জামায়াত-আওয়ামী লীগ পরকীয়া চলছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর এমন বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। বিএনপি নেতার বক্তব্যকে ‘অশালীন ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত বলেছে দলটি।
রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশ থেকে বক্তব্য আসার পর দিন মঙ্গলবার জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম বিবৃতি দিয়ে তার প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘২৬ সেপ্টেম্বর বিএনপির এক সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জনাব ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে যে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত, অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেছেন তা দেশবাসীকে বিস্মিত করেছে। এটি কোনো রাজনীতিবিদের ভাষা হতে পারে না। তার এ বক্তব্য স্বৈরাচারী শাসনকে প্রলম্বিত করার ক্ষেত্র তৈরি করবে।’
আগের দিন রাজধানীর হাজারীবাগে বিএনপির সমাবেশে টুকু বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অনেকের মুখে একটা বুলি হয়ে গেছে বিএনপি-জামায়াত, বিএনপি-জামায়াত। আমি বলছি এখন সময় এসেছে, আওয়ামী লীগ-জামায়াত, আওয়ামী লীগ-জামায়াত বলার। জামায়াতও উর্দু, আওয়ামী লীগও উর্দু। দুটো একসঙ্গে মিলবে ভালো। কেননা উনারা জামায়াতের নিবন্ধন ক্যানসেল করেন, কিন্তু বেআইনি ঘোষণা করেন না। তাহলে কি আমি বলব, ওনাদের (জামায়াত-আওয়ামী লীগের) পরকীয়া চলছে?’
টুকু ‘জামায়াত’ শব্দটিকে ‘উর্দু’ ভাষা বলে উল্লেখ করে অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয় জামায়াতের বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, ‘আমরা আশা করছি ভবিষ্যতে এ ধরনের অসংলগ্ন বক্তব্য প্রদান করা থেকে সংশ্লিষ্ট সকলেই বিরত থাকবেন।’
১৯৭১ সালে পাকিস্তানের পক্ষে অস্ত্র ধরা জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির জোট চলছে সেই ১৯৯৯ সাল থেকে। সম্প্রতি ধর্মভিত্তিক দলটি আমির শফিকুর রহমান একটি রুকন সম্মেলনে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে দলের কর্মীদেরকে জানান, বিএনপির সঙ্গে তাদের জোট ভেঙে গেছে। দুই দল যুগপৎ আন্দোলন করবে, কিন্তু জোটে আর নেই।
বিষয়টি রাজনীতিতে তোলপাড় তুললেও বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো কিছুই বলা হচ্ছে না। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য না দেয়াকে নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার বলেছেন।
টুকু বলেন, ‘আমাদের বলা হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত, আর আপনারা আমাদের বলেন স্বাধীনতাবিরোধী দল। আমিও স্বীকার করলাম। কিন্তু নিবন্ধন বাতিল করলেন, বেআইনি ঘোষণা করলেন না। তার অর্থ আওয়ামী লীগ-জামায়াতের সঙ্গে তলে তলে বন্ধুত্ব করে। সেজন্য বাতিল করে না। তাই আজকে থেকে আওয়ামী-জামায়াত হবে, বিএনপি-জামায়াত আর হবে না।’
জামায়াতের বিবৃতিতে টুকুর বক্তব্যের নিন্দা জানিয় বলা হয়, ‘যে মুহূর্তে দেশের সকল গণতান্ত্রিক শক্তি ঐক্যবদ্ধভাবে দেশে গণতন্ত্র ও জনগণের ন্যায্য ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর, সে সময় তার এ বক্তব্য জাতিকে হতাশ করেছে। তার বক্তব্য থেকে প্রতীয়মান হয়, তিনি জনগণের ভাষা বুঝতে অক্ষম এবং তিনি জনগণের ভাষায় কথা বলতে পারেন না। আমরা তার এ বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
জামায়াতের নিবন্ধন নিয়ে টুকুর বক্তব্যের আসল উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তেলে জামায়াত। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও বেআইনি ঘোষণা সংক্রান্ত বিষয়ে তার কথা ও মর্মবেদনায় জনগণের মধ্যে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে, কার স্বার্থে এবং কাকে সন্তুষ্ট করার জন্য তিনি এ বক্তব্য প্রদান করেছেন? আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, জামায়াতে ইসলামী কখনও কোনো আপোষ, গোপন ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না এবং করার প্রশ্নই আসে না।’
ধর্মভিত্তিক কয়েকটি রাজনৈতিক দলের আবেদনের পর ২০১৩ সালের ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। আট বছর পর ২০১৮ সালের ৮ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন বাতিল করে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করে। জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিও আছে। তবে সরকার এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
আরও পড়ুন:রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর পূর্তিতে বুধবার প্রাণ হারানো শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন হতাহত শ্রমিক, তাদের পরিবার, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও পুলিশ সদস্যরা।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল ঘটে যাওয়া ওই দুর্ঘটনায় পাঁচটি পোশাক কারখানার এক হাজার ১৩৮ জন শ্রমিক প্রাণ হারান। পঙ্গুত্ব নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন দুই সহস্রাধিক শ্রমিক।
