বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ফ্লপ বললেও উল্টো মূল্যায়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের। তার মতে এই সমাবেশে লাখের কাছাকাছি লোক হয়েছে। এমনও বলেছেন, তার দলের নেতারা এটা স্বীকার করতে চাইবেন না। আর জনসমাগম দেখে ‘মাথা খারাপ করে’ আগের মতো পেট্রলবোমা না মারার পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে যত লোক হয়েছে, জব্বারের বলীখেলায় তার চেয়ে বেশি লোক হয় দাবি করে তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পরদিন রোববার এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন কাদের।
চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহে বিএনপির সমাবেশে বেশ লোকসমাগমের কথা কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘বিএনপিকে বলব আপনাদের মাথাও যেন খারাপ না হয়। মাথা খারাপ করে আবার পেট্রলবোমা নিয়ে নামবেন আমরা তো সেই ভয় করছি।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিএনপি দেশে চোখে পড়ার মতো কোনো আন্দোলন করতে পারেনি। এখন তাদের আন্দোলন দেখে সরকারের মাথা ঠিক আছে।’
সমাবেশ ফ্লপ নয়, লাখের কাছাকাছি উপস্থিতি
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় এবং নানা ঘটনার প্রতিবাদে গত বুধবার চট্টগ্রাম এবং শনিবার ময়মনসিংহে সমাবেশ করেছে বিএনপি। এভাবে দেশের সব বিভাগীয় শহরে সমাবেশের ডাক দিয়েছে দলটি। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকাতেও সমাবেশ করতে চায় তারা।
বিএনপির দাবি, এসব সমাবেশে লাখ লাখ মানুষের সমাগম হচ্ছে। এভাবে সমাগম বাড়িয়ে সরকারের পতন ঘটানোর কথাও বলছে তারা।
শনিবার চট্টগ্রামে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা পলোগ্রাউন্ড মাঠের ৪০ শতাংশ পেছনে রেখে মঞ্চ করেছে। আর সামনের যেই অংশ তার অর্ধেকও পূর্ণ হয়নি। অর্থাৎ পলোগ্রাউন্ড মাঠের এক-তৃতীয়াংশও ঠিকমতো পূর্ণ হয়নি। চট্টগ্রামে জব্বারের বলীখেলায় যত মানুষ হয়, তার চেয়েও অনেক কম মানুষ হয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রীর মতে, এই সমাবেশ ফ্লপ হয়েছে।
তবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি গত কয়েক বছরে যেভাবে লোকসমাগম করেছে সে তুলনায় এটাকে ফ্লপ বলা আমার মনে হয় সঠিক নয়। অনেকে অনেক কথা বলেছে ৩০, ৩৫ বা ৫০ হাজার লোক হয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে বলেছি, লাখের কাছে লোক হয়েছে।
‘সত্যকে আড়াল করে তো লাভ নেই, সত্য আড়াল করব কেন? এটা আওয়ামী লীগের বহু লোক স্বীকার করতে চাইবে না, বলবে ৩০ হাজার, ২৫ হাজার হয়েছে।’
জনসভায় লোকসমাগম দিয়ে জনপ্রিয়তার প্রমাণ হয় না উল্লেখ করে ক্ষমতাসীন দলের নেতা বলেন, ‘সমাবেশে বিএনপির লোক দেখে আমরা ভয় পাই না। তারা যত লোক টার্গেট দেয় তত লোক কি হবে?... আমরা শুধু তাদের বলি শান্তিপূর্ণ থাকেন; ঢাকার ১০ লাখ বসান, আমরাও ৩০ লাখ বসাতে পারি। কিন্তু যানজটের কী অবস্থা হবে?’
তত্ত্বাবধায়ক হবে না
বিএনপি যতই আন্দোলন করুক, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি পূরণ হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার কেন চাইছে? তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূত কেন নামাতে পারছে না বিএনপি?
