রাজধানীর উত্তরায় কিংফিশার রেস্টুরেন্ট ও লেকভিউ বারে বৃহস্পতিবার অভিযান চালায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি। জব্দ করা হয় ৫০০ বোতল বিদেশি মদ ও প্রায় ছয় হাজার ক্যান বিয়ার। গ্রেপ্তার করা হয় ৩৫ জনকে।
অভিযানের পর ডিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই রেস্টুরেন্ট ও বারে অসামাজিক কার্যকলাপ চলে। এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করে ডিবি পুলিশ, যার ১ নম্বর আসামি বার মালিক মোক্তার হোসেন। কে এই মোক্তার হোসেন তা জানতে অনুসন্ধানে নামে নিউজবাংলা। আর তাতে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য।
জানা যায়, নেহায়েত দরিদ্র পরিবারের সন্তান গাজী মোক্তার হোসেন চাকরির খোঁজে ঢাকায় আসেন। একটি কোরিয়ান ক্লাবে চাকরির সুবাদে পরিচিত হন বার ব্যবসার সঙ্গে। একই সঙ্গে জড়িত হন গ্রামের স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে। আর সে সুবাদে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তির সান্নিধ্যে আসার সুযোগ হয়। হয়ে ওঠেন স্থানীয় বালু ব্যবসার সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য।
রেস্টুরেন্ট ও বারে অসামাজিক কার্যকলাপ চলে এমন অভিযোগে উত্তরায় কিংফিশার রেস্টুরেন্ট ও লেকভিউ বারে চালানো অভিযানের ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় করা ডিবির মামলায় ১ নম্বর আসামি বার মালিক মোক্তার হোসেন। ছবি: নিউজবাংলা
তবে সবকিছু ছাপিয়ে ঢাকায় মোক্তারের জন্য বড় ‘আশীর্বাদ’ হয়ে আসে সাবেক এক আমলার ছত্রছায়া। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক এই আমলার ছত্রছায়ায় এসে মোক্তার রাজধানীতে একে একে পাঁচটি বারের মালিক বনে যান। দেশের বার জগতে তিনি হয়ে ওঠেন বেপরোয়া।
মোক্তারের উত্থান
মোক্তারের বারে অভিযান চালানোর পর ডিবির এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)। তবে এই অভিযানকে যৌক্তিক ও বৈধ দাবি করা হয় ডিবির পক্ষ থেকে।
মোক্তারের বারে অনুমোদনবিহীন মদ ও অসামাজিক কাজ চলার অভিযোগ করেন ডিবি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তাৎপর্যের বিষয় হলো, মোক্তারের বিষয়ে এখন আর আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দিতে রাজি নন ডিবির কোনো কর্মকর্তা। মোক্তারের উত্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবির একাধিক কর্মকর্তা কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
তবে নাম প্রাকাশ না করার শর্তে ডিবির এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানান, মুক্তার চাঁদপুরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দরিদ্র পরিবারের সন্তান মোক্তার প্রথমে ঢাকায় এসে একটি কোরিয়ান বারে চাকরি পান। এই চাকরির সুবাদে অবৈধভাবে মদ বেচাকেনার সঙ্গে জড়ান।
অবৈধভাবে মদের কারবার করে কিছু অর্থকড়ি কামিয়ে নেন মোক্তার। একপর্যায়ে স্থানীয় রাজনৈতিক যোগাযোগের সূত্র ধরে সাবেক এক মন্ত্রীর মাধ্যমে তার পরিচয় হয় বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে। এরপর বিভিন্নজনকে ব্যবহার করে একে একে বাগিয়ে নেন বার পরিচালনার পাঁচটি লাইসেন্স। এরপর আর তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।
ক্ষমতার বলয় বাড়ানোর জন্যে ইউনিয়ন পর্যায়ের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন মোক্তার হোসেন। ছবি: নিউজবাংলা
বিদেশে মোক্তারের সম্পদ রয়েছে কি না জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা কোনো তথ্য পাইনি। তবে তার পরিবারের সদস্যরা ঢাকায় থাকেন।‘
ডিবির দায়ের করা মামলায় মোক্তারকে ১ নম্বর আসামি করা হলেও তাকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘তদন্ত চলছে। একই সঙ্গে তাকে মনিটরিংয়ে রাখা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রয়োজন মনে করলে তাকে গ্রেপ্তার করবে।’
মোক্তারের বিষয়ে খোঁজ জানতে তার গ্রামের বাড়িতেও অনুসন্ধান চালায় নিউজবাংলা। জানা যায়, তার পুরো নাম গাজী মোক্তার হোসেন। চাঁদপুরের মতলব উপজেলার জহিরাবাদ এলাকার বাসিন্দা। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়।
মোক্তারকে বাল্যকাল থেকে চেনেন এমন স্থানীয় দুজনের সঙ্গে কথা হয় নিউজবাংলার। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, মতলব উপজেলার ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের নিশানখোলা গ্রামে ছিল মোক্তারের বাবার ভিটা। তার জন্মও সেখানেই। অভাবতাড়িত পরিবারটি পরবর্তী সময়ে একই উপজেলার জহিরাবাদ ইউনিয়নে চলে আসে। এখনও সেখানেই বাস করছে পরিবারটি। সেখানে তাদের একটি টিনের বাড়ি আছে।
