মিছিল, সমাবেশের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ফৌজদারি অপরাধ না হলে পুলিশ সহযোগিতা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) নতুন কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
রাজধানীর মিন্টো রোডে সোমবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে কমিশনস মিট দ্য প্রেসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ আশ্বাস দেন।
বিএনপির অভিযোগ, তাদের কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিলেও আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে বাধা দেয় না। সাংবাদিকরা এমন প্রশ্ন সামনে আনার সঙ্গে সঙ্গে ডিএমপির নবনিযুক্ত কমিশনার বলেন, ‘এখন যদি কেউ রাজনীতির নাম নিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে, গাড়িতে আগুন দেয়, রাস্তার গাছ কেটে অবরোধ করে, তখন ফৌজদারি অপরাধের মধ্যে পড়ে।
‘যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ফৌজদারি অপরাধ না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা তাদের সহযোগিতা করব, কিন্তু ফৌজদারি অপরাধ করলে আমরা কঠোর হস্তে সে ফৌজদারি অপরাধ দমন করব, নিয়ন্ত্রণ করব, প্রিভেনশন করব।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের কাজ তাদের রাজনীতি করা। তারা রাজনীতি করবে। এখানে পুলিশের কোনো ভূমিকা নাই।
‘এ বিষয়ে আমাদের নাক গলানো বা মাথাব্যথা আমাদের নাই। আমাদের কাজ হলো আইনশৃঙ্খলা ও অপরাধ নিয়ে। ব্রিটিশ আমল থেকেই আইনগুলো এভাবে করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘কেউ রাজনৈতিক মিছিল করবে, কেউ মিটিং করবে। এটা তার রাজনৈতিক অধিকার। বাংলাদেশ সংবিধান যে সমস্ত ওপেন রাজনৈতিক দল আছে, তারা ওপেন রাজনীতি করছে।
‘শুধু নিষিদ্ধ ৬টা রাজনৈতিক দল বাদ দিয়ে বাকি দলগুলো রাজনীতি করতেছে। এখানে কোনো রকমে রাজনীতি নিয়ে আমাদের বক্তব্য নাই।’
রাজধানীতে মাদক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী মাদক নির্মূল করা একটা চ্যালেঞ্জ। আফগানিস্তানের মতো একটা ইসলামিক দেশে পপি চাষ হয়। তারা সবকিছুই করছে কিন্তু পপি চাষ বন্ধ করছে না। মাদকের মতো ভয়ঙ্কর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হলে আসলে গণমাধ্যমসহ সবারই সহযোগিতা দরকার। কয়েক বছর ধরে আমরা মাদকের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছি।’
মাদকের ব্যাপারে দুই ধরনের কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জনগণের মধ্যে যারা মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ী তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে কাজ করছি। আমরা তাদের ডোপ টেস্ট করছি। মাদক না পেলেও ডোপ টেস্টে পজিটিভ হলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা প্রসিকিউশন দিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘মাদকসেবনে চাকরি হারাচ্ছে পুলিশ সদস্যরাও। জিরো টলারেন্স নীতির কারণে আমরা পুলিশের মধ্যেও ডোপ টেস্ট করছি। যারা পজিটিভ হচ্ছেন তাদের আমরা চাকরিচ্যুত করছি। মাদক বন্ধে শুধু সাপ্লাই লাইন বন্ধ করলেই হবে না। ডিমান্ড লাইন বন্ধ করতে হবে। যদি মাদকের ডিমান্ড ও মাদকসেবী থাকে তাহলে যত কড়াকড়িই করা হোক না কেন সাপ্লাই আসবেই। সুতরাং আমাদের আগে মাদকের ডিমান্ড বন্ধ করতে হবে।
‘মাদকসেবীদের তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। ডিমান্ড কমলে মাদক ব্যবসায়ীরা এমনিতেই মাদক ব্যবসা ছেড়ে দেবে। আমাদের মাদকসেবীদের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসা সেবার মান ও চিকিৎসা কেন্দ্র বাড়াতে হবে।’
রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থাপনা নিয়ে কী ধরনের পরিকল্পনা থাকবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার সাধারণ সূত্র চারটি; ইনফোর্সমেন্ট, এডুকেশন, ইঞ্জিনিয়ারিং ও এনভাইরনমেন্ট। কিন্তু একটা ক্ষেত্রে বড় সমস্যা দেখা দেয়, সেটা হলো ইঞ্জিনিয়ারিং। ঢাকা গড়ে উঠেছে অপরিকল্পিতভাবে। রাজধানীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেয়া হয়েছিল। আমরা চেষ্টা করব আগের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন করা।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘রাজধানীতে বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। যে কারণে ট্রাফিক চাপ রয়েছে। যা আরও কিছু দিন থাকবে।’
রাজধানীতে অবৈধভাবে পার্কিং, অবৈধ ইন্টার ডিস্ট্রিক বাস টার্মিনাল গড়ে তোলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে অবৈধ লেনদেনের অভিযোগও রয়েছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো পুলিশ সদস্য অবৈধ পার্কিং ও বাস টার্মিনাল গড়ে তুললে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। প্রাইভেটকারসহ ছোট যানবাহন রাখা নিয়েই মূলত সমস্যা তৈরি হচ্ছে। অফিসিয়ালি পার্কিং জোন করতে আমরা চেষ্টা করছি। যদি করে দিতে পারি তাহলে ছোট যানবাহন রাখার সুবিধা হবে।’
