রাজধানীর গুলশানের তিনটি স্পা সেন্টারে অভিযান চালিয়ে যৌনবৃত্তির অভিযোগে ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রোববার রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত গুলশান থানা পুলিশ এই অভিযান চালায়।
অল দ্য বেস্ট স্পা, থাই স্পা ও লোটাস থাই স্পা সেন্টারে অভিযানে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে অল দ্য বেস্ট স্পার মালিক পায়েলও রয়েছেন।
গুলশান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিরাজ আকন নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদে গুলশানে বিভিন্ন স্পা সেন্টারে পতিতাবৃত্তির খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে অল দ্য বেস্ট স্পা থেকে ৯ জন নারী ও দুজন পুরুষ, থাই স্পা থেকে ছয়জন নারী ও তিনজন পুরুষ এবং লোটাস থাই স্পা থেকে চারজন নারী ও একজন পুরুষকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়।’
পুরান ঢাকার চকবাজার থানার সামনে অবৈধভাবে রাখা সারি সারি লেগুনা। তার পেছনে মোটরসাইকেল রাখেন ঢাকা ট্রিবিউনের ফটো সাংবাদিক মাহমুদ হোসেন অপু। মোটরসাইকেল রাখা নিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করতে থাকেন লেগুনা চালক ও সহকারীরা। এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে সিভিল পোশাকে হাজির হন চকবাজার জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) জায়েন উদ্দীন মুহাম্মদ যিয়াদ।
পুলিশের এই কর্মকর্তা তখন লেগুনা চালকদের সুরে বলেন, ‘বাইক সরাতে হবে। লেগুনার বিষয়টা আমি দেখবো।’ এ পর্যায়ে কমিউনিটি পুলিশের এক সদস্য সাংবাদিক অপুর মোটরসাইকেলটি টেনেহিঁচড়ে সরানোর চেষ্টা করেন। তখন অপু কমিউনিটি পুলিশের হাত ধরে থামান। এতেই ক্ষুব্ধ হন সহকারী কমিশনার যায়েদ। তিনি ঘুষি মারেন অপুর মুখ বরাবর।
শুক্রবার দুপুরে চকবাজার থানার সামনে ঘটেছে এই ঘটনা। মারধরের শিকার সাংবাদিক অপু ও একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তবে ঘটনার বিষয়ে সহকারী কমিশনার জায়েন উদ্দীন মুহাম্মদ যিয়াদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা কাউকে গাড়ি রাখতে দিচ্ছিলাম না। কারণ এই সময়ে যানজট তৈরি হয়। তখন একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আর উনি যে সাংবাদিক, সেটা উনি বলেননি বা গাড়ির সামনে প্রেস লেখা কোনো স্টিকারও ছিল না। আমি উনার গাড়ি সরাতে বলেছি। লেগুনাগুলোর বিরুদ্ধেও মামলা দেয়া হচ্ছিল।’
ভুক্তভোগী ফটো সাংবাবিদক অপু বলেন, ‘আমি নিজের পরিচয় দিয়েছি। কিন্তু তারা যখন কিছুতেই রাখতে দেবে না, তখন আমি গাড়ি সরাতে গেছি। আমি গাড়ি সরাতে সরাতে কমিউনিটি পুলিশের এক সদস্য বড় কর্মকর্তাদের দেখে হাম্বিতাম্বি শুরু করেন। আমার গাড়ি টানা-হেঁচড়া শুরু করেন। এই দেখে আমি কমিউনিটি পুলিশের হাত ধরি। সঙ্গে সঙ্গে সিভিলে থাকা এসি যায়েদ আমার মুখ বরাবর ঘুষি মারেন। পরে পুলিশের অন্য সদস্যরা তাকে টেনে নিয়ে যান।’
সাংবাদিককে ঘুষি মারার বিষয়ে লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. জাফর হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এমন একটা ঘটনা আমিও শুনেছি। ওখানে নাকি একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। আমি জানার পর সাংবাদিক ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। ততক্ষণে তিনি চকবাজার থেকে চলে গেছেন। আমার এসি ও এডিসিকে সাংবাদিক অপু ভাইয়ের কাছে পাঠিয়েছি বিষয়টি সমাধানের জন্য।’
ঢাকার পুলিশ পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার আসামি দুবাইয়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম ওরফে আরাব খান ওরফে আপনের বিশ্বস্ত দুই সহযোগীর ওপর নজর রাখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ওই দুজন কক্সবাজারে থাকেন। তারা সম্পর্কে শ্যালক-দুলাভাই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন আরাব। এ সংক্রান্ত ভিডিও এখন ছড়িয়ে পড়েছে।
