রাজধানীর ডেমরা ডগাইর এলাকায় সুমাইয়া আক্তার নামের এক কিশোরীকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত সুমাইয়ার চাচি দীপা আক্তার বলেন, 'সুমাইয়া ডেমরা ডগাইর এলাকার রুস্তম আলী উচ্চ বিদ্যালয় নবম শ্রেণিতে পড়ত। সব সময় মোবাইল ব্যবহার করায় তার মা বকাঝকা করে।
'মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে সুমাইয়ার মা রাগে মেয়েকে চড়থাপ্পড় মারে। তারপরই সে ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দেয়। পরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেয়। পরিবারের সদস্যরা দরজা খুলে দেখতে পায় সুমাইয়া ঝুলে আছে। তখন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়।'
তিনি জানান, ডেমরায় তাদের নিজেদের বাসায় থাকত। সুমাইয়ার বাবার নাম মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
দুই বোন এক ভাইয়ের মধ্যে ছোট ছিল সুমাইয়া।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) বাচ্চু মিয়া বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বুধবার বলেছে, মঙ্গলবার ঢাকার উত্তরা এলাকায় একজন ইসকন সদস্যের ওপর হামলা হয়েছে বলে দাবি করে বেশ কয়েকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদটি ভুয়া।
১০ ডিসেম্বর এবিপি আনন্দ এবং সংবাদ প্রতিদিনসহ বেশ কয়েকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, ঢাকার উত্তরায় একজন ইসকন সদস্যের ওপর হামলা হয়েছে।
সিএর প্রেস উইংয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টসে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঢাকার উত্তরা এলাকার রাধারমণ মন্দিরের (ইসকন উত্তরা) পুরোহিত কৃষ্ণ প্রিয়া নিতাই দাস বলেছেন, তিনি উত্তরা এলাকায় কোনো ইসকন ভক্ত বা সদস্যের ওপর হামলার ঘটনা সম্পর্কে অবগত নন।’
ঢাকার পুলিশও জানিয়েছে, তারা এ ধরনের কোনো অভিযোগ পায়নি।
প্রেস উইংয়ের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ভারতীয় মিডিয়া ‘ভুক্তভোগীর’ কোনো বক্তব্য বা পরিচয় প্রকাশ করেনি। বাংলাদেশ পুলিশ অথবা কোনো ইসকন নেতারও বক্তব্য নেই এসব প্রতিবেদনে, যা সার্বিক বিবেচনায় খবরগুলোকে অসত্য, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং সাংবাদিকতার নীতি বহির্ভূত হিসেবে চিহ্নিত করে।
প্রেস উইং জানায়, বাংলাদেশ ইসকনের কেন্দ্রীয় নেতা হৃষিকেশ গৌরাঙ্গ দাস বলেছেন, উত্তরায় সাম্প্রতিক একটি পারিবারিক ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, পারিবারিক বিষয়ে জড়িত যুবকরা ইসকনের সদস্য নন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে বদলি ও রদবদলের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন জেলার ১২ পুলিশ সুপারকে (এসপি) একযোগে বদলি করা হয়েছে।
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখার উপসচিব আবু সাঈদের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এই বদলির আদেশ দেয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পুলিশ অধিদপ্তরের (টিআর) পুলিশ সুপার আবু সাইমকে রংপুরের পুলিশ সুপার, গাইবান্ধার কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার আবু সায়েম প্রধানকে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমকে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার জাকির হোসেনকে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার শরিফ উদ্দীনকে বরিশালের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলামকে রাজশাহীর পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া পুলিশ অধিদপ্তরের পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেককে গাজীপুরের পুলিশ সুপার, এন্টি টেররিজম ইউনিটের ঢাকার পুলিশ সুপার ইয়াছমিন খাতুনকে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার, এপিবিএন সদর দপ্তরের পুলিশ সুপার নিশাত অ্যাঞ্জেলাকে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার আসলাম শাহাজাদাকে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এহতেশামুল হককে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার এবং এসবির বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ারকে নওগাঁর পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আইনি সুযোগ না থাকায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় কারান্তরীণ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন শুনানি হয়নি। এ সংক্রান্তে ঢাকা থেকে আসা এক আইনজীবীর তিনটি আবেদনই নাকচ হয়েছে।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক সাইফুল ইসলামের আদালতে বুধবার উপস্থিত হয়ে চিন্ময়ের জামিন শুনানি এগিয়ে আনাসহ তিনটি আবেদন করেছিলেন হাইকোর্টের এক আইনজীবী। কিন্তু ওকালতনামা না থাকায় আদালত তার তিনটি আবেদনই নামঞ্জুর করে।
