মানুষের মৌলিক চাহিদা হিসেবে বিবেচিত অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার মধ্যে প্রথমটির জোগানের একমাত্র মাধ্যম কৃষি, কিন্তু জনসংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকা বিশ্বের ৭০০ কোটি মানুষের মধ্যে সাড়ে ১৩ কোটি এখনও ধুঁকছে খাদ্যের অভাবে।
দুই বছরের করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কা না কাটতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ গোটা বিশ্বকে চরম খাদ্য সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ইতোমধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় উঠে ৯ শতাংশের কাছাকাছি দাঁড়িয়েছে।
ইউরোপের প্রায় সব দেশ, চীন, কানাডাসহ সব রাষ্ট্রেই মূল্যস্ফীতির পারদ চড়ছেই। আরও বাড়বে বলে শঙ্কার কথা শোনাচ্ছে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থা। দেশে দেশে খাদ্য সংকট দেখা দিতে শুরু করেছে।
২০২৩ সালে বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দার পূর্বাভাস দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বলছে, যুদ্ধ পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক না হলে দুর্ভিক্ষও দেখা দিতে পারে।
এমন কঠিন পরিস্থিতিতে ১৬ অক্টোবর রোববার পালন হচ্ছে ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস’। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘কাউকে পশ্চাতে রেখে নয়; ভালো উৎপাদনে উত্তম পুষ্টি, সুরক্ষিত পরিবেশ এবং উন্নত জীবন’।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে নেয়া হয়েছে নানা কর্মসূচি।
বিশ্বব্যাপী সচেতনতা, ক্ষুধার মোকাবিলা এবং সবার জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্য নিশ্চিত করার সংকল্পকে সামনে রেখে প্রতি বছর দিনটি পালন হয়।
গত কয়েক দশকে পৃথিবীর আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে চাষযোগ্য জমি সংরক্ষণ, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, কৃত্রিম বনায়ন, আন্তর্জাতিক উন্নয়নের মতো কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো; বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ব্যস্ত হয়ে আছে বিশ্বের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। এর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)।
কৃষিকে কেন্দ্র করে বিশ্বের মানুষের প্রয়োজনীয় খাদ্যের জোগান, দারিদ্র্য ও পুষ্টিহীনতা দূর করে ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে ১৯৪৫ সালের ১৬ অক্টোবর জন্ম নেয় জাতিসংঘের সংস্থাটি। লাতিন ভাষায় এর স্লোগান ‘ফিয়াত পানিস’ তথা ‘সবার জন্য রুটি’। বর্তমানে ১৯৮টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে পরিচালিত এফএও।
আন্তর্জাতিক খাদ্য ও কৃষি সংস্থা গঠনের ধারণাটি সর্বপ্রথম দেন আমেরিকান কৃষিবিদ ডেভিড লুবিন। ১৯৪৫ সালের ১৬ অক্টোবর কানাডার কুইবেক শহরে ‘আন্তর্জাতিক কৃষি ইনস্টিটিউট’ গঠন হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আনুষ্ঠানিকভাবে এ সংগঠনের ইতি ঘটে। পরে এটি খাদ্য ও কৃষি সংস্থা নামে আত্মপ্রকাশ করে।
গত শতাব্দীর চল্লিশের দশকের শেষ সময় থেকে এফএও জাতিসংঘের কাঠামোর মধ্যে থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
১৯৭৯ সালে বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ২০তম সাধারণ সভায় হাঙ্গেরির তৎকালীন খাদ্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. প্যাল রোমানি এফএওর জন্মদিনটি বিশ্বব্যাপী উদযাপনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৮১ সাল থেকে বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিষ্ঠার দিনটি (১৬ অক্টোবর, ১৯৪৫) দারিদ্র্য ও ক্ষুধা নিবৃত্তির লক্ষ্যে এবং বিভিন্ন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে গুরুত্বের সঙ্গে পালন হয়ে আসছে।
