কার্বন নিঃসরণে দায়ী না হয়েও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে। প্যারিস ঘোষণা অনুযায়ী উন্নত দেশগুলোর ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা থাকলেও তা এখনও কার্যকর হয়নি। এমন বাস্তবতায় ক্ষতিপূরণের আশায় বসে না থেকে দেশের ভৌগোলিক অবস্থানের কথা চিন্তা করে নিজেদের ব্যবস্থা নিজেদের করে নিতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ জন্য বৃক্ষরোপণের ওপর জোর দিয়েছেন তিনি। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই দেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় জানান তিনি।
ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার দুপুরে ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২২’ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় ৫০টি মুজিব কিল্লা, ৮০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র ও ২৫টি জেলা ত্রাণগুদাম কাম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্যকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কোনো রকম অ্যামিশন (কার্বন নিঃসরণ) করে না। বাংলাদেশ ক্ষতিকারক না। কিন্তু বাংলাদেশ সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। উন্নত দেশগুলো, তারা উন্নয়ন করে ফেলেছে। তার ফলে আজকে আমরা ভুক্তভোগী।’
ভুক্তভোগী দেশগুলোর ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবি তোলার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো আমরা অনেক প্রতিশ্রুতি পাই, কিন্তু বাস্তবে কতটুকু সহযোগিতা পাওয়া যায়? তার পরও আমি বলব যে, প্যারিস চুক্তি হওয়ার ফলে একটা আশার প্রদীপ জ্বলে আছে। পাশাপাশি গ্লাসগোতেও কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভবিষ্যতে কী হয়…
‘কিন্তু আমাদের একটা কথা মনে রাখতে হবে, আমাদের দেশের ভৌগোলিক অবস্থানের কথা চিন্তা করে আমাদের ব্যবস্থাটা আমাদের নিজেদেরই করে নিতে হবে। এ জন্য আজ আপনাদের সবাইকে বলব, আজ এখানে যারা উপস্থিত, আসলে বৃক্ষরোপণ, সবুজায়ন বা উপকূলকে আপনারা যত বেশি এ রকম বৃক্ষ আচ্ছাদিত করতে পারবেন, তত বেশি কিন্তু আমরা দেশকে বাঁচাতে পারব।’
জলবায়ুর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশকে সমৃদ্ধ করার পথ বের করা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেই পথেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এ বিষয়ে অবশ্যই আমাদের যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছি, তা আমরা সফল করব।’
করোনাভাইরাস মহামারির অভিঘাত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, যুদ্ধ ঘিরে দেয়া নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলা করে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ আমরা এগিয়ে যেতে পারব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চের ভাষণে বলেছিলেন, কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। বাঙালি জাতিকে কেউ আর দাবায়ে রাখতে পারবে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মনুষ্য দুর্যোগ, সব মোকাবিলা করে বাংলাদেশ তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাবে।’
বন্যা ক্ষতি করলেও তা প্রয়োজন বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তুলে ধরেন তার ব্যাখ্যা।
তিনি বলেন, ‘ভূমি ক্ষয় হয় বৃষ্টিতে। আমাদের ব-দ্বীপ, বন্যা আসে, বন্যা আমাদের প্রয়োজন। সারা বছর বৃষ্টিতে ভূমির যে ক্ষয় হয়, বন্যায় পলি এসে তা আবার পুনরোদ্ধার হয়। কিন্তু বন্যায় মানুষ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে আমরা সতর্ক। সে জন্য বন্যাপ্রবণ এলাকায় বন্যা সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করে দিচ্ছি।’
বাংলাদেশ নামের এই ব-দ্বীপ রক্ষায় ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ প্রণয়ের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি পরিকল্পনার সঙ্গে আমাদের দেশটাকে যেকোনো দুর্যোগ থেকে রক্ষা করার ব্যাপারে আমরা সব সময় সচেতন। রাস্তাঘাট, পুল ও ব্রিজ করার সময় আমরা লক্ষ্য রাখি আমাদের দেশে যখন অতিবৃষ্টি হবে, বন্যা হবে তখন পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাটা যেন থাকে।’
