উপজেলা প্রশাসন শিশুপার্কের চারদিকে সীমানা দেয়াল না থাকায় এটির ভেতর দিয়ে যাতায়াত করছে স্থানীয়রা। পার্কের ভেতর প্রকাশ্যে চলছে কিশোর ও যুবকদের মাদক সেবন। সংস্কার কাজ স্থবির হয়ে যাওয়ায় মাদকসেবীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে এ শিশু পার্ক।
ঠাকুরগাঁওয়ের ভারত সীমান্ত ঘেঁষা হরিপুর উপজেলা প্রশাসন পার্কে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র।
উপজেলা ডাকবাংলো রোড দিয়ে একটু সামনে এগোলেই হাতের ডান পাশে ঠাঁয় দাঁড়ানো সীমানা প্রাচীরবিহীন পার্কের মূল ফটক। ভেতরে মাঝখানে গোল টিনশেডের ঘর, যেগুলো পার্কের জন্য তৈরি বসার স্থান। এসব ঘরে বসে আড্ডা দিচ্ছেন স্থানীয় কয়েকজন কিশোর।
তাদের অভিযোগ, পার্কের ভেতর প্রকাশ্যে মাদক সেবন করা হয়। অন্য কিশোররা এসব দেখে দেখে উৎসাহিত হচ্ছে।
পার্কের শুধু জমিটুকু পড়ে আছে অযত্নে। নামকাওয়াস্তে শিশুপার্ক। এখানে দেখার বা বলার মতো কেউ নেই।
তারা আরও জানান, সন্ধ্যার পর মাদক কারবারীরা এখান থেকেই মাদক ব্যবসা করে। অথচ পাশেই হরিপুর থানা। কোনো কিছুর তোয়াক্কা করা হয় না।
২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে বিস্তর জায়গা জুড়ে ‘উপজেলা প্রশাসন শিশু পার্ক’ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। পার্কটি চালু হয় ২০১৮ সালের শেষের দিকে।
হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যমতে, প্রকল্পের প্রায় ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ থেকে পার্কে তারকাঁটার বেড়া, একটি গেট, কয়েকটি বসার বেঞ্চ ও কিছু সংখ্যক গাছ রোপনের পেছনে ব্যয় করা হয়েছে। তার মধ্যে ছাতা নির্মাণের কাজ এখনও বাকি রয়েছে।
তখনকার ইউপি সদস্য ও প্রকল্প সভাপতি ছিলেন ফজলুর করিম। তার কাছে মোট ব্যয় ও কাজের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বরাদ্দ থেকে এসব কাজ করা হয়েছে বলে জানান। এ ছাড়া শিশুদের দোলনা এডিপি বরাদ্দ থেকে এসেছে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় কলেজ শিক্ষার্থী মাসুম রানা বলেন, ‘যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, সেভাবে কাজ হয়নি পার্কের। কিছু ফুলগাছ লাগানো হয়েছিল, সেগুলো যত্নের অভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে পার্কটি নেশাখোরদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এটি দ্রুত সংস্কার করে সুন্দর করে গড়ে তোলা দরকার।’
এরই মাঝে দুই জন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বদলি হয়েছেন। বর্তমানে যিনি দায়িত্বে আছেন তিনি নতুন। তিনি সব হিসাব বুঝে নিয়ে পার্কটি সুসজ্জিত করে তুলতে পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন প্রত্যাশা উপজেলাবাসীর।
মাদ্রাসা শিক্ষার্থী মোহম্মদ সাইফুল্লাহ্ বলেন, ‘পার্কটি যখন কাজ শুরু হয় তখন এই ভেবে আমাদের খুব গর্ব হচ্ছিল যে, হরিপুর সীমান্তবর্তী একটি উপজেলায় শিশুদের বিনোদনের জন্য পার্কের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কিন্তু বর্তমানে এটি উল্টো শিশুদের বিচরণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা হয়ে উঠেছে। বখাটেদের উৎপাত, মাদক সেবন, ইভটিজিং সবই চলে এখানে।’
পার্কে শিশু সন্তান নিয়ে বেড়াতে আসা অভিভাবক জামাল ইকবাল বলেন, ‘শিশুদের খেলার একটি মাত্র স্লিপার। মরিচা পড়ে গেছে, নিচের অংশে ফেটে গেছে। তার মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে শিশুরা উঠানামা করছে। দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ভেতরে একটি পুকুর আছে, যেটিতে বেড়া নেই, খেলনা সরঞ্জাম একটি কে বা কারা খুলে নিয়ে গেছে। সব মিলিয়ে এখানে এটির কোনো তত্ত্বাবধান নেই।একবার কেউ এখানে এলে পরের বার আসার ইচ্ছা পোষণ করবে না।’
বেলি আক্তার নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘দিনেদুপুরেও পার্কের ভেতরে আসা যায় না। স্থানীয় ও বহিরাগত ছেলেরা আড্ডা দেয়, নেশা করে ও মেয়েদের উত্যক্ত করে। হরিপুর উপজেলায় বিনোদনের কোনো জায়গা নেই। উপজেলা প্রশাসন পার্কটি সুন্দর করে সাজালে এবং সেইরকমভাবে দেখভাল করলে নিশ্চয় সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হবে। শিশুসহ সব বয়সী মানুষদের বিনোদনের জায়গা হবে পার্কটি।’
