ক্রীড়া ক্ষেত্রে পুরুষদের চেয়ে নারীরা বেশি সফল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে আরও এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) আদলে প্রতিটি বিভাগে একটি করে ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করা হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
নগরে বেড়ে ওঠা শিশুদের মোবাইল-ট্যাব ছেড়ে খেলাধুলা ও শরীর চর্চায় উৎসাহী করে তুলতে অভিভাবকদের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন সরকারপ্রধান।
‘সাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২২’ টুর্নামেন্টে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলকে সংবর্ধনা ও আর্থিক সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে বুধবার সকালে সাফজয়ী নারী ফুটবলারদের সংবর্ধনা দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে সরকারপ্রধান বলেন, ‘তাদের (সাফজয়ী নারী ফুটবল দলের সদস্য) আজকে আমি অন্তত দেখতে পেলাম, কাছে পেলাম, সংবর্ধনা দিতে পারলাম। সে জন্য আমি খুবই আনন্দিত। সবাইকে আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই, শুভেচ্ছা জানাই, দোয়া জানাই। আরও সাফল্য নিয়ে আসবে, সেটাই আশা করি।’
হাসতে হাসতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে না বলে পারি না। আমাদের ছেলেরাও যা পারে না, মেয়েরা তার থেকে বেশি পারে। শুনলে আবার ছেলেরা রাগ করবে। রাগ করার কিছু নেই। ছেলেদের প্রতিযোগিতাটাও একটু বেশি…তবুও আমি বলব, মেয়েরা যথেষ্ট ভালো করছে।’
নিজের বক্তব্যের পক্ষে পরিসংখ্যান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৮ সালের অক্টোবরে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়। ২০২১ সালে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দল টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়েছে। তা ছাড়া নারী ক্রিকেট দল বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে পাকিস্তানকে পরাজিত করেছে।
‘ছেলেরা কিন্তু পারেনি, মেয়েরা পেয়েছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।’
বাঙালি বিজয়ী জাতি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবসময় এটা মাথায় রাখতে হবে, খেলার মাঠেও মাথায় রাখতে হবে, যুদ্ধে জয় করেছি, খেলায়ও জয় করব। এই চিন্তা নিয়ে সবাইকে চলতে হবে। তাহলে সাফল্য আসবে। কারণ মনোবল, আত্মবিশ্বাস এটা একান্তভাবে দরকার।
‘সবসময় প্রশিক্ষণ দরকার। এটাকে কোনোমতেই শিথিল করা যাবে না। যত বেশি ট্রেনিং হবে, তত বেশি খেলাধুলা উৎকর্ষতা পাবে।’
প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণের পাশাপাশি জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের স্টেডিয়ামের উন্নয়নে কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি জেলায় ইনডোর স্টেডিয়াম নির্মাণ করব। বিকেএসপির উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা প্রতিটি বিভাগে, আমাদের ৮টি বিভাগ, প্রতিটি বিভাগে একটা করে আমরা বিকেএসপি করে দেব, যাতে করে খেলাধুলার ট্রেনিং, চর্চাটা হয়। আমরা ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
ক্রীড়া খাতে সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেক ব্যবসায়ী, ইন্ডাস্ট্রির মালিক বা অন্যান্য ব্যবসায়ী, তাদেরকেও আমি আহ্বান করি যে, প্রত্যেকে আমাদের খেলোয়াড়দের যেন চাকরি দেয়, কাজ দেয়। ট্রান্সজেন্ডারদের যদি তারা চাকরি দেয়, তাহলে একটা ট্যাক্স রিবেট পায়। প্রতিবন্ধীদের চাকরি দিলেও তারা ট্যাক্স রিবেট পায়। সেই সঙ্গে আমি বলব, খেলোয়াড়দেরও কোনো একটি কাজ দিয়ে উৎসাহিত রাখা যে, তারা খেলবে।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ নিজেদের পরিবারের সদস্যদের খেলাধুলার প্রতি অনুরাগের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমি এটা মনে করি যে, আমাদের ছেলেমেয়েরা যত বেশি খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবে, সংস্কৃতি চর্চার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবে, সাহিত্য চর্চা করবে, লেখাপড়ার পাশাপাশি এগুলো একান্তভাবে দরকার। শারীরিক, মানসিক সব দিক থেকেই আমাদের তরুণদের আলাদা মানসিকতা, দেশপ্রেম গড়ে ওঠবে।’
