আয়কর রিটার্ন দাখিলসহ করদাতাদের সব সেবা দিতে ১ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে করসেবা মাস, যা চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।
ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের ৩১টি কর অঞ্চলের ৬৪৯টি সার্কেলে মাসব্যাপী অফিস চলাকালীন নিরবচ্ছিন্নভাবে পাওয়া যাবে এই করসেবা।
এনবিআর পরিচালক (জনসংযোগ) সৈয়দ এ মুমেন নিউজবাংলাকে জানান, আয়কর মেলার মতো সব সেবা পাওয়া যাবে এই মাসে।
আয়কর সম্পর্কে ভীতি দূর, কর সচেতনতা বৃদ্ধি ও আরও নিবিড় করসেবা দিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর বিভাগ ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো নভেম্বর মাসকে করসেবা মাস ঘোষণা করে।
২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর কর মেলা আয়োজন করে আসছে এনবিআর। এরই মধ্যে এ কর মেলা সাধারণ করদাতাদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। তবে গত বছর থেকে করোনা মহামারির কারণে মেলা হচ্ছে না।
যেসব সুবিধা
# করদাতারা নির্ধারিত কর অঞ্চলে তাদের ২০২২-২০২৩ করবর্ষের স্ব স্ব আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।
# প্রতিটি কর অঞ্চলের ওয়েবসাইটে আয়কর সংক্রান্ত বিভিন্ন ফরম, পরিপত্র, রিটার্ন পূরণের নির্দেশিকা, ভিডিও টিউটোরিয়ালসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সন্নিবেশিত থাকবে।
# দেশব্যাপী ৩১টি কর অঞ্চলের ৬৪৯টি সার্কেলে ৩০ নভেম্বর ২০২২ পর্যন্ত অফিস সময়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে আয়কর রিটার্ন গ্রহণ।
সচিবালয় ও অফিসার্স ক্লাকে রিটার্ন গ্রহণ বুথ ও হেল্প ডেস্ক স্থাপনের মাধ্যমে নভেম্বর মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ এবং পরিকল্পনা কমিশনে নভেম্বর মাসের ২০ থেকে ২৪ নভেম্বর ৫ দিন কর তথ্য সেবা দেয়া হবে।
সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য ঢাকা সেনানিবাসের সেনা মালঞ্চে আগামী ৯ ও ১০ নভেম্বর দুই দিন করদাতাদের রিটার্ন গ্রহণ ও কর তথ্য সেবা দেয়া হবে।
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল সিস্টেমটি চালু রয়েছে। ইতোমধ্যে করদাতারা ওই সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন করাসহ রিটার্ন তৈরি এবং রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন। হট লাইন নম্বর ০৯৬১২৭১৭১৭১ এর মাধ্যমে ই রিটার্ন সম্পর্কে পরামর্শ গ্রহণ করে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
রেজিস্ট্রেশন বুথে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান সাপেক্ষে নতুন করদাতারা রেজিস্ট্রেশন ও বর্তমান করদাতারা রি-রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।
ই-টিডিএস সিস্টেমের মাধ্যমে সব কর অঞ্চলের অধিক্ষেত্রাধীন উৎসে কর কর্তনকারী কর্তৃপক্ষে বাস্তবায়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
করদাতাদের আয়কর রিটার্ন, টিআইএন আবেদন এবং চালান ফরম দেয়া হবে। ই-পেমেন্টের মাধ্যমে করদাতারা অনলাইনে আয়কর পরিশোধ করতে পারবেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা আহ্বায়ক কমিটির ১ নং সদস্য মানিকগঞ্জ-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী এস.এ জিন্নাহ কবির বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কর্তৃক জাতির সামনে ঘোষিত রাস্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফায় বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেশ কীভাবে চলবে, শিক্ষিত যুবকদের চাকরি ব্যবস্থা করা হবে, চাকরী যতদিন না হবে তাদের বেকার ভাতা দেওয়া হবে। ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে কৃষকদের উৎপাদিত ফসল সরকার ক্রয় করবে। ৩১ দফায় কৃষকদের কৃষি উপকরণ, কৃষক-শ্রমিক গ্রাম-গঞ্জে খেটে খাওয়া দিনমুজুর, মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের কথা রয়েছে। শনিবার রাতে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলা কলিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের বিএনপির উদ্যোগে তালুকনগক ডিগ্রী কলেজ মাঠে তারেক রহমানের ৩১ দফার প্রচারণা সভা ও লিফলেট বিতরণে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, আগামী নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট দিতে হবে। আমি নির্বাচিত হলে রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দিরের উন্নয়ন ও কৃষক শ্রমিক, দু:স্থ জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করব।
তালুকনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মালেকের সভাপতিত্বে ও কলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক আব্দুস সামাদ এবং উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার রবিউজ্জল রবির সঞ্চলানায় আরো বক্তব্য রাখেন, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কাজী মোস্তাক হোসেন দিপু, উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, জেলা বিএনপি সাবেক কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি লোকমান হোসেনসহ নেতারা।
দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় পর চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার আমুচিয়া এলাকার রাবার বাগানে আবারো শুরু হয়েছে রাবারের রস সংগ্রহ। অক্টোবরের শুরু থেকে স্থানীয় কয়েকজন উদ্যোক্তা বাগানটির গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
উদ্যোক্তা অলক বড়ুয়া জানান, আমুচিয়ার বাগানটিতে প্রায় ১০ হাজার রাবার গাছ রয়েছে। প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে শ্রমিকরা গাছের নির্দিষ্ট অংশের বাকল কেটে দেন। সেখান থেকে গড়িয়ে পড়া দুধের মতো সাদা নির্যাস পাত্রে জমা হয়। সকাল ৯টার মধ্যেই এসব পাত্র থেকে রস সংগ্রহ করে প্লাস্টিকের ড্রামে সংরক্ষণ করা হয়।
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন গড়ে ২৫০ কেজি রাবার সংগ্রহ হচ্ছে। প্রতি কেজি রাবারের দাম ২৭০ থেকে ২৭৫ টাকা। এসব রাবার দেশের বিভিন্ন কোম্পানিতে সরবরাহ করা হয়, পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি হয়। অলক বড়ুয়া আরো জানান, স্থানীয় বাসিন্দা কালু বড়ুয়া ও গিয়াস উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে প্যারাগন কোম্পানির কাছ থেকে ৬ লাখ টাকায় দুই বছরের জন্য বাগানটি ইজারা নিয়েছেন। বর্তমানে সেখানে ১৫ জন শ্রমিক মাসিক ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা বেতনে কাজ করছেন।
জানা গেছে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘কানুনগোভ্যালি’ প্রায় ৭০ একর পাহাড়ি জায়গাজুড়ে এই রাবার বাগান গড়ে তোলে। দীর্ঘদিন উৎপাদন চললেও লোকসানের কারণে প্রতিষ্ঠানটি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে প্যারাগন কোম্পানি বাগানটি ক্রয় করে সেখানে ফলের বাগান তৈরি করে।
