× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
The death of a young man caught in the wires of the lighting of the puja
google_news print-icon

পূজার আলোকসজ্জার তারে জড়িয়ে যুবকের মৃত্যু

পূজার-আলোকসজ্জার-তারে-জড়িয়ে-যুবকের-মৃত্যু
প্রতীকী ছবি
শেরপুর থানার ওসি আতাউর রহমান খোন্দকার বলেন, ‘রুপমের মরদেহটি পুলিশ হেফাজতে আছে। সুরতহাল শেষে অপমৃত্যু মামলা হবে।’

বিসর্জনের জন্য মণ্ডপ থেকে প্রতিমা নামানোর সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বগুড়ার শেরপুরে রুপম কর্মকার জগো নামে এক যুবক মারা গেছেন।

বুধবার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার পৌর শহরের পূবালী সংঘ পূজামণ্ডপে এ ঘটনা ঘটে।

৩২ বছর বয়সী রুপম উপজেলার উত্তর সাহাপাড়া এলাকার মৃত রঘুনাথ কর্মকারের ছেলে।

শেরপুর থানার ওসি আতাউর রহমান খোন্দকার নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওসি জানান, পূবালী সংঘ পূজামণ্ডপে বিকেলে বিসর্জনের জন্য প্রতিমা নামানোর প্রস্তুতি চলছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ওই মণ্ডপে আলোকসজ্জার জন্য টানানো বৈদ্যুতিক তারে কোথাও ছিদ্র ছিল। সেই ছিদ্রের সংস্পর্শে গিয়েই রুপম কর্মকার বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।

পরে মণ্ডপে উপস্থিত স্থানীয়রা রুপমকে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি বলেন, ‘রুপমের মরদেহটি পুলিশ হেফাজতে আছে। সুরতহাল শেষে অপমৃত্যু মামলা হবে। পরে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’

আরও পড়ুন:
দুর্গা আসেননি মণ্ডপে, ঝুলছে কালো পতাকা
ঢাক বাজিয়ে মণ্ডপ মাতালেন খাদ্যমন্ত্রী
বরাবরই ব্যতিক্রম টাইগার সংঘের পূজা
দুর্গার প্রতিমা গড়ে আলোচনায় ১৩ বছরের কিশোর
দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানালেন লিটন-সৌম্য

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Water is not rising in the tubewell in Meherpur amid the fire

দাবদাহের মধ্যে টিউবওয়েলে পানি উঠছে না মেহেরপুরে

দাবদাহের মধ্যে টিউবওয়েলে পানি উঠছে না মেহেরপুরে ১৫ থেকে ১৬ বার টিউবওয়েল চাপার পরেও মিলছে না এক গ্লাস পানি। ছবি: নিউজবাংলা
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের তথ্যমতে, জেলার গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সুপেয় পানির স্তর প্রতি বছর ১০ থেকে ১১ ফুট নিচে নামছে। ১০ বছর আগেও এই এলাকায় ৬০ থেকে ৭০ ফুটের মধ্যে ভূ-গর্ভস্থ সুপেয় পানির স্তর পাওয়া যেত। অথচ এখন পানির জন্য যেতে হয় ৩০০ ফুটেরও বেশি গভীরে।

ছিয়াত্তর বছর বয়সী আবদুর রহিম স্ত্রীকে হারিয়েছেন দেড় যুগ আগে। পরিবারের সদস্য বলতে এক ছেলে, তাও থাকেন প্রবাসে। ছেলে প্রবাসে যাওয়ার পর অন্য ঘরে চলে গেছেন ছেলের বৌও। তাই রান্না-বান্না থেকে শুরু করে সব কিছুই করতে হয় নিজেকে।

জীবন যুদ্ধে তিনি কখনও দমে যাননি, তবে এবার হার মেনেছেন টিউবওয়েলের পানির কাছে। ১৫ থেকে ১৬ বার টিউবওয়েল চাপার পরেও মিলছে না এক গ্লাস পানি। তাই পানি সংকটের কারণে গোসল থেকে শুরু করে গৃহস্থালির সব কাজ হচ্ছে ব্যাহত।

তাই অধিকাংশ সময় বাড়ির পাশে থাকা মসজিদে গিয়ে পানির চাহিদা পূরণ করছেন আবদুর রহিম।

এদিকে গৃহবধূ ছানোয়ারা খাতুন গৃহস্থালির সব কাজ করেন একাই। বাড়িতে রয়েছে তিনটি গাভি ও চারটি ছাগল। এর মধ্যেই আজ সপ্তাহ দুয়েক ধরে টিউবওয়েলে উঠছে না পানি। খাওয়া থেকে ওজু, গোসল সব কিছুতেই বেগ পেতে হচ্ছে পানি সংকটের কারণে।

ছানোয়ারা খাতুন জানান, তীব্র তাপদাহের মধ্যে আজ সপ্তাহখানেক ধরে বাড়িতে থাকা গরুর গোসল করাতে পারেননি তিনি, তবে নিজে প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে গোসল করে আসেন।

