× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Khulna embankment collapse Sitrang fear
google_news print-icon

খুলনায় বেড়িবাঁধে ধস, সিত্রাং নিয়ে চরম আতঙ্ক

খুলনায়-বেড়িবাঁধে-ধস-সিত্রাং-নিয়ে-চরম-আতঙ্ক
ধসে গেছে কয়রা এলাকার বেড়িবাঁধ, এতে চরম আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী। ছবি: নিউজবাংলা
খুলনার জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিশেষ করে কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে, তাদের যাতে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া যায়- সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।’

ঘূর্ণিঝড় 'সিত্রাং'-এর প্রভাবে খুলনায় সকাল থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ক্রমে বাড়ছে বাতাসের গতিও। সবশেষ মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাঁধ ভাঙার আতঙ্কে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খুলনার কয়রা উপজেলাসহ বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দারা।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ নিউজবাংলাকে জানান, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং অবস্থান করছে। বর্তমানে এটি মোংলা বন্দর থেকে ৫২৫ মিলিমিটার দূরে রয়েছে। এর গতিবেগ রয়েছে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত। উপকূলীয় এলাকায় এর প্রভাব শুরু হয়েছে।

তিনি জানান, সকাল থেকে খুলনা ও আশপাশের জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খুলনায় রেকর্ড করা হয়েছে ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত। বর্তমানে খুলনাতে ১৫-২০ কিলোমিটার গতিবেগে বাতাস বয়ে যাচ্ছে। ধীরে ধীরে বাতাসের গতিবেগ আরও বাড়বে।

আইলা, সিডর ও আম্পানের মতো ঝড়ে বারবার আক্রান্ত হয়েছে এই জনপথের মানুষ। তাই নতুন করে বাংলাদেশমুখী সিত্রাং নামক ঘূর্ণিঝড়ের চোখরাঙানিতে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে উপকূলবর্তী মানুষজনের মধ্যে।

খুলনার কয়রা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানান, কয়রার হ‌রিণ‌খোলা ও গা‌তির‌ঘেরী‌র বাঁ‌ধে ধস দেখা দি‌য়ে‌ছে। স্থানীয়‌দের নি‌য়ে মেরাম‌তের প্রস্তু‌তি‌ চল‌ছে। এ ছাড়া কয়রায় হোগলা, দোশহালিয়া, মদিনাবাদ লঞ্চঘাট, ঘাটাখালী, গাববুনিয়ার, আংটিহারা, ৪ নম্বর কয়রা সুতির গেট ও মঠবাড়ির পবনা পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। প্রত্যেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে নিজ নিজ এলাকার বাঁধের দিকে খেয়াল রাখার জন্য। সাইক্লোন শেল্টারগুলো প্রস্তুত রাখা হয়ে‌ছে।

গাবুরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম জানান, চারপাশে নদীবেষ্টিত গাবুরাকে ঘিরে থাকা বাঁধ আইলার পর থেকে বেশ নিচু হয়ে গেছে। এ ছাড়া ইয়াস ও আম্পানের পর থেকে বড়গাবুরা, হরিশখালীসহ কয়েকটি অংশের বাঁধও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে টেকসই বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও এখনও কাজ শুরু হয়নি। এমতাবস্থায় ইউনিয়নের ৪০ হাজারের বেশি মানুষ ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় রয়েছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলায় বেড়িবাঁধ রয়েছে মোট ১ হাজার ৯১০ কিলোমিটার। ষাটের দশকে মাটি দিয়ে তৈরি এই বেড়িবাঁধ ছিল ১৪ ফুট উঁচু ও ১৪ ফুট চওড়া। এখন এই ২৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের উচ্চতা ও চওড়ার অর্ধেকও অবশিষ্ট নেই। ত‌বে স্থানীয়‌দের ভাষ্য ঝুঁ‌কিপূর্ণ বাঁ‌ধের প‌রিমাপ আরও বে‌শি।