ট্র্যাজেডির বার্ষিকীতে আহত শ্রমিকদের পুনর্বাসন ও সুচিকিৎসা নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন শ্রমিক ও সংগঠনগুলোর সদস্যরা।
সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বুধবার সকাল থেকে ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানানো শুরু হয়।
একে একে নিহত শ্রমিকের পরিবার, আহত শ্রমিক, পুলিশ ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের ফুলের শ্রদ্ধায় সিক্ত হয়ে ওঠে বেদি। ওই সময় নিহত শ্রমিকদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
পরে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি আদায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ, র্যালি ও মানববন্ধন করা হয়।
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারানো শ্রমিকদের অনেক স্বজন প্রিয়জনের কথা স্মরণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
সমাবেশে রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ১১ বছর পর এখন পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে তা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান বক্তারা।
একই সঙ্গে ভবনের মালিক সোহেল রানার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডেরও দাবি জানান তারা।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে বুধবার স্থানীয় সময় দুপুরে ব্যাংকক পৌঁছালে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী ব্যাংককের ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুপুর ১টা ০৮ মিনিটে (স্থানীয় সময়) পৌঁছালে থাই উপপ্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল তাকে স্বাগত জানান। খবর ইউএনবির
বিমানবন্দরে তাকে স্ট্যাটিক গার্ড অফ অনার এবং ১৯ বার গান স্যালুট দেয়া হয়।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
কর্মকর্তারা জানান, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতেই এ সফর।
১৯৭২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর এ প্রথম বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ডে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে সফর এটি।
২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত সফরকালে থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী এবং জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার বিষয়ে লেটার অফ ইনটেন্টসহ বেশ কয়েকটি সহযোগিতা নথি সই হবে।
‘দুই দেশের মধ্যে পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি, জ্বালানি সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং সম্পর্ক সম্প্রসারণে পর্যটন খাতে সহযোগিতা ও শুল্ক সম্পর্কিত পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে আরও ২টি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পাশাপাশি থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সহযোগিতা চাইবে জানিয়ে হাছান মাহমুদ জানান, নৌ সংযোগের বিষয়েও আলোচনা হবে।
২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীকে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যর্থনা জানাবেন এবং তাকে গার্ড অফ অনার প্রদান করা হবে। একই দিনে প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে গভর্নমেন্ট হাউসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। বৈঠকের পর দুই দেশের মধ্যে নথি সই শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন দুই প্রধানমন্ত্রী।
সফরকালে থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরাকলাওচাওহুয়া এবং ও রানি সুথিদা বজ্রসুধাবিমালাক্ষণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে এ বহুপক্ষীয় সফরে ২৫ এপ্রিল কমিশন ফর ইউএনএসকাপের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিয়ে সেখানে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একই দিনে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকাপ) নির্বাহী সচিব আরমিদা সালসিয়া আলিসজাবানা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
‘লিভারেজিং ডিজিটাল ইনোভেশন ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অষ্টম অধিবেশনটি টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ অ্যাজেন্ডা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটাল উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে অঞ্চলব্যাপী সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ জোরদার করার একটি সুযোগ হবে।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডিজিটাল উদ্ভাবন কীভাবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে অবদান রাখতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করতে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সরকারি নেতা ও মন্ত্রী এবং অন্যান্য মূল স্টেকহোল্ডারদের এ অধিবেশনে একত্রিত করবে।