আরাব যে দুজনকে পরিচয়ে করিয়ে দেন তারা হলেন কক্সবাজার শহরের বাহারছড়ার বাসিন্দা শেফায়েত হোসেন জয় ও জসিম উদ্দিন নাহিদ। তাদের ওপর নজর রাখা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আরাব খান ওই দুই যুবককে পরিচয় করিয়ে দেন। তিনি ওই ভিডিওতে বলেন, জয় ও জসিম কক্সবাজারের মাফিয়া। জয় ‘কিলার’, নাহিদ আগামী নির্বাচনের ‘এমপি প্রার্থী’।
তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০২২ সালের ৮ জুলাই আরাব খানের তার ফেসবুক আইডি থেকে লাইভ ভিডিওটি পোস্ট করেন।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কক্সবাজার শহরের বাহারছড়ার বাসিন্দা ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোশাররফ হোসেন দুলালের ছেলে জয় ও তার ভগ্নিপতি নাহিদ প্রতিমাসে দুবাই আসা-যাওয়া করেন। তাদের দৃশ্যমান কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না থাকলেও হঠাৎ করে আলিশান গাড়িতে চলাফেরা, বিলাসবহুল জীবন যাপন এলাকার মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগেও নাহিদ কক্সবাজারের রিগ্যাল প্যালেস নামের একটি আবাসিক হোটেলে ফ্রন্ট ডেস্ক ম্যানেজার পদে চাকরি করতেন। কিন্তু কয়েক বছরে তিনি রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকায় দুটি ফ্ল্যাট কিনেছেন।
আরাব খানের সঙ্গে নাহিদ-জয়ের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের পর তাদের নিয়ে এ প্রতিবেদকের কাছে আরও তথ্য দিয়েছেন ফেনীর আবু তৈয়ব রকি নামের ব্যবসায়ী।
ট্রাভেলিং এজেন্সির ব্যবসা করা এই ব্যক্তির অভিযোগ, কাতার বিশ্বকাপ দেখে ফেরার পথে প্রবাসে থাকা পরিবারের সদস্যদের ৬০ ভরি স্বর্ণ নিয়ে ফিরছিলেন ফেনীর চার বাসিন্দা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন জয় ও নাহিদ। ঢাকার বিমানন্দরে নামার পর নাহিদ ও জয় তাদের রাজধানীর বসুন্ধরার ফ্ল্যাটে বিশ্রামের অজুহাতে নিয়ে যান। পরে তারা সেখান থেকে ওই স্বর্ণ নিয়ে সটকে পড়েন।
তিনি আরও জানান, যেসব বাংলাদেশি দুবাইতে স্বর্ণ কিনতে যান, নাহিদ ও জয় তাদের টার্গেট করেন। দেশে ফেরার পর সেই স্বর্ণ লুট করে তা বিক্রি করে দেন শ্যালক-দুলাভাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নাহিদ ও জয়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তারা কল রিসিভ করেননি।
এ নিয়ে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘’সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযুক্ত দুজনের নানা তথ্য এসেছে। এসব বিষয়ে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। অভিযুক্ত দুজন পুলিশের নজরদারিতে রয়েছে।’
রেড নোটিশ
পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার পলাতক আসামি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অবস্থানরত আরাব খান ওরফে রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল।
রেড নোটিশ পাওয়া বাংলাদেশিদের তালিকায় ছবিসহ যুক্ত করা হয়েছে তার নাম।
ইন্টারপোলের তালিকায় আরাব নামটি উল্লেখ করা হয়নি। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে তার পূর্ণ নাম রবিউল ইসলাম ও ডাকনাম রবিউল লেখা হয়েছে। জন্মস্থান দেখানো হয়েছে বাগেরহাট; বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ৩৫ বছর।
বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আরাবের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে ইন্টারপোল।
এর আগে ১৮ মার্চ পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার ফেরারি আসামি আরাব খান ওরফে রবিউল ইসলামকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলকে চিঠি দেয়ার খবর জানায় বাংলাদেশ পুলিশ।
ইন্টারপোল বাংলাদেশ ডেস্কের এক কর্মকর্তা ওই দিন বিকেলে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এই বিষয়ে (আরাবকে দেশে ফেরানো) ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইন্টারপোলকে মেইল করেছি। তারা আমাদের দেয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।’
আরাবকে নিয়ে আলোচনার শুরু যেখান থেকে
পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খান হত্যা মামলার আসামি আরাব খান ওরফে রবিউল ইসলাম আলোচনায় আসেন মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গোল্ড জুয়েলারি শপ ‘আরাব জুয়েলার্স’ উদ্বোধন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এই আলোচনা শুরু হয়। শপটির লোগো বানানো হয় ৬০ কেজি স্বর্ণ দিয়ে।
আরাবের এই জুয়েলারি শপের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ পান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান, ইউটিউবার হিরো আলমসহ বেশ কয়েকজন। এ নিয়ে সাকিব আল হাসানের ভিডিও বার্তার পর বিষয়টি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) নজরে আসে।
ফেরারি আসামি আরাব খানের মালিকানাধীন আরাব জুয়েলার্স উদ্বোধন হয় ১৫ মার্চ রাতে। দুবাইয়ে নিউ গোল্ড সোক হিন্দ প্লাজার ৫ নম্বর ভবনের ১৬ নম্বর দোকানটি তার। সাকিবসহ অন্যরা এই আয়োজনে অংশ নেন।
ডিবি মতিঝিল বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘পুলিশ পরিদর্শককে হত্যা মামলার চার্জশিট হয়েছে অনেক আগেই। রবিউল চার্জশিটভুক্ত পলাতক আসামি। জুয়েলারি শপ উদ্বোধনের ঘোষণার পর আমরা আইডেন্টিফাই করি, যে ব্যক্তি আরাব খান নামে আইডিটি পরিচালনা করছেন, তিনি পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খাঁন হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম। তার ভারতীয় একটি পাসপোর্ট ও বাংলাদেশি পাসপোর্ট আমাদের কাছে রয়েছে।’
আরও পড়ুন:পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলায় ইন্টারপোলের রেড নোটিশে থাকা রবিউল ইসলাম ওরফে আরাব খান কীভাবে এত অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তার এক স্বজন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি।
তারা জানিয়েছেন, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ ইউনিয়নের আশুতিয়া গ্রামের বাসিন্দা আরাব তাদের কাছে পরিচিত সোহাগ মোল্লা হিসেবে। তার বাবার নাম মতিয়ার রহমান মোল্লা, যিনি একসময় বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় ফেরি করে হাঁড়ি-পাতিল বিক্রি করতেন। সেখানে আরাবের মামা বাড়ি।
কোটালীপাড়ার ওই দুই বাসিন্দাসহ স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, বাগেরহাটে ১৯৮৮ সালে সোহাগ মোল্লার জন্ম। ২০০৫ সালে চিতলমারী সদরের একটি স্কুলে তিনি লেখাপড়া করেন। দারিদ্র্যের কারণে তিনি আর এসএসসি শেষ করতে পারেননি। লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেলে ২০০৮ সালে চিতলমারী থেকে ঢাকায় এসে নাম পরিবর্তন করে হয়ে যান মোল্লা আপন। সেখানে তিনি কাজ নেন হোটেল বয় হিসেবে।
স্থানীয়রা জানান, এলাকার মানুষ আরাবকে সোহাগ মোল্লা নামেই চেনে। গোপালগঞ্জে তেমন একটা না আসায় তাকে খুব বেশি মানুষ চিনতেন না। পাঁচ-ছয় বছর আগে নিজেকে ‘মোল্লা আপন’ পরিচয় দিয়ে কোটালীপাড়ায় পোস্টার লাগিয়েছিলেন আরাব। অনেকেই সে সময় তাকে পোস্টার সাঁটানোর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, তাকে এলাকার মানুষ তেমন চেনে না। তাই কোটালীপাড়া সদরের বিভিন্ন স্থানে পোস্টার লাগিয়েছেন।
কী বলছেন চাচাতো ভাই
রবিউল ইসলাম ওরফে সোহাগ মোল্লা ওরফে আরাব খানের চাচাতো ভাই ফেরদৌস মোল্লা নিউজবাংলাকে বলেন, তার ভাই সোহাগ মোল্লা কীভাবে অল্প দিনে এত টাকার মালিক হয়েছেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি।
তিনি জানান, কিছুদিন আগে সোহাগ মোল্লা ওরফে আরাব খান তার মা-বাবা ও তাদের কাছে থাকা অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে, বোন, ভগ্নিপতি ও তাদের দুই সন্তানকে নিয়ে দুবাই গেছেন বলে খবর পাওয়া যায়।
ফেরদৌস জানান, বাড়ির আশপাশের লোকজনকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাওয়ার কথা বলে আরাব খানের মা, বাবাসহ স্বজনরা দুবাই পাড়ি জমিয়েছেন বলে তিনি শুনেছেন।
জনপ্রতিনিধি ও পুলিশের ভাষ্য
কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজহারুল আলম পান্না সাংবাদিকদের কাছে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘সোহাগ মোল্লা ওরফে আরাব খান একই ব্যক্তি। আমার গ্রামেই তার বাড়ি। সে একটি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। পাঁচ-সাত বছর ধরে সে এলাকায় আসে না। হঠাৎ করে সে কীভাবে এত টাকার মালিক হলো, এটা আমাদের বোধগম্য না।’
কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, ‘সোহাগ মোল্লা ওরফে মোল্লা আপন ওরফে রবিউল ইসলাম রবি ওরফে শেখ হৃদি ওরফে আরাব খানের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৯টি ওয়ারেন্ট কোটালীপাড়া থানায় এসেছে। আমি ওয়ারেন্টগুলো তামিল করার জন্য চেষ্টা করেছি, কিন্তু তার কোনো হদিস আমরা পাইনি।’
রেড নোটিশ
পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার পলাতক আসামি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অবস্থানরত আরাব খান ওরফে রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল।
রেড নোটিশ পাওয়া বাংলাদেশিদের তালিকায় ছবিসহ যুক্ত করা হয়েছে তার নাম।
ইন্টারপোলের তালিকায় আরাব নামটি উল্লেখ করা হয়নি। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে তার পূর্ণ নাম রবিউল ইসলাম ও ডাকনাম রবিউল লেখা হয়েছে। জন্মস্থান দেখানো হয়েছে বাগেরহাট; বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ৩৫ বছর।
বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আরাবের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে ইন্টারপোল।
এর আগে ১৮ মার্চ পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার ফেরারি আসামি আরাব খান ওরফে রবিউল ইসলামকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলকে চিঠি দেয়ার খবর জানায় বাংলাদেশ পুলিশ।
ইন্টারপোল বাংলাদেশ ডেস্কের এক কর্মকর্তা ওই দিন বিকেলে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এই বিষয়ে (আরাবকে দেশে ফেরানো) ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইন্টারপোলকে মেইল করেছি। তারা আমাদের দেয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।’
আরাবকে নিয়ে আলোচনার শুরু যেখান থেকে
পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খাঁন হত্যা মামলার আসামি আরাব খান ওরফে রবিউল ইসলাম আলোচনায় আসেন মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গোল্ড জুয়েলারি শপ ‘আরাব জুয়েলার্স’ উদ্বোধন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এ আলোচনা শুরু হয়। শপটির লোগো বানানো হয় ৬০ কেজি সোনা দিয়ে।
আরাবের এই জুয়েলারি শপের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ পান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এ নিয়ে সাকিব আল হাসানের ভিডিওবার্তার পর বিষয়টি নজরে আসে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি)।
সে সময় ডিবি মতিঝিল বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, ‘পুলিশ পরিদর্শককে হত্যা মামলার চার্জশিট হয়েছে অনেক আগেই। রবিউল চার্জশিটভুক্ত পলাতক আসামি। জুয়েলারি শপ উদ্বোধনের ঘোষণার পর আইডেন্টিফাই করি, যে ব্যক্তি আরাব খান নামে আইডিটি পরিচালনা করছেন, তিনি পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খাঁন হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম। তার ভারতীয় একটি পাসপোর্ট ও বাংলাদেশি পাসপোর্ট আমাদের কাছে রয়েছে।’
রবিউলকে ইন্টারপোলের সহায়তায় দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছিলেন ডিবি মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার রাজিব আল মাসুদ।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘আমরা তাকে অনেক দিন ধরেই খুঁজছিলাম। দুবাইতে তিনি অবস্থান করছেন, এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। ফলে এখন আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেব।’
আরাব খানের মালিকানাধীন আরাব জুয়েলার্স উদ্বোধন হয় ১৫ মার্চ রাতে। দুবাইয়ে নিউ গোল্ড সোক হিন্দ প্লাজার ৫ নম্বর ভবনের ১৬ নম্বর দোকানটি আরাবের।