খুলনায় বেড়িবাঁধে ধস, সিত্রাং নিয়ে চরম আতঙ্ক

পানি উন্নয়ন বোর্ড (দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল) অ্যাডিশনাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম তাহমিদুল ইসলাম জানান, দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলোর পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট বৃদ্ধি পেতে পারে। ফলে কোথাও কোথাও বাঁধ উপচে পানি ঢোকার সম্ভাবনা আছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডেও দুটি বিভাগের আওতায় ৭৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। যার মধ্যে ২০০ কিলোমিটারের ৩৫টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ। ইতিমধ্যে আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো সংস্কার করা হয়েছে। তা ছাড়া বাকি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় দুর্যোগ মোকাবিলায় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-২-এর সেকশন অফিসার মাসুদ রানা জানান, পাউবোর প্রধান প্রকৌশলীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রোববার সকাল থেকে শ্যামনগরের ভাঙনকবলিত নেবুবুনিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা পরির্দশন করেছেন। পাউবোর পক্ষ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে সেখানে জিও ব্যাগ স্থাপনসহ জিও শিট বিছানো এবং মাটি দেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। সোমবারও ঝুঁকিপূর্ণ এসব স্থানে কাজ অব্যাহত রয়েছে।

খুলনা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, ‘খুলনার দাকোপ উপজেলার ৩২ নম্বর পোল্ডারের কিছু স্থানে সমস্যা রয়েছে। আমরা আপাতত দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য চেষ্টা করছি।’

কার্যক্রম বন্ধ মোংলা বন্দরের

দুর্যোগের প্রভাবে মোংলা বন্দরে পণ্য ওঠানামার কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। ঝড়ের কারণে গাড়িসহ পাঁচটি বাণিজ্যিক জাহাজ এই বন্দরে ঢুকতে পারেনি। এ ছাড়া পণ্য খালাস শেষ হওয়ার পরও তিনটি জাহাজ বন্দর ত্যাগ করতে পারেনি।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘৭ নম্বর বিপৎসংকেত জারি হওয়ার পর আমরা জরুরি সভা করে বন্দরের নিজস্ব এলার্ট-থ্রি জারি করেছি। এ ছাড়া রোববার রাত থেকে বন্দরে অবস্থানরত ১৩টি বাণিজ্যিক জাহাজের কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়েছে। ঝড়ের কারণে সার, কয়লা, গাড়িরসহ পাঁচটি জাহাজ এই বন্দরে ঢুকতে পারেনি। এ ছাড়া পণ্য খালাস শেষ হওয়ার পরও তিনটি জাহাজ বন্দর ত্যাগ করতে পারেনি।’

দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত প্রশাসন

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির।

নিউজবাংলাকে তিনি জানান, ইতিমধ্যে উপকূলীয় উপজেলা প্রশাসনকে দুর্যোগ মোকাবিলায় অগ্রিম প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুটি বিভাগের ৭৮০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে ৮০ কিলোমিটার বাঁধের ১০টি পয়েন্টে ঝুঁকিপূর্ণ। বেড়িবাঁধের ভাঙন এড়াতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ২০ হাজার জিও ব্যাগ মজুত রাখা হয়েছে।

খুলনায় বেড়িবাঁধে ধস, সিত্রাং নিয়ে চরম আতঙ্ক

জেলা প্রশাসক আরও জানান, সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলায় ১০৮টি এবং শ্যামনগর উপজেলায় ১০৩টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ ৪৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া শুকনো খাবার, প্রয়োজনীয় ওষুধ, সুপেয় পানিসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক। এ ছাড়া দুর্যোগকালীন জরুরি সাড়াদানের জন্য জেলায় খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের ৩৪৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। নির্দেশনা পাওয়ামাত্রই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের আশ্রয়ণকেন্দ্রে নেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া ২৯৮ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রয়োজন দেখা দিলেই সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিতরণের নির্দেশনা দেয়া হবে।’

খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণহানি এড়াতে জেলার ২ লাখ ৭৩ হাজার ৮৫০ জনের জন্য ৪০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে দাকোপে ১১৮টি, বটিয়াঘাটায় ২৭টি, কয়রায় ১১৭টি, ডুমুরিয়ায় ২৫টি, পাইকগাছায় ৩২টি, তেরখাদায় ২২টি, রূপসায় ৩৯টি, ফুলতলায় ১৩টি ও দিঘলিয়ায় ১৬টি।

খুলনার জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার নিউজবাংলাকে জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিশেষ করে কয়রা, পাইকগাছা ও দাকোপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। যারা ঝুঁকির মধ্যে আছে, তাদের যাতে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া যায় সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন:
উত্তাল সাগর, ব‌রিশা‌ল-ভোলায় লঞ্চ বন্ধ
সুন্দরবন ও সন্দ্বীপের মধ্য দিয়ে যাবে সিত্রাং: ভারতের আবহাওয়া দপ্তর
ভোরে ১০০ কিলোমিটার বেগে বরিশাল-চট্টগ্রাম পার হবে সিত্রাং
এগোচ্ছে সিত্রাং, কক্সবাজার-নোয়াখালীতে সরকারি কর্মীদের ছুটি বাতিল
সিত্রাং এখন বাংলাদেশমুখী: পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
The number of donations in Pagla Masjid is being counted without records

