গ্রিড বিপর্যয়ের পর থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে যখন তখন লোডশেডিংয়ে তীব্র দুর্ভোগের মধ্যে উত্তর ও দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমের চার বিভাগের পরিস্থিতি বেশ ভালো।
রাজশাহী, রংপুর এবং খুলনা বিভাগে পরিস্থিতির বেশ উন্নতি হয়েছে। আর গত জুলাইয়ে সারা দেশে ঘটা করে লোডশেডিং শুরুর পরও উৎপাদনের দিক থেকে এগিয়ে থাকা রবিশাল বিভাগের পরিস্থিতি অতটা খারাপ ছিল না।
গত ৪ অক্টোবর দুপুরে হঠাৎ করে বিদ্যুৎহীন হয়ে যায় দেশের অর্ধেকের বেশি এলাকা। সেদিন দেশের পূর্বাঞ্চলীয় গ্রিড ফেল করার পর ঘণ্টা আটেক সময় উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় কাটায় দেশের কোটি কোটি মানুষ।
সেদিন রাত ১০টার মধ্যে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হলেও পরদিন থেকে লোডশেডিংয়ের মাত্রা বাড়তে থাকে। বিপর্যয়ের আগে যেখানে দিনে এক বা দুইবার বিদ্যুৎ যাচ্ছিল, সেখানে এই সংখ্যাটি চার বা পাঁচ বা ছয়ে গিয়ে ঠেকছে। কখনও আধাঘণ্টা, কখনও এক ঘণ্টা, কখনও তার চেয়ে বেশি সময় বিদ্যুৎহীন অবস্থায় কাটছে সময়। এমনকি রাত আড়াইটা, সাড়ে তিনটা- এমন সময়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বৈদ্যুতিক পাখা। যাদের বাড়িতে বিকল্প ব্যবস্থা করা নেই, তাদের ঘুম উধাও হয়ে যাচ্ছে লোডশেডিংয়ে।
তবে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে শহর এলাকায় চাহিদার সমান সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে। বরিশাল বিভাগ নিজেদের চাহিদার কয়েক গুণ বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে জাতীয় গ্রিডে।
আশুগঞ্জ-সিরাজগঞ্জ অভ্যন্তরীণ সংযোগ লাইন ট্রিপের কারণে জাতীয় গ্রিডে মঙ্গলবার বিপর্যয় ঘটে। ছবি: সংগৃহীত
খুলনা বিভাগের কোনো কোনো জেলার গ্রাহকরা জানিয়েছেন, গত দুই দিনে একবারের জন্যও বিদ্যুৎ যায়নি। কোথাও এক ঘণ্টা কোথাও এর চেয়ে কিছু কমবেশি সময় বিদ্যুৎহীন থাকছে এলাকা।
বিদ্যুতের নীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের হিসাবে দেশে লোডশেডিং এখন এক হাজার মেগাওয়াটের মতো, যা চাহিদার ৮ শতাংশের মতো। এই পরিস্থিতিতে রাজধানীসহ দেশের পূর্বাঞ্চলীয় গ্রিডভুক্ত জেলাগুলোতে এত বেশি লোডশেডিংয়ের একটি কারণ হতে পারে পশ্চিমাঞ্চল গ্রিডভুক্ত জেলাগুলোর পরিস্থিতি।
অবশ্য পাওয়ার সেলের পরিচালক (অপারেশনাল পারফরম্যান্স) মো. সাজিবুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার কাছে এমন কোনো তথ্য নেই যে চারটি বিভাগে লোডশেডিংয়ের পরিমাণ কম বা অন্য চার বিভাগে বেশি। দেশের সব জায়গায় সমহারে লোডশেডিং হচ্ছে, সেটাই আমরা জানি।’
উত্তরের শহরগুলোতে বিভাগে চাহিদার সমান সরবরাহ
ঠিক বিপরীত চিত্র রাজশাহী বিভাগে। গত সপ্তাহে এমনকি শুক্রবার বিভাগীয় শহরে বিদ্যুৎ গেছে যখন তখন। এখন অনেকটাই স্বাভাবিক সরবরাহ।
রাজশাহী বিভাগে বিদ্যুতের যে চাহিদা তার সবটাই পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নেসকোর প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ।
জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে সরকারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতি দিন এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং করার ঘোষণা দেয়ার আগে থেকেই রাজশাহীতে বিদ্যুৎ যাচ্ছিল দুই থেকে তিনবার। আর ঘোষণার পর কোনো সময়সীমা আর থাকেনি।
আগস্ট-সেপ্টেম্বরের দুটি মাস তীব্র গরমে এই বিভাগের মানুষের জীবন হয়ে উঠে দুর্বিষহ। ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতির দিকটিও সামনে আনতে থাকে বিনিয়োগ করে বিপাকে পড়া মানুষ। তবে সেপ্টেম্বরের শেষ দিক থেকে সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হতে থাকে।
