টানা তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ৪০তম বিসিএস উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার চাকরিপ্রার্থীরা। বিভিন্নভাবে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) কাছে তাদের দাবি পেশ করলেও কোনো ফল নেই। গত দুই দিনেও তাদের অবস্থান কর্মসূচিস্থলে কোনো কর্মকর্তা আসেননি।
নন-ক্যাডার চাকরিপ্রত্যাশীরা তাদের ছয় দফা দাবি নিয়ে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় তৃতীয় দিনের অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। পিএসসির সামনে এই কর্মসূচির শুরুতে পুলিশের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশের সেই বাধা ডিঙিয়ে তারা পিএসসির প্রধান দুই ফটকের মাঝখানে অবস্থান নেন।
চাকরীপ্রত্যাশীরা বলেন, অবস্থান কর্মসূচির তিন দিন হয়ে গেলেও পিএসসির কোনো কর্মকর্তা তাদের সঙ্গে কথা বলেননি। তাদের কোনো আশ্বাসও দেয়া হয়নি। সকালে তারা শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করলেও পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। এতে তাদের দুজন আন্দোলনকারী আহত হন।
পিএসসির প্রশাসনিক কর্মকর্তা পরিচয়ে একজন কথা বলতে এসেছিলেন বলে জানান আন্দোলনকারীরা। তিনি চাকরিপ্রার্থী আন্দোলনকারীদের নাম ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর নিয়ে যান। এক মিনিট কথা বলার কথা বলে ওই ব্যক্তি বরং উল্টো দুই মিনিট ধমকাধমকি করে যান। পরে আন্দোলনকারীরা জানতে পারেন যে ওই ব্যক্তি পিএসসির কেউ নন।
নিউজবাংলা পিএসসির কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দেয়া ওই ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নন-ক্যাডার চাকরিপ্রার্থী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম পিএসসির চেয়ারম্যান অন্তত একবার বাইরে এসে আমাদের কথা শুনবেন। কিন্তু আজ অবস্থান কর্মসূচির তিন দিন হলেও চেয়ারম্যান তো দূরে থাক, পিএসসির নিম্ন পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তাও আমাদের খোঁজ নেননি।’
এর আগে সোমবার বিকেলে পিএসসি চেয়ারম্যান অফিস শেষ করে বের হলে আন্দোলনকারীরা তার গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন। পরে আন্দোলন সমন্বয়কদের সিদ্ধান্তে চেয়ারম্যানের গাড়ি বের হতে দেয়া হয়।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অবস্থানের পর নতুন আন্দোলন কর্মসূচির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান নন-ক্যাডার প্রার্থীরা।
এ বিষয়ে পিএসসির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহরাব হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি। অবস্থানকারীদের বিষয়ে কী ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে সেই বিষয়ে জানতে চেয়ে বার্তা পাঠালেও কোনো জবাব মেলেনি।
পিএসসির সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ওয়াটসঅ্যাপ-এ বার্তা দিলেও কোনো জবাব দেননি।
আন্দোলনের শুরু
পিএসসি বিসিএস নন-ক্যাডার পদের বিষয়ে নতুন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার বিপক্ষে গত ৬ অক্টোবর ৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডার এবং ৪১ থেকে ৪৪তম বিসিএস চাকরিপ্রার্থীরা পিএসসির সামনে একটি মানববন্ধন করেন।
এর ধারাবাহিকতায় ১৬ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। এই সমাবেশে চাকরিপ্রার্থীরা ৬ দফা দাবি তুলে ধরে তা পূরণে পিএসসিকে ৫ কর্মদিবসের আল্টিমেটাম দেন।
এই দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে দেশের ৮ বিভাগের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের চাকরিপ্রার্থী ছাত্রসমাজ ২০ অক্টোবর একযোগে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে ২৪ অক্টোবর সংবাদ সম্মেলন করে আল্টিমেটামের মেয়াদ আরও ৬ দিন (২৯ অক্টোবর পর্যন্ত) বাড়ানো হয়। এরপরও কোনো সাড়া না পাওয়ায় ৩০ অক্টোবর থেকে পিএসসির সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
কেন এই আন্দোলন
৪০তম বিসিএস সবচেয়ে দীর্ঘ সময় পার করা বিসিএস। ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এর সার্কুলার হয় এবং চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হয় ৩০ মার্চ ২০২২ সালে। চূড়ান্ত ফল প্রকাশের ৬ মাস পার হলেও নন-ক্যাডারের কোনো তালিকা এখনও প্রকাশ হয়নি।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত জমাকৃত পদগুলোতে পিএসসি ৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডার থেকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করবে এবং ৪৫তম বিসিএস থেকে সার্কুলারে নন-ক্যাডার পদেরও উল্লেখ থাকবে।