এ সময় ওই আদালতে উপস্থিত চট্টগ্রামের সিনিয়র আইনজীবী ও সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন বার্তা সংস্থা বাসসকে জানান, আসামি পক্ষে ঢাকা থেকে আসা আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ আদালতে তিনটি দরখাস্ত দিয়েছিলেন। এর একটি চিন্ময়ের জামিন শুনানির তারিখ ২ জানুয়ারি থেকে এগিয়ে আনার জন্য, একটি নথি উপস্থাপনের জন্য এবং অপরটি তাকে শুনানি করার অনুমতি দেয়ার বিষয়টি বিবেচনার জন্য।
আদালত অ্যাডভোকেট রবীন্দ্র ঘোষের কাছে জানতে চায়, তার কাছে ওকালতনামা আছে কিনা বা মামলা পরিচালনার জন্য আসামি পক্ষের আইনজীবীর অনুমতি আছে কিনা। এ সময় তিনি নেই বলে জানালে আদালত তাকে আইন মেনে আসতে বলেন।’
অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দিন বলেন, ‘আমরা আদালতকে বলেছি ওনার এ ধরনের দরখাস্ত দেয়ার আইনি অধিকার নেই। তার কাছে আসামির ওকালতনামা নেই এবং যিনি এই মামলা ফাইল করেছেন তার পক্ষ থেকেও তাকে কোনো পাওয়ার দেয়া হয়নি।
‘শুনানি করা বা নথি উপস্থাপনের জন্য অবশ্যই ওকালতনামা দিতে হবে অথবা ফাইলিং আইনজীবীকে বলতে হবে- ঢাকা থেকে যিনি এসেছেন তিনি তাকে ক্ষমতা দিয়েছেন। কিন্তু ওই আইনজীবীর কাছে এর কোনোটাই ছিল না। তাই আদালত এটা রিজেক্ট করে দিয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে গত ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। এরপর ২৫ নভেম্বর ঢাকায় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করা হয়। ২৬ নভেম্বর জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে চিন্ময় দাসকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। ৩ ডিসেম্বর জামিন শুনানির দিন থাকলেও কোনো আইনজীবী না থাকায় শুনানির দিন আগামী ২ জানুয়ারি ধার্য রয়েছে।
আরও পড়ুন:অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত পুলিশ সুপার নিহার রঞ্জন হাওলাদারকে আগামী এক বছরের জন্য বেতন গ্রেডের নিম্নতর ধাপে অবনমিতকরণের দণ্ড দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, ভবিষ্যতে তার এই বেতন সমন্বয় করা হবে না।
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
জননিরাপত্তা শাখার সিনিয়র সচিব আবদুল মোমেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত পুলিশ সুপার নিহার রঞ্জন হাওলাদার ২০১৮ সালে ঢাকায় সিআইডিতে বিশেষ পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ- ওই বছরের মার্চ মাসে পটুয়াখালীরর মহিপুর থানার কুয়াকাটায় অবস্থিত বেদখলি জমি দখল করে দেয়ার বিপরীতে তিনি রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকার একটি হোটেলে বসে অভিযোগকারীর কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা ও ১০ শতাংশ জমি তাকে লিখে দেয়ার দাবি করেন।
এ ঘটনার সাক্ষী অভিযোগকারী আব্দুর রহিম গং, তার বাসার গৃহশিক্ষক ও অভিযোগকারীর ছেলে মো. আমিনুল ইসলাম।
পরবর্তী সময় ওই বছর ২১ মার্চ ঢাকায় সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের মালিবাগ শাখায় (হিসাব নম্বর-১৬১৩৯০১০১৪৩৯৩) তার অ্যাকাউন্টে বরগুনায় সোনালী ব্যাংকের কোর্ট বিল্ডিং শাখা থেকে অভিযোগকারীর তিন লাখ টাকা এবং পরবর্তীকালে ৪ এপ্রিল ওই অ্যাকাউন্টে দুই লাখ টাকা প্রতারণামূলকভাবে গ্রহণ করেন।
এ ছাড়া ২২ মার্চ সন্ধ্যার দিকে কুয়াকাটার বনানী প্যালেস নামের একটি হোটেলে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমানকে ডেকে নিয়ে অভিযোগকারীর পক্ষে বেদখলি জমি দখল করে দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করা ও ৪ এপ্রিল বরগুনায় গিয়ে অভিযোগকারীসহ অন্যদের সঙ্গে এম আলী হোটেলে খাবার খাওয়ার অভিযোগে ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর বিভাগীয় মামলা হয়।