‘দেশে সংবিধানসম্মতভাবে নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ অনুষ্ঠান করবে। সেখানে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না।’
‘ইভিএম জালিয়াতির শঙ্কা নেই’
ভোট গ্রহণে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের অবস্থান আবার তুলে ধরেন কাদের। জানান, তারা শতভাগ আসনেই এই যন্ত্রে ভোট চান। তবে এ জন্য নির্বাচন কমিশনকে কোনো চাপ দেবেন না, সিদ্ধান্ত কমিশনের হাতেই ছেড়ে দিচ্ছেন তারা।
আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘আমরা ইভিএমের পক্ষে, কারণ এতে জালিয়াতির শঙ্কা নেই। অথচ ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ইভিএমের বিপক্ষে, আর বিরোধী দল পক্ষে। আর আমাদের ফখরুলরা ইভিএম চাচ্ছে না।
‘নির্বাচনে ইভিএম থাকুক সরকারি দল শতভাগ দাবি করছে। নির্বাচন কমিশন কতটুকু দেবে সেটা তাদের সিদ্ধান্ত।’
আরও পড়ুন:অতি দ্রুত নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকার পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার এক আলোচনা সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘শনিবার একজন উপদেষ্টা একটা মন্তব্য করেছেন, যেটা আমরা তার কাছ থেকে আশা করিনি। তিনি বলেছেন যে রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য উসখুস করছে। এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক কথা। আমরা আশা করি না, এই মাপের মানুষ এ ধরনের কথা বলবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা রাজনীতিবিদরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য উসখুস করি না। আমরা বাংলাদেশকে হাসিনা-মুক্ত করার জন্য কাজ করেছি, জীবন দিয়েছি। এখন দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করছি।’
বিএনপির এই নেতা প্রশ্নের সুরে বলেন, ‘আমরা তো ক্ষমতায় যেতেই চাই। সেজন্যই তো রাজনৈতিক দল করি। নির্বাচন করব, ক্ষমতায় যাব। এটার জন্য তো আমরা রাজনীতি করছি, তাই না? সেখানে এ ধরনের কথা বললে সঠিক হবে না।’
সরকারকে উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আবারও বলছি- অতি দ্রুত নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করুন। জঞ্জাল যা আছে তা সাফ করে ফেলুন। দায়িত্বটা আপনাদের ওপর দেয়া হয়েছে। আমরা সহযোগিতা করছি, আপনারাও করুন।’
তিনি বলেন, ‘আজকে বিএনপি নয় শুধু, বাংলাদেশই সঙ্কট অতিক্রম করতে পারেনি। হাসিনা গেছেন। হাসিনা যাওয়াতে বিদেশে সবচেয়ে বেশি আনন্দ হয়েছে। আমরা ভয়াবহ একটা দানবের হাত থেকে মুক্ত হয়েছি। তবে এখনও কিন্তু স্বস্তি নেই। কোথায় যেন আটকে আছি।
‘আটকে আছি এখানেই যে, আমাদের জনগণের সরকার এখনও প্রতিষ্ঠা হয়নি। আছে একটা সরকার (অন্তর্বর্তী সরকার), যাকে আমরা সমর্থন দিয়েছি।
ফখরুল বলেন, ‘খুব পরিষ্কার কথা, আবারও চক্রান্ত করে বিএনপিকে বাদ দিয়ে কিছু করার চেষ্টা করবেন না। এটা বাংলাদেশের মানুষ কখনও মেনে নেবে না। একবার মাইনাস-টু করার চেষ্টা হয়েছে। আবারও ওই রাস্তায় যাওয়ার কথা কেউ চিন্তা করবেন না।’
সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি স্থায়ী কমটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ও বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন প্রমুখ।
মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভাটি সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।
আরও পড়ুন:নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে নাম চেয়েছে এ বিষয়ে গঠিত সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটি। আগামী ৭ নভেম্বরের (বৃহস্পতিবার) মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে নাম প্রস্তাব করার আহ্বান জানানো হয়েছে। সর্বোচ্চ পাঁচটি নাম প্রস্তাব করার সুযোগ থাকবে।
সুপ্রিম কোর্টে রোববার সার্চ কমিটির প্রথম বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এসব তথ্য জানায় সার্চ কমিটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগদানের জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করতে গঠিত অনুসন্ধান কমিটি আগ্রহী ব্যক্তিদের কাছে নাম আহ্বান করছে।
রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠন বা ব্যক্তি পর্যায় থেকে আগামী ৭ নভেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার পদে সুপারিশ করার জন্য সর্বোচ্চ পাঁচজনের নাম প্রস্তাব করতে পারবে।
পূর্ণাঙ্গ জীবন-বৃত্তান্তসহ প্রস্তাবিত নাম সরাসরি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে বা ই-মেইলে (([email protected])) পাঠানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের মাধ্যমে নতুন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ দিতে গত বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সার্চ কমিটি গঠন করে সরকার।
নির্বাচন কমিশন গঠনে ছয় সদস্যবিশিষ্ট সার্চ কমিটির আহ্বায়ক আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী। কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন হাইকোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান। এই দু’জনকে মনোনীত করেছেন প্রধান বিচারপতি।
