চাকরিরত অবস্থায় অল্প দিনে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর দুর্নীতির তদন্ত করে খুব পরিচিতি পেয়ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) থেকে অপসারিত সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন। তবে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়।
শরীফ বিভিন্ন তদন্তের শুরু থেকেই প্রভাবশালীদের রোষানলে পড়েছিলেন বলে দাবি করেন। সে কারণেই তাকে চাকরি হারাতে হয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
চাকরি হারানোর ৯ মাস পর এখন শরীফ উদ্দিন পুরোদস্তুর দোকানি। কাজ করছেন ভাইয়ের দোকানে।
চাকরিরত অবস্থায় হুমকি পেয়েছিলেন জানিয়ে শরীফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘‘ওদের কথাই সত্য হলো, ‘রাস্তার ফকির বানাবে।’ বানাইছে। দোকানদার বানাইছে। দোকানদার- খারাপ কিছু না। আলহামদুলিল্লাহ, ভালো।”
শরীফ জানান, চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি চাকরি থেকে অপসারণের পর নানা সরকারি-বেসরকারি সংস্থায় চাকরির চেষ্টা করলেও চাকরি পাননি। পরে সংসার চালাতেই বড় ভাইয়ের পরামর্শে দোকান পরিচালনার দায়িত্ব নেন তিনি।
তবে বড় ভাইয়ের দোকানে কাজ শুরুর পেছনে চিকিৎসকের পরামর্শও কাজ করছে বলে জানান শরীফ উদ্দিন।
সোমবার চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশনে প্ল্যাটফর্মের ডান পাশের ছোট্ট কুলিং কর্নারের দোকানে কথা হয় শরীফের সঙ্গে।
শরীফ উদ্দিন দুদকের সহকারী পরিচালক থাকা অবস্থায় কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া নিয়ে অনুসন্ধান, সরকারি প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতি, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের দুর্নীতিসহ নানা স্পর্শকাতর বিষয়ে অনুসন্ধান ও মামলা করে আলোচিত হন।
‘রাঘববোয়ালদের বিরুদ্ধে মামলার’ পর অভিযুক্তদের হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে চাকরিচ্যুত করে দুদক তাকে পুরস্কৃত করেছে বলে মনে করেন শরীফ। বলেন, ‘কমিশনের অনুমোদন নিয়ে আমাদের কাজ করতে হয়। শুরুতে কমিশন সহযোগিতা করেছে। নথিগুলো আমাকে বিশ্বাস করে দিয়েছে। কিন্তু যখন প্রতিবেদন দাখিল করেছি, কক্সবাজার ভূমি অধিগ্রহণ মামলায় যখন অভিযুক্তদের নোটিশ করলাম, তখন থেকে মূলত ওরা আমার বিরুদ্ধে ক্ষেপেছে। ওরা আমাকে ম্যানেজ হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু আমি গ্রহণ করিনি। ম্যানেজ না হওয়ায় ওরা বুঝে গেছে।’
তিনি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলে প্রভাবশালীদের চেহারা বদলে যায় বলে জানান। বলেন, ‘একটার পর একটা অভিযোগ দাখিল শুরু হলো। এমনিতে এখান (চট্টগ্রাম) থেকে বদলি হওয়ার সময় কোনো অভিযোগ ছিল না। আমার রুটিন বদলি ছিল, কোনো অভিযোগের ভিত্তিতে আমাকে বদলি করা হয়নি।
‘চাকরিচ্যুতের ১৫ থেকে ১৬ দিন আগে আমার জিইসির মোড় এলাকার বাসায় গিয়ে আমাকে হুমকি দেয়া হয়েছিল। তখন কমিশনকে আমি সবকিছু জানিয়েছি, তাদের সাপোর্ট এটাই যে, আমার চাকরি চলে গেছে। কেন জানাতে গেলাম, কেন চট্টগ্রামে আসলাম। শুধু আমি না, আমার পটুয়াখালী জেলা পরিচালককে শোকজ করা হয়েছিল, কেন আমাকে ছুটি দিল। ছুটি পাওয়া তো আমার অধিকার।’
ভাইয়ের পরামর্শে তার দোকানে দেড় মাস আগে কাজ শুরু করেন শরীফ উদ্দিন। দোকানে দাঁড়িয়েই নিউজবাংলার সঙ্গে কথার ফাঁকে ফাঁকে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী হাতে তুলে দিচ্ছিলেন নানা সদাই। সেই সদাইয়ের মূল্য সংগ্রহ করে রাখেন নির্ধারিত ক্যাশবাক্সে। কর্মচারীদের বুঝিয়ে দেন নানা ফরমায়েশ।
চাকরি না থাকলেও সব সময় ভয়ে দিন পার করছেন বলেও জানান শরীফ। তার বেঁচে থাকাটা সেই প্রভাবশালী মহলের জন্য হুমকির মতো বলে ভাবনা তার।
প্রভাবশালীরা এখন নিয়মিত তার বিরুদ্ধে কমিশনে লাগাতার অভিযোগ করে যাচ্ছেন বলে জানান। কেননা অভিযোগ থাকলে তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করা কঠিন হবে।
শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘যে নথিগুলো আমি সুপারিশ করেছি, সেগুলো এখনো দায়িত্বপ্রাপ্তরা শেষ করতে পারেনি। পক্ষে-বিপক্ষের বিষয় না, আমাদের বিষয়গুলো নির্ভর করে প্রমাণের ওপর। তারা মনে করতেছে, আমার কারণে রিপোর্টগুলো নিজেদের পক্ষে আনতে পারছে না। আমাকে হুমকি মনে করতেছে। যদি আমি বেঁচে থাকি বা দেশে থাকি, তাহলে নথিগুলো ভবিষ্যতে কী হবে।
