দেশের ৫৭টি জেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে সোমবার। এই ভোটগ্রহণকালে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ও সিসিটিভি ক্যামেরা সার্বক্ষণিক সচল রাখার সুবিধার্থে নির্বাচনি এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
রোববার ইসির উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত নির্দেশনাটি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘সোমবার সারা দেশের ৫৭টি জেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ইভিএম-এর মাধ্যমে প্রতি উপজেলা সদরে স্থাপিত ভোটকেন্দ্রে বিরতিহীনভাবে চলবে। এ নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ মনিটরিং করার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
‘ক্যামেরা ও ইভিএম যথাযথভাবে সচল রাখার স্বার্থে এবং ভোটাররা যাতে সুচারুরূপে তাদের ভোট প্রয়োগ করতে পারেন সে লক্ষ্যে ৫৭ জেলায় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উপরোক্ত সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের জন্য আদিষ্ট হয়ে অনুরোধ করা হলো।’
তিন পার্বত্য জেলা বাদে ৬১টি জেলা পরিষদে নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নোয়াখালী জেলা পরিষদ নির্বাচন আদালত কর্তৃক স্থগিত করা হয়েছে। আর ভোলা ও ফেনী জেলায় সব পদে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এই অবস্থায় বাকি ৫৭টি জেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে চেয়ারম্যান পদে ৯২ জন, সদস্য পদে ১ হাজার ৪৮৫ জন ও সংরক্ষিত পদে ৬০৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচনে ২৬ জন চেয়ারম্যান, ১৮ জন মহিলা সদস্য এবং ৬৫ জন সাধারণ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ৪৬২টি ভোটকেন্দ্রের ৯২৫টি ভোটকক্ষে ৬০ হাজার ৮৬৬ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিপদ শেষ হয়ে যায়নি। নতুন করে বিপদ আসার আশঙ্কা আছে। গণতন্ত্রকে আঘাত ও নষ্ট করার চক্রান্ত চলছে। বাংলাদেশকে আবারও নতুন বিপদে ঠেলে দেয়ার ষড়যন্ত্র চলছে।
‘ঐতিহাসিক বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে মহিলা দলের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির বিরুদ্ধে সবসময় ষড়যন্ত্র হয় মন্তব্য করে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আবারও গণতন্ত্রকে দুর্বল ও ধ্বংস করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আপনারা সবাই সজাগ ও সতর্ক থাকবেন। সংগঠনকে আরও দৃঢ় করেন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘শেখ হাসিনা তার ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে মহিলা দলসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্মমভাবে দমন-পীড়ন চালিয়েছে।
‘অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে শেখ হাসিনা ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথা বলতেন। তার কারণে শিক্ষার্থীসহ বহু মানুষ নিহত হয়। সেই ভয়ংকর দানবকে সরিয়ে ৫ আগস্ট আমরা মুক্ত হয়েছি। এটা সত্য যে, শেখ হাসিনা গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।’
ফখরুল বলেন, ‘স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটলেও জাতি এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এই চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে আমাদের খুব সাবধানে এগুতে হবে।’
প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় সংস্কার দ্রুত বাস্তবায়ন করে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের সমর্থনে জনগণের সেবা করার জন্য একটি নির্বাচিত সরকারই সর্বোত্তম সরকার। নির্বাচনই হচ্ছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চাবিকাঠি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কেউ দলকে বিভক্ত করতে পারেনি। বরং বিএনপি আরও শক্তিশালী হয়েছে। দলকে আরও শক্তিশালী করে আমরা এগিয়ে যাব এবং নিঃসন্দেহে নির্বাচনে জিতে দেশ পুনর্গঠনে কাজ করব।’
আরও পড়ুন:কোনো ধরনের ছলচাতুরির আশ্রয় না নিয়ে অবিলম্বে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা এবং রাষ্ট্রীয় সংস্কারের সুস্পষ্ট রূপরেখা দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মঙ্গলবার ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মুক্তিযোদ্ধা মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সাবুর ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম ও প্রজন্ম একাডেমি যৌথভাবে এই আলোচনার আয়োজন করে।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র কাঠামোর কী কী সংস্কার করতে চায় এবং সেটা করতে কতদিন লাগবে, কোনো ছলচাতুরি ছাড়াই তা স্পষ্ট করে অবিলম্বে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার আহ্বান জানাচ্ছি।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘জাতিকে অন্ধকারে রেখে আপনারা যা খুশি তাই করবেন, আমরা তো সেটা মেনে নিতে পারব না। সুতরাং জাতিকে ধোঁয়াশায় রাখবেন না। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন গত ১৬ বছরের বিনা ভোটের সরকারকে মানেনি। এই সরকারকেও দীর্ঘদিন মানবে না।
