বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে খোলা আকাশের নিচে হাজারও নেতা-কর্মীর মিলনমেলা বসেছে। সেখানে শুক্রবার রাতে গিয়ে দেখা গেছে- কম্বল, পাটি, চাদর বিছিয়ে তারা ঘুমানোর ব্যবস্থা করছেন। উদ্যানের এক পাশে প্রস্তুত করে ফেলা হয়েছে সমাবেশের মঞ্চ।
হুলুস্থুল সেখানে এতটাই বেশি যে সংবাদকর্মীদের জন্য তৈরি করা মঞ্চ ভেঙেই পড়ে গেছে।
বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় এই গণসমাবেশ শনিবার। নানা কারণ দেখিয়ে জেলায় গণপরিবহনগুলো বন্ধ হয়ে গেছে শুক্রবার থেকে। তবে নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন বুধবার থেকেই। শুক্রবার যারা এসেছেন, তাদের মধ্যে কেউ সাইকেলে, কেউ মোটরসাইকেলে, কেউ আবার হেঁটেও এসেছেন।
বুধবার থেকেই এই উদ্যানে রাতযাপন করছেন বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতা-কর্মীরা। শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজ এখানেই আদায় করেছেন তারা। রাতও কাটাবেন এখানে।
মূলত শুক্রবার রাত ৮টার পর থেকে সমাবেশস্থলে ঢল নামতে থাকে; মিছিল নিয়ে নেতা-কর্মীরা সেখানে আসতে থাকে। এর আগে শুক্রবার বিকেলে বরিশাল পৌঁছেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা নগরীর বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান নিয়েছেন।
রাত ১০টার দিকে সমাবেশস্থল ও মঞ্চ ঘুরে দেখে গেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী সোহেল ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহামুদ চৌধুরী।
সমাবেশস্থলে সন্ধ্যার পর থেকেই উৎসবমূখর পরিবেশ। কোথাও চলছে আড্ডা, কোথাও রান্নার আয়োজন। রাতে থেমে থেমে নানা স্লোগান দিচ্ছেন নেতা-কর্মীরা। কেউ কেই দলীয় গানও করেছেন।
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার চরমাইক্কা ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রহিম সরদার বলেন, ‘সব কিছু বন্ধ থাকায় বৃহস্পতিবারই সমাবেশস্থলে এসেছি। ট্রলার নিয়ে চরফ্যাশন থেকে আমরা ২০০ নেতা-কর্মী বরিশালে এসে এখানেই থাকছি। নিরাপত্তার জন্য তাবু টানিয়ে ছিলাম গতরাতে। আজও থাকব। আগামীকাল সমাবেশ সফল করেই বাড়ি ফিরব।’
বরগুনার বেতাগী থেকে এসেছেন স্বেচ্ছাসেবক দলকর্মী অলিউল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কোনো বাধাই আটকে রাখতে পারবে না আমাদের। অনেক নেতা-কর্মী সাইকেল চালিয়ে ও হেঁটেও আসছে। আমরা রাতে এখানে থাকছি সমাবেশ সফল করার জন্য। শীত উপেক্ষা করেও আমরা দেশকে স্বৈরশাসকের হাত থেকে মুক্ত করতে আন্দোলন সফলে থাকছি।’
উজিরপুর থেকে আসা কর্মী মইনুল হোসেন বলেন, ‘বরিশালে আসতে ৪ জায়গায় বাধা দেয়া হয়েছে গাড়িতে। তাই ইচলাদী থেকে হেঁটেই আজকে সন্ধ্যায় আসছি। সমাবেশ সফল করতে এটুকু কষ্ট তো করতেই হবে দেশের স্বার্থে।’
রাতে কেন্দ্রীয় দুই নেতা সমাবেশস্থল ঘুরতে আসায় নেতা-কর্মীদের উচ্ছ্বাস আরও বেড়ে গেছে।
বাবুগঞ্জ উপজেলার মাহাদ মাঝি বলেন, ‘দেশ রক্ষার আন্দোলনে আমাদের নীতিনির্ধারকদের কাছে পেয়ে আমরা খুশি। আমাদের দাবি-দাওয়া তাদের কাছে সরাসরি বলার সুযোগ পাচ্ছি।’
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, ‘আমাদের হাজার হাজার নেতা-কর্মী সমাবেশস্থলে অবস্থান নিয়েছেন। সরকারের কোনো বাঁধাই কাজে আসেনি।’
সমাবেশের মঞ্চ প্রস্তুত কমিটির যুগ্ম আহবায়ক খন্দকার আবুল হোসেন লিমন বলেন, ‘৫০ ফুট দীর্ঘ ও ২৫ ফুট চওড়া মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। ব্যানারও লাগানো শেষ হয়েছে। সমাবেশস্থলসহ আশেপাশে ১২০টি মাইক লাগানো হয়েছে।’
হাজারও নেতা-কর্মীদের জন্য উদ্যানে রান্নার আয়োজন দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার রাতের মতো শুক্রবারেরও মেন্যু খিচুড়ি ও মুরগির মাংস।
বাবুর্চি আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘আজ ৯টি ডেকচিতে মাংস-খিচুরি রান্না চলছে। দুই হাজার মানুষের জন্য রান্না করা হচ্ছে।’