মেহেরপুরের গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের হস্তচালিত টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। ফলে এলাকার মানুষের মধ্যে পানির সংকট এখন চরমে পৌঁছেছে। একদিকে গৃহস্থালির কাজে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে বোরো চাষে পানির সংকটের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বললে তারা সুপেয় পানির সংকটের কথা জানান। বিশেষ করে মুজিবনগর উপজেলার, জয়পুর, আমদহ, তারানগর, বিশ্বনাথপুর; সদর উপজেলার শালিকা, আশরাফপুর, আমদাহ, বুড়িপোতা, আলমপুর এবং গাংনী উপজেলার ষোলটাকা ইউনিয়নের আমতৈল, মানিকদিয়া, কেশবনগর, শিমুলতলা, রইয়েরকান্দি, সহড়াবাড়িয়া, মিনাপাড়া, ভোলাডাঙ্গা, কুমারীডাঙ্গা কাথুলি ইউনিয়নের গাঁড়াবাড়িয়া, ধলাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় চলতি শুষ্ক মৌসুম শুরু থেকেই সুপেয় পানির সংকট প্রকট হচ্ছে।

দীর্ঘ সময় ধরে অনাবৃষ্টি, ভূ-গর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহার, অপরিকল্পিতভাবে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি তোলা, এবং পুকুর-খাল-বিল ভরাটের কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে সীমান্তবর্তী মেহেরপুর জেলার ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমেই নিচে নামছে। আগামীতে বৃষ্টিপাত না হলে পরিস্থিতি আরও অবনতি হবে বলেও জানান তারা।

গ্রামবাসীরা বলছেন, গ্রীষ্মকাল শুরু না হতেই এবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। অথচ গ্রামে সুপেয় পানির জন্য নলকূপই শেষ ভরসা।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের তথ্যমতে, জেলার গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সুপেয় পানির স্তর প্রতি বছর ১০ থেকে ১১ ফুট নিচে নামছে। ১০ বছর আগেও এই এলাকায় ৬০ থেকে ৭০ ফুটের মধ্যে ভূ-গর্ভস্থ সুপেয় পানির স্তর পাওয়া যেত। অথচ এখন পানির জন্য যেতে হয় ৩০০ ফুটেরও বেশি গভীরে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, গত কয়েক বছরে এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভূ-গর্ভস্থ সুপেয় পানির স্তর ১০ থেকে ১৫ ফুট নিচে নেমে গেছে। ফলে অকেজো হয়ে পড়েছে হস্তচালিত অনেক টিউবওয়েল। যেখানে আগে ভূগর্ভের ৫০ থেকে ৬০ ফুট গভীরতা থেকেই পাওয়া যেত সুপেয় পানি। গত এক দশকে ক্রমেই পানির স্তর নিচে নেমে গেছে।

জেলায় গভীর-অগভীর মিলিয়ে ৯ হাজার ৯১৩টি নলকূপ আছে। এর মধ্যে অকেজো হয়ে পড়ে আছে ২ হাজার ২৩৯টি।

গাংনী উপজেলার ভোলাডাঙ্গা গ্রামের পল্লি চিকিৎসক মতিন বলেন, ‘আমি ২০ বছর ধরে গ্রামে গ্রামে চিকিৎসা দিয়ে বেড়াই। আজ ১০ দিন ধরে আমার বাড়ির নলকূপে পানি উঠছে না। রোদের মধ‍্যে সারা দিন গ্রাম গ্রাম ঘুরে বাড়ি এসে যদি পানি না পাই তাহলে কেমন লাগে? আমি তাই মসজিদের নলকূপে গিয়ে গোসল সেরে আসি।’

একই এলাকার দিনমজুর সিরাজ বলেন, ‘আমি সারা দিন মাঠে কাজ করি। বাড়িতে দুটি গরুও পালন করি অথচ গরু দুটি আজ কয়দিন গা ধোয়াতে পারিনি। আবার মাঠে এক বিঘা ধানের আবাদ আছে, তাতে সেচ দিতে গিয়ে বিপদে পড়তে হচ্ছে। যেখানে দুই ঘণ্টা মেশিনে পানি দিলে হয়ে যেতো। সেখানে এখন চারটা ঘণ্টা পানি দিয়েও হচ্ছে না।’

এ অঞ্চলের আবহাওয়া নির্ণয়কারী চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘কয়েকদিন ধরেই চুয়াডাঙ্গাসহ এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এখানে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ অঞ্চলে আপাতত আজকে বৃষ্টির সম্ভবনা নেই।’

মেহেরপুরের জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন জানান, সুপেয় পানির সমস্যা নিরূপণে যেসব এলাকায় সংকট সেখানে ১০টি বাড়িকে কেন্দ্র করে একটি ৯০০ ফুট গভীর নলকূপ স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে সরকার। এসব এলাকায় ৫০০টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হবে, তবে অতিবৃষ্টি ও পানির অপচয় রোধ করা না গেলে পানি সংকটের সমাধান মিলবে না।

আরও পড়ুন:
হাওরের জমিতে গ্যাস, বিনা চাপে নলকূপে পানি
লিচুর গায়ে তাপের ক্ষত
তীব্র তাপদাহে নওগাঁয় আমের ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা
তীব্র তাপদাহে ইউরোপ
নলকূপে পানি নেই, বরিশাল নগরীতে হাহাকার

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Tribute to memorial on 11th anniversary of Rana Plaza tragedy

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১তম বার্ষিকীতে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১তম বার্ষিকীতে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বুধবার সকাল থেকে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানানো শুরু হয়। ছবি: নিউজবাংলা
সমাবেশে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর পর এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে তা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান বক্তারা।

রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর পূর্তিতে বুধবার প্রাণ হারানো শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন হতাহত শ্রমিক, তাদের পরিবার, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও পুলিশ সদস্যরা।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঘটে যাওয়া ওই দুর্ঘটনায় পাঁচটি পোশাক কারখানার এক হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক প্রাণ হারান। পঙ্গুত্ব নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন দুই সহস্রাধিক শ্রমিক।

ট্র্যাজেডির বার্ষিকীতে আহত শ্রমিকদের পুনর্বাসন ও সুচিকিৎসা নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন শ্রমিক ও সংগঠনগুলোর সদস্যরা।

সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বুধবার সকাল থেকে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানানো শুরু হয়।

একে একে নিহত শ্রমিকের পরিবার, আহত শ্রমিক, পুলিশ ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের ফুলের শ্রদ্ধায় সিক্ত হয়ে ওঠে বেদি। ওই সময় নিহত শ্রমিকদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

পরে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি আদায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ, র‌্যালি ও মানববন্ধন করা হয়।

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারানো শ্রমিকদের অনেক স্বজন প্রিয়জনের কথা স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

সমাবেশে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর পর এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে তা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান বক্তারা।

একই সঙ্গে ভবনের মালিক সোহেল রানার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডেরও দাবি জানান তারা।

আরও পড়ুন:
সাভারে যুগান্তরের সাংবাদিকের ওপর রাসায়নিক নিক্ষেপ
সাভারে গোডাউন খুলতেই বিস্ফোরণ, দগ্ধ তিন
টেইলার্সে এসি বিস্ফোরণে আটজন আহত
ধামরাইয়ে বাইক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আরোহীর মৃত্যু
সাভার থেকে চুরি হওয়া শিশু নারায়ণগঞ্জে উদ্ধার

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Chittagong Coxs Bazar train stopped due to engine and coach derailment

ইঞ্জিন ও বগি লাইনচ্যুত, চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে ট্রেন বন্ধ

ইঞ্জিন ও বগি লাইনচ্যুত, চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে ট্রেন বন্ধ ফাইল ছবি
চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী ঈদ স্পেশাল ট্রেনটি ডুলাহাজারা স্টেশনে প্রবেশের সময় ইঞ্জিন ও দুইটি বগি লাইনচ্যুত হয়।

কক্সবাজারের চকরিয়ায় কক্সবাজারগামী একটি ট্রেনের ইঞ্জিন ও বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।

বুধবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ডুলাহাজারা স্টেশনে এ দুর্ঘটনার পর বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেল যোগাযোগ। খবর ইউএনবির

কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার গোলাম রব্বানী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী ঈদ স্পেশাল ট্রেনটি ডুলাহাজারা স্টেশনে প্রবেশের সময় ইঞ্জিন ও দুইটি বগি লাইনচ্যুত হয়।

এ ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি জানিয়ে গোলাম রব্বানী বলেন, উদ্ধার কার্যক্রম চলমান রয়েছে

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The victims live with the painful memories of Rana Plaza

রানা প্লাজার দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছেন ক্ষতিগ্রস্তরা

রানা প্লাজার দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছেন ক্ষতিগ্রস্তরা রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেক শ্রমিক এসেছেন সেদিনের সেই স্মৃতিকে মনে করে। ছবি: নিউজবাংলা
শ্রমিক ও তাদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর দাবি, ১১ বছর আগে সেদিন পরিকল্পিতভাবে শ্রমিকদের কারখানায় কাজ করতে বাধ্য করিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। ঘটনার এতদিন পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত হতাহতদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণে কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি মালিক কিংবা সরকারপক্ষ।

ঢাকার সাভারের রানা প্লাজা ধসের ভয়াবহ ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। ৯ তলা ভবনের পুরোটাই ধসে পড়ে আহত হয়েছেন অনেক শ্রমিক। পঙ্গুত্ব নিয়ে বছরের পর বছর ধরে মানবেতর দিনযাপন করছেন তাদের অনেকে।

শারীরিক যন্ত্রণায় অসুস্থ হয়ে ধুঁকে ধুঁকে মারা গেছেন কেউ কেউ। যারা বেঁচে আছেন এখনও তাদের তাড়া করে দুঃসহ সেদিনের স্মৃতি। পুনর্বাসন আর ক্ষতিপূরণের আশায় বুক বেঁধে আছেন রানা প্লাজার সেই ক্ষতিগ্রস্তরা।

শ্রমিক ও তাদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলোর দাবি, ১১ বছর আগে সেদিন পরিকল্পিতভাবে শ্রমিকদের কারখানায় কাজ করতে বাধ্য করিয়ে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। ঘটনার এতদিন পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত হতাহতদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণে কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি মালিক কিংবা সরকারপক্ষ।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঘটে যাওয়া ওই দুর্ঘটনার ৫টি পোশাক কারখানার ১ হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক মারা যান। আহত হয়ে পঙ্গুত্ব নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন প্রায় ২ সহস্রাধিক শ্রমিক।

কী ঘটেছিল সেদিন, সে কথা নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন আহত শ্রমিক শিলা বেগম। তিনি বলেন, ২৩ এপ্রিল সকালে কারখানায় আসার পর মালিকপক্ষ ছুটি দিয়ে দেয়। আবার পরদিন ২৪ এপ্রিল বিকেলে শিপমেন্ট আছে জানিয়ে কারখানায় বাধ্যতামূলক আসার কথা জানিয়ে মাইকিং করে। না আসলে ওভারটাইমের টাকা কেটে নেয়ার কথা বলে মালিকপক্ষ।

