× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
How dangerous is the notification of critical information infrastructure?
google_news print-icon

‘গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো’র প্রজ্ঞাপন কতটা ভয়ের?

ডিজিটাল নিরাপত্তা
২৯ প্রতিষ্ঠানকে ‘গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো’ ঘোষণা করেছে সরকার। প্রতীকী ছবি
২৯টি প্রতিষ্ঠানকে ‘গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো’ ঘোষণার ফলে দুর্নীতি-অনিয়মের তথ্য প্রকাশে সাংবাদিককেরা নতুন প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়বেন- এমন উদ্বেগ জানাচ্ছেন অনেকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে চলছে আলোচনা। বিষয়টি নিয়ে দুই ধরনের অবস্থান রয়েছে আইনজ্ঞদের মধ্যে।

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ ২৯ প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ১৫ ধারা অনুসারে ‘গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো’ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন দিয়েছে সরকার।

ফলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ১৭ ধারা অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে কেউ বেআইনি প্রবেশ করলে অনধিক সাত বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

আর গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনি প্রবেশের মাধ্যমে ক্ষতিসাধন বা বিনষ্ট অথবা অকার্যকর করা বা করার চেষ্টার শাস্তি হবে অনধিক ১৪ বছরের কারাদণ্ড অথবা অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড।

এই ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে ‘গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো’ ঘোষণার ফলে দুর্নীতি-অনিয়মের তথ্য প্রকাশে সাংবাদিককেরা নতুন প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়বেন- এমন উদ্বেগ জানাচ্ছেন অনেকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে চলছে আলোচনা।

বিষয়টি নিয়ে দুই ধরনের অবস্থান রয়েছে আইনজ্ঞদের মধ্যে। একটি অংশ বলছে, সরকারের এই গেজেট দুর্নীতি, অনিয়ম নিয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় নতুন কোনো বাধা তৈরি করবে না। তবে অন্য অংশের আশঙ্কা, সরাসরি না হলেও এটি সংবাদকর্মীদের মনে পরোক্ষ ভীতির জন্ম দেবে।

বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের উদ্বেগের ‘কারণ নেই’ বলে দাবি করছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক। তিনি বলছেন, সাইবার স্পেসে গুরুত্বপূর্ণ ডেটা নিরাপদ রাখা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্যই ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে ‘গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো’ ঘোষণা করা হয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো’ কী?

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮-এর ২(ছ) ধারায় ‘গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো’র সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়, ‘গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (Critical Information Infrastructure)’ অর্থ সরকার ঘোষিত এমন কোনো বাহ্যিক বা ভার্চুয়াল তথ্য পরিকাঠামো যা কোনো তথ্য-উপাত্ত বা কোনো ইলেকট্রনিক তথ্য নিয়ন্ত্রণ, প্রক্রিয়াকরণ, সঞ্চারণ বা সংরক্ষণ করে এবং যা ক্ষতিগ্রস্ত বা সংকটাপন্ন হলে জননিরাপত্তা বা অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বা জনস্বাস্থ্য, জাতীয় নিরাপত্তা বা রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা বা সার্বভৌমত্বের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে।

আইনজ্ঞরা বলছেন, এই সংজ্ঞা অনুযায়ী অপরাধ বিবেচনায় নিতে হলে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষিত প্রতিষ্ঠানের বাহ্যিক বা ভার্চুয়াল তথ্য পরিকাঠামোতে ‘বেআইনি প্রবেশ বা ক্ষতিসাধন’-এর ঘটনা ঘটতে হবে। প্রতিষ্ঠানের সাধারণ অবকাঠামো এর আওতাভুক্ত নয়।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-এর ২(থ) ধারায় ‘বেআইনি প্রবেশ’-এর সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়, ‘বেআইনি প্রবেশ’ অর্থ কোনো ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বা অনুমতির শর্ত লঙ্ঘন করে কোনো কম্পিউটার বা ডিজিটাল ডিভাইস বা ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বা ডিজিটাল তথ্যব্যবস্থায় প্রবেশ, বা প্রবেশের মাধ্যমে তথ্যব্যবস্থার কোনো তথ্য-উপাত্তের আদান-প্রদানে বাধা প্রদান বা এর প্রক্রিয়াকরণ স্থগিত বা ব্যাহত করা বা বন্ধ করা, বা ওই তথ্য-উপাত্তের পরিবর্তন বা পরিবর্ধন বা সংযোজন বা বিয়োজন করা অথবা কোনো ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে কোনো তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘বেআইনি প্রবেশ’ সংজ্ঞা অনুযায়ী, অপরাধের বিষয়টি সরাসরি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল তথ্য পরিকাঠামোসংশ্লিষ্ট।

