চলতি বছরের মে মাসের এক ঝড়ে ভেঙে পড়ে প্রাচীন দুই গাছ। এর একটি পাকুড়, অপরটি জয়তুন। এর মধ্যে কেটে গেছে প্রায় ছয় মাস, কিন্তু গাছগুলো সরানোর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
বগুড়া শহরের শহীদ খোকন পৌর শিশু উদ্যান ও জেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গেলে দেখা যায় এমন চিত্র।
উদ্যানে গিয়ে দেখা যায়, ফটকের দরজা বন্ধ হলেও পশ্চিম পাশের দরজা খোলা। ভেতরে কয়েকটি বেঞ্চে কিছু মানুষ বসা। পশ্চিম গেটের ধারেই একটি পাকুড়গাছ উপড়ে পড়ে রয়েছে। গাছের আঘাতে দুটি পাকা বেঞ্চ ভেঙে যায়। একটি কাঠের বেঞ্চও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেগুলো একইভাবে পড়ে আছে।
মাঠের মাঝখানে জয়তুন গাছটির কাণ্ডের একটি অংশ উপড়ে গেছে। অপরটি ঝড়ের তাণ্ডব উপেক্ষা করে কোনো রকমে দাঁড়িয়ে আছে। ওই সময় পার্কের গেটের দায়িত্বরত কোনো ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
গেটের পাশের চা দোকানি মমিন মিয়া বলেন, ‘মে মাসে প্রথম ঝড়েই গাছ দুটি ভেঙে পড়ে। তারপর থেকে এ অবস্থায় পড়ে আছে। শুক্রবার গেটের দারোয়ান আসেনি। তিনি না থাকলে আমি দায়িত্বে থাকি।’
ওই সময় শহরের শাকপালার বাসিন্দা হেলাল আহমেদ বলেন, ‘আমি নিউ মার্কেটের দোকানে কাজ করি। পাশাপাশি গরুর খাওয়ার জন্য পার্ক থেকে আগাছা ঘাস কেটে নিয়ে যাই।
‘আজ কয়েক মাস ধরে দেখছি গাছ দুটি এভাবে পড়ে আছে। গাছগুলো ফেলে রেখে অযথাই নষ্ট করছে।’
বগুড়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি এ বি এম জিয়াউল হক বাবলা বলেন, ‘শহীদ খোকন পার্ক জেলার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য একটি গুরত্বপূর্ণ স্থান। আমরা এ নিয়ে কথা বলেছি, কিন্তু গাছ পৌরসভা একা অপসারণ করতে পারে না। বন বিভাগসহ অন্য দপ্তরের অনুমতি লাগে। এ জন্য বোধ হয় কাজে দেরি হচ্ছে।’
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এমন পরিস্থিতিকে অব্যবস্থাপনার স্বাক্ষর হিসেবে দেখেন বগুড়া পরিবেশ উন্নয়ন নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক।
তিনি বলেন, ‘খোকন পার্কের ঝড়ে ভেঙে পড়া গাছের মধ্যে একটি বিরল জয়তুন গাছও আছে। এটি আমাদের একটি ঐতিহ্যও বলা যায়। গত মাসে পৌরসভার সচিবের সঙ্গে গাছ দুটি নিয়ে কথা হয়েছিল। তিনি সে সময় জানিয়েছিলেন, এগুলো অপসারণের অনুমতি পাওয়া গেছে, কিন্তু এ কথা বলার পরও এক মাস পেরিয়ে গেল, কাজের দৃশ্যমান কোনো কিছুই নজরে পড়ল না।’
আব্দুল খালেক আরও বলেন, ‘জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মতো স্থানের দুটি গাছ সরাতে ছয় মাস লাগছে। এ থেকে সহজেই বোঝা যায়, এটি সরকারি দপ্তরের লাল ফিতার ফাঁদে পড়েছে। এটাকে চরম অবহেলা ও কাজের অব্যবস্থাপনা বলা ছাড়া অন্য কোনো শব্দ নেই।’
মে মাসের শুরুতে ঝড়ে গাছ দুটি ভেঙে পড়ার বিষয়টি জানান বগুড়া পৌরসভার সচিব রেজাউল করিম।
অপসারণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারি স্থাপনায় গাছ কাটার বিষয়টি একটু জটিল। আমরা বন বিভাগ থেকে অনুমতি নিয়ে সেটি জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠিয়েছিলাম। তাদের মাধ্যমে মন্ত্রণালয় হয়ে টেন্ডারের অনুমোদন পেয়েছি। এখন সব কাজ শেষ। এ মাসে নিলাম ডাকা হবে। গাছ বিক্রির পর পার্কটি আবার আগের মতো হবে।’
আরও পড়ুন:গাইবান্ধা-৪ আসনে তৃণমূল বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের তালিকায় রয়েছে জেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য মোহাম্মদ ওবায়দুল হক সরকারের নাম। যদিও বিষয়টি জানেন না বলে নিউজবাংলার কাছে দাবি করেছেন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত দলটির এ নেতা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩০টিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের নাম বুধবার ঘোষণা করে তৃণমূল বিএনপি। দলটি গাইবান্ধার পাঁচটি আসনের তিনটিতে প্রার্থী দিয়েছে। এর মধ্যে গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনে প্রার্থী হিসেবে মোহাম্মদ ওবায়দুল হক সরকারের নাম ঘোষণা করে তৃণমূল বিএনপি।
‘জানেন না ওবায়দুল’
নাম ঘোষণার সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে একটি বিজ্ঞপ্তি দেন ওবায়দুল হক সরকার, যা ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুকে। এর একটি কপি এসেছে নিউজবাংলার হাতে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে ওবায়দুল হক সরকার জানান, তিনি (ওবায়দুল হক) প্রচারমাধ্যমে অবগত হয়েছেন যে, তৃণমূল বিএনপিতে তার নাম মনোনয়ন ঘোষণা করা হয়েছে, যার সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
বিষয়টি নিয়ে গোবিন্দগঞ্জবাসীকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করেছেন তিনি।