স্থানীয় বাসিন্দা জেসমিন রহমান বলেন, ‘পার্কটি প্রায় আট বিঘা জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। সীমানা প্রাচীর দিয়ে ফুটপাত করে দিলে অবসরে গ্রামের নারীরাও হাঁটাহাঁটি করতে আগ্রহ পাবে। শিশুদের জন্য খেলার সরঞ্জাম পর্যাপ্ত থাকলে মায়েরা তাদের সন্তানদের পার্কে আনতে আগ্রহী হবে।’
হরিপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বহ্নি শিখা আশা জানান, মাদক নির্মূলে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট করা হচ্ছে। শিশু পার্কের ভিতরেও মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছে।
পার্ক সংস্কারের বিষয়ে ইউএনও বলেন, ‘এলজিএসপি ও এডিপির বরাদ্দ থেকে পার্ক উন্নয়নের কাজ করা হয়। পার্কটি অনেক বড়, তাই আর্থিক বরাদ্দ সংকটের কারণে খুব বেশি কাজ করা হয়নি। শিঘ্রই সামনে বরাদ্দ থেকে পার্ক সংস্কারের কাজ করা হবে। সীমানা প্রাচীর দেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:ঈদযাত্রায় মানুষের ভোগান্তি ও গলার কাঁটা ছিল উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়ক, কিন্তু এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তির করতে মহাসড়কে পুরোদমে চলছে চার লেন প্রকল্পের কাজ।
সড়কে গাড়ির চাপ সামাল দিতে ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম পাড় থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত চার লেন চালু করা হয়েছে। ঘরমুখো মানুষের যাতায়াতের স্বস্তি ফেরাতে দ্রুতই কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন যাত্রী ও চালকেরা।
সংশ্লিষ্টরাও ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে ওই সব স্থানে রাত-দিন কাজ করছে।
তারা জানান, বছরের দুইটি ঈদের সময় বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থেকে হাটিকুমরুল গোলচত্বর পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার মহাসড়ক পারাপারে যাত্রী ও চালকদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হতো। প্রতিদিন উত্তরের ২২ জেলার প্রায় ২০ থেকে ২২ হাজার যানবাহন চলাচল করলেও ঈদযাত্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার ছাড়িয়ে যায়। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট, কিন্তু এবার সে চিত্র হবে অন্যরকম।
সাসেক-২ প্রকল্পের সুফল পাবে এ অঞ্চলের মানুষ। বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড় থেকে বগুড়ার মির্জাপুর পর্যন্ত দুই লেনের মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প চলমান রয়েছে। এ প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮০৫ কোটি টাকা।
চালক ও যাত্রীরা জানান, ঢাকা-বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে রাস্তা উন্নীতকরণ ও ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ অধিকাংশ জায়গায় শেষ হলেও হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় আন্তর্জাতিক মানের ইন্টারচেঞ্জ নির্মাণকাজের অনেক জায়গায় চার লেনের কাজ চলমান রয়েছে। এর ফলে কিছু কিছু জায়গায় রাস্তা সরু হয়ে গেছে।
এসআই এন্টারপ্রাইজ বাসের চালক হাফিজুর রহমান বাবু বলেন, বিগত দিনের চেয়ে এ বছর মহাসড়কের অবস্থা অনেক ভালো। বগুড়া পর্যন্ত চার লেনের কাজ শেষের দিকে। কিন্তু এখনও অনেক জায়গায় খানাখন্দ রয়েছে। ঈদের আগে মেরামত করা হলে যানজট হবে না।
শ্যামলী পরিবহনের চালক জাহিদুল ইসলাম বলেন, বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের ভূঁইয়াগাতী থেকে ঘুড়কা বেলতলা পর্যন্ত ঈদযাত্রায় সমস্যা হতে পারে। দ্রুত এ স্থান সংস্কার ও মহাসড়কে পুলিশ মোতায়েন থাকলে যানজট থাকবে না।
সাউথ এশিয়ান সাব-রিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক-২) প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ঈদযাত্রায় ঘরে ফেরা মানুষের যাতায়াতে যেন বিঘ্ন না ঘটে, এ জন্য হাটিকুমরুল মোড়ে এক মাস আগেই কংক্রিটের রাস্তা মেরামত করে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ চারটি লেনের মেরামত কাজ শুরু করেছে।