আগের নিয়ম অনুযায়ী, বিসিএস পরীক্ষায় পাস করা চাকরিপ্রত্যাশীদের মেধার ভিত্তিতে পরবর্তী বিসিএসের ফল প্রকাশ করার সময় পর্যন্ত নন-ক্যাডার শূন্য পদে নিয়োগ দেয়া হতো।
নতুন নিয়ম বিধির মধ্যে থাকলেও তা ৩৮তম বিসিএসে লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে দাবি চাকরীপ্রত্যাশীদের। তারা বলছেন, ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের আগে যেসব পদ খালি হয়েছে তা ৩৮তম বিসিএস প্রার্থীদের দেয়া হয়েছে। একইভাবে তার আগেও এমন নিয়ম ছিল। তবে ৪০ বিসিএসের সার্কুলারের পর যেসব পদ ফাঁকা হয়েছে তা পরবর্তী বিসিএসের সার্কুলারের আগ পর্যন্ত ধরা হলে সেটির দাবিদার ৪০তম বিসিএসের নন-ক্যাডার প্রার্থীরা। কিন্তু নতুন চেয়ারম্যান সেটি শুধু ৪০তম বিসিএসে সীমাবদ্ধ না রেখে ৪১, ৪৩ ও ৪৪ তম বিসিএসের মধ্যে ভাগ করে দিতে চাইছেন।
৪০তম বিসিএসের ফল প্রকাশ করা হয় ৩০ মার্চ। যেখানে ১ হাজার ৯৬৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া ক্যাডার পদে সুপারিশ করা হয়নি এমন আট হাজার ১৬৬ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হয়।
চাকরিপ্রাথীরা বলছেন, ২০১৮ সাল পর্যন্ত প্রায় সব নন-ক্যাডার পদ ৩৭তম বিসিএস যেটির সার্কুলার ২০১৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি হয়েছে তাদের দেয়া হয়েছে। এরপর ২০১৯, ২০২০, ২০২১ ও ২৯ মার্চ ২০২২ সাল পর্যন্ত খালি হওয়া নন-ক্যাডার পদগুলো দেয়া হয়েছে ৩৮তম বিসিএসের (সার্কুলার হয় ২০১৭ সালের ২০ জুন) নন-ক্যাডারদের।
নতুন চেয়ারম্যান আসার পর দুই নিয়ম
বিসিএস উত্তীর্ণ অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা প্রার্থীদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অধিদপ্তরের অধিযাচনের ভিত্তিতে প্রাপ্ত নন-ক্যাডার শূন্যপদে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। নন-ক্যাডার সুপারিশের এই প্রক্রিয়া পরবর্তী বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করার আগ পর্যন্ত চলমান ছিল। ২৮তম বিসিএস থেকে ৩৮তম বিসিএস পর্যন্ত এই নিয়মেই পিএসসি নন-ক্যাডার পদে সুপারিশ করে আসছে। সেখানে কোথাও নন-ক্যাডার পদের উল্লেখ ছিল না।
তবে নতুন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহরাব হোসাইন আসার পর ৩৮তম বিসিএস থেকে প্রায় ৩ হাজার ৩০২ জনকে এই নিয়মেই নিয়োগ দেয়া হয়। তবে পরবর্তী চারটি বিসিএসের ক্ষেত্রে তিনি নতুন নিয়মের কথা উল্লেখ করেছেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে শেষ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত না এলে নতুন এই নিয়ম বাতিলের দাবিতে আমরণ অমশনের ঘোষণা দিয়েছেন ৪০তম বিসিএসের নন-ক্যাডার চাকরিপ্রার্থীরা।
আরও পড়ুন:বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নিজাম উদ্দিনকে সচিব হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী ও ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা-ট্রাস্টি মনসুর আহমেদ চৌধুরী ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বিদায়ী চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
আর টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের নতুন দুই সদস্য হয়েছেন সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাকালীন নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার মনজুর হাসান এবং নারীর ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা ও সুশাসন বিশেষজ্ঞ তাহেরা ইয়াসমিন।
তাছাড়া টিআইবির অডিট কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন সংস্থাটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ফারুক আহমেদ। অডিট কমিটির অপর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত কম্পট্রোলার জেনারেল, ডিফেন্স ফাইন্যান্স মোতাহার হোসেইন।
টিআইবি’র নতুন চেয়ারপারসন মনসুর আহমেদ চৌধুরী বহুল আলোচিত ভাসমান হাসপাতাল ‘জীবন তরী’-এর উদ্যোক্তা। মানবাধিকার বিশেষ করে প্রতিবন্ধীদের অধিকারের নিশ্চয়তাসহ তাদের জীবন-মানের সার্বিক উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে তিনি কাজ করছেন।
‘জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরাম’ গঠনে মনসুর আহমেদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবন্ধীবিষয়ক কমিটির সদস্য হিসেবে (২০০৯-১২ মেয়াদে) দায়িত্ব পালন করেছেন।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি নিরাফাত আনাম মেমোরিয়াল ইনক্লুশন পদক, সিলেট রত্ন পদক, আজীবন সম্মাননা (সিঙ্গার বাংলাদেশ ও চ্যানেল আই) এবং সিনিয়র অশোকা ফেলোশিপ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।
টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের নতুন সদস্য ব্যারিস্টার মনজুর হাসান বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। টিআইবির প্রতিষ্ঠাকালীন নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন ছাড়াও তিনি ব্র্যাকের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০০৩ সালে ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছ থেকে ‘অফিসার অফ দ্য মোস্ট এক্সেলেন্ট অর্ডার অফ দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (ওবিই)’ উপাধিতে ভূষিত হন।
বোর্ডের আরেক নতুন সদস্য তাহেরা ইয়াসমিন নারীর ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা এবং সুশাসন বিশেষজ্ঞ। তিনি অক্সফাম, কেয়ার এবং জিআইজেড-এর মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে শীর্ষস্থানীয় পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জিআইজেড-এর রুল অব ল’র অপারেশন পরিচালক এবং অ্যাকসেস টু জাস্টিস ফর উইম্যান প্রোগ্রামের সিনিয়র অ্যাডভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বেসরকারি সংস্থা ও উন্নয়ন খাতে স্ট্রাটেজিক প্ল্যানিং ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি সুখ্যাতি অর্জন করেছেন।
প্রসঙ্গত, ট্রাস্টি বোর্ড টিআইবির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম। বোর্ডের অন্যরা হলেন- অধ্যাপক ড. তাসনিম আরেফা সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক; দ্য ডেইলি স্টার প্রকাশক ও সম্পাদক মাহফুজ আনাম, কোষাধ্যক্ষ।
সদস্যবৃন্দ হলেন- সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ আবুল মোমেন, অধ্যাপক ড. ফখরুল আলম, অ্যাডভোকেট সুস্মিতা চাকমা, সোসাইটি অফ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট (শেড)-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ফিলিপ গাইন, মানবাধিকার ও সমাজকর্মী বনশ্রী পাল এবং ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল-এর প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক ফারুক আহমেদ।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জনবিভাগের সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব করা হয়েছে।
রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
ড. নাসিমুল গনি বিসিএস ১৯৮২ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। ২০০৯ সালে তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়। চার বছর ওএসডি থাকার পর ২০১৩ সালে তাকে চাকরি থেকে অবসর দেয়া হয়।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাকে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জনবিভাগে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়।
৪২তম (বিশেষ) বিসিএস স্বাস্থ্য নিয়োগ পরীক্ষায় লিখিত ও মৌখিক উভয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগবঞ্চিত এক হাজার ৯১৯ জন চিকিৎসক তাদেরকে দ্রুত নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন।
রোববার ৪২তম (বিশেষ) বিসিএস স্বাস্থ্যে অপেক্ষমাণ চিকিৎসকরা সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি জানান।
‘৪২তম (বিশেষ) বিসিএস স্বাস্থ্য (লিখিত ও মৌখিক) উভয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও ক্যাডার পদে নিয়োগবঞ্চিত ১৯১৯ জন চিকিৎসককে ন্যায্য নিয়োগ’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে।
সংবাদ সম্মেলনে নিয়োগবঞ্চিত চিকিৎসকরা বলেন, ২০২১ সালে ৪২তম বিসিএসের ফলাফলে পর্যাপ্ত পদ না থাকায় এক হাজার ৯১৯ জন চিকিৎসক দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগবঞ্চিত হয়ে আছেন। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও তারা বৈষম্যের শিকার। স্বাস্থ্য অধিদফতর নীতিগতভাবে দ্রুত দু’হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা চাই এক্ষেত্রে ৪২তম বিসিএসের অপেক্ষমাণ চিকিৎসকদের অগ্রাধিকার দেয়া হোক।
তারা বলেন, দেশে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে চরম চিকিৎসক সংকট রয়েছে। সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী তাদের মৌলিক অধিকার হিসেবে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় রোগীরা যথাযথ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না।