এদিকে, উচ্ছ্বসিত কিছু বিএনপি কর্মী সাংবাদিকদের জন্য তৈরি করা মঞ্চে বারবার ওঠা-নামা করছিলেন। এক পর্যায়ে সেটি ভেঙে পড়লে আহত হন সময় টিভির বরিশালের ভিডিওগ্রাফার সুজয় দাস। সেই মঞ্চটি আবার ঠিকঠাক করা হচ্ছে রাতেই।
আরও পড়ুন:নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রোববার ঢাকা মহানগরের সব সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত যৌথ সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, ৩ অক্টোবর সাভারের আমিন বাজারে মহাসমাবেশ। এ ছাড়া ৭ অক্টোবর বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন, ১০ অক্টোবর পদ্মা সেতুর রেল সেতুর উদ্বোধন, ২৩ অক্টোবর মেট্রোরেলের মতিঝিল অংশ উদ্বোধন এবং ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সুধী সমাবেশ করবে।
বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক ‘মুজিব- একটি জাতির রূপকার’ সিনেমাটি মুক্তি পাচ্ছে আগামী ১৩ অক্টোবর। এ উপলক্ষে চলচ্চিত্রটির মুক্তির তারিখ ঘোষণা এবং ট্রেলার ও পোস্টার উদ্বোধন করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
রোববার রাজধানীর মিন্টো রোডে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের বলরুমে এ উপলক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়নে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ উদ্বোধন ঘোষণা করেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এত খুশি যে, ১৩ই অক্টোবর এই ছবি সমগ্র বাংলাদেশে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। এই ছবি শুধুমাত্র একটি সিনেমা নয়, এটি বঙ্গবন্ধুর বায়োপিক। ‘মুজিব-দ্য মেকিং অব আ নেশন’, ‘মুজিব- একটি জাতির রূপকার’ ছবিতে বাংলাদেশের ইতিহাস, অভ্যুদয়ের ইতিহাস আছে। কারণ এই বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্র গঠিত হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে।’
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, প্রধান তথ্য কমিশনার ড. আবদুল মালেক, চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন, বায়োপিক লাইন ডিরেক্টর সতীশ শর্মা অনুষ্ঠানে তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন ও শিল্পীদের নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে পোস্টার উন্মোচনে অংশ নেন।
চলচ্চিত্র অঙ্গণের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। দেশের বাইরে থেকে এ উপলক্ষে পরিচালক শ্যাম বেনেগাল এবং বঙ্গবন্ধুর চরিত্রাভিনেতা আরিফিন শুভর পাঠানো ভিডিও বার্তা ও সিনেমাটির ট্রেলার দর্শকদের ছুঁয়ে যায়।
ড. হাছান বলেন, ‘মুজিব- একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রটি জাতির জন্য একটি দলিল। এটি শুধু সিনেমা নয়, এই ছবিটি জাতির ইতিহাসের একটি দলিল। বঙ্গবন্ধু কীভাবে একটি জাতির রূপকার হলেন, সেটিই এই ছবিতে চিত্রায়িত হয়েছে।
মন্ত্রী হাছান এ সময় বায়োপিকের পরিচালক শ্যাম বেনেগাল এবং ছবির নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে অকুণ্ঠ ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘গওহর রিজভী সাহেব, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এই ছবির নির্মাণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সাজ্জাদ জহিরসহ বাংলাদেশ থেকে আরও অনেকেই যুক্ত ছিলেন। সবাইকে আমি ধন্যবাদ জানাই। শিল্পীরা প্রত্যেকেই অসাধারণ অভিনয় করেছেন। যাকে যে চরিত্র দেয়া হয়েছে ভালো অভিনয় করেছে।’
তথ্যমন্ত্রী জানান, ‘বেশ আগেই আমরা বায়োপিকের সেন্সর সার্টিফিকেট দিয়েছিলাম। খুব সহসা এটি ভারতে সেন্সর সার্টিফিকেটও পেতে যাচ্ছে। সুতরাং আমরা প্রথমে বাংলাদেশে মুক্তি দিতে চাই, কারণ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের রূপকার, এই জাতির রূপকার, সে জন্য বাংলাদেশে মুক্তি দিতে চাই। পরে এটি ভারতবর্ষসহ পুরো পৃথিবীতে মুক্তি দেয়া হবে। আমি সবাইকে এই ছবি হলে গিয়ে দেখার জন্য অনুরোধ জানাই।’
তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জাপানের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাত
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি (Iwama Kiminori)।
রোববার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর দপ্তরে তাদের বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, ‘গত ৫২ বছরে বাংলাদেশের পথচলায় জাপান অর্থনৈতিকভাবে, অবকাঠামোগতভাবে আমাদের যেভাবে সহায়তা করেছে, সে নিয়ে জাপানের রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। দেশের উন্নয়নে ভবিষ্যতে যেন আমরা আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারি, সে ব্যাপারে তার সঙ্গে আলোচনা করেছি।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তিনি আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। আমি তাকে জানিয়েছি- আগামী নির্বাচন ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ট্রান্সপারেন্ট হবে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। ক্রমাগতভাবে নির্বাচন বর্জন করা যে, কখনও কারও জন্য সমীচীন নয়, সেটি আমি তাকে বলেছি।
‘একইসঙ্গে দেশে যাতে কোনো রাজনৈতিক ভায়োলেন্স না হয়, যেটি ২০১৩-১৪-১৫ সালে হয়েছে এবং সময়ে সময়ে বিএনপি করে এবং এখনও করার চেষ্টা করছে, উস্কানি দিচ্ছে- এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি আগামী নির্বাচন জনগণ এবং অনেক রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু, অবাধ, সুন্দর ও সর্বমহলে কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে, সেটি আমি তার সঙ্গে আলোচনায় বলেছি।’
‘সহিংসতা বরদাশত নয়’
এ সময় সাংবাদিকরা বিএনপির আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন করলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, “দেশে কেউ সহিংসতা করুক সেটি কখনও বরদাশত করব না। যে কেউ রাজনৈতিকভাবে আন্দোলন করতে পারে, সরকারের পদত্যাগও চাইতে পারে। কিন্তু তাই বলে দিনক্ষণ ঠিক করে ‘সরকারকে টেনে নামিয়ে ফেলবে’ বলা সমীচীন নয়, সেটি রাজনীতির ভাষা নয়।”
তিনি বলেন, ‘যে ভাষায় বিএনপি কথা বলছে, সেই ভাষা ইঙ্গিত দেয় যে, তারা দেশে সহিংসতা, নাশকতা করতে চায়। সেটি করতে কাউকে দেয়া হবে না। আমি আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে বলছি- আওয়ামী লীগ রাজপথের দল। রাজপথে কীভাবে, কাকে মোকাবিলা করতে হয়, সেটি আমরা জানি।’
আরও পড়ুন:বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত মানবতাবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘এটি পূর্বপরিকল্পিত এবং একটি গভীর মাষ্টারপ্ল্যানেরই অংশ।’
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রোববার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘আজ দেশনেত্রীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত আসলে প্রধানমন্ত্রীর যুক্তরাষ্ট্রে দেয়া বক্তব্যেরই বাস্তবায়ন। ফ্যাসিবাদী শাসনে আইনমন্ত্রী যে শেখ হাসিনার বিশ্ব দোসর হবেন এটাই স্বাভাবিক।’
রিজভী বলেন, ‘দেশে এখন চলছে জয়বাংলার আইন। এই আইনে সুশাসন ও ন্যায়বিচার কঙ্কালে পরিণত হয়েছে। অপপ্রচার চালানোর পরেও খালেদা জিয়ার ব্যাপক জনপ্রিয়তা এবং তাঁর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মর্যাদায় চিড় ধরাতে না পেরে শেখ হাসিনা আক্রোশের নানামুখী প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছেন। আর এজন্য তিনি খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটকে রেখেছেন এবং এখন তাঁর উন্নত চিকিৎসায় বাধা দিয়ে দুনিয়া থেকে সরানোর নীলনকশা বাস্তবায়ন করছেন।’
