দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শরিফউদ্দীন আহমেদ বুধবার বিকেলে এই রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামি হলেন ২৬ বছর বয়সী রেজোয়ান সাদ্দাম। তার বাড়ি নবাবগঞ্জের হরিপুর সোনামুড়ি গ্রামে।
এসব নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত আইনজীবী তৈয়বা বেগম।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে কৃষ্ণপুর গ্রামের লায়লা খাতুনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় রেজোয়ান সাদ্দামের। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে ৫০ হাজার টাকা তাকে দেয় লায়লার পরিবার। বিয়ের পরও বিভিন্ন সময় যৌতুক পেতে লায়লাকে মারধর করতেন তিনি। সবশেষ ২০১৬ সালের ১০ জুলাই সাদ্দাম স্ত্রীর কাছে ৮০ হাজার টাকা চান। তা না দেয়ায় সে বছরের ২৫ জুলাই স্ত্রীকে হত্যা করেন তিনি।
পরদিন লায়লার বাবা সাবজান মিয়া নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন।
নাটোর জেলা কারাগারে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে এ কে আজাদ সোহেল নামের এক বিএনপি নেতার।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বৃহস্পতিবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
প্রাণ হারানো সোহেল নাটোরের সিংড়া উপজেলার হাতিয়ান্দহ ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
সিংড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান লেলিন জানান, গত ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় এ কে আজাদ সোহেলকে আটক করে কারাগারে পাঠায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরে ৩০ নভেম্বর আদালত থেকে তার জামিন নেয়া হয়। কারাগার থেকে সোহেলকে আনতে গেলে কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, অসুস্থ থাকায় তাকে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘সোহেলকে রাজশাহী মেডিক্যালের বারান্দার বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হয়। জামিনের পরে কারা কর্তৃপক্ষের মারফতে পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনা জানলে তারা গিয়ে সোহেলের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তার মৃত্যু হয়।’
নিহতের বড় ভাই শামীম হোসেন জানান, বিনা অপরাধে তার ভাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কারাগারে অসুস্থ হয়ে রাজশাহীতে মারা যায় সে।
নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ বলেন, ‘এ কে আজাদ সোহেলকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠায় পুলিশ। সেখানে নির্যাতনের পরে সে স্ট্রোক করে, কিন্তু সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হয়।’
এ বিষয়ে নাটোর জেলা কারাগারের জেলার মোশফিকুর রহমান জানান, ২১ নভেম্বর এ কে আজাদ সোহেলকে জেলহাজতে নিয়ে আসা হয়। তিনি নাশকতার মামলার আসামি ছিলেন। ২৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় অসুস্থ হলে প্রথমে তাকে সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে রাজশাহী মেডিক্যালে স্থানান্তর করেন। পরে তিনি রাজশাহী কারাগারের আওতায় চিকিৎসাধীন ছিলেন।
সোহেলের অসুস্থতার কথা পরিবারকে জানানো হয়েছিলো কি না, এমন প্রশ্নে জেলার বলেন, ‘প্রতিনিয়তই অনেকে এ রকম অসুস্থ হয়। রাজশাহীর দূরত্ব অল্প হওয়ায় পরিবারকে খবর দেয়া তখন জরুরি মনে হয়নি।’
আরও পড়ুন:ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৩৩টি থানাসহ সারা দেশের ৩৩৮টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বদলি করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অনুমোদনে পর ওসিদের এ বদলি কার্যক্রম শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশের ৩৩৮ থানার ওসিকে বদলির অনুমোদন দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
গত ৩০ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে যেসব থানার ওসিদের বর্তমান কর্মস্থলে ছয় মাসের বেশি চাকরির মেয়াদ হয়েছে, তাদের অন্যত্র বদলি করতে চিঠি দেয় ইসি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার ৩৩৮ থানার ওসির বদলির প্রস্তাব পাঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর ওসি বদলির অনুমোদন দেয় নির্বাচন কমিশন।