মোক্তারের বাবা পেশায় একজন অটোরিকশাচালক ছিলেন। মোক্তার শুরু থেকেই স্থানীয় ছাত্ররাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৯৭ সালে চাকরির খোঁজে তিনি ঢাকায় চলে আসেন। এর বেশ কয়েক বছর পর গ্রামের সবাই জানতে পারেন ঢাকায় মোক্তারের একাধিক হোটেল ও বার আছে।
টাকার মালিক হওয়ার পর ১০ বছর ধরে মোক্তার আবার স্থানীয় রাজনীতিতে সক্রিয়। তিনি বর্তমানে জহিরাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।
সবশেষ চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে ২ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্য পদে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন।
রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার পাশাপাশি চাঁদপুরের কুখ্যাত বালু ব্যবসায়ী সেলিম খানের সিন্ডিকেটের সদস্য বনে যান এই মোক্তার।
তার পূর্বপরিচিত ওই দুই ব্যক্তি আরও জানান, মোক্তার স্থানীয় রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের একজন এমপি ও সাবেক মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। তার মাধ্যমেই বিভিন্ন রাজনীতিক ও প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে মোক্তারের পরিচয় এবং সম্পর্ক তৈরি হয়। মোক্তারের ছোট দুই ভাইয়ের একজন গাজী সেলিম জহিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। আরেক ভাই গাজী সম্রাট চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য।
ঢাকায় মোক্তারের খুঁটির জোর সাবেক আমলা
অনুসন্ধানে জানা যায়, মোক্তার প্রথম ঢাকায় আসেন ১৯৯৭ সালে। কোরিয়ান একটি বারে চাকরি করেন বেশ কিছুদিন। এ সময় তার মদের কারবার সম্পর্কে অভিজ্ঞতা হয়। অবৈধ মদ বিক্রি করে রাতারাতি কিছু টাকার মালিক বনে যান।
পরবর্তী সময়ে নিজে আবাসিক হোটেলের ব্যবসা শুরু করেন। সে সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের সঙ্গে মোক্তারের ঘনিষ্ঠতা হয়। ওই অতিরিক্ত সচিবকে ধরেই হোটেল ব্যবসার পাশাপাশি তত্ত্বাবধায়ক সরকার-পরবর্তী আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে তিনি প্রথম বারের লাইসেন্স পান।
এরপর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভালো যোগাযোগ তৈরি হয় তার। একে একে আরও চারটি বারের লাইসেন্স পান মোক্তার। এরপর রাজনৈতিক প্রভাবে দেশের বার জগতে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি।
নিজের পাঁচ প্রতিষ্ঠানের বৈধ কাগজ থাকলেও আড়ালে অনুমোদনহীন মদও বিক্রি করতেন নিয়মিত। এমনকি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা এমনকি মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বেপরোয়া আচরণ করতেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিদপ্তরের একজন পরিদর্শক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মোক্তারের বারগুলোর সব কাগজপত্র ঠিক আছে। কিন্তু সমস্যা ছিল অন্য জায়গায়। সে একজন মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে প্রভাব খাটিয়ে চলত। আমাদের সঙ্গেও এক ধরনের ড্যাম কেয়ার ভাব দেখাত।
‘মোক্তার অনেকবার বেয়াদবিও করেছে আমাদের কর্মকর্তাদের সঙ্গে। কাগজ ঠিক থাকায় আর তার রাজনৈতিক প্রভাবের কথা ভেবে হয়তো কর্মকর্তারা তাকে কড়া জবাব দেননি। তবে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের জন্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও বার ব্যবসায়ীদের অনেকেই তাকে পছন্দ করে না।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজনৈতিক যোগাযোগ আর সাবেক ওই আমলার ছত্রছায়ায় আবাসিক হোটেল ব্যবসাসহ লেকভিউ রিক্রিয়েশন ক্লাব, উত্তরার লেকভিউ বার, গুলশানের কিংফিশার বার, নারায়ণগঞ্জে ব্লুফিয়ার নামে আরো একটি বারসহ উত্তরার কিংফিশার রেস্টুরেন্ট গড়ে তুলেছেন মোক্তার।
এসব অভিযোগের বিষয়ে কথা হয় গাজী মোক্তার হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, ১৯৯৭ সালে ঢাকায় এসে প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আবাসিক হোটেলে ম্যানেজার পদে চাকরি নেন। এরপর পরিবার থেকে ২ লাখ টাকা নিয়ে আবাসিক হোটেল ব্যবসা শুরু করেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার-পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে কোরিয়া-বাংলাদেশ ক্লাবে যুক্ত হয়ে বারের ব্যবসা সম্পর্কে ধারণা নিয়ে নিজেই বারের অনুমোদন নেন। পরে শুরু করেন বার ব্যবসা। পরবর্তী সময়ে আরো চারটি বারের মালিক হন। এর মধ্যে হেফাজত নেতাদের বাধায় নারায়ণগঞ্জের বারটি আর চালু করা সম্ভব হয়নি।
