বিএনপি একটা পর্যায়ে গিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে টাঙ্গাইল স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
৭ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের স্থান পরিদর্শন করতে সকালে তিনি স্টেডিয়ামে যান।
সেখানে রাজ্জাক আরও বলেন, ‘বিএনপি যতই আন্দোলনের কথা বলুক, আবার তারা ২০১৪ সালের মতো তাণ্ডব করবে। গাড়িতে আগুন, মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা, ট্রাকে আগুন, রেল লাইন এবং বিদ্যুতের লাইন কাটতে চাইবে। এসব আর তারা বাংলাদেশ করতে পারবে না।
‘তারা আর কোনো আন্দোলনই করতে পারবে না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস বিএনপি একটা পর্যায়ে গিয়ে নির্বাচনে আসবে। সেই পরিস্থিতি আমরা সৃষ্টি করবো ইনশাআল্লাহ।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রাজ্জাক বলেন, ‘ষড়যন্ত্র মোকাবিলা এবং আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন গুরত্বপূর্ণ। নেতাকর্মীদের মধ্যে যে তৎপরতা দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে করি টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন মহাসমাবেশে পরিণত হবে।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ফজলুর রহমান ফারুক, সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম, সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটু, তানভীর হাসান ছোট মনির, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাহার আহমেদ, টাঙ্গাইল পৌর মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর।
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, গাজাসহ পুরো ফিলিস্তিন, কাশ্মীর, মিয়ানমারের রাখাইন এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে।
অনতিবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ এবং ফিলিস্তিনের সমস্যা সমাধানে স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আগামীকাল মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে সোমবার এক বিবৃতিতে জামায়াতের আমির এই আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বর্বর ইসরায়েলি বাহিনী মূলত মুসলিম জাতিগোষ্ঠী চিরতরে নির্মূল করার লক্ষ্যে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে। খুনি ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলা থেকে নারী-শিশু-বৃদ্ধ, ছাত্র-শিক্ষক, ইমাম-মুয়াজ্জিন, বুদ্ধিজীবী কেউই রেহাই পাচ্ছেন না। গাজায় চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে জামায়াতের আমির অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করে মানবাধিকার সমুন্নত রাখা এবং ফিলিস্তিনের সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের সব মানবতাবাদী রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার আলোকে আমাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রব্যবস্থা এমন হতে হবে, যেখানে মানুষের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে এবং কেউ আর নিপীড়িত হবে না। আজ আমরা এক নতুন যাত্রায় আছি- গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার সুরক্ষার যাত্রা।
জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতিসংঘ ১৯৫০ সালে ১০ ডিসেম্বরকে ‘মানবাধিকার দিবস’ ঘোষণা করে। সেই থেকে প্রতি বছর এদিন আন্তর্জাতিক ‘মানবাধিকার দিবস’ পালিত হয়ে আসছে।
এ বছরের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘আমাদের অধিকার, আমাদের ভবিষ্যৎ, এখনই’।
তারেক রহমান এই দিনে প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মৌলিক অধিকার হারানো নির্যাতিত মানুষের প্রতি গভীর সহমর্মিতা প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে তিনি বাংলাদেশসহ পৃথিবীর কোথাও যেন ভবিষ্যতে আর কেউ মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত না হন- সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে একটি ন্যায়নিষ্ঠ ও জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ দীর্ঘ একদলীয় শাসনের কালো অধ্যায় পার করেছে। তখন মানুষের অধিকার হরণ করা হয়েছিল, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছিল এবং রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ব্যক্তিগত ক্ষমতায়নের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল।
‘এই দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যারা দাঁড়িয়েছিলেন তারা রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, ছাত্র, শ্রমিক কিংবা সাধারণ মানুষ যেই হোন না কেন- মিথ্যা মামলা, কারাবাস, শারীরিক নির্যাতন, গুম ও হত্যার শিকার হয়েছেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অতীতে বাক, ব্যক্তি, চিন্তা, প্রার্থনা, মুদ্রণসহ নাগরিক স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামে যারা ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর নির্মম নিপীড়নে জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, তাদের আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং যারা এখনও নির্যাতিত-নিপীড়িত, তাদের প্রতি গভীর সহমর্মিতা জানান।
তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। এ জন্য জনগণকে সচেতন ও সংগঠিত হয়ে ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের আপামর জনগণের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন কারাবন্দি থেকে, মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে যে নির্মম পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন, তা আমাদের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। এই অধ্যায় আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কখনও থেমে থাকা উচিত নয়।