পাগলা মসজিদে দানের অংক রেকর্ড ছাড়াল, গণনা চলছে

পাগলা মসজিদে দানের অংক রেকর্ড ছাড়াল, গণনা চলছে শনিবার পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলো খুলে পাওয়া টাকা গণনা চলছে। ছবি: নিউজবাংলা
শনিবার মসজিদের ৯টি দানবাক্স খুলে ২৭ বস্তা টাকা পাওয়ার পর গণনা শুরু হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত গণনায় ৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। গণনা শেষ হতে রাত ১০টা বাজবে বলে জানিয়েছে দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ।

কিশোরগঞ্জের আলোচিত পাগলা মসজিদের দানবাক্সে পাওয়া টাকার পরিমাণ রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। শনিবার দানবাক্স খুলে ২৭ বস্তা টাকা পাওয়ার পর গণনা শুরু হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত গণনায় ৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে বিপুল পরিমাণ টাকা পাওয়ার ঘটনা দীর্ঘদিনের। তবে এর আগে ২০২৩ সালে পাওয়া গিয়েছিল রেকর্ড পরিমাণ অর্থ। ওই বছরের ৯ ডিসেম্বর তিন মাস ২০ দিন পর দানবাক্সগুলো খোলার পর ২৩টি বস্তায় ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।

ঐতিহাসিক এই মসজিদের দানবাক্সে একসঙ্গে এতো টাকা পাওয়াটা তখন ছিল নতুন রেকর্ড। এবার সেই রেকর্ডও ছাড়িয়ে গেছে। তবে টাকার সুনির্দিষ্ট অংকটা জানতে আরও বেশকিছু সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। কেননা গণনা শেষ হতে রাত ১০টা বাজতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ।

সন্ধ্যা সাড়ে টার দিকে রুপালী ব্যাংকের এজিএম রফিকুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জেলা শহরের ঐতিহাসিক মসজিদটিতে ৯টি দানবাক্স রয়েছে। এগুলো প্রতি তিন মাস পরপর খোলা হয়। পবিত্র রমজানের কারণে এবার খোলা হয়েছে চার মাস ১০ দিন পর।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও দানবাক্স খোলা কমিটির আহ্বায়ক কাজী মহুয়া মমতাজের তত্ত্বাবধানে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রাসেল শেখের উপস্থিতিতে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এবার ৯টি দানবাক্স খুলে ২৭ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে।

টাকা গণনার কাজে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছাড়াও মাদ্রাসার ১১২ ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ কর্মী, মসজিদ কমিটির ৩৪ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য অংশ নিয়েছেন।

দানবাক্সগুলো খোলার পর গণনা দেখতে মসজিদের আশপাশে ভিড় করেছেন উৎসুক মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকে এসেছেন দূর-দুরান্ত থেকে।

মসজিদটিতে নিয়মিত টাকা ছাড়াও অলঙ্কার, হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অসংখ্য মানুষ।

জেলা শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় ১০ শতাংশ জমিতে পাগলা মসজিদটি গড়ে ওঠে। সম্প্রসারণের পর মসজিদের আওতাভুক্ত জমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে তিন একর ৮৮ শতাংশ।

আরও পড়ুন:
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার ২৭ বস্তা টাকা, চলছে গণনা
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল রেকর্ড ৬,৩২,৫১,৪২৩ টাকা
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে আছে শত শত চিঠিও
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে রেকর্ড ৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার রেকর্ড ২৩ বস্তা টাকা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The decision to close schools for another week is coming
সাভারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী

আরও এক সপ্তাহ স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত আসছে

আরও এক সপ্তাহ স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত আসছে শনিবার দুপুরে সাভারের সিআরপি নার্সিং কলেজের ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। ছবি: নিউজবাংলা
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং কলেজে ছুটি ঘোষণার পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোতেও পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত ক্লাস বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে দেশের স্কুল-কলেজগুলোতে এক সপ্তাহের ছুটি দেয়া হয়েছে। স্কুলে আরও এক সপ্তাহ ছুটির নির্দেশ আসছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

তিনি বলেছেন, ‘আমি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, আমরা আরও এক সপ্তাহ স্কুলগুলোকে বন্ধ করার নির্দেশ দিচ্ছি। আমাদের কিছু নির্দেশনা আছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সেগুলো সব জায়গায় দেয়া হবে।