২০০৯ সালে নিষিদ্ধ হলেও সদস্য সংগ্রহসহ সাংগঠনিক নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরীর। তবে বিভিন্ন সময় সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা গেলেও আড়ালে থেকে গেছেন শীর্ষ নেতারা।
কাটআউট পদ্ধতিতে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করায় কোনোভাবেই শীর্ষ নেতাদের শনাক্ত করতে পারছিলেন না গোয়েন্দারা। অবশেষে হিজবুত তাহরীরের শীর্ষ নেতা তৌহিদুর রহমান ওরফে তৌহিদ ওরফে সিফাতকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)।
বুধবার রাতে কক্সবাজার থেকে তৌহিদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার তৌহিদ হিজবুত তাহরীরের শীর্ষ ২-৩ জনের মধ্যে একজন।
সিটিটিসি জানায়, তৌহিদের পরিবারের একজন সদস্য সিভিল সার্ভিস কর্মকর্তা ও বেশ কয়েকজন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘গত ৩০ সেপ্টেম্বর হিজবুত তাহরীর একটি অনলাইন সম্মেলন করে। তারা সম্মেলনের জন্য রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার টানায়, অনলাইন প্রচারণা ও ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হয়। সম্মেলনে নানা রকম বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০০৩ সালের একটি সম্মেলনের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করে হিজবুত তাহরীর। সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কয়েকজন শিক্ষকের প্রকাশ্য প্রচেষ্টায় সংগঠনটি যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে হিজবুত তাহরীর প্রচলিত রাষ্ট্র ব্যবস্থায় বিশ্বাস করে না। তারা প্রচলিত আইন মানে না বলেও প্রচারণা চালিয়ে আসছে। বর্তমান রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করে খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য দাওয়াতি কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে যার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে এক ধরনের সাম্প্রদায়িক উস্কানি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছো’
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যেসব এলাকা সিসিটিসির আওতায় নেই বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি কম, সেসব স্থান আগে থেকে রেকি করে তারা পোস্টার লাগাত। পোস্টার লাগানোর সময় আমরা অনেককে হাতেনাতে গ্রেপ্তারও করেছি। কিন্তু শীর্ষ নেতাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার চ্যালেঞ্জ ছিল।
‘তারা হাইলি রেডিক্যালাইজড এবং কাটআউট পদ্ধতিতে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। নিচের সারির কাউকে গ্রেপ্তার করা গেলেও তার উপরের কারও বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যেত না। অবশেষে সিটিটিসি অনেক সাফল্যের সঙ্গে হিজবুত তাহরীরের সবচেয়ে বড় নেতাদের একজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।’
টার্গেট উচ্চবিত্ত ও মেধাবীদের
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘হিজবুত তাহরীর সাধারণত উচ্চবিত্ত ও মেধাবীদের টার্গেট করে প্রচারণা চালায়। তাদের ভাবনা, যদি এই শ্রেণিকে রিক্রুট করতে পারে তাহলে প্রতিষ্ঠিত সমাজে সমর্থন পাবে এবং খেলাফত প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। তারা সদস্য সংগ্রহের জন্য বিশ্বিবদ্যালয়গুলোকেও টার্গেট করে।’
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তার তৌহিদের পরিবারের একজন সদস্য সিভিল সার্ভিস কর্মকর্তা। এ ছাড়া পরিবারের বেশ কয়েকজন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তৌহিদ ২০১১ ও ২০১৯ সালে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে আবারও সাংগঠনিক কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়েন তিনি। দীর্ঘ ১২ বছরে তৌহিদ সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ে চলে আসে।
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে তৌহিদ হিজবুত তাহরীরের ফুলটাইম সদস্য হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। ৩০ সেপ্টেম্বর তাদের অনলাইন সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন তৌহিদ।’
