করোনাভাইরাস মহামারির সময় অর্থনীতির চাকা সচল রাখা সম্ভব হলেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও যুদ্ধ ঘিরে নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে ‘যথেষ্ট সমস্যা মোকাবিলা’ করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এমন বাস্তবতায় প্রশাসনের কর্মী থেকে শুরু করে সবাইকে কৃচ্ছ্রসাধনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশজ উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি মানবসেবার ব্রত নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের নিজ দায়িত্ব পালনেরও আহ্বান জানান সরকাপ্রধান।
ঢাকার শাহবাগে বিসিএস প্রশাসন একাডেমিতে ১২৪, ১২৫ এবং ১২৬তম আইন ও প্রশাসন প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী এবং সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
করোনাভাইরাস মহামারির অভিঘাতে বিশ্বজুড়ে সংকট তৈরি হলেও তা মোকাবিলা করেও দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে সরকার সক্ষম হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দুর্ভাগ্যের বিষয় ইউক্রেনের যুদ্ধ আর স্যাংশানের কারণে আজকে আমাদের যথেষ্ট সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সে জন্য আমরা বলেছি কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে সবাইকে। কৃচ্ছ্রতা সাধন করেই আমাদের চেষ্টা করতে হবে।’
দেশকে গড়ে তুলতে হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ এবং উৎপাদন বাড়ানোকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘উৎপাদন বৃদ্ধিটা সব থেকে প্রয়োজন। এখনকার যুগে আমি মনে করি সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়েছে। একদিকে কোভিড-১৯ মহামারির যে অভিঘাত, সেই সঙ্গে সঙ্গে এসেছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। তার সঙ্গে হলো আমেরিকা প্রদত্ত স্যাংশান এবং কাউন্টার স্যাংশান। ইউরোপের দেয়া স্যাংশান, যার ফলে আজকে প্রত্যেকটা জিনিস যেগুলো আমাদের আমদানি করতে হয়, সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে।
‘এটা শুধু বাংলাদেশ না, উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। আমি জানি, উন্নত দেশগুলোর অবস্থা, এমনকি আমেরিকা, ইউরোপ, ইংল্যান্ডসহ প্রত্যেকটা দেশ এখন অর্থনৈতিক মন্দার কবলে। বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না, খাদ্যের দাম অতিরিক্ত বেড়ে গেছে, সেখানে সব জায়গায় রেশনিং করে দেয়া। এমন একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি।’
পরিস্থতি থেকে উত্তরণে উৎপাদন বাড়ানোর ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে আমাদের কী করণীয়, আমি বহু আগে থেকে বলে যাচ্ছি, এক ইঞ্চি জমি যেন খালি না থাকে। কারণ আমাদের খাদ্য আমাদের উৎপাদন করতে হবে। খাদ্য আমাদের প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য আমার ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন দরকার। আমাদের দেশের মানুষের খাদ্যের নিরাপত্তা, পুষ্টির নিরাপত্তা, সেগুলো নিশ্চিত করতে হবে, এটা আমাদের নিজেদের করতে হবে।
‘এটা সবসময় মনে রাখতে হবে। বাইরে থেকে নিয়ে আসা…এটা অত্যন্ত কঠিন একটা সময় আমাদের পার করতে হচ্ছে। কাজেই সেই অবস্থায় আমরা যদি নিজেরা দাঁড়াতে পারি, সেটা হবে আমাদের জন্য সব থেকে ভালো।’
এখানে নীতির প্রশ্ন আছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সরকার বা দলের নীতি হচ্ছে, আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলব। সেই ক্ষেত্রে আমাদের উৎপাদন বৃদ্ধি করা, কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করা, শিক্ষা; শিক্ষাটা হচ্ছে দারিদ্র্য বিমোচনের সব থেকে বড় হাতিয়ার। সেই সঙ্গে সঙ্গে প্রশিক্ষণ।’