এসব বিষয় নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ওবায়দুল হক সরকার মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কে বা কারা গাইবান্ধা-৪ (গোবিন্দগঞ্জ) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আমার নাম ঘোষণা করেছেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। নাম প্রকাশের আগে আমার মতামতও জানতে চাওয়া হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আমাকে না জানিয়ে প্রার্থিতা ঘোষণা করার বিষয়টি নিয়ে আমি একটি বিশেষ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি। বিষয়টির সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নাই। অনুমতি ছাড়া প্রার্থী হিসেবে নাম প্রকাশের বিষয়টি আইন লঙ্ঘনের শামিল।’
এসব বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুর মোর্শেদ বাবু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত গাইবান্ধা জেলা ও উপজেলার বিএনপির দায়িত্বশীল কোনো নেতা তৃণমূলে যোগ দেয়নি এবং নির্বাচনে অংশও নিচ্ছে না। বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যদি কোনো নেতা নির্বাচনে প্রার্থী হয় বা অংশ নেয়, তাহলে তাকে সাংগঠনিকভাবে বহিষ্কার করা হবে।’
এ বিষয়ে তৃণমূল বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও মিডিয়া উইং সদস্য সালাম মাহমুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটার কোনো (অনুমতি না নিয়ে মনোনয়ন দেয়া) সুযোগই নেই। এখানে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে মনোনয়ন ফরম ক্রয় করে। তারপর সাক্ষাৎকার দেয়ার পরে নমিনেশন দেয়া হয়। এখানে এত সহজ নয় বিষয়গুলো।’
ওই সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এগুলো (না জানা বা অস্বীকার করা) দায়িত্বহীন কাজগুলোর ব্যাপারে আসলে বলার কিছু নাই বা আপনাদের ওসব বিশ্বাস করারও কোনো সুযোগ নাই।’
আরও পড়ুন:সিলেটে নির্বাচনি প্রচার শুরুর আগেই আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক পড়েছে। বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমাদানের শেষ দিনে আচরণবিধি ভেঙে শোডাউন করেন প্রার্থীরা।
আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের পাশপাশি জাতীয় পার্টি (জাপা) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রেও আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী নিয়ে মিছিল করে এসে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন তারা।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী, প্রার্থীরা মনোনয়পত্র জমার সময় কোনো ধরনের মিছিল বা শোডাউন করতে পারবেন না।
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল আহসানের কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে ভিড় করেন প্রার্থীরা। সকালেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী এবং সিলেট-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ।
বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন শফিকুর রহমান চৌধুরী। ওই সময় শফিকুর রহমানের সমর্থকদের নৌকা মার্কার সমর্থনে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে স্লোগান দিতে দেখা যায়। শফিকুর রহমান ও মাসুক উদ্দিনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের অনন্ত ২০ নেতা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ঢুকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
দুপুরে মিছিল নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন সিলেট-৩ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব। শতাধিক নেতা-কর্মী নিয়ে রিটার্নি কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে শোডাউন করেন তিনি।
শোডাউন দেয়ার কথা অস্বীকার করে হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আগেই এখানে জড়ো হয়েছিলেন। আমি মাত্র চার-পাঁচজন নেতা নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। বাকি যারা এসেছেন, তাদের আমি নিয়ে আসিনি।’
শোডাউন করে মনোনয়নপত্র জমা দেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদও। তিনি সিলেট-৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। দুপুরে রিটার্নি কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমাদানকালে তার সঙ্গে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পদধারী অর্ধশতাধিক নেতা উপস্থিত ছিলেন।
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও সিলেট-৬ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী নুরুল ইসলাম নাহিদ বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
