প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিনে তার জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন হয়েছে। আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির এ কর্মসূচির আওতায় দেশব্যাপী ৭৬ হাজার গাছের চারা রোপণ করা হবে।
টুঙ্গিপাড়ার মেয়র ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের উপস্থিতিতে বুধবার এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে এ কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর টুঙ্গিপাড়া পৌরসভা প্রাঙ্গণ, টুঙ্গিপাড়া আওয়ামী লীগ কার্যালয় ও পৌর পুকুর এলাকায় বৃক্ষরোপণ করা হয়।
বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চলাকালেই টুঙ্গিপাড়া আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনের আলোচনা সভা এবং দোয়া মাহফিলে অংশ নেন দেলোয়ার হোসেন। সেখানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধনের জন্য টুঙ্গিপাড়াকে বেছে নেয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘এই মাটিতেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্য এই টুঙ্গিপাড়াতেই আওয়ামী লীগের আদর্শের বীজ রোপিত রয়েছে। এখান থেকে সারাদেশে ছড়িয়ে যাবে এই কর্মসূচি।’
এসব কর্মসূচিতে তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আবুল বাশার খায়ের, সাধারণ সম্পাদক বাবুল শেখ, টুঙ্গিপাড়া পৌর মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল, আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপ-কমিটির সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ডক্টর সিদ্ধার্থ দে, বন ও পরিবেশ উপ-কমিটির সদস্য এনামূল হক কালু, মুনীর হোসেন, তৌহিদুর রহমান কাজল, আশরাফুল আলম কিশোর, রেজাউল ইসলাম, আবু হানিফ, মিজানুর রহমান রুবেল প্রমুখ।
অভিনেত্রী ও নির্মাতা মেহের আফরোজ শাওনকে হেফাজতে নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
রাজধানীর ধানমন্ডির বাসা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়।
রাত সাড়ে ৮টার দিকে ডিএমপি ডিবির যুগ্ম কমিশনার তালেবুর রহমান ইউএনবিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, মেহের আফরোজ শাওনকে তার নিজ বাসা থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়েছে। রাষ্ট্রবিরোধী মন্তব্য করার কারণে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
সম্প্রতি শাওনের রাজনৈতিক অবস্থান ও কিছু মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা হয়। এরই মধ্যে আজ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিল ডিবি।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির মঙ্গলবার এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদলের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘শেখ হাসিনার শাসনামলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ কর্তৃক সংঘটিত সকল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের যথাযথ বিচার ও সন্ত্রাসীদের সাজা নিশ্চিত করার দাবিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।’
এতে বলা হয়, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে ভূমিকা পালনকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ এবং প্রতিষ্ঠানের প্রধান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করা হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ফেনীর যুবদল নেতা শহিদ মোহাম্মদ মাসুদের পরিবারকে একটি নতুন বাড়ি উপহার দিচ্ছেন।
মাসুদ বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন।
সোনাগাজী উপজেলার চর-চান্দিয়া গ্রামে মঙ্গলবার নবনির্মিত বাড়ির চাবি মাসুদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর একটি প্রতিনিধি দল এ হস্তান্তর কার্যক্রম সম্পন্ন করবে।
এ উপলক্ষে চর-চান্দিয়ায় একটি অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
এ ছাড়াও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ও আবদুল আউয়াল মিন্টু, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা, সদস্য সচিব ও অন্যান্য সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন। এতে ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে শহিদ পরিবারের মধ্যে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হবে।
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার যুবদল নেতা মাসুদকে ২০১৬ সালে পুলিশ মিথ্যা মামলায় ধরে নিয়ে যায়। পুলিশের অত্যাচার-নির্যাতনের কারণে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তিনি বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।
মাসুদের স্ত্রী ও নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে বর্তমানে অসহায় অবস্থায় জীবনযাপন করছেন।