কোনো অবৈধ উপায়ে তার ব্যবসায় বিনিয়োগ হয়নি দাবি করে মোক্তার জানান, তার পরিবার সচ্ছল ছিল। বাবা অটোরিকশাচালক ছিলেন- এ তথ্যের কোনো ভিত্তি নেই। ব্যবসা শুরু করতে তার বাবাই তাকে টাকা দিয়েছিলেন।
লাইসেন্স নিয়ে বৈধভাবে এতদিন ব্যবসা করে আসছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার সম্মান ক্ষুণ্ন করতে এসব কথা ছড়ানো হচ্ছে। আমি যদি অবৈধ মদের ব্যবসা করে থাকি তাহলে ডিবি সদস্যরা প্রমাণ করুক।
‘অনেক পত্রিকায় দেখলাম লিখেছে যে আমি পলাতক। অথচ আমি আজও আমার মায়ের মৃত্যুর তিন দিনের মিলাদ শেষ করলাম। আমি গ্রামের বাড়িতে আছি। মোবাইল ফোন সেটও খোলা রেখেছি। তারা যদি আমাকে ডাকে আমি নিজে গিয়ে হাজির হব৷’
বিদেশে সম্পদ আছে কি না এবং স্ত্রী-সন্তানরা কোথায় থাকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকি। আমার স্ত্রী-সন্তানরা সেখানেই আছে। আমার বিদেশে সম্পদ থাকলে আপনারা বের করে দেখান।’
একাধিক আমলা ও সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে সখ্য এবং চাঁদপুরের কুখ্যাত বালু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সদস্য হওয়ার অভিযোগও প্রত্যাখ্যান করেন এই বার ব্যবসায়ী।
আরও পড়ুন:বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হলো।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ আজ এই মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
এরপর আবু সাঈদকে গুলি করার দুটি ভিডিও ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শন করা হয়। এ সময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন মনিটরে ছেলেকে গুলির দৃশ্যের ভিডিও দেখে বার বার চোখ মুছছিলেন।
এরপর প্রসিকিউসনের আবেদনে আগামীকাল এই মামলায় প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
গত ৩০ জুলাই প্রসিকিউসনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এই মামলায় অভিযোগ গঠনের প্রার্থনা করেন।
অন্যদিকে, আসামী পক্ষে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চাওয়া হয়।
এরপর গত ৬ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল এই মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ২৭ আগস্ট দিন ধার্য করেন।
এই মামলার যে ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ আনা হয়, তাদের মধ্যে গ্রেফতার ৬ জন আজ ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন।
এরা হলেন-বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান রাসেল, রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক সাবেক কর্মচারী মো. আনোয়ার পারভেজ, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী ওরফে আকাশ।
আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ৩০ জুন ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ।
২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদের পুলিশ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে, সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদেই সোচ্চার হন বহু মানুষ, যাতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন।
ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে বলে, একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে।
জাজ্জ্বল্যমান এসব অপরাধের বিচার এখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
ঢাকাসহ ১৯ জেলায় ৪১ জন জেলা জজসহ একযোগে জেলা আদালতের ২৩০ বিচারককে বদলি করা হয়েছে। বদলি করা এসব বিচারকের মধ্যে রয়েছেন ৫৩ জন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, ৪০ জন যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এবং ৯৬ জন সিনিয়র সহকারী জজ ও সহকারী জজ পর্যায়ের কর্মকর্তা।
গতকাল সোমবার আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে পৃথক চারটি প্রজ্ঞাপনে তাদের বদলির আদেশ দেয়।