তিনি বলেন, ২৪ এপ্রিল সকালে কারখানায় সব শ্রমিক আসার পর সকাল পৌনে ৮টার দিকে বিদ্যুৎ চলে গেলে জেনারটের চালু করা হয়। এরপরই হঠাৎ বিকট শব্দে পুরো কারখানা ধুলোয় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায়। ওই সময় আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। যখন জ্ঞান ফেরে তখন আমি বিশাল আকৃতির বীমের নিচে আটকে পড়ে আছি।

শিলা বেগম বলেন, উদ্ধারকারীরা এরপর আমাকে বাঁচাতে পারলেও গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলি। অপারেশনের পর এত বছর ধরে নানা শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে কোন রকমে বেঁচে আছি। ওই সময় সরকার ও বিদেশি বায়ারদের সামান্য সহযোগিতা পেলেও তা চিকিৎসার পেছনেই শেষ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, সরকার কিংবা মালিকপক্ষ দীর্ঘ ১১ বছর হয়ে গেলেও আমাদের কোনো খোঁজ রাখেনি। এ রকমভাবে বেঁচে থাকার চাইতে সেদিন মরে গেলেও অনেক শান্তি পেতাম। অন্তত এত কষ্ট বয়ে বেড়াতে হতো না। অর্থাভাবে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরতে হতো না। আমরা দ্রুত আমাদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন চাই।

মনির হোসেন নামে ষষ্ঠ তলায় কাজ করা আরেক শ্রমিক বলেন, ঘটনার দিন আমিসহ আরও সাতজন ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকা পড়েছিলাম। পাশেই আরও দুই-তিনজন আটকে পড়ে বাঁচার আকুতি করছিল। সেই দৃশ্য আমি কোনদিনও ভুলতে পারব না। ওই ঘটনায় আমার কোমড়ের হাড় ভেঙ্গে যায়। শরীরের অনেক জায়গায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হই।

তিনি বলেb, রানা প্লাজা ভবন ধসের ১১ বছর পার হয়ে গেলেও আমি ক্ষতিপূরণ পাইনি। সাহায্য হিসেবে যে অর্থ পেয়েছিলাম তা চিকিৎসার পেছনেই খরচ হয়ে গেছে। শুধু ২৪ এপ্রিল আসলেই আমাদের খোঁজ করে সাংবাদিকরা। তা ছাড়া আর কেউ আমাদের খবরও নেয় না। আমরা দুঃসহ যন্ত্রণার জীবন নিয়ে বেঁচে থেকেও যেন মরে গেছি।

রানা প্লাজার দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছেন ক্ষতিগ্রস্তরা
সেদিনের সেই ভয়াবহ স্মৃতি স্মরণ করে দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখছেন শ্রমিকরা। ছবি: নিউজবাংলা

গুরুতর আহত ইয়ানুর আক্তার নামে এক শ্রমিক বলেন, আমার বয়স যখন ১৩ বছর তখন পরিবারের আর্থিক সংকটের কারণে বাধ্য হয়েই রানা প্লাজায় চাকরি নিয়েছিলাম। চতুর্থ তলার একটি কারখানায় হেলপার পদে কাজ করতাম। ছয় ভাই-বোন ও মা-বাবার মুখে হাসি ফোটাবো ভেবেছিলাম। কিন্তু সেদিনের ঘটনা আমার জীবন থেকে সব কেড়ে নিয়ে গেছে। ভবনের নিচে চাপা পড়ার কারণে আমার হাত ও পায়ে ছয়টি অপারেশন করতে হয়েছে। এরপর থেকে কাজ তো দূরের কথা স্বাভাবিক কাজও করতে পারি না। তারপরও পরিবারকে বাঁচাতে কাজ খুঁজে যাচ্ছি। যখন যা পাই তাই করি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার ১১ বছর পার হয়ে গেল এখনও আমাদের পুনর্বাসনে কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। প্রতিবছর এই দিনে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে আসি আমাদের দুঃখের কথাগুলো জানানোর জন্য। কিন্তু মিডিয়ায় সেগুলো প্রচার হলেও তা কেউ শোনে না বলে আমার মনে হয় না। আমাদের চোখের পানির মূল্য যেন কারও কাছে নেই। অভিশপ্ত এই জীবন নিয়ে বাঁচা আর সম্ভব হচ্ছে না। একে তো শারীরিক যন্ত্রণা। তার উপর মাঝে মধ্যেই সেই ভয়ানক স্মৃতি মনে হলে ঘুমের মধ্যে আঁতকে উঠি।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের আইন বিষয়ক সম্পাদক খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, বাংলাদেশে এই যে, এত বড় ঘটনা ঘটল। বিশ্বের মধ্যে এত বড় ট্র্যাজেডি। এই ঘটনায় আইন অনুযায়ী গার্মেন্টস মালিকরা দায়ী থাকে। কিন্তু আমরা দেখছি যে, গার্মেন্টস মালিকরা দায়ী থাকলেও তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে এবং তাদের ব্যাপারে কোনো আওয়াজ নেই। তাদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থাও নেই।