‘এই মুহূর্তে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ। মানবাধিকার সুরক্ষিত রেখে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার এ যাত্রায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে- জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার দিবসে এটাই হোক আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকার।’
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের ঘিওরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র বিএনপির দু’পক্ষে সংঘর্ষে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লাভলু মিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
ঘিওর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে সোমবার লাভলু মিয়াকে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। ঢাকায় নেয়ার পথে অ্যাম্বুলেন্সেই তার মৃত্যু হয়।
ওই হামলায় বিএনপি কর্মী আলতাফ হোসেন, হিমেল হোসেন, সোহাগ মিয়া, তামিম হোসেন ও সেলিম মিয়া গুরুতর আহত হয়েছেন। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্স ও জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নিহত লাভলু মিয়া ঘিওরের কুস্তা এলাকার মৃত আব্দুল হালিমের ছেলে। তিনি উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কুয়েত প্রবাসী লাভলু ছুটিতে দেশে এসেছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ জানায়, সোমবার বেলা ১১টার দিকে ঘিওর হাট-বাজার, ধলেশ্বরী নদীর বালুমহাল ও পরিবহন খাত দখল এবং আধিপত্য বিস্তারে বিএনপির দু’পক্ষে সংঘর্ষ হয়। সে সময় আলতাফ হোসেন ও হিমেল হোসেন নামে বিএনপির দুই কর্মী গুরুতর আহত হন।
আহত দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লাভলু মিয়া তাদেরকে দেখতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে যান। তিনি হাসপাতালের গেটের ভেতরে প্রবেশের পর প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে হামলা-পাল্টাহামলার ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর আহত লাভলু মিয়াকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার সময় রাস্তায়ই তার মৃত্যু হয়।
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ঘিওর সদর বিএনপির সঙ্গে কুস্তা এলাকার বিএনপির দ্বন্দ্ব চলে আসছে। জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা কয়েক দফা উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দু’পক্ষকে মিলিয়ে দেন। তবে জেলার নেতাদের সামনে মিলে গেলেও তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল।
ঘিওর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় থানায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জেলা ও উপজেলা বিএনপির দায়িত্বশীল কোনো নেতার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বেগম রোকেয়া এ দেশের নারী জাগরণের পথিকৃৎ। নারী সমাজে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে তিনি যে ভূমিকা পালন করেছেন তা বৈপ্লবিক।
বেগম রোকেয়ার জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমি তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নারী সমাজে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে যে ভূমিকা পালন করেছেন তা বৈপ্লবিক।
‘বেগম রোকেয়ার জীবন ও তার আদর্শ বাস্তবায়ন এদেশের নারী সমাজকে আলোকিত ও আত্মনির্ভরশীল করতে প্রেরণা যোগাবে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, কঠোর রক্ষণশীল পারিবারিক পরিবেশে বেড়ে ওঠা বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ছিলেন এদেশের নারী জাগরণের অগ্রদূত।
সোমবার বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘আমি তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
‘তিনি নিজ জীবনের বাস্তবতার মধ্যে উপলব্ধি করেছিলেন সমাজে নারীর পশ্চাদপদ অবস্থান। উপলব্ধি করেছিলেন শিক্ষাই নারীর আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার প্রধান অবলম্বন।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, নারী শিক্ষার বিস্তারের মধ্য দিয়ে নারীমুক্তি ছিল বেগম রোকেয়ার জীবন-সংগ্রামের লক্ষ্য। বিশেষভাবে পিছিয়ে পড়া এদেশের মুসলিম নারী সমাজকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্য তিনি সর্বপ্রথম উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
‘আর নারীমুক্তির বাণী বহন করতে গিয়ে তাকে সমাজের গোঁড়া রক্ষণশীলদের প্রচণ্ড আক্রমণের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তা সত্ত্বেও তিনি ছিলেন কর্তব্যকর্মে অদম্য ও অবিচল।’
বেগম রোকেয়া তার ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে নারীর প্রতি সমাজের অন্যায় ও বৈষম্যমূলক আচরণের মূলে আঘাত হেনেছিলেন বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ‘সংসার, সমাজ ও অর্থনীতি- জীবনের এই তিনটি ক্ষেত্রে নারীকে স্বায়ত্তশাসিত ও আত্মমর্যাদাশীল হতে তিনি গভীরভাবে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। আর এজন্য তিনি বিশ্বাস করতেন নারীকে উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।
‘শত কুপমণ্ডুকতার বাধা সত্ত্বেও নারী সমাজকে স্বাবলম্বী করতে তিনি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন।’
তারেক রহমান বেগম রোকেয়ার কর্মময় জীবন ও আদর্শ নারী সমাজকে আরও উদ্যমী ও অনুপ্রাণিত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন:আগামী বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টন থেকে ভারতের আগরতলা অভিমুখে লং মার্চ করবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদল।