আরও পড়ুন:র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।
বাহিনীটি বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘কমান্ডার আরাফাত ইসলাম, (এনডি), বিপিএম (সেবা), এনইউপি, পিসিজিএম, বিএন অদ্য ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ তারিখে লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি কমান্ডার খন্দকার আল মঈন (সি), বিপিএম (বার), পিএসসি, বিএনের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
‘কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একজন চৌকস অফিসার। তিনি ১৯৯৫ সালে ৩৫তম বিএমএ লং কোর্সের সাথে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই এক্সিকিউটিভ ব্রাঞ্চে কমিশন লাভ করেন। তিনি দীর্ঘদিন নৌ বাহিনীতে ছোট ও মাঝারি বিভিন্ন জাহাজের অধিনায়ক হিসেবে অত্যন্ত সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। কমান্ডার আরাফাত ইসলাম দেশ ও বিদেশে নৌবাহিনীর বিভিন্ন অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ওপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, কমান্ডার আরাফাত ২০২২ সালের ২৬ ডিসেম্বর প্রেষণে র্যাবে যোগ দেন। তিনি ২০২৩ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত র্যাব-১৩-এর অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে থাইল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে বুধবার সকালে ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন তিনি। খবর বাসসের
প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা লেখক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে ব্যাংককের ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানটির অবতরণের কথা রয়েছে।
২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার থাইল্যান্ড সফর উপলক্ষে সোমবার তার মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটি একটি দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় উভয় সফর।’
তিনি বলেন, এই সফর উভয় পক্ষের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এতে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের (বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড) মধ্যে সহযোগিতার নতুন জানালা উন্মোচিত হবে।
গত জানুয়ারিতে সরকার গঠনের পর এটিই প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর।
সফরকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করবেন এবং জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড দুই দেশের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য আলোচনার অভিপ্রায়পত্রসহ বেশ কিছু সহযোগিতার নথিতে স্বাক্ষর করবে।
বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড সরকারী পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি, শক্তি সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং সম্পর্ক সম্প্রসারণের জন্য পর্যটন খাতে সহযোগিতা এবং শুল্ক সংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে আরও দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করার সম্ভাবনা রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই সফর বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য দুই দেশের মধ্যে সম্ভাব্য ‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি’ পর্যালোচনার সুযোগ তৈরি করবে।
সফরকালে হাছান বলেন, আসিয়ানের ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ হওয়ার জন্য বাংলাদেশের আবেদনের বিষয়টি ঢাকা জোরালোভাবে উত্থাপন করবে।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান রাজনৈতিক সংঘাতের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য বাংলাদেশ আসিয়ানের সদস্য হিসেবে থাইল্যান্ডের প্রতি তার তাগিদ পুনর্ব্যক্ত করবে।
তিনি বলেন, যেহেতু থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার উভয়ই আসিয়ানভুক্ত, তাই রোহিঙ্গা ইস্যুটি যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
হাছান বলেন, উচ্চ পর্যায়ের সফরে বিনিয়োগ, পর্যটন, জ্বালানি, স্থল ও সমুদ্র সংযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড যৌথ কার্যক্রমের মাধ্যমে পর্যটন খাতের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারে এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন, বৌদ্ধ সার্কিট কর্মসূচি প্রচারের পাশাপাশি ভ্রমণ ও অবকাশ শিল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দক্ষতা বিনিময় করতে পারে।
মন্ত্রী বলেন, পর্যটন শিল্পে এই সহযোগিতা উভয় দেশে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।