গ্রেপ্তারের পর তাকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা অনলাইন সম্মেলনের বিষয়ে জানার পর কনফিউজড ছিলাম- সম্মেলনগুলো দেশের ভেতরে নাকি বাইরে থেকে করা হয়েছে! এখনও স্থানগুলো এক্স্যাক্টলি শনাক্ত করতে পারিনি, তবে বাংলাদেশের কোথাও করেছে। আশা করছি জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত জানতে পারব। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।’
তিনি বলেন, ‘সম্মেলনের মঞ্চে উপস্থিত তিনজনের মধ্যে দুইজন বক্তব্য দেন ও একজন উপস্থাপক ছিলেন। আমরা প্রধান ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি, আশা করছি বাকি দুইজনকে গ্রেপ্তার করতে পারব। তাদের সম্মেলনের মূল বিষয় ছিল, বর্তমান সরকারকে উৎখাত করা।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা পোস্টার কোথায় ছাপায়- এটা আমাদেরও প্রশ্ন। জিজ্ঞাসাবাদে বিষয়গুলো জানার চেষ্টা করব। যারা পোস্টার টানায় তাদেরকে হয়ত হাতেনাতে দুয়েকজনকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি বিভিন্ন সময়। কিন্তু তারা কাটআউট, স্লিপার সেল পদ্ধতিতে কাজ করে। তাদের রিক্রুট কৌশলটাও একটু অন্যরকম। বিভিন্ন গ্রুপকে টার্গেট করে মেসেজ দেয় তাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য। আমরা বিষয়গুলো জানার চেষ্টা করব।’
কারাগারে রেডিক্যালাইজেশনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কারাগারে আমাদের কোনো সুপারভিশন থাকে না। তবে যারা অথোরিটি আছে, আশা করি তারা এ বিষয়ে সচেতন। আমরা যতটুকু জানি, জঙ্গিদের আলাদা সেলে সর্বোচ্চ নজরদারিতে রাখা হয়। এরপরও তারা সুযোগ নিয়ে নিজেদের কাজ করতে পারে। তবে আমরা কারাগারে ডিরেডিক্যালাইজড সিস্টেমের মধ্যেও যাচ্ছি, খুব শিগগিরই আমরা এ বিষয়ে কাজ শুরু করব। জঙ্গিরা জেল থেকে বের হয়ে সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়েও চলে আসছে, আমরা এ বিষয়ে কনসার্ন।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের ফৌজদারি আইনে মৃত্যুদণ্ডের বিধান চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় বৃহস্পতিবার রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান।
রিটে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিবসহ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিটে বলা হয়, বাংলাদেশে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান মৃত্যুদণ্ড, কিন্তু এই মৃত্যুদণ্ডের বিধান সংবিধানের ৩২ ও ৩৫ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
সংবিধান ছাড়াও জাতিসংঘ ঘোষিত ১৯৪৮ সালের মানবাধিকার সনদ, ১৯৬৬ সালের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং ১৯৮৪ সালের নির্যাতনবিরোধী কনভেনশনে মৃত্যুদণ্ডকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এসব দলিলে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে বাংলাদেশের। এরই মধ্যে বিশ্বের ১১২টি দেশ মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করেছে। রিট আবেদনে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডকে অসাংবিধানিক ঘোষণার দাবি করা হয়েছে।
রিটকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, ‘মৃত্যুদণ্ডের বিধান আমাদের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশসহ আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভুটান এবং নেপালেও মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
‘যেসব আন্তর্জাতিক দলিলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান নিষিদ্ধ করার পক্ষে বাংলাদেশ স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে সেসব দলিল অনুসরণ করাই আন্তর্জাতিক আইনের রীতি। বাংলাদেশ সংবিধানের ২৫ অনুচ্ছেদেও আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’
রিটটি আগামী সপ্তাহ হাইকোর্টের যেকোনো একটি বেঞ্চে উপস্থাপন করা হবে।
আরও পড়ুন:পৃথক তিনটি অভিযানে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’-এর দুই সক্রিয় সদস্যসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. রুহুল আমিন, মো. রিয়াজুল ইসলাম ও আরিফ হোসাইন ওরফে মো. আরিফুল ইসলাম রাহাত।
বৃহস্পতিবার বিকেলে এই তথ্য জানান এটিইউ-এর পুলিশ সুপার ব্যারিস্টার মাহফুজুল আলম রাসেল।