সকাল আটটায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এ লং মার্চ শুরু হবে।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্না এ ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশের দূতাবাসে হামলা, পতাকা অবমাননা, ভারতের মিডিয়ায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চলমান তথ্যসন্ত্রাস এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকার দাবিতে ঢাকা থেকে আগরতলা পর্যন্ত লং মার্চের ডাক দিয়েছে বিএনপির তিন সংগঠন।
এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের সর্বস্তরের ছাত্র, যুবক এবং স্বেচ্ছাসেবী জনতাকে এই লং মার্চে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠন তিনটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২ ডিসেম্বর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় অবস্থিত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে ভারতের হিন্দু সংঘর্ষ সমিতির সদস্যরা হামলা চালিয়েছে। এ সময় তারা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করেছে, মিশনের সম্পদ নষ্ট করেছে। ভারত সরকার চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে ভিয়েনা কনভেনশনের বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী কূটনীতিকদের সুরক্ষা দিতে। এ ছাড়াও গত ২৮ নভেম্বরে কলকাতায়ও একই ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটেছে।
এ ছাড়া ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কতিপয় নেতা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর কথা বলে একদিকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের অবমাননা করেছেন এবং অন্যদিকে আন্তর্জাতিক আইন সম্পর্কে নিজের অজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। জুলাই আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পরে ভারতের মিডিয়া বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লাগামহীন প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনকে মেনে নিতে পারছে না। শেখ হাসিনার নির্দেশে দুই হাজারেরও বেশি ছাত্র-জনতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, যাদের মধ্যে রয়েছে রিয়া গোপ, হৃদয় তারুয়া, রুদ্র সেন, দীপ্ত দে, শুভ শীল, তনয় দাসসহ আরও অনেক বীর শহীদ। ভারত গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়, গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত আরও অনেক ব্যক্তি ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। ভারত এখন বাংলাদেশি ক্রিমিনালদের আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। তা ছাড়া বহিষ্কৃত ইসকন নেতা, বাংলাদেশের নাগরিক চিন্ময় দাশের গ্রেপ্তার, তদন্ত ও বিচার সম্পূর্ণ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়, কিন্তু ভারতের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত মন্তব্য করে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
গত ৮ ডিসেম্বর ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে হামলা, পতাকা অবমাননা, ভারতের মিডিয়ায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চলমান তথ্যসন্ত্রাস এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকার দাবিতে স্মারকলিপি দেয় ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং যুবদল।
আরও পড়ুন:যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ‘ব্রিটিশ-বাংলা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট’ নামের একটি চ্যারিটি সংস্থার অনারারি লাইফ মেম্বার হয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বর্তমানে লন্ডনে সফররত মির্জা ফখরুল ইসলাম শনিবার লন্ডনের স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় ব্রিটিশ বাংলা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের চ্যারিটি শপ পরিদর্শন করতে গেলে তাকে ট্রাস্টের পক্ষ থেকে আজীবন সদস্যপদ প্রদান করা হয়।
এ সময় চ্যারিটি সংস্থার অ্যাডভাইজার আ স ম মাসুম বিএনপি মহাসচিবকে বাংলাদেশসহ ব্রিটেন ও আফ্রিকায় ব্রিটিশ-বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন।
চ্যারিটি সংস্থার চেয়ারম্যান খসরুজ্জামান খসরু, চিফ অ্যাডভাইজার কামাল আহমেদসহ অন্যান্য অ্যাডভাইজার ও স্বেচ্ছাসেবকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চ্যারিটি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘আমি এই চ্যারিটির অংশ হতে পেরে সত্যিই গর্বিত। এই চ্যারিটি বিশ্ব মানবতার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য গর্বের। সংস্থাটি বাংলাদেশের আর্ত-মানবতার সেবায় আরও কাজ করে যাবে প্রত্যাশা করি।’
রোববার ঢাকা থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানিয়ে বলা হয়, ব্রিটিশ-বাংলা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের চিফ অ্যাডভাইজার কামাল আহমেদ বিএনপি মহাসচিবের অবগতির জন্য জানান যে সংস্থাটি ২০১২ সাল থেকে ব্রিটেনের বিভিন্ন কমিউনিটি, আফ্রিকা ও বাংলাদেশে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে ব্রিটেনের লোকাল গভর্নমেন্টের ফান্ডিং নিয়ে এই সংস্থার অধীনে ‘স্কিল ডেভলপমেন্ট’, ‘স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য বাগান করা’ ও ‘কস্ট অফ লিভিংয়ের’ বেশকিছু প্রকল্পে কাজ চলছে।
ব্রিটিশ-বাংলা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের চেয়ারম্যান খসরুজ্জামান খসরু বলেন, ‘আমাদের চ্যারিটি বাংলাদেশ ও আফ্রিকায় কাজ করলেও ব্রিটেনের লোকাল কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টে আমরা অনেক কাজ করে যাচ্ছি। চ্যারিটির অনারারি লাইফ মেম্বার হিসেবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অন্তর্ভুক্তি আমাদের কার্যক্রমকে আরও বেগবান করবে।’
তিনি জানান, ব্রিটেনের কমিউনিটিতে ইতিবাচক অবদান রাখায় ইতোমধ্যে ব্রিটিশ বাংলা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ব্রিটেনের রাজার অফিস থেকে পাঁচবার লিখিতভাবে প্রশংসাপত্র পেয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য