বিএনপির কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীদের মামলা দেয়া হচ্ছে উল্লেখে করে বিএনপির এই নেতা বলেন, গত ২৮ ও ২৯ জুলাই থেকে সোমবার পর্যন্ত বিএনপির ঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সারা দেশে ৩৩৮টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ২ হাজার ১০০ জন, মোট আসামি ১৩ হাজার ৩৬০ জন। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে হামলায় আহত হন ১ হাজার ৬৫০ জন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিষয়ে সর্বোচ্চ উদারতা দেখিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের দলীয় কার্যালয়ে ঢাকা ও বিভিন্ন অঞ্চলের নেতাদের সঙ্গে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের যৌথসভা শেষে রোববার তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা খালেদা জিয়ার বিষয়ে সংবেদনশীল। তিনি (শেখ হাসিনা) খালেদা জিয়ার বিষয়ে সর্বোচ্চ উদারতা দেখিয়েছেন। তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।’
ভয়েস অফ আমেরিকায় প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সাক্ষাৎকারে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী যে কথা বলেছেন তাতে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। বিএনপি প্রধানের চিকিৎসার বিষয়ে প্রচলিত আইনে সরকারের কিছু করার নেই। আইন অনুযায়ী আদালতের দ্বারস্থ হয়ে নির্দেশ মেনে তাকে চিকিৎসা করাতে হবে।’
এ সময় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চলতি অক্টোবর মাসে রাজধানী ঢাকায় তিনটি এবং ঢাকার বাইরে দুটিসহ মোট পাঁচটি সমাবেশ করবে বলে জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক।
ওবায়দুল কাদের জানান, পাঁচটির মধ্যে একটি জনসমাবেশ এবং বাকি চারটি হবে সুধী সমাবেশ। ৩ অক্টোবর সাভারের আমিনবাজারের মহাসমাবেশটি হবে এ মাসের একমাত্র জনসমাবেশ ।
আর বাকি ৪টি সুধী সমাবেশ হবে- ৭ অক্টোবর বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন, ১০ অক্টোবর পদ্মাসেতুর রেলসেতুর উদ্বোধন, মেট্রোরেলের মতিঝিল অংশ উদ্বোধন এবং ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন উপলক্ষে।
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ অবৈধ দল হলে কেন খালেদা জিয়ার মুক্তি কিংবা বিদেশে পাঠানোর জন্য অনুমতি চাওয়া হয়। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকে কথার সীমারেখা মানা উচিত।’
তিনি বলেন, ‘আ স ম আব্দুর রবও একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে আ স ম আব্দুর রব উদাহরণ হতে পারে না। হাজী সেলিমও কিন্তু আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ পাননি। আওয়ামী লীগ শূন্যে ভেসে হাওয়ায় উড়ে কিংবা বন্দুকের নল উঁচিয়ে ক্ষমতায় বসেনি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘রাজনীতিতে কঠিন এক চ্যালেঞ্জে আছি। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতেই যৌথ সভার আয়োজন। বিএনপিকে প্রতিপক্ষ নয়, শত্রুপক্ষ মনে করতে হবে।’
রাজনীতির মাঠে বিএনপিকে মোকাবিলায় নেতা-কর্মীদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আলটিমেটামেও বিএনপি ব্যর্থ মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গত ১৫ বছরে অনেকবার বিএনপির হাঁকডাক শোনা হয়েছে। বিএনপি বিভিন্ন সময় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আসন নিয়ে তিরস্কার করে সমালোচনা করেছিল, যা ছিল বিএনপির অহংকার, দম্ভ। যারা আওয়ামী লীগের পতন দেখছে তাদের নিজেদের পতন হয় কি না সেটাই এখন দেখার বিষয়।’