অনেক ঝড়ঝঞ্ছা পার হয়ে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) সফলভাবে অর্জনের পর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও সাফল্য চান তিনি। তিনি বলেন, সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে এগোলে সফলতা আসবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে আমাদের এটাই হচ্ছে নীতিমালা যে, পরিকল্পনাটা বাস্তবায়ন করলে রিটার্ন আসবে, ফলাফলটা দ্রুত আসবে মানুষের কল্যাণে। আমি সেই পরিকল্পনাই নেব। শুধু বিরাট অঙ্কের টাকা পেলাম, আর একটা পরিকল্পনা নিলাম, সেটা আমরা নেব না।’
মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানুষের জীবনের প্রতিটি দিকেই আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। কাজেই আমি মনে করি আমাদের প্রশাসনে যারা থাকবেন, তাদের এ বিষয়ে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।
‘দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের ব্রত নিয়ে কাজ করবার আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা যে লক্ষ্য স্থির করেছি, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ, সেই বাংলাদেশ গড়ার কারিগরই তো হবে আজকে যারা নবীন অফিসার, তারা। কাজেই সেইভাবে নিজেদেরকে তৈরি করতে হবে, এটাই আমি মনে করি। মনে রাখতে হবে যে, দেশপ্রেম এবং আত্মমর্যাদা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে একটা দেশকে কিন্তু উন্নত সমৃদ্ধ করা যায় এবং সেভাবে আমাদের কাজ করার…সেভাবে সবাইকে কাজ করতে হবে।’
দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ যেন বেকার না থাকে। সেটা যেভাবেই হোক। সে লক্ষ্য নিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ, ডিজিটাল সেন্টার যেমন আমরা করে দিয়েছি, পাশাপাশি গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে শুরু করে যতগুলো প্রতিষ্ঠান করা হয়েছে, উদ্দেশ্য দুটো। স্বাস্থ্যসেবা দেয়া, পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।’
সরকারি কর্মকর্তাদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা বলে জানালেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি সরকারে আসার পর প্রশাসনে, দ্বিতীয়বার যখন আসি সবার বেতন-ভাতা, সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে দিয়েছি।
‘এটাই লক্ষ্য, যাদের কাছ থেকে আমি কাজ নেব, তাদের জীবনটা যেন সহজ হয়। তারা যেন সংসারের দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকে। তারা যেন সুষ্ঠুভাবে দেশের কাজে মনোযোগ দিতে পারে।’
তিন বছর পর প্রশাসন একাডেমিতে সশরীরে প্রধানমন্ত্রী
বিসিএস প্রশাসন একাডেমিতে সশরীরে এসে প্রশিক্ষণ শেষ করা প্রশাসনের নবীন কর্মকর্তাদের হাতে সনদ তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কিন্তু ২০১৯ সালের পর তার আর আসা হয়নি শাহবাগের এ একাডেমিতে।
করোনাভাইরাস মহমারির কারণে আসা সম্ভব হয়নি বলে জানান প্রধানমন্ত্রী, তবে এখনও করোনাভাইরাস নিয়ে সচেতনতা থাকলেও এবার আটকে রাখা যায়নি প্রধানমন্ত্রীকে। সশরীরেই এসেছে নবীন কর্মকর্তাদের মাঝে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা কারণ হচ্ছে আমাদের তো সময় শেষ হয়ে আসছে, পাঁচ বছর আমাদের সময়। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, আমার বয়স ৭৬ বছর। ৭৬ বছর তো অনেক বয়স। বুড়ো হয়েছি। কাজেই কতদিন আর চলতে পারব, আসতে পারব, যেকোনো সময়…কোনো একসময় অক্কা পেয়ে যাব, তার তো ঠিক নেই। তাই আমি ঠিক করেছি এবার আর আমি কোনো বাধা মানব না। আমাকে আসতেই হবে।’
যারা পেলেন সনদ
বিসিএস প্রশাসন একাডেমিতে ১২৪, ১২৫ ও ১২৬তম আইন ও প্রশাসন কোর্সে অংশ নিয়েছেন প্রশাসন ক্যাডারের ১০৩ কর্মকর্তা, যাদের ৬১ জন পুরুষ এবং ৪২ জন নারী। অংশগ্রহণকারীদের শতভাগ উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাদের ৪৭ জন পেয়েছেন ‘এ প্লাস’ গ্রেড, আর ৫৬ জন ‘এ’ গ্রেড পেয়েছেন।
প্রতিটি কোর্সের মেধা তালিকার শীর্ষ ১০ জন করে মোট ৩০ জন পেয়েছেন ‘সার্টিফিকেট অফ এক্সিলেন্স’। এদের ২১ জন পুরুষ এবং ৯ জন নারী কর্মকর্তা।