তিনি বলেন, শুধু ভবন মালিক রানা শাস্তি পাচ্ছে, রানা জেলে আছে। কিন্তু যারা যারা গার্মেন্টসের মালিক তারা সবাই বাইরে। তারা হয়তো তাদের ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করছে। অথচ ওই কারখানাতে ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করত। তারা হয়ত বড় ব্যবসা করছে। মালিকরা ব্যবসা করছে। শুধু এটাতে ভিকটিম হয়েছে যারা শ্রমিক তারা। চিকিৎসা, বিচারের ও পুনর্বাসনের দাবিতে তারা মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, ১১ বছরেও এর কোনো প্রতিকার হয়নি। উপরন্তু অনেক ঘটনা আছে, মামলা আছে সেসব মামলায় কিন্তু দ্রুত শাস্তি হয়, বিচার হয়। বিশেষ ট্রাইব্যুনাল করা হয়। কিন্তু এই রানা প্লাজার এত বড় ঘটনার পরেও আমরা দেখছি, বিচার কার্যক্রম শেষ হয়নি এবং এটার জন্য দায়ী ব্যক্তিরা শাস্তি পায়নি। আদৌ হবে কি না তার নিশ্চয়তা নেই।

গার্মেন্টস খাতে এর প্রভাব পড়েছে কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এটা গার্মেন্টস সেক্টরে প্রভাব পড়বে অবশ্যই। গার্মেন্টসের মালিকরা চাচ্ছে যে, গার্মেন্টসে যদি কাজ করতে এসে কোনো শ্রমিক মারা যায় তাহলে এর জন্য তার কোনো শাস্তি হবে না। বিচারের আওতায় আনা হবে না। এর আগেও তাজরিনসহ বিভিন্ন গার্মেন্টসে দুর্ঘটনা ঘটেছে। মানে মানুষের যে বিচার পাওয়ার যে অধিকার সেই জায়গাটা কিন্ত হারিয়েছে। শ্রমিকরা কর্মস্থলে নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারছে না।

খাইরুল মামুন মিন্টু বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যারা যারা আমাদের প্রডাক্টটা ব্যবহার করে তারাও কিন্তু আওয়াজ তুলছে। এখনও চলছে যাতে কর্মপরিবেশ নিশ্চিত হয়। কিন্তু আওয়াজ ওঠার পরও আমরা দেখছি যে যথাযথ ব্যবস্থা কিন্তু নেয়া হচ্ছে না। যার কারণে এই ধরনের পরিস্থিতি হলে আমাদের দেশের গার্মেন্টসের এক্সপোর্টে কিন্তু এই প্রভাবটা পড়বে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Istiska prayer in Pabna for rain

বৃষ্টির জন্য পাবনায় ইসতিসকার নামাজ

বৃষ্টির জন্য পাবনায় ইসতিসকার নামাজ তীব্র গরম থেকে পরিত্রাণের জন্য বুধবার সকালে খোলা আকাশের নিচে ইসতিসকার নামাজ আদায় করেন পাবনাবাসী। ছবি: নিউজবাংলা
নামাজের পূর্বে সংক্ষিপ্ত বয়ানে মাওলানা আবদুস শাকুর বলেন, ‘পৃথিবীর মাটি যখন শুকিয়ে যায় বা অনাবৃষ্টি ও খরা দেখা দেয় এবং কূপ ও ঝরনা পানি কমে যায় অথবা নদী শুকিয়ে যায় তখন ইসতিসকার নামাজ আদায় করা হয়। খোলা মাঠে জামায়াতের সঙ্গে আদায় করতে হয়। এই নামাজে কোনো আজান বা ইকামত নেই।’

অতি তীব্র দাবদাহ, সঙ্গে কড়া রোদ আর অসহ্য গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পাবনাসহ এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষের জীবন। অনাবৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে আম, লিচু ও ফসল।

তীব্র এ গরম থেকে পরিত্রাণের জন্য আল্লাহর কাছে পানাহ চেয়ে পাবনা জেলা শহরের টার্মিনাল এলাকার দারুল আমান ট্রাস্টের ক্যাম্পাসে খোলা আকাশের নিচে বুধবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে ইসতিসকার নামাজ ও দোয়া করেছেন পাবনাবাসী।

নামাজ শেষে অনাবৃষ্টি ও প্রচণ্ড খরা থেকে রেহাই পেতে মহান আল্লাহর কাছে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। নামাজ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন পাবনা ইসলামীয়া ফাজিল মাদরাসার সহকারী অধ্যাপক ও মসজিদে আত তাকওয়ার পেশ ইমাম মাওলানা আবদুস শাকুর।

তাওবাতুন নাসুহা বা একনিষ্ঠ তাওবার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে রহমতের বৃষ্টি কামনা করে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করা হয়। এ সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মুক্তিসহ দেশ ও জাতির কল্যাণ প্রার্থনাও করা হয়।

নামাজের পূর্বে সংক্ষিপ্ত বয়ানে আবদুস শাকুর বলেন, ‘পৃথিবীর মাটি যখন শুকিয়ে যায় বা অনাবৃষ্টি ও খরা দেখা দেয় এবং কূপ ও ঝরনা পানি কমে যায় অথবা নদী শুকিয়ে যায় তখন ইসতিসকার নামাজ আদায় করা হয়। খোলা মাঠে জামায়াতের সঙ্গে আদায় করতে হয়। এই নামাজে কোনো আজান বা ইকামত নেই।’

