টানা পাঁচ দিন অবস্থান কর্মসূচির পর বিসিএস ননক্যাডার প্রার্থীরা শুক্রবার শহীদ মিনারে অবস্থান করে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। তবে তাদের দেওয়া ছয় দফা না মানা হলে আগামী রোববার থেকে আবার বাংলাদেশ কর্ম কমিশন (পিএসসি) এর সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন তারা।
শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শুক্রবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিসিএস নন-ক্যাডার প্রার্থীদের সাংস্কৃতিক প্রতিবাদ ও আলোক প্রজ্জ্বালন কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় প্রার্থীরা দুর্নীতিবিরোধী শপথ গ্রহণ করেন। শপথে প্রার্থীরা সকল প্রকার দুর্নীতি ও অন্যায়কে প্রতিহত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন।
পিএসসি প্রার্থীদের ছয় দফা দাবি না মেনে নিলে আগামী রবিবার থেকে আবারও পিএসসির সামনে লাগাতার অবস্থান নিয়ে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কঠোর ও বৈচিত্র্যপূর্ণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানান তারা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বয়ংসম্পূর্ণ ক্যাম্পাসের মেগা প্রকল্পটি একনেক সভায় পাস হয়েছে। কেরানীগঞ্জে সম্পূর্ণ নতুন এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি ক্যাম্পাস তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবির বিষয়ে মঙ্গলবার সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি নিজে উদ্যোগ নিয়ে একনেক সভায় প্রকল্প পাস করিয়ে নিয়েছি। কেরানীগঞ্জে স্বয়ংসম্পূর্ণ নতুন ক্যাম্পাস তৈরি করা হবে, যা বাংলাদেশে আগে কখনও হয়নি। পাকিস্তান আমলের শেষে শুধু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস স্বয়ংসম্পূর্ণ একটা ক্যাম্পাস হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘এতো বড় একটি মেগা প্রকল্প আমরা নেবো কি না তা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছিল। কিন্তু একনেকের গত মিটিংয়ে (অনুমোদন হয়েছে), যেটা আমাদের ছাত্ররা এবং শিক্ষকরাও জানেন না। কারণ এখন পর্যন্ত সেটার কার্যবিবরণী জারি হয়নি।
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য স্বয়ংসম্পূর্ণ ক্যাম্পাসটিতে ছাত্রাবাস থাকবে, প্রশাসনিক ভবন থাকবে, স্কুল থাকবে, চিকিৎসা কেন্দ্র থাকবে। এরকম একটা প্ল্যান করার অনুমতি একনেক থেকে পাস করে দেয়া হয়েছে।’
চলমান প্রকল্প নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি কেন হচ্ছে না, ভূমি অধিগ্রহণ কেন হয়নি- তারা বলছে যে প্রকল্প পরিচালকের অনেক দুর্নীতি হয়েছে। তদন্ত করে অনিয়ম পাওয়া গেলে পরিচালকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। নতুন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘বুয়েটের মাধ্যমে তারা প্রথম প্রকল্পটি পরিচালনা করছে। এটা এগিয়ে নেয়া যেতে পারে। শিক্ষার্থীরা চাচ্ছে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে তাদের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হোক। তাতেও কোনো সমস্যা নেই।
‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তো অনেকাংশে স্বায়ত্তশাসিত। তারা যদি সেটা চায় তাহলে ইউজিসির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের এতে কোনো আপত্তি নেই। বরং আমরা সহায়তা করবো, কী করে তাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর যোগাযোগ করিয়ে দেয়া যায়। মন্ত্রণালয় এতে সহায়তা করবে।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘তাদের ছোটখাটো কিছু দাবি আছে। সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সমাধান করা যেতে পারে। যেমন তারা চাচ্ছে এতদিন যত দুর্নীতি হয়েছে তার একটা হোয়াইট পেপার (শ্বেতপত্র)। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আছে, তারা তৈরি করবে।’
প্রসঙ্গত, পাঁচ দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবিগুলো হলো- স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং সাত দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর দক্ষ অফিসারদের হাতে এই দায়িত্ব অর্পণ করতে হবে; শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট রূপরেখাসহ ঘোষণা করতে হবে যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর হয়েছে; অবিলম্বে বাকি ১১ একর জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং পুরনো ক্যাম্পাস নিয়ে স্বৈরাচার সরকারের আমলের সব চুক্তি বাতিল করতে হবে; সম্প্রতি ইউজিসি ঘোষিত পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেট সর্বনিম্ন পাঁচশ’ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করতে হবে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ফুল ফান্ডেন্ড স্কলারশিপের ঘোষণা দিয়েছেন মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যান্ড ইমাম ড. আহমেদ আল তাইয়েব।
মঙ্গলবার আজারবাইজানের রাজধানী বাকুর রিটজ কার্লটন হোটেলে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ইসলামিক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রধানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূসের সাক্ষাৎকালে তিনি ঘোষণা দেন।
এ সময় ড. ইউনূসকে হাজার বছরের পুরনো প্রতিষ্ঠান আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা প্রদানের জন্য আমন্ত্রণ জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টাকে গ্র্যান্ড ইমাম ড. আহমেদ আল তাইয়েব বলেন, ‘আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা আশাবাদী। আপনি একজন বিচক্ষণ মানুষ। বিপ্লবের পর বাংলাদেশ নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে। বিচক্ষণতার সঙ্গে কাজ করার জন্য আমি আপনাকে স্যালুট জানাই।’