অলক বড়ুয়ার হিসাব অনুযায়ী, অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়টাতে রাবারের রস সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। প্রতিদিন ২৫০ কেজি হারে মাসে প্রায় সাড়ে সাত হাজার কেজি রস সংগ্রহ সম্ভব, যার বাজারমূল্য প্রায় ২০ লাখ টাকা। শ্রমিকদের বেতন ও অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে মাসে প্রায় ১৮ লাখ টাকা লাভের সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিক উপলক্ষে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জনদুর্ভোগ কমাতে চলাচলের অনুপযোগী খানাখন্দে ভরা রাস্তায় সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে ফরিদপুর জেলা যুবদলের নেতারা। গত শনিবার ও রোববার শ্রমিক এনে দিনভর এ বেহাল রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু করা হয়। ফরিদপুর শহরের চর টেপাখোলা বেরিবাঁধ থেকে ধলার মোড় পর্যন্ত পাঁকা রাস্তা খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে পরিবহন ও মানুষ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল এবং দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় ওই রাস্তায় পানি জমে থাকত। শুকনো মৌসুমে মানুষ যাতায়াতে ধুলাবালিতে কষ্ট পোহাতে হতো।
এ অবস্থায় ফরিদপুর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের নির্দেশনায় এবং ফরিদপুর জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান সাগর ও প্রচার সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান সেন্টুর অর্থায়নে ওই রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেন তারা।
এ সময় স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীরা জানান, রাস্তাটি বড় বড় গর্তে ভরা থাকায় চলাচল ছিল কষ্টসাধ্য। এখন সংস্কার হওয়ায় মানুষের যাতায়াতের দুর্ভোগ লাঘব হয়েছে।
যুবদল নেতা সিদ্দিকুর রহমান সেন্টু বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী ছিল। শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের কষ্ট দেখে আমরা যুবদলের নেতারা এই উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা সবসময় মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে চাই। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় এ ধরনের জনকল্যাণমূলক কাজ অব্যাহত থাকবে।
উত্তর চট্টগ্রামের আতঙ্কের জনপদ হিসাবে খ্যাত রাউজান উপজেলার ধারাবাহিক রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও ব্যবসায়ী হত্যার ঘটনার সর্বশেষ শিকার বিএনপির কর্মী ও ব্যবসায়ী আবদুল হাকিম চৌধুরী। স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাউজানে নেতাকেন্দ্রিক রাজনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের দ্বন্দ্ব থেকেও এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। তবে রাউজান বিএনপির দুই ‘শিরোমণি’ হিসেবে পরিচিত গোলাম আকবর খন্দকার ও গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী নেতৃত্বাধীন উভয় গ্রুপই এ হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁদাবাজি, মাটি-বালুর ব্যবসা, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, আধিপত্য বিস্তারসহ নানা কারণে গত বছরের ২৮ আগস্ট ২০২৪ থেকে সর্বশেষ চলতি বছরের ৭ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১২টি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড। বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ হয় শতাধিকবার। এসব ঘটনায় ৩৫০ এর বেশি মানুষ গুলিবিদ্ধ হন। মামলা করা হয় অর্ধশতাধিক। তবে আসামি গ্রেপ্তারের সংখ্যা খুবই কম বলে জানিয়েছেন মামলার বাদীরা। হত্যাকাণ্ডগুলোতে আগ্নেয়াস্ত্র, ছুরি ব্যবহৃত হয়েছে। কখনো পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে রাউজান থানার পুলিশ। বেপরোয়া সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সামনে চট্টগ্রামের জেলা পুলিশও যেন অসহায়। তবে সর্বশেষ হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়েছেন হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মো. তারেক আজিজ। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিবদমান একটি পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন কাদের চৌধুরী। আরেকপক্ষে রয়েছেন উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার। স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্যমতে, গত বছরের ৫ আগস্টের পর কিছু বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ ও মারামারি হলেও হত্যাকাণ্ড শুরু হয় ওই বছরের ২৮ আগস্ট থেকে। ওই দিন পিটিয়ে হত্যা করা হয় আব্দুল মান্নান নামের একজনকে। ১ সেপ্টেম্বর মো. ইউসুফ মিয়া এবং ২৯ অক্টোবর আজম খান নামের দুজনের লাশ পাওয়া যায়। ১১ নভেম্বর মেলে আবু তাহেরের লাশ। চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম। ১৯ ফেব্রুয়ারি মুহাম্মদ হাসানকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ১৫ মার্চ পিটুনি ও ছুরিকাঘাতে নিহত হন কমরউদ্দিন জিতু। ২১ মার্চ পিটিয়ে হত্যা করা হয় মো. রুবেলকে। ৪ এপ্রিল মা ও দুই ভাইয়ের হাতে খুন হন প্রকৌশলী নূর আলম বকুল। ১৭ এপ্রিল মো. জাফর নামের একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ১৯ এপ্রিল রাতে গুলি করে এবং চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় আবদুল্লাহ মানিককে। ২২ এপ্রিল দোকানে ডেকে এনে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয় ইব্রাহিমকে। গত ৬ জুলাই স্ত্রী-কন্যার সামনে মো. সেলিম উদ্দিনকে গুলি করে হত্যা করেছে বোরকা পরা অস্ত্রধারীরা। সর্বশেষ চট্টগ্রাম হাটহাজারী মডেল থানায় হাজির হয়ে নিহত আবদুল হাকিম চৌধুরীর স্ত্রী তাসফিয়া আলম গত ৯ অক্টোবর রাতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের একটি মামলা দায়ের করেন।
হাটহাজারী মডেল থানার ওসি মনজুর কাদির ভূঁইয়া মামলার রেকর্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, রাউজানে হত্যাকাণ্ড ঠেকানো যাচ্ছে না। কারণ অনেক হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে। এছাড়া পারিবারিক সমস্যায় হত্যাগুলো তাৎক্ষণিক হচ্ছে। অন্যান্য অপরাধ প্রতিরোধ করা যতটা সহজ, হত্যাকাণ্ড প্রতিরোধ ততটা সহজ নয়। তবে সব হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারের কঠোর অভিযান চলমান আছে।
নওগাঁয় আলুর দাম কম থাকায় হিমাগার থেকে কৃষক ও ব্যবসায়িরা কম পরিমাণ আলু বের করছে। লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা। মৌসুমের শুরুতে খোলা বাজারে ৬০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা মন বিক্রি হলেও হিমাগারে ৭ মাস সংরক্ষণের পর একই দাম বিক্রি হচ্ছে। এতে প্রতি বস্তায় (৬০কেজি) অন্তত ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা লোকসান হচ্ছে। সরকার ২২ টাকা দাম নির্ধারণ করলেও হিমাগারে বিক্রি হচ্ছে ১২-১৬ টাকা কেজি। সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় এ বছর ২৫ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। যা থেকে উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ টন। জেলায় ৭টি হিমাগারে ধারণক্ষমতা ৪৬ হাজার ৫৩০ টন। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত আলু পাশের জেলাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।