এদিকে তীব্র গরমের মধ্যে ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার পাবনায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস বলছে এ তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে।

আরও পড়ুন:
দাবদাহে পুড়ছে জীবন, পুড়বে আরও
এবার ভারি বর্ষণের কবলে সৌদি আরব, তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট
বৃষ্টি হয়তো হবে, তবে গরম কমবে না
আমিরাতে ৭৫ বছরে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত, নিহত অন্তত ১
তীব্র গরমের পর স্বস্তির বৃষ্টি

মন্তব্য

বাংলাদেশ
21 children who lost their parents in the Rana Plaza collapse are growing up in Orca Homes

রানা প্লাজা ধসে বাবা-মা হারানো ২১ শিশু বেড়ে উঠছে ‘অরকা হোমসে’

রানা প্লাজা ধসে বাবা-মা হারানো ২১ শিশু বেড়ে উঠছে ‘অরকা হোমসে’ গাইবান্ধার ‘অরকা হোমস’-এ বেড়ে উঠছে শিশুরা। ছবি: নিউজবাংলা
দুর্ভাগা ২১ শিশু, কিশোর-কিশোরী মমতার আশ্রয়ে বেড়ে উঠছে গাইবান্ধার ‘অরকা হোমস’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে। কেউ হারিয়েছে বাবাকে, কেউ বা মাকে। কেউ কেউ আবার বাবা-মা উভয়কে হারিয়ে একেবারেই হয়েছে নিঃস্ব। কারও কারও বাবা-মা আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেছেন আজীবনের জন্যও।

ঢাকার সাভারের রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর পূর্ণ হলো। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঘটেছিল বাংলাদেশ তথা এশিয়ার অন্যতম বড় এই শিল্প দুর্ঘটনা।

সেদিন অত্যন্ত ব্যস্ততম সময় সকাল পৌনে ৯টার দিকে সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে রানা প্লাজা নামে একটি ৯ তলা ভবন ধসে মারা যান ১ হাজার ১৭৫ জন শ্রমিক, আহত হন দুই হাজারেরও বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে অনেকেই আজীবন পঙ্গুত্ববরণ করে বেঁচেও যেন মরে গেছেন।

লোমহর্ষক এই ট্রাজেডির সাথে সাথে আল আমিন মিয়া, জিয়াদ হোসেন, তাহমিনা আক্তার ও বীথিসহ অনেক শিশু, কিশোরের জীবনেও নেমে আসে ট্রাজেডি। সেদিনের হতাহতের অনেকের সন্তানই এখন নিঃসঙ্গতা আর অর্থাভাবে ভিন্ন ভিন্ন পথে।

এমন দুর্ভাগা ২১ শিশু, কিশোর-কিশোরী মমতার আশ্রয়ে বেড়ে উঠছে গাইবান্ধার ‘অরকা হোমস’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে। কেউ হারিয়েছে বাবাকে, কেউ বা মাকে। কেউ কেউ আবার বাবা-মা উভয়কে হারিয়ে একেবারেই হয়েছে নিঃস্ব। কারও কারও বাবা-মা আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেছেন আজীবনের জন্যও। এ ছাড়াও আরও ৩১ জন এতিম-অসহায় শিশু-কিশোর-কিশোরীর ঠিকানা হয়েছে অরকা হোমসে।

বাবা-মা হারানো দেশের বিভিন্ন জেলার এসব শিশুর লেখাপড়া, খেলাধুলা ও বিনোদনসহ পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন ওল্ড রাজশাহী ক্যাডেট অ্যাসোসিয়েশন (অরকা)।

২০১৪ সালে অরকা হোমসের প্রথম কার্যক্রম শুরু হয় চট্টগ্রামের উত্তর পতেঙ্গায়। রানা প্লাজা ধ্বসের ঘটনাকে কেন্দ্র করেই একই বছরের ২২ ডিসেম্বর গাইবান্ধা শহর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দুরে ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে অরকা-হোমস প্রতিষ্ঠিত হয়।

প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিন তলাবিশিষ্ট দুটি এবং পরবর্তীতে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে চার তলাবিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। যেখানে ৫২ জন এতিম অসহায় শিশু, কিশোর-কিশোরী বসবাস করছে।

এর মধ্যে ২১ জন মেয়ে ও ৩১ জন ছেলে রয়েছে। তাদের মধ্যে বর্তমানে ২১ জন রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির শিশু-কিশোর-কিশোরী রয়েছে। সেখানে তারা থেকে-খেয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে ৯ জন মেয়ে, ১২ জন ছেলে। এই ২১ জন ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে এখানকার ৩১ জন শিশু-কিশোরের কেউ মাধ্যমিক পেরিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়তে, কেউ কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষিত হতে আবার কারও কর্ম-সংস্থান হওয়ায় অরকা হোমস ছেড়ে চলেও গেছেন।