অধ্যাপক ইউনূস আমন্ত্রণ জানানোর জন্য গ্র্যান্ড ইমামকে ধন্যবাদ জানান। গ্র্যান্ড ইমামকে গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশ সশরীরে ঘুরে দেখার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান তিনি।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা গণঅভ্যুত্থান এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে কথা বলেন।
বাংলাদেশের সংস্কার প্রক্রিয়া সফল হবে বলে প্রত্যাশা জানান গ্র্যান্ড ইমাম। তিনি প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্ব, তার সামাজিক সেবা, ক্ষুদ্র ঋণদাতা হিসেবে গ্রামীণ ব্যাংকের অগ্রণী ভূমিকা এবং দারিদ্র্য মোকাবিলায় তার আজীবন প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশে গত জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানী ঢাকার দেয়ালে শিক্ষার্থীদের আঁকা বর্ণিল ও বৈচিত্র্যময় গ্রাফিতি চিত্রের একটি সংকলন ‘দ্য আর্ট অফ ট্রায়াম্ফ’ উপহার দেন।
গ্র্যান্ড ইমাম বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের শৈল্পিক দক্ষতার প্রশংসা করেন। তিনি প্রধান উপদেষ্টার কাছে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মেধারও প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন:কেরানীগঞ্জে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তরসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা দাবি মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ের সামনে অবস্থানরত জবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে নিজ অফিস থেকে নেমে এসে এই প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, ‘এগুলো যৌক্তিক দাবি। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাস থাকবে না, হল থাকবে না- এটা হতে পারে না। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, দ্রুত এসব দাবি পূরণ করা হবে। শিগগির শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়া হবে।
‘আমি জানি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনেক কষ্টে থাকেন। আমার পরিবারের একজন সদস্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের আবাসিক হল নেই। সেজন্য শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে আমি পুরোপুরি একমত। তাদের সব দাবি যৌক্তিক।
তিনি বলেন, ‘বাস্তবতা হলো- আমরা তিনদিনের মধ্যে হল করে দিতে পারবো না। কিন্তু আর্মির কাছে হস্তান্তর করতে পারি। এর জন্য আমাদের বসতে হবে। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ আমরা তিনদিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করবো। কাজটা যেভাবে দেয়া যায় সেভাবেই কাজ করবো।’
সচিবালয়ের ভেতরে শিক্ষার্থীদের অপমান করা হয়েছে- এ প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ‘সচিব ও সংশ্লিষ্ট যারা শিক্ষার্থীদের অপমান করে ফিরিয়ে দিয়েছেন তারা এর জন্য ক্ষমা চাইবেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হবে।’
এর আগে কেরানীগঞ্জে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তরের দাবিসহ পাঁচ দফা ও ইউজিসির পাইলট প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান দেন জবি শিক্ষার্থীরা। এতে সচিবালয়ের ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আমি কে তুমি কে, জবিয়ান জবিয়ান’, ‘মুলা না ক্যাম্পাস, ক্যাম্পাস ক্যাম্পাস’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, অধিকার না অন্যায়, অধিকার অধিকারসহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
শিক্ষার্থীদের উত্থাপন করা দাবিগুলো হলো- স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে আইনের আওতায় আনা ও সাতদিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর দক্ষ কর্মকর্তার হাতে এই প্রকল্পের দায়িত্ব অর্পণ; শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট রূপরেখাসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের ঘোষণা; অবিলম্বে বাকি ১১ একর জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ ও পুএনা ক্যাম্পাস নিয়ে স্বৈরাচার সরকারের আমলের সব চুক্তি বাতিল; সম্প্রতি ইউজিসির ঘোষণা করা পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেট সর্বনিম্ন পাঁচশ’ কোটি টাকা নির্ধারণ।
আরও পড়ুন:দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনী কাছে হস্তান্তরসহ পাঁচ দাবি নিয়ে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
সোমবার প্রথমে শিক্ষা ভবনের সামনের মোড় অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থীরা। পরে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল দাবির স্মারকলিপি নিয়ে শিক্ষা সচিবের সঙ্গে দেখা করতে সচিবালয়ে প্রবেশ করে। তবে শিক্ষা সচিব প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দেখা না করায় শিক্ষার্থীরা সচিবালয় ঘেরাও করেন।
জবি শিক্ষার্থীদের পাঁচ দাবি হলো- স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে আইনের আওতায় আনা ও সাতদিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর দক্ষ কর্মকর্তার হাতে এই প্রকল্পের দায়িত্ব অর্পণ; শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট রূপরেখাসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের ঘোষণা; অবিলম্বে বাকি ১১ একর জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ ও পুএনা ক্যাম্পাস নিয়ে স্বৈরাচার সরকারের আমলের সব চুক্তি বাতিল; সম্প্রতি ইউজিসির ঘোষণা করা পাইলট প্রকল্পে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেট সর্বনিম্ন পাঁচশ’ কোটি টাকা নির্ধারণ।