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনের দায়িত্ব নিয়ে জাতির পিতা খেলাধুলার সুযোগ তৈরিতে অবকাঠামো উন্নয়ন ও আইন প্রণয়নের কাজ করে গেছেন বলে জানান সরকারপ্রধান। আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তিন মেয়াদে ক্রীড়া খাতে যথেষ্ট উন্নতির পাশাপাশি সফলতা এসেছে বলেও জানান তিনি।
শারীরিক প্রতিবন্ধীদেরও ক্রীড়া ক্ষেত্রে উৎসাহিত করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবার জন্য ক্রীড়া। স্পোর্টস ফর অল—আমরা এই নীতিতে বিশ্বাস করি। তারা পিছিয়ে থাকবে কেন?’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিবন্ধীদের জন্য জাতীয় সংসদ ভবনের পাশে যে জায়গা আছে, সেখানে প্রায় সাড়ে ৪ একরের মতো জায়গা। ওখানে বিশেষ ট্রেনিংয়ের জন্য একটা মিনি স্টেডিয়ামের মতো করে দিচ্ছি। ওটা তাদেরই জায়গা। আসলে এটা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জায়গা।
‘একসময় ওখানে মূক ও বধির স্কুল ছিল। ওই জায়গায়টায় যেন তারা সার্বক্ষণিক ট্রেনিং নিতে পারে, সে ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিকদের জন্য একটা অ্যাকাডেমিও করে দিচ্ছি।’
কান্ট্রি গেমস অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে গ্রামীণ খেলাধুলা ফিরিয়ে আনতে সরকারের নেয়া উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘আমাদের গ্রামে অনেক ছোটখাটো খেলাধুলা ছিল। আজকাল বাচ্চারা সবাই, বিশেষ করে ঢাকার বাচ্চারা তো ফ্ল্যাটে থেকে ফার্মের মুরগির মতো হয়ে যাচ্ছে। খেলাধুলায় যায় না। এটা হলো বাস্তব কথা। আর এখন তো ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি, সারাক্ষণ হয় মোবাইল ফোন বা ট্যাব নিয়ে বসে থাকে।
‘কাজেই ফিজিক্যালি যে চর্চাটা, সেটা আর হচ্ছে না, কিন্তু এটা খুবই দরকার। প্রত্যেক অভিভাবককে আমি অনুরোধ করব, অন্তত কিছুক্ষণ হলেও আপনারা আপনাদের বাচ্চাদের খেলাধুলার দিকে নজর দেন, তাদেরকে নিয়ে যান, খেলান।’
ওই সময় নিজ পরিবারের উদাহরণ টেনে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমাদের পরিবারে কিন্তু খেলাধুলা আছে। জয়ের মেয়ে কিন্তু সে ছোটবেলা থেকে খুব ফুটবল খেলত। রেহেনার ছেলে ববি, তার ছেলে ফুটবল খেলে। ববিও নিজেও খেলে, এখনও খেলে। আমাদের পরিবারের সবার মধ্যে একটু ফুটবল খেলার দিকে ঝোঁকটা বেশি। এটা বোধ হয় দাদার থেকে আসছে আমাদের।’
তিনি বলেন, ‘লেখাপড়া করবে, স্কুল আছে, ঠিক আছে। তার সঙ্গে সঙ্গে খেলাধুলা। তারপর স্কুলগুলোতেও খেলাধুলার ব্যবস্থা থাকা উচিত। প্রতি বছরই তো বার্ষিক স্পোর্টস অনুষ্ঠিত হতো। আমি অন্য স্পোর্টস পারি না, কিন্তু একবার স্কুলে যেমন খুশি তেমন সাজো সেজে প্রাইজ পেয়েছিলাম, কিন্তু আমরা খেলতাম সেখানে। বেসবল খেলতাম, যা যা খেলা ছিল, আমরা খেলতাম।
‘আমার ইমিডিয়েট ছোটভাই কামাল। কামাল যা যা খেলত, কামালের সঙ্গে সাইকেল চালানো, ফুটবল খেলা, ক্রিকেট খেলা—সবকিছুতেই অংশগ্রহণ করতাম।’
প্রত্যেক খেলোয়াড় পেলেন ৫ লাখ টাকা
সাফজয়ী নারী ফুটবল দলের ২৩ খেলোয়াড়ের প্রত্যেককে দেয়া হয় ৫ লাখ টাকা করে আর্থিক সম্মাননা। সবার হাতে সম্মাননার চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
খেলোয়াড়দের মধ্যে সবার আগে সরকারপ্রধানের হাত থেকে এই সম্মাননা বুঝে নেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। তারপর একে একে এগিয়ে আসেন দলের অন্য ২২ সদস্য।
এ ছাড়াও দলের প্রধান প্রশিক্ষক গোলাম রাব্বানীসহ প্রশিক্ষক ও কর্মকর্তাদের ১১ জনের প্রত্যেককে দেয়া হয় ২ লাখ টাকা করে আর্থিক সম্মাননা। তাদের হাতেও সম্মাননার চেক তুলে দেন সরকারপ্রধান।
সম্মাননা গ্রহণ শেষে প্রত্যেক খেলোয়াড়, প্রশিক্ষক ও কর্মকর্তা দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। এরপর নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ও প্রধান প্রশিক্ষক গোলাম রাব্বানী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ট্রফি প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিতে গেলে সব খেলোয়াড়কে ডেকে নেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