আরও পড়ুন:ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির শুক্রবার গভীর রাতের চিঠির মাধ্যমে স্থগিত করা হয়েছে বালিয়াডাঙ্গীর দুওসুও ইউনিয়নের সম্মেলন।
এতে ক্ষুব্ধ বিএনপির নেতা-কর্মীদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের হরতাল শনিবার বেলা সোয়া ১১টার পর প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এর আগে সকালে হরতালের বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ড. টি এম মাহবুবুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী শনিবার সকাল থেকে ইউনিয়ন সম্মেলনের ভোট গ্রহণের কথা থাকলেও জেলা বিএনপির নেতারা আকস্মিকভাবে শুক্রবার মধ্যরাতে চিঠি দিয়ে সম্মেলন স্থগিতের নির্দেশ দেন। জেলা বিএনপির এমন হঠকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হন তৃণমূল বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তারা হরতালের ডাক দেন।
‘তবে জেলা বিএনপির এমন সিদ্ধান্তে আমিও খুশি না। কারণ এমন সিদ্ধান্তে তৃণমূল বিএনপির নেতাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।’
দুওসুও ইউনিয়ন বিএনপি সূত্রে জানা যায়, শনিবার জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও ইউনিয়ন বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। সম্মেলনকে ঘিরে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ইউনিয়ন বিএনপি। কিন্তু সম্মেলন শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে হঠাৎ জেলা বিএনপি সম্মেলনটি স্থগিতের ঘোষণা দেয়।
জেলা বিএনপির এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বালিয়াডাঙ্গী চৌরাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেন প্রার্থী ও ভোটাররা এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য হরতালের ডাক দেন। পরে তারা হরতাল প্রত্যাহার করেন।
এর আগে শুক্রবার মধ্যরাতে চিঠি পাওয়ার পর বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা রাস্তায় নেমে আসেন। তারা বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে সড়ক অবরোধ করেন এবং মিছিল বের করেন।
হরতালের সমর্থনে স্লোগান দিতে দিতে তারা বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা সদরের বিভিন্ন সড়কে মিছিল করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যার ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থান নেয়।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য ভোটের মাধ্যমে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষার পর শনিবার সেই ভোট হওয়ার কথা ছিল। তবে জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতারা হঠাৎ করেই ভোট স্থগিতের ঘোষণা দেন, যা নেতা-কর্মীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ তৈরি করে।
স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মেনে ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হওয়ার কথা থাকলেও জেলা কমিটির একতরফা সিদ্ধান্তে ভোট স্থগিত করা হয়েছে। এতে করে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মতামতকে উপেক্ষা করা হয়েছে বলে তারা মনে করছেন।
স্থানীয় বিএনপি নেতা জুলফিকার আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এভাবে ভোট বাতিল করা মানে আমাদের মতামতকে দমন করা। আমরা চাই গণতান্ত্রিকভাবে নেতা নির্বাচন হোক।’
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জাফরুল্লাহ্ বলেন, ‘বর্তমান কিছু পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং দলের মধ্যে যেন অভ্যন্তরীণ কোন্দল সৃষ্টি না হয়, বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না হয়, এ জন্য সম্মেলনটি স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সম্মেলনটি হবে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হবে।
‘এর জন্য নেতা-কর্মীদের জেলা বিএনপি থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ধৈর্য ধরার আহ্বান জানাচ্ছি। জেলার নেতারা এ বিষয়ে একটি সমাধানে দ্রুত আসবেন।’
বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৌকত আলী সরকার বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আমরা কাজ করছি।’
আরও পড়ুন:ওমরাহ পালনে সৌদি আরবে যাওয়ার পথে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর।
বাবরের ব্যক্তিগত সহকারী মির্জা হায়দার আলী শুক্রবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় ওমরাহ পালনের জন্য ঢাকা থেকে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ছেলে লাবিব ইবনে জামানকে নিয়ে দুবাই হয়ে সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা হন বাবর।
‘ফ্লাইটে থাকাকালীন ঢাকা থেকে মদিনার দিকে যাওয়ার পথে শ্বাসকষ্টজনিত কারণে বাবর গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিমানটি দুবাইতে অবতরণের পর তাকে দ্রুত বিমানবন্দরের কাছের একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। ডাক্তারদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়।’