জঙ্গিবাদ খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ‘অনেক দেশে উন্নত পুলিশিং ব্যবস্থা থাকার পরও জঙ্গিবাদ দমনে সফল হতে পারছে না। তবে বাংলাদেশ এক্ষেত্রে সফল। জঙ্গিবাদ আর আগের মতো মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। যদিও জঙ্গিবাদের চর্চা বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশে পুরোপুরি বন্ধ করা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, ‘জনগণ ও পুলিশি অ্যাকশনের কারণে জঙ্গিবাদ কখনও কখনও শান্ত হয়ে যায়। আবার কিছুদিন পর জঙ্গিবাদ চর্চা শুরু হয়। আমাদের সাইবার ওয়ার্ল্ডে মনিটরিং চলছে।’
‘কোনো জঙ্গি নিজের বাসায় থাকেন না। তারা ভাড়া বাসায় থাকেন। সেজন্য আমরা ভাড়াটিয়া তথ্য সংগ্রহ করছি। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের মানুষ, পুলিশ ও গণমাধ্যমের সহযোগিতায় জঙ্গিবাদ বন্ধ করা সম্ভব।’
আরও পড়ুন:গাইবান্ধায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন আশরাফ আলী নামের এক রিকশাচালক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার সুন্দরগঞ্জ-কুপতলা সড়কের ৭৫ নম্বর রেলগেট নামক এলাকায় এ ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড ঘটে। পরে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে সাদেকুলকে কারাগারে পাঠানো হয়।
৫০ বছর বয়সী রিকশাচালক আশরাফ আলী সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের সাহার ভিটার গ্রামের মৃত ফয়জার রহমানের ছেলে। অন্যদিকে ছিনতাই ও হত্যায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলাম কুপতলা ইউনিয়নের রামপ্রসাদ গ্রামের বাসিন্দা।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাসুদ রানা।
ওসি জানান, প্রতিদিনের মতোই বৃহস্পতিবার রাতে রিকশা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন আশরাফ আলী। তিনি কুপতলা এলাকার ৭৫ নম্বর রেলগেটে পৌঁছালে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সাদেকুল ইসলাম তার পথ রোধ করে ছুরি ধরে রিকশা এবং চাবি কেড়ে নিয়ে তাকে চলে যেতে বলেন। আশরাফ আলী এতে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে প্রথমে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত সাদেকুল আশরাফ আলীর পেটে ছুরিকাঘাত করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে চিকিৎসার জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি বলেন, ‘এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ওই রাতেই অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে রিকশাটিও উদ্ধার করা হয়। পরে আজ (শুক্রবার) দুপুরে সাদেকুলকে একমাত্র আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।’
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখায় প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে শাখা ম্যানেজারসহ ৩ কর্মকর্তাকে আটকের পর কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর। এদিন দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরণ করে সাঁথিয়া থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের জিআরও এএসআই মাহবুবুর রহমান জানান, বিকেলে সাঁথিয়া থানা থেকে এনে তাদের আদালতে তোলা হয়। এ সময় কেউ তাদের জন্য জামিন আবেদন করেননি। ফলে আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আটককৃতরা হলেন- অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) সুজানগর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর এবং ক্যাশিয়ার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত চক্রবর্তী।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় অফিস থেকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট অডিট টিম কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে আসে। দিনভর অডিট করে তারা ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আর্থিক অনিয়ম পান। এ বিষয়ে সাঁথিয়া থানায় ওই শাখার ম্যানেজার (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী ও সিনিয়র অফিসার আবু জাফরকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দিলে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে তাদের তিনজনকে আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অডিটে অনিয়ম ধরা পড়লে তাদের আটক করে সাঁথিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আজ (শুক্রবার) দুপুরে জিডির ভিত্তিতে আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে দুদক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
আরও পড়ুন:আনসার সদস্য তরিকুল ইসলাম। বাড়ি তার বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর গ্রামে। বর্তমানে ঢাকার সুত্রাপুর থানায় কর্মরত।