সিলেট-২ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া মনোনয়পত্র জমা দেন দুপুরে। তিনিও শতাধিক নেতা-কর্মীসহ মিছিল নিয়ে এসে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এ ব্যাপারে ইয়াহইয়া চৌধুরী বলেন, ‘আমি কোনো শোডাউন নিয়ে আসিনি। আমাকে দেখে কর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে জড়ো হয়ে কিছু স্লোগান দিয়েছেন, তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে কয়েকজন নেতা নিয়েই আমি প্রবেশ করি।’
সিলেট-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। দুপুরে তিনি শোডাউন করে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন।
জানতে চাইলে শোডাউন করার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচনি আচরণবিধির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আচরণবিধি মেনেই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি।’
বিকেলে মনোনয়নপত্র জমা দেন সিলেট-৬ আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ও দলটির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী। তিনি চার থেকে পাঁচজন নেতা-কর্মী নিয়েই মনোনয়নপত্র জমা দেন।
এ বিষয়ে সিলেটের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল আহসান বলেন, ‘আমি সকাল থেকেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে ব্যস্ত। এখানে কেউ শোডাউন করেননি, তবে বাইরে কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন কি না, তা খেয়াল করিনি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’
আরও পড়ুন:সারা দেশে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন এবং টেকসই ইলিশ আহরণ নিশ্চিতকল্পে ইলিশ জোন এলাকায় চলমান রয়েছে ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প’। গাইবান্ধাও এই জোনের অর্ন্তভুক্ত। তবে দেশের উত্তরের এ সীমান্তের জেলাকে করা হয়নি প্রকল্পের আওতাভুক্ত। ফলে সরকারের এ প্রকল্পের সব ধরনের সুবিধা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড থেকে বঞ্চিত রয়েছে গাইবান্ধার জেলেরা।
বছরের ৮ মাস ২২ দিন ইলিশ ধরায় সরকারের নানা নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও জেলেরা তাদের মাছ ধরার এই পেশাটিকে টিকিয়ে রেখেছেন। কিন্তু ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা চলাকালে দেশের অন্যান্য প্রান্তের জেলেরা সরকারি প্রণোদনাসহ বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা ভোগ করলেও দীর্ঘদিন এ ধরনের সুবিধা থেকে দূরে রাখা হয়েছে গাইবান্ধার জেলেদের। এ নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই তাদের।
ইলিশ আহরণে নিয়োজিত জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার ওই প্রকল্পে গাইবান্ধাকে চলতি বছরেই অন্তর্ভুক্তির দাবি তুলেছেন জেলার সচেতনমহলসহ মৎস্য-সংশ্লিষ্টরা।
মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিকরণের লক্ষ্যে মা ইলিশ ও জাটকা সংরক্ষণে মৎস্য সংরক্ষণ আইন বাস্তবায়ন এবং ইলিশ শিকারি জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য মাছ ধরা থেকে শুরু করে জাতীয় এ মাছ বাজারজাতকরণ পর্যন্ত সম্পৃক্ত সকলকেই প্রকল্পের সুবিধা দেয়ার মাধ্যমে ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প’ হাতে নেয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ২০২০ সালে চালু হওয়া প্রকল্পটি ইলিশ জোন এলাকার দেশের ২৯টি জেলার ১৩৪টি উপজেলায় বাস্তবায়ন করে চলেছে মৎস্য অধিদপ্তর।
প্রকল্পটি যেসব উপজেলায় বাস্তবায়ন হচ্ছে ওই সব এলাকার ইলিশ আহরণ-সংশ্লিষ্ট জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য গরু-ছাগল, ভ্যানগাড়ি, বৈধ জাল বিতরণ এবং নগদ অর্থসহ প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
গাইবান্ধা জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, গাইবান্ধার সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি- এ চার উপজেলা ইলিশ জোনের অন্তর্ভুক্ত এলাকা। ইলিশ জোনের এইসব এলাকায় জেলে রয়েছে অন্তত ৫ হাজার ৫০০ জন। এ ছাড়া সেখানে মাছঘাট রয়েছে ১২১টি, আড়ত ১৬৫টি এবং বাজার রয়েছে ২৫৫টি।
সূত্র জানায়, মা ইলিশ রক্ষায় সরকার ঘোষিত ১২ অক্টোবর হতে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং দণ্ডনীয় অপরাধ, যা প্রতি বছরই বাস্তবায়ন করা হয়।
ইলিশের প্রধান প্রজননের এ মৌসুমে গাইবান্ধার ইলিশ জোনের চার উপজেলায় যৌথ এবং একক অভিযান পরিচালিত হয়েছে মোট ৬৬টি। অভিযানে চার জেলেকে ৯ দিন এবং দুইজন জেলেকে চারদিন করে জেল দেয়া হয়েছে, যার মধ্যে একজন নৌকার মাঝিও রয়েছেন।
এ ছাড়া একই সময়ে অবৈধভাবে ইলিশ শিকারের দায়ে সাত লাখ টাকার বেশি মূল্যের প্রায় ৫৮ হাজার মিটার ইলিশ ধরার অবৈধ জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে; উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় দুই মণ কেজি মা ইলিশ।