শনিবার দুপুরে সাভারের সিআরপি নার্সিং কলেজের ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বয়স্ক ও শিশুরা যেন প্রয়োজন না থাকলে ঘরের বাইরে না যায়। আর বাকি যে নির্দেশনাগুলো সেগুলো আজকেই চলে যাবে। স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে।’

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ঢাকা শিশু হাসপাতালের কার্ডিয়াক ইউনিটের ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি আমরা তদন্ত করতে বলেছি। আজকেই তদন্ত হবে।’

স্বাস্থ্যখাতে কী কী চ্যালেঞ্জ রয়েছে, জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, আমি সাধারণ মানুষের কাছে চিকিৎসা ব্যবস্থা পৌছে দেব। প্রত্যেকটা হেলথ কমপ্লেক্সকে, কমিউনিটি ক্লিনিককে উন্নত করতে হবে যেন সাধারণ মানুষ গ্রামেই চিকিৎসা পায়।’

সাভার ও ধামরাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বেড সঙ্কট নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে এটাকে করা যায় কি না, তা নিয়ে কাজ করব।’

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন সিআরপি প্রতিষ্ঠাতা ড. ভ্যালেরি টেইলর, সিআরপির নির্বাহী পরিচালক ড. মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

এর আগে, শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ২১ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সাত দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

তারও আগে দেশজুড়ে চলমান দাবদাহের কারণে সরকারি প্রাথমিক স্কুলে অ্যাসেম্বলি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

পরবর্তীতে শনিবার বিকেলে মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজও সাত দিন বন্ধ থাকার সিদ্ধান্তের কথা জানান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) উপ-পরিচালক (কলেজ-১) মো. ওয়াহিদুজ্জামান।

পরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর ক্লাস বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন বলেছেন, ‘পরবর্তী তারিখ ঘোষিত না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজগুলোর ক্লাস বন্ধ থাকবে।’

তবে ক্লাস বন্ধ থাকলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সব পরীক্ষা বিদ্যমান সময়সূচি অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।

গত কয়েক দিন ধরে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ। এর মধ্যে যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।

শনিবার যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রাজধানী ঢাকাও চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা অনুভব করেছে আজ। এদিন ঢাকায় মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। শনিবার হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুন:
যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৬, হিটস্ট্রোকে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় মৃত্যু ২
দাবদাহ: ৭ দিন বন্ধ স্কুল কলেজ
দাবদাহ: সরকারি প্রাথমিক স্কুলে বন্ধ অ্যাসেম্বলি

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Dreaming of the teachers hobby vineyard

স্বপ্ন দেখাচ্ছে শিক্ষকের শখের আঙুর বাগান

স্বপ্ন দেখাচ্ছে শিক্ষকের শখের আঙুর বাগান এ বছর ১৪ শতক জমিতে আঙুর বাগান করেছেন শিক্ষক বিল্লাল হোসেন। ছবি: নিউজবাংলা
কাজী বিল্লাল হোসেন খোকন পেশায় কলেজ শিক্ষক। শখ করে করা আঙুর বাগানটি এখন তাকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে আঙুর উৎপাদনের।

থোকায় থোকায় ঝুলছে আঙুর। আর কয়েকদিন পর পেকে গেলে তা গাছ থেকে সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করা হবে। বাতাসে দোল খাওয়া আঙুর বাগানের এমন দৃশ্য দেখা গেল কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বলরামপুর গ্রামে।

ওই গ্রামের বাসিন্দা কাজী বিল্লাল হোসেন খোকন পেশায় কলেজ শিক্ষক। শখ করে করা আঙুর বাগানটি এখন তাকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে আঙুর উৎপাদনের।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চারপাশে বিস্তৃর্ণ ধানি জমি। তার মাঝেই উঁচু করে তৈরি করা হয়েছে বাঁশের মাচা। সেই মাচায় থোকায় থোকায় ঝুলছে গাঢ় সবুজ রঙের আঙুর।

বাগানে নিবিষ্ট চিত্তে গাছের পরিচর্যা করছিলেন বিল্লাল হোসেন। এ সংবাদ সগ্রাংহককে দেখে এগিয়ে আসেন তিনি। এরপর আগ্রহ নিয়ে ঘুরিয়ে দেখান তার শখের আঙুর বাগান।

বাগানের প্রতিটি কোণায় যত্নের ছাপ স্পষ্ট। শিক্ষকের হাতের ছোঁয়ায় আঙুর গাছগুলো সজীব ও সতেজ হয়ে বাগানে শোভা ছড়াচ্ছে।