সাংবাদিকতায় বাধা কতটা

ডিজিটাল নিরাপত্তার আইনের অধীনে ২৯ প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে আসায় এসব প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি বা অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশে বিশেষ কোনো বাধা তৈরি হয়নি বলে মনে করছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এগুলো হলো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ডেটাবেজ-সংক্রান্ত। ধরুন কেউ একজন এনআইডি ডেটাবেজে ঢুকে আপনার নাম বদলিয়ে দিল বা জন্মতারিখ বদলে দিল। অথবা কেউ ব্যাংকে ঢুকে ডেটাবেজ থেকে আমাদের ডাটা মুছে দিল, এটা কি ভালো হবে?

‘অথবা কেউ ব্যাংকের ডেটাবেজে ঢুকে আমার অ্যাকাউন্টের টাকা আপনার অ্যাকাউন্টে দেখিয়ে দিল, এতে আপনি খুশি হলেও আমি কিন্তু হব না। এ জন্যই সরকার ২৯টি প্রতিষ্ঠানের বিশেষ সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছে।’

ড. শাহদীন মালিক মনে করছেন, আইনের বিষয়গুলো যথেষ্ট পর্যালোচনা না করেই অনেকে ‘তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন’।

তিনি বলেন, ‘এই যে চার বছর ধরে ডিজিটাল আইন বলে অনেকে চিৎকার করছেন। অথচ কতজন সাংবাদিককে দেখাতে পারবেন যারা আইনটি ভালো করে পড়েছেন? চিলে কান নিয়ে গেছে শুনে অনেকেই দৌড়াচ্ছেন।’

সুপ্রিমকোর্টের আরেক আইনজীবী তানজীব উল আলমও মনে করছেন সরকারি গেজেটে সাংবাদিকদের উদ্বেগের বিশেষ কোনো কারণ নেই।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি মনে করি এই তালিকায় থাকা প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের জন্য কোনো বাধা নেই। কারণ এখানে তথ্য সংগ্রহে কোনো বাধা প্রদান করা হয়নি। যেটা করা হচ্ছে সেটা হলো প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য পরিকাঠামোতে বেআইনি প্রবেশকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।

‘এখানে যদি সেটি নাও থাকত তাহলেও ডিজিটাল নিরাপত্তার অন্য বিধানে বেআইনি প্রবেশকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। তালিকা প্রকাশের ফলে এখন একটাই পার্থক্য হলো, বিষয়টি এখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ১৭ ধারায় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এর ফলে সাজার মাত্রা বেশি হবে।’

ডিজিটাল নিরাপত্তার আইনের ১৫ ধারা অনুযায়ী ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে ‘গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো’ ঘোষণাকে স্বাগত জানাচ্ছেন ব্যারিস্টার তানজীব।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটি একটা গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন বলা যায়, সেটা হলো এসব প্রতিষ্ঠানের যেসব তথ্য ডিজিটালি সংরক্ষণ করা হয় তা গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয়ত এসব প্রতিষ্ঠানের তথ্য পরিকাঠামোতে কেউ যদি অ্যাকসেস করে তাহলে তা ১৭ ধারার অধীনে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।’

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোর আওতায় আরও প্রতিষ্ঠানের নাম আসা প্রয়োজন বলেও মনে করছেন তিনি।