হায়দার জানান, বর্তমানে দুবাইয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন বাবর। তিনি চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তার বড় ছেলে লাবিব ইবনে জামান তার সঙ্গে আছেন।
তিনি আরও জানান, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর বাবর ওমরাহ পালনের জন্য দুবাই থেকে সৌদি আরবে যাবেন। বাবরের স্ত্রী ও পরিবারের অন্য সদস্যরা আলাদা একটি ফ্লাইটে মদিনার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন।
মদিনায় পৌঁছানোর পর তাদের জানানো হয়, বাবর দুবাইতে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি বুকে ব্যথা নিয়ে বাবর রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন। তাকে অ্যাডভান্সড করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল।
১৭ বছর কারাভোগের পর বাবর গত ১৬ জানুয়ারি মুক্তি পান।
আরও পড়ুন:যতক্ষণ আওয়ামী লীগ জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও তাদের সব কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা না চায়, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে বুধবার এক পোস্টে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আগস্টে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকার কোনো ন্যায্য বিক্ষোভ বন্ধ বা নিষিদ্ধ করেনি। আমরা সমাবেশ করার স্বাধীনতা এবং সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি।
‘আজ সকালে গণমাধ্যমের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সাড়ে পাঁচ মাসে কেবল ঢাকায় কমপক্ষে ১৩৬টি বিক্ষোভ হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি বিক্ষোভের ফলে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়েছে। তবুও সরকার কখনও বিক্ষোভ-সমাবেশের ওপর কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করেননি।’
শফিকুল আলম লিখেন, ‘আমাদের কি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে বিক্ষোভ করার সুযোগ দেওয়া উচিত? জুলাই-আগস্টের ভিডিও ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যায়, আওয়ামী লীগের কর্মীরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের হত্যায় অংশ নিয়েছিল। তাদের পরিচালিত হত্যাকাণ্ডে শহীদ হয়েছেন কয়েক শ তরুণ শিক্ষার্থী, এমনকি নাবালক শিশুরাও।
‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় গণহত্যা, খুন ও তাণ্ডবের জন্য দায়ী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের দলীয় সরকার।’
তিনি আরও লিখেন, ‘গতকাল কয়েকজন বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মীর সাক্ষাৎকারের বরাতে নিউ ইয়র্কভিত্তিক হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়, শেখ হাসিনা তার ১৬ বছরের একনায়কত্বের শাসনামলে সরাসরি হত্যা এবং জোরপূর্বক গুমের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি একটি চোরতন্ত্র (ক্লেপ্টোক্রেসি) এবং খুনি শাসনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। নিরপেক্ষ ও স্বাধীন একটি প্যানেল বলছে, শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে তার ঘনিষ্ঠরা ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। দুর্নীতিগ্রস্ত চুক্তি থেকে কোটি কোটি ডলার চুরির দায়ে হাসিনার পরিবারের বিরুদ্ধে এখন তদন্ত চলছে।
‘এ ছাড়াও প্রায় সাড়ে তিন হাজার ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন। প্রায় তিন হাজার মানুষকে বিচার-বহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে। শাপলা চত্বরের সমাবেশ এবং মাওলানা সাঈদীর বিচারিক রায়ের পর বিক্ষোভকারীদের ওপর গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। পুলিশ বাহিনী হাসিনার শাসনামলে পুলিশ লীগে পরিণত হয়েছিল। হাসিনার একনায়কতন্ত্রে প্রায় ষাট লাখ বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ভুয়া ও গায়েবি মামলা দেওয়া হয়। এমনকি দেশের প্রথম হিন্দু প্রধান বিচারপতিকেও নির্মমভাবে মারধর করা হয়, পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয় এবং নির্বাসনে পাঠানো হয়।’
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব লিখেন, ‘যতক্ষণ না আওয়ামী লীগ এই গণহত্যা, হত্যাকাণ্ড এবং প্রকাশ্য দুর্নীতির জন্য ক্ষমা না চাইবে এবং যতক্ষণ না তাদের অন্যায়কারী নেতা-কর্মীরা বিচার ব্যবস্থার কাছে আত্মসমর্পণ করবে, তাদের অপরাধের জন্য বিচারকার্যের প্রক্রিয়া শুরু করে পাপমোচন করতে উদ্যোগ না নেবে এবং যতক্ষণ না আওয়ামী লীগ তাদের বর্তমান নেতৃত্ব ও ফ্যাসিবাদী আদর্শ থেকে নিজেকে আলাদা না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ করার অনুমতি দেওয়া হবে না। মিত্রবাহিনী কি নাৎসিদের বিক্ষোভ করার অনুমতি দিয়েছিল?’