নেসকোর প্রধান প্রকৌশলী জানান, গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে এ অঞ্চলে বেশ কয়েক দিন বৃষ্টি হয়েছে। চলতি মাসেও বৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে চাহিদাও কমেছে ৩০ থেকে ৪০ মেগাওয়াট।
তিনি জানান, শনিবার রাত ১২টায় রাজশাহী বিভাগে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৩৪০ মেগাওয়াট আর রোববার দুপুর ১২টায় চাহিদা ছিল ৩৬৯ মেগাওয়াট। চাহিদার সবটুকুই সরবরাহ পাওয়া গেছে। এ কারণে কোনো লোডশেডিং ছিল না। তবে কোথাও কোথায় রক্ষণাবেক্ষণ বা কারিগরি দুর্বলতায় ৫ থেকে ১০ মিনিটের জন্য বিদ্যুৎ গেছে।
সর্ব উত্তরের রংপুর বিভাগের চিত্রও একই। নেসকোর এই বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আশরাফুল আলম মণ্ডল বলেন, ‘শনিবার আমাদের প্রয়োজন ছিল ২৫৯ মেগাওয়াট, আমরা পুরোটাই পেয়েছি। রোববার সকাল ৮টা থেকে ২০৯ মেগাওয়াট প্রয়োজন ছিল, এখন পর্যন্ত তাই পাচ্ছি।’
রংপুর সোনালী ব্যাংক করপোরেট শাখার পাশেই হোটেল ব্যবসা করেন বাবু রায়। তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের তেমন কোনো সমস্যা নেই। দিনে কখনো এক বা দুবার গেলে দ্রুত চলে আসে। ঠিক একই অবস্থা রাতেও। কোনো কোনো রাতে একবার গেলে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ফিরে আসে।’
নগরীর মাছুয়া টারী এলাকার বাসিন্দা নূর আলম বলেন, ‘এখন তেমন কোনো বিদ্যুতের সমস্যা নেই। আমাদের এই দিকে বিদ্যুৎ যায় না বলেই বলা চলে।’
একই কথা বলেন ধাপ কাকলী লেনের বাসিন্দা আজম আলী পারভেজ। তিনি বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে তেমন কোনো সমস্যা নেই বিদ্যুতের।’
গ্রামের চিত্র ঢাকার মতোই
অবশ্য গ্রাম এলাকার পরিস্থিতি অতটা ভালো নয়। ঢাকা-চট্টগ্রামের শহরগুলোর মতো সেখানেও দিনে-রাতে চার থেকে পাঁচ বার বিদ্যুতের আসা-যাওয়া চলে।
গংগাচড়া মহিপুর বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাক স্বপন বলেন, ‘দিনে কয়েকবার বিদ্যুৎ যায়। রাতেও এমন অত্যাচার।’
ওই এলাকার বাসিন্দা সাজু মিয়া বলেন, ‘কাকে কই কস্টের কথা। যেমন করি বিদ্যুৎ যায় তাতে তো ফ্রিজ টিভি টিকপের নয়। কারেন্ট আসতে আসতে ফিরে যায়। যেভাবে কারেন্ট যায় আর আইসে তাতে গরমের দিন হলে খবর আছিল। একনা গরম কম হওয়ায় সহ্য করা যাওছে। নইলে খবর আছিল আমাদের।’
রংপুরের উত্তম চাঁদের হাট এলাকার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম রবি বলেন, ‘কারেন্ট এই আছে এই নাই। সন্ধ্যায় তো ছৈলপৈল পড়তে পারে না। ধরেন, খাবার বসলাম অমনি কারেন্ট গেল। ওই যে গেল আর আসার নাম নাই। এমন করি চলোছে।’
পল্লী বিদ্যুতের জিএম, এজিএমসহ শীর্ষ অনেক কর্মকর্তাকে ফোন করা হলেও তারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি।
বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকার প্রভাব পড়ে ব্যাংকগুলোর এটিএম কার্ড সেবায়ও। ছবি: সংগৃহীত
বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত বরিশাল বিভাগ স্থানীয় চাহিদার চার গুণ জোগান দিচ্ছে জাতীয় গ্রিডে
বরিশাল বিভাগের দিনে একবার করে লোডশেডিং হচ্ছে, তবে সেটি খুব বেশি সময়ের জন্য না।
বরিশাল নগরী ছাড়াও জেলার অন্যান্য এলাকা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলাতেও বিদ্যুতের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ব্যবধান খুব বেশি নেই।
বিদ্যুতের বিতরণ সংস্থা পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতারুজ্জামান পলাশ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বরিশাল বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৪৪০ মেগাওয়াটের মতো চাহিদা রয়েছে। এর চেয়ে চারগুণেরও বেশি উৎপাদন করে এখানকার পাঁচটি কেন্দ্র।’
বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর উপমহাব্যবস্থাপক (এজিএম) শেখর চন্দ্র সাহা বলেন, ‘বরিশালে বিদ্যুতের যে উৎপাদন, তার চেয়ে চাহিদা অনেক কম। যে কারণে লোডশেডিং কম এই অঞ্চলে।’
বিভাগে পাঁচটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে ২ হাজার ৩০ মেগাওয়াট উৎপাদন হচ্ছে। এর মধ্যে পায়রায় কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট, ভোলায় গ্যাসভিত্তিক দুটি কেন্দ্রে ৪৫০ মেগাওয়াট, ফার্নেস ওয়েলভিত্তিক পটুয়াখালীর ইউনাইটেড পায়রায় ১৫০ মেগাওয়াট ও বরিশালের রূপাতলির সামিটের কেন্দ্রে ১১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাকি ১ হাজার ৫৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হচ্ছে।
যে সংকটে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমানো হয়েছে, সে সমস্যা এই বিভাগে নেই। প্রধান কেন্দ্রটি কয়লাভিত্তিক আর ভোলার ক্ষেত্র থেকে গ্যাস সরবরাহ করা হয় দুটি কেন্দ্রে। সেখানে ডিজেলের কোনো কেন্দ্রও নেই।
বরিশাল নগরীর চকবাজার এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল আহম্মেদ বলেন, ‘আমাদের এখানে তেমন লোডশেডিং নেই। হলেও দিনে ১৫ মিনিটের বেশি হয় না। নির্বিঘ্নেই বিদ্যুৎ পাচ্ছি।
ঝালকাঠির নলছিটির বিনয়কাঠি এলাকার বাসিন্দা জাকারিয়া আলম বলেন, ‘বিদ্যুৎ নিয়ে কোনো ঝামেলায় আমরা নেই আপাতত। দিনে দু-একবার লোডশেডিং হয়, কিন্তু পাঁচ মিনিটের মধ্যে আবার চলেও আসে। রাজধানীর তুলনায় আমরা ভালো আছি।’
এই অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ওজোপাডিকোর পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মৃণাল কান্তি জানান, জেলা সদরে ৬ থেকে ৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে তেমন কোনো লোডশেডিং নেই।’
তেমন সমস্যা নেই খুলনায়ও
বরিশালের পাশাপাশি খুলনা বিভাগে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড বা ওজোপাডিকোর প্রধান প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কয়েকদিন আগে জাতীয় গ্রিডে সমস্যার কারণে দেশের অনেক স্থানে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিলেও খুলনা বিভাগে কোনো সমস্যা হয়নি। বিভাগের অধিকাংশ জেলায় নিয়মিত এক ঘণ্টার লোডশেডিং রয়েছে।’
তবে কোথাও কোথাও লোডশেডিং এক ঘণ্টার কম, কোথাও এক ঘণ্টার বেশি।
খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙা থানাধীন বয়রা ক্রস রোড এলাকা বশির হোসেন বলেন, ‘আমার বাসায় প্রতিদিন দেড় থেকে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে।’
নগরীর সদর থানাধীন মিস্ত্রিপাড়া এলাকার বাসিন্দা শান্ত কুমার মণ্ডল বলেন, ‘আমার বাসায় প্রতিদিন দুইবার লোডশেডিং হচ্ছে। একবার দিনে ও একবার রাতে। এতে প্রায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা বিনা বিদ্যুতে থাকতে হচ্ছে।’
বাগেরহাটের পৌরসভা এলাকার নাগের বাজারের চন্দন সাহা বলেন, ‘আমাদের এখানে বর্তমানে তেমন কোনো লোডশেডিং নেই। কখনও বিদ্যুৎ গেলে ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে আমার চলে আসছে। আগে রেগুলার এক ঘণ্টা লোডশেডিং থাকত।’
যশোর সদর এলাকার বাসিন্দা নিয়াজ আলী বলেন, ‘কোনো দিন এক ঘণ্টার বেশি, আবার কোনোদিন ১০ বা ২০ মিনিট। এটাতে বর্তমানে খুব বেশি সমস্যা হচ্ছে না।’
মেহরপুরের বানন্দি এলাকার সুইট ফ্লাওয়ারের মালিক মতিউর রহমান বলেন, ‘গত ২ দিনে আমাদের এলাকায় এক সেকেন্ডের জন্যেও লোডশেডিং হয়নি। এটা একটা ভালো দিক।’
ওজোপাডিকোর প্রধান প্রকৌশলী বলেন, ‘দৈনিক যে পরিমাণ বিদ্যুৎ চাহিদা থাকে সেই পরিমাণ পাওয়া যায় না। তার জন্য কোথাও কম বা বেশি সময় লোডশেডিং হচ্ছে। তবে এটার পরিমাণ খুবই কম।’
ওজোপাডিকো সূত্রে জানা গেছে, রোববার দক্ষিণের ২১ জেলায় দিনে বিদ্যুৎ চাহিদা ছিল ৫৫৫ মেগাওয়াট। রাতে ৫৩১। ফুল লোড পাওয়া যায়। ফলে সারা দিন কোনো লোডশেডিং হয়নি।
