সিগন্যালে দাঁড়িয়ে বাস। ছুরি হাতে ভয় দেখাচ্ছে উন্মত্ত ছিনতাইকারী। জানালা দিয়ে এক জনের ফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর সেই ছিনতাইকারী ও দলের সদস্যরা বাসের ভেতরে ঢুকে যায় কি না, এ নিয়ে ভীত সন্ত্রস্ত যাত্রীদের সামনে ভরসা হতে পারত পাশেই দুটি গাড়িতে থাকা পুলিশ সদস্যরা। কিন্তু ৫০ জনেরও বেশি মানুষের চিৎকার তাদের কানে যায়নি। ছিনতাইকারীদেরকে লাঠি দেখিয়ে বাঁশিতে ফু দিয়ে চলে যায় গাড়ি দুটি।
বলা হচ্ছে গাড়ি দুটি ভিআইপি প্রটোকলে ছিল। তবে যাত্রীরা এবং একজন অপরাধ বিজ্ঞানী নিউজবাংলাকে বলেছেন, এমন একটি পরিস্থিতিতে দুই গাড়ির কিছু সদস্য যাত্রীদের নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নিতে পারতেন, তারা পুলিশের কাছাকাছি অবস্থানে তথ্য দিতে পারতেন।
নাগরিকদের এভাবে অনিরাপদে রেখে পুলিশ সদস্যদের এভাবে ঘটনাস্থল ত্যাগ করার মধ্য দিয়ে তারা তাদের চাকরির শপথ ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ উঠছে।
এই ঘটনাটি ঘটে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। রাজধানীর আসাদগেট এলাকায় ছিনতাই করতে আসে কয়েকজন তরুণ। তাদের হাতে ছিল বড় আকারের ছুরি। সেই বাসের একজন যাত্রী ঘটনাটি ভিডিওতে ধারণ করে ফেসবুকে ছেড়ে দিয়েছেন।
অলিগলিতে ছিনতাই নতুন কোনো ঘটনা নয়। কিন্তু প্রকাশ্য রাজপথে ভিড়ের মধ্যে এই ঘটনাটি একদিকে যেমন যাত্রীদের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি প্রকাশ পায়, তেমনি পুলিশের আচরণে প্রশ্ন জাগে, তারা মানুষের নিরাপত্তা বিধানে আসলে কতটা আন্তরিক।
ঘটনার সময় পাশেই পুলিশের দুইটি গাড়ি ছিল। পাশেই ছিল ট্রাফিক পুলিশ বক্স। তাদের কেউ এগিয়ে আসেনি, এমনকি থানাতেও ফোন করে ছিনতাইকারীদের এই বিষয়টি না জানিয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যায়।
ঘটনাস্থলটি শেরে-বাংলা নগর থানায় পড়েছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উৎপল বড়ুয়াকে জানিয়েছেন, এই ঘটনাটি তারা ফেসবুক দেখে জেনেছেন। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।’
একই কথা বলেছেন তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক। তিনি বলেন, এ ঘটনা ঘটনাস্থলের কোনো পুলিশ সদস্য আমাদের জানায়নি।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটিতে বিভিন্ন কথার মধ্যে একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘জ্যামের মধ্যে দিন দুপুরে ডাকাতি। পুলিশ দেখল একটা বাঁশি ফুঁ দিল, চলে গেল।’
তারপর আরেক জনকে বলতে শোনা যায়, ‘ওরা তো ভিআইপি প্রটোকলের পুলিশ।’
যা ঘটেছিল সেই সন্ধ্যায়
যিনি ভিডিওটি ফেসবুকে আপলোড করেন তিনিও ওই বাসের যাত্রী ছিলেন। তার নাম হাসিবুল হক আসিফ।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আসাদগেটের সিগন্যালে আটকা পড়ে ট্রান্স সিলভা বাসটি। আমার সামনের সিটে একজনের মোবাইল জানালা দিয়ে নিতে আসেন ৩ থেকে ৪ জন ছিনতাইকারী। ওই যাত্রী চিৎকার চেঁচামেচি করলে তারা চাকু হাতে দৌড়ে আসে মারার জন্য।
‘বাসের সবাই জানালা লাগিয়ে কন্ডাক্টরকে দরজা বন্ধ করতে বলেন। প্রথমে ভেবেছিলাম ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে হয়ত এমনটা ঘটছে। কিন্তু না, আমাদের সামনেই ওরা আরও কয়েকটা গাড়ি থেকে ছিনতাই করে। সবার হাতেই ধারালো ছুরি ছিল।’
তিনি বলেন, ‘এর মধ্যে রাস্তার অপর পাশে একটা পুলিশের গাড়ি ছিনতাইকারীদের দেখে লাঠি দেখিয়ে বাঁশি বাজায়। বাসের সব যাত্রী পুলিশের গাড়ি দেখে চেঁচিয়ে বলে ভাই ধরেন... ধরেন... এরা ছিনতাইকারী। কিন্তু পুলিশের গাড়ি চলে যায়।
‘এরপর ছিনতাইকারীরা আমাদের বাসের দিকে আসে। ছুরি হাতে বাসের জানালা দরজা দিয়ে হামলার চেষ্টা করে। আমরা আবারও বাসের জানালা দরজা বন্ধ করে দিই। এর মধ্যে সিগন্যাল ছেড়ে দেয়। ওরা আমাদের বাস লক্ষ করে ইট ছোড়ে, পরে ধাওয়া করে। কিন্তু ধরতে পারেনি।’