‘মামলা যদি আমি করি বা আমি তদন্ত কর্মকর্তা হই, তাহলে কোর্টে আমাকে সাক্ষী দিতে হবে। অনেক মামলার চার্জশিট দিছি আমি ময়মনসিংহ আর চট্টগ্রামে। সেগুলোতে কোর্টে আমাকে দাঁড়াতে হবে। তখন আসামিপক্ষের আইনজীবী বলবে, আমি বিতর্কিত হওয়ায় দুদক আমাকে চাকরিচ্যুত করছে, সুতরাং আমার মামলাও মিথ্যা। তখন তো এটা তাদের পক্ষে যাবে। এই মামলাগুলোর ভবিষ্যৎ কী?’
এখনও স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারেন না বলে জানান দুদকের সাবেক এই কর্মকর্তা। বলেন, ‘আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে চলতে হয়, তাদের গাড়ি নিয়ে চলাফেরা করতে হয়। আমার বাচ্চাকে স্কুলে পাঠানোর সময় চিন্তা করতে হয়। সবকিছু মিলিয়ে নিরাপত্তাহীনতা আরও বাড়ছে। যেহেতু আমি কোনো চাকরিতে যোগদান করতে পারিনি, এখনো জীবিত আছি, আমার জীবিত থাকাটাই ওদের জন্য বড় হুমকি বলে ওরা মনে করতেছে।’
শরীফের সঙ্গে কথা বলার সময় দোকানে আসেন তার বাল্যবন্ধু লিটন। তিনি বলেন, ‘শরীফ যে কত সৎ, তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ আমি। আমরা একসঙ্গে রহমানিয়া স্কুল থেকে এসএসসি শেষ করেছি। এখানে আমিই ওর সবচেয়ে ক্লোজ বন্ধু। সেই আমিই চাকরি চেয়ে একটু সুপারিশের জন্য তার অফিসে কয়েকবার গিয়েছিলাম। কিন্তু সে স্পষ্ট বলে দিয়েছে, অসদুপায়ে কিছু করতে পারবে না। তার সেই সততাই আজকে কাল হলো।’
নিজে যা করেছেন সবকিছুই সৎ থেকে করেছেন। কোনো পক্ষে গিয়ে করেননি বলে জানান শরীফ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘যারা আমাকে হুমকি দিচ্ছে, তারা মনে করতেছে আমি তাদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে অনুসন্ধান করেছি। এটা করার সুযোগ নাই। আসলে আমি যদি মিথ্যা রিপোর্ট দিই, আমি বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ, কমিশন তো পরে।
‘ওরা মনে করতেছে আমি ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে তাদের বিরুদ্ধে রিপোর্ট দিয়েছি। কিন্তু বিষয়টা এমন না, আক্রোশ থেকে না, তথ্য-প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে রিপোর্ট দিয়েছি। এখন আমার ব্যবহারে তারা যদি কষ্ট পেয়ে থাকে, বা আমার কমিশন যদি আমাকে ভুল বুঝে থাকে, তাহলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমি স্যারদের কাছে ক্ষমা চাই, স্যাররাও আমাকে ক্ষমা করে দিক।’
আরও পড়ুন:সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়কে যাত্রীবাহী সিএনজিচালিত অটোরিকশায় পাথরবাহী ট্রাকের ধাক্কায় ২ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও ৪ আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার গৌরীনগর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি গোলাম দস্তগীর আহমদ এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, সিলেটগামী পাথরবাহী একটি ট্রাক সিএনজিচালিত অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দিলে ৬ জন যাত্রী গুরুতর আহত হন। পরে তাদেরকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
হাসপাতাল সূত্রে নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি হলেন সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার লুবিয়া গ্রামের বাসিন্দা ২৫ বছর বয়সী নয়ন মিয়া।
এ ঘটনায় নয়ন মিয়ার ভাই ৪০ বছর বয়সী হারুন মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার নয়াগাঙ্গের পাড় গ্রামের ৪৫ বছর বয়সী শাহ আলম, নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার রঞ্জিত সাহার ছেলে ২৩ বছর বয়সী পার্থ সাহাসহ অজ্ঞাতনামা আরও একজন আহত হয়েছেন।
চলমান তাপপ্রবাহের কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনা করে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দেয়। সে নির্দেশ অমান্য করায় টাঙ্গাইলের একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করেছেন গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌরসভার সূতি পলাশ মহল্লার দারুল কোরআন ও কওমী মাদ্রাসায় যান ইউএনও সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা। সেখান গিয়ে তিনি দেখতে পান সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে টিনের ঘরে দমবদ্ধ পরিবেশে ছোট ছোট শিশুরা ক্লাস করছে।