২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে থাই প্রধানমন্ত্রী থাভিসিন স্বাগত জানাবেন এবং তাকে একটি আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে গভর্নমেন্ট হাউসে (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) একান্ত দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন, নথিতে স্বাক্ষরে উপস্থিত থাকবেন, একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন এবং এরপর সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে থাই প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া একটি রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন।
সফরকালে, প্রধানমন্ত্রী রাজপ্রাসাদে থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরাক্লাওচাওয়ুহুয়া এবং রানী সুথিদা বজ্রসুধাবিমলালক্ষণের রাজকীয় দর্শকদের সঙ্গে থাকবেন।
প্রধানমন্ত্রী ২৫ এপ্রিল ইউএনএসক্যাপ-এর ৮০ তম অধিবেশনে যোগদান করবেন এবং সেখানে ভাষণ দেবেন।
একই দিনে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল এবং এসক্যাপের নির্বাহী সচিব আরমিদা সালসিয়াহ আলিসজাবানা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
‘লিভারেজিং ডিজিটাল ইনোভেশন ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ৮০তম অধিবেশনটি টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটাল উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে অঞ্চলব্যাপী সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ জোরদার করার একটি সুযোগ হবে।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডিজিটাল উদ্ভাবন কীভাবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে অবদান রাখতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করতে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সরকারি নেতা ও মন্ত্রী এবং অন্যান্য মূল অংশীজনদের এই অধিবেশনে একত্রিত করা হবে।
দেশজুড়ে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে জানিয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে বিরাজ করতে পারে অস্বস্তি।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
বৃষ্টিপাতের বিষয়ে বলা হয়, সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য জায়গায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে বলা হয়, রাজশাহী, পাবনা, খুলনা, বাগেরহাট, যশোর ও পটুয়াখালী জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, বান্দরবান জেলাসহ ঢাকা, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগ এবং রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা বিস্তার লাভ করতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে বলা হয়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে।
আরও পড়ুন:মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিতোয়ে কারাগার থেকে ১৭৩ জন বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরছেন। মঙ্গলবার ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য জানিয়েছে।
একই দিন সকালে এসব বাংলাদেশি নাগরিককে নিয়ে মিয়ানমারের নৌ-জাহাজ চিন ডুইন সিতোয়ে বন্দর ত্যাগ করেছে। জাহাজটি রাখাইন রাজ্যে সংঘাতের কারণে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য হওয়া মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের ফিরিয়ে নিতে কক্সবাজারে আসছে।
বুধবার জাহাজটি বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় পৌঁছবে এবং পরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বাংলাদেশের নাগরিকদের হস্তান্তর করা হবে।
দূতাবাস জানায়, বাংলাদেশি ১৭৩ জনের মধ্যে ১২৯ জন কক্সবাজার, ৩০ জন বান্দরবান, সাতজন রাঙ্গামাটি এবং খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, রাজবাড়ী, নরসিংদী ও নীলফামারী জেলার একজন করে বাসিন্দা রয়েছেন।
ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাস মিয়ানমারের জাহাজটির বাংলাদেশ সফরে যাওয়ার তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মিয়ানমারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি তুলে ধরে। সর্বোচ্চসংখ্যক যাচাই করে বাংলাদেশি নাগরিকদের দ্রুত ও সহজে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনায় দূতাবাস মিয়ানমারের বিভিন্ন কারাগারে অবস্থানরত ১৪৪ জন ‘যাচাই করা বাংলাদেশি নাগরিক, যাদের কারাভোগের মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে বা ক্ষমা পেয়েছেন’ তাদেরকে সিতোয়ে কারাগারে আনার উদ্যোগ নেয়।
পাশাপাশি আরও ২৯ জন যাচাই করা বাংলাদেশি নাগরিক, যারা এখনও কারাভোগ করছেন কিংবা বিচারাধীন, একইসঙ্গে তাদেরও মুক্তি দেয়ার বিষয়টি মিয়ানমারের কাছে তুলে ধরা হয়। এর ভিত্তিতে সাজা মওকুফ করে তাদেরকেও দেশে পাঠানো হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, সবশেষ গত বছরের ৩ অক্টোবর দুই দেশের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে অনুষ্ঠিত পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মিয়ানমারে কারাভোগ শেষ করা ২৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন:কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বাংলাদেশে তার দু’দিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে মঙ্গলবা বিকেলে ঢাকা ত্যাগ করেছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কাতার আমিরের সফর দু’দেশের মধ্যে অসাধারণ সদিচ্ছা ও বোঝাপড়া তৈরি করেছে। সর্বোচ্চ পর্যায়ের এ সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও সুসংহত এবং পরবর্তী স্তরে উন্নীত করতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।