গত ৫ অক্টোবর থেকে এই ২১ জেলায় ফুল লোড পাওয়া যাচ্ছে বলেও জানায় ওজোপাডিকো।
আরও পড়ুন:
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক ব্রিফিংয়ে সচিব সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘আমরা যে কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) করেছি, সে কর্মপরিকল্পনাটা আপনাদের জানাবো। আমি ঢাকার বাইরে থাকায় একটু পিছিয়ে পড়েছি। এটা আমার টেবিলে এখন আছে। আগামীকাল পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করেন।’
এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব আজ এক বৈঠকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে কমিশন।
এখন যেকোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’
উল্লেখ্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ইসির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে দল নিবন্ধন, সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংস্কার, বিধিমালা ও নীতিমালা জারি, প্রবাসীদের জন্য আইটি সাপোর্টেড নিবন্ধন ও পোষ্টাল ব্যালট পদ্ধতি ও নির্বাচনী সরঞ্জাম কেনাকাটা বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে রোডম্যাপে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা (রোডম্যাপ) অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
যে কোনো সময় এই নির্বাচনের রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে পারে ইসি।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব এ নিয়ে বৈঠকও করেছেন।
বৈঠকে কর্মপরিকল্পনার (রোডম্যাপ) অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। এখন, যে কোনো সময় নির্বাচনের এই রোডম্যাপ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হতে পারে বলে ইসি’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘কর্মপরিকল্পনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে গেছে। অনুমোদন হয়েছে, এখন শুধু টাইপিং চলছে।’
এদিকে সংসদীয় আসনের পুনঃনির্ধারিত সীমানার বিষয়ে ইসি’র শুনানি আজ বিকেলে শেষ হচ্ছে।
শুনানি শেষে বিকেলে সার্বিক বিষয় নিয়ে ইসি’র সিনিয়র সচিব আকতার আহমেদের ব্রিফিং করার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘আমরা ব্রিফিংয়ে আসব। তখন সীমানার শুনানির বিষয়টির পাশাপাশি এ বিষয়টিও (রোডম্যাপ) দেখা যাবে।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি কর্মকর্তা বৈঠক করেন।
ওই দিন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছিলেন, বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনার বিষয়ে ইসি সচিব ব্রিফ করবেন।
গত ১৮ আগস্ট ইসি’র সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়ে ছিলেন, ‘একটা কর্মপরিকল্পনার (নির্বাচনী রোডম্যাপ) বিষয়ে বলেছিলাম, আমরা এই সপ্তাহে এটা করবো। কর্মপরিকল্পনার তো আমাদের আন্তঃঅনুবিভাগ সম্পর্কিত এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো নিয়ে। কর্মপরিকল্পনার ড্রাফ্ট করা হয়েছে। ড্রাফ্টটি এখন কমিশনে দিয়ে আমরা অ্যাপ্রুভ করবো।’
শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধনের লক্ষ্যে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদ (টিসিসি)-এর ৮৯তম সভায় শ্রমিক, মালিক ও সরকারের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গত এক বছরের পর্যালোচনা ও সকল পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে শ্রম আইন ২০০৬ সংশোধনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার এক হোটেলে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, "শ্রমিক ও মালিক পক্ষের পরামর্শের ভিত্তিতে শ্রম আইন যুগোপযোগী করা হবে। এটি বাংলাদেশের শ্রমখাতের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে এবং আন্তর্জাতিক মানের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হবে।’