সাধারণ বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ উল্লেখ করে চিকিৎসকরা বলেন, বর্তমানে ৪৪, ৪৫ ও ৪৬তম বিসিএস প্রক্রিয়াধীন। ৪২তম বিসিএসের পরে আর কোনো চিকিৎসক নিয়োগ হয়নি। তাই দীর্ঘ প্রক্রিয়া এড়িয়ে দ্রুত নিয়োগ দিয়ে চিকিৎসক সংকট নিরসনের দাবি জানাচ্ছি আমরা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও এবি পার্টির আহ্বায়ক মেজর (অব.) অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওহাব মিনার, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ডা. ফারজানা সাথী, ডা. মো. রেজওয়ান কবীরসহ ৪২তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ চিকিৎসকরা।
সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) ৪৭তম বিসিএসের আবেদনের নতুন তারিখ চূড়ান্ত করেছে। গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- আগামী ২৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে আবেদন করতে পারবেন প্রার্থীরা। তা চলবে আগামী ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। এবার প্রার্থীদের আবেদন ফি দুশ’ টাকা।
পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমান বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এর আগে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষাসহ সব ধরনের সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষার আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বিসিএসে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ২০০ থেকে কমিয়ে ১০০ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, ৪৭তম বিসিএসের আবেদন শুরুর একদিন আগে ৯ ডিসেম্বর (সোমবার) অনলাইনে আবেদন অনিবার্য কারণে স্থগিত করে পিএসসি।
সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা সংস্থানের বিষয় পর্যালোচনা করতে কমিটি গঠন করেছে সরকার। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫-এর আওতাভুক্ত কর্মচারীদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগ প্রবিধি-৩ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করে অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের কর্মে নিয়োজিত জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫-এর আওতাভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুকূলে ‘মহার্ঘ ভাতা’ সংস্থানের বিষয়টি পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপ-সচিব সৈয়দ আলী বিন হাসানের সই করা আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, মহাহিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব।
কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, কমিটি মহার্ঘ ভাতার প্রযোজ্যতা ও প্রাপ্যতার বিষয় পর্যালোচনা করবে এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ দাখিল করবে। কমিটি প্রয়োজনে এক বা একাধিক কর্মকর্তাকে কো-অপ্ট করতে পারবে।
বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে বদলি ও রদবদলের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন জেলার ১২ পুলিশ সুপারকে (এসপি) একযোগে বদলি করা হয়েছে।
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখার উপসচিব আবু সাঈদের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এই বদলির আদেশ দেয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পুলিশ অধিদপ্তরের (টিআর) পুলিশ সুপার আবু সাইমকে রংপুরের পুলিশ সুপার, গাইবান্ধার কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার আবু সায়েম প্রধানকে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমকে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার জাকির হোসেনকে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার শরিফ উদ্দীনকে বরিশালের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলামকে রাজশাহীর পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া পুলিশ অধিদপ্তরের পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেককে গাজীপুরের পুলিশ সুপার, এন্টি টেররিজম ইউনিটের ঢাকার পুলিশ সুপার ইয়াছমিন খাতুনকে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার, এপিবিএন সদর দপ্তরের পুলিশ সুপার নিশাত অ্যাঞ্জেলাকে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার আসলাম শাহাজাদাকে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এহতেশামুল হককে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার এবং এসবির বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ারকে নওগাঁর পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মন্তব্য