১৯৮১ সালেই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিটি দেশের সরকার ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ক্ষুধা, অপুষ্টি ও দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করার সংগ্রামে যুক্ত করার প্রতিপাদ্য নিয়ে ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস’ উদযাপন শুরু হয়। এ দিবসের মূল উদ্দেশ্য হলো ক্ষুধা, অপুষ্টি ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলা, কৃষির উন্নতিতে মনোযোগ দেয়া, কৃষিভিত্তিক উৎপাদনে উৎসাহদান, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা গ্রহণে উৎসাহদান, গ্রামীণ জনগণ, মূলত নারী ও পিছিয়ে পড়া মানুষের অবদানে উৎসাহ দান এবং প্রযুক্তির সমৃদ্ধিকে বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বিশ্বের উন্নত, উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশে আধুনিক ও উন্নত কৃষি, প্রাণী, বনায়ন ও মৎস্য চাষে সহায়তা করে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এর প্রধান উদ্দেশ্য। তাই বিভিন্ন দেশে কৃষি ও খাদ্যের সঙ্গে জড়িত জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে এফএও বিশ্বের অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে মিলে একসঙ্গে নানা প্রকল্প হাতে নিয়ে কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দেয়, যাতে করে সবার জন্য খাদ্য ও পুষ্টির নিশ্চয়তার সুযোগ তৈরি হয়।
সংস্থাটির নিরলস প্রচেষ্টায় ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী যে সাফল্যগুলো অর্জন হয়েছে, তার অন্যতম ৩০টিরও বেশি দেশের সাংবিধানিক কাঠামোতে জনগণের জন্য খাদ্য লাভের অধিকারকে প্রধান মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি ও নিশ্চিতকরণ, সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড কোডেক্স অ্যালিমেন্টারিয়াস তৈরি, অবৈধ ও অনিয়ন্ত্রিত মাছ ধরা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তি প্রণয়ন, গবাদিপশুর প্লেগ নির্মূলকরণ, লাতিন আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনা, খাদ্য ও কৃষিতে বিশ্বের বৃহত্তম এবং সর্বাধিক বিস্তৃত পরিসংখ্যানীয় ডেটাবেজ বজায় রাখা।
এ ছাড়া ২০১৫ সালের মধ্যে বিশ্বে গরিবের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনতে জাতিসংঘ প্রণীত সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) বাস্তবায়নে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে ফলপ্রসূ সহযোগিতা করে যাচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণতাসহ সবার জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সংস্থাটির গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যগুলোর একটি।
সারা বিশ্বে ক্ষুধার সঙ্গে স্থুলতা ও অপুষ্টিজনিত সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এফএও প্রতিষ্ঠার এ দিনটিতে নতুন নতুন থিম নিয়ে বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশ নানা কর্মসূচি পালন করে থাকে, তবে এবার যেমন নাজুক বিশ্ব অর্থনীতি ও খাদ্য সংকটের দুঃসংবাদের মধ্যে দিবসটি পালন হচ্ছে, আগে তা কখনোই হয়নি।
বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে একুশে পদকপ্রাপ্ত কৃষি অর্থনীতিবিদ জাহাঙ্গীর আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জ্বালানি তেলের সংকট, মূল্যস্ফীতি, দীর্ঘ খরাও অপ্রতুল খাদ্য সরবরাহ বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত সমস্যা। অবস্থাদৃষ্টে ধারণা করা যায়, বিশ্বের অর্থনীতি ক্রমেই সংকটের দিকে এগোচ্ছে। নিকট ভবিষ্যতে একটি বড় ধরনের অর্থনৈতিক মন্দা ও দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছে অনেকে।’
তিনি বলেন, ‘গত ১০ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে শুরু হওয়া বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সভায় এ আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। আবার গত অক্টোবর প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক আউটলুক প্রতিবেদনে আইএমএফ বলেছে, ২০২৩ সালে একটি মারাত্মক মন্দার মুখোমুখি হতে পারে বিশ্ব অর্থনীতি। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নেমে যেতে পারে ২ দশমিক ৭ শতাংশে।
‘পরিস্থিতি যে ভয়াবহ, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরাও এ থেকে আলাদা নই, তবে এটাও বলে রাখা প্রয়োজন, বাংলাদেশ অনেক দেশের চেয়ে ভালো অবস্থায় আছে। আমাদের সরকারি গুদামে এখনও ১৮ লাখ টনের মতো খাদ্য মজুত আছে। বেসরকারি পর্যায়েও প্রচুর খাদ্য মজুত আছে। চলতি আমন মৌসুমে ভালো ফলন হলে দেড়-দুই বছর সমস্যা হবে না। সমস্যা হচ্ছে দাম এবং আগামী দিনগুলোতে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখা।’
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘অসহায়-গরিব মানুষকে কম দামে খাবার পৌছে দেয়া অব্যাহত রাখতে হবে। সেই সঙ্গে যেহেতু জ্বালানি তেল, সারের দাম বাড়ায় কৃষি উৎপাদন খরচ অনেক বেড়ে গেছে, সে কারণে কৃষককে নগদ টাকা দিয়ে সহয়তা করতে হবে, যাতে তারা বেশি উৎপাদন করতে পারে।’