রাজনীতিবিদদের বেফাঁস কথা বলা থেকে দূরে থাকা উচিত বলেও পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিলবোর্ড কিংবা পোস্টার ফেস্টুন করে প্রচারণা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘এক এগারোর মতো অস্বাভাবিক সরকার তৈরি করার সুগভীর ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি, তাদের একমাত্র টার্গেট হচ্ছে শেখ হাসিনাকে হটানো।
আগামী ৪ অক্টোবর দুপুরে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তিনি আমাদের জন্য অনেকগুলো আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও সম্মাননা নিয়ে এসেছেন।’
প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে আওয়ামী লীগের দেয়া সংবর্ধনার প্রস্তাব এ সময় তিনি ফিরিয়ে দেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, মিডিয়ার মাধ্যমে অপপ্রচার কঠোরভাবে প্রতিরোধ করা হবে, যাতে নির্বাচনে এর ক্ষতিকর প্রভাব না পড়ে।
রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আয়োজিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘মিডিয়ার মাধ্যমে এখন অনেক অপপ্রচার হয়, যেটাকে মিসইনফরমেশন বা ডিজইনফরমেশন বলে। অনেক কিছু বানিয়েও প্রচার করা হতে পারে। সেগুলো আমরা কঠোরভাবে প্রতিরোধ করবো, যাতে নির্বাচনে এর নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন হবে বলে উল্লেখ করেন কাজী হাবিবুল আউয়াল। একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য তখনই হবে, যদি দায়িত্ব পালন করে মানুষকে দেখানো যায়। বাজারে পারসেপশন আছে- আমাদের ওপর আস্থা নেই, সরকারের ওপর আস্থা নেই। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয় না।
‘আমরা এই চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করতে চাই, আমাদের অধীন যে নির্বাচন হবে সেটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ হবে। স্বচ্ছতাটা গণমাধ্যম ও পর্যবেক্ষকদের মাধ্যমে দেখাতে চাই।’
সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিতর্ক ও সমালোচনা হতে পারে। অতীতেও হয়েছে। ৫০, ৬০, ৭০ বছরের ইতিহাস ঘাঁটলেও বিতর্ক পাওয়া যাবে। এমনকি ব্রিটিশ আমলের নির্বাচন নিয়েও কিছু কিছু বিতর্ক হয়েছে। তখন হয়তো মাত্রাটা কম ছিল।’
ইউএনওদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত হবে, সেটি কঠোরভাবে প্রতিপালন করতে হবে। আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে বিষয়টি কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করব। জানার চেষ্টা করব আপনারা কে কীভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে আমরা তথ্য নেব।’
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে নির্বাচন পরিচালনা হবে। নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য, শান্তিপূর্ণ হতে হবে।
‘আরেকটি বিষয়, ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দিতে পারে। তা না হলে সেই দায় আপনাদের ওপর বর্তাবে। পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা নেবেন এবং জনগণকেও উদ্বুদ্ধ করবেন, তারা যেন কেন্দ্রে এসে ভোট দিয়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ আছে। অনেকে আবার এজেন্ট না দিয়েও অভিযোগ করেন। কাজেই প্রতিটি দল থেকে এজেন্ট দিয়েছে কি না সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এজেন্ট শক্তিশালী হলে কারচুপির আশঙ্কা অনেক কমে যাবে।’
দু’দিনের আবাসিক এই কর্মশালায় ৫০ জন ইউএনও এবং ৫০ জন নির্বাচন কর্মকর্তা অংশ নেন।
কর্মশালায় ইসি সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলম, অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ুন কবীর, ইটিআই মহাপরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আছেন সেখানে কোনো পেশি শক্তি টিকবে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রোববার বিকেলে ফেনীর ছাগলনাইয়ায় উপজেলার শহীদ মিনার চত্ত্বরে আয়োজিত ১৪ দলের জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পশ্চিমা শক্তি কত রকমের সবক দিচ্ছে, নিজেদের দেশে কী করছেন তার খবর নেই। আমাদের সবক দিয়ে লাভ নেই। যেখানে শেখ হাসিনা আছেন সেখানে কোনো পেশি শক্তি টিকবে না।’
দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা, সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন ও শান্তির ধারা অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘শেখ হাসিনা দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা এই বাংলার অপরাজেয় শক্তি। তাকে কোনো অপশক্তি দমাতে পারবে না। ১৪ দলের সকলে মিলে দেশবিরোধী শক্তিকে প্রতিহত করবে।’
জনসভায় অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপিফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, চট্টগ্রাম মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক খোরশেদ আলম সুজন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বাসদ সভাপতি রেজাউর রশীদ, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য কামরুল আহসান।
এতে সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার।
আরও পড়ুন:
চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাইয়ের করা আবেদনে আইন মন্ত্রণালয়ের সাড়া না দেয়াকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ণ সিদ্ধান্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
রোববার গণমাধ্যমে দেয়া এক ভিডিও বার্তায় এমন মন্তব্য করেছেন বেগম জিয়ার এ আইনজীবী।
বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘আজকের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হয়েছে দেশে আইনের শাসন নেই। এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে ভয়ংকর তামাশা করা হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় স্পষ্ঠভাবে বলা আছে সরকার চাইলেই তাকে মুক্তি দিতে পারে।’
এর আগে সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী জানান, আইনের ৪০১ ধারায় কোনো দরখাস্ত যদি একবার নিষ্পত্তি করা হয়, সেই নিষ্পত্তিকৃত দরখাস্ত পুনর্বিবেচনা করার কোনো অবকাশ আর আইনে থাকে না।
এ বিষয়ে কায়সার কামাল বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যদিও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনে রাজবন্দিদের মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসা করানোর নজির আছে। কিন্তু আমরা দেখলাম, রাজনৈতিকভাবে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
এ সিদ্ধান্তকে ‘জাতির প্রতি একটি নিকৃষ্টতম প্রতারণা’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আইনমন্ত্রী পাবলিক স্টেটমেন্ট দিয়ে বলেছিলেন, যদি খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়, সেটা সুবিবেচনা করা হবে। তার এই পাবলিক স্টেটমেন্টের প্রেক্ষিতে বেগম খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার গত ২৫ সেপ্টেম্বর আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সেই আবেদনটি আইনগতভাবে বিবেচনা না করে রাজনৈতিকভাবে বিবেচনা করা হয়েছে। আজকের এ সিদ্ধান্তের মধ্যে আমরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ফলাফল দেখতে পাচ্ছি।’
দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি ছিলেন। এরমধ্যে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে পরিবারের সদস্যদের আবেদনে সাজা ছয় মাসের জন্য স্থগিত রেখে তাকে সাময়িক সময়ের জন্য মুক্তি দেয় সরকার। এরপর খালেদা জিয়া রাজধানীর গুলশান এভিনিউয়ের নিজের বাসভবন ফিরোজায় যান। সাজা স্থগিতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ফের মেয়াদ কয়েকবার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ ১২ সেপ্টেম্বর মেয়াদ বাড়ানো হয়।
মন্তব্য