৩৮ বছর বয়সী এ যুবকের নেশা বিয়ে করা। যেখানেই যান সেখানেই তিনি বিয়ে করেন। এ পর্যন্ত ৭টি বিয়ে করেছেন।
সর্বশেষ তিনি বিয়ে করেন ঝিনাইদহ শহরের পবহাটি এলাকার। ঢাকায় থাকাকালে সেঁজুতি নামের পবহাটির একটি মেয়ের সঙ্গে সপ্তমবারের মতো সংসার শুরু করেন তিনি।
তবে এর মানে এই নয় যে, তার আগের সব স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। বর্তমানে তৃতীয় স্ত্রী পারভীন তার গ্রামের বাড়িতে এবং ষষ্ঠ স্ত্রী রয়েছেন যশোরের বেনাপোলে। ২ স্ত্রীর ঘরে ২টি সন্তানও রয়েছে তরিকুলের।
সম্প্রতি সংসার জীবন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এই যুবক। স্বামীকে ফিরে পেতে আড়াই বছরের মেয়েকে নিয়ে ঝিনাইদহের পবহাটিতে আসেন ষষ্ঠ স্ত্রী হোসনে আরা আক্তার সাথী। তরিকুলকে স্বামী দাবি করলে সেখানে বেঁধে যায় রণক্ষেত্র। স্বামীকে নিয়ে সেঁজুতির সঙ্গে শুরু হয় তার কাড়াকাড়ি। কোনো উপায় না পেয়ে পালিয়ে যান আনসার সদস্য তরিকুল ইসলাম।
নিউজবাংলাকে সাথী জানান, বেনাপোল বন্দরে কর্মরত থাকা অবস্থায় নিজেকে এতিম পরিচয় দিয়ে তাকে বিয়ে করেন তরিকুল। ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তাদের বিয়ের পর থেকে একসঙ্গেই ছিলেন দুজন। তবে ২০২২ সালে বদলি হয়ে ঢাকায় চলে যান তরিকুল। তার কিছুদিন পর থেকে সাথীর সঙ্গে তার সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ।
তিনি জানান, ঢাকায় বদলি হওয়ার পর থেকে তার ও তাদের সন্তানের কোনো খরচ পাঠাতেন না তরিকুল। এরই মধ্যে সেঁজুতির সঙ্গে তার ইমোতে পরিচয় হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে সেঁজুতিকে বিয়ে করেন তিনি।
সাথী বলেন, ‘গত ঈদে আমার কাছে গিয়ে ৬ দিন ছিল। সেখানে আমাকে ভুলিয়ে আমার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে চলে আসে। তারপর আবার সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। আমার আড়াই বছরের মেয়েটি বাবার জন্য সব সময় কান্নাকাটি করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামী ঝিনাইদহ আছে- এমন খবর পেয়ে আমরা ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আর এর মধ্যে আবার পালিয়েছে সে (তরিকুল)। আমি তরিকুল ও সেঁজুতির বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে জানতে আনসার সদস্য তরিকুলের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন:শেরপুরে দুর্বৃত্তের হামলায় ভূমি অফিসের দুই কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। ঘটনার পর হামলাকারীরা ‘ভূমিদস্যু’ বলে অভিযোগ করেছেন আহত কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের নন্দীবাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহত দুই কর্মকর্তা হলেন- সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মো. শহীদুল ও কামারেরচর ভূমি অফিসের নায়েব শহীদুল ইসলাম।
শেরপুর সদর থানার ওসি এমদাদুল হক এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলার কামারেরচর থেকে কাজ শেষে মোটরসাইকেলে শহরে ফেরার পথে শেরপুর-জামালপুর সড়কের নন্দীবাজার এলাকায় কয়েকজন ব্যক্তি ওই দুই কর্মকর্তার গতিরোধ করেন। এ সময় সার্ভেয়ার মোটরসাইকেলটি থামানোর সঙ্গে সঙ্গে অতর্কিত পেছন থেকে তাদের দুজনকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি দিতে থাকে এবং একজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে সার্ভেয়ার শহীদুলের মাথায় আঘাত করে। এ সময় তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
এরপর স্থানীয়রা তাদের শেরপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে আহত সার্ভেয়ার শহীদুল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অপরজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে যান।
আহত সার্ভেয়ার ও নায়েব বলেন, লসমনপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর এলাকার মো. সেলিম মিয়া ও তার ছেলেসহ আরও কয়েকজন এ হামলা চালান। হামলাকারীরা এলাকার চিহ্নিত ভূমিদস্যু। তাদের নামে শেরপুর সি আর আমলী আদালতে জাল দলিল তৈরি করে ভূমি জালিয়াতি করায় সরকার পক্ষের একটি মামলা চলছে। এরই জেরে তারা পরিকল্পিত এ হামলা চালিয়েছেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন:রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারের আশুলিয়ায় একটি নির্জন বাঁশবাগানের ভেতর থেকে এক নারী পোশাকশ্রমিকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আশুলিয়ার কাঠগড়া নয়াপাড়া এলাকার বাঁশবাগান থেকে শুক্রবার সকালে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো আনজু খাতুন আশুলিয়ার নরসিংহপুরের হা-মীম গ্রুপের একটি তৈরি পোশাক কারখানার অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। তার বাড়ি গাইবান্ধা সদর থানার ঘাগুয়া ইউনিয়নে।