কেবল মা হারাদের মধ্যে ওই সময়ে (২০১৪) আসা সব থেকে কম বয়সী শিশু ছিল সৌরভ। সৌরভের বাড়ি জামালপুর জেলার সদর উপজেলার বলমুই পাড়া গ্রামে। সৌরভ যখন অরকা হোমসে তখন বয়স মাত্র ছয় বছর। সৌরভের বয়স এখন ১৭। সে নবম শ্রেণিতে পড়ে। ছয় বছর বয়সে আসা শিশু সৌরভের তখনকার কোনো কিছুই মনে পড়ে না। তবে, বড় হওয়ার সাথে সাথে সবই জেনে গেছে সৌরভ। প্রতিবছরই পড়ে পত্রিকার পাতায়, দেখে টেলিভিশনে। হতে হয় সাংবাদিকদের মুখোমুখি। মনে না থাকলেও যেন আজকের এই দিনে সৌরভকে তার মায়ের কথা মনে করিয়ে দেন গণমাধ্যমকর্মীরাই।

একান্ত সাক্ষাৎকারে নিউজবাংলার গাইবান্ধার এই প্রতিবেদককে সৌরভ জানায়, তারা বাবা বাদশা মিয়া কাজ করতে অক্ষম হওয়ায় তার মা কল্পনা বেগম সাভাবের একটি পোশাক শ্রমিকের কাজ নেয়। তার মা ওই ভবনের তিন তলায় পোশাক কারখানার অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারান তিনি। এরপর এতিম সৌরভের জায়গা হয় গাইবান্ধার অরকা হোমসে।

রানা প্লাজা ধসে বাবা-মা হারানো ২১ শিশু বেড়ে উঠছে ‘অরকা হোমসে’
জীবনের গল্প শোনাচ্ছে শিশু সৌরভ। ছবি: নিউজবাংলা

সৌরভ বলে, ‘শুনেছি আমার যখন ছয় বছর; তখন মা রানা প্লাজায় মারা যায়। ধ্বংসযজ্ঞের ১৬ দিন পর মাকে খুঁজে পায় বাবা-ভাই ও আমার স্বজনরা। তখন নাকি মায়ের দেহ গলে পঁচে গেছিলো, কিন্তু তার গলায় থাকা পোশাক কারখানার আইডি কার্ড দেখে বাবা-মাকে চিনে নেয়।’

সৌরভ বলে, ‘মায়ের আয় করা টাকায় আমাদের পরিবার চলত। মা চলে যাওয়ার পর আমাদের ভালো চলছিল না। পরে এখানে রেখে যায় বাবা। একমাত্র বড় ভাই বিয়ে করে সংসার করছে। বাবাও দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। এখন খোঁজ-খবর রাখছে বয়স্ক (বৃদ্ধ) দাদা। এখানে আমি ভাল আছি।’

মাকে মনে পড়ে কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে সৌরভ বলে, ‘সব সয়ে গেছে। ছয় বছরের শিশু থাকতেই আমি মাকে হারিয়েছি তো, এখন খুব একটা কষ্ট হয় না! তবে, প্রতিবছর এই দিনটি আসলে সাংবাদিক এবং বিভিন্নভাবে মায়ের কথা মনে পড়ে।’

কোনো স্বপ্ন আছে- এমন প্রশ্নে সৌরভ বলে, বড় হয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই। আর শ্রমিকের কাজ করতে গিয়ে আমার মা জীবন দিয়েছেন। একটা মা হারা শিশুর আশ্রয় হয়েছে অরকা হোমসে। আমিও এরকম একটি প্রতিষ্ঠান গড়ার স্বপ্ন দেখি। যেখানে অসহায়-এতিম ছেলে-মেয়েরা ছাড়াও আমাদের মতো গরীব ঘরের সন্তানেরা বিনা টাকায় খেয়ে- থেকে পড়া লেখা করতে পারেব। তারাও প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেশের অসহায়দের পাশে দাঁড়াবে। এভাবেই দেশটি একদিন সহযোগিতার হাতেই পূর্ণ হবে। হয়তো তখন কেনো মাকে শ্রমিকের কাজে গিয়ে জীবন দিতে হবে না।

প্রতিষ্ঠানটির সহকারি ম্যানেজার মিল্লাত মন্ডল। তিনি প্রতিষ্ঠাকালীন সময় (২০১৪) থেকেই অরকা হোমসে আছেন। পরে সৌরভকে নিয়ে কথা হয় তার সাথে।

সৌরভের সম্পর্কে জানতে চাইলে স্মৃতিচারণ করে তিনি এই প্রতিবেদকের কাছে বলেন, ২০১৪ সালে সৌরভ যখন এখানে আসে তখন ওর বয়স ছয় বছর। তখন এটি এতো প্রসারিত ছিল না, ছিল না জনবলও। ও এখন অনেক বড় হয়েছে। এখানে আসার পর টানা এক মাসেরর বেশি সময় ধরে সৌরভ প্রায় সার্বক্ষণিক মায়ের জন্য, বাড়ির জন্য কেঁদেছে। ওকে আমরা সবাই অনেক স্নেহে মানুষ করেছি। কারণ, সব থেকে ছোট এবং কম বয়সের ছিল সেদিনের মা হারা শিশু এই সৌরভ।

তিনি আরও বলেন, মা হারা সৌরভ অনেক ভদ্র এবং নম্র। সৌরভ প্রচণ্ড মেধাবী। এখানে আসার পর পড়া-লেখা শুরু হয় সৌরভের। সৌরভ দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রত্যেক ক্লাসেই প্রথম (এক রোল)। আর এবার নবম শ্রেণিতে উঠেছে সৌরভ। সৌরভ জীবনে অনেক বড় হোক।