ব্যারিস্টার তানজীব বলেন, ‘এখানে একটা বিষয় বাদ পড়েছে, সেটা হলো মানুষের স্বাস্থ্যগত যে বিষয়গুলো আছে, সেটারও সুরক্ষা থাকার দরকার ছিল। তালিকায় কোনো সরকারি হাসপাতালের নাম আসেনি। তাছাড়া এখানে শুধু সরকারি ব্যাংকগুলোর কথা বলা হয়েছে। বেসরকারি টেলিকম প্রতিষ্ঠান, ব্যাংকও আনা দরকার ছিল। সব মিলিয়ে তালিকাটি অসম্পূর্ণ মনে হয়েছে।’

তবে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার আশংকা এই প্রজ্ঞাপন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধতা বাড়াবে।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো ঘোষণার সুযোগ রাখা হয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো যে ২৯ প্রতিষ্ঠানের তালিকা দেয়া হয়েছে, সেখানে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো ঘোষণার কিছু নেই।

‘ধরুন বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারি ব্যাংকগুলোতে কত ধরনের দুর্নীতি, অনিয়ম হয় আমরা দেখেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অনেক টাকা নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশের সাংবাদিকেরা এটা নিয়ে তেমন কিছু বের করতে পারেননি। অথচ একই বিষয়ে ফিলিপাইনে কী হয়েছে সেটা কিন্তু সবাই দেখতে পেয়েছি, যা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। আর আমাদের দেশের ব্যাংকে কী হয়েছে তা জানা গেল না।’

ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বলেন, ‘এমনিতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো ঘোষণার আগেই কোনো রকম সাংবাদিকতার সুযোগ ছিল না। সেখানে এ রকম একটা ঘোষণা আসার পর তো সাংবাদিকেরা এ বিষয়ে আর কেনো সাহস করবে না।’

আরও উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘ধরুন এখন যে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে, এটা তো একটা বড় সমস্যা। এখানে বড় কোনো দুর্নীতি থাকলে সেখানে অ্যাকসেস করতে গেলে তো আপনাকে তথ্য পরিকাঠামোয় ঢুকতে হচ্ছে, তাদের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।

‘এখন তথ্য পরিকাঠামো বলতে এই ওয়েবসাইট অ্যাকসেসকেও বোঝাবে, সেটি কিন্তু ঘোষণা বা আইনে পরিষ্কার করা নেই। এখন ওয়েবসাইট থেকে তথ্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করলেও আপনাকে এই আইনের মধ্যে ফেলে মামলায় জড়ানো সম্ভব।’

ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বলেন, ‘এই আইনে (ডিজিটাল নিরাপত্তা) এত কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে, কিন্তু আইনটাকে পরিষ্কার করে ব্যাখ্যা করা হয়নি। এতে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর পরিকাঠামোর মধ্যে আনলে সেখানে তেমন কিছু বলার ছিল না। তবে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান রাখা হয়েছে যেগুলোর প্রয়োজন ছিল না।’

‘গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো’ হিসেবে ঘোষণা করা ২৯টি প্রতিষ্ঠান হলো রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেড, সেতু বিভাগ, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, জাতীয় ডেটা সেন্টার (বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল), বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ (নির্বাচন কমিশন সচিবালয়), সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট, সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক।

এছাড়া তালিকায় রয়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, ইমিগ্রেশন পুলিশ, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অফ বাংলাদেশ, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি বাংলাদেশ, রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয় (জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ।

সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী শিশির মনির মনে করছেন, এই তালিকায় এমন প্রতিষ্ঠানের নামও রয়েছে যেগুলো রাখার কোনো যুক্তি নেই।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই ২৯ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সোনালী, রূপালী, অগ্রণীর মতো ব্যাংকগুলোতে জাতীয় নিরাপত্তা ভঙ্গ হওয়ার কী আছে! তবে হ্যা মহামান্য রাষ্ট্রপতির দপ্তর, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, বাংলাদেশ ব্যাংক এগুলো গুরুত্বপূর্ণ। এনআইডি বা ডেটা সংরক্ষণ সেটি গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, তবে সরকারি ব্যাংকগুলোকে কেন এর আওতায় আনা হলো তা বুঝতে পারছি না।’