পুলিশের ভাষ্য, বাঁশবাগানের ভেতর নারী পোশাকশ্রমিকের মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। এর পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, ওই নারীর গলায় ঝোলানো পরিচয়পত্রে দেখা যায়, তিনি হা-মীম গ্রুপের একটি পোশাক কারখানার অপারেটর।
হা-মীম গ্রুপের টিআইএসডব্লিএল-১ কারখানার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আনজু খাতুন নামে এক নারী শ্রমিক গতকাল রাত ৯টা ১৫ মিনিটের পরে কারখানা থেকে বাসায় যায়, কিন্তু আজ সকালে তিনি আর কারখানায় আসেননি।
‘পরে লাইনের সুপারভাইজার আনজুকে কল দিলেও সে রিসিভ করেনি।’
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ভজন চন্দ্র বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে কেউ তাকে (পোশাকশ্রমিক) হত্যা করে ফেলে রেখে যেতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন:লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তের ওপারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে আবুল কালাম ডাকু (২২) নামের বাংলাদেশি রাখাল নিহত হয়েছেন।
উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ঝালাংগী বিজিবি ক্যাম্পের ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের ৯ নম্বর সাব পিলার এলাকায় শুক্রবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও যুবকের পরিবারের কাছ থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে কয়েকজন রাখালসহ শ্রীরামপুর ইউনিয়ন সীমান্তের ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের ৯ নম্বর সাব পিলারের ওপারে ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় গরু আনতে যান আবুল কালাম ডাকু। গরু নিয়ে ফেরার পথে শুক্রবার ভোররাতে বিএসএফের ডোরাডাবরী ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ডাকু গুরুতর আহত হলে সঙ্গীরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে বাংলাদেশ সীমান্তে। পরে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
এ বিষয়ে পাটগ্রাম ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ঝালাংগী ক্যাম্পের ইনচার্জ নায়েক সুবেদার নুরুল আমিন বলেন, ‘বিএসএফের গুলিতে আবুল কালাম ডাকু নামে একজন যুবক নিহত হয়েছেন। পাটগ্রাম থানা পুলিশ পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিহতের মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদপত্র পাঠিয়ে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে।’
নিহত যুবকের মা মমতা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলের বিয়ে ঠিক হয়েছে। কী অপরাধের জন্য বিএসএফ তাকে গুলি করে হত্যা করল জানি না। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’
পাটগ্রাম থানার ওসি আবু সাইদ বলেন, ‘বিএসএফের গুলিতে আহত যুবক আবুল কালাম ডাকুকে পরিবারের সদস্যরা পাটগ্রাম হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যান। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় একটি ইউডি (অপমৃত্যুর) মামলা করা হবে।’
আরও পড়ুন:পাবনার সাঁথিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখার ভল্ট থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ওই ব্যাংকের প্রধান তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তিনজনকে আটক করা হয়। দিনভর নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাদের সাঁথিয়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। তিনজনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার আবু জাফর, ব্যবস্থাপক হারুন বিন সালাম ও ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী, যাদের বাড়ি পাবনার বিভিন্ন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী।
সাঁথিয়া থানা ও অগ্রণী ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে অগ্রণী ব্যাংক রাজশাহী বিভাগীয় ও পাবনা আঞ্চলিক শাখা থেকে পাঁচ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আকস্মিক অডিটে আসেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখায়। অডিট শেষে সেখানে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকার আর্থিক অনিয়ম দেখতে পান তারা। পরে অডিট কর্মকর্তা সাঁথিয়া থানাকে অবহিত করলে পুলিশ অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংক পাবনা আঞ্চলিক শাখার উপমহাব্যবস্থাপক রেজাউল শরীফ বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় অভিযোগ করেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে বিভাগীয় অফিস থেকে পাঁচ সদস্যের অডিট টিম ব্যাংকে অডিট শুরু করে। ওই টিমের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করে তিনজনের কাছ থেকে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। পরে রাতে তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, আটককৃতদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য