চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ থেকে আব্দুল কাদেরকে অপসারণ করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদের তহবিল ব্যবহারে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা এবং নৈতিক স্খলনের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নিয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।
এ অবস্থায় নাচোল উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জান্নাতুন নাঈম মুন্নিকে।
গত ১৯ অক্টোবর মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রাজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। তবে সেই প্রজ্ঞাপনের চিঠি রোববার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে পৌঁছায়।
প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনা অনুযায়ী, সোমবার সকালে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জান্নাতুন নাঈম মুন্নি।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ হারানো আব্দুল কাদের নাচোল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও নৈতিক স্খলনের অভিযোগে চেয়ারম্যান পদ হারানোর পর দলীয় নেতাকর্মীদের অনেকেই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি তুলেছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, ‘তিনি দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছেন। তার বিরুদ্ধে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া উঠিত।’
এ বিষয়ে শীঘ্রই উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা আলোচনায় বসবেন বলে জানান আবুল হোসেন।
সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিয়াউর রহমান বলেন, ‘আমরা আব্দুল কাদেরকে অপসারণ করার প্রজ্ঞাপনটা দেখেছি। এ বিষয়ে দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা কেন্দ্রের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তাদের পরামর্শেই তার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
অপসারণ হওয়া চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে জানা যায়, ২০২১ সালের নভেম্বরে তার সঙ্গে এক নারীর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এ ছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পে স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতি নিয়েও একাধিক অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
আরও পড়ুন:রমজান মাস ঘিরে ইফতার সামগ্রীর দাম যখন ঊর্ধ্বগতি, তখন নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য দ্বিতীয়বারের মতো ১০ টাকায় ইফতার সামগ্রী দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিক্রমপুর মানব সেবা ফাউন্ডেশন।
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার কামারখাড়া বাজারে শুক্রবার দুপুরে ‘১০ টাকায় ইফতার বাজার’ নামক এক ব্যতিক্রমী কর্মসূচি পালন করা হয়।
অস্থায়ী এই বাজার থেকে ১০ টাকার বিনিময়ে এক কেজি তেল, খেজুর, পেঁয়াজ, ছোলা, চিনি, চিড়া ও মুড়িসহ ইফতারে ৭টি পণ্য কিনে নেন নিম্ন আয়ের ২১০টি পরিবার। এমন আয়োজনে অসহায় নিম্ন আয়ের মানুষের মুখে তৃপ্তির হাসি ফোটে।
এর আগে, ১০ টাকায় গরুর মাংস ও ইফতার বাজার দিয়ে দেশব্যাপী আলোচনায় আসে এ সংগঠনটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, অস্থায়ী এই বাজারের ভিন্ন ভিন্ন স্টলে সাজিয়ে রাখা হয়েছে তেল, খেজুর, পেঁয়াজ, ছোলা, চিনি, চিড়া ও মুড়ি। অন্য সব বাজারের মতো নিম্ন আয়ের মানুষ পছন্দমতো পণ্য সংগ্রহ করছেন। তবে সেগুলোর দাম রাখা হচ্ছে মাত্র ১০ টাকা।
রাউৎভোগ এলাকার রোকসানা বেগম বলেন, ‘পাশের বাড়ির একজন ছোলা-মুড়ি দিছিল। পাঁচ রোজায় সব শেষ হয়ে গেছে। পরে আর কিনে খাইতে পারি নাই। এহন ১০ টাকা দিয়া কত কিছু কিনে নিলাম, যা দিয়া বাকি রমজানগুলো কাটিয়ে দিতে পারমু।’