তিনি উপস্থিত হওয়ার পরপরই গরমে রায়হান নামের প্রথম শ্রেণির এক ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়ে। অথচ সেখানে কোনো পানির ব্যবস্থা ছিল না। এমতাবস্থায় ইউএনও তার গাড়িতে রাখা খাবার পানি এনে শিশুটির মাথায় ও চোখমুখে দেয়ার ব্যবস্থা করান।
খবর পেয়ে শিশুটির বাবা বাছেদ মিয়া সেখান হাজির হন এবং চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে যান।
পরে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের বাছেদ মিয়া বলেন, প্রচণ্ড গরমে যেখান কোথাও একদণ্ড তিষ্ঠানো (থাকা) যায় না, সেখান প্রতিষ্ঠান প্রধান সরকারি নির্দেশে ছুটি না দিয়ে জলন্ত দুপুরজুড়ে ক্লাস নেন। অভিভাবকরা সন্তানদের ক্লাসে পাঠাতে বাধ্য হন।’
তিনি বলেন, ‘দিনের অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ থাকে না। তখন টিনের ঘর নারকীয় পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ফলে প্রতিদিনই কোনো না কোনো শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রতিষ্ঠানে আইপিএস বসানোর জন্য শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ফিসও আদায় করা হয়েছে, কিন্তু আইপিএস বসানো হয়নি।’
সরকারি আদেশ লঙ্ঘন করে ক্লাস চালু রাখায় প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শেখ সাদী ইউএনওর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং সরকারি নিয়ম মানার প্রতিশ্রুতি দিয়ে উপজেলা প্রশাসনকে মুচলেকা দেন।
এরপর তপ্ত দুপুরজুড়ে ক্লাস নেয়ার অভিযোগ পেয়ে পৌর শহরের কোনাবাড়ী বাজারে লাইটহাউজ ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড আলহেরা নূরানী মাদ্রাসায় হাজির হন ইউএনও সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা। সেখানে গিয়েও অভিযোগের সত্যতা পান তিনি।
ওই স্কুলের কয়েকজন অভিভাবক নিউজবাংলাকে জানান, স্কুলপ্রধান মৌখিক ঘোষণা দিয়েছেন যে, কোনো শিশু ক্লাস না করলে পরীক্ষায় নম্বর কমিয়ে দেয়া হবে। ফলে অভিভাবকরা বাধ্য হয়ে বাচ্চাদের ক্লাসে পাঠাচ্ছেন।
ওই স্কুল ও মাদ্রাসাপ্রধান হাবিবুর রহমানও ইউএনওর কাছে মুচলেকা দেন।
ইউএনও সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্যের চেয়ে শিক্ষা বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ উপেক্ষা করে, শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রেখে কোনো প্রতিষ্ঠান খোলা রাখলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলায় ৭ (সাত) বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সৈয়দ সরাফত আলী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক রিপন চন্দ্র গোপের নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
৬০ বছর বয়সী সৈয়দ সরাফত আলী রাজনগর থানার করিমপুর চা বাগান এলাকার বাসিন্দা।
পিবিআই জানায়, শিশুটিকে বাঁশের বাঁশি বানিয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে গত ১৪ এপ্রিল বেলা পৌনে দুইটার দিকে সৈয়দ সরাফত আলী তার বাড়ির পাশের বাঁশ ঝাড়ের নিচে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হলে তিনি আত্নগোপন করেন।
অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে গত প্রথমে রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হয়।
এ বিষয়ে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে রাজনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
পিবিআই মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, ‘শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীর পার পাওয়ার সুযোগ নেই। আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার করা হবে। মামলার খুঁটিনাটি বিষয় বিবেচনায় রেখে নিখুঁত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।’
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা নাশকতা মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এমএ মুহিতসহ ১৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উচ্চ আদালতের মঞ্জুরকৃত জামিন শেষ হওয়ায় তারা আদালতে হাজির হন।
মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০২৩ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে করা দুটি রাজনৈতিক মামলার ১৪ জন আসামি হাজির হলে আদালত তাদের সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহিতুর রহমান হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমেদ আহাদ, যুবদলের এমএ নিশাদ, যুবদলের সিরাজুল ইসলাম পিরুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নুরুল ইসলাম, যুবদলের ওয়াহিদুর রহমান জুনেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল হান্নান, স্বেচ্ছাসেবক দলের রোহেল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের মামুনুর রশিদ ও যুবদলের জাহেদ আহমেদ।