পোস্টের শেষে তিনি লিখেন, ‘পৃথিবীর কোনো দেশ কি একদল খুনি এবং দুর্নীতিবাজ চক্রকে আবার ক্ষমতায় আসতে দেবে? কোনো দেশই জবাবদিহিতা ছাড়া স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফেরার অনুমতি দেয় না। বাংলাদেশের জনগণ এ খুনিরা কোনো প্রতিবাদ-সমাবেশ করলে তার বিরুদ্ধে কঠিন জবাব দেবে।
‘অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে। আমরা দেশকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়ার কোনো ধরনের প্রচেষ্টাকে সুযোগ দেব না। আওয়ামী লীগের পতাকাতলে কেউ যদি অবৈধ বিক্ষোভ করার সাহস করে, তবে তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে।’
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ আমলে দলের অনেক নেতা-কর্মীর নির্যাতনের কথা তুলে ধরে এর পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে পুলিশকে ঢেলে সাজানোর দাবি জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মানিকগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে রবিবার সন্ধ্যায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী ও জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের এক যুগ পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দািব জানান।
রিজভী বলেন, ‘যে যন্ত্রপাতি দিয়ে শেখ হাসিনা ফ্যাসিবাদ তৈরি করেছে, সেই যন্ত্রপাতি, অর্থাৎ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সংস্কার করতে হবে। নানা কারণে মানুষের মিছিল, জনতার মিছিল হতেই পারে। সেখানে টিয়ার গ্যাস মারতে পারেন, লাঠিচার্জ করতে পারেন। কিন্তু মিঠিলের আওয়াজ শোনামাত্রই শর্টগান দিয়ে পাখির মতো গুলি করবেন?
‘গত ১৭ বছরে বিএনপির কত মানুষ অন্ধ হয়েছে, কত মানুষের পা চলে গেছে, কত মানুষের হাত চলে গেছে, কত মানুষ খোঁড়া হয়েছে। এগুলো নিষিদ্ধ করতে হবে। নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে পুলিশকে। তাহলেই হবে সবচাইতে বড় সংস্কার।’
তিনি বলেন, ‘মানুষের আহারের নিশ্চয়তা দিতে হবে এবং বিচার বিভাগের সত্যিকারের স্বাধীনতা দিতে হবে। এর চাইতে বড় আর সংস্কার আর হতে পারে না। আর এগুলো সংস্কারের জন্য বেশি সময়ের প্রয়োজন হয় না।
‘তা ছাড়া সংস্কার তো একটা ধারাবাহিকতা চলমান প্রক্রিয়া। একটা বন্ধ রাখবেন আর একটা করবেন, এভাবে হয় না।’
ফ্যাসিবাদের উত্থান ঠেকানোর আহ্বান জানিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ এ নেতা বলেন, ‘আপনারা সংস্কার করবেন, করুন। আপনারা এমন সংস্কার করুন যাতে আর কোনো দিন ফ্যাসিবাদের উত্থান না হয়। সেই ধরনের একটা দৃষ্টান্ত আপনারা স্থাপন করুন।
‘তা নাহলে তো তারা নানাভাবে মাথাচাড়া দেবে। এখনও চালের দাম কমেনি। চাল তো কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। হয়তো সবজির দাম কিছুটা কমেছে। কিন্তু বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।এক চালের দাম না কমানোর কারণে দুর্ভিক্ষ হওয়ার কারণে শেখ মুজিবের পাহাড় সমান জনপ্রিয়তা একবারে ধুলায় লুটিয়ে গেল।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য