কাতারের আমির বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে ২২-২৩ এপ্রিল দু’দিনব্যাপী বাংলাদেশ সফর করেন। তিনি সরকারি ও বেসরকারি সেক্টরের সদস্যদের সমন্বয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।
প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন আমির-ই দেওয়ান প্রধান, বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী, কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, কাতার চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির চেয়ারম্যান, কাতার ইনভেস্টমেন্ট অথরিটির (কিউআইএ) এশিয়া ও আফ্রিকা ইনভেস্টমেন্টের প্রধান, এশিয়ান অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চের পরিচালক।
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল এবং কাতারি আমিরের নেতৃত্বে কাতারি প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ফলপ্রসূ দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করেন।
দ্বিপক্ষীয় আলোচনার সময় উভয় পক্ষই দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার প্রশংসা করে এবং বর্ধিত পারস্পরিক আলাপ-আলোচনা, দু’দেশের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ এবং রাষ্ট্রীয়, ব্যবসা ও রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সকল স্তরে সফর বিনিময়ের মাধ্যমে সম্পর্ককে আরও বাড়ানো ও এগিয়ে নেয়ার পন্থা ও উপায় নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনায় যেসব বিষয় উঠে এসেছে- সেগুলো ছিল বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, জনশক্তি, প্রতিরক্ষা, শিক্ষা, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা ইত্যাদি।
উভয়পক্ষ গাজা যুদ্ধ এবং মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনসহ পারস্পরিক স্বার্থের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যুতেও মতবিনিময় করেছে। উভয় নেতা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ও সহিংসতা বৃদ্ধির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং ফিলিস্তিনের সমস্যার টেকসই সমাধানের জন্য বিশ্ব নেতাদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী তার উদ্বোধনী বক্তব্যে একটি উন্নত জ্ঞানভিত্তিক বহু-সাংস্কৃতিক সমাজ হিসাবে কাতারের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ও রূপান্তর এবং আমিরের নেতৃত্বে মধ্যস্থতা ও বহুপক্ষীয় কূটনীতিতে কাতারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবদ্দশায় বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়া কয়েকটি উপসাগরীয় দেশের অন্যতম হওয়ার জন্য কাতারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
কাতারের আমির প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন। তিনি বাংলাদেশকে একটি উদীয়মান বিনিয়োগ গন্তব্য হিসেবে প্রশংসা করেন এবং কাতার ও বাংলাদেশের মধ্যে বিনিয়োগ প্রসার ও সুরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য উভয় পক্ষকে ধন্যবাদ জানান এবং বাংলাদেশে সম্ভাবনার ক্ষেত্রে ব্যবসা অনুসন্ধানে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে আরও কর্মী, পেশাদার, নার্স, টেকনিশিয়ান, কেয়ারগিভার ইত্যাদি নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য কাতারের আমিরকে অনুরোধ করেন। আমির এতে ইতিবাচকভাবে সাড়া দেন।
মতবিনিময়কালে কাতারের আমির ইইজেড ও কক্সবাজারের পর্যটন স্পটগুলোতে বিনিয়োগের প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। তিনি কাতারের ফ্রি ইকোনমিক জোন সম্পর্কেও বৈঠকে অবহিত করেন এবং প্রধানমন্ত্রীকে ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দল পাঠানোর অনুরোধ জানান।
দ্বিপক্ষীয় আলোচনা শেষে প্রতিনিধি দলের নেতারা বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে মোট ১০টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর প্রত্যক্ষ করেন।
উভয় নেতা কাতারের আমিরের নামে ইসিবি সার্কেল থেকে কালশী পয়েন্ট পর্যন্ত একটি বিশেষ এভিনিউ এবং রাজধানীর মিরপুরে একটি পার্কের নামকরণ ও উদ্বোধন প্রত্যক্ষ করেন।
আমির ও তার প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বিকেলে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তারা দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
পরে আমির বঙ্গভবনে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর তার সম্মানে রাষ্ট্রপতির দেয়া আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেন।
মধ্যাহ্নভোজে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য