অতীতে দেশে কৃষককে সরকার নগদ টাকা দিয়ে সহায়তা করেছে বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম।
রাষ্ট্রপতির বাণী
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন।
বাণীতে তিনি বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০২২ উদযাপনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। এ বছর বিশ্ব খাদ্য দিবসের প্রতিপাদ্য ‘কাউকে পশ্চাতে রেখে নয়; ভালো উৎপাদনে উত্তম পুষ্টি, সুরক্ষিত পরিবেশ এবং উন্নত জীবন’, যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি।”
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে দারিদ্র্য হ্রাস ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় কৃষিই অন্যতম প্রধান নিয়ামক। কৃষি জনগণের খাদ্য ও পুষ্টি সরবরাহ, কর্মসংস্থান ও আয়ের সুযোগ সৃষ্টিসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের কাঁচামাল সরবরাহের নিশ্চয়তা প্রদান করে। কৃষির গুরুত্ব অনুধাবন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্যস্বাধীন দেশ পুনর্গঠনে কৃষি বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। তিনি কৃষির উন্নয়নে কৃষকদের মাঝে খাস জমি বিতরণ, ভর্তুকি মূল্যে সার, কীটনাশক, উন্নত বীজ, সেচ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ নিশ্চিত করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সরকারের যুগোপযোগী নীতি ও পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দেশ দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। ফসলের পাশাপাশি প্রাণিজ আমিষ খাতেও ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
‘প্রযুক্তির বিকাশ ও প্রভাবের ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি, সংস্কৃতি এবং জনসংখ্যা ক্রমবর্ধমানভাবে আন্তঃসংযুক্ত হয়ে উঠছে। প্রায় ৭৫ শতাংশ দরিদ্র ও খাদ্য নিরাপত্তাহীন মানুষ তাদের জীবনযাত্রার জন্য কৃষি এবং প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নির্ভর করে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বর্তমানে মহামারি, সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন কারণে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি উর্ধ্বমুখী দেখা দেওয়ার প্রেক্ষাপটে খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা গেলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি খাদ্যপণ্য উচ্চমূল্যে বিশ্ববাজারে রপ্তানির মাধ্যমে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে। একই সঙ্গে আমাদের খাদ্যাভ্যাসেও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।
‘প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পরিমিত পরিমাণে নিরাপদ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ মৌসুমি ফলমূল, শাকসবজি, প্রাণিজ আমিষ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। আমি আশা করি, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তাকে টেকসই করতে ফসলের পুষ্টিসমৃদ্ধ নতুন নতুন জাত ও লাগসই প্রযুক্তির উদ্ভাবন এবং তা সম্প্রসারণে কৃষিবিজ্ঞানী, সম্প্রসারণকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সকলে নিরলস প্রয়াস অব্যাহত রাখবে।’
প্রধানমন্ত্রীর বাণী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব খাদ্য দিবসে দেয়া বাণীতে বলেন, “জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও ১৬ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য দিবস- ২০২২ পালন হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘কাউকে পশ্চাতে রেখে নয়; ভালো উৎপাদনে উত্তম পুষ্টি, সুরক্ষিত পরিবেশ এবং উন্নত জীবন’ বর্তমান সংকটাপূর্ণ বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে যথাযথ ও সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।
“সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার অভিপ্রায়ে কৃষি ও পরিবেশের সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব গৃহীত কৃষি ও পরিবেশ উন্নয়ন পরিকল্পনা ও কার্যক্রমের ধারাবহিকতায় আমরা বিগত সাড়ে ১৩ বছরে কৃষিবান্ধব ও বাস্তবমুখী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। কৃষির উন্নয়ন ও কৃষকের কল্যাণকে সর্বোচ্চ বিবেচনায় এনে ‘রুপকল্প-২০৪১’ -এর আলোকে জাতীয় কৃষিনীতি-২০১৮, নিরাপদ খাদ্য আইন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-২০৩০ এবং ডেল্টা প্ল্যান-২১০০সহ উল্লেখযোগ্য কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।”