মৌলভীবাজার জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. ইউনুছ মিয়া জানান, ২০২৩ সালে নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিরা। আদালত শুনানি শেষে আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে ঘরে ঢুকে এক নারী ও তার মেয়েকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগটি করেন ছেনুয়ারা বেগম নামের নারী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত সোমবার রাত দুইটার দিকে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব উত্তরপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগমের ঘরের দরজা ভেঙে আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন প্রবেশ করেন। তারা ছেনুয়ারা ও তার মেয়ের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি ও ঘুষি মারেন। একপর্যায়ে মা ও মেয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করেন আইয়ুব ও তার লোকজন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বিষয়ে কাউকে জানানো হলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান৷
এ বিষয়ে ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘সন্ত্রাসী আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক আমার বাড়িতে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রবেশ করে। পরে বাড়ি থেকে আমাকে জোরপূর্বক কয়েকজন লোক বের করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং আমার মেয়েকে নির্যাতন করে স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া বিষয়ে কাউকে বললে মেরে ফেলা হবে বলে চলে যায়।’
থানায় অভিযোগের পর আয়ুব হুমকি দিয়েছে জানিয়ে ছেনুয়ারা বলেন, ‘সেই আয়ুব খান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বলে, মামলা হলে কী হবে? জামিন নিয়ে বাহির হয়ে আমাকে আর আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে বলে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমি টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি এবং সঠিক তদন্ত করে পুলিশকে সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমি ঘটনার সত্যতা পেয়েছি এবং আমি মামলা করার জন্য ওসি বরাবর সুপারিশ করেছি।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি ওসমান গণি বলেন, ‘আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
আরও পড়ুন:সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নতুন তিন বিচারক শপথ গ্রহণ করেছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান তাদের শপথ পাঠ করান। খবর বাসসের
সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী পরিচালনায় শপথ অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, শপথ পাঠকারী তিন বিচারপতির পরিবারের সদস্য, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক এবং সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রিার কার্যালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার রাষ্ট্রপতি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫(১)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের তিন বিচারক ১) বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ২) বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ৩) বিচারপতি কাশেফা হোসেনকে আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে বুধবার রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় দুটি ড্রেজার জব্দ করেছে নৌ-পুলিশ।
মাওয়া নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে উপজেলার মেদিনীমণ্ডল ইউনিয়নের যশিলদিয়ায় বুধবার রাত দেড়টার দিকে পদ্মা নদীতে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় নিয়ম অমান্য করে বালু উত্তোলন করায় ওই দুটি ড্রেজার জব্দ করা হয়।
তিনি আরও জানান, ড্রেজার জব্দ করার সময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। জব্দকৃত ড্রেজার দুটির বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য