যার ফোনটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা হয়েছিল তিনি শিক্ষানবিশ আইনজীবী মো. রাসেল। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি ডাক্তার দেখিয়ে বাসে করে ফিরছিলাম। আসাদ গেটের সিগন্যালে ছিনতাইকারীরা জানালা দিয়ে আমার ফোন টান দেয়। নিতে না পেরে আমাকে গালিগালাজ করে। আমি তখন গালিগালাজের উত্তর দেই। পরে তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে গাড়িতে হামলা চালায়। সিগন্যাল ছেড়ে দেয়ায় রক্ষা পেয়েছি।
‘অল্প সময়ের মধ্যে তারা ওই জায়গায় একটা আতঙ্ক সৃষ্টি করে ফেলছিল। এ কারণে কেউ সাহস করে তাদের কিছু বলতে পারেনি। পাশে যে পুলিশের গাড়ি ছিল তারা ভিআইপি প্রটোকল দিচ্ছিল। সেখানে দুইটা পুলিশের গাড়ি ছিল। একটা গাড়িকে পুলিশের দুইটা গাড়ি প্রটোকল দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তারা এগিয়ে আসেন নাই।’
নাগরিককে এভাবে অনিরাপদে রেখে কি পুলিশ যেতে পারে?
ঘটনাস্থলে থেকেও ছিনতাইকারীদের থেকে যাত্রীদের রক্ষা না করে, এমনকি পুলিশের নিকটবর্তী কোনো অবস্থানে তথ্য না দিয়ে ভিআইপি প্রটোকলে যাওয়া উচিত নয় বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিয়াউর রহমান।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বাস ভর্তি মানুষ আতঙ্কে, ছিনতাইকারীরা ছুরি নিয়ে তেড়ে আসছে। সেখানে প্রটোকল দেয়া জরুরি নাকি সাধারণ মানুষকে রক্ষা করা জরুরি? এখানে তো আইনের বিষয় না।
‘আমাদের এখানে পুলিশের নেচার এবং কালচার হচ্ছে বড়লোকদের সেবা করা। তারা মনে করেছে এটা কোনো ঘটনাই না। এটা ছোট ঘটনা। কিন্তু ঘটনাটা তো আর ভাইরাল এমনি হয় নাই। এই ঘটনাকে অন্য ঘটনার সঙ্গে মিলিয়ে দেখলে চলবে না।’
পুলিশের আচরণে পরিবর্তন আনতে এই ঘটনাটিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে পুলিশের অভ্যন্তরীণ তদন্তের সুপারিশও করেছেন এই অপরাধ বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, ‘পুলিশ বাঁশি দেয় তখনই সরে যেতে বলে। মানে জানান দেয়, আমি আসছি, তুমি চলে যাও। ঘটনা যদি এরকম হয় তাহলে এটা দুঃখজনক। এখন যদি আমরা পুলিশের এ রকম আচরণ দেখি তাহলে আমরা সামনের দিকে এগোতে পারব না।
‘কোনো পুলিশ সদস্যরা সেখানে ছিলেন, সেটা তদন্ত করে বের করা উচিত। এটার মধ্যে দিলে একটা ম্যাসেজ আমাদের দেয়া দরকার, পুলিশের সনাতনী যে সংস্কৃতি এবং এক্টিভিটিজের মধ্যে পরিবর্তন আনা দরকার।’
পুলিশের বিষয়টি দেখা উচিত ছিল : ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার
ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের এমন নির্লিপ্ততা পুলিশের দায়িত্ববোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) এ কে এম হাফিজ আক্তার সরাসরি জবাব না দিয়ে বলেন, ‘লোকাল পুলিশ হোক আর বাইরের পুলিশ হোক এটা অবশ্যই দেখবে।’
পুলিশ যাত্রীদের রক্ষা না করে সেখান থেকে কীভাবে চলে যেতে পারে?- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘হয়তো বা অন্য কাহিনি থাকতে পারে।’
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি বিষয়টা দেখে ডিসিকে ফোন করেছিলাম। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে অভিযান চলছে। একেক পুলিশের একেক ধরনের ডিউটি। এ বিষয়ে পুলিশ অবগত হয়েছে। এটা ছিনতাইয়ের ঘটনা ছিল না, অন্য ঘটনা ছিল। এটা ভাইরাল হয়েছে অন্যভাবে।’
আরও পড়ুন:প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আসন্ন উপজেলা নির্বাচন ব্যর্থ হলে ৭ জানুয়ারি (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন) যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেটি ব্যর্থ হবে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বিষয় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘দেশের নির্বাচনে আবেগ-অনুভূতির জন্য কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয়। ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। যেকোনো মূল্যে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হবে। এই নির্বাচনে ব্যর্থ হলে বিগত সংসদ নির্বাচনে যে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে, তা ক্ষুণ্ন হতে পারে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র আছে, তা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে।’