তিনি বলেন, ‘গাজীপুরের কাশিমপুরের লতিফপুর এলাকা থেকে মঙ্গলবার নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’-এর সক্রিয় সদস্য রুহুল আমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরদিন বুধবার এটিইউ-এর আরেকটি দল যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ১ নম্বর রোহিতা ইউনিয়নের গাংগুলিয়া এলাকা থেকে সংগঠনটির আরও এক সক্রিয় সদস্য রিয়াজুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে। যশোর সিটি কলেজের দর্শন বিভাগে স্নাতকে অধ্যয়নরত এই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে একটি স্মার্টফোন, দুটি সিম কার্ড ও একটি মেমোরি কার্ড জব্দ করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন ও সাইবার স্পেস ব্যবহার করে ‘আনসার আল ইসলাম’-এর প্রচারণাসহ গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাত ও তথাকথিত খেলাফত প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করত। বিভিন্ন এনক্রিপ্টেড মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে তারা সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত। দেশের আইনশৃংঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং নাশকতার জন্য তারা পরিকল্পনা, প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি গ্রহণ করে আসছিল।’
তাদের বিরুদ্ধে কাশিমপুর থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে নিয়মিত মামলা হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
এ সময় এটিইউ আরও জানায়, রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মডেল থানাধীন পোস্তগোলা এলাকা থেকে সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ মোট ৯টি মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আরিফ হোসাইন ওরফে মো. আরিফুল ইসলাম রাহাত নামের এক পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ২০২১ সালে তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা থেকে কামিল পাশ করেন। চলতি বছর থেকে তিনি ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখা ছাত্র শিবিরের সভাপতিসহ বাংলাদেশ ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এটিইউ আরও জানায়, আরিফুল ইসলাম রাহাত এইচএসসি পাস করা ছাত্র-ছাত্রীদের শিবিরের কর্মী হিসেবে যোগদানে উৎসাহিত করতে ‘ব্রিজিং প্রজেক্ট’ চালু করেন। এ কর্মসূচির আওতায় তিনি শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি, সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন এবং তাদের সম্পর্কে অন্যান্য যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করতেন। পরে যারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বা কলেজে ভর্তির সুযোগ পেতেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে তাদের শিবিরের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত করতেন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর মিরপুর থেকে দুই শিশু অপহরণের ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর বিভাগ।
মামলার পাঁচ ঘণ্টা পর বুধবার রাজধানীর উত্তরার আব্দুল্লাপুর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
অপহরণ হওয়া শিশুদের একজনের বয়স সাড়ে চার বছর ও আরেকজনের ৯ বছর।
গ্রেপ্তার দুইজন হলেন মো. ইব্রাহিম রনি ও আফজাল মাতুব্বর।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘বুধবার রাজধানীর মিরপুর মনিপুর কাঠালতলা এলাকার একটি বাসা থেকে চার বছর ছয় মাস বয়সী শিশুকে অপহরণ করা হয়। এই ঘটনায় মিরপুর মডেল থানায় শিশুটির প্রতিবেশী রনিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করে পরিবার।
‘এর পর শিশুটিকে উদ্ধারের জন্য ছায়া তদন্তে নামে মিরপুর বিভাগের একটি গোয়েন্দা টিম।’
শিশুটির পরিবার ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জানান, গ্রেপ্তার রনি তাদের প্রতিবেশী। পাঁচ বছর আগে এই বাসায় ভাড়া ছিলেন। কিছু দিন আগে আবারও এই বাড়িতে ভাড়া নেন রনি। বুধবার দুপুরে দিকে শিশুটিকে আইসক্রিম কিনে দেয়ার কথা বলে নিয়ে যান তিনি।