দুর্যোগ সহনশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ একটা স্থান পেয়েছে বলেও জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘যতই দুর্যোগ আসুক আমরা সেটা মোকাবিলা করতে সক্ষম। এটা আমরা প্রমাণ করেছি। কিন্তু এটা অব্যাহত রাখতে হবে। আবার ওই রকম কেউ যেন না আসে ক্ষমতায়। যত মানুষ মরে যাওয়ার কথা ছিল, তত মানুষ মরেনি- এই কথা বলে দায়-দায়িত্বহীনতার পরিচয় যেন কেউ না দেয়, ভবিষ্যতে সেদিকেও দেশবাসীকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘বাংলাদেশ একটা অদ্ভূত দেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগও যেমন মোকাবিলা করতে হয় আবার অগ্নিসন্ত্রাসের মতো দুর্যোগও আমাদের মোকাবিলা করতে হয়। যেটা মানুষ দ্বারা সৃষ্ট। চলন্ত গাড়িতে আগুন, বাসে আগুন, লঞ্চে আগুন। এটাই হচ্ছে আমাদের দুর্ভাগ্য।’
বাংলাদেশে নানা ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলায় গবেষণার ওপর জোর দেয়া হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আজ সেই গবেষণার মাধ্যমে দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, লবণাক্ত সহিষ্ণু ধান, জলমগ্ন বা ক্ষরা সহিষ্ণু ধান, সেই বীজ ইতোমধ্যে উদ্ভাবন করা হয়েছে। কিছু আমরা বাজারজাত করতেও সক্ষম হয়েছি। সেদিক থেকে খাদ্য নিরাপত্তাটাও এর সঙ্গে সম্পর্কিত। খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও কিন্তু আমরা আমাদের গবেষণা অব্যাহত রেখেছি। যার ফলে খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিরাপত্তাটা আমরা করতে পারি, সে ব্যবস্থাটাও আমরা নিয়েছি।’
ভূমিকম্প সহনীয় করে বাড়ি ও বহুতল ভবন নির্মাণে আবারও নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘ভূমিকম্প থেকে রক্ষা করার জন্য যখনই যে ঘরবাড়ি করবেন, বিশেষ করে শহরে যে উঁচু দালান বা বহুতলবিশিষ্ট দালান করা হয়, এই ভূমিকম্প যাতে ক্ষতিগ্রস্ত করতে না পারে, সেদিকে সবাইকে বিশেষ দৃষ্টি দেয়ার জন্য আমি অনুরোধ করছি। বিশেষ করে এই বিল্ডিংগুলো যারা বানান, যখনই প্ল্যান করেন তখনই এই বিষয়গুলোর দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেয়া দরকার।’
আরও পড়ুন:পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বোটানিক্যাল গার্ডেন শুধু বিনোদনের স্থান নয়, এটি প্রকৃতি সংরক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এসব উদ্যানকে প্রকৃতির সংরক্ষণস্থল হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে।
তিনি বলেন, কেউ এ সংক্রান্ত কার্যকর প্রস্তাব দিলে তা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শুক্রবার অনুষ্ঠিত বার্ষিক বোটানিক্যাল কনফারেন্সের উদ্বোধন অধিবেশনে ঢাকাস্থ বাসভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
রিজওয়ানা বলেন, ‘দেশের পাহাড়ি ও উপকূলীয় বনসহ বিপন্ন বনাঞ্চল রক্ষায় সরকার কাজ করছে। বন সংরক্ষণে ট্যুরিজম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘অবৈধ দখলমুক্ত করে পুনরায় বনায়ন করতে হবে। কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে বন উজাড় হলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় বৃক্ষরোপণ নিশ্চিত করতে হবে।’
উপদেষ্টা জানান, শালবন পুনরুদ্ধারে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুধু দেশীয় গাছ রোপণ করলেই হবে না। এগুলো টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থাও জরুরি।
তিনি আরও জানান, সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে প্রাকৃতিক বন পুরোপুরি ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তাই কোনো বনায়ন প্রকল্পের কারণে প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করা যাবে না।
আরও পড়ুন:পানিসম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, চলতি বছরের মধ্যেই ঢাকার ১৯টি খালের দখল ও দূষণমুক্তকরণের কাজ সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘বর্ষার আগে আপাতত ছয়টা খাল দখল ও দূষণমুক্ত করতে সক্ষম হব এবং খুব শিগগিরই আরও চারটা খাল দখল ও দূষণমুক্তকরণের কাজ শুরু করব এবং এই বর্ষার আগেই বাকি আরও ৯টির কাজ শুরু হবে।
‘অর্থাৎ, এ বছরের মধ্যেই ১৯টি খালের দখল ও দূষণমুক্তকরণের কাজ সম্পন্ন করা হবে।’
রাজধানীর বাউনিয়ায় (পুলিশ স্টাফ কলেজের পেছনে) রবিবার ডিএনসিসি এবং ডিএসসিসির আওতাধীন ছয়টি খাল দখল ও দূষণমুক্ত করে খালকেন্দ্রিক ব্লু নেটওয়ার্কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজওয়ানা বলেন, ‘এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে হয়তো এই ১৯টি খালকেন্দ্রিক মাস্টার প্ল্যান করে ফেলা হবে। কোথায় কোথায় আমাদেরকে একদম সুনির্দিষ্ট আরও কিছু কাজ করতে হবে, সেটা ঠিক করে আগামী বাজেটকে সামনে রেখে কাজগুলো ঠিক করে সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধারের জন্য অর্থের সংস্থান করতে পারব বলে আশা করি।’