সভায় দেশের সব জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরীর নেতৃত্বে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন সাংবাদিকরা।
টেলিভিশন ক্যামেরাম্যান জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের (টিসিএ) উদ্যোগে বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, ডিইউজে সভাপতি সাজ্জাদ আলম তপু ও সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মুজতবা ধ্রুব, বাচসাস সভাপতি রাজু আলীম, সাধারণ সম্পাদক রিমন মাহফুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবু প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সাংবাদিকরা নানা ক্ষেত্রে আজ নির্যাতিত। তারা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানাভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেন তাদেরকে আমরা মননশীল মনে করি। কিন্তু তারা যখন মাস্তানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন, তখন তারা সমাজে কী বার্তা দেন?
নারকীয় এই হামলায় নেতৃত্ব দেয়া জয় চৌধুরী, শিবা শানু ও আলেকজান্ডার বোসহ হামলায় জড়িত সবাইকে শিল্পী সমিতির সদস্যপদ বাতিলসহ আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।
মানববন্ধনে আরও অংশ নেন বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত বিনোদন বিটের সাংবাদিকরা।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকেলে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে শিবা শানু, জয় চৌধুরী ও আলেকজান্ডার বোর নেতৃত্বে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করা হয়। এতে প্রায় ২০ জন সাংবাদিক আহত হন। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন চারজন।
তদন্ত কমিটি
এদিকে হামলার ঘটনা তদন্তে ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি ও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে পাঁচ জন করে রাখা হয়েছে। আর উপদেষ্টা হিসেবে আছেন প্রযোজক আরশাদ আদনান।
দশজনের তদন্ত কমিটিতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে লিমন আহমেদ, রাহাত সাইফুল, আহমেদ তৌকির, বুলবুল আহমেদ জয় ও আবুল কালাম এবং শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে মিশা সওদাগর, ডি এ তায়েব, নানাশাহ, রুবেল ও রত্না রয়েছেন।
আরও পড়ুন:উপজেলা নির্বাচন থেকে মন্ত্রী ও এমপিদের স্বজনরা সরে না দাঁড়ালে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বুধবার দলের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
কাদের বলেন, ‘দলীয় সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রীদের নিকটাত্মীয় এবং স্বজনদের প্রার্থী না হতে দলীয় যে নির্দেশনা, তা না মানলে সময়মতো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় পেরিয়ে গেছে। এদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন যে, আমরা বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হতো। তারপরও কেউ কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন, কেউ কেউ করেননি।
‘নির্বাচন কমিশনে সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে কেউ ইচ্ছা করলে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারেন। এ বিষয়টা চূড়ান্ত হতে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এখানে কেউ অমান্য করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে দলে; সময়মতো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে কাদের বলেন, ‘আমাদের দলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের বিষয়টি আছে। দল যার যার কর্মকাণ্ড বিবেচনায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নিয়ে থাকে। চূড়ান্ত পর্যায়ে যারা প্রত্যাহার করবে না, এ ব্যাপারে দলের সিদ্ধান্ত সময়মতো নেয়া হবে।’
চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেও কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে কি না, এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সাধারণ ক্ষমা একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে দলীয় রণকৌশল। সেটা হতেই পারে। সেটা দলের সভাপতি নিতে পারেন। নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ আছে।’