পরে মূল মঞ্চে সবাইকে নিয়ে দাঁড়িয়ে সাবিনা খাতুনের হাত থেকে সাফ ট্রফি গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:দেশে সম্প্রতি নারীদের বিভিন্ন বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে কয়েকটি বাধা প্রদানের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিশেষ করে মেয়েদের দুটি ফুটবল ম্যাচ পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধার বিষয়ে নিন্দা জানিয়েছে সরকার।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে বৃহস্পতিবার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নারীরা বাংলাদেশের নাগরিক এবং পুরুষদের মতোই সমানভাবে মানবিক ও নাগরিক অধিকার ভোগ করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশি নাগরিকদের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।’
এতে উল্লেখ করা হয়, কেউ নারীদের অধিকার লঙ্ঘন করার মতো ঘটনায় সম্পৃক্ত হলে বা এই ধরনের বেআইনি বিধিনিষেধ আরোপের সঙ্গে যুক্ত হলে তিনি বা তারা দেশের প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থার মধ্যে পড়বেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেকোনো গোষ্ঠীর নাগরিকদের প্রতি বৈষম্য বা নিপীড়নের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ইতোমধ্যে দিনাজপুর এবং জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনকে স্থগিত ফুটবল ম্যাচ পুনরায় চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। জেলা প্রশাসকরা জানিয়েছেন যে, তারা সম্প্রতি তাদের জেলায় নারী ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচ আয়োজন করেছেন।
‘শত শত মানুষ ম্যাচগুলো উপভোগ করেছেন এবং তাদের জেলার সকল শ্রেণির মানুষ এসব আয়োজনের প্রশংসা করেছেন। আমরা এই বিবৃতির সঙ্গে জয়পুরহাটের নারী ফুটবল ম্যাচের একটি ভিডিও সংযুক্ত করেছি।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত এক মাসে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের বৃহত্তম যুব উৎসবগুলির মধ্যে একটি আয়োজন করেছে, যার মধ্যে শত শত গ্রামীণ জেলা এবং উপজেলা শহরে অনুষ্ঠিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নারী খেলোয়াড়দের জন্য নানা ইভেন্ট অন্তর্ভুক্ত ছিল। অনেক প্রত্যন্ত গ্রামীণ জেলায়ও হাজার হাজার মেয়ে ফুটবল, ক্রিকেট এবং কাবাডি ম্যাচে অংশ নিয়েছিল।
‘প্রফেসর ইউনূস আজীবন নারী অধিকারের পক্ষের একজন। তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের ৯০ শতাংশেরও বেশি মালিকানা ছিল নারীদের। গত সপ্তাহে প্রফেসর ইউনূস ফিফা প্রধান জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সাথে দেখা করেন এবং বাংলাদেশে নারী ফুটবলারদের জন্য অবকাঠামো এবং সুযোগ-সুবিধা তৈরিতে তার সহায়তা চান।’
আরও পড়ুন:ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবে শুক্রবার বর্ণিল আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো দশম কেএসআরএম গলফ টুর্নামেন্ট।
এ টুর্নামেন্টে নারী, সিনিয়র ক্যাটাগরিসহ ১৫৮ গলফার অংশ নেন।
টুর্নামেন্ট উপলক্ষে সবুজে আচ্ছাদিত গলফ ক্লাবকে সাজানো হয় দৃষ্টিনন্দন সাজে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সেনানিবাসের স্টেশন কমান্ডার ও ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ভিপি (প্রশাসন ও অর্থ) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম এনডিসি, পিএসসি।
কেএসআরএমের পরিচালক (বিক্রয় ও বিপণন) মো. জসিম উদ্দিন, বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মো. আশফাকুল ইসলাম, ভাটিয়ারী গলফ অ্যান্ড কান্ট্রি ক্লাবের ইও অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. মোকাদ্দেস হোসেন, কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম, আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার সাইফুল আলম চৌধুরীসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রতি বছর আমরা কেএসআরএমের সহযোগিতায় এ টুর্নামেন্টের আয়োজন করে থাকি, যা অত্যন্ত আনন্দের ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতা। এ জন্য কেএসআরএম কর্তৃপক্ষের প্রতি আমাদের আন্তরিক ধন্যবাদ।
‘আমরা আশা করছি কেএসআরএমের সঙ্গে আমাদের ধারাবাহিক এ সম্পর্ক আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। আঞ্চলিক পর্যায়ের এসব গলফ টুর্নামেন্ট জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
বিজনেস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইংয়ের মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আশফাকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের সব বড় বড় প্রকল্পে কেএসআরএমের রড ব্যবহার হয় ব্যাপক হারে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের ও আনন্দের। এসব প্রকল্পের বাস্তবায়নে গর্বিত নির্মাণ অংশীদার ছিল কেএসআরএম।
