরোধে ডিএসসিসি প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে আজ রাজধানীর ওয়াসা ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় অ্যাডাল্টিসাইডিং কার্যক্রমে (ফগার মেশিন দ্বারা পরিচালিত) বর্তমানে ব্যবহৃত ৩০ লিটার কীটনাশকের পরিবর্তে দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থাৎ ৬০ লিটার কীটনাশক প্রতিদিন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ ছাড়া অঞ্চলভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠন ও জনবল ঘাটতি পূরণে উদ্যোগসহ জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সভায় মশক কর্মীদের সকাল ও বিকেলে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা, সঠিক অনুপাতে কীটনাশক প্রয়োগ যাচাই, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা এবং মশক কর্মী দ্বারা বাড়ির ভিতর, আঙিনা ও ছাদের জমানো পানিসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক এবং সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে অঞ্চল ভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়া, ডেঙ্গু ও করোনা বিষয়ে ডিএসসিসি সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফারিয়া ফয়েজকে ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে মনোনীত করা হয়।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি মাসের মধ্যে কীটতত্ত্ববিদদের সমন্বয়ে নগর ভবনে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে এবং প্রতিদিনের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের হালনাগাদ তথ্য ডিএসসিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। মশক নিধনে জনবল ঘাটতি পূরণে নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখাসহ ডেঙ্গু ও করোনা রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় ডিএসসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জিল্লুর রহমান, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নিশাত পারভীনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) এ কে এম মেহেদী হাসান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- সেলিম (৪৫), রফিক (৪০), সাদ্দাম (৩০), উজ্জ্বল (৩২) ও শামীম (২৫)।
গতকাল সোমবার (৯জুন) মোহাম্মদপুর থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদের মধ্যে রয়েছে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ১জন, মাদক মামলায় ১জন, দূস্যতার মামলায় ১জন এবং অন্যান্য মামলায় ২জন।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
রাজধানীর পল্লবী থানার মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় পূর্বশত্রুতার জেরে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে পুলিশ খবর পেয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে।
নিহত ওই যুবকের নাম রাকিবুল হাসান সানি (২৯)। ভোর ৪টা থেকে ৫টার মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও মাদক চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সকাল সাতটার দিকে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছি। পরে মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হবে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদক বিক্রির আধিপত্য বিস্তার ও দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে রাতের আঁধারে হত্যাকারীরা কীভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে; তা এখনও স্পষ্ট নয়।
নিহতের পরিবারের দাবি, সানি একজন অটোরিকশাচালক ছিলেন। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, গেল রমজান মাসেও একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্র তার ওপর হামলা চালিয়েছিল।
ঘটনার পর থেকে মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং এলাকায় পুলিশ ও সিআইডি সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
গতকাল শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে বন্ধ থাকার পর আজ রোববার থেকে ফের চালু হয়েছে মেট্রোরেল। তবে মেট্রোতে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না।
রোববার সকাল ৮টা থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা যায়, আজ (রোববার) প্রতি ৩০ মিনিট পরপর ট্রেন চলছে। আগামীকাল সোমবার থেকে মেট্রোরেল সরকারি ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল করবে।
গত মঙ্গলবার ডিএমটিসিএলের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলমের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মেট্রোরেলে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না। মেট্রো স্টেশনের প্রতিটি গেটে যাত্রীদের যথাযথভাবে তল্লাশি করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোনো যাত্রীর কাছে কাঁচা বা রান্না করা মাংস পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক তার মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ আটকে দেওয়া হবে। মেট্রোরেলের নিরাপত্তা কর্মীদের এসব নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতেও বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য