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা সরকার ঘোষিত বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট ৪ শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা প্রত্যাখান করে ১৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধির দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছেন।
কর্মবিরতির কারণে এ অঞ্চলের অনেক কারখানায় বুধবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বিজিএমইএ ও শিল্প পুলিশ বলছে, আশুলিয়ায় আজ বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট ১৫ থেকে ২০ শতাংশ করার দাবিতে কাজ বন্ধ বা শ্রমিকরা কাজ না করে চলে গেছে, এমন কারখানার সংখ্যা ৩৫টি।
আশুলিয়ার নরসিংহপুর ও আশপাশের এসব কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিলে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
শিল্প পুলিশ ও কারখানা সূত্রে জানা যায়, হা-মীম গ্রুপ, শারমীন গ্রুপ, মেডলার, নেক্সট কালেকশন, আল মুসলিম, সেতারা গ্রুপ, নিউ এইজ, ডেকো, ব্যান্ডো ডিজাইন, ভিনটেজ, নীট এশিয়া, মানতা, ডেবুনিয়ার, অরবিটেক্স, এএম ডিজাইন, ইসলাম গার্মেন্টস, দ্য রোজ, অ্যাপারেলস গ্যালরি, এথিক্যালসহ বেশ কিছু কারখানার শ্রমিকরা সকালে কারখানায় এলেও ইনক্রিমেন্ট বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেন।
শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে নাসা ও ট্রাউজার লাইন শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় তাদের কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে।
শ্রমিকরা কোনো বিশৃঙ্খলা বা ঝামেলা না করলেও বর্ধিত বেতনে সন্তুষ্ট না হওয়ায় তারা কর্মবিরতি পালন করেন এবং কেউ কেউ কারখানা থেকে বেরিয়ে যান।
এর আগে শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে মঙ্গলবারও আশুলিয়ার অন্তত ১০টি কারখানায় উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
নীট এশিয়ার একজন শ্রমিক বলেন, ‘গত ৩ দিন যাবতই আমাদের কারখানায় ঝমেলা চলছে। শ্রমিকরা কাজ করে না।
‘আশপাশের কারখানার সাথে তাল মিলিয়ে আমরাও একই দাবিতে আন্দোলন করছি; দাবি বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট ১৫ শতাংশ করার।’
দ্য রোজ ড্রেসেস লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক সাধন কুমার বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) শ্রমিকরা আমাদের কারখানায় কাজ করেছিল, কিন্তু আজ কারখানায় এলেও আর কাজ করেনি। পরে অবশ্য আমরা কথা বলার পর শ্রমিকরা কাজ শুরু করেছিল, কিন্তু আশেপাশের কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়াতে আমরা আর চালাতে পারিনি।’
শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘বর্ধিত বেতনে সন্তুষ্ট নন শ্রমিকরা। তাই তারা কাজ বন্ধ করে বসে আছে, তবে কোনো প্রকার অরাজকতা কিংবা বিশৃঙ্খলা তারা করছেন না।
‘এ অঞ্চলের ১৯টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। আর কাজ না করে চলে গেছে এমন কারখানার সংখ্যা ১৫ থেকে ১৬টি।’
আরও পড়ুন:নওগাঁয় চার মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে স্বল্পমূল্যে খোলা বাজারে খাদ্যশস্যের (ওএমএস) চাল ও আটা বিক্রি।
এমন পরিস্থিতিতে বুধবার বেলা ১১টার দিকে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় ঘেরাও করে ওএমএস কার্যক্রম চালুর দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষরা।
ওই সময় বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত প্লাকার্ড হাতে ঘণ্টাব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায় তাদের। পরে জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক এনামুল কবিরের আশ্বাসে সেখান থেকে সরে যান তারা।
বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটের আগে নওগাঁ পৌরসভা এলাকায় ১৮টি কেন্দ্রে ওএমএস ডিলারদের মাধ্যমে হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষদের মধ্যে স্বল্প মূল্যে চাল ও আটা দিত সরকার। ৫ আগস্টের পর ১৮টি কেন্দ্রের মধ্যে হঠাৎই ১৫টি কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে খাদ্য বিভাগ। এতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে চরম বিপাকে পড়েন তারা। তাই অনতিবিলম্বে ওএমএস সবকটি কেন্দ্র চালু করতে হবে।