‘আমাদের কাঁচামাল বিশ্বমানের। যেকোনো ডায়ামিটার ও গ্রেডের রড তৈরিতে সক্ষম আমরা। আমাদের শিপিং সেক্টরে ২৮টি মাদার ভ্যাসেল রয়েছে, যা দিয়ে আমরা জাতির সেবা করছি। কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করছি প্রচুর।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবসময় চেষ্টা করি গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে। আগামীতেও আমাদের সেই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেএসআরএমের উপ-মহাব্যবস্থাপক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল নুরুল মোমেন, সহকারী মহাব্যবস্থাপক মবিনুর রহমান চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক তাজ উদ্দিন, উপব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান রিয়াদ, জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মিজান উল হক, মিথুন বড়ুয়া, আশরাফুল ইসলামসহ অনেকে।
টুর্নামেন্টে বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ ও র্যাফেল ড্রর মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।
আরও পড়ুন:ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ।
সাত সদস্যের এ কমিটিতে পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক ও জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
কমিটির সদস্য পদে আরও যে পাঁচজনের নাম রয়েছে তারা হলেন ওসমান গনি (ক্রীড়া অনুরাগী), মানিক রায় (কোচ), মো. মামুন (রেফারি), দিবস তালুকদার (ক্রীড়া সাংবাদিক) এবং আরিফুর রহমান (ছাত্র প্রতিনিধি)।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. আমিনুল ইসলাম এনডিসি স্বাক্ষরিত এক স্মারকে কমিটির অনুমোদনপত্র পাঠানো হয় ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে।
এ ছাড়া যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়য়ের সচিব, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার একান্ত সচিব, সচিবের একান্ত সচিব, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব বরাবর অনুমোদনপত্রের অনুলিপি পাঠানো হয়।
গত ১৯ জানুয়ারি অনুমোদন হওয়া ঝালকাঠি জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাত সদস্যের অ্যাডহক কমিটির অনুমোদনপত্রে লেখা রয়েছে, ‘উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ২ (১৫)-এ উল্লিখিত স্থানীয় ক্রীড়া সংস্থার সংশ্লিষ্ট গঠনতন্ত্র মোতাবেক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওপর অর্পিত ক্ষমতা অনুসরণে ঝালকাঠি জেলার জেলা ক্রীড়া সংস্থার অ্যাডহক কমিটি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন, ২০১৮ এর ধারা ৮-এ বর্ণিত পরিষদের মাননীয় চেয়ারম্যান কর্তৃক সদয় অনুমোদিত হয়েছে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর কুর্মিটোলা গলফ কোর্সে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ৫১তম আগা খাঁন গোল্ড কাপ গলফ টুর্নামেন্ট।
তিন ব্যাপী এ টুর্নামেন্ট শেষ হচ্ছে শনিবার, যা শুরু হয় বৃহস্পতিবার।
টুর্নামেন্টে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের দেশি/বিদেশি সদস্যসহ দেশের সব গলফ ক্লাবের প্রায় ৫০০ জন গলফার অংশ নেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান প্রধান অতিথি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী সদস্যরা ছাড়াও কমান্ড্যান্ট, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ ও কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক, প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট মাদাদ আলী ভিরানী, ক্লাব ক্যাপ্টেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তৌহিদ হোসেন, টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবিদুর রেজা খান (অব.), সংশ্লিষ্ট ক্লাবের এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য, ক্লাবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কর্নেল মো. শহিদুল হক (অব.), ক্লাব সেক্রেটারি কর্নেল এস এম সাজ্জাদ হোসেন, কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের লেডি ক্যাপ্টেন প্রফেসর