শিশির মনির বলেন, ‘একটি রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থাকতে পারে। তথ্য সংরক্ষণ পদ্ধতি থাকতে পারে। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের কেউ ক্ষতি করতে চাইলে তাকে আইনের আওতায় আনা উচিত। এগুলো সুরক্ষার বিধান থাকা উচিত।

‘তবে এখানে কথা হলো এই যে ২৯ প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করা হলো এর মধ্যে কোনো প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি বা অনিয়ম নিয়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার সুযোগ থাকতে হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি, অনিয়ম বা বেআইনি কাজ প্রকাশের সুযোগ না থাকলে সংবিধানের ২৯ ধারা অনুযায়ী স্বাধীন সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্ত হবে।’

যেকোনো প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের সুযোগ রাষ্ট্রকেই করে দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সাংবাদিকতার সঙ্গে সম্পর্ক নেই, দাবি প্রতিমন্ত্রীর

সরকারি ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে ‘গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো’ ঘোষণা করে ২১ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আইসিটি বিভাগ। আইসিটি বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রজ্ঞাপনটি প্রকাশ করা হয় ২৬ সেপ্টেম্বর।

বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের উদ্বেগের কারণ নেই বলে দাবি করছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহ্‌মেদ পলক।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কিছু অবকাঠামো আছে যেগুলো আইসিটি ইনফ্রাস্ট্রাকচার। এগুলো সাইবার হামলার শিকার হলে অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, বেশিসংখ্যক তথ্য ও অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি তৈরি হতে পারে।

‘এসব বিষয় বিবেচনায় রেখে আমরা এই ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে আইডেন্টিফাই করেছি।’

তিনি বলেন, ‘এসব প্রতিষ্ঠানে সাইবার নিরাপত্তা জোরদার হবে, যাতে করে আমাদের যে ইনফরমেশন সিকিউরিটি ম্যানুয়াল আছে, তাতে হাই প্রায়োরিটি দিয়ে, আমরা এগুলোর দেখাশোনা করতে পারি। আবার প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের নিয়মিত আইটি অডিট প্রস্তুতি ও যেসব সতর্কতা মেনে চলা প্রয়োজন সেটা করতে পারবে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সাইবার স্পেসে গুরুত্বপূর্ণ ডেটা নিরাপদ রাখা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে আমাদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে। যেমন ধরুন সরকারের কোনো একটি ওয়েবসাইট আছে, সেখানে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের শুধু তথ্য আছে, সেটি হ্যাকড হলে আমরা যাতে এক ঘণ্টার মধ্যে সেটি রেস্টোর করতে পারি।

‘সাইবার ক্রিমিনালরা বাংলাদেশ ব্যাংক বা সিভিল এভিয়েশন বা পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতে যদি হামলা চালায় বা তথ্য চুরি করতে পারে তাহলে ক্ষতির পরিমাণটা অনেক বেশি ও মারাত্মক হবে। এসব গুরুত্ব বিবেচনায় আমরা প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছি।’

বিষয়টি নিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কিছুদিনের মধ্যেই আমি সাংবাদিকদের সামনে পুরো ব্যাখ্যাটি তুলে ধরব।’

আরও পড়ুন:
ডিজিটাল আইনের মামলায় ৩ সাংবাদিকের জামিন
সাংবাদিকের নামে ডিজিটাল আইনে মামলা প্রত্যাহার দাবি
ধর্মানুভূতিতে আঘাত মামলায় স্কুলশিক্ষকের দণ্ড
জাতিসংঘে র‍্যাপোটিয়ারের দাবি অর্থহীন: তথ্যমন্ত্রী
নাটোরে আইসিটি মামলায় সাংবাদিক কারাগারে

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
The second day of hearing about the complaint in the murder case of Chankharpool

চানখাঁরপুলে হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে দ্বিতীয় দিনের শুনানি শুরু

চানখাঁরপুলে হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে দ্বিতীয় দিনের শুনানি শুরু