অভিযান সংশ্লিষ্টদের দাবি, যদি এইসব অভিযানে দপ্তরের পর্যাপ্ত জনবল, নিজস্ব আইন বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ এবং নিজস্ব নৌযান থাকত, তবে জাল আটক এবং জেল-জরিমানার পরিমাণ আরও কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেত।
বর্তমানে ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ২৩ সেন্টিমিটারের নিচে (জাটকা) ইলিশ মাছ ধরার নিষিদ্ধ কাল চলমান। এর মধ্যে ইলিশ আহরণের নিষিদ্ধ এ সময়ে (১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর) জেলেদের মানিবক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় গাইবান্ধায় চার উপজেলার নদী-সংলগ্ন ইলিশ এলাকাভুক্ত ৫ হাজার ৫০০ জেলে পরিবারের প্রত্যেকের মধ্যে ২৫ কেজি করে মোট ১৩৭ দশমিক ৫০ টন চাল (ভিজিএফ) বিতরণ করা হয়েছে যা প্রকল্প সুবিধার তুলনায় একেবারেই যৎসামান্যই।
অবশ্য গাইবান্ধা সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদ ইলিশ জোনের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এ উপজেলাকে ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা’ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে জানায় সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়।
গত ৪ অক্টোবর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মারজান সরকার স্বাক্ষরিত ওই পত্রের প্রস্তাবের স্বপক্ষে যুক্তি অংশে বলা হয়েছে, সারা দেশে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন এবং টেকসই ইলিশ আহরণ নিশ্চিতকল্পে ইলিশ জোন এলাকায় ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প’ চলমান। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ইলিশ আহরণে নিয়োজিত জেলেদের আয়বর্ধক বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয় (গরু-ছাগল বিতরণ, ভ্যান বিতরণ ইত্যাদি), বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডও পরিচালিত হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ইলিশ জোনের অন্তর্ভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও গাইবান্ধা সদর উপজেলা এ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় এখানকার জেলেরা সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই অতিসত্বর এ উপজেলাকে ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প’-এ অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।
এ ছাড়া পত্রের উত্তোরণ এবং বাস্তবায়নের সুপারিশ অংশে বলা হয়েছে, ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত গাইবান্ধা জেলা টাস্কফোর্স কমিটি’-র মাধ্যমে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব মৎস্য অধিদপ্তরে প্রেরণ করা গেলে অত্র উপজেলা ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প’-এর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে।
এ বিষয়ে ফুলছড়ি উপজেলার রসুলপুর নয়াগ্রাম মৎসজীবী (জেলে) সমবায় সমিতির সভাপতি দবির আহম্মেদ বলেন, ‘বছরের বিভিন্ন সময়ে ইলিশ ধরায় সরকারের বাধা-নিষেধ থাকে। অক্টবরের ২২ দিন মা ইলিশ ধরা বন্ধ ছিল। আর এখন ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত টানা ৮ মাস জাটকা ধরা নিষেধ। তার পরও গরীব জেলেরা পেটের দায়ে যখন মাছ ধরতে যায় তখন তাদের জাল পোড়ানো হয়, জেল দেয়া হয়। কিন্তু ইলিশ জোন হওয়া সত্ত্বেও এখানে সরকারি প্রকল্প না থাকাটা চরম বৈষম্যের। প্রকল্পটি চালু হলে এখানকার জেলেদের অনেক উপকার হবে।’
চলতি বছরের মধ্যেই প্রকল্পটিতে গাইবান্ধাকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান তিনি।
গাইবান্ধা নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘গাইবান্ধা দারিদ্র্যপ্রবণ একটি জেলা। এখানকার জেলেরা প্রতিবছরই খরায় পোড়ে, বন্যায় ভাসে। প্রতিনিয়তই তাদেরকে নানা দূর্যোগের সঙ্গে যুদ্ধ করে বাঁচতে হয়। তাই ইলিশ জোনের জেলার চার উপজেলাকে প্রকল্পটিতে অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি।’
সদর উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. মারজান সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ উপজেলাকে ওই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করতে আমি সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। প্রকল্পটি চালু হলে জেলেরা সরকারি অনুদান (গরু-ছাগল, ভ্যান, বৈধ জাল, প্রশিক্ষণ ও নগদ অর্থ ইত্যাদি) পাবে। এতে তাদের আয়বর্ধক বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে।’
এ সময় ‘এত দিনেও কেন ইলিশ জোনের এসব উপজেলাকে প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির জন্য কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি?’ প্রশ্নের উত্তরে এ কর্মকর্তা ‘বিষয়টি আমার জানা নেই’ বলে এড়িয়ে যান।
গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুল আউয়াল মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মা ইলিশ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে জেলে পরিবারের মাঝে ২৫ কেজি করে ভিজিএফ-এর চাল দেয়া হয়েছে। ইলিশ জোনের এই চার উপজেলাকে প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করতে বিধি মোতাবেক দ্রুতই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
শখ থেকে পাখি পালন শুরু করেন সাভারের নূর হোসেন মানিক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চাষি মানিক নামেই যাকে চেনে সবাই।
শুরুর যাত্রাটা শখ থেকে পাখি পালন হলেও এখন সেটা বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে। সরকারি চাকরি ছেড়ে নিজের বাড়িতেই গড়ে তুলেছেন ‘শখের খামার’ নামের প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন প্রজাতির পাখির পাশাপাশি এখন ছাগলও পালন করছেন মানিক।
শুধু খামার থেকেই নয়, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকেও আয় করছেন তিনি, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন এলাকার বেশ কয়েকজনের।
সাভারে আশুলিয়ার নরিঙ্গারটেক এলাকার শখের খামারের পরিচিতি ছড়িয়েছে মূলত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকেই। এখন নিজ এলাকাতেও বেশ পরিচিত মানিক।
মানিকের খামারে গিয়ে দেখা যায়, নিজ বাড়ির পাশেই সাত থেকে আট শতাংশ জায়গায় পরিকল্পনা মাফিক বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, ময়ূর, রাজহাঁস, দেশি-বিদেশি জাতের মুরগি, টার্কি ও কচ্ছপ পালন করছেন তিনি।
তিনি জানান, মূলত সৌখিনরাই তার প্রধান ক্রেতা। ২০১৫ সালে স্বল্প পুঁজিতে শুরু করা চাষি মানিকের এই খামার এখন বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে। প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আটজন বেতনভুক্ত কর্মচারী কাজ করেন তার খামারে। তাদের মাসিক বেতন এক লাখ ৮০ হাজার টাকা।
পাখির খামার থেকে কিছু দূরে এগিয়ে গেলে দেখা যায় বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তোলা মানিকের ছাগলের খামার।
তিনি বলেন, ‘এখানে ভারতের শিরোহি প্রজাতির প্রায় শতাধিক ছাগল রয়েছে। মূলত ব্রিডিংয়ের মাধ্যমে সারা বছরই ছাগলের বাচ্চা বিক্রি করি।’
পশু-পাখির প্রতি ভালোবাসা থেকে খামার শুরু করা মানিক একসময় পুলিশ সদস্য পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।
তিনি জানান, কেরাণীগঞ্জ কারাগারের কারারক্ষী হিসেবে চাকরি করেছেন অনেকদিন। পরে ২০২০ সালে করোনার সময়ে খামারের পুরোপুরি মনোনিবেশ করতে সরকারি চাকরি ছেড়ে দেন।
এখন পুরোদমে খামার পরিচালনা করে আর্থিকভাবে সচ্ছল নূর হোসেন ওরফে চাষি মানিক।
চাষি মানিক বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই শৌখিন মানসিকতা থাকায় পশু-পাখি ভালো লাগত। যখন ছোট ছিলাম, স্কুলে পড়তাম তখন বিভিন্ন পাখির বাসা খুঁজে বেড়াতাম। একটু বড় হওয়ার পরে কবুতরের প্রতি আকৃষ্ট হলাম। এরপর পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন ধরনের পাখি যখন যেটা ভালো লাগত সেটা পালন করতাম। ২০১৩-১৪ সালের দিকে বাণিজ্যিকভাবে খামার করার চিন্তাভাবনা করি।
‘এখান আমার খামারে বিভিন্ন ধরনের যে পাখি ও প্রাণী আছে এগুলো আমার শখ বা মনের খোরাক। এখানে আসলে আমি মানসিকভাবে প্রশান্তি পাই। এখানে এসে বসলে আমার অবসাদ দূর হয়।’
তিনি বলেন, ‘আমার শখের বিভিন্ন ধরনের এক্সোটিক বার্ড, অ্যানিমেল আছে। বাংলাদেশে যারা ইমপোর্টার আছে বছরের বিভিন্ন সময় তারা এগুলো বাইরে থেকে নিয়ে আসে। তাদের কাছ থেকেই সংগ্রহ করেছি।’
লাভ বার্ড, ইন্ডিয়ান রিংনেট (টিয়া পাখি), বিভিন্ন ধরনের কোনিউর গ্রুপের যেমন সান, পাইনাপেল কোনিউর, গ্রীনচেক কোনিউর পাখি আছে মানিকের কাছে। এ ছাড়া দেখা মিলেছে ময়ূরসহ কয়েক ধরনের ফ্রিজেন্টের। যেটা দেখতে অনেকটা ময়ূরের মতো। পাশাপাশি রাজহাঁস, চিনাহাঁস, টার্কি, বিভিন্ন প্রজাতির মুরগি, সেভরেক ও টাইগার মুরগিসহ দেশি মুরগিও আছে।
তবে অল্প পুঁজি নিয়ে শুরু করলেও এই সাত থেকে আট বছর পরে পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি এ জায়গায় পৌঁছেছেন বলে জানান।
কীভাবে ব্যবসার পরিধি বাড়ালেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘মূলত শুরুটা শখ থেকে করা হলেও পরে তা বাণিজ্যিকভাবে আকার ধারণ করেছে। আর আমাদের ব্যবসার পরিধিটা বেড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণেই। ইউটিউব ও ফেইসবুক এখন ভালো একটা প্রচার মাধ্যম। আমরা মার্কেটিংয়ের মূল মাধ্যমটাই বেছে নিয়েছি সোশ্যাল মিডিয়া।’