কমিটির অন্য চার সদস্যের মধ্যে রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুজন বিশিষ্ট নাগরিক হলেন- বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিন্নাতুন নেছা তাহমিদা বেগম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার।
এছাড়া আইন অনুযায়ী পদাধিকারবলে সদস্য হিসেবে আছেন বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মো. নূরুল ইসলাম এবং পিএসসির চেয়ারম্যান মোবাশ্বের মোনেম।
অনুসন্ধান কমিটি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ মোতাবেক দায়িত্ব ও কার্যাবলি সম্পন্ন করবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অনুসন্ধান কমিটির কার্য সম্পাদনে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা দিচ্ছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেয়ার উদ্দেশ্যে প্রতিটি শূন্যপদের বিপরীতে রাষ্ট্রপতির কাছে দুজন ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে অনুসন্ধান কমিটি।
আরও পড়ুন:৩ নভেম্বর জেল হত্যা দিবসকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করাসহ তিন দফা দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে স্মারকলিপি দিয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ।
রোববার রাজধানীর মিণ্টো রোডে প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই সারকলিপি দেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার একান্ত সচিব এই স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
স্মারকলিপি দেয়ার পর সোহেল তাজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছে যে প্রধান উপদেষ্টা আমার স্মারকলিপি পড়ে ব্যবস্থা নেবেন। আমাকে তার মতামত জানাবেন। প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে সম্মান জানিয়েছি। আমি আমার গণতান্ত্রিক অধিকার যেটা সেটা করার চেষ্টা করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে এই দাবিগুলো দিয়েছি। একইসঙ্গে একটু লজ্জা বোধ করছি যে আমাকে এই দাবিগুলো করতে হচ্ছে। কারণ আপনারা জানেন যে আমার আরেকটি পরিচয় আছে- আমি বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের সন্তান।
‘তবে বাবার স্বীকৃতির জন্য আমি এখানে আসিনি। আমি এসেছি মুক্তিযুদ্ধে অবদানকারীদের স্বীকৃতির জন্য। যাতে করে এই ইতিহাসটা নতুন প্রজন্ম বুকে ধারণ করে একটি নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারে। যে বাংলাদেশের জন্য ২০২৪ সালের জুলাইয়ে যুদ্ধ হয়েছে।’
সোহেল তাজের দাবি তিনটি হলো- ১০ এপ্রিলকে ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ ঘোষণা করা; ৩ নভেম্বর জেল হত্যা দিবসকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করা এবং জাতীয় চার নেতাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধের সব বেসামরিক ও সামরিক সংগঠক, পরিচালক, শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নাম, অবদান, জীবনীসহ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস যথাযথ মর্যাদা ও গুরুত্বের সঙ্গে সর্বস্তরের পাঠ্যপুস্তক ও সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা।
আরও পড়ুন:জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ‘কোনো একটি মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য ছাত্রদের একটি অংশকে ব্যবহার করছে, যা কোনোভাবে কাম্য নয়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে দেশে বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়া চলছে।’
রোববার জাপার বনানী কার্যালয়ে অতিরিক্ত মহাসচিবদের সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাপা মহাসচিব বলেন, ‘অতীতের মাইনাস-টু ফর্মুলা ব্যর্থ হয়েছে। এখন বিরাজনীতিকরণের যে প্রক্রিয়া চলছে তা-ও ব্যর্থ হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। সেদিকে সরকারকে জোর দৃষ্টি দিতে হবে।’
রাজধানীর বিজয়নগরে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় অফিসে শুক্রবার (১ নভেম্বর) ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ ও পরদিন শনিবার খুলনার অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের নিন্দা জানান মুজিবুল হক চুন্নু। এসব ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানান তিনি।
অতিরিক্ত মহাসচিবদের মধ্যে সভায় উপস্থিত ছিলেন মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, লিয়াকত হোসেন খোকা, মো. জহিরুল ইসলাম জহির, মোহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক, মোস্তফা আল মাহমুদ ও মনিরুল ইসলাম মিলন।
আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, এটিইউ তাজ রহমান, জহিরুল ইসলাম রুবেল, মো. জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া ও মো. আরিফুর রহমান খান।