সভায় শ্রমিক ও মালিক পক্ষের প্রতিনিধিরা তাদের মতামত তুলে ধরেন। একটি সুসমন্বিত ও আন্তর্জাতিক মানের শ্রম আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা উপস্থিত সকলেই করেন। অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ সভায় সংশোধিত শ্রম আইন দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দেওয়া হয়।
সভায় বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন দূতাবাস, কানাডা হাই কমিশন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর প্রতিনিধিরা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত জনাব লুৎফে সিদ্দিকী।
এছাড়াও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) এর নির্বাহী পরিচালক এবং শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ)-এর সভাপতি, টিসিসি সদস্যবৃন্দের মধ্যে তাসলিমা আক্তার, কোহিনুর মাহমুদ, বাবুল আকতার , নাজমা আক্তার, রাজেকুজ্জামান রতন, এডভোকেট আতিকুর রহমান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এবং শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সংশোধনী বাংলাদেশের শ্রমবাজারকে আরও গতিশীল ও আন্তর্জাতিক মানসম্মত করবে এবং শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সারাদেশে কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থা আয়োজিত প্রযুক্তি সুবিধাপ্রাপ্ত লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতা মোকাবেলায় নীতিগত সুপারিশ শীর্ষক জাতীয় সংলাপ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা একথা বলেন।
সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, সারাদেশে প্রযুক্তিগত সুবিধা নিয়ে বিভিন্ন স্থানে নারীদের সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। এ সকল অপকর্ম প্রতিরোধে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিচালিত কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাল্য বিয়ের সংজ্ঞা পাল্টে গেছে। এর মূল কারণ হচ্ছে মোবাইল নামক যন্ত্রটি। মোবাইল প্রযুক্তির অপব্যবহারের ফলে ছোট ছোট মেয়েরা প্রেমের ফাঁদে পড়ে নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
মেয়েরা অবুঝ এজন্য অভিভাবকদেরকে এ বিষয়ে আরো সচেতন হতে হবে। যাতে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েরা প্রেমের ফাঁদে পড়ে নারী সহিংসতা শিকার না হয়।
উপদেষ্টা বলেন, জাগো নারী উন্নয়ন সংস্থা, নারী পক্ষ, হিউম্যান রাইটস বাংলাদেশ, সাইবার টিনস ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), ব্র্যাকসহ বাইশটি সংগঠন আজ নারী নির্যাতন প্রতিরোধে একযোগে কাজ করছে। তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
উপদেষ্টা বলেন এই ২২ টি সংগঠনের প্ল্যাটফর্মে যে সমস্ত শিক্ষিত তরুন যুবক যুবতীরা আছেন তাদেরকে টেকনোলজির মাধ্যমে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন ব্যক্তিগত এবং সামাজিক ও পরিবারের সচেতনতাই পারে একটি মেয়েকে নির্যাতন থেকে রক্ষা করতে। এজন্য সবাইকে আরো সচেতন হতে হবে।