প্রশিক্ষণার্থীদের হাতে সনদ, ক্রেস্ট ও রেক্টর অ্যাওয়ার্ডস তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সনদ গ্রহণের পর প্রশিক্ষণে অর্জিত জ্ঞানকে দেশের উন্নয়ন ও মানবসেবায় বিনিয়োগের শপথ নেন জনপ্রশাসনের ১০৩ কর্মকর্তা। এরপর সবাই নিজ আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে নিজেদের সনদ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীকে দেখান তারা।
বিসিএস প্রশাসন একাডেমিতে বিভিন্ন সময় দেয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণের একটি সংকলন প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ। ওই সময় ‘ভাষণ সংকলন’ বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
আরও পড়ুন:সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশীদ বলেছেন, আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা সত্যের মুখে দাঁড়িয়ে লড়তে পারে। দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত উশৃঙ্খলতা নিরসনে মাঠে নেমে পরলে এদেশের ছেলেমেয়েরা শুরু হতে লাগলো পরিবর্তনের হাওয়া। তিনি বলেন, আমাদের লজ্জা হওয়া উচিৎ কেনো আমরা বড়রা এই উশৃঙ্খলতা নিরসন করতে পারিনি, যা ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে আমাদের ছোট ছোট বাচ্চারা তা আমাদেরকে শিখিয়ে দিয়েছে। ওই গণঅভ্যুত্থানে ৭০% মেয়ে অংশ নিয়েছিল, তারা সাইবার বুলিং এর শিকার হচ্ছে। সাইবার স্পেসকে নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপদ করতে তরুণদের সহযোগিতা দরকার।
তিনি গত শনিবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে ক্যাপিটাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের উদ্যোগে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে ২০২৫ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচন যথা সময়ে হবে। নির্বাচনের পথে যদি অতিরিক্ত সহিংসতা হয়, তাহলে নির্বাচন ভঙ্গুর হয়ে যাবে। ফলে সেটা যেনো না হয় সে কারণে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে জনগনকেও সরকারের পাশে এগিয়ে আসতে হবে। নির্বাচনী এলাকায় যেনো সহিংসতা না হয় সে খেয়াল রাখা আপনাদের দায়িত্ব, রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব। সবাই বসে আছি কবে নির্বাচন হবে, সবাই মিলে যদি আমরা সহযোগিতার হাত বাড়ায় তাহলে নির্বাচন সহজ হবে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সরকার দেশ গঠনে কাজ করে যাচ্ছে। পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের কাছে আমাদের দায়িত্ব অর্পণ করে যাবো, যাতে তারা সুনামের সঙ্গে মাথা উঁচু করে এদেশের মর্যদা রক্ষা করে কাজ করতে পারে।
বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক লি. নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মো. মহসিন মিয়ার সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাইমা ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান, সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাশেদুল হাসান খান, সোনারগাঁ ক্যাপিটাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি আক্তার হোসেন, পরিচালক খায়রুল ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ২০২৫ সালে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরিক্ষায় অংশ নেওয়া ১৯৯ জন জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
নির্বাচনের চলাকালীন ও পরে তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করার গুরুত্ব উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, এ দায়িত্ব পালনে কোনো গণমাধ্যমকে বাধাঁ দেওয়া হবে না।
রোববার রাজধানীর তথ্য ভবনে ‘নির্বাচনে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ বিষয়ক মতবিনিময়সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সভায় অংশ নেন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রকাশক, সম্পাদক ও সাংবাদিকরা। সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে অতীতের দুঃসহ অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তারা ভবিষ্যৎ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বিশেষ করে নির্বাচনকালে সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।