তিনি বলেন, ‘...বন্যা, খরা, লবণাক্ততা সহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবনসহ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ভাসমান চাষ, বৈচিত্র্যময় ফসল উৎপাদন, ট্রান্সজেনিক জাত উদ্ভাবন, পাটের জেনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন ও মেধাস্বত্ব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। কৃষির উন্নয়নে আমরা কৃষকদের জন্য সার, বীজসহ সকল কৃষি উপকরণের মূল্যহ্রাস, কৃষকদের সহজ শর্তে ও স্বল্পসুদে ঋণ সুবিধা প্রধান, ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগসহ তাদের নগদ সহায়তা প্রদান করছি। কৃষি, শিক্ষা-গবেষণা খাতে আরও বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়েছে যার ধারাবাহিকতায় খোরপোশের কৃষি আজ উৎপাদনমুখী ও বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরিত হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকারের গৃহীত কৃষিবান্ধব নীতি ও কার্যক্রমে দানাদার খাদ্য, মাছ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে বাংলাদেশ আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ ও দুধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দ্বারপ্রান্তে। ধান, পাট, আম, পেয়ারা আলু প্রভৃতি ফসল ও ফল উৎপাদনে বাংলাদেশ শীর্ষ আটটি দেশের মধ্যে রয়েছে। কৃষির উন্নয়নে এ সাফল্য সারা বিশ্বে বহুলভাবে প্রশংসিত ও নন্দিত হচ্ছে। নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিতসহ কৃষি পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে উত্তম কৃষি চর্চা নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। একই সঙ্গে স্থাপন করা হয়েছে অ্যাক্রিডিটেড ল্যাব ও আধুনিক প্যাকিং হাউজ। আমরা দেশব্যাপী ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। এতে কৃষিনির্ভর শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনসহ ব্যাপক কর্মসংস্হান সৃষ্টি হবে।
‘রাজধানীর সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার নিরবচ্ছিন্ন, সাশ্রয়ী ও দ্রুত যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। এ সেতুর মাধ্যমে নদীবিধৌত উপকূলীয় অঞ্চলের কৃষি ও মৎস্যসম্পদ আহরণ এবং সারা দেশে দ্রুত বাজারজাতকরণের ফলে এ অঞ্চলের কৃষি ও কৃষকের জীবনমান আরও উন্নত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, সরকারের পাশাপাশি সকলের অংশগ্রহণে নিরাপদ খাদ্যের মাধ্যমে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হব।’
আরও পড়ুন:ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮-এর তথ্যানুসারে, বাংলাদেশে মাত্র ২৯ শতাংশ নারী স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে। অর্থাৎ প্রায় ৭১ শতাংশ নারী এখনও স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে না। পিরিয়ডের সময় অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহার করার ফলে সার্ভিক্যাল ইনফেকশন হতে পারে। এছাড়াও অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহারের ফলে পরবর্তীতে বন্ধ্যাত্ব এমনকি ক্যান্সার-এরও ঝুঁকি থাকে। এর জন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা।
এ লক্ষ্যে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ (এমজিআই)-এর জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন’ দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিশেষ ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে। ‘এক্সিলেন্স বাংলাদেশ’-এর সাথে যৌথ উদ্যোগে প্রাথমিকভাবে ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ক্যাম্পেইন চালানো হচ্ছে। ক্যাম্পেইন-এর অংশ হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে বিভিন্ন সচেতনতামূলক ওয়ার্কশপ ও সেশন। এর বাইরে কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের নারীদের জন্য সহজে ও সুলভ মূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন সংগ্রহরে সুবধর্িাথরে জন্য ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করছে ফ্রেশ অনন্যা।