জানা গেছে, শিক্ষা সচিবকে দাবি সংবলিত স্মারকলিপি দিতে সচিবালয়ে প্রবেশ করেন আন্দোলনের মুখপাত্র তৌসিব মাহমুদ সোহান, সংগঠক একেএম রাকিব, রাইসুল ইসলাম নয়ন, আসাদুল ইসলাম, আবু বকর খান, নওশীন নাওয়ার জয়া, সোহান প্রামাণিক, মাসুদ রানা, নূর নবী, ওমর ফারুক, ফেরদৌস শেখ ও অপু মুন্সী। কিন্তু ১২ সদস্যের এই প্রতিনিধি দল সচিবের সঙ্গে দেখা করতে পারেনি।
দেখা না পেয়ে শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের বাইরে এসে ‘শিক্ষা সচিবকে ক্ষমা চাইতে হবে’ বলে স্লোগান দেয়া শুরু করেন। এছাড়া শিক্ষা উপদেষ্টাকে আন্দোলনস্থলে হাজির হওয়ার আহ্বান জানান তারা।
আন্দোলনের মুখপাত্র তৌসিব মাহমুদ সোহান বলেন, ‘আমরা স্মারকলিপি নিয়ে শিক্ষা সচিবের সঙ্গে দেখা করতে সচিবালয়ে ঢুকেছিলাম। কিন্তু তিনি নিজে দেখা না করে তার প্রতিনিধি পাঠান আমাদের সঙ্গে কথা বলতে। আমরা এটা মানি না।
‘এখন আমাদের দাবি, শিক্ষা উপদেষ্টা সশরীরে এসে আমাদের দাবি শুনবেন। আমরা দাবিগুলোর বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে তিনদিনের আল্টিমেটাম দিচ্ছি।’
হিট প্রকল্পের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে আজকের মধ্যেই লিখিত দিতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আরও পড়ুন:২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৭ জানুয়ারি। আর ব্যাচেলর অফ ডেন্টাল সার্জারিতে (বিডিএস) ভর্তি পরীক্ষা হবে ২৮ ফেব্রুয়ারি।
সচিবালয়ে রোববার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক সভায় এমবিবিএস ও বিডিএস পরীক্ষা আয়োজনে এই তারিখ চূড়ান্ত করা হয়।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা-শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মাতুব্বর এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করেই আজকের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দেশে বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ১১০টি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ৩৭টি ও বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ৬৭টি।
এছাড়া একটি আর্মড ফোর্সেস মেডিক্যাল কলেজ ও পাঁচটি বেসরকারি আর্মি মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে। সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হতে হয় মেধাতালিকার ভিত্তিতে। অপরদিকে অটোমেশন পদ্ধতিতে বেসরকারি মেডিক্যালগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়া হয়।
পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিচার দাবিতে গুলিস্তানে গণজমায়েত করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
আগামীকাল রোববার দুপুর ১২টা থেকে গুলিস্তানের জিরোপয়েন্ট মোড়ে এই গণজমায়েত শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগে শনিবার শহিদ নূর হোসেনের স্মরণে ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রোববার জিরো পয়েন্টে জমায়েত ও বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগ। এদিন বিকেল ৩টায় নুর হোসেন চত্বর থেকে তাদের এই কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
আওয়ামী লীগের এই ঘোষণার পর পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
ঢাবি ছাত্রদলের কর্মসূচি
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলকে বিদেশে হেনস্থার প্রতিবাদ এবং ১৫ বছরে বিভিন্ন হামলায় জড়িতদের বিচারসহ তিন দফা দাবিতে রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল।
মিছিলটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে শেষ হবে।
শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
ছাত্রদলের দাবিগুলো হলো-
ড. আসিফ নজরুলের ওপর বিদেশের মাটিতে হামলা ও হেনস্থার অপচেষ্টাকারী বিদেশে পলাতক ফ্যাসিবাদী আওয়ামী দুষ্কৃতকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
বিগত ১৫ বছর ধরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনকারী ও ছাত্র রাজনীতিকে কলুষিত করা নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় নিয়ে আসা।
আওয়ামী সরকারের আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের নৃশংস হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনা।
আরও পড়ুন:মানবিক পুলিশ গড়তে কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ এবং বাহিনীটিকে সুশৃঙ্খলভাবে গড়ে তুলতে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের আমলাতান্ত্রিক মনোভাব পরিহার করতে হবে। তাদেরকে যত দ্রুত সম্ভব অধস্তন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে আনতে হবে।
নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন এসব কথা বলেছেন।
শনিবার রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ‘জনমুখী পুলিশ সেবা নিশ্চিতকল্পে পুলিশ কমিশন গঠনের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য দেন তিনি।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, থানাপর্যায় থেকে পুলিশকে জনসম্পৃক্ত করতে হবে। প্রয়োজনে মাঠপর্যায়ের পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক স্থাপন করে নাগরিক কমিটি গঠন করা যেতে পারে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সফর রাজ হোসেন, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী প্রমুখ।
মন্তব্য