বিএনপির সমাবেশের দিনে আওয়ামী লীগেরও সমাবেশ থাকে—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির সন্ত্রাস থেকে জনগণকে রক্ষায় কর্মসূচি দেয় আওয়ামী লীগ। বিএনপি একতরফা সমাবেশ করতে গেলে সন্ত্রাস, আগুন সন্ত্রাসের আশঙ্কা থেকেই যায়। জনগণের জানমাল রক্ষায় সরকারি দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব আছে।
‘আমরা মাঠে থাকলে তারা এসব অপকর্ম করতে মানসিকভাবে চাপে থাকবে। সে জন্য আমরা কর্মসূচি দিই। বিএনপির চোরাগোপ্তা হামলা প্রতিহত করতে জনগণের স্বার্থে আমাদের কর্মসূচি থাকা উচিত।’
আরও পড়ুন:গ্যাস পাইপলাইনের জরুরি কাজের জন্য বুধবার তিন ঘণ্টা রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় গ্যাস থাকবে না।
এদিন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ অবস্থা বিরাজ করবে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের তথ্য অনুযায়ী, যেসব এলাকায় সব শ্রেণির গ্রাহকদের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে সেগুলো হলো- শনির আখড়া, বড়ইতলা, ছাপড়া মসজিদ, দনিয়া, জুরাইন, ধোলাইরপাড় ও কদমতলী।
আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহে চাপ কম থাকতে পারে জানিয়ে গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিতাস গ্যাস।
রাজধানীর সদরঘাটের শ্যামবাজার ঘাটে একটি লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে ওই আগুনের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এমভি বাঙালি নামের লঞ্চটিতে কোনো যাত্রী ছিল না।
ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানিয়েছেন, দুপুর ১টা ৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় চারটি ইউনিট। পরে যোগ দেয় আরও একটি ইউনিট।
তিনি জানান, দুপুর পৌনে ২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। লঞ্চটির তৃতীয় তলায় আগুনের সূত্রপাত। আগুনের কারণ ও বিস্তারিত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, লঞ্চটি নোঙর করা ছিল। হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) গেছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে শেখ হাসিনা আমিরকে টাইগার গেটে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। খবর বাসসের
তারা সেখানে একান্ত বৈঠকেও মিলিত হবেন। পরে তারা দুই দেশের মধ্যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর প্রত্যক্ষ করবেন।
পিএমও ত্যাগের আগে আমির টাইগার গেটে রক্ষিত ভিজিটরস বুকেও সই করবেন। এরপর তিনি বঙ্গভবনে যাবেন যেখানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কাতার আমিরের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছেন।
সন্ধ্যায় আমির একটি বিশেষ বিমানে কাতারের উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আমন্ত্রণে কাতারের আমির সোমবার দু দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা এসেছেন।
আগামী ২৬ এপ্রিলের (শুক্রবার) শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ স্থগিত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করা হয়েছিল, কিন্তু অনুমতি দেয়া হয়নি। ফলে সমাবেশ আপাতত স্থগিত। শান্তি সমাবেশের তারিখ পরে জানানো হবে।’
প্রসঙ্গতঃ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এ শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
রোববার (২১ এপ্রিল) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের ঘোষণা দেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বেলা ৩টা থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করা হবে।
অবশ্য এর আগে গত শনিবার (২০ এপ্রিল) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ দলের নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে ২৬ এপ্রিল বিকেলে নয়াপল্টনে সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। পরে তাপপ্রবাহের কারণ দেখিয়ে সোমবার তা স্থগিত করে দলটি।
মন্তব্য