দিঘীরপাড় গ্রামের নাছিমা বেগম বলেন, ‘বাজারে যেখানে ১ লিটার তেলের দাম ১৯০ টাকা; সেখানে ৭টি পণ্য মাত্র ১০ টাকায় পেয়েছি। এখানে এসে মনে হলো বাপ-দাদার আমলের অল্প টাকায় আমরা বাজার থেকেই পণ্য নিচ্ছি। রোজার বাকি দিনগুলো ভালোভাবে কাটবে।'
সংগঠনের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক হিরা বলেন, ‘দ্বিতীয়বারের মতো এ বাজার থেকে দুই শতাধিক মানুষ সহায়তা পেয়েছেন। আমরা অসহায় মানুষের আগ্রহ ও তৃপ্তির হাসি দেখে আনন্দিত হয়েছি।’
আরও পড়ুন:কুমিল্লা বরুড়া উপজেলায় ২১ মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামিকে বন্দুক ও গুলিসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
উপজেলার চিতড্ডা ইউনিয়নের ভঙ্গুয়া ব্রিজের পাশ থেকে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
৩৮ বছর বয়সী গ্রেপ্তার মো: মনির হোসেন ওরফে মনির ডাকাত উপজেলার ঝলম মোল্লাবাড়ীর বাসিন্দা। গ্রেপ্তারের সময় মনিরের কাছ থেকে একটি দেশীয় পাইপ গান ও ২টি গুলি জব্দ করা হয়।
বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন শুক্রবার সকালে নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার মনির ডাকাত ২১ মামলার আসামি অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় আরও একটি মামলা করা হবে। শুক্রবার ডাকাত মনিরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’
ডাকাত মনিরকে গ্রেপ্তারের পর পুরো বরুড়া উপজেলায় স্বস্তি নেমে আসে।
ঝলম এলাকার বাসিন্দা আবদুল হালিম বলেন, ‘এমন কোনো অপরাধ নেই যা মনির করতো না। সকালে ডাকাত মনির গ্রেপ্তারের পর এলাকার মানুষ যেন ঈদের আগে ঈদের আনন্দ পেয়েছে।’
আরও পড়ুন:বরিশালে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের ৬ কর্মীকে কুপিয়ে জখমের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
তবে যে ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তিনি জানান, ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দে কোপাকুপি করেছে কিশোর গ্যাং। এই ঘটনায় ধারালো দেশীয় অস্ত্র-দাসহ একজনকে আটকও করেছে পুলিশ।
বরিশাল নগরীর জীবনানন্দ দাশ সড়কের মল্লিকা কিন্ডারগার্টেনের সামনে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহতদের বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রলীগ কর্মী সিয়াম জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সরকারি বরিশাল কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম টিপুর সঙ্গে ছাত্রলীগ কর্মী সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এইচ এম রিশাদ মাহামুদের সঙ্গে দ্বন্দ ছিল দীর্ঘদিনের। রিশাদের সহচরীদের সরকারি বরিশাল কলেজে ছাত্রলীগের রাজনীতি করতে নিষেধ করছিলে টিপু।
কয়েকদিন আগে হৃদয় নামে এক ছাত্রলীগ-কর্মীকে মারধরও করেছিল টিপু। এসব নিয়ে দ্বন্দে টিপু তার দলবল নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিশাদ সহ ৬ জনের উপর হামলা করে।
তিনি বলেন, ‘ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রিশাদসহ ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজের ইংরেজী বিভাগের ছাত্র, ছাত্রলীগ কর্মী আব্দুল্লাহ আল মারুফ, ইমন, সোহান, এভ্রিল ও খালিদও গুরুতর আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘আহতদের মধ্যে রিশাদ মাহামুদকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
সরকারি বরিশাল কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম টিপু বলেন, ‘কিশোর গ্যাং আব্বা গ্রুপের সদস্য রিশাদ। তার গ্রুপের সঙ্গে ছাত্রলীগেরই অপর একটি গ্রুপ কোপাকুপি হয়েছে বলে শুনেছি। রিশাদের সাথে যাদের কোপাকুপি হয়েছে তারা প্রভাবশালী হওয়ায় রিশাদের অনুসারীরা আমার নাম জড়াচ্ছে এই ঘটনায় শুধু শুধু। আমি কোনো কিছুই জানি না বা সম্পৃক্ত নই এই ঘটনায়।’