ভালো দাম পাওয়ার আশায় এ বছর জেলার আলু চাষিরা আশায় বুক বেঁধে চাষাবাদ করেছিল। যেখানে উন্নত জাতের আলু ডায়মন্ড, স্টিক ও কাটিনাল চাষ করা হয়েছিল। ভালো দাম পাওয়ার আশায় কৃষক ও ব্যবসায়িরা মার্চ মাসে হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করেছিল। যেখানে খরচ পড়েছিল আলুর জন্য বস্তা কেনা, হিমাগার পর্যন্ত বস্তা পরিবহন ও হিমাগার ভাড়াসহ অন্তত ৫৫০ টাকা। কিন্তু সংরক্ষণের ৭ মাস পরও ৬০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা মন বিক্রি হচ্ছে।
বদলগাছী উপজেলার বেগুন জোয়ার গ্রামের কৃষক আইনুল হক। দুই বিঘা জমিতে দেশি জাতের আলু রোপণে খরচ পড়েছিল ৩৫ হাজার টাকা। যেখানে আলু পেয়েছিলেন ১২০ মন। মৌসুমের শুরুতে ৬০০ টাকা হিসেবে ১০০ মন বিক্রি করে অবশিষ্ট আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করেছিলেন। যেখানে প্রতিবস্তা আলু হিমাগারে রাখতে খরচ পড়েছে অন্তত ৫৫০ টাকা। ৭মাস সংরক্ষণের পর আলুর দাম বলছে ৬০০ টাকা। এতে তার লোকসান বস্তাপ্রতি ৬০০ টাকা।
কৃষক আইনুল হক বলেন, প্রতি বিঘাতে আলু রোপণে বীজ আলুর প্রয়োজন হয় প্রায় ১৮০ কেজি। বীজ আলু বাড়ির হওয়ার আলু চাষবাদে খরচ তুলনামূলক কম পড়েছে। তবে যারা বীজ আলু কিনে রোপণ করেছেন তাদের ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা বস্তা (৬০ কেজি) কিনতে হয়েছে এবং খরচ বেশি পড়েছে। এ বছর আলুর উৎপাদন বেশি হওয়ায় দাম কমেছে। দাম কম হওয়ায় কৃষকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। এতে আগামীতে অনেকে আলু চাষ কমিয়ে দিবে এবং বেশি দামে কিনে খেতে হবে। বাজার সামঞ্জস্য থাকলে সবার জন্য সুবিধা হবে।
একই অবস্থা অন্য কৃষক ও ব্যবসায়ীদের। বাজারে আলুর দাম কম থাকায় লোকসানের শঙ্কায় অনেকে হিমাগার থেকে আলু বের করছেন না। দাম না পাওয়ায় কৃষকদের আলু চাষের আগ্রহ কমে যাবে এবং আগামীতে সরবরাহ কমে আসায় বাজারও উর্ধ্বগতি হবে। তবে বীজ আলু নিয়ে অনেকে আগাম জাতের আলু চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বদলগাছী উপজেলার পারসোমবাড়ী গ্রামের আলু ব্যবসায়ী শাহজাহান বলেন, পাটনাই জাতের ৪০০ বস্তা আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করেছি। প্রতি বস্তায় আলুর দাম ১ হাজার ২০০ টাকার এবং পরিবহন, বস্তা ও হিমাগার খরচ ৪৫০-৫০০ টাকা পড়েছে। প্রতি কেজি আলুর বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা। প্রতি বস্তায় লোকসান হবে ৭০০-৭৫০ টাকা পর্যন্ত। আমার যে পুঁজি ছিল তা শেষ হওয়ার উপক্রম। এতে সাংসারিকভাবে অর্থনেতিক দিক দিয়েও ক্ষতিগ্রস্ত হতে হলো।
ব্যবসায়ী হামিদুর রহমান বলেন, দেশি আলু ৩২ টাকা কেজি এবং স্টিক আলু ২৭ টাকা কেজি কিনে হিমাগারে সংরক্ষণ করেছিলাম। এখন দেশি আলু ১৫ টাকা কেজি এবং স্টিক আলু ১০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে।
সদর উপজেলার সরাইল গ্রামের কৃষক রহিদুল দেওয়ান বলেন- ১ বিঘা জমিতে আলু চাল করেছিলাম। মৌসুমের শুরুতে ব্যবসায়ীরা ৮৫০ টাকা মন দাম বলেছিল। আলু বিক্রি না করে হিমাগারে ৮ বস্তা রেখেছিলাম। আগাম জাতের আলু রোপণ করার জন্য সবগুলো বের করেছি। ২ বস্তা বিক্রি করতে চাইলাম এখন ৬০০ টাকা বস্তা দাম বলছে। তাহলে হিমাগারে এতদিন সংরক্ষণ করে কি লাভ হলো। আমরা কৃষক লাভ বা লোকসান যায় হোক না কেন আবাদ করা ছাড়া তো জমি ফেলে রাখতে পারি না। ২২ টাকা আলুর দাম কার্যকরে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