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালে গত ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুলে গুলি করে ছয় জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ে দ্বিতীয় দিনের শুনানি শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আসামি পক্ষে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চাওয়ার শুনানি শুরু হয়। ট্রাইব্যুনালে এই মামলায় গ্রেফতার চার আসামি হাজির রয়েছেন।

ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠন সংক্রান্ত প্রথম কোন শুনানি শুরু হওয়ায়, সে দিনটিকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেন চিফ প্রসিকিউটর।

এর আগে, এই মামলার পলাতক চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে গত ৩ জুন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দেয়া হয়।

তবে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরেও পলাতক আসামীরা হাজির না হওয়ায়, তাদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী মো. কুতুবউদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এই মামলার অভিযোগে বলা হয়, রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় আসামিগণ কর্তৃক নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা হয় এবং শহীদ শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, শহীদ মো ইয়াকুব, শহীদ মো রাকিব হাওলাদার, শহীদ মো ইসমামুল হক ও শহীদ মানিক মিয়াকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে।

জাজ্বল্যমান এ সব অপরাধের বিচার এখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Hasinas six month imprisonment for contempt of court

আদালত অবমাননার দায়ে শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড

আদালত অবমাননার দায়ে শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড

আদালত অবমাননার একটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার অপসারণের পর এটাই প্রথম কোনো আদালতের রায়, যাতে তাকে দণ্ডিত করা হয়েছে।

বুধবার (২ জুলাই) আইসিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

একই মামলায় গাইবান্ধা জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন নেতা শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এই ধরনের মামলায় পলাতক আসামির জন্য আইনজীবী নিয়োগের পূর্ব নজির না থাকলেও ন্যায়বিচারের স্বার্থে শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে একজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, গত বছরের ২৫ অক্টোবর শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেতা শাকিলের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন।

সেই অডিও ক্লিপে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘২২৬ জনকে মারার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’—যা বিচারব্যবস্থার প্রতি সরাসরি হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে আদালত। পরে এই ঘটনায় আইসিটিতে মামলা করেন রাষ্ট্রপক্ষ।

গত ৩০ এপ্রিল এ-সংক্রান্ত শুনানিতে দুই আসামিকে ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। ধার্য তারিখে তারা হাজির হননি। কিংবা আইনজীবীর মাধ্যমেও ব্যাখ্যা দেননি। সেদিন ট্রাইব্যুনাল দুই আসামিকে সশরীর হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দেওয়ার জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিতে নির্দেশ দেন।

পরদিন দুটি সংবাদপত্রে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তিতে দুজনকে গত ৩ জুন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়। সেদিনও তারা হাজির হননি। পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য ১৯ জুন তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।

১৯ জুন এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য করা হয় ২৫ জুন।

২৫ জুন মামলায় প্রস্তুতি নিতে অ্যামিকাস কিউরি মশিউজ্জামানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে এক সপ্তাহ সময় দেন ট্রাইব্যুনাল। সেদিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয় ২ জুলাই। আজ দুই আসামিকে কারাদণ্ড দিয়ে রায় দিলেন ট্রাইব্যুনাল।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Padma bridge has found evidence of corruption initially in appointment of consultants
দুদক চেয়ারম্যান

পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগে প্রাথমিকভাবে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে

পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগে প্রাথমিকভাবে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে

পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগে প্রাথমিকভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন।

মঙ্গলবার দুদকের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকার পরও এই মামলা পরিসমাপ্তি করা হয়। গেল জানুয়ারিতে শুরু হওয়া অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগে প্রাথমিকভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণও মিলেছে।’

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, গায়ের জোরেই পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলায় আসামিদের অব্যাহতি দিয়েছিল তৎকালীন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সংস্থাটির চেয়ারম্যানের দাবি, বেশকিছু দুর্নীতির তথ্য মিলেছে। এই মামলায় আসামির অব্যাহতির পেছনে তৎকালীন কমিশনের দায় আছে কি না তাও খতিয়ে দেখার কথা জানান তিনি।