খালের পাড়ে চাষাবাদ করা যায় কি না তা নিয়ে একটা পরিকল্পনা আছে উল্লেখ করে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘খালের পাড়গুলোতে সবুজ ফিরিয়ে আনতে পারি কি না আর খালের মধ্যে মাছ আনা যায় কি না, এটা আমরা দেখতে চাচ্ছি। সেটা কেমন করে ফিরিয়ে আনব, কেমন করে খালের প্রাণ ফিরিয়ে আনা যায়, সেই চেষ্টাটা আমরা করব। এটা আমাদের মন্ত্রণালয়কেন্দ্রিক উদ্যোগ হলেও নগরবাসীকে এ কাজে সম্পৃক্ত হতে হবে।’
তিনি বলেন, ঢাকার খালগুলোর প্রাণ ফিরিয়ে আনতে হবে। খালগুলো হবে প্রাণকেন্দ্র।
আজ দখল ও দূষণমুক্ত কার্যক্রমের জন্য উদ্বোধন হওয়া ছয়টি খাল হচ্ছে বাউনিয়া খাল, রূপনগর খাল, বেগুনবাড়ী খাল, মান্ডা খাল, কালুনগর খাল ও কড়াইল লেক। এ ছয় খালের মোট দৈর্ঘ্য ২৩.৬৬ কিলোমিটার।
আরও পড়ুন:পরিবেশ রক্ষার প্রত্যয় নিয়ে দেশে যাত্রা শুরু করল অ্যাপ্লায়েড ক্লাইমেট থিয়েটার-বাংলাদেশ তথা অ্যাক্ট বাংলাদেশ নামের একটি সংস্থার।
রাজধানীর উত্তরায় রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে শনিবার সন্ধ্যায় এর যাত্রা শুরু হয়।
জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে থিয়েটারকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করবে সংস্থাটি।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় পারফর্মিং আর্টস একটি শক্তিশালী মাধ্যম। এটি জনসাধারণকে সচেতন করার পাশাপাশি তাদের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার শক্তি রাখে।’
অনুষ্ঠান উদ্বোধনের পর আয়োজন করা হয় জলবায়ু সচেতনতাবিষয়ক সেমিনার। এতে বক্তব্য দেন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।
বক্তাদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাজ্যের ল্যাঙ্কাশায়ার আর্টস নেটওয়ার্ক ফর ডেভেলপিং সাস্টেইনেবিলিটি তথা ল্যান্ডসের চেয়ার এসথার ফেরি-কেনিংটন, এরগন থিয়েটার কোম্পানির কো-আর্টিস্টিক ডিরেক্টর রবিন লায়ন্স, রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের প্রধান ড. সাইদুর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাহমান মৈশান।
সেমিনার শেষে মঞ্চস্থ হয় ‘ড্রট ইন দ্য ফেইট অফ ফারমার’ নাটক।
নজরুল সৈয়দের রচনা ও আব্দুর রাজ্জাকের নির্দেশনায় নাটকটি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে কৃষকদের জীবনে আসা প্রতিকূলতা এবং তা মোকাবিলার সংগ্রাম তুলে ধরে।
নাটকের নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন বন্ধন সাহা। পরিবেশনায় ছিলেন রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
অ্যাক্ট বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘থিয়েটারের শক্তি মানুষের আবেগকে আলোড়িত করার, উপলব্ধিকে চ্যালেঞ্জ করার এবং কর্মে উদ্বুদ্ধ করার মধ্যেই নিহিত।
‘অ্যাক্ট বাংলাদেশের মাধ্যমে আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতে চাই, যা শুধু জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা তুলে ধরবে না; বরং মানুষকে একটি টেকসই ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে এবং তার জন্য কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করবে।’
বৈশ্বিক ও স্থানীয় অংশীদারত্ব
অ্যাক্ট বাংলাদেশ বৈশ্বিকভাবে যুক্তরাজ্যের ল্যাঙ্কাশায়ার আর্টস নেটওয়ার্ক ও এরগন থিয়েটারের সহযোগিতায় কাজ করবে।
স্থানীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটি রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগ, হেলথ সিকিউরিটি ফাউন্ডেশন ও কারিগরি সহযোগী বাইটকুইলের সঙ্গে কাজ করবে।
অ্যাক্ট বাংলাদেশের এ উদ্যোগ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণে জনগণকে বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের জনবহুল রাজধানী ঢাকা রোববার সকাল ৯টার দিকে একিউআই স্কোর ২৭৫ নিয়ে বিশ্বব্যাপী দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
একিউআই সূচক অনুযায়ী, আজ রোববারের বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
মঙ্গোলিয়ার উলানবাটোর, মিসরের কায়রো ও ভারতের কলকাতা যথাক্রমে ২৮৬, ২৫৬ ও ২০০ একিউআই স্কোর নিয়ে প্রথম, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান দখল করেছে।