নওগাঁ ইষ্টার্ণ প্রডিউস কোল্ড স্টোর লিমিটেড এর ম্যানেজার সেতু মৈত্র বলেন- হিমাগারের ধারণ ক্ষমতা ৭০ হাজার বস্তা। এর বিপরীতে ৭৫ হাজার ৬০০ বস্তা (৩ হাজার ৮১৩ টন) সংরক্ষণ করা হয়েছে। যেখানে বীজ আলু ২ হাজার ১৪১ টন এবং খাবারের আলু ৭৩ হাজার ৪৫৯ টন। এ পর্যন্ত প্রায় ৫৫ হাজার বস্তা এখনো মজুত আছে। চলতি (অক্টোবর) মাসে আলু বের হওয়ার সময়। বাজারে আলুর দাম কম থাকায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা আলু বের করছেন না। নভেম্বর মাস পর্যন্ত হিমাগার চালু রাখতে হবে। এতে একমাসেই প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকার বিদ্যুৎ বিল আসবে। তারপর বন্ধ হয়ে যাবে। এতে আলু নষ্ট হয়ে যাবে। নষ্ট ও পঁচা আলু নিজ খরচে হিমাগার থেকে অপসারণ করতে হবে। এতে প্রায় ১ কোটি টাকার ওপর লোকসান হবে।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোছা. হোমায়রা মন্ডল বলেন- চলতি বছর আলুর উৎপাদন বেশি হওয়ায় কৃষকরা ভাল দাম পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বাজারে দাম কম থাকায় হিমাগার থেকে আলু কম পরিমাণ বের হচ্ছে।
নওগাঁর জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুল আউয়াল বলেন, মৌসুমের শুরুতে আলু হিমাগারে রাখার সময় একবার সমস্যা হয়েছিল। সেসময় ভোক্তা অধিদপ্তরকে সাথে নিয়ে সমস্যা সমাধান করা হয়েছিল। একটি বিষয় অবগতি হয়েছি- হিমাগারে কৃষকদের স্বল্প মূল্যে আলু বিক্রি করতে বাধ্য করা হচ্ছে। যৌথ অভিযান পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে তার আগে ব্যবসায়িদের সিন্ডিকেট ভাঙতে কৃষক ও হিমাগার কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বসে আলোচনা করা হবে।
শেরপুর-১ (সদর) আসনের বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়নপ্রত্যাশী ড্যাবের কেন্দ্রীয় নেতী ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলোচিত নেত্রী সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা বলেছেন, আমি সংসদে যেতে পারলে শেরপুরের দেড় থেকে দুই লাখ বেকারের চাকরির ব্যবস্থা করব ইনশাআল্লাহ। তিনি আরও বলেন, আমাকে আপনারা জাতীয় সংসদে যাওয়ার ব্যবস্থা করলে নারীর ক্ষমতায়নসহ নারীরা যাতে শুধু ঘরে বসে না থাকে সে জন্য তাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, আমি সম্মানিত শিক্ষকদের দাবির প্রতি সমর্থন করি এবং একাত্মতা প্রকাশ করছি। তাদের চাকরি জাতীয়করণের জন্য আমি চেষ্টা করব।
ডা. প্রিয়াঙ্কা গত শনিবার সন্ধায় শহরের ৫নং ওয়ার্ডের খরমপুর মহল্লার ডা. সেকান্দর আলী কলেজ মাঠে জেলা বিএনপির আয়োজিত এক নারী সমাবেশে এসব কথা বলেন।
জেলা মহিলা দলের সভাপতি সুলতানা রাজিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ নারী সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম, সদস্য সচিব ও অধ্যক্ষ এবিএম মামুনুর রশিদ পলাশ, সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. হযরত আলী, সদস্য সচিব মো. সাইফুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সদস্য সচিব মো. জাফর আলী. বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম স্বপন, প্রভাষক শফিউল আলম চান, রেজাউল করিম রুমি, শ্রমিক দল নেতা মো. শওকত হোসেনসহ আরও অনেকে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, বিগত ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হলে তৎকালীন আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতির মাধ্যমে আমাকে পরাজিত করা হয়। তারপরেও এ আসনের সকল নারীরা আমার সাথে ছিলেন সে জন্য আমি এই নারীদের ছেড়ে কখনোই চলে যাব না। আমি আপনাদের ঋণের কথা কখনোই ভুলতে পারব না।
নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা নদীর টি-বাঁধে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের ইমারজেন্সি ওয়ার্ক দ্রুত সম্পন্ন করার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা। গত শনিবার সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড় সিংহেশ্বর গ্রামে তিস্তা নদীর এক নম্বর ওয়ার্ড টি হেডে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের ইমারজেন্সি ওয়ার্ক দ্রুত সম্পন্ন করার দাবিতে ঝুকিপূর্ণ টি-বাঁধে দ্বাড়িয়ে স্থানীয়রা ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা হবিবর রহমান, ছমির আলী, আব্দুল হাকিমসহ অনেকে অভিযোগ করে বলেন, জনস্বার্থে তিস্তা নদীর চর থেকে বালু উত্তোলন করে টি-বাঁধ ভাঙন প্রতিরোধে চলমান কাজ হঠাৎ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ কালীগঞ্জ বিওপির সুবেদার আনোয়ারুল হক বন্ধ করে দেন। অথচ একই এলাকায় বিজিবির নতুন ক্যাম্প নির্মাণ, এনজিও কর্তৃক ভিটে বাড়ি উঁচুকরণ, কবরস্থান উঁচুকরণসহ ব্যক্তিগত কাজে মেশিন দিয়ে দীর্ঘদিন বালু উত্তোলন করা হলেও বিজিবি তখন কিছুই বলেননি!
গত ৫ অক্টোবর উজানের ঢল ও ভারী বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় বন্যায় টি-বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই থেকে এই এলাকার মানুষজন আতঙ্কে নিদ্রাবিহিন জীবন-যাপন করছেন। ঝুকিপূর্ণ বাঁধটির কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা না হলে যেকোনো মুহূর্তে বাঁধটি আরও ভেঙে এলাকার শত শত বসতভিটা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তাই আমরা দ্রুত সময়ে টি-বাঁধটির অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আন্তরিক হস্তক্ষেপের জোড়ালো দাবি জানাচ্ছি। কাজটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স শাহাদাত হোসেন চৌধুরীর প্রতিনিধি সামিউল হাসান শিমুল বলেন, ২৫০ মিটার কাজের মধ্যে ৫০ মিটার কাজ হতে না হতেই বিজিবি কাজটি বন্ধ করে দেন। ১৭৫ থেকে ২৫০ কেজির বস্তাগুলো ভরাট করে স্থানান্তর করা গেলেও ১০ ফিট জিও-টিউব স্থানান্তর করা অসম্ভব। এগুলো কাজের স্থানেই ভরাট করতে হয়। সারাদেশে ইমারজেন্সি ওয়ার্কের কাজ এভাবেই হয়ে আসছে।
৫১-বিজিবির কালীগঞ্জ বিওপি ক্যাম্পের সুবেদার আনোয়ারুল হক বলেন, নদী থেকে বালু ও মাটি উত্তোলন করার কোনো ধরনের নির্দেশনা না থাকায় কাজটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আপনারা ডিসি স্যার অথবা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে আসেন।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, বিজিবি মাটি কাটতে না দেওয়ায় কাজটি বন্ধ রয়েছে। আমাদের যে জিও-টিউবব্যাগ সেগুলো মেশিন দিয়ে কাজের স্থানেই ভরাট করতে হয়। পদ্মা-মেঘনাসহ সারাদেশে নদীভাঙনে ইমারজেন্সি কাজগুলো এভাবেই হয়ে আসছে। মাত্র তিন দিন সময় পেলেই আমাদের কাজটি সম্পন্ন করা সম্ভব। বাঁধটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করা না হলে যেকোনো সময় পরিস্থিতি এমন ভয়ংকর হতে পারে যে, ডিমলা সদরেও পানি চলে যেতে পারে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য