তার ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে দেখা যায়, সাকিব আল হাসানের পাশাপাশি পাকিস্তানের ক্রিকেটার মোহাম্মদ আমির, আফগানিস্তানের ক্রিকেটার হযরতউল্লাহ জাজাই, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার এভিন লুইস, ইংল্যান্ডের বেনি হাওয়েল, শ্রীলঙ্কার ইসুরু উদানা, বাংলাদেশি লেখক সাদাত হোসাইন, অভিনেত্রী দীঘি, আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলম, চলচ্চিত্র পরিচালক দেবাশীষ বিশ্বাস, কণ্ঠশিল্পী নোবেল, বেলাল খানসহ অনেকে জুয়েলারি শপ উদ্বোধন উপলক্ষে শুভেচ্ছাবার্তা দেন। তাদের একটি বড় অংশ দুবাইতে গিয়ে অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
আরও পড়ুন:পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার পলাতক আসামি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অবস্থানরত আরাব খান ওরফে রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোল।
রেড নোটিশ পাওয়া বাংলাদেশিদের তালিকায় ছবিসহ যুক্ত করা হয়েছে তার নাম।
আরাবসহ ইন্টারপোলের রেড নোটিশপ্রাপ্তদের তালিকায় থাকা বাংলাদেশির সংখ্যা ৬৩।
ইন্টারপোলের তালিকায় আরাব নামটি উল্লেখ করা হয়নি। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে তার পূর্ণ নাম রবিউল ইসলাম ও ডাকনাম রবিউল লেখা হয়েছে। জন্মস্থান দেখানো হয়েছে বাগেরহাট; বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ৩৫ বছর।
বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আরাবের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে ইন্টারপোল।
রোড নোটিশ নিয়ে যা বলেছিলেন আইজিপি
আরাব খান ওরফে রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির আবেদন গ্রহণের কথা শুনেছেন বলে জানিয়েছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
চট্টগ্রামের এনায়েত বাজার পুলিশ ফাঁড়ির নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন শেষে ২০ মার্চ দুপুরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
পুলিশপ্রধান বলেন, ‘আরাব খানের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য ইন্টারপোলসহ বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ শুরু করেছি। আমি কিছুক্ষণ আগে জানতে পেরেছি যে, তার যে নামে আমরা চার্জশিট দিয়েছি, ওই নামে রেড নোটিশ জারির একটা বিষয় (আবেদন/অনুরোধ) দিয়েছি। এটা বোধ হয় ইন্টারপোল গ্রহণ করেছে, এ রকম একটা খবর আমি পেয়েছি। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি, কীভাবে কাজ করছি সেটা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাচ্ছি না তদন্তের স্বার্থে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশ থেকে যদি কোনো আসামি পলায়ন করে বিদেশে চলে যায়, যখন আমরা তার সম্পর্কে মোটামুটি কিছু তথ্য পাই, তখন আমরা একটা রেড নোটিশ জারি করি। এটা ইন্টারপোল হেড কোয়ার্টারে যায়। আমি যেটা খবর পেয়েছি যে, এটা তারা অ্যাকসেপ্ট করেছে।’
এর আগে ১৮ মার্চ পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার ফেরারি আসামি আরাব খান ওরফে রবিউল ইসলামকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলকে চিঠি দেয়ার খবর জানায় বাংলাদেশ পুলিশ।
ইন্টারপোল বাংলাদেশ ডেস্কের এক কর্মকর্তা ওই দিন বিকেলে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা এই বিষয়ে (আরাবকে দেশে ফেরানো) ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইন্টারপোলকে মেইল করেছি। তারা আমাদের দেয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।’
একই দিনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের জানান, আরাবকে ফেরাতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার পলাতক আসামি আরাবকে দেশে ফেরানোর উদ্যোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘ইন্টারপোলের সহায়তায় তাকে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে তাকে ধরতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
‘আমরা অনেক কিছুই শুনেছি, জেনেছি। যেসব তথ্য আমাদের কাছে এসেছে, তা যাচাই-বাচাই করে বাদবাকি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরাবকে নিয়ে আলোচনার শুরু যেখান থেকে
পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খাঁন হত্যা মামলার আসামি আরাব খান ওরফে রবিউল ইসলাম আলোচনায় আসেন মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গোল্ড জুয়েলারি শপ ‘আরাব জুয়েলার্স’ উদ্বোধন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এ আলোচনা শুরু হয়। শপটির লোগো বানানো হয় ৬০ কেজি সোনা দিয়ে।
আরাবের এই জুয়েলারি শপের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ পান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এ নিয়ে সাকিব আল হাসানের ভিডিওবার্তার পর বিষয়টি নজরে আসে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি)।
সে সময় ডিবি মতিঝিল বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, ‘পুলিশ পরিদর্শককে হত্যা মামলার চার্জশিট হয়েছে অনেক আগেই। রবিউল চার্জশিটভুক্ত পলাতক আসামি। জুয়েলারি শপ উদ্বোধনের ঘোষণার পর আইডেন্টিফাই করি, যে ব্যক্তি আরাব খান নামে আইডিটি পরিচালনা করছেন, তিনি পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খাঁন হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম। তার ভারতীয় একটি পাসপোর্ট ও বাংলাদেশি পাসপোর্ট আমাদের কাছে রয়েছে।’
রবিউলকে ইন্টারপোলের সহায়তায় দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছিলেন ডিবি মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার রাজিব আল মাসুদ।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘আমরা তাকে অনেক দিন ধরেই খুঁজছিলাম। দুবাইতে তিনি অবস্থান করছেন, এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। ফলে এখন আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেব।’
ফেরারি আসামি আরাব খানের মালিকানাধীন আরাব জুয়েলার্স উদ্বোধন হয় ১৫ মার্চ রাতে। দুবাইয়ে নিউ গোল্ড সোক হিন্দ প্লাজার ৫ নম্বর ভবনের ১৬ নম্বর দোকানটি আরাবের।
তার ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে দেখা যায়, সাকিব আল হাসানের পাশাপাশি পাকিস্তানের ক্রিকেটার মোহাম্মদ আমির, আফগানিস্তানের ক্রিকেটার হযরতউল্লাহ জাজাই, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার এভিন লুইস, ইংল্যান্ডের বেনি হাওয়েল, শ্রীলঙ্কার ইসুরু উদানা, বাংলাদেশি লেখক সাদাত হোসাইন, অভিনেত্রী দীঘি, আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলম, চলচ্চিত্র পরিচালক দেবাশীষ বিশ্বাস, কণ্ঠশিল্পী নোবেল, বেলাল খানসহ অনেকে জুয়েলারি শপ উদ্বোধন উপলক্ষে শুভেচ্ছাবার্তা দেন। তাদের একটি বড় অংশ দুবাইতে গিয়ে অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
আরও পড়ুন:পবিত্র রমজানে রাজধানীতে যানজটের মাত্রা কমিয়ে আনতে ১৫টি নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। বৃহস্পতিবার ডিএমপির মিডিয়া শাখা থেকে নির্দেশনাগুলো জানানো হয়।
নির্দেশনাগুলোর বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শহরকে যানজটমুক্ত রাখতে আমাদের পুলিশ সব সময় কাজ করে যাচ্ছে। রমজানে সাধারণ মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারে সেজন্য সংশ্লিষ্ট সবার জন্য এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সবাইকে আইনে মেনে চলার অনুরোধ থাকছে। ট্রাফিক আইন অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নির্দেশনাগুলো হলো-
১. ঢাকা মহানগরীতে দূরপাল্লার ও আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের ভেতরের কোনো বাস সড়কে রেখে বা থামিয়ে যাত্রী উঠাবে না। সংশ্লিষ্ট বাসের প্রতিনিধিদের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
২. ঢাকা মহানগরীতে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার বাসগুলো টার্মিনাল সংলগ্ন প্রধান সড়কের অংশ দখল করে দাঁড়াবে না।
৩. ভ্রমণকালে ঢাকা মহানগরের প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে গণপরিবহনগুলোকে শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।