তিনি বলেন, ‘‘‘শখের খামার অ্যাগ্রো প্রজেক্ট’ নামে আমাদের ফেইসবুক যে পেজটি আছে, সেখানে এক লাখ ৯১ হাজার ফলোয়ার আছে। ‘বার্ডস ক্যানভাস’ নামে আমাদের আরেকটি পেইজ আছে। সেটাতে এক লাখ ৬৯ হাজারের মতো ফলোয়ার আছে। এ ছাড়া ইউটিউবের দুটি চ্যানেল আছে। একটিতে দুই লাখ ৩০ হাজার এবং আরেকটিতে ৭৫ হাজারের মতো সাবস্ক্রাইবার আছে। এই দুইটি চ্যানেল ও ফেসবুক থেকে আমার যে পরিমাণ আয় হয়, তা ভালোমতো চলার জন্য যথেষ্ট।’’’
মানিক জানান, ছাগল ও পাখির খামার মিলে তিনিসহ আটজন কাজ করেন। রুটিন মাফিক সবাইকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। যেখানে খাবার দেয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা মেইনটেনেন্স করতে হয়।
চাষি মানিকের ছোট ভাই লিটন কবির বলেন, ‘আমার বড় ভাইয়ের খামারে ১০ জন কর্মচারী কাজ করে। আমি নিজেও কাজ করি সেখানে। ছাগলের খামারটা পাখির খামার থেকে কিছুটা দূরে। ছাগলগুলোকে আলাদাভাবে পরিচর্যা করতে হয়।’
সাভার উপজেলার নির্বাহী অফিসার মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘চাষি মানিক নামে ওই যুবক তার বাড়ির পাশেই শখের খামার গড়ে তুলেছেন। শুনেছি, সেখানে বিভিন্ন বিদেশি প্রজাতির পাখি, ময়ূর ও ছাগল পালন করে এখন স্বাবলম্বী তিনি। তার খামারে কাজ করে বেশ কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তির কর্মসংস্থানও হয়েছে। পাশাপাশি খামারের ভিডিও করে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকেও মাসিক বাড়তি আয় করছেন তিনি। বর্তমানে বেকার যুবকদের জন্য এ ধরনের প্রজেক্ট অনুকরণীয় হতে পারে।’
উপজেলার পক্ষ থেকে চাষি মানিকের মতো উদ্যোক্তাদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন:ঘুষ-বাণিজ্য, ঘুষ গ্রহণের ভিডিও এবং এসব নিয়ে সচিত্র সংবাদ প্রকাশের পর নড়ে গেছে সানোয়ার হোসেনের চেয়ার। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের রাজিপুর ইউনিয়নের এই উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। নিজ এলাকার ভূমি-অফিসে বছরের পর বছর ধরে ঘুষ-দুর্নীতির পসরা সাজিয়ে বসা এ কর্মকর্তাকে এবার নিজের আরামের জায়গা ছেড়ে যেতে হচ্ছে গফরগাঁওয়ে।
সেইসঙ্গে সাজামূলক বদলির কোপ পড়েছে সানোয়ার হোসেনের ঘুষ-বাণিজ্যের প্রধান সঙ্গীর ওপর। তাকেও ছাড়তে হচ্ছে রাজিপুর ভূমি অফিস। ভিডিওতে ঘুষের টাকা লেনদেন করতে দেখা অফিস সহকারী আহম্মদ আলীকে বদলি করা হয়েছে হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে।
ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাহবুবুর রহমান সোমবার দুপুরে নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাজিপুর ভূমি অফিসের ঘুষ-দুর্নীতি অনুসন্ধান করে শনিবার (২৫ নভেম্বর) খবর প্রকাশ করে নিউজবাংলা। ‘সরকারি খরচে পোষায় না ভূমি কর্মকর্তার’ শিরোনামে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে রাজিপুর ভূমি অফিস সহকারী আহম্মদ আলী ও অস্থায়ী ভিত্তিতে অফিসের কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করা হিরনের মাধ্যমে ভূমি কর্মকর্তা সানোয়ারের ঘুষ বাণিজ্যের তথ্য তুলে ধরা হয়।
সম্প্রতি ওই ভূমি কর্মকর্তার পক্ষে অফিস সহকারী আলী আহম্মদের ঘুষ গ্রহণের একটি ভিডিও’ও সংগ্রহ করে নিউজবাংলা। এরপর স্থানীয়, সেবাগ্রহীতা, ভূমি প্রশাসনের বিভিন্নজনের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তা দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
খবর প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এরপর অভিযোগের তদন্ত ও ভিডিওতে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি)। সেইসঙ্গে আরও উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের জন্য করা হয়েছে আবেদন।
এ ঘটনার পর ভূমি অফিসের সেবাগ্রহীতারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন।
নিজের জমি খারিজ করতে গিয়ে ভূমি কর্মকর্তা সানোয়ারকে ১৫ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হওয়া মাহফুজ আহম্মদের সঙ্গে আবারও যোগাযোগ করে নিউজবাংলা। ভূমি কর্মকর্তা সানোয়ারসহ অফিস সহকারী আহম্মদ বদলি হয়েছেন জেনে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তিনি। একইসঙ্গে ক্ষোভও ঝরল তার কণ্ঠে, ‘এরা ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই করেন না। শুধুমাত্র বদলি করে এদেরকে ভালো করা যাবে না। চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করলে অন্য দুর্নীতিবাজ কমকর্তারা ভয় পেয়ে নিশ্চয়ই ভালো হয়ে যেত।’
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘রোববার রাতে ভূমি কর্মকর্তা সানোয়ারকে গফরগাঁওয়ের চরআলগী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে এবং আহম্মদ আলীকে হালুয়াঘাট ইউএনও-র কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছে। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করা হয়েছে।’
