পাহাড়, ঝর্ণা, নদী, হাওর, অরণ্য, চা বাগান কিংবা জলারবন- কী নেই সিলেটে? দল বেঁধে ঘুরে বেড়ানো মানুষের অভাবও কখনও হয়নি এখানে। তবে ইদানীং সেই আগ্রহে ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।
করোনার প্রকোপ আর কয়েদফা বন্যা ছাড়াও নানা সমস্যার কারণে এবার জেলায় আশানুরুপ পর্যটক আসছে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সেই সমস্যাগুলো কী কী- এই প্রশ্নে তারা ভাঙাচোরা সড়ক, অনুন্নত অবকাঠামো, নিরাপত্তাহীনতা, পরিকল্পনা ও প্রচারের অভাব, দক্ষ জনশক্তি না থাকার কথা তুলে ধরেন।
চলতি বছরে কয়েকদফা বন্যা হয় সিলেট। পানি নেমে গেলেও তার ক্ষত রয়ে গেছে। নগরসহ সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোর বেশিরভাগ সড়ক ধরে চলাই এখন কষ্টকর।
জেলার দুটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র বিছনাকান্দি ও রাতারগুল জলারবন। এই দুই স্থানে যাওয়ার সড়ক এখন ভাঙাচোরা। ফলে এসব স্থানে ভোগান্তিতে পড়ছেন পর্যটকরা।
বিছনাকান্দির দূরত্ব সিলেট থেকে প্রায় ৪২ কিলোমিটার। এই পথের মধ্যে গোয়াইনঘাট উপজেলার বঙ্গবীর রোড থেকে হাদারপাড় পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ। বন্যায় পিচ উঠে বড় বড় যেসব গর্ত তৈরি হয়, সেগুলো এখন পর্যন্ত সংস্কার হয়নি।
রাতারগুলের অবস্থান সিলেট থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে। এ সড়কের পাঁচ কিলোমিটার অংশ ভাঙাচোরা। আবার চানুপুর থেকে মোটরঘাট পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক কাঁচা। এ কারণে বৃষ্টির দিনে যাতায়াতে সমস্যা হয় ব্যাপক। অটোরিকশা আর লেগুনা ছাড়া কোনো গাড়িই যেতে চায় না রাতারগুল ও বিছনাকান্দিতে।
গত শনিবার চট্টগ্রাম থেকে সিলেটের বিছানাকান্দিতে বেড়াতে আসা সাদমান সাকিব বলেন, ‘সিলেটের প্রকৃতি খুবই সুন্দর। পাহাড়, নদী, হাওর, ঝর্ণা, বন- সবই আছে এখানে। কিন্তু নগর থেকে পর্যটনস্পটগুলোতে আসার সড়কগুলো ভয়াবহ রকমের খারাপ। এই সড়কগুলোই সিলেটের পর্যটনের পথের কাঁটা হয়ে আছে। কেউ একবার আসলে আর কোনোদিন আসতে চাইবে না।’
একই মত বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের সাবেক সদস্য জাকারিয়া আহমদেরও। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভাঙাচোরা সড়কের কারণে সিলেটে আশানুরূপ পর্যটক আসছেন না। ফলে এখন পর্যটকরা সিলেটে ঘুরে বেড়ানোর চেয়ে সিলেট হয়ে ভারতের মেঘালয়েই বেশি যাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘কেবল দামি দামি রিসোর্ট করলেই তো পর্যটকরা আসবে না। পর্যটকরা রিসোর্ট দেখতে আসে না। তারা ছুটি কাটানোর জন্য, একটু আরাম আয়েশের জন্য বেড়াতে আসেন। অথচ সিলেটে বেড়াতে এসে তাদের দূর্ভোগ পোহাতে হয়।’
নেই অবকাঠামো
জেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ। সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়কটিও অপেক্ষাকৃত ভালো। তবে সাদাপাথরে পর্যটকদের জন্য ওয়াশ রুম, চেঞ্জ রুমসহ অবকাঠামোগত সুবিধা। বিছানাকান্দি, রাতারগুলসহ সিলেটের বেশিরভাগ পর্যটন কেন্দ্রে নেই এমন সুবিধা।
সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটির ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালি বিভাগের প্রভাষক আব্দুল হালিম বলেন, ‘সিলেটের বেশিরভাগ পর্যটনকেন্দ্রে কোন বিশ্রামাগার ও ওয়াশরুম নেই। এতে পর্যটকরা এসব স্থানে এসে বিপাকে পড়েন। কেবল পর্যটন এলাকায় নয়, ওইসব স্থানে যাওয়ার পথেও ওয়াশরুম নির্মাণ করা প্রয়োজন।
‘স্পটগুলোতে কোন বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও নেই। ফলে পর্যটকরা অনেক সময় পর্যটন এলাকা নোংরা করে ফেলেন। পর্যটন শিল্পের বিকাশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও জরুরি।’
অবকাঠামো গড়ে তোলার নামে যাতে পরিবেশ ও প্রকৃতি ধ্বংস করা না হয় সেদিকে নজর রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সহ-সভাপতি এমাদউল্লাহ শহীদুর ইসলাম শাহীন।
তিনি বলেন, ‘রাতারগুল জলারবন একটি বিশেষ প্রকৃতির বন। অথচ এই বনের ভেতরে বনবিভাগ পর্যটক আকর্ষণের নামে ওয়াচ টাওয়ার নির্মণ করেছে। যা কেবল অপ্রয়োজনীয় নয়, বনের চরিত্রবিরোধীও। বন, হাওরের উন্নয়ন হবে স্থাপনাবিহীন।’
তিনি বলেন, ‘বন ও হাওরের মধ্যে ইঞ্জিন নৌকা চলাচলও বন্ধ করা দরকার। সিলেট অঞ্চলে বারকি নৌকা নামে হাতে টানা এক ধরনের বিশেষ নৌকা রয়েছে। এটা সিলেটের ঐতিহ্যও। পর্যটক চলাচলে এসব নৌকা ব্যবহার করা যেতে পারে।’
পরিবহনখাতে অব্যস্থাপনা ও নিরাপত্তাহীনতা
পরিবহন খাতের অব্যবস্থাপনার কারণেও পর্যটকদের দুর্ভোগে