বদলি করা জেলা ও দায়রা জজদের আগামী ২৮ আগস্টের মধ্যে বর্তমান পদের দায়িত্বভার বুঝিয়ে দিয়ে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার দ্বিতীয়তলার নারী ব্যারাকে ঢুকে নারী পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠা একই থানায় কর্মরত সাফিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ২১ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি আমলে নেয় বাংলাদেশ পুলিশ। পুলিশ সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৫ দিন ধরে ঘুরে মামলা দায়ের করতে না পারা ভুক্তভোগীকে পুলিশ লাইন্স থেকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় নিয়ে তাকে বাদী করে ধর্ষণ মামলা রুজু করানো হয়েছে। আর ওই মামলাতেই সাফিউরকে আটক দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে ভুক্তভোগীর শারীরিক পরীক্ষা করানোর জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোহাম্মদ আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের অভিযোগের যাচাই-বাছাই শেষে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল সাফিউরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভুক্তভোগী নারী পুলিশ সদস্য নিজে বাদী হয়ে শুক্রবার মামলাটি দায়ের করেন। ওই মামলাতেই গত শুক্রবার রাতে সাফিউরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার সকালে তাকে আদালতে চালান করা হয়। বিষয়টি আরও গভীরভাবে জানতে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল সাফিউরের বিরুদ্ধে আদালতের কাছে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। একইসঙ্গে ভুক্তভোগীর শারীরিক পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুরো বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এর আগে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার দ্বিতীয়তলার নারী ব্যারাকে ঢুকে এক নারী পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে একই থানায় কর্মরত সাফিউর রহমান নামে আরেক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে গত ৬ মাস ধরে থানা ব্যারাকেই ওই নারী সদস্যকে ধর্ষণ করে ওই পুলিশ সদস্য। সবশেষ গত ১৫ আগস্ট রাত আড়াইটার দিকেও সাফিউর থানা ব্যারাকের ওই নারীর রুমে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে। এর প্রতিকার চেয়ে গত ৫ দিন ধরে ঘুরেও থানায় মামলা করতে না পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান ভুক্তভোগী নারী পুলিশ সদস্য। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও বিচার ব্যবস্থার চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি পৃথক বাণিজ্যিক আদালত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
গতকাল রোববার সিলেটের দ্য গ্র্যান্ড সিলেট হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে বাণিজ্যিক আদালত শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রস্তাব দেন।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
প্রধান বিচারপতি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য কোনো পৃথক বিচারিক ফোরাম নেই। এখন কোটি কোটি টাকার বাণিজ্যিক বিরোধগুলো ছোটখাটো দেওয়ানি মামলার সঙ্গে একই সারিতে নিষ্পত্তি করতে হওয়ায় দ্রুত, কার্যকর বিচার প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। এটি আমাদের বিচারকদের প্রতি কোনো সমালোচনা নয়। তাদের নিষ্ঠা প্রশ্নাতীত। বরং এটি একটি কাঠামোগত অসংগতি। ফলে মামলার জট যেমন বাড়ছে, তেমনি ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও বিনিয়োগ পরিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ২০২৫ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত শুধু অর্থঋণ আদালতে প্রায় ২৫ হাজারের বেশি মামলা অমীমাংসিত রয়ে গেছে।
পৃথক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি কারও একক কোনো দাবি নয় বরং বাণিজ্যিক মামলাগুলো বিশেষায়িত আদালতে নির্দিষ্ট সময়সীমা ও কার্যকর রায়ের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হওয়ার জন্য বৃহৎ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী সবাই দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন সভা-সেমিনারে এই দাবি জানিয়ে আসছে।
প্রধান বিচারপতি বৈশ্বিক উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, রুয়ান্ডা, ভারত ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলো বাণিজ্যিক আদালত গড়ে তুলে একটি দক্ষ, স্বচ্ছ ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করেছে। তিনি বলেন, এসব দেশের অভিজ্ঞতাগুলো বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা বহন করে।