শহরের বালুডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে আসা বিক্ষোভে অংশ নেয়া রিকশাচালক সোহেল রানা বলেন, ‘সারা দিন রিকশা চালিয়ে যে আয় হয়, সেটা দিয়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে টিকে থাকা কষ্টসাধ্য। ওএমএস কর্মসূচি চালু অবস্থায় কম দামে চাল ও আটা কিনে কিছুটা সামাল দিতাম। সেই চাল, আটা টানা ৪ মাস যাবত পাচ্ছি না। তাই দুই বেলা শান্তিতে পেট ভরে খাওয়া হচ্ছে না।
‘বাধ্য হয়ে পেটের ক্ষুধায় ফুড অফিসে এসে দাঁড়িয়েছি। কী কারণে এটি বন্ধ রয়েছে, সেই কারণ কর্মকর্তাদের কেউই স্পষ্টভাবে বলতে চাইছেন না।’
শহরের ইঁদুর বটতলী এলাকা থেকে আসা মানোয়ারা বেগম বলেন, ‘জীবিকার তাগিদে বৃদ্ধ বয়সে এসেও রাস্তার আনাচ-কানাচে বসে বিভিন্ন ফলমূল বিক্রি করে আয় করি। সেই রোজগার দিয়ে ৫৪ টাকা কেজি দরে চাল কিনে খাওয়ার সাধ্য আমাদের নেই। তাই ওএমএসই শেষ ভরসা ছিল।
‘গরিবের সেই চাল-আটা নিয়ে নোংরা রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। নয়তো আমাদের অর্ধাহারে, অনাহারে দিন কাটানো ছাড়া উপায় থাকবে না।’
জানতে চাইলে নওগাঁ জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক এনামুল কবির বলেন, ‘বন্ধ থাকা ওএমএস কেন্দ্র চালুর দাবি নিয়ে অফিস চত্বরে আসা ভোক্তাদের কথা শুনেছি। তাদের দাবির বিষয়গুলো জেলা ওএমএস কমিটি বরাবর উত্থাপন করা হবে। শিগগিরই ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত নিয়ে এই সংকট সমাধান করা হবে।’
জেলা ওএমএস কমিটির সভাপতি ও নওগাঁর জেলা প্রশাসক আবদুল আউয়াল বলেন, ‘পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটের পর নওগাঁ পৌরসভা এলাকার অধিকাংশ ওএমএস ডিলার সঠিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষিতে যৌথ মতামতের ভিত্তিতে ১৫টি কেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছিল।
‘সেই সাথে নতুন ডিলার নিয়োগের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়া হয়। যেহেতু তারা বিক্ষোভ করেছেন, প্রয়োজনে যৌথ মতামতের ভিত্তিতে আবারও কেন্দ্রগুলো চালু করা হবে।’
আরও পড়ুন:ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণে ভারতকে যথাযথভাবে আইনগত আহ্বান জানানো হবে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের বিশেষ পরামর্শক টবি ক্যাডম্যান।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে বুধবার প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ টবি আরও বলেন, ‘ভারত আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলে এবং প্রত্যর্পণের একটি আইনগতভাবে বৈধ এবং যথাযথ অনুরোধের সম্মান করে থাকলে, আমরা অবশ্যই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে ভারতকে শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের জন্য আহ্বান জানাব।’
তিনি বলেন, ‘স্পষ্টতই আমরা জানি যে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি বিদ্যমান। এ বিষয়ে এরই মধ্যে যা কিছুই বলা হয়েছে, সে সম্পর্কে আমরা জানি এবং সচেতন রয়েছি। এ বিষয়ে ভারত আগামীতে কী করতে যাচ্ছে, তার কোনো প্রাক-বিচার এখনই আমরা করতে চাই না।
‘শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যথাযথভাবে অভিযোগ আনা এবং তাকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর জন্য ভারতকে জানানোর বিষয়গুলো নিশ্চিত করার গুরুদায়িত্ব এখন এই ট্রাইব্যুনালের এবং এর চিফ প্রসিকিউটরের।’
কোনো কারণে শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ প্রত্যাখ্যাত হলে তার অনুপস্থিতিতেই বিচার করা যায় কি না কিংবা এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সহায়তা নেয়া যায় কি না, সেটি নিয়ে আলোচনা করছেন বলে জানান ক্যাডম্যান।
তিনি বলেন, ‘বিচারের বর্তমান প্রক্রিয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পূর্ণ সহায়তা ও সমর্থন প্রয়োজন। আমি যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস, ইইউ এবং জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এরই মধ্যে আলোচনা করেছি।
‘যেহেতু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কাজকে অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচিত হয় এবং বাংলাদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এর প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি, সেহেতু এখানে অনেকের সমর্থন পাওয়ার সুযোগই আমাদের রয়েছে বলে আমরা আশাবাদী।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য