মেধাবী ছাত্র তানভীর মোহাম্মদ ত্বকী হত্যাসহ সব শিশু হত্যার বিচার চেয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী।
নগরীর দেওভোগ এলাকায় চারুকলা ইনস্টিটিউট ভবনে মঙ্গলবার বিকেলে আয়োজিত শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এ বিচার দাবি করেন মেয়র।
তিনি বলেন, ‘শেখ রাসেলের জন্মদিনে দাঁড়িয়ে আমরা দাবি করছি, নারায়ণগঞ্জের ত্বকী হত্যার বিচার হোক। যেটি অত্যন্ত আলোচিত হত্যাকাণ্ড। এই শহরে এ রকম আরও অনেক শিশু হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। আমরা চাই সকল শিশু হত্যার বিচার করা হোক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই শেখ রাসেলের হত্যাকারীদের যেভাবে বিচার হয়েছে। তদ্রুপভাবে যেন নারায়ণগঞ্জসহ সারা দেশের শিশু হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হয়।’
আইভী বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চাই। কারণ মানবতার জননী তিনি। তার কাছে বিচার চেয়ে সবাই বিচার পায়। তাই তার কাছে আমাদের অনেক বেশি দাবি।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য আনিসুর রহমান দিপু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাতসহ বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা।
নাটোরে হত্যা ও বিস্ফোরণ মামলায় নির্দিষ্ট তারিখে আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ছবির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে নাটোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শরীফ উদ্দিন এ আদেশ দেন।
মামলার বরাতে আদালত সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ৮ ডিসেম্বর রাতে নাটোর শহরের রেল স্টেশন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা মোটরসাইকেল বহর নিয়ে আসার পথে আলাইপুর জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিএনপি নেতা দুলুসহ তার সমর্থকরা পিস্তল, রিভলবার, দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে বহরের পথরোধ করে হামলা চালায়। হামলার সময় গুলিবিদ্ধ হন স্থানীয় আওয়ামী লীগকর্মী পলাশ। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার পরের দিন আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ মোর্তজা আলী বাবলু বাদী হয়ে দুলুকে প্রধান আসামি করে ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫ থেকে ১৬ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
এছাড়া ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোর জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম মাসুমের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের শান্তিপূর্ণ একটি মিছিল জেলা বিএনপি কার্যালয় অতিক্রম করার সময় দুলুর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ছবির নির্দেশে মিছিলে হামলা করে বিএনপি নেতা-কর্মীরা। এসময় ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। ঘটনার দিনই ছাত্রলীগ নেতা মাসুম বাদী হয়ে ছবিকে প্রধান আসামি করে ৩৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ১৫ থেকে ২০ জনের নামে মামলা করেন।
২০১৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর শহরের কানাইখালি এলাকায় বিএনপি নেতা বাবুল চৌধুরীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের মিছিলে হামলা চালানো হয় এবং ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি শহরের তেবাড়িয়া এলাকায় আওয়ামী লীগের বিজয় র্যালিতে বিএনপি হামলা চালায় বলেও অভিযোগ ওঠে। সেসময় গুলি করে যুবলীগকর্মী রাকিব রায়হানকে হত্যা করা হয়।
এসব মামলায় শুনানির নির্দিষ্ট তারিখে উপস্থিত না হওয়ায় দুলু ও তার স্ত্রী ছবির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
এ বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী আবুল হোসেন বলেন, ‘আসামি রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু অসুস্থ থাকায় আদালতের ধার্যকৃত তারিখে হাজির হতে পারেননি। এজন্য হাসপাতালের চিকিৎসা সনদ আদালতে দাখিল করা হয়েছে। আর স্বামীর অসুস্থতায় সেবাযত্ন করায় সাবিনা ইয়াসমিন ছবিও আদালতে হাজির হতে পারেনি। আদালতে সময় প্রার্থনা করেছিলাম। তবে তা নামঞ্জুর করে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আমরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হব।’