ফ্রেশ অনন্যা-ই বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র স্যানিটারি ন্যাপকিন, যাতে রয়েছে ডাবল লেয়ারড অ্যাডভান্সড অ্যাবজর্পশন টেকনোলজি। সুবিধা ও উপযোগিতার কথা বিবেচনায় রেখে, ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন-এ ব্যবহার করা হয়েছে এয়ারলেইড পেপার এবং এডিএল লেয়ার। যা নিশ্চিত করে আরও দ্রুত শোষণ এবং সুরক্ষা। তাই পিরিয়ডের দিনগুলো কাটে আরও বেশি স্বস্তিতে।
ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন-এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা সুবিধাবঞ্চিত নারীদের মাঝে পিরিয়ডকালীন পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে জনসচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে দেশব্যাপী স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম, ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন ইত্যাদি।
৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি সকাল ৬টা ১১ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
ওই সময় তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। ওই সময়ে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
পরে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন:চলতি বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মুশফিকুর রহমান ও ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএম শাহাবুদ্দিন।
প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা থেকে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫’ তুলে দিয়েছেন।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক এ পুরস্কার প্রদান করেন তিনি।
এবার স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ পুরস্কার বিতরণ পর্বটি সঞ্চালনা করেন। তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ তুলে দেবেন।
ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।
তথ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।
গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
যেসব ব্যক্তি এবার স্বাধীনতা পুরুস্কার পাচ্ছেন তারা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।
আরও পড়ুন:ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান রবিবার যে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন, তাতে বলা হয়, ‘সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করল। ছুটিকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
‘তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।
‘জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।’
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে সবার আগে পরিবার থেকে নারীকে সাহস দিতে হবে। যেকোনো সংকটে নারীর পাশে ঢাল হয়ে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবার পাশে না থাকলে রাষ্ট্রের পক্ষে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও নারীর পাশে থেকে সাহস জোগাতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতিবন্ধকতা কখনও শেষ হয় না। সমাজে একটা গোষ্ঠী আছে, যারা নারীকে ক্ষমতায়িত করতে চায় না। দুর্বল নারীকে যত পছন্দ করে, সবলচিত্তের নারীকে তারা পছন্দ করে না। এটাই বাস্তবতা।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে (৮ মার্চ) সামনে রেখে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।
এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
উপদেষ্টা বলেন, ‘একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হলে সে দেশের কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও দায় রয়েছে। নারীর চলার পথ পুরুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ও নির্ভরতার হতে হবে।’
তিনি বলেন, “নারী এখন যে অবস্থানে রয়েছে, সে অবস্থানে থেকে নারী বলে বিতর্কিত নয়, কাজে সে বিতর্কিত হোক, অদক্ষ বলে বিতর্কিত হোক, শুধু নারী বলেই ভূল, নারী বলেই অদক্ষ, এ কথাটা বলা যাবে না। আমি বলব ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট।
“তাই তার চিন্তার গন্ডিটাকে তার পারিপার্শ্বিকতার নেতিবাচক মনোভাবে আটকে না রেখে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তাদের পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অভিভাবককে বুঝতে হবে, ছেলে ও মেয়ে দুজনই পরিবারের সম্পদ। পরিবারের উচিত নারীকে ক্ষমতায়িত করা।”
আরও পড়ুন:
মন্তব্য