৪.ঢাকা মহানগরী থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার যানবাহনকে অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বহন থেকে বিরত থাকতে হবে।
৫. আন্তঃজেলা পরিবহনের যাত্রী বা গমন প্রত্যাশীদের প্রধান সড়কে এসে অপেক্ষা বা দাঁড়িয়ে না থেকে টার্মিনালের ভেতরে অবস্থান করার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে।
৬. ঢাকা মহানগরী থেকে দূরপাল্লার রুটপারমিটবিহীন বা অননুমোদিত রুটে কোনো বাস চলাচল করবে না। সংশ্লিষ্ট সবাই বিষয়টি কঠোরভাবে মেনে চলবেন এবং কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করবেন।
৭. বাসে যাত্রীদের অপরিচিত কারও কাছ থেকে কিছু না খাওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
৮. সংশ্লিষ্ট যাত্রীরা অবশ্যই যানবাহনে টিকিট সঙ্গে রাখবেন।
৯. যাত্রীদের মালামাল নিজ হেফাজতে সাবধানে রাখবেন।
১০. কোনো যানবাহনই ছাদে ও অতিরিক্ত যাত্রী বহন করবে না।
১১. যাত্রী তোলার ক্ষেত্রে বাসের চালকরা এমন কোনো অসম প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন না যাতে সড়কে শৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটে ও জীবনহানির আশঙ্কা থাকে।
১২. সকালে অফিসে গমনাগমনকারী প্রত্যেককে পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে বাসা থেকে রওনা হবেন।
১৩. ইফতারের আগে আগে বাসায় রওনা না দিয়ে পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে বাসার উদ্দেশে রওনা দেবেন।
১৪. স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের ক্ষেত্রে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, বাস ইত্যাদি বাহন ব্যবহার না করে হেঁটে চলাচল করবেন।
১৫. টার্মিনালভিত্তিক কাউন্টারগুলোতে ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন করতে হবে।
বাংলা বর্ণমালা থেকে সাতটি বর্ণ বাদ দেয়ার গুজব রটনাকারীকে শনাক্ত করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা। তাকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। পিএইচডিধারী এই ব্যক্তিকে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের নাম দিয়ে একটি ম্যাসেজের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু বাংলা একাডেমি থেকে জানানো হয়, এমন কোনো ম্যাসেজ তাদের বা সেলিনা হোসেনের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়নি।
‘এমন ঘটনায় আমরা গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করি। প্রাথমিক তদন্তে অপপ্রচারের সত্যতা পাওয়া গেছে। একজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাকে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হবে।’
চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোমাধ্যম ফেসবুকে একটি মেসেজের স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়। ওই স্ক্রিনশটে লেখা রয়েছে, ‘প্রিয় সুধী, আগামী ২০২৪ সালে বাংলা স্বরবর্ণ থেকে ঈ, ঊ, ঋ এবং বাংলা ব্যঞ্জন বর্ণ থেকে ঞ, ণ, ঢ়, ৎ বাদ দেয়া হবে।’
মেসেজের নিচে প্রেরক হিসেবে লেখা হয়েছে, ‘সেলিনা হোসেন। সভাপতি। বাংলা একাডেমি।’
ওই পোস্টটি দেয়া হয়েছে একটি ফোন নম্বর থেকে আসা মেসেজের ওপর ভিত্তি করে। তবে যে নম্বর থেকে মেসেজটি এসেছে, সে নম্বরে একাধিকবার ফোন কল করলেও কেউ ধরেননি।
১৫ মার্চ বিষয়টি গুজব বলে জানান বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমি এমন কিছু জানি না। এমন কোনো সিদ্ধান্ত বাংলা একাডেমি নেয়নি। এটি গুজব।’
এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত আনসারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোনো বর্ণ বাদ দেয়ার সুযোগ বাংলা একাডেমির নেই। আসলে বাংলা একাডেমি তো কোনো বর্ণ বাদ দেয়ার বা সংযুক্ত করার কর্তৃপক্ষও না।’
বাংলা ভাষায় স্বরবর্ণ সবমিলিয়ে ১১টি। ব্যঞ্জনবর্ণের সংখ্যা ৩৯। এর আগে ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধানে বহুদিন ধরে প্রচলিত ‘ঈদ’ শব্দের বানান পরিবর্তন করে ‘ইদ’ লিখে আলোচিত হয়।