ইলিশের উৎপাদন একদিকে কমছে, এতে প্রাকৃতিক কারণও রয়েছে। নদীর নাব্যতা কমে যাচ্ছে, মেঘনা নদীর অববাহিকায় দূষণের মাত্রা বেড়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে বৃষ্টি না হলে ইলিশ মাছ ডিম পাড়তে পারে না। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকৃতিক কারণ ও তথাকথিত উন্নয়নের কারণে নদী ভরাট ও দখল হয়ে যাচ্ছে। এমন মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার। বরিশাল ক্লাব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত উপকূলীয় এলাকার মহিষের চারণভূমি ও উন্নয়নের সমস্যা এবং সাধন শীর্ষক জাতীয় কর্মশালা-২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ইলিশ একটি মাইগ্রেটরি মাছ এটি সমুদ্র থেকে নদীতে আসে এবং আবার ফিরে যেতে হয়। কিন্তু বর্তমানে তা হচ্ছে না। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ঝাটকা নিধন। কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী অভিযান চালালেও এটি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা যায়নি। এছাড়া অবৈধ জালের ব্যবহার ইলিশের প্রাপ্যতা কমাচ্ছে। তবে এসবের বিরুদ্ধে আমরা কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই ইলিশের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।
তিনি জানান,খুব শীঘ্রই ঢাকায় একটি মিটিং অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে নদী থেকে মাছ ধরে হাত বদলের সিন্ডিকেট বন্ধ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। এ উদ্যোগের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সরাসরি বাজারে মাছ পাবে এবং সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে আসবে।
ফরিদা আক্তার বলেন, উপকূল এলাকায় মহিষের চারণভূমি সংকুচিত হয়ে গেছে। আমরা গবেষণায় দেখেছি এর পেছনে নানা কারণ রয়েছে। বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও নির্মিত হচ্ছে। আমাদের দেশে গরু, ছাগল ও মহিষ পালন অন্তত মানুষের খাদ্য ও জীবন রক্ষার জন্য জরুরি। চারণভূমি বিষয়ে আমরা দেখছি যে অনেক কিছু পরিকল্পনা বিহীনভাবে তৈরি হচ্ছে। এতে মহিষের মতো গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তবে সঠিক নীতি ও ব্যবস্থা নিলে এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন,পিকেএসএফ উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি সাদেক আহমেদ, বরিশাল বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, জিজেইউএস নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন। সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর ড. ওমর ফারুক, প্রেসিডেন্ট।
বক্তারা বলেন, নদী ও সমুদ্রের টেকসই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি করা সম্ভব। মৎস্যজীবী, প্রশাসন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান একত্রিতভাবে কাজ করলে মাছ চাষ ও সংরক্ষণ কার্যকর হবে।
এছাড়া তারা বলেন, উপকূলীয় এলাকায় মহিষ পালনের সম্ভাবনা অনেক, তবে জলবায়ু পরিবর্তন, চারণভূমির অভাব ও বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা খাতটির উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করছে। গবেষণা ও আধুনিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মহিষ পালনকে লাভজনক ও টেকসই খাতে রূপান্তর করা সম্ভব।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান এর সভাপতিত্বে আজ রাজধানীর একটি হোটেলে আন্তর্জাতিক শ্রম মান বিষয়ক ত্রিপক্ষীয় কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় শ্রম সচিব বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ৩৬টি কনভেনশন ও একটি প্রটোকল অনুমোদন করেছে। আইএলও সংবিধান অনুযায়ী, অনুমোদিত ও অননুমোদিত উভয় ধরনের সনদের প্রয়োগ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা সকল সদস্য রাষ্ট্রের জন্য বাধ্যতামূলক। এই কমিটি আইএলও কনভেনশন ১৪৪-এর বাধ্যবাধকতার আলোকে বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদনে মালিকপক্ষ ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর মতামত, পরামর্শ ও সুপারিশ নিশ্চিত করবে।