প্রধান বিচারপতি প্রস্তাবিত বাণিজ্যিক আদালত ব্যবস্থার সাতটি মূল স্তম্ভের কথা উল্লেখ করেন। সেগুলো হলো- স্পষ্ট ও একীভূত এখতিয়ার নির্ধারণ, আর্থিক সীমারেখা ও স্তরভিত্তিক কাঠামো, বাধ্যতামূলক কেস ম্যানেজমেন্ট ও কঠোর সময়সীমা, সমন্বিত মধ্যস্থতা ব্যবস্থা, প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার (যেমন, ই-ফাইলিং, ডিজিটাল ট্র্যাকিং, হাইব্রিড শুনানি), সবার জন্য ন্যায়সংগত প্রবেশাধিকার এবং জবাবদিহি ও কর্মক্ষমতা পর্যবেক্ষণ। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাণিজ্যিক আদালতের কার্যক্রম হবে পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যকর, জবাবদিহিমূলক এবং বাণিজ্যের পরিবর্তনশীল চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
সেমিনারে সূচনা বক্তব্য দেন সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান। হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাফর আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফান লিলার।
বহুল আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল আবার পেছানো হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমানের আদালত গতকাল সোমবার আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর নতুন দিন ধার্য করেন।
এ পর্যন্ত এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময়সীমা মোট ১২০ বার পিছিয়ে এসেছে।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি নির্মমভাবে খুন হন। ঘটনার সময় বাসায় তাদের সাড়ে চার বছরের ছেলে মাহির সরওয়ার মেঘ উপস্থিত ছিলেন। সাগর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙা এবং রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। মামলার প্রধান আসামিরা হলেন — রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মাসুম মিন্টু, কামরুল ইসলাম ওরফে অরুন, আবু সাঈদ, সাগর-রুনির বাড়ির দুই নিরাপত্তা রক্ষী পলাশ রুদ্র পাল ও এনায়েত আহমেদ এবং তাদের ‘বন্ধু’ তানভীর রহমান খান।
এদের মধ্যে তানভীর ও পলাশ জামিনে রয়েছেন, বাকিরা বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছেন।
তদন্ত প্রতিবেদন বারবার পিছিয়ে আসায় এ মামলার দ্রুত বিচার ও ন্যায়বিচার প্রত্যাশায় সংশ্লিষ্ট পক্ষের মাঝে উদ্বেগ বিরাজ করছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় পুলিশের সদস্যসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের শুনানি আজ।
সোমবার (২৮ জুলাই) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ এই শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ আজ এই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি করবেন বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে, শুক্রবার (২৫ জুলাই) কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ছয় আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এই ছয় আসামি হলেন— সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরীফুল ইসলাম, রাফিউল, আনোয়ার পারভেজ এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী আশেক।
গত ১০ জুলাই পলাতক ২৬ আসামিকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত।
এর আগে, ৩০ জুন আবু সাঈদ হত্যায় পুলিশের সদস্যসহ মোট ৩০ জনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী আন্দোলনের সময় ১৬ জুলাই বিকালে পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন। আবু সাঈদ ছিলেন জুলাই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত প্রথম শিক্ষার্থী।
সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ধানমণ্ডির বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূঁইয়া তার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কোন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেননি এই পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি জানান, তথ্য এলে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে ২০১০ সালে খায়রুল হক শপথ নেন। পরের বছর ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
২০১৩ সালে তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা একই পদে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয় সাবেক এই বিচারপতিকে।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে ১৩ আগস্ট তিনি আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছিল না।
মন্তব্য