আব্দুল মোমেন বলেন, নতুন তদন্তে কারো সংশ্লিষ্টতা মিললে, তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতু পরামর্শক নিয়োগের বিষয়ে করা মামলা নিষ্পত্তির দীর্ঘ একযুগ পর; গত জানুয়ারি মাসে সেই মামলা পুনরায় অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। গঠন করা হয় উচ্চ পর্যায়ে কমিটি।

জানা যায়, ২০১২ সালে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে সাতজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে মামলা করে দুদক। তবে ২০১৪ সালে অদৃশ্য কারণে মামলাটি পরিসমাপ্তি করে তৎকালীন বদিউজ্জামান ও শাহাবুদ্দিন চুপ্পু কমিশন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Former CEC Nurul Huda in court confesses responsibility
প্রহসনের নির্বাচনের অভিযোগ

আদালতে সাবেক সিইসি নুরুল হুদার দায় স্বীকার

আদালতে সাবেক সিইসি নুরুল হুদার দায় স্বীকার

প্রহসনের নির্বাচন ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমানের আদালতে এ জবানবন্দি দেন তিনি।

এর আগে দুই দফায় চার দিন করে আট দিনের রিমান্ড শেষে নূরুল হুদাকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক শামসুজ্জোহা সরকার। এরপর নূরুল হুদা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মতি হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন এই তদন্তকারী কর্মকর্তা।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

নূরুল হুদার পক্ষে অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম সজিব এ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, নূরুল হুদার রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করেন পুলিশ। আমরা তার জামিনের দরখাস্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতে উপস্থিত হই। এরপর আদালতে এসে জানতে পারি তিনি দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিচ্ছেন।

গত ২২ জুন সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরে নূরুল হুদার বাড়িতে গিয়ে ‘স্থানীয় জনতা’ তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরদিন প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। চার দিনের রিমান্ড শেষে একই মামলায় গত ২৭ জুন আবারও চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার সিএমএম আদালত।

একই মামলায় গত ২৯ জুন তিন দিনের রিমান্ড শেষে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে কারাগারে পাঠানো হয়।

গত ২২ জুন দশম থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করা তিন সিইসি যথাক্রমে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহ উদ্দিন খান। পরবর্তীতে গত ২৫ জুন এ মামলায় নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারা যুক্ত করা হয়।

সাবেক আমলা নূরুল হুদা ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সিইসি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন দেশের দ্বাদশ সিইসি। তার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিশনের অধীনে ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় পর্যায়ের সব ভোট হয়।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The ACC investigation against three other NBR officers began

এনবিআরের আরও ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শুরু

এনবিআরের আরও ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত শুরু

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আরও পাঁচ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তারা অবৈধ সম্পদ অর্জন, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং পক্ষপাতিত্বের সঙ্গে জড়িত। মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুদক এই তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে এই কর্মকর্তারা বড় পরিসরে কর ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এতে করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের উল্লেখযোগ্য রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।

এমন সব অভিযোগে যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে তারা হলেন— বড় করদাতা বিভাগের (ভ্যাট) অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল রশিদ মিয়া, সদস্য মো. লুৎফুর আজিম, কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের (সিআইআইডি) সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আলমগীর হোসেন, ঢাকার কর অঞ্চল-১৬ এর উপকর কমিশনার মো. শিহাবুল ইসলাম এবং যুগ্ম কমিশনার মো. তারেক হাসান।

এর আগে ২৯ জুন দুদক এনবিআরের আরও ছয়জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। যাদের বিরুদ্ধে কর্তৃত্বের অপব্যবহার ও গত দুই দশক ধরে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

ছয় কর্মকর্তা হলেন— আয়কর নীতি বিভাগের সদস্য একেএম বদিউল আলম, ঢাকা কর অঞ্চল-৮ এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, বিসিএস কর একাডেমির যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দিন খান, ঢাকার কর অঞ্চল-১৬ এর উপকর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, অডিট-গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর-ভ্যাটের ঢাকার অতিরিক্ত কমিশনার হাসান তারেক রিকাবদার এবং কাস্টমস-আবগারি ও ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা (দক্ষিণ) এর অতিরিক্ত কমিশনারসাধন কুমার কুন্ডু।