তিনি বলেন, বিশেষ করে কড্ডার মোড় ও নলকার মোড়ে প্রতি বছর যানজট বেশি দেখা গেলেও, এবার এ জায়গাগুলোতে আন্ডারপাস খুলে দেয়ায় দূরপাল্লার গাড়িগুলো ওপর দিয়ে চলে যাবে। আর অন্য গাড়িগুলো আন্ডারপাসের নিচ দিয়ে চলাচল করলে আশা করা যাচ্ছে, এ বছর যানজট হবে না। এবারের ঈদযাত্রা হবে অনেকটা স্বস্তিদায়ক।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বলেন, এ বছর মহাসড়কের অবস্থা খুবই ভালো। ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করে সব তথ্য সড়ক বিভাগের কর্তৃপক্ষকে দেয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ সেগুলো ৩১ মার্চের মধ্যে সংস্কার করে দেয়ার কথা দিয়েছেন।
তিনি জানান, ঈদযাত্রায় মানুষের নিরাপদে ঘরে ফেরা ও নিশ্চিন্তে যাতায়াতে মহাসড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৭৫০ জন পুলিশ মোতায়েন করা হবে। মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ২৪ ঘণ্টা পুলিশ থাকবে, সেই সঙ্গে বেশ কয়েকটি মোবাইল টিম থাকবে।
আরও পড়ুন:নীলফামারী সদরে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সদরের সোনারায় ইউনিয়নের আরাজি কুখাপাড়া বাবুরহাট গ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার রাতে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় শোভা রাণী রায় নামের ওই নারীর স্বামী দীপু রায়কে পুলিশ আটক করেছে।
প্রাণ হারানো শোভা রানী রায় সদর উপজেলার কচুকাটা ইউনিয়নের মহববত বাজিতপাড়া এলাকার হরিপদ রায়ের মেয়ে। তার স্বামী দীপুর বাড়ি দিনাজপুরের চিরির বন্দরের ফেরসাডাঙ্গা এলাকায়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, পাঁচ বছর আগে শোভার স্বামীর মৃত্যু হয়। শোভা ও দীপু উভয়েই নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে চাকরি করতেন। ইপিজেডে চাকরির সুবাদে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
পুলিশ আরও জানায়, দীপু রায় তার প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে গত ৪ মার্চ শোভা রায়কে বিয়ে করেন। ঘটনার আগে নীলফামারী সদরের নারায়ণ মাস্টারের ভাড়া বাসায় প্রথম স্ত্রী নমিতা রাণী রায় দীপুর খোঁজ নিতে এলে প্রথম বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হন শোভা। এর পর থেকে এ নিয়ে দীপুর সঙ্গে তার বিবাদ সৃষ্টি হয়।
নীলফামারী সদর থানার ওসি তানভীরুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে দীপু রায় বাসায় এসে তার দ্বিতীয় স্ত্রী শোভাকে ডাকাডাকি করেও সাড়া পাননি। তখন পাশের জানালা দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় শোভাকে দেখতে পান। পরে অন্য ভাড়াটিয়ারা দীপুকে ধরে পুলিশে খবর দিলে বাহিনীর সদস্যরা এ ব্যক্তিকে আটকের পাশাপাশি মরদেহটি উদ্ধার করেন।
ওসি আরও জানান, দীপুর প্রথম বিয়ের বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে শোভা আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে স্বামী দীপুকে আটক করা হয়।
আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে শোভার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশর এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বর্তমান কমিটির উপজেলা ছাত্রলীগের এবং ছাত্রলীগের একাংশের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
পৌরসভার হলরুমে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সংবাদ সম্মেলন উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্যরা।
এর আগে গত বুধবার সন্ধ্যায় সোনাইমুড়ী বাজারে রাজমহল রেস্তোরায় দেলোয়ার হোসেন সুজন ও শ্যামল উদ্দিনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একাংশ উপজেলা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অছাত্র, চাঁদাবাজি, দখলবাজ, অছাত্র, বিভিন্ন মামলার আসামি, টেন্ডারবাজি, নানা বিষয়ে ছাত্রলীগের নেতা পরিচয়দানকারী বিবাহিতসহ নানা অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন।
এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে বর্তমান কমিটির উপজেলা ছাত্রলীগ নানা অভিযোগ ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার রাতে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফ হোসেন বলেন, ‘সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের গত বছরের ১৫ মে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। চাঁদাবাজি মামলার আসামি, পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বিএনপি জামাতের লোক, সরকারি জায়গা দখলকারী, অটোরিকশার চাঁদাবাজরা এখন ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিচ্ছে। গত বুধবার ছাত্রলীগের কিছু নেতা পরিচয়দানকারী সংবাদ সম্মেলন করেছে।’
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আরিফ আরও বলেন, ‘এ সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নামে তারা বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা, কাল্পনিক তথ্য উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে বিভিন্ন অভিযোগ উপস্থাপন করেছে। এ ধরনের ভিত্তিহীন তথ্য পরিবেশন করে তারা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছে। বুধবার তাদের করা সম্মেলনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল মাহমুদ বলেন, ‘ছাত্রলীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া সংগঠন। এ সংগঠনের বিরুদ্ধে অপকর্মের অভিযোগ ওঠা সুখকর নয়। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ভিত্তিহীন।’
আরও পড়ুন:ঝালকাঠি পৌর এলাকার পুরাতন কলেজ ও পৌরসভা খেয়াঘাটের উন্মুক্ত ইজারায় উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ জারি হয়েছে।
রিটকারী আইনজীবী তরিকুল ইসলাম শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
উন্মুক্ত ইজারা স্থগিত করায় মাঝিমাল্লা সম্প্রদায়ের ইজারা পেতে আর কোনো বাধা থাকল না।
মাঝিমাল্লা বহুমুখী সমবায় সমিতি সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর শতকরা ১০ ভাগ মূল্য বৃদ্ধিতে এ সমিতি ইজারা নিয়ে ঘাট পরিচালনা করে আসছে। এ বছর উন্মুক্ত ইজারা আহ্বান করায় উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন করে মাঝিমাল্লা বহুমুখী সমবায় সমিতি। পিটিশনের প্রেক্ষিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে।
উচ্চ আদালতের আদেশের অ্যাডভোকেট প্রত্যয়ন কপিসহ ইজারাদার কর্তৃপক্ষ ঝালকাঠি পৌর মেয়র বরাবরে আবেদন করেন মাঝিমাল্লা সমিতির নেতারা। পরে নির্বাহী প্রকৌশলীকে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার।
রিটকারী আইনজীবী তরিকুল ইসলাম জানান, ঝালকাঠির খেয়াঘাট সমূহের জন্য ঝালকাঠি পৌরসভা একটি উন্মুক্ত ইজারা আহ্বান করেছে। নীতিমালা অনুযায়ী মাঝিমাল্লা (পাটনি) সম্প্রদায়ের পাওয়ার কথা। উন্মুক্ত ইজারাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করা হয়। পিটিশনের শুনানি শেষে আদালত উন্মুক্ত ইজারা স্থগিত করেছে।
তিনি আরও জানান, এখন থেকে প্রথমে মাঝিমাল্লা সমিতি ইজারা নেবে। যদি কোনো কারণে সমিতির পক্ষ থেকে ইজারা নিতে অস্বীকার বা অপারগতা প্রকাশ করে তাহলে উন্মুক্ত ইজারা আহ্বান করতে পারবে। উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের মাধ্যমে মাঝিমাল্লা সম্প্রদায় তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পেয়েছে।
পৌর সচিব শাহিন সুলতানা বলেন, ‘আমরা শুধু আবেদিত দরপত্রসমূহ উন্মুক্ত করে প্রকাশ করছি। বাছাই করে গুছিয়ে রাখছি। আমরা এর বেশি কিছুই করতে পারব না।’
নির্বাহী প্রকৌশলী অলোক সমদ্দার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঝালকাঠির পুরাতন কলেজ ও পৌর খেয়াঘাটের ইজারা বিষয়ে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা আছে। এ মুহূর্তে আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছি না। দরপত্র আহ্বানের পরে টেক কমিটি আছে তারাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।’
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী অলোক সমদ্দার, পৌর সচিব শাহিন সুলতানাসহ পৌর কর্মচারী ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ দুপুরে এসব ঘাট ইজারার দরপত্র বাক্স উন্মুক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন:নাটোরের নলডাঙ্গায় এক স্কুলছাত্রকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
উপজেলার পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো হিমেল হোসেন (১৫) উপজেলার পিপরুল গ্রামের ফারুক সরদারের ছেলে। সে পাটুল-হাপানিয়া স্কুল ও কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