শুধু সৌরভই নয়, আল আমিন মিয়া, জিয়াদ হোসেন, তাহমিনা আক্তার, বীথিসহ হোমসে আশ্রয় হওয়া সবারই আছে প্রায় একই রকম শোকগাথা ইতিহাস। তবে, এতিম-অসহায় এই শিশুদের স্বপ্ন পূরণে কাজ করেই চলেছেন অরকা হোমস।

ক্যাম্পাসটি ঘুরে দেখা যায়, প্রকৃতির ছাঁয়াঘেরা অরকা হোমসের পুরো ক্যাম্পাস। এক ক্যাম্পাসের ভেতরেই সকল ভবন। চারতলা ভবনটিতে থাকে ছেলেরা। আর মেয়েরা থাকে তিন তলার দুটি ভবনের একটিতে। এখানে থাকা শিশু-কিশোরের সবাই পড়াশোনা করছে পাশের মুসলিম একাডেমিতে।

এখানে আছে খেলার মাঠ, লাইব্রেরি ও বিনোদনের ব্যবস্থা। এছাড়া তাদের দেখভালের জন্য রয়েছেন একজন তত্ত্বাবধায়ক, একজন ম্যানেজার, সহকারী ম্যানেজার, নারী কেয়ারটেকারসহ আটজন। তাদের জন্য রয়েছে বেশ কয়েকজন গৃহশিক্ষকও। রয়েছেন শরীরচর্চার শিক্ষক। ধর্ম শিক্ষার ব্যবস্থাও রয়েছে সেখানে। নামাজের জন্য ক্যাম্পাসের ভিতরের রয়েছে সুন্দর পাকা মসজিদ।

গাইবান্ধা অরকা হোমসের তত্বাবধায়ক মো. জাহিদুল হক নিউজবাংলকে বলেন, ‘রানা প্লাজা ধ্বসের পর ২০১৪ সালে মাত্র ৮টি বাচ্চা নিয়ে গাইবান্ধায় অরকা হোমসের যাত্রা শুরু হয়। এখন এখানে বাচ্চা রয়েছে ৫২টি। তার মধ্যে ২১ টি বাচ্চা রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির বাবা-মা হারানো; বাকিরা এতিম অসহায়। তাদের পড়াশোনা থেকে সবকিছুই আমরা দিচ্ছি। এছাড়া তাদের কর্মসংস্থান এবং মেয়েদের বিয়ের ব্যবস্থাও আমাদেরি দায়িত্ব।’

তিনি বলেন, ‘রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন অরকার দেশ-বিদেশে থাকা সদস্যদের আর্থিক সহায়তায়ই মূলত হোমসের ব্যয় মেটানো হয়। এছাড়া বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন বিজিএমইএ প্রতিমাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ আর্থিক অনুদান দিয়ে আসছে।’

তবে, সম্প্রতি তারা (বিজিএমইএ) সেই সহযোগিতা করতে গরিমসি করছেন বলে অভিযোগ ছিল তত্ত্বাবধায়কের।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
1 dead 10 injured after bus overturns on expressway in Madaripur

মাদারীপুরে এক্সপ্রেসওয়েতে বাস উল্টে একজন নিহত, আহত ১০

মাদারীপুরে এক্সপ্রেসওয়েতে বাস উল্টে একজন নিহত, আহত ১০ প্রতীকী ছবি
শিবচর হাইও‌য়ে থানার এসআই তমাল সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ভোর রাতে প‌রিবহন‌টি কুয়াকাটার দিকে যা‌চ্ছি‌ল। এ সময় নিয়ন্ত্রণ হা‌রিয়ে বাসটি উল্টে যায়। ফলে ঘটনাস্থলেই একজন মারা যান।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কের মাদারীপুরের শিবচরে একটি যাত্রীবাহী বাস উল্টে এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন।

এক্সপ্রেসওয়ের বন্দরখোলা নামক স্থানে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৪টার দিকে কুয়াকাটাগামী ইউনিক পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। বাসটি চট্টগ্রাম থেকে কুয়াকাটা যাচ্ছিল।

প্রাণ হারানো গোলাম রহমান (৫৫) র‌বিশালের বাখেরগ‌ঞ্জ উপজেলার কোলোসকা‌ঠি গ্রামের বাসিন্দা।

শিবচর হাইও‌য়ে থানার এসআই তমাল সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ভোর রাতে প‌রিবহন‌টি কুয়াকাটার দিকে যা‌চ্ছি‌ল। এ সময় নিয়ন্ত্রণ হা‌রিয়ে বাসটি উল্টে যায়। ফলে ঘটনাস্থলেই একজন মারা যান। এ সময় আরও ১০ জন আহত হন। তাদের শিবচর উপজেলা স্বাস্থ‌্য কমপ্লেক্সে ভ‌র্তি করা হয়।

এসআই তমাল বলেন, ‘ঘটনার পরে ভেঙে যাওয়া বাস‌টি উদ্ধার করা হয়েছে। আহতদের চি‌কিৎসা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

আরও পড়ুন:
নাটোরে ট্রাকচাপায় ছাত্রদল নেতা নিহত
কুমিল্লায় বাসচাপায় দুই নারী ও শিশু নিহত, আহত আরেক শিশু
ছাত্রলীগ নেতা রকি হত্যা মামলার আসামি বাসচাপায় নিহত
বাসের ধাক্কায় দুই চুয়েট শিক্ষার্থী নিহত, আহত ১
কক্সবাজারে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা

মন্তব্য

p
উপরে