এই ছয় কর্মকর্তার মধ্যে হাসান তারেক এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হিসেবে পরিচিত। তার নেতৃত্বাধীন পরিষদটি রাজস্ব বোর্ড ভেঙে দেওয়ার পরিবর্তে এর অভ্যন্তরে কাঠামোগত সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছে।

দুদকের মুখপাত্র আক্তারুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত কর্মকর্তারা কর দায় কমানোর বিনিময়ে ঘুষ গ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার কেউ কেউ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাও দায়ের করেছেন—যারা তাদের অবৈধ দাবি পূরণে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগও রয়েছে যে, করদাতাদের কর ফেরত ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্বিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে করদাতাদের তাদের পাওনা পেতে ঘুষ দিতে বা উপহার দিতে বাধ্য করা হয়েছে। কখনো কখনো এই ঘুষের পরিমাণ ছিল করদাতাদের পাওনার অর্ধেকের সম পরিমাণ।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Plot Allocation for fraud Sheikh Hasina ordered the publication of the Gazette to appear in the court

প্লট বরাদ্দে জালিয়াতি : শেখ হাসিনাসহ ১০০ জনকে আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ

প্লট বরাদ্দে জালিয়াতি : শেখ হাসিনাসহ ১০০ জনকে আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ

প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১০০ জনকে আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।

আজ ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২০ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত।

দুদক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বাসস’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির ছয়টি মামলার আজ ধার্য তারিখ ছিল। পাঁচ মামলায় শেখ হাসিনাসহ আসামিরা পলাতক অবস্থায় রয়েছেন মর্মে প্রতিবেদন এসেছে। অপর এক মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১২ জন আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আজ দিন ধার্য ছিল। এদিন গেজেট প্রকাশ হয়ে আসেনি। আদালত ছয় মামলারই গেজেট প্রকাশের জন্য নির্দেশ দেন। ছয় মামলারই আগামী ২০ জুলাই পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এসব মামলায় চার্জশিট আমলে নিয়ে শেখ হাসিনাসহ ১০০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এরপর গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত। আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি বলে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর আইনুযায়ী আসামিদেন আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন আদালত। গেজেট প্রকাশ হয়ে আসলে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Former MP Tuhin and Shah Alam Murad Remand

সাবেক এমপি তুহিন ও শাহে আলম মুরাদ রিমান্ডে

সাবেক এমপি তুহিন ও শাহে আলম মুরাদ রিমান্ডে

শেরেবাংলা নগর থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনে করা মামলায় ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার একটি আদালত।

অপর দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর ধানমন্ডি থানার আব্দুল মোতালেব হত্যা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কার্যনির্বাহী সদস্য শাহে আলম মুরাদের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আজ কারাগার থেকে তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ।

এরপর তুহিনের সাত দিন ও শাহে আলম মুরাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা।

এ সময় তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র এ আদেশ দেন।

গত ২২ জুন গভীর রাতে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের আওনা গ্রামে বাবার বাড়ি থেকে তুহিনকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।

গত ১৭ এপ্রিল সকালে উত্তরা এলাকা থেকে শাহে আলম মুরাদকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

তুহিনের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ৪ এপ্রিল সকাল ৭টার দিকে যুব মহিলা লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ইশরাত জাহান নাসরিনসহ অজ্ঞাতনামা ১৪ থেকে ১৫ জন দুষ্কৃতকারীরা শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সামনে নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও যুব মহিলা লীগের নেতা-কর্মীরা মিছিল করে।

পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। আসামিরা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের কার্যক্রমকে গতিশীল ও সন্ত্রাসী সংগঠনকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্য প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের পদত্যাগের দাবি করে স্বাধীন দেশের সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার ষড়যন্ত্র করে।

এ ঘটনায় ৪ এপ্রিল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ।

মোতালেব হত্যা মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ছাত্র-জনতার মিছিলে থাকা আবদুল মোতালেব নামের এক কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরে ২৬ আগস্ট তার বাবা আব্দুল মতিন বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৭৬ জনকে আসামি করা হয়।

মন্তব্য

p
উপরে