স্বপ্ন দেখাচ্ছে শিক্ষকের শখের আঙুর বাগান

বিল্লাল জানান, বছর দুই আগে শখ করে তার নার্সারিতে দুটি আঙুর চারা রোপণ করেন তিনি। সেবার গাছ দুটি থেকে তিনি প্রায় ১৮ কেজি আঙুর পেয়েছিলেন। তারপর ইউটিউব দেখে আঙুর বাগান করার উদ্যোগ নেন তিনি।

তিনি জানান, এ বছর ১৪ শতক জমিতে আঙুর বাগান করেছেন। মোটামুটি লাখ খানেক টাকা খরচ হয়েছে তার। তবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এ বাগান থেকে অন্তত ৫ লাখ টাকার আঙুর তিনি বিক্রি করতে পারবেন।

শখের এ কৃষকের চিন্তা, আগামী বছর তিনি বাগানের পরিসর আরও বড় করবেন।

কুমিল্লা জেলার মাটিতে আঙুর চাষের উপযোগিতা আছে কি না তা এ মুর্হুতে বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। তবে এ জেলার মাটি সব ধরনের ফল উৎপাদনে সহায়ক বলে জানান অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আইয়ুব মাহমুদ।

কৃষি বিভাগের অব্যাহত সহযোগিতা পেলে আঙুর চাষেও সফলতা আসবে বলে মনে করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আঙুর চাষে শিক্ষক খোকনের প্রচেষ্টা অন্যদের উৎসাহিত করবে। পাশাপাশি জেলায় ফলের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
In Sylhet polls BNP is ignoring the instructions of the center
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

সিলেটে ভোটে থাকছে ‘বিএনপি’, কেন্দ্রের নির্দেশ উপেক্ষা

সিলেটে ভোটে থাকছে ‘বিএনপি’, কেন্দ্রের নির্দেশ উপেক্ষা
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে সিলেট বিভাগের ১১টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে। এর মধ্যে অন্তত চারটি উপজেলায় বিএনপির ১৩ জন নেতা প্রার্থী হওয়ার তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

জাতীয় সংসদের মতো উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে দলের হাইকমান্ডের এই সিদ্ধান্ত মানছেন না তৃণমূলের নেতারা। সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন দলটির নেতারা। ফলে অনানুষ্ঠানিকভাবে সিলেটে উপজেলার ভোটে থাকছে বিএনপিও।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে সিলেট বিভাগের ১১টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে। এর মধ্যে অন্তত চারটি উপজেলায় বিএনপির ১৩ জন নেতা প্রার্থী হওয়ার তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের মধ্যে সাতজনই সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন। এছাড়া সুনামগঞ্জের শাল্লায় তিনজন ও দিরাইয়ে দুজন এবং মৌলভীবাজারের বড়লেখায় একজন প্রার্থী রয়েছেন।

নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা বুধবার যাচাই-বাছাই শেষে বৈধ প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করেছেন। বিভাগের মধ্যে একমাত্র হবিগঞ্জ জেলায় বিএনপির কোনো নেতা প্রার্থী হননি।

জেলা বিএনপি নেতারা বলছেন, নির্বাচন বর্জনের দলীয় সিদ্ধান্ত প্রার্থী হওয়া নেতাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, সিলেট বিভাগের চার জেলার মধ্যে সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা, বিশ্বনাথ ও গোলাপগঞ্জ; সুনামগঞ্জের দিরাই ও শাল্লা; মৌলভীবাজারের জুড়ি, কুলাউড়া ও বড়লেখা এবং হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ ও বানিয়াচং উপজেলায় প্রথম ধাপে নির্বাচন হচ্ছে। এই ১১ উপজেলায় প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২২ এপ্রিল। আর ভোটগ্রহণ হবে ৮ মে।

সিলেটের বিশ্বনাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বিএনপির ৭ নেতার মধ্যে চেয়ারম্যান পদে চারজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন প্রার্থী হয়েছেন।

বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির যে চার নেতা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তারা হলেন- জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি সুহেল আহমদ চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গৌছ খান, তার চাচাতো ভাই যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেবুল মিয়া ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপি নেতা সফিক উদ্দিন।

তাদের মধ্যে গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় নির্দেশনা অমান্য করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় সুহেল আহমদ চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। সেই বহিষ্কারাদেশ এখনও প্রত্যাহার করা হয়নি।

এছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো. কাওছার খান ও খাজাঞ্চি ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রব সরকার।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক বেগম স্বপ্না শাহিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী যুক্তরাজ্য বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেবুল মিয়া বলেন, ‘এলাকার মানুষের চাওয়ার কারণে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। বিএনপির অনেক নেতা-কর্মীও নির্বাচনে অংশ নিতে বলেছেন। তাদের দাবি- যেহেতু বিএনপি নেতাকর্মীরা নির্বাচনে ভোট দেবে, সেহেতু নিজেদের একজনকে দিতে পারে। সেই দাবি থেকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ ব্যাপারে দল কোনো সিদ্ধান্ত নিলে নিতে পারে। আমার কিছু করার থাকবে না।’

অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গৌছ খান বলেন, ‘নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দলের সিনিয়র নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এখনও অনেক সময় বাকি আছে। আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হবে।’

তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে কারও সঙ্গে কোনো আলোচনার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ না নেয়ার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে। এর বাইরে গিয়ে কেউ অংশ নিলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সুনামগঞ্জোর শাল্লা উপজেলা বিএনপির সভাপতি গণেশ চন্দ্র দাস উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো. সাইফুর রহমান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবদুল মজিদ প্রার্থী হয়েছেন।

এ ছাড়া দিরাই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. গোলাপ মিয়া। আর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সুনামগঞ্জ জেলা মহিলা দলের সহ-সভাপতি ছবি চৌধুরী প্রার্থী হয়েছেন।

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক রাহেনা বেগম হাছনা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।

এ বিষয়ে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের কাউকে প্রার্থী না হওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে। কেউ এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আরও পড়ুন:
তৃতীয় ধাপের উপজেলা ভোটেও আপিল কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসক
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক ফ্লেভার নেই: ইসি আলমগীর

মন্তব্য

বাংলাদেশ
A teenager killed his friend due to a dispute over online gambling

অনলাইন জুয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বন্ধুর প্রাণ কাড়ল কিশোর

অনলাইন জুয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে বন্ধুর প্রাণ কাড়ল কিশোর ফাইল ছবি
গাইবান্ধার সহকারী পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) আব্দুল্লাহ আল মামুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বন্ধক রাখা ক্যামেরা বিক্রি করা নিয়ে দুই বন্ধুর দ্বন্দ্বের জেরে এক বন্ধু অপরজনকে হত্যা করে। অভিযুক্ত রিফাত পরিকল্পিতভাবে তার বন্ধু সম্রাটকে কোমল পানীয়ের সঙ্গে ৭/৮টি ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে পান করায়, যা খেয়ে খুব দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ে সম্রাট। পরে ঘুমন্ত সম্রাটকে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে হত্যা করা হয়।’

গাইবান্ধার সাঘাটায় ১৭ বছরী বয়সী কিশোর সম্রাট হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। অনলাইন জুয়া খেলতে ক্যামেরা বন্ধক নেয়ার জেরে তাকে খুন করে তারই বন্ধু রিফাত। পরিকল্পিতভাবে ঘুমের ট্যাবলেট মিশ্রিত কোমলপানীয় পান করে অজ্ঞান হয়ে গেলে বাড়ির সেপটিক ট্যাংকে ফেলে হত্যা করা হয় সম্রাটকে।

শুক্রবার রাত ১টার দিকে উপজেলার পশ্চিতবাড়ি গ্রামের এক পুলিশ সদস্যের বাড়ির পেছনের সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে সাঘাটা থানা পুলিশ। এর আগে গত ১৭ এপ্রিল ওই বন্ধুর বাড়িতে ক্যামেরা আনতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সম্রাট।

সম্রাট উপজেলার মুক্তিনগর ইউনিয়নের আফজাল হোসেনের ছেলে। অন্যদিকে অভিযুক্ত ১৭ বছরের রিফাত সাঘাটা উপজেলার পশ্চিম বাটি গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ জানায়, সম্রাট ও রিফাত একে অপরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তারা দুজনে একই বিদ্যালয়ের একই ক্লাসের শিক্ষার্থী। সম্প্রতি অনলাইন জুয়া খেলে টাকা খোয়ায় সম্রাট। জুয়ায় হেরে সে তার ক্যামেরাটি দশ হাজার টাকার বিনিময়ে বন্ধু রিফাতের কাছে বন্ধক রাখে। কয়েকদিন পর রিফাতের কাছে ক্যামেরা ফেরত নিতে যায় সে। সেখানে গিয়ে সম্রাট জানতে পারে, রিফাতও জুয়ায় হেরে বন্ধক নেয়া ক্যামেরা বগুড়ায় কারও কাছে ১৪ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে। পরে এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়।