পুলিশের কাছে গেলে ছেলেকে আর পাবেন না বলে হুমকি দেয়া হয় উল্লেখ করে শিশুটির বাবা বলেন, “অপহরণকারী আমাকে কল দিয়ে বলে ছেলেকে ফিরে পেতে হলে এক লাখ টাকা দিতে হবে। এত টাকা দেয়া সম্ভব না জানালে অপহরণকারী বলে, ‘আমরা জানি আপনি টাকা দিতে পারবেন। আর পুলিশ বা ৯৯৯-এ কল দিলে ছেলেকে জীবিত ফিরে পাবেন না।”
পরবর্তী সময়ে এই তথ্য পেয়ে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে রনিকে গ্রেপ্তার ও শিশুটিকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে।
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘৯ বছর বয়সী অপর শিশুটি মাদ্রাসার ছাত্র। তাকে গত ১৮ নভেম্বর দুপুরে মাঠে খেলতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে পল্লবী থানার সেকশন-৭ নম্বর এলাকা থেকে অপহরণ করা হয়। পরে শিশুটির পরিবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলার করলে ছায়া তদন্তে নেমে অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করে ডিবির মিরপুর বিভাগের পল্লবী জোনাল টিম।’
নগরবাসীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘বাসা ভাড়া ও ফ্ল্যাটে সাবলেট ভাড়া দেয়ার সময় ভাড়াটিয়ার পুরো ঠিকানা, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং মোবাইল নম্বরসহ ভাড়াটিয়া নিবন্ধন ফরম পূরণ পূর্বক বাসা ভাড়া দেয়ার অনুরোধ রইল।’
আরও পড়ুন:আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ডাকা মানববন্ধনের বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল মেনে নির্বাচনে না এসে, অবাধ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে একটি দল। তারাই আবার পুলিশ হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন মামলার আসামি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর থেকে আমরা নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনায় কাজ করছি। যারা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়, সুষ্ঠ নির্বাচনের অন্তরায় হয়ে বিভিন্ন যায়গায় গাড়িতে আগুন লাগানো, যানবাহন চলায় বাধা, পুলিশের ওপর হামলা, রাজারবাগ হাসপাতালের গাড়ি ভাঙচুর, প্রধান বিচারপতির বাস ভবনে হামলা করেছে। তারাই কিন্তু এখন আবার অবরোধ ডেকে নাশকতা করছে।’
তিনি বলেন, ‘একদিকে তারা নির্বাচনে আসে না। অন্যদিকে প্রতিদিনই ককটেল নিক্ষেপ করছে। গাড়িতে আগুন লাগাচ্ছে, মানুষের সম্পদ নষ্টে কাজ করছে। যারা নাশকতা মামলার আসামি, গাড়ি পোড়া মামলা, প্রধান বিচারপ্রতির বাস ভবনে হামলা মামলা ও পুলিশের ওপর হামলা ও হত্যা মামলার আসামি যাদের অনেককে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। অনেকের নাম নম্বর আমরা পেয়েছি। তারা যেখানেই থাকুক তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
বিএনপি যদি অনুমতি না নিয়ে মানববন্ধন করার চেষ্টা করে, তখন কী ব্যবস্থা নেয়া হবে- জানতে চাইলে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন,‘ যদি কোনো দল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে জোর করে এবং এসব মামলার আসামিরা মানববন্ধন করতে চায়, আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে রুটিন কাজ; বিভিন্ন মামলার আসামি, ওয়ারেন্টের আসামি তাদের গ্রেপ্তারে আমাদের কোনো বাধা নেই।’
বিএনপি মানববন্ধনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নিয়েছে কি না জানতে চাইলে ডিবি প্রধান বলেন, ‘অনুমতি নিয়েছে কি না বলতে পারছি না। তবে আমার মনে হয় নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল মেনে তারা তো নির্বাচন করছে না। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের তোয়াক্কা করবে কেন। তারা যদি নির্বাচন করতো, তবে অনুমতি নিতো। তারা নির্বাচন না করে নির্বাচনকে বানচাল করতে, বাধাগ্রস্ত করতে চেষ্টা করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, আমাদের আইনশৃ্ঙ্খলা বাহিনীর কাজ হচ্ছে মানুষের জানমালের ক্ষতি যেন কেউ না করতে পারে, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনে কেউ যেন বাধা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখা। পাশাপাশি আমাদের নিয়মিত কাজ বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করা।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য