আরও পড়ুন:সৎ, যোগ্য, দক্ষ এবং নিরপেক্ষ ব্যক্তিদেরকেই নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটি সুপারিশ করবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশিদ।
রোববার বিকেলে সুপ্রিম কোর্টে সার্চ কমিটির প্রথম বৈঠকে অংশগ্রহণের আগে তিনি সাংবাদিকদের এমন কথা বলেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আজকের বৈঠকে নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি তাদের কর্মপদ্ধতি ঠিক করবে। আইন অনুযায়ী কমিটি গঠনের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে নাম প্রস্তাবের সুপারিশ পাঠানো হবে।’
সচিব বলেন, আমি সার্চ কমিটির মেম্বার নই। কমিটিকে আমরা সাচিবিক সহায়তা দেব।’
নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে এর আগে ২৯ অক্টোবর সার্চ কমিটি গঠন করা হয়। সার্চ কমিটির প্রধান হিসেবে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নাম মনোনীত করেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। এছাড়া কমিটিতে সদস্য হিসেবে মনোনীত হন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান।
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের এক মাস পর ৫ সেপ্টেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ও চার নির্বাচন কমিশনার পদত্যাগ করলে পদগুলো শূন্য হয়।
আরও পড়ুন:নির্বাহী আদেশে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ না করে জনগণের হাতে সেই সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির৷
রোববার চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ও দর্শনা সরকারি কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্ররাজনীতি বিষয়ে মতবিনিময়কালে ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক এই মন্তব্য করেন৷
জাতীয় পার্টি ফ্যাসিবাদের মুখ্য দালাল ছিল মন্তব্য করে নাছির উদ্দীন বলেন, জাতীয় পার্টি প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের দুষ্কর্মের সহযোগী হওয়ার কারণে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ দীর্ঘায়িত হয়েছে। তবে আমি জাতীয় পার্টির অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার নিন্দা জানাই।
ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশে স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং আইন-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই মুহুর্তে মব কালচার সৃষ্টি করে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করে পতিত ফ্যাসিস্ট শক্তি এবং বাংলাদেশ বিরোধী বিদেশি গোষ্ঠীগুলোর পাতানো ফাঁদে পা দেয়াটা হবে অদূরদর্শী আচরণ।’
মতবিনিময় সভায় ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক শিক্ষার্থীদের ইতিবাচক ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির প্রতিশ্রুতি দেন।
তিনি বলেন, ‘ছাত্রদল কোনো দখলদারত্ব, নির্যাতন, গেস্টরুম কালচার, খুন, ধর্ষণের রাজনীতি প্রশ্রয় দেবে না। ছাত্রদল একুশ শতকের উপযোগী মেধাভিত্তিক গণতান্ত্রিক রাজনীতি চর্চায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
‘ছাত্রদলের রাজনীতিতে নারী শিক্ষার্থীদের যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আমরা রাজনীতিতে অধিক হারে নারীদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানাই।’
তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের জন্য ছাত্রীদের রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকতে হবে।
মতবিনিময় শেষে নাসির উদ্দীন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ ও দর্শনা সরকারি কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন৷
আরও পড়ুন:ফ্যাস্টিস্টদের আর কখনও গ্রহণ করা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, দেশে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে। আগামী সংসদ নির্বাচনে যাতে ফ্যাসিস্টরা ফিরে আসতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের শপথগ্রহণ উপলক্ষে রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জনপ্রিয় নেতা ডা. শাহাদাত হোসেন ভোটে জিতেছিলেন। কিন্তু আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা জোরপূর্বকভাবে সেই ফল কেড়ে নিয়েছিল। বিচার ব্যবস্থাকে ধন্যবাদ জানাই তারা ন্যায়বিচারের মাধ্যমে ডা. শাহাদাতকে নির্বাচিত ঘোষণা করেছেন।’
আদালতের রায় মেনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ডা. শাহাদাতের শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও ধন্যবাদ জানান মির্জা ফখরুল।
শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘তারেক রহমান ও খালেদা জিয়ার ইশতেহার ছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন হবে গ্রিন ও ক্লিন সিটি করপোরেশন। সেই লক্ষ্যে আমি কাজ করে যাবো।’
শ্রদ্ধা নিবেদনে সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ ভুলু, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, মাহবুবে রহমান শামীমসহ চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য