সচিব আরও উল্লেখ করেন যে, আইএলও এর ১১টি কনভেনশন (C-01, C-14, C-19, C-81, C-89, C-100, C-106, C-111, C-118, C-138, MLC-2006) নিয়ে আলোচনা করা হয়। এগুলোর মধ্যে C-81 (শ্রম পরিদর্শন), C-100 (নারী ও পুরুষের সমান পারিশ্রমিক), C-111 (কর্মসংস্থান ও পেশায় বৈষম্য) এবং C-138 (ন্যূনতম কাজের বয়স) বিষয়ক চূড়ান্ত প্রতিবেদন আইএলও সংবিধানের ২২ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে খুব দ্রুত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার জেনেভাস্থ প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করা হবে।
সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রতিনিধি নিরান রাজমুঠান, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের এবং শ্রম অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, ইমপ্লোয়ার্স ফেডারেশন এর প্রতিনিধি , ইন্ডাস্ট্রি অল বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি , বেপজা প্রতিনিধি , NCCWE এর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, গবাদিপশু পালন প্রোটিন ঘাটতি নিরসন, মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষা এবং জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য। অথচ অপরিকল্পিত উন্নয়নের কারণে চারণভূমির হ্রাস হচ্ছে, ফলে মহিষের মতো মূল্যবান সম্পদ ক্ষতির মুখে পড়ছে।
আজ সকালে বরিশাল ক্লাবে অনুষ্ঠিত “উপকূলীয় এলাকার মহিষের চারণভূমি ও উন্নয়নের সমস্যা এবং সমাধান” শীর্ষক জাতীয় কর্মশালা ২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ বাফেলো এসোসিয়েশন, গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা (জিজিইউএস) এবং কোস্টাল ভেট সোসাইটি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, সঠিক নীতি নির্ধারণ ও আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের মাধ্যমে এখনো অনেক চরাঞ্চল রক্ষা করা সম্ভব। মহিষ পালন বাড়াতে পারলে জাতীয়ভাবে মাংস ও দুধ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা যাবে।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মহিষের চারণভূমি দ্রুত কমে যাচ্ছে। অপরিকল্পিত বাড়িঘর নির্মাণ এবং এমনকি সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর উপজেলায় বৃহৎ গরুর বাথান ভরাট করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিও উঠছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি প্রশ্ন তোলেন, শুধু একটি ডিগ্রি অর্জনের উদ্দেশ্যে গরুর বাথান ধ্বংস করা দেশের সামগ্রিক কল্যাণে কতটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে? তিনি আরও বলেন, মহিষের স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয় বিবেচনায় উপকূলীয় এলাকায় স্পিডবোটভিত্তিক ভেটেরিনারি ক্লিনিক স্থাপন করা প্রয়োজন।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, বর্তমানে গবাদিপশুর চারণভূমি কমে যাওয়া এবং খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মহিষসহ অন্যান্য গবাদিপশুর সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় পর্যায়ে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ ও টেকসই চারণভূমি উন্নয়ন অপরিহার্য। পাশাপাশি মহিষের উৎপাদন বৃদ্ধি ও জাতীয়ভাবে মাংস ও দুধ উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানান তারা।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ বাফেলো এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. ওমর ফারুক।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) লুসিকান্ত হাজং, পিকেএসএফ-এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি সাদেক আহমেদ, জিজিইউএস-এর নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মহিন। এছাড়া সরকারি ও বেসরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, স্হানীয় খামারীরা কর্মশালায় অংশ গ্রহণ করেন।
মন্তব্য