তবে শাস্তিমূলক বদলির খাঁড়ায় পড়ার পরও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা সানোয়ার হোসেন। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি কখনোই ঘুষ নেইনি। ওইদিন আহম্মদ যেই টাকা নিয়েছে, সেগুলো আমি ছুঁয়েও দেখিনি। তবুও আমাকে বদলি করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:গারো পাহাড়ের আদিবাসী নৃ-গোষ্ঠীর অন্যতম প্রধান উৎসব সাংস্কৃতিক ও কৃষ্টির নবান্ন বা ওয়ানগালা উৎসব। নতুন ফসল ঘরে উঠানোর পর প্রতিবছর উৎসব মুখর পরিবেশে হয়ে থাকে নৃ-গোষ্ঠীর এ উৎসব।
ময়মনসিংহ জেলার শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঐতিহ্যবাহী গারো পাহাড় এলাকায় গারোরা ওয়ানগালা উৎসবের আয়োজন করে থাকে প্রতিবছর। এবারও ২৬ নভেম্বর গারো পাহাড়ের ঝিনাইগাতী উপজেলার মরিয়মনগর ধর্ম পল্লীতে তারা সকলেই নেচে-গেয়ে মেতে উঠেন এ উৎসবে।
এ সম্প্রদায়ের লোকদের তথ্য মতে, এক সময় গারো পাহাড়ি এলাকায় জুম চাষ হতো। তখন ওই জুম বা ধান ঘরে উঠানোর সময় গারোদের শস্য দেবতা ‘মিসি সালজং’-কে উৎসর্গ করে এ উৎসবের আয়োজন করা হতো। এ সম্প্রদায় বিশ্বাস, তাদের শস্য দেবতা এক সময় পাহাড়ি এলাকার গারোদের হাতে কিছু শস্য দিয়ে বলেছিলেন, ‘তোমরা এটা রোপন করো তাতে তোমাদের আহারের সংস্থান হবে এবং তোমরা যে শস্য পাবে তা থেকে সামান্য কিছু শস্য আমার নামে উৎসর্গ করবে।’ এরপর থেকেই গারোরা তাদের শস্য দেবতাকে এই ফসল উৎসর্গ করে। কিন্তু গারো পাহাড়ের অধিকাংশ গারো ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত হওয়ায় এখন ধর্মীয় ও সামাজিক ভাবে একত্রে করে পালন করা হয় এ উৎসব। এখন নতুন ফসল কেটে যিশু খৃস্ট বা ঈশ্বরকে উৎসর্গ করে ওয়ানগালা পালন করেন তারা। সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলার গারো পাহাড়ের নৃ-গোষ্ঠির বা আদিবাসীরা মনে করে ইশ্বরের দয়ায় তারা ফসল উৎপাদন করে থাকে। তাই তারা প্রতি বছরের ন্যায় আয়োজন করে থাকে নবান্ন বা গারোদের ভাষায় ওয়ানগালা উৎসব।
প্রথমে সকাল ৯টার দিকে থক্কা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুরু হয় এ উৎসব। এরপর ১০টার দিকে প্রার্থনা, ১২টার দিকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, দুপর ২টার দিকে বাড়ি বাড়ি কীর্তনের সঙ্গে উৎসবে মেতে ওঠে নৃ-গোষ্ঠীর নারী-পুরুষ ও শিশুরা। সর্বশেষ বেলা ৩টা থেকে প্রীতিভোজের আয়োজন হয়ে থাকে।
মরিয়মনগরের রওনু নকরেক বলেন, ‘আমরা এ দিনটি অনেক আনন্দের সঙ্গে কাটাই। আমাদের নতুন ফসল ঘরে তোলার আগে তার কিছু অংশ প্রভুর নামে উৎসর্গ করি। আবার যেন পরের বছর এ বছরের চেয়ে ভালো ফলন পাই।’
আরেক দ্রনিতা ধারিং বলেন, ‘আমরা আসলে নতুন ফসল প্রভুকে উৎসর্গ করার জন্যই এই উৎসব পালন করে থাকি। এটা আমাদের নবান্ন উৎসব। এ উৎসবকেই আমরা ওয়ানগালা বলে থাকি। আমরা সারাদিন নেচে-গেয়ে কাটাই। আমাদের আগের লোকেরা এই কালচার করে গেছে তাই আমরাও তা পালন করে থাকি।’
তামিম চাম্বু গং বলেন, ‘নতুন ফসল হওয়ার পর আমরা প্রভুকে আগে ফসল উৎসর্গ করে থাকি। তারপর আমরা খাই। আমরা বছরের একই সময় এইটা পালন কইরা থাকি। এখানে আগের যুগের আদিকৃস্টির ব্যবহার করি। নতুন ফসল উৎসর্গ করার মাধ্যমে খৃষ্ট রাজাকে সম্মান করা হয়। এ উৎসবে অনেক বন্ধু- বান্ধব একসঙ্গে হতে পারে। বাড়িতে বাড়িতে অতিথিরা আসে।’
মরিয়মনগর ধর্মপল্লীতে ১৯৮৫ সাল থেকে ওয়ানগালা উৎসব পালন করা শুরু হয়। এ বছরও এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তারা। প্রতিবছরই করা হবে এ উৎসবের আয়োজন। ওয়ানগালায় প্রার্থনা পরিচালনা করেন মরিয়মনগর ধর্মপল্লীর সহকারী পালপুরোহিত ও খামাল ফাদার নিকোলাস বাড়ৈ। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গারোদের নিজস্ব ভাষায় গান ও নৃত্য পরিবেশিত হয়।
মরিয়মনগর ধর্মপল্লীর পালপুরোহিত ও খামাল ফাদার বিপুল ডেভিড দাস বলেন, ‘আমরা তাকে রাজা হিসেবে মানি। শান্তি রাজ হিসেবে তিনি সারা পৃথিবীতে শান্তি ছড়িয়ে দিয়েছেন। শান্তির বার্তা দিয়েছেন। ওয়ানগালা হলো আদিবাসীদের ধন্যবাদদের উৎসব। যা আমরা বাঙালিরা নবান্ন বলে পালন করি। তিনি এ সমস্ত শস্যের উৎস দান করে থাকেন। তাই আদিবাসীরা তার প্রতি খুশি হয়ে কৃতজ্ঞতা জানান এ উৎসবের মাধ্যমে। সুপ্রাচীনকাল থেকে গারো সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্ম ও বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে তুলে ধরাই এর মূল লক্ষ্য।’
তিনি জানান, উৎসব ঘিরে ধর্মপল্লীর ও গারো পাহাড়ে আদিবাসীদের মাঝে বইছে আনন্দ।