শাহীন মাহবুবা হক, ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, ক্লাব অ্যাফেয়ার্স লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু মো. সাইদুর রহমান (অব.), ক্লাবের জেনারেল ম্যানেজার, গলফ অপারেশনস লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আনোয়ার হোসেন (অব.), বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রিন্স আগা খাঁন শিয়া ইমামি ইসমাইলি কাউন্সিল বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এতে উপস্থিত ছিলেন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার সময় ক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত হবে।
দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
শনিবার বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের বোর্ড রুমে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তিনি এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) নবনিযুক্ত সভাপতি। পদাধিকারবলে কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন তিনি।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বিওএ-র সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর সেনাবাহিনী প্রধান তার এই প্রথম সভায় উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
সভায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিওএ-র কার্যনিবাহী কমিটির সভার কার্যবিবরণী অনুমোদন এবং সিদ্ধান্তগুলোর বাস্তবায়ন ও অগ্রগতি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসী জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মাইনুল হাসান বলেছেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীদের পুলিশ সার্ভেইল্যান্সে (নজরদারিতে) রাখা হয়েছে।
রোববার পল্টনে আউটার স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) আয়োজিত ‘ওয়ালটন-ক্র্যাব স্পোর্টস ফেস্টিভ্যাল ২০২৪’-এর ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এরকম (শীর্ষ সন্ত্রাসী) যারা ইতোমধ্যে মুক্তি পেয়েছে, তারা দীর্ঘ সময় জেল খেটে আদালতের মাধ্যমে মুক্তি পেয়েছে। তারা আমাদের সার্ভেইল্যান্সে রয়েছে। নতুন করে অপরাধে যুক্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
পুলিশে এখনও যোগদান না করা সদস্যদের বিষয়ে জানতে চাইলে মাইনুল হাসান বলেন, ‘এটা একেবারেই মিনিমাম নম্বর। যারা যোগদান করেননি তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে আমাদের কাজ চলছে।’
তিনি বলেন, ‘ডিএমপি মহানগরীর শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। তেমনই ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) বিভিন্নভাবে অপরাধ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করছে।
‘ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন, যেটি বহুদিন থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ সব সময় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করে থাকে।’
ডিএমপি কমিশনার পরে পল্টন আউটার স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী ক্র্যাব সদস্যদের সঙ্গে পরিচিত হন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান খান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমানসহ ক্র্যাবের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আসিয়ান ঢাকা কমিটির পক্ষ থেকে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান শনিবার কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এ সময় আসিয়ান ঢাকা কমিটির প্রতিনিধি ঢাকায় নিযুক্ত ব্রুনাই দারুসসালামের হাইকমিশনার হারিস বিন ওথম্যান, ইন্দোনেশিয়া প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদূত হিরু হারতানতো সুবোলো, মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ হাশিম, মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কেইও সোয়ে মোয়ে, ফিলিপাইনের জুনিয়র রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল আউসান, সিঙ্গাপুর প্রজাতন্ত্রের হাইকমিশনার মাইকেল লি, থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিটমোর, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রদূত নগুয়েন মানহ কুওয়ংসহ কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য