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী মল্লিক রোডের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাজ্জাদ সেরনিয়াবাতের অনুসারী মো: সাদ ও মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রইজ আহম্মেদ মান্নার অনুসারী এইচ এম রিশাদ গ্রুপের সঙ্গে মারামারি হয় মল্লিকা কিন্ডারগার্টেনের পাশের রাস্তার মুখে বসে। ‘এক পর্যায়ে উভয় গ্রুপ ধারালো অস্ত্র নিয়ে কোপাকুপি করলে সাদ ও রিশাদসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। রিশাদ গ্রুপ সাদের পিঠে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দিলে সে গুরুতর আহত হয় এবং স্থানীয়রা তাকে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করতে নিয়ে যায় এবং রিশাদ ও তার দলবলও আহত হলে তাদেরও হাসপাতালে নেয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দাসহ একজনকে আটক করেছে।’
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমানউল্লাহ বারী বলেন, ‘স্থানীয় দ্বন্দ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। আমরা নাজিম মাহমুদ রাফি নামে একজনকে ধারালো দাসহ আটক করেছি। এ ঘটনায় কোনো মামলা বা অভিযোগ হয়নি।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে খাদ্যের অভাব নেই বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
চাঁদপুর সদর উপজেলা অডিটোরিয়ামে শুক্রবার সকালে অবাঙালি বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষাবৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বের বহু দেশ যেখানে খাদ্য আমদানিতে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে খাদ্যের অভাব নেই। যুদ্ধাবস্থার কারণে বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, কিন্তু এটা সাময়িক; বেশি দিন থাকবে না।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পিছনে ফিরে যেতে চাই না। মানুষ এখন আর একই দিন ৫০০ জায়গায় বোমা-গ্রেনেড দেখতে চায় না, মানুষ এখন একই দিনে ৫০০ জায়গায় ব্রিজ আর সড়ক উদ্বোধন হচ্ছে, তা দেখতে চায়।
‘আজকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সারা দেশে দারিদ্র্যসীমা ১৪ ভাগে নেমে এসেছে। হতদরিদ্র নেমে এসেছে ৭ ভাগে। পৃথিবীর কোথাও এত দ্রুত দারিদ্র্য কমে না।’
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইয়াসির আরাফাত, ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বেপারী, চাঁদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ।
আরও পড়ুন:দিনাজপুরে মাইক্রোবাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহী মারা গেছে।
চিরিরবন্দর উপজেলায় মাইক্রোবাসটি মেরামত শেষে ট্রায়াল দিতে গিয়ে মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কের চিরিরবন্দর উপজেলার চম্পাতলী বেকিপুল এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন চিরিরবন্দর উপজেলার কিসমত ফতেজংপুর ডাঙ্গারহাট গ্রামের গোলজার আলী ও জেলার খানসামা উপজেলার চরকডাঙ্গা দুবলিয়া গ্রামের ফজলে রাব্বী দুলাল।
স্থানীয়রা জানায়, মাইক্রোবাসটি মেরামত করে ট্রায়াল দেয়ার জন্য রানীরবন্দরে আসছিলেন। এ সময় মাইক্রোবাসের সামনে থাকা মোটরসাইকেল ধাক্কা দেয়। ধাক্কায় মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসটি খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে দুই মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়।
দশমাইল হাইওয়ে থানার ওসি ননী গোপাল বর্মন জানান, ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের আবেদনে মরদেহ দুটি ময়নাতদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল হাইওয়ে থানা হেফাজতে রয়েছে। এ বিষয়ে হাইওয়ে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:বরিশালে বিয়ের সাত মাসের মাথায় যৌতুকের দাবিতে কিশোরী বধূকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে।