নলডাঙ্গা থানার ওসি মো. মনোয়ারুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে হিমেলকে তার সহপাঠী ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে নেয়। এরপর থেকে হিমেলের মোবাইল ফোনটি বন্ধ পান তার স্বজনরা। পরে রাত হলেও বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন এবং বিষয়টি পুলিশকে জানান।
ওসি বলেন, পুলিশ হিমেলকে উদ্ধারে অভিযানে নামে। অভিযানে হিমেলের বন্ধু পার্থকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পার্থের দেয়া তথ্য অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনে রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় হিমেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হিমেলের মাথায় আঘাত, গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় মেহেদি, শিমুল ও সুজন নামে আরও তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এ বিষয়ে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী সীমান্তে পায়ুপথে স্বর্ণের বার পাচারের ঘটনায় একজনকে আটক করেছে খুলনা-২১ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা।
মসজিদবাড়ী এলাকার বিজিবি চেকপোস্টের সামনে থেকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে আটক করা হয়।
আটক হওয়া মনোর উদ্দিনের বাড়ি বেনাপোল পোর্ট থানার পুটখালী গ্রামে।
খুলনা-২১ বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘খুলনা-২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পুটখালী ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে সীমান্তের মেইন পিলার ১৭ এর ৭ এস এর ১৬৮ আর পিলার হতে ৫০০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে মসজিদবাড়ী বিজিবি চেকপোস্ট এলাকায় গোপন অবস্থান করে।
‘স্বর্ণ পাচারকারী মনোর উদ্দিন একটি ইজিবাইকে করে স্বর্ণের চালানটি ভারতে পাচারের উদ্দেশে সীমান্তের দিকে যাচ্ছিল। তখন মনোর উদ্দিনকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রথমে তার শরীর তল্লাশি করে কোনো স্বর্ণ পাওয়া যায়নি। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে স্বীকার করে তার পায়ুপথে স্বর্ণের বারগুলো আছে।
‘এ সময় তাকে আটক করে বেনাপোল বাজারে রজনী ক্লিনিকে শরীর স্ক্যানিং করে পায়ুপথে ছয় পিস স্বর্ণের বারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তারপর তার কাছ থেকে স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়, যার ওজন ৭০০ গ্রাম।’
খুলনা-২১ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খুরশিদ আনোয়ার স্বর্ণসহ এক পাচারকারী আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, উদ্ধারকৃত স্বর্ণের চালানটি যশোর ট্রেজারিতে আছে। আটক ব্যক্তিকে বেনাপোল পোর্ট থানায় পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:আগামী জুনের মধ্যে ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করবে সরকার। সে জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রুমানা আলী।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে এ কথা জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী বলেন, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কেউ যেন প্রতারিত না হয় কিংবা কেউ যেন প্রতারণা না করতে পারে সে জন্য সরকার সব ব্যবস্থা নেবে। আগামী জুনের মধ্যেই ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রে পরিদর্শন করেছি। সেখানে খুব ভালোভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে, তবে এ বছর নিয়োগ পরীক্ষায় প্রার্থীর সংখ্যা কিছুটা কম।’
এ সময় প্রতিমন্ত্রী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ও শেষ ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় আজ। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে লিখিত পরীক্ষা।
এ ধাপে কুমিল্লা জেলায় ৩২ হাজার ১৯৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে নারী ১৪ হাজার ৭৬৭ জন এবং পুরুষ ১৭ হাজার ৪৩২ জন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য