যখন কণা দূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকে তখন বায়ুর গুণমানকে ‘মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়। একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেয়া হয়। ১৫১ থেকে ২০০-এর মধ্যে হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়।
এছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এর বায়ুর গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণের কারণে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।
আরও পড়ুন:জনবহুল রাজধানী ঢাকা শনিবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে একিউআই স্কোর ২২২ নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।
একিউআই সূচক অনুযায়ী, এদিনের বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আফগানিস্তানের কাবুল, বসনিয়া-হার্জেগোভিনার সারায়েভো ও মিসরের কায়রো যথাক্রমে ২২৮, ২১৫ ও ২১৪ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান দখল করেছে।
যখন কণা দূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকে তখন বায়ুর গুণমানকে ‘মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়।
একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেয়া হয়।
১৫১ থেকে ২০০-এর মধ্যে হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়।
এছাড়া ৩০১-এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো-বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এর বায়ুর গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএইচও) মতে, বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যান্সার এবং তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।
আরও পড়ুন:বনভূমি ও পরিবেশ সুরক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে জানিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, অবৈধ দখলদাররা যত প্রভাবশালীই হোক, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে শনিবার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণবিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘বন দখলকারীদের প্রতিরোধ করতে কীভাবে কাজ করতে হয়, তা আমরা জানি। আগামী তিন মাসের মধ্যে দখল হওয়া জমি উদ্ধারের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
‘জেলা প্রশাসকদের বনের সীমানা নির্ধারণের কাজ দ্রুত শুরু করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্টের পর থেকে গাজীপুরে দখল হওয়া ৯০ একর বনভূমির মধ্যে ১৬ একর এরই মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ‘বৃক্ষনিধন ও শিল্পকারখানার দূষণ বন্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরকে ছাড়পত্র দেয়ার আগে সব দিক পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং নবায়নের সময় জনগণের মতামত নিতে হবে।’
অনুষ্ঠানে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিনের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলার পুলিশ সুপার, আর্মি সিকিউরিটি ইউনিটের অধিনায়ক, ৬৩ বিজিবির অধিনায়ক, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সচিব, বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা।
আরও পড়ুন:বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক প্রকল্প বাতিল করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সভায় প্রকল্পটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই সভার আগে অনুমোদিত এই প্রকল্প বাতিলের প্রস্তাব করে পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
মৌলভীবাজারের সংরক্ষিত লাঠিটিলা বনের পাঁচ হাজার ৬৩১ একর জমিতে ‘বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক’ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত প্রকল্পটি গত বছরের নভেম্বরে একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়।
কিন্তু জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকি বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটি বাতিলের সুপারিশ করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। আপত্তি থাকা সত্ত্বেও ওই প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছিল শেখ হাসিনা সরকার।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে অনুমোদিত প্রকল্পটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় পরিকল্পনা কমিশন। এর পরিপ্রেক্ষিতে একনেক সভায় দেশের তৃতীয় সাফারি পার্ক স্থাপন প্রকল্পটি বাতিলের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়।
মন্তব্য