নগরীর রুপাতলী হাউজিং এলাকার ২২ নম্বর সড়কের সারা-জারা ভবনের সামনে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা।
১৪ বছর বয়সী কিশোরী বধূ জান্নাতুল ফেরদৌসি নগরীর রুপাতলী শের ই বাংলা সড়কের দিনমজুর রিপন হাওলাদারের মেয়ে।
কিশোরীর মা নূপুর বেগম জানান, তার কন্যা রুপাতলী এলাকার এ ওয়াহেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। সাত মাস আগে রুপাতলী ভাসানী সড়কের বাসিন্দা অটোচালক রাকিব হোসেনের সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করে। মেয়ে নিখোঁজের পর থানায় জিডিও করেন তিনি।
পরে ছেলের বাবা বিয়ের বিষয়টি জানিয়ে মীমাংসা করেন। এরপর থেকে মেয়ে ভাসানী সড়কের স্বামীর বাসায় থাকত। দুই মাস আগে মেয়েকে বাসায় দিয়ে যায় জামাই রাকিব। তখন দুই লাখ টাকার ফার্নিচার দিয়ে মেয়েকে পাঠিয়ে দেবেন। আমাদের সামর্থ্যে না থাকায় মেয়েকে না পাঠানোর সিদ্বান্ত নিই। তবে কয়েকদিন আগে আবারও মেয়ে জামাইর সঙ্গে পালিয়ে যায়। এরপর আর খোঁজ নেননি।
নূপুর বেগম বলেন, ‘রাত ১০টার দিকে এক লোক তাকে হাসপাতালে আসতে বলে। তারা আসার পর মেয়ে শুধু এটুকুই বলেছে, তার স্বামী ছাদ থেকে ফেলে দিয়েছে। আর কিছু তিনি জানেন না।’
রিপন হাওলাদার বলেন, যৌতুকের দাবিতে জামাই, শ্বাশুড়ি ও ননদ খুব মারধর করত। কীভাবে ও কয়তলা থেকে ফেলেছে, সেই কথা মেয়ে কিছুই বলতে পারে নাই। ঘটনাস্থল রুপাতলী হাউজিংয়ের ২২ নম্বর সড়কের সারা-জারা ভবনে গিয়েও সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
কিশোরী বধূকে উদ্ধার করা ওই ভবনের প্রতিবেশি মো. নিজাম বলেন, ‘আমি বাইরে বের হওয়ার পর হঠাৎ করে উপর থেকে কিছু পড়ার শব্দ শুনতে পাই। পরে দেখি ভবনের সামনে রাস্তার ওপর কিছু পড়ে আছে। নারীর চিৎকার শুনে কাছে গিয়ে অজ্ঞান অবস্থায় অউ কিশোরীকে দেখতে পেয়ে ট্রিপল নাইনে কল করে এ্যাম্বুলেন্স এনে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই।
পাঁচতলা সারা-জারা ভবনের মালিক স্বপন সরদারের ছেলে মেহেদি বলেন, কীভাবে এখানে আসলো বা কয়তলা ছাদ থেকে ফেলা হয়েছে তা কিছুই বলতে পারি না।
এ সময় ঘটনাস্থলে আসা কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই জোবায়ের বলেন, ‘ঘটনা কী ঘটেছে তা জানার জন্য এসেছি। প্রকৃত ঘটনা এখনো জানতে পারিনি।’
বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘উপর থেকে পরে যাওয়ায় দুই পা ভেঙ্গে হাড় বের হয়ে গিয়েছে। এ ছাড়াও মাথায় আঘাত পেয়েছে। পা ভেঙ্গে যাওয়ায় তাকে হাসপাতালের মহিলা অর্থপেডিক্স ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। তার অবস্থা আশংকাজনক।’
মহিলা অর্থপেডিক্স ওয়ার্ডের সেবিকা তমালিকা হালদার বলেন, ‘অজ্ঞান অবস্থায় নিয়ে আসা হয়। এখানে আনার পর জ্ঞান ফিরেছিল। তখন সে জানিয়েছে, স্বামী ছাদ থেকে ফেলে দিয়েছে। এর বেশি সে কিছু বলতে পারেনি।’
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমানুল্লাহ আল বারী বলেন, ‘মেয়েটি সুস্থ না হলে কি ঘটনা ঘটেছিল বলতে পারব না। পরিবারের পক্ষ থেকে পরিষ্কার কিছু জানাতে পারছে না। মেয়েটিকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিলো, সেটা নিশ্চিত বলা যায়।’
আরও পড়ুন:লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় স্বামীর সামনেই এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে আটক করা হয়।
ভুক্তভোগীর ভাষ্য, তার স্বামীর উপস্থিতিতে জামাল নামে এক ব্যক্তি বুধবার মধ্যরাতে তাকে ধর্ষণ করেন। পরে বৃহস্পতিবার সকালে তাকে অসুস্থ অবস্থায় একটি অটোরিকশায় করে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনাটি পরিবারকে জানালে ভুক্তভোগীর ভাই তাকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করান।
হাতীবান্ধা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহা আলম বলেন, নির্যাতিত গৃহবধূর স্বামীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য