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আরিফুর রহমান বলেন, ‘হত্যা মামলার আসামি দুলু আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে নানা আবেদন করে দীর্ঘদিন আদালতে অনুপস্থিত। নানা কূটকৌশলে তিনি আদালতের সময় নষ্ট করছেন। এ বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হলে বিচারক তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।’
আরও পড়ুন:নওগাঁর আত্রাইয়ে স্কুল থেকে ফেরার পথে আবুল হোসেন নামে এক স্কুল শিক্ষকের দুই পায়ের রগ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
উপজেলার পাঁচপুর মোড় এলাকায় সোমবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আবুল হোসেন আত্রাই উপজেলার বিহারীপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জগদাস উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে আত্রাই থানার ওসি তারেকুর রহমান সরকার জানান, শিক্ষক আবুল হোসেন সোমবার বিকেলে উপজেলার জগদাস উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ছুটির পর মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে পাঁচুপুর মোড় এলাকায় পৌঁছলে দুর্বৃত্তরা তার পথ আটকিয়ে তাকে মারধর করে এবং তার দুই পায়ের গোড়ালি থেকে রগ কেটে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে লোকজন তাকে উদ্ধার করে আত্রাই হাসপাতালে ভর্তি করালে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
তিনি আরও জানান, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
শিক্ষক আবুল হোসেনের শ্বশুর সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুল থেকে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার সময় পথে এ ঘটনা ঘটেছে।’
আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক দোলন আক্তার বলেন, ‘শিক্ষক আবুল হোসেনের দুই পায়ের গোড়ালি শুধু একটু চামড়ার সঙ্গে লেগে আছে। তাছাড়া প্রায় পুরো গোড়ালিই কাটা। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে চুরি ঠেকাতে নিয়োগ করা প্রহরীদের সঙ্গে বিতণ্ডার জেরে মধ্যরাতে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে খুন করা হয়েছে।
সোমবার রাত ১২টার দিকে উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের নয়নপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত বাদশা মিয়া ওই গ্রামের মৃত আমির উদ্দিনের ছেলে ও বেতকাপা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া তিনি বেতকাপা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ ওয়ার্ডের নির্বাচিত ইউপি সদস্য (মেম্বার) ছিলেন।
অভিযোগ উঠেছে, পাপুল নামে এক যুবক এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে খুন করেছে তাকে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ওই নেতার আরও দুই ভাই।
পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) দীবাকর অধিকারী নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি ওই এলাকায় রাতে আশঙ্কাজনক হারে চুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় কয়েকজন যুবককে প্রহরী (পাহারাদার) নিয়োগ করা হয়। সিদ্ধান্ত হয়, জরুরি কারণ ছাড়া রাত ১০টার পর অযাথা ঘোরাফেরা করা যাবে না। কেউ অযাথা ঘোরাফেরা করলে তাকে জবাবদিহিতার আওতায় নেয়া হবে।
স্থানীয়ভাবে এমন সিদ্ধান্তের পর সোমবার রাত ১২টার পর নয়নপুর গ্রামের মোসলেম আকন্দের (ভোলা) ছেলে পাপুল আকন্দকে পেয়ে খায়রুল নামে এক প্রহরী (পাহারাদার) পথরোধ করেন এবং এত রাতে বাইরে থাকার কারণ জানতে চায়। এ সময় আটকানোর বিষয় নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে ওয়ার্ড সদস্য বাদশা মিয়াসহ অন্যরা বিষয়টি মীমাংসার জন্য সেখানে উপস্থিত হন। এতে বাদশা মিয়ার সঙ্গে পাপুলের তর্ক বাধে। পরে উভয়পক্ষের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে পাপুল তার কাছে থাকা ছুরি দিয়ে বাদশা মিয়ার বুকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করতে থাকে। বাদশা মিয়ার ভাই স্বপন ও সবুজ এগুতে গেলে তাদেরকেও ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় পাপুল।
পরে স্থানীয়রা গুরত্বর আহত বাদশা মিয়াসহ তিনজনকেই উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পলাশবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাদশা মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ, সহকারী পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল) উদয় কুমার সাহা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল মণ্ডল ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ওসি (তদন্ত) দীবাকর অধিকারী বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক ইউপি সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত পাপুল আকন্দকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে। আশা করছি দ্রুতই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। মামলা করা হবে।