আরও পড়ুন:দুই ছাত্রীর মাকে অপদস্ত করার অভিযোগ ওঠার পর বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেয়া হয়েছে। তাকে বদলি করে মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বদলি সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বগুড়ার অতিরিক্তি জেলা জজ রুবাইয়া ইয়াসমিনকে বদলি করে আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেয়াকে কেন্দ্র করে বিচারকের অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ের সঙ্গে সহপাঠীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সূত্রপাত।
বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, “এই বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে বগুড়ার জজ আদালতের এক বিচারকের মেয়ে। বিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা পালাক্রমে শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে থাকে। সোমবার ওই বিচারকের মেয়ের শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেয়ার কথা ছিল। তবে নিজেকে বিচারকের মেয়ে পরিচয় দিয়ে সে শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দিতে অস্বীকার করে। এ নিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়।
“ওই রাতেই বিচারকের মেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মাধ্যমে মেসেঞ্জারে তার সহপাঠীদের বস্তির মেয়ে উল্লেখ করে পোস্ট দেয়। সে পোস্টে উল্লেখ করে, ‘তোরা বস্তির মেয়ে। আমার মা জজ। তোদের মায়েদের বল আমার মায়ের মতো জজ হতে।’
“ওই পোস্টে বিচারকের মেয়ের চার সহপাঠী পাল্টা উত্তর দেয়। এ নিয়ে ওই বিচারক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুনকে মঙ্গলবার অভিভাবকদের ডাকতে বলেন। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে প্রধান শিক্ষকের ডাকে ওই ৪ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে আসেন। সে সময় ওই বিচারক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে জেলে দেয়ার হুমকি দেন। এ সময় দুই অভিভাবককে ওই বিচারকের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়।”
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহকারী শিক্ষিকা বলেন, ‘বিচারকের মেয়ে ও কিছু শিক্ষার্থী পাল্টাপাল্টি পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষিকার কক্ষে বিচার বসানো হয়। এ সময় বিচারক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জেলে দেয়ার হুমকি দিলে দুইজন অভিভাবক নিজে থেকেই পা ধরে ক্ষমা চান। তাদেরকে কেউ বাধ্য করেনি বা পা ধরতে বলেনি।’
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। সরকারি চাকরিজীবীদের সন্তানদের সঙ্গে বেসরকারি চাকরিজীবী বা ব্যবসায়ীদের সন্তানদের মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্ব কাজ করে।
‘যতটুকু জেনেছি সোমবার বিচারকের মেয়ের ঝাড়ু দেয়ার কথা ছিল। তবে সে তিন মাস আগেই স্কুলে আসায় এই পরিবেশ হয়তো বুঝে উঠতে পারেনি। এজন্য সে ঝাড়ু দিতে প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে কাজটি সম্পন্ন করে। এ সময় অন্য শিক্ষার্থীরা তাকে ক্রিটিসাইজ করে। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।’
প্রধান শিক্ষক আরও বলেন, ‘এ কারণে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবককে ডাকা হয়। তাদের সঙ্গে কথা বলা হয়। কিন্তু অভিভাবকদের মাফ চাওয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে। অভিভাবকেরা ভয় পেয়ে এভাবে মাফ চেয়েছেন। তাদেরকে কেউ বাধ্য করেনি।’
এদিকে অভিভাবকদের লাঞ্ছনা ও শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে বগুড়ার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নিলুফা ইয়াসমিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হেলেনা আকতার বিদ্যালয়ে আসেন। তারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সুরাহা করার আশ্বাস দেন।
একইসঙ্গে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নিলুফা ইয়াসমিনকে তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য