এ সময় উপদেষ্টা মাহফুজ আলম অভিযোগ করেন, গত ১৫ বছরে গণমাধ্যম আস্থা হারিয়েছে। সেই আস্থা পুনরুদ্ধারে নির্বাচনকালীন সময়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশের ওপর জোর দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আগামী জাতীয় নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে।
জনগণ ভোট দিতে গিয়ে সহিংসতার শিকার হবে না, সরকার সেই চিন্তা প্রতিষ্ঠা করবে। গণমাধ্যমও যেন এ চিন্তার বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখে।’
তিনি আরও আহ্বান জানান, যদি কোনো সহিংসতা ঘটে, তবে গণমাধ্যম যেন তার মূল কারণ ও দায়দায়িত্ব খুঁজে বের করে প্রকাশ করে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, জাতীয় স্বার্থে বস্তুনিষ্ঠ ও জবাবদিহিমূলক গণমাধ্যম অপরিহার্য।
রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন পর্যালোচনা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে সরকার ইতোমধ্যে একটি কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটিতে পাঁচজন উপদেষ্টা রয়েছেন, যারা শুধু এ কমিশনের সুপারিশ নয়, সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা করছেন।
তিনি বলেন, যতটুক সংস্কার জনসমর্থন, রাজনৈতিক সমর্থন ও সংশ্লিষ্ট সেক্টরের ঐকমত্যের ভিত্তিতে হবে, ততটুকুই টেকসই হবে।
তিনি আরও বলেন, বস্তুনিষ্ঠ গণমাধ্যম অন্তর্বর্তী সরকারের একটি চাওয়া। গণমাধ্যমকে জাতীয় স্বার্থেই জবাবদিহিতার জায়গা তৈরি করতে হবে।
পরিবেশ উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, গণমাধ্যমের প্রতি জনগণের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়লেই এর স্থায়িত্ব আসবে। তাই গণতন্ত্রের স্বার্থে গণমাধ্যমকে বস্তুনিষ্ঠ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। শুধুমাত্র কাগজে পরিবর্তন আনলে স্থায়িত্ব আসবে না, এর জন্য প্রয়োজন মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন। সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখে বলেই আলাদা গণমাধ্যম কমিশন গঠন করেছে। সুপারিশের সারাংশ ও বাস্তবায়নের রূপরেখা তৈরির কাজ চলছে। সাংবাদিকদের পেশাগত উৎকর্ষ, সেল্ফ-রেগুলেশন, সেক্টরাল ইউনিটি এবং গণমাধ্যমকে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ তৈরির বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকার মব জাস্টিসের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। একই সঙ্গে তিনি গণমাধ্যমে নৈতিকতা, দায়িত্বশীলতা ও জনআস্থার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ যদি আমরা সবাই মিলে বাস্তবায়ন করতে পারি, তাহলে সেটিই হবে টেকসই। সরকার সহায়তা করবে, কিন্তু টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব গণমাধ্যমকেই নিতে হবে।’
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) অনারারি নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন। ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের ট্রাস্টি সায়িদ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন সেন্টারের সদস্যসচিব ইলিয়াস হোসেন এবং বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. আল মামুন।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে স্বনির্ভর ও আর্থিকভাবে শক্তিশালী করে তোলার লক্ষ্যেই সরকার কাজ করছে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ে প্রাণিসম্পদ খাতকে আরও কার্যকর করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। রবিবার সকালে কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন আটি ভাওয়াল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত প্রাণী ও প্রাণিখাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রত্যেক পরিবারকে আর্থিকভাবে শক্তিশালী ও স্বনির্ভর করাই সরকারের মূল লক্ষ্য। আমরা চাই গ্রামের সাধারণ মানুষ যেন ছোট পরিসরে হাঁস-মুরগি, ছাগল বা ভেড়া পালন করে নিজেদের সংসার চালাতে পারে, অতিরিক্ত আয় করতে পারে এবং ধীরে ধীরে সমাজের অন্যদেরও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। প্রাণিসম্পদ খাত কেবল খাদ্য নিরাপত্তা নয়, দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের বড় ভরসা।