আরও পড়ুন:দেশীয় আইনে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, গোষ্ঠী, বয়স নির্বিশেষে সবার জন্ম নিবন্ধন থাকা বাধ্যতামূলক। তাই দেশে জন্ম নেয়া শিশুর প্রথম স্বীকৃতিই এই জন্ম নিবন্ধন। নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষে সরকারের পক্ষ থেকে নাগরিককে দেয়া হয় নাগরিক সনদ। সেই সনদ পেতে অধিকাংশ নাগরিককে পোহাতে অন্তহীন ভোগান্তি। শুধু সেবা প্রার্থীরা নয়, নিজ নিজ অঞ্চলের নাগরিকদের সেবা দিতে গিয়ে চরম ভোগান্তির শিকার স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিরাও।
২০১০ সালে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন প্রক্রিয়া অনলাইন করার পর থেকে সেবাপ্রাপ্তি সহজ ও নিরাপদ করতে সেবার উন্নতির নামে প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন এসেছে বেশ কয়েকবার। কার্যত স্মার্ট বাংলাদেশের অংশ হিসেবে পুরো প্রক্রিয়াটি অনলাইন করার পর বেড়েছে ভোগান্তি। ‘অনলাইন’ নাম হলেও নিবন্ধন সম্পন্ন করতে এখনও সরকারি কর্মকর্তাদের টেবিলে টেবিলে ঘুরতে হয় সেবাপ্রার্থীদের। মূলত নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি তুলনামূলক কঠিন করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ৷
এতে সার্বার ডাউন, পসিবল ডুপ্লিকেট (সম্ভব্য দুবার আবেদন), অনলাইন টাকা গ্রহণে ধীরগতি, ওটিপি সমস্যা, আবেদন ফরম প্রিন্টিং সুযোগ না থাকা, দিনে ত্রিশটির অধিক নিবন্ধন সম্পন্নের সুযেগ না থাকা, নিবন্ধন নম্বরের বিকল্প কীওয়ার্ড দিয়ে আবেদন খোঁজার সুযোগ না থাকা সহ বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন মাঠ পর্যায়ে সেবাদাতারাও। নিবন্ধন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হওয়ায় লাগামহীন ভোগান্তির দায় মাঠ পর্যায়ে সেবাদাতাদের ওপর চাপান সেবাপ্রার্থীরা। এতে সেবাপ্রার্থীর পাশাপাশি নিবন্ধন প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ জনপ্রতিনিধিরা।
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন প্রক্রিয়ার এসব সমস্যা নিয়ে কথা হয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) পশ্চিম ষোলশহর এলাকার কাউন্সিলর মোবারক আলীর সঙ্গে।
তিনি জানান, দেশে একই নামে একাধিক কেন, সহস্রাধিক ব্যক্তি থাকতে পারে। ক্ষেত্র বিশেষে বাবা বা মায়ের নামও মিলে যেতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে নিবন্ধনের সময় পসিবল ডুপ্লিকেট আসে। আগে এটা জেলা প্রশাসন ঠিক করতে পারত, এখন তাদের ওপরও নেই।
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি নিবন্ধনের জন্য আলাদা ওটিপির প্রয়োজন হয়। এটা ঠিক আছে। কিন্তু সমস্যাটা হলো প্রতিটা ওটিপির জন্য পৃথক ফোন নম্বর লাগে। এক্ষেত্রে একই পরিবারে যদি একাধিক শিশু থাকে, তাদের নিবন্ধনের সময় ঝামেলা হয়।’
মোবারক আলী বলেন, ‘বিষয়টা এমন দাড়িয়েছে যে, এখন জন্মদান বা জন্মগ্রহণের চেয়ে জন্মের নিবন্ধন করা কঠিন। একটা ওয়ার্ড থেকে দৈনিক সর্বোচ্চ ৩০টি নিবন্ধন সম্পন্ন করার সুযোগ আছে। অথচ প্রতিদিন আমাদের সেবাপ্রার্থী এর কয়েকগুণ বেশি। এতে আমাদের জট লেগে যাচ্ছে রোজই। সেবাপ্রার্থীরা এসব বুঝতে চান না, আমাদের এটা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়।
‘অনেক সময় কারো কারো ক্ষেত্রে সত্যি সত্যি একাধিক রেকর্ড পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কী, সেই বিষয়েও কোনো নির্দেশনাও নাই। এগুলো বারবার সংশ্লিষ্টদের জানিয়েও কোনো সুরহা হচ্ছে না।’
সিটি করপোরেশনের পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘অধিকাংশ সময় দেখা যায় পেমেন্ট গ্রহণ করতে অতিরিক্ত সময় নেয়। সার্ভার ডাউন থাকে। পেমেন্ট গ্রহণে সময় বেশি নেয়ায় আমাদের কাছে সেবাপ্রার্থীরা আসলেও দেখা যায় পেমেন্ট অসম্পন্ন। তখন তারা ক্ষুব্ধ হয়। এসব সমস্যার কারণে জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।’
জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় এসব সমস্যার স্থায়ী সমাধান চান স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিরা। চসিকের উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু বলেন, ‘সার্ভার ডাউন সবচেয়ে বড় সমস্যা। কিছুদিন আগেও দিনের অধিকাংশ সময় সার্ভার ডাউন থাকত। এখন অবশ্য এ সমস্যা কিছুটা কমেছে। আবার অনেক সময় কেউ জন্ম নিবন্ধন হারিয়ে ফেললে তার তো আর নিবন্ধন নম্বর মনে থাকবে না৷ কিন্তু সার্ভারে কারো নিবন্ধন খোঁজার জন্য নিবন্ধন নম্বরই ব্যবহার করতে হয়। এক্ষেত্রে কেউ নিবন্ধন সনদ হারিয়ে ফেললে সেটার কোনো সমাধান পাওয়া যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সমস্যার স্থায়ী একটি সমাধান দরকার। এটার সঙ্গে আমরা সম্পৃক্ত হওয়ায় সাধারণ মানুষ আমাদের ভুল বোঝে।’
এই বিষয়ে জানতে স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন রেজিস্ট্রার জেনারেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ততার কথা বলে বক্তব্য জানাতে রাজি হননি৷
মন্তব্য