পরবর্তীতে গত ১৭ এপ্রিল পরিকল্পিতভাবে সম্রাটকে ক্যামেরা নিতে নিজ বাড়িতে ডাকেন রিফাত। ওইদিন বিকেলেই সম্রাট বন্ধু রিফাতের বাড়িতে ক্যামেরা নিতে গিয়ে সেদিন থেকেই নিখোঁজ হয়। পরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সন্তানকে না পেয়ে পরের দিন নিখোঁজ সন্তানের সন্ধান চেয়ে সাঘাটা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে সম্রাটের পরিবার। রিফাতের ডাকে সম্রাট বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়।

জিডির পর শুক্রবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সম্রাটকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে সাঘাটা পুলিশ। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বন্ধু সম্রাটকে খুন করে সেপটিক ট্যাংকে গুম করে রাখার কথা স্বীকার করে সে।

পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত ১টার দিকে পশ্চিতবাড়ি গ্রামের এক পুলিশ সদস্যের বসতঘরের পেছনের সেপটিক ট্যাংক থেকে সম্রাটের মরদেহ উদ্ধার করেন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গাইবান্ধার সহকারী পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) আব্দুল্লাহ আল মামুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বন্ধক রাখা ক্যামেরা বিক্রি করা নিয়ে দুই বন্ধুর দ্বন্দ্বের জেরে এক বন্ধু অপরজনকে হত্যা করে। অভিযুক্ত রিফাত পরিকল্পিতভাবে তার বন্ধু সম্রাটকে কোমল পানীয়ের সঙ্গে ৭/৮টি ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে পান করায়, যা খেয়ে খুব দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ে সম্রাট। পরে ঘুমন্ত সম্রাটকে সেপটিক ট্যাংকে ফেলে হত্যা করা হয়।’

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রিফাত পুলিশের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

তিনি আরও বলেন, ‘অভিযুক্ত রিফাতকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। সম্রাটের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।’

আরও পড়ুন:
টাকা চেয়ে না পেয়ে বাবার প্রাণ নিল ছেলে
মেলায় জুয়ার আসর বসানোর অভিযোগে ইউপি সদস্যের নামে মামলা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Local government elections have no political flavor EC Alamgir

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক ফ্লেভার নেই: ইসি আলমগীর

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক ফ্লেভার নেই: ইসি আলমগীর শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের হলরুমে হরিরামপুর ও সিংগাইর উপজেলার প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। ছবি: নিউজবাংলা
নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে মো. আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচনে কার কোন আত্মীয় অংশ নিল বা কে অংশ নিল না- সেটা আমাদের বিষয় নয়; সেটা রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক বিষয়।’

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন কোনো রাজনৈতিক নির্বাচন নয়। কারণ বর্তমান সরকার দলীয় রাজনৈতিক দল স্থানীয় সরাকর নির্বাচনকে উন্মুক্ত করে দিয়েছে। কাজেই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক কোনো ফ্লেভার নেই।

তিনি বলেছেন, তারপরও যাতে রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে যে কেউ নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন, সেটার অপশনও রাখা হয়েছে, অর্থাৎ ভোট ফ্লেক্সিবল করা হয়েছে। ইচ্ছে করলে স্বাধীনভাবে নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন; রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রয়োজন নেই। আবার চাইলে অনেকে রাজনৈতিক পরিচয়েও নির্বাচন করতে পারবেন, তাতেও কোনো সমস্যা নেই।

শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের হলরুমে হরিরামপুর ও সিংগাইর উপজেলার প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির উদ্দেশে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও তাদের অনেক সমর্থক-প্রার্থী আনঅফিশিয়ালি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। সুতরাং এটা বলার সুযোগ নেই যে, নির্বাচন অংশগ্রহণ মুলক নির্বাচন হচ্ছে না।’

ইসি আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচন অবশ্যই শান্তিপূর্ণ হতে হবে এবং কোনোমতেই যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি না হয়। অন্যায়ভাবে কেউ যাতে কোনো প্রার্থীকে প্রচারে ও ভোটদানে বাধা দিতে না পারে। সবাই যাতে সমানভাবে নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা করতে পারে এবং ভোটরা যাতে স্বাধীনভাবে তার ভোট দিতে পারে। একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে।’

নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে কার কোন আত্মীয় অংশ নিল বা কে অংশ নিল না- সেটা আমাদের বিষয় নয়; সেটা রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক বিষয়, কিন্তু আমাদের নির্বাচনি আইনে যদি কোনো ব্যক্তি ওই এলাকার ভোটার হয় এবং তার বিরুদ্ধে যদি কোনো আইনি ঝামেলা না থাকে, তাহলে তিনি নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন। আমাদের আইনে আত্মীয়তার সঙ্গে কোনো সর্ম্পক নেই।’

এ সময় জেলা প্রশাসক রেহেনা আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. তরিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার সুজন সরকার ও জেলা নির্বাচন অফিসার আমিনুর রহমান মিঞাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন:
দল থেকে শোকজ পেয়েছেন সিংড়ার রুবেল
প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে বৈধ প্রার্থী ১৭৮৬ জন
নাটোরে উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থী ও ভাইকে অপহরণ
উপজেলা নির্বাচনে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ ২০ এপ্রিলের পর
পরবর্তী কমিশনের জন্য সুপারিশ রেখে যাবে ইসি

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Two die of heatstroke in Chuadanga Record temperature 42 3

যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৬, হিটস্ট্রোকে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় মৃত্যু ২

যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২.৬, হিটস্ট্রোকে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় মৃত্যু ২ তীব্র তাপপ্রবাহে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবীরা। ছবি: নিউজবাংলা
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘কয়েকদিন থেকে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শনিবার তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। এদিন এখানে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই অঞ্চলে আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।’

তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশ। এর মধ্যে যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। শনিবার যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

রাজধানী ঢাকায় শনিবার চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দেশের বিভিন্ন স্থানে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। শনিবার হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে চুয়াডাঙ্গা ও পাবনায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, চুয়াডাঙ্গায় টানা চার দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার এখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমে জেলায় এটি সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

জেলার দামুড়হুদায় গ্রামে মাঠে কাজ করার সময় হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে জাকির হোসেন নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার ঠাকুরপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমানবলেন, ‘কয়েকদিন থেকে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শনিবার তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। এদিন এখানে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই অঞ্চলে আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।’

দিন ও রাতের তাপমাত্রায় খুব বেশি পার্থক্য না থাকায় অতিষ্ঠ এই অঞ্চলের জনজীবন। দিনের বেলায় একান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। শহর-গ্রামের রাস্তাঘাট ফাঁকা।

শ্রমজীবী মানুষগুলো বেশি বিপাকে পড়েছে। তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে তারা কাজে বেরুতে পারছে না। ধান কাটার মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু সূর্যের প্রখর তাপের কারণে শ্রমিকরা মাঠে যেতে সাহস পাচ্ছে না।

দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডে ভ্যানচালক করিম আলী বলেন, ‘জীবনে আমি এত তাপ দেখিনি। ছেমায় গিয়িও শান্তি নেই। যে তাপ পড়চি তাতে মানুষ রাস্তায় বের হচ্চি না। আমাদের ভাড়াও কমি গিচে।’

এদিকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে বলায় জনসাধারণকে সচেতন করতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মাইকিং করে পথচারী ও এলাকাবাসীকে সতর্ক করছে জেলা প্রশাসন। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।

পাবনা প্রতিনিধি জানান, অসনীয় গরমে অতিষ্ঠ পাবনার জনজীবন। শনিবার জেলার ঈশ্বরদীতে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা পাবনা জেলায় চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ।

শনিবার দুপুরে পাবনা শহরের রূপকথা রোডে চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় এক ব্যক্তি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হন। তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মৃত সুকুমার দাস পাবনার শহরের শালগাড়িয়া জাকিরের মোড়ের বাসিন্দা।

ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, কয়েকদিন ধরেই পাবনায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস । এর আগে চলতি বছরে জেলায় এতোটা বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়নি। ঈশ্বরদীসহ আশপাশের এলাকাজুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বইছে। তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে তীব্র গরমে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। তীব্র এই তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন শ্রমজীবী মানুষ। জীবন-জীবিকার তাগিদে তীব্র রোদে কাজ করতে হচ্ছে খেটে খাওয়া মানুষদের। বাইরে বের হওয়ার সময় অনেকেই ছাতা নিয়ে বের হচ্ছেন।

আরও পড়ুন:
‘ঘরে টিকতে পারছি না, বাইরেও দাঁড়াতে পারছি না’
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বেশি গরম কর্কটক্রান্তির প্রভাবে
চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড ৪২.৬ ডিগ্রিতে তাপমাত্রা
দাবদাহে পুড়ছে ইউরোপ, মরছে মানুষ
ভারতে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে পাখিরা

মন্তব্য

p
উপরে