অনুষ্ঠানে মোট ২১৭টি পরিবারের মাঝে প্রাণিসম্পদ বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে ৬৪টি পরিবারকে ২১টি করে হাঁস, ৬৯টি পরিবারকে ২৫টি করে মুরগি, ১০টি পরিবারকে ২টি করে ছাগল, ৭৪টি পরিবারকে ৩টি করে ভেড়া বিতরণ করা হয়। এর পাশাপাশি উপযুক্ত প্রাণিখাদ্যও প্রদান করা হয় যাতে উপকারভোগীরা তাৎক্ষণিকভাবে খামার কার্যক্রম শুরু করতে পারেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আবু সুফিয়ান ও প্রকল্প পরিচালক ড. রহিম। আরও উপস্থিত ছিলেন কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রিনাত ফৌজিয়া, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কারিশমা আহমেদ এবং উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. সাত্তার বেগ, কৃষি কর্মকর্তা মহুয়া শারমিন মুনমুনসহ অনেকে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু সুফিয়ান বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে প্রাণিসম্পদ বিতরণ কার্যক্রম সরকারের এক যুগান্তকারী উদ্যোগ। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে এবং একই সঙ্গে মানুষের জীবনমানও উন্নত হবে।
স্বচ্ছতা বজায় রেখে ক্যালেন্ডার অনুযায়ী প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়ে বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এ নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ক্যালেন্ডার অনুযায়ী প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা ও নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে। বিসিএস পরীক্ষা হলো এন্ট্রি পয়েন্ট।
যারা এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে তারাই সরকার চালাবে। কাজেই এন্ট্রি পয়েন্টে যদি কোনো ধরনের অনিয়ম হয় তাহলে গোটা সিস্টেমে সেটার প্রভাব থেকে যাবে।’
দায়িত্ব নিয়ে সমস্যা ও সংকটগুলো সমাধান করে ফেলতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য সবাই মিলে চেষ্টা করতে হবে। যারা ভবিষ্যতে সরকার চালাবে তাদের জন্যও এটা প্রয়োজন।’
বৈঠকে সরকারি কর্ম কমিশনের আর্থিক স্বায়ত্তশাসন ও প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোচনা করেন কমিশন চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেম।
তিনি জানান, কমিশন ইতোমধ্যেই পাঁচ বছরের রোডম্যাপ দিয়েছে এবং প্রতিবছর নভেম্বর থেকে পরের বছরের অক্টোবর মধ্যেই পরীক্ষা ও নিয়োগ সম্পন্ন হবে।
কমিশন সদস্যরা জানান, গত ১৫ বছর রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে বিসিএস পরীক্ষায় নানা ধরনের অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি, প্রশ্ন ফাঁসের মতো ঘটনা ঘটেছে। পিএসসিতে যেন আর কখনো অনিয়ম ফিরে না আসে, এটি যেন সবার আস্থার জায়গা হয় সেটি নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
প্রশ্নপত্রের মান এমনভাবে উন্নীত করা হচ্ছে যাতে এই পরীক্ষার প্রস্তুতি দিয়ে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতাতেও চাকরিপ্রত্যাশীরা প্রতিযোগিতা করতে পারেন।
মুক্তিকামী মানুষের আন্দোলন সংগ্রামের অন্যতম অগ্রনায়ক, রাজনীতিবিদ, প্রগতিশীল চিন্তাবিদ, সমাজবিজ্ঞানী ও লেখক বদরুদ্দীন উমরের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
আজ রোববার এক শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে পেশাজীবন শুরু করে পরবর্তী সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেয়া বদরুদ্দীন উমর ছিলেন আমাদের মুক্তবুদ্ধি ও প্রগতি সংগ্রামের এক উজ্জ্বল বাতিঘর। ভাষা আন্দোলনে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা, গবেষণা, ঔপনিবেশিক মানসিকতার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ এবং সমাজতান্ত্রিক দর্শনের প্রতি তাঁর অবিচল নিষ্ঠা আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছে।
তিনি ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী সরকারের পরিবর্তনের জন্য গোড়া থেকেই গণঅভ্যুত্থানের কথা বলেছেন এবং জুলাই আন্দোলনকে উপমহাদেশের একটি অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের স্বীকৃতি দিয়েছেন।
প্রফেসর ইউনূস বলেন, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি বদরুদ্দীন উমর শুধু একজন তাত্ত্বিক ছিলেন না, ছিলেন একজন সংগ্রামী, যিনি আজীবন অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেছেন।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য লেখক ও বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমরকে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করে সরকার।
বদরুদ্দীন উমরের মৃত্যু জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চিন্তাশীল মানুষদের জন্য তাঁর লেখনী ও জীবনদর্শন এক অনন্য পথনির্দেশ হিসেবে কাজ করবে।
শোকবার্তায় বদরউদ্দীন উমরের শোকসন্তপ্ত পরিবার, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান প্রধান উপদেষ্টা।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় আক্রান্ত ৯৪ বছর বয়সী বদরুদ্দীন উমর আজ সকালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে সরকারি সফর করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। শুক্রবার তাকে বহনকারী হেলিকপ্টার উপজেলার গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। হেলিকপ্টার থেকে নামার পর জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। সেখানে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আগামী এক মাসের ভেতর আলুর দাম কিছুটা বাড়তে পারে। আমরা আলু রপ্তানীতে প্রণোদনা দিচ্ছি এবং রপ্তানিতে সহযোগিতা করছি। চাহিদা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।
গোপীনাথপুর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে বগুড়ার দুঁপচাচিয়া উপজেলার মর্তুজাপুর গ্রামে গিয়ে উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জুম্মার নামাজ আদায়ের পর তার শ্বশুর মরহুম আব্দুর রাজ্জাক আকন্দের কবর জিয়ারত করেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টাককে ও হেলিকপ্টার দেখতে উৎসুক লোকজনের ভিড়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসছেন এমন খবর গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জানাজানি হয়।
সরকারি সফরসূচি অনুযায়ী, বাণিজ্য উপদেষ্টার হেলিকপ্টার শুক্রবার সকাল ১১ টায় গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। সকাল থেকে প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত হন। সকাল ১০টার আগেই গণমাধ্যম কর্মীরাও গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আসেন। তখন থেকেই উৎসুক জনতা গোপীনাথপুর উচ্চবিদ্যালয়ের দুটি ফটকে বাণিজ্য উপদেষ্টা ও হেলিকপ্টার দেখতে ভিড় করছিলেন। তবে দেড় ঘন্টা বিলম্বে দুপুর পৌঁনে একটার দিকে উপদেষ্টাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে।
গোপীনাথপুর এলাকার আবু রায়হান তার দুই বছরের নাতিকে কাঁধে নিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টাকে ও হেলিকপ্টার দেখতে আসেন। তিনি বলেন, আমার নাতি হেলিকপ্টার দেখার বয়না ধরেছে। নাতিকে কাঁধে নিয়ে হেলিকপ্টার দেখতে এসেছি। বাণিজ্য উপদেষ্টা গোপীনাথপুরে এসেছেন। গোপীনাথপুরের বাসিন্দা হিসেবে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। আগে কখনও সরকারের কোনা মন্ত্রী গোপীনাথপুরের এসেছিল কি না তা জানি না।
মন্তব্য