কোনো দেশের নিষেধাজ্ঞা মেনে নয়, নিজেদের সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ চলবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘একাত্তরে আমাদের হারাতে পারেনি, আজও নিষেধাজ্ঞা দিয়ে শেখ হাসিনাকে থামানো যাবে না। আমরা কারও নিষেধাজ্ঞার পরোয়া করি না। আর তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা কেউ শোনে না। ভেনিজুয়েলা, গ্যাবন, সুদান কেউ শোনেনি। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞাও প্রথম সারির অনেক মোড়ল দেশ মানে না।।’
মঙ্গলবার রাজধানীর কেরানীগঞ্জে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে এ মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
‘যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয়, আর নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখায় বিএনপি’ মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কী আশ্চর্য! মনে হয় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে ভয় দেখানোর এজেন্সি দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কারও কাছে মাথা নত করবে না। বিএনপি কীভাবে ঢাকা দখল করে তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে আওয়ামী লীগ। লাল সবুজের পতাকা নিয়ে আওয়ামী লীগ সারা দেশ দখল করবে। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব যতদিন আছে, ততদিন আমরা লড়ে যাব। এই বীরের দেশে বীর জনতা কারও কাছে মাথা নত করবে না।’
কেরানীগঞ্জের নেতা-কর্মীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ভোটের জন্য তৈরি হয়ে যান। ভোট জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। বারবার আসব না, আপনারাই শেখ হাসিনার হয়ে জনগণের কাছে যাবেন। নৌকার হয়ে শেখ হাসিনার জন্য ভোট চাইবেন। শেখ হাসিনার উন্নয়নের কথা বলবেন।’
এসময় আওয়ামী লীগের কোনো কর্মীর গায়ে আঘাত করলে এবার পাল্টা আঘাত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আঘাত করলে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ বিএনপিকে ক্ষমা করবে না। মির্জা আব্বাস ঝিনাইদহের রাস্তায় দাঁড়িয়ে বলছে- আজ নাকি চাঁদ রাত, চাঁদ রাতের আনন্দ।
‘কিছু লোকজন দেখে মির্জা আব্বাস আপ্লুত হয়ে চাঁদ রাতের স্বপ্ন দেখছেন। ক্ষমতার ময়ূর সিংহাসন দেখছেন মনে মনে। মির্জা আব্বাস সাহেব, যত চাঁদ রাতই দেখুন, আপনাদের এই স্বপ্ন, রঙিন বেলুনের মতো অচিরেই চুপসে যাবে। ক্ষমতার মুখ আপনারা দেখবেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি করেছে। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য ৪৮ মিনিটের জন্য একটা আন্দোলনও করতে পারেনি।’
এ ইস্যুতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের কান্না প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কত মায়ের বুক খালি করে, কতজনকে স্বামীহারা, বাবাহারা করে বিএনপি এখন নিজেই কাঁদছে। ফখরুল সাহেব কাঁদতে কাঁদতে বাংলাদেশ কান্নার দরিয়া হয়ে যাবে, তবুও আপনাদের ক্ষমা নেই। পিতৃহত্যা, মাতৃহত্যার প্রতিশোধ আমরা নেব। বাংলাদেশের মানুষ বিএনপিকে ক্ষমা করবে না।’
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, বিদুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানসহ ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
আরও পড়ুন:কুমিল্লার দেবিদ্বারে গ্রামের চলাচলের রাস্তা নির্মাণের জের ধরে মো. রহিম সরকার নামে এক গাড়িচালককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় বিএনপির দুই নেতা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।
উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের বক্রিকান্দি গ্রামের মধ্যনগর বহুমুখী মাদ্রাসার পূর্ব পাশে সোমবার সকালে এই হামলার ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়রা আহত রহিমকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
এই হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার আহত রহিম সরকারের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার দেবিদ্বার থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তবে বাদী এজাহারে প্রধান আসামি হিসেবে বিএনপি নেতা কাউছার ভূইয়া ও মুমিন ভূঁইয়ার নাম উল্লেখ করলেও তাদেরকে বাদ দিয়ে মামলা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ওসির বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত কাউছার আহম্মদ ভূঁইয়া দেবিদ্বার উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। অপরজন মুমিন ভূঁইয়াই বিএনপি নেতা হিসেবে বেশ পরিচিত।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রহিম সরকার মোবাইল ফোনে বলেন, ‘সোমবার সকাল ৬টার দিকে আমি গ্রামে রাস্তায় হাঁটতে বের হই। এ সময় বিএনপির ক্যাডার কাউছার আহাম্মদ ভূইয়ার নেতৃত্বে সন্ত্রাসী মুমিন ভূইয়া, শাহাদাত ভূইয়া, আবু সাঈদ ভূইয়া, নাজিম ভূইয়াসহ আর কয়েকজন মোটর সাইকেল দিয়ে আমার গতিরোধ করে।
‘সন্ত্রাসীরা আমাকে টেনেহিঁচড়ে মধ্যনগর বহুমুখী মাদ্রাসার পূর্ব পাশে একটি কালভার্টের ওপর নিয়ে যায়। সেখানে তারা রামদা, লোহার রড, হকিস্টিক ও গাছের ডাল দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আমাকে গুরুতর আহত করে। তারা আমার দুই পা ও দুই হাত ভেঙে দেয়। আমি চিৎকার করলেও সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে হামলাকারীরা আমাকে মৃত ভেবে রাস্তায় ফেলে যায়।’
সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। তার পুরো শরীর রড, রামদা ও হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমি সোমবার থানায় কাউসার ও মুমিনসহ ৮/১০ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছি। কাউসার ও মুমিনেরর নাম আমি মূল এজাহারে দিলেও ওসি বলেন যে তাদের নামে মামলা নেয়া যাবে না।
‘ওসি আমাকে ধমক দিয়ে ও চাপ প্রয়োগ করে একটি কাগজে সই নেন। মঙ্গলবার জানতে পারি যে কাউছার ভূঁইয়া ও মুমিন ভূইয়াকে বাদ দিয়ে ওসির বানানো মনগড়া এজাহারে মামলা রুজু করা হয়েছে।’
দেবিদ্বার থানার ওসি কমল কৃষ্ণ ধর এ বিষয়ে বলেন, ‘এজাহার থেকে নাম বাদ দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। বাদীর দায়ের করা এজাহারে উল্লেখ করা সবার নাম মামলার এফআইআর-এ দেয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
সেতুটির পাটাতন কোথায় হারিয়ে গেছে সেই কবেই। চোখে পড়বে কিছু বাঁশের চাটাই, তারও বেশিরভাগই নষ্ট হয়ে গেছে। বয়োবৃদ্ধরা অন্যদের সহযোগিতায় পার হচ্ছে। স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা পার হচ্ছে ভয় আর শঙ্কা নিয়ে। নিয়মিত বিরতিতে ঘটে চলেছে দুর্ঘটনা। দেখার কেউ নেই।
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নে অকেজো হয়ে পড়া বেইলি সেতুর এই হাল দীর্ঘদিনের। উপজেলার পুঁইছড়ি ও ছনুয়া ইউনিয়নের প্রায় এক লাখ মানুষ যাতায়াতের মাধ্যম এই সেতু। জলকদর খালের ওপর সেতুটি সংস্কার না করায় জনভোগান্তি চরমে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এই সেতু ধরে রাজাখালী ফৈজুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ, রাজাখালী বিইউআই ফাজিল মাদ্রাসা, পুঁইছড়ি মদিনাতুল উলুম মোহাম্মদিয়া মাদ্রাসা, পুঁইছড়ি কাদেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছনুয়া কাদেরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, ছনুয়া ছেলবন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিত্যদিন যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু পাটাতন না থাকায় সেতুটি হয়ে আছে মৃত্যু ফাঁদ।
অভিভাবকরা সন্তানকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে সারাক্ষণ শঙ্কায় থাকেন। যে সন্তান একাকী স্কুল-মাদ্রাসায় যাতায়াত করার কথা তাকেও একা ছাড়ার সাহস পান না তারা। শুধু সেতুটি হাত ধরে পারাপারের জন্য অভিভাবককে সঙ্গে থাকতে হয়। তারপরও সেতুটি হেঁটে পারাপার হতে গিয়ে প্রায় ঘটে চলেছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এ অবস্থায় স্থানীয়রা চাঁদা তুলে বাঁশের চাটাই দিয়ে কোনোভাবে চলাচলের চেষ্টা করছেন বহুদিন ধরে।
উপজেলা এলজিইডি দপ্তর সূত্র জানায়, রাজাখালী আরবশাহ্ বাজারের উত্তরে অবস্থিত ১৩০ মিটার দীর্ঘ পুঁইছড়ি-ছনুয়া ব্রেইলি সেতুটি ২০০৬ সালে নির্মিত হয় । চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়লে উপজেলা পরিষদের উদ্যোগে ২০১৭ সালে এটি সংস্কার করা হয়। তবে নিয়মিত লবণ ও মাছবাহী গাড়ি চলাচল করায় নিঃসৃত পানিতে ব্রিজটির পাটাতন দ্রুতই নষ্ট হয়ে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুর ৯০ শতাংশের বেশি পাটাতন নষ্ট হয়ে গেছে। প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে চরম ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন শিক্ষার্থীসহ দুই ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। একটু অসতর্ক হলেই পা হড়কে ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। কয়েকেদিন আগে রাজাখালী ফৈজুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী নষ্ট হয়ে যাওয়া পাটাতনে পা আটকে গুরুতর আহত হয়।
সেতু দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আতিকুর রহমান বলেন, ‘এই সেতু দিয়ে স্কুল ও মাদ্রাসা পড়ুয়া ছোট ছোট বাচ্চারা যাতায়াতের সময় পা পিছলে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটছে নিয়মিত। সেতুটি সংস্কার করাটা খুবই জরুরি।'
ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. হারুনুর রশীদ বলেন, ‘সেতুটি সংস্কারের জন্য উপজেলা এলজিইডির দায়িত্বে নিয়োজিতদের বহুবার বলা হয়েছে। তারা লোক দেখানো মাপজোখ আর পরিদর্শন করেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। আমার এলাকার মানুষের কষ্টের শেষ নেই। লোকজন ভাবছে আমি কাজ করছি না। কিন্তু আমি যে নিরুপায় তা বুঝাই কী করে?'
স্থানীয় ইউপি সদস্য আরাফাতুল ইসলাম এমরান বলেন, ‘প্রতিদিন দশ হাজারের বেশি মানুষ এই সেতু দিয়ে চলাচল করে। লবণবাহী শত শত ট্রাক চলে। তাই এটি বার বার সংস্কার করা হলেও তা টেকসই হয় না। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করব যাতে এটি কংক্রিটের সেতুতে রূপান্তরে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হয়।'
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এলজিইডি বাঁশখালী উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফাহাদ বিন মাহমুদ বলেন, 'বর্তমানে ব্রেইলি সেতু খুব একটা দেখা যায় না। এটি সংস্কারের জন্য প্রাক্কলন জমা দিয়েছি বেশ কয়েকবার। নির্বাচনের আগে মনে হয় না এটার কোনো গতি হবে। এরপরও আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।'
আরও পড়ুন:র্যাব পরিচয়ে মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহাবুবুর রহমান রবিন ও সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার হাসান খান সাজু।
রোববার রাতে উপজেলার খাসনগর এলাকার রয়েল রিসোর্টের সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বিকেলে তাদেরকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান মোল্লার আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে।
মামলার বরাত দিয়ে সোনারগা থানার পুলিশ পরির্দশক মাহবুব আলম জানান, ১৩ সেপ্টেম্বর উপজেলার মোগরাপাড়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে দুই সহযোগীকে নিয়ে ব্যবসায়ী সুমনের গাড়ি থামিয়ে ২৮৩টি মোবাইল ছিনতাই করেন ছাত্রলীগের এই দুই নেতা। পরে তিনি সোনারগাঁ থানায় ছাত্রলীগের দুই নেতার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও দুইজনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করে। ছাত্রলীগের এই দুই নেতার বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক মামলা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
আদালত পুলিশের আসাদুজ্জামান জানান, র্যাব পরিচয়ে ছিনতাইয়ের অভিযোগে করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তারের পর রিমান্ড আবেদন জানিয়ে পুলিশ আদালতে পাঠায়। আদালত তাদেরকে একদিন করে রিমান্ডের নির্দেশ দেয়।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম রাসেল এ বিষয়ে বলেন, ‘ছাত্রলীগের মতো একটি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থেকে এসব কর্মকাণ্ড করায় আমরা বিব্রত। রবিন ও সাজুর বিরুদ্ধে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আগে থেকেই ছিল।
‘আমরা জেলা ছাত্রলীগ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবেন।’
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপের অভিযোগে সোনারগাঁ পৌরসভা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান রবিনকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয় জেলা ছাত্রলীগ। আর ২০১৯ সালে ডাকাতির মালামালসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর সোনারগাঁও পৌর ছাত্রলীগের সেক্রেটারি শাহরিয়ার হাসান খান সাজুকে বহিষ্কার করে উপজেলা ছাত্রলীগ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য