‘কোনো প্রকার কূটকৌশল বা ছলচাতুরি ছাড়াই কবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তা জাতিকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিন। জাতি নির্বাচনের তারিখ জানতে চায়। আপনি যদি জাতিকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে রাখেন তবে তাদের অলস বসে থাকা এবং আপনার প্রহসন দেখার কোনো কারণ নেই।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, “সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানকে যারা ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন তারা প্রকৃতপক্ষে দেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও ১৯৭১ সালে জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার বিরোধী।”
নির্বাচন ও সংস্কার নিয়ে সরকার নিজের অবস্থান স্পষ্ট না করায় দেশে এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের কথা বললেই আপনারা বলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আমরা উদগ্রীব হয়ে পড়েছি। এখন আমরা যদি বলি, আপনারা নির্বাচনের কথা না বলে ক্ষমতায় থাকার জন্য পাগল হয়ে গেছেন? সুতরাং কোনোরকম ছলচাতুরি করবেন না।
‘দেশের পরিস্থিতি বর্তমানে অস্পষ্ট এবং আগামী দিনগুলোতে এটি আরও জটিল হতে পারে। এই প্রতিকূল সময়ে আমরা বিশ্বাস করতে চাই, বর্তমান সরকার জাতিকে আশার আলো দেখাবে। অনুরোধ করব, এমন কিছু করবেন না যাতে জাতি আপনাদের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে।’
মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপি ১৭ বছর ধরে গণতন্ত্র ও মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার জন্য সংগ্রাম করছে। যারা বলছেন আমরা ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া, তারা ভুল করছেন। বাস্তবে আমরা মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য লড়াই করছি।’
সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে সরকারের উপদেষ্টাদের বক্তব্যের সমালোচনা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য। তিনি বলেন, ‘এসব সংস্কার বাস্তবায়নে কত সময় লাগবে সে বিষয়ে আপনারা পরিষ্কার করে কিছু বলছেন না। বাস্তবে আমরা সংস্কারের কোনো লক্ষণ দেখছি না। নির্বাচন নিয়েও আপনারা স্পষ্ট করে কিছু বলছেন না।
‘সরকারের ভেতরের লোকজনও সংবিধান সংশোধন ও সংবিধান পরিবর্তন নিয়ে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিচ্ছেন।
প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘সংবিধান সংশোধনের আপনি কে? সংসদ ছাড়া কি সংবিধান পরিবর্তন হবে? আপনাদের মনে রাখতে হবে, সংবিধান কোনো রুক্ষ খসড়া নয় যে আপনি নিজের ইচ্ছামতো পরিবর্তন করতে পারেন।
‘সরকার গঠনতন্ত্র সংশোধন করতে চাইলে মুক্তিযোদ্ধা ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অংশীজনের মতামত নেয়া জরুরি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যোগ না দিয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা কিছু ব্যক্তি এখন দেশে ফিরে উচ্চৈস্বরে কথা বলছেন। তারা সংবিধান পরিবর্তনের কথাও বলছেন।’
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ শান্তি চায়, পরিত্রাণ চায়। যথেষ্ট হয়েছে- আমাদের শান্তি দিন, আমাদের স্বস্তি ফিরিয়ে দিন। আপনারা নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এসেছেন, কিন্তু এখন কোনো সুস্পষ্ট রূপরেখা ছাড়াই সংস্কারের কথা বলছেন। আপনারা কী করতে চান তা জনগণকে স্পষ্টভাবে বলুন। জাতিকে অন্ধকারে রেখে আমরা আপনাদের যা খুশি তাই করতে দেব না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কেন দেশে ফিরতে পারছেন না তা বোধগম্য নয়। আমরা বুঝতে পারছি না, কেন তার মামলা বা আমাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করা হচ্ছে না। অধ্যাদেশের মাধ্যমে এসব মামলা প্রত্যাহার করা যায়, কিন্তু আপনারা তা করছেন না।’
আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘দেশে বর্তমানে একটা ধোঁয়াশাচ্ছন্ন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এই সরকার বেশি সময় থাকবে, না যথাসময়ে দায়িত্ব পালন করে চলে যাবে- বুঝতে পারছি না। আপনারা আমাদের সহযোগিতা চান কি-না সেটাও বুঝতে পারছি না।’
তিনি বলেন, ‘এই সরকার ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফসল, তাদের রক্তের ফসল। এই সরকারের কাছে দেশবাসীর প্রত্যাশা, তারা নির্বাচনমুখী প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুততম সময়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। সরকার এই দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে ইতিহাসে তারা উজ্জ্বল হয়ে থাকবেন। এর ব্যত্যয় ঘটলে দেশটা ধ্বংসের দিকে যেতে পারে। তাই এই সরকারের ব্যর্থ হওয়া যাবে না।’
অনুষ্ঠানে আলোচ্য বিষয় নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীন।
প্রজন্ম একাডেমির সভাপতি কালাম ফয়েজীর সভাপতিত্বে ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সিনিয়র সহসভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম কলিমের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।
আরও পড়ুন:বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপি এমন রাষ্ট্রীয় সংস্কার চায়, যা দেশের কোটি কোটি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন এবং তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।
লন্ডন থেকে এক সমাবেশে ভার্চুয়ালি দেয়া বক্তব্যে তিনি একথা বলেছেন।
বিএনপির প্রয়াত মন্ত্রী ও স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার যশোর টাউন হল মাঠে এই সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি।
তারেক রহমান বলেন, ‘জাতি এখনও এক সংকটময় সময় পার করছে। কারণ ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী সরকারের অশুভ প্রেতাত্মারা এখনও দেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অনেকেই এখন সংস্কারের কথা শুনি। অনেকে বিভিন্ন সংস্কারের কথা বলছেন। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন এবং এই দেশকে বদলে দিতে বিএনপিই প্রথম সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিল।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০১৭ সালে বিএনপির ভিশন-২০৩০ সনদ ঘোষণা করে রাষ্ট্রীয় সংস্কারের রূপরেখা দিয়েছেন।
‘পরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যুগপৎ আন্দোলনে যোগ দেয়া গণতান্ত্রিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করে রাষ্ট্রীয় সংস্কারের জন্য ৩১ দফা রূপরেখা দিয়ে বিএনপি ২০২৩ সালেও সংস্কার প্রস্তাব উপস্থাপন করেছিল।’
বিএনপির এই দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা বলেন, ‘এসব সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য কী? এটা কি শুধুই সংবিধানের কয়েক লাইন পরিবর্তনের জন্য? অবশ্যই না। দেশ পরিচালনায় পরিবর্তিত সময় এবং বর্তমান বিশ্বব্যবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য সংস্কার প্রয়োজন।
‘একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি মনে করি, দেশের কোটি কোটি সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা এবং দেশে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সংস্কার হওয়া উচিত।’
বিএনপির এই নেতা মনে করেন, সংবিধানের শুধু কয়েকটি লাইন পরিবর্তন করাই সংস্কার নয়।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্রীয় সংস্কার প্রস্তাবে সুস্পষ্টভাবে দেশের গুণগত পরিবর্তন নিশ্চিত করতে এবং জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রমের রূপরেখা রয়েছে।
‘একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি একবাক্যে সংস্কারের কথা বলছি- যা মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করবে, বেকারদের কর্মসংস্থান করবে, নারীর স্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিত করবে, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, আমাদের সন্তানদের উন্নত শিক্ষা নিশ্চিত করবে এবং জনগণকে ন্যূনতম স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করবে।’
তিনি বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পরও দেশ এখনও সংকটময় সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
‘স্বৈরাচারী সরকারের পতন ও তার প্রধান দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও তাদের প্রেতাত্মারা রয়ে গেছে সমাজে, প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায়। সেখান থেকে তারা এখনও নানা ষড়যন্ত্রের বীজ বপনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
জাতির এই দুঃসময়ে তরিকুল ইসলামের মতো একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের অনুপস্থিতির অনুভূতিও ব্যক্ত করেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ‘তরিকুল ইসলামের মতো কেউ আজ বেঁচে থাকলে তিনি আমাকে মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিতে পারতেন, যা দেশ ও দল উভয়ের কল্যাণে অবদান রাখত।’
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার জোটসঙ্গী দলের প্রধানদের প্রতীকী ফাঁসি দেয়া হয়েছে। অন্যদের মধ্যে রয়েছেন- আওয়ামী নেতা ওবায়দুল কাদের, জাসদ নেতা হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন ও জাতীয় পার্টির জি এম কাদের।
‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতা’ ব্যানারে টিএসসির পায়রা চত্বরে সোমবার দুপুরে ‘ছাত্র-জনতার ফাঁসির মঞ্চ বানিয়ে করে এই প্রতীকী ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাসহ পরিষদের নেতাকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
প্রতীকী ফাঁসি কার্যকর করার আগে বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কেউ পা হারিয়েছেন, হাত হারিয়েছেন আর কেউ চোখ হারিয়েছেন। ভাই তার বোন হারিয়েছেন, পিতা তার সন্তান হারিয়েছেন, মা তার ছেলেকে হারিয়েছেন। তারা কেউ কি আর কখনও ফিরে আসবে? তাহলে আওয়ামী লীগ কোন যুক্তিতে ফিরে আসতে পারে?’
তিনি বলেন, ‘আমরা এই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের সঙ্গে বেইমানি করতে পারি না। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন স্তরের যেসব নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’
কাউন্সিলের ২০ মাস পর সিলেট মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। তবে পরিবর্তন আনা হয়েছে সভাপতি পদে।
সোমবার দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
ঘোষিত কমিটিতে রেজাউল হাসান কয়েস লোদীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়েছে। তিনি সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র ছিলেন। এছাড়া তিনি মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।
২০২৩ সালের ১০ মার্চ কাউন্সিলরদের ভোটে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে নাসিম হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক পদে এমদাদ হোসেন চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সৈয়দ সাফেক মাহবুব নির্বাচিত হন।
গত জুলাইয়ে নাসিম হোসাইনের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়। এখন আবার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পদে পরিবর্তন আনা হলো।
কমিটিতে সহ-সভাপতি হিসেবে রয়েছেন ২০ জন। তারা হলেন- ডা. নামুল ইসলাম, জিয়াউল গনি আরেফিন জিল্লুর, সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিন, সৈয়দ মইন উদ্দিন সুহেল, জিয়াউল হক জিয়া, সুদীপ রঞ্জন সেন বাপ্পা, মাহবুব কাদির শাহি, আমির হোসেন, অ্যাডভোকেট শাহ্ আশরাফুল ইসলাম, সাদিকুর রহমান সাদিক, নিপার সুলতানা ডেইজী, ডা. আশরাফ আলী, মুরাদ মুমিন খোকন, আব্দুল হাকিম, আফজাল হোসেন, ব্যারিস্টার রিয়াসত আজিম আদনান, রহিম মল্লিক, মুফতি নেহাল, জাহাঙ্গীর আলম ও মোতাহির আলী মখন।
যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হলেন- নজিবুর রহমান নজিব, মূর্শেদ আহমদ মুকুল, শামীম মজুমদার, মির্জা বেলায়াত হোসেন লিটন, নেওয়াজ বক্ত চৌধুরী তারেক, মাহবুবুল হক চৌধুরী, শুয়াইব আমন শোয়েব, আব্দুল ওয়াহিদ সুহেল, রেজাউল করিম আলো, আক্তার রশিদ চৌধুরী, আহমদ মনজুরুল হাসান মঞ্জু, মতিউল বারী খোরশেদ, ফাতেমা আমান রোজী, নাদির খান ও আবুল কালাম।
সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন- জাকির হোসেন মজুমদার, রফিকুল ইসলাম রফিক, দেওয়ান জাকির, খসরুজ্জামান খসরু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রহিম আলী রাসু, রেজাউর রহমান রুজল, সাব্বির আহমদ, জাহাঙ্গীর আলম জীবন ও সফিক নুর।
এছাড়া অর্থ-সম্পাদক এনামুল কুদ্দুস, সহ-অর্থ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, প্রচার সম্পাদক বেলায়েত হোসেন মোহন, সহ-প্রচার সম্পাদক আলী হায়দার মজনু, দপ্তর সম্পাদক তারেক আহমদ খান, সহ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুল মালেক, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ মিলন, সহ-মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক মারুফ আহমদ, আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবুল ফজল, সহ-আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এজাজ আহমদ, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক সাইদুর রহমান হিরু, সহ-শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মালিক সেকু, সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক ডা. এম এ হক বাবুল, সহ-সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক শামীম আহমদ লোকমান, যুববিষয়ক সম্পাদক মির্জা সম্রাট, সহ-যুববিষয়ক সম্পাদক রুবেল বক্স।
স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আফছর খান, সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সেলিম আহমদ মাহমুদ, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শেখ কবির আহমদ, সহ-স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক মিনহাজ পাঠান, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক সুদিপ জ্যোতি এষ, সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল করিম জুনাক, অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মুনিম, সহ-অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন রানা, প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান আরাফাত জাকি, সহ-প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক খোরশেদ আহমদ খুশু, যোগাযোগবিষয়ক সম্পাদক ফয়েজ আহমদ মুরাদ, সহ-যোগাযোগবিষয়ক সম্পাদক কয়েছ আহমদ সাগর, ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাহির, সহ-ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক কামাল আহমদ, জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক সম্পাদক সবুর আহমদ, সহ-জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্পাদক আবু সাইদ, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক তোফায়েল আহমদ, সহ-ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক তারেক আহমদ, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক তাজ উদ্দিন মাসুম, সহ-সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক জালাল উদ্দিন শামীম, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক রীনা আক্তার, সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক রেহানা ফারুক শিরিন, পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল মুকিত অপি, সহ-পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ রাজন, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন, সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক বেলাল আহমদ, শিল্পবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মুনিম, সহ-শিল্প বিষয়ক সম্পাদক জমজম বাদশা, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মো. লুৎফুর রহমান মোহন, সহ-বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আলী আমজাদ, সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল হাদী মাসুম, সহ-সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জালাল উদ্দিন শামীম, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ লোকমানুজ্জামান, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক সুচিত্র চৌধুরী বাবলু, ক্ষুদ্র কুটি শিল্পবিষয়ক সম্পাদক মিজান আহমদ, সহ-ক্ষুদ্র কুটি শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর রাসেল, শ্রমিকবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আহাদ, সহ-শ্রমিক বিষয়ক সম্পাদক খোকন ইসলাম, জুবেদ কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মফিজুর রহমান, সহ-কৃষি বিষয়ক সম্পাদক রাজিব কুমার দে, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মুফতি রায়হান উদ্দিন, সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শাহীন আহমদ, পরিবার কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক হাবিব আহমদ, সহ-পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ইকবাল কামাল, তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আজিজ লাকী, সহ-তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক বুরহান উদ্দিন, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক সালেহ আহমদ গেদা, সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক এস এম সায়েম, মৎস্যজীবিবিষয়ক সম্পাদক দুলাল আহমদ, সহমৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক শাহীন আহমদ, শিশু বিষয়ক সম্পাদক সাদিয়া খাতুন মনি, সহ-শিশু বিষয়ক সম্পাদক বিলকিস জাহান চৌধুরী, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক খায়েরুল ইসলাম খায়ের এবং সহ-স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম।
কমিটির সম্মানিত সদস্য হলেন- খন্দকার আব্দুল মোক্তাদির, ডা. এনামুল হক চৌধুরী, মিফতাহ্ সিদ্দিকী, আব্দুর রাজ্জাক, ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, আব্দুল কাইয়ূম জালালী পংঙ্কী, বদরুজ্জামান সেলিম, অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান, হুমায়ূন কবির শাহিন, বদরুদ্দোজা বদর ও মোকবুল হোসেন।
সদস্য হিসেবে রয়েছেন- লুৎফুর রহমান চৌধুরী, মুহিবুর রহমান, লল্লিক আহমদ চৌধুরী, মো. জমির উদ্দিন, বজলুর রহমান ফয়েজ, আলী আকবর ফকির, ওলিউর রহমান ডেনি, মন্তাজ মিয়া, সেলিম আহমদ শেলু, রানা মিয়া, আমিনুল ইসলাম আমিন, সিরাজ খান, আলী আহমদ, রাজন মিয়া, পিয়ার উদ্দিন পিয়ার, আসমা আলম, ফখর উদ্দিন আহমদ (পংকি), মোহাম্মদ মকসুদ, সুহেল আহমদ, চান মিয়া বাচ্চু, শাহজাহান আহমদ, রাসেল আহমদ খান, মিনারা বেগম, সালেক আহমদ, মঈন খান, সাইফুল ইসলাম, নুরুল হক রাজু, মতিউর রহমান শিমুল, ইফতেখার আহমদ পাবেল, ফরহাদ আহমদ, আব্দুল মুমিন, আব্দুল মুমিন মামুন, জাহেদ আহমদ, আকবর হোসেন কায়ছার, শহিদুর রহমান সানি, শফিকুর রহমান সুমন, রিয়াজ আহমদ সুমন, মো. হারুনুর রশিদ, নুরুল ইসলাম লিমন, জাকারিয়া খান, মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম ও জাকির হোসেন পারভেজ।
প্রসঙ্গত, গত বছরের কাউন্সিলে সভাপতি পদে মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নাসিম হোসাইন এক হাজার ৬৬টি ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী মহানগর বিএনপির সাবেক (কাউন্সিলের আগের) আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব (বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি) মিফতাহ সিদ্দিকী পান ৭৬৮ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক পদে মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী এক হাজার ৫৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ফরহাদ চৌধুরী শামীম পান ৭৭২ ভোট।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সাবেক ছাত্রদল নেতা সৈয়দ সাফেক মাহবুব ৬৫৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রেজাউল করিম নাচন পান ৬২৩ ভোট।
আরও পড়ুন:দেশের ১০ জেলা ও মহানগরে পূর্ণাঙ্গ এবং আংশিক কমিটি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।
সোমবার বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরে এসব কমিটি ঘোষণা করা হয়।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আংশিক আহ্বায়ক কমিটি, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি, বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি, সিলেট মহানগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির আংশিক আহ্বায়ক কমিটি এবং শেরপুর জেলা বিএনপির আংশিক আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর
বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট ঢাকা মহানগর উত্তরে আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে আমিনুল হককে আহ্বায়ক ও মোস্তফা জামানকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। পাঁচ সদস্যের কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়করা হলেন- মোস্তাফিজুর রহমান সেতু, ফেরদৌসী আহমেদ মিষ্টি ও আব্দুর রাজ্জাক।
চট্টগ্রাম মহানগর
চট্টগ্রাম মহানগরে পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এতে আহ্বায়ক করা হয়েছে এরশাদ উল্লাহকে। আর সদস্য সচিব করা হয়েছে নাজিমুর রহমানকে। যুগ্ম আহ্বায়করা হলেন- মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এম এ আজিজ, আব্দুস সাত্তার ও সৈয়দ আজম উদ্দিন।
আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার দাবি ওঠার মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, স্বচ্ছ জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে কাকে গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান করা হবে তা চূড়ান্তভাবে জনগণই নির্ধারণ করবে।
৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
গয়েশ্বর বলেন, ‘গণতন্ত্রকে যারা ধ্বংস করেছে তাদের জন্য গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এক ধরনের প্রতিশোধ হিসেবে কাজ করবে।
‘আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে বিএনপিকে কেন নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে?’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ ও বিএনপি উভয়েই চায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করুক।
‘কাকে প্রত্যাখ্যান করা হবে আর কাকে গ্রহণ করা হবে- নির্বাচনের মাধ্যমে তা জনগণই ঠিক করবে। অবিবেচনাপ্রসূত কোনো সিদ্ধান্ত দেশের জন্য কল্যাণ বা শান্তি বয়ে আনবে না।’
গয়েশ্বর রায় বলেন, “১/১১-এর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময় অসৎ উদ্দেশ্যের কারণে ‘সংস্কার’ শব্দটি কলঙ্কিত হয়ে পড়েছিল।
“প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় সংস্কারের জন্য ব্যাপক সমর্থন থাকলেও একটি রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করে বা বিরাজনীতিকীকরণকে উৎসাহিত করে ক্ষমতা সংহত করার প্রচেষ্টা জাতির স্বার্থ রক্ষা করবে না।”
তিনি বলেন, ‘যারা নিষিদ্ধ হওয়ার যোগ্য, তারা কার্যত নিজেদের নিষিদ্ধ করেছে এবং দেশ থেকে চলে গেছে। এখন তাদের ব্যানার বা স্লোগান দেয়ার কেউ নেই।’
বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়া উচিত নয়। আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি এবং সেই প্রতিশোধ নেয়ার উপায় হলো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার।’
আইন অবমাননার দীর্ঘ ইতিহাসের কারণে শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়তে হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, ‘তার পতনের পর তিনি কীভাবে আইন মানবেন? আইনকে ভয় না পেলে তিনি দেশ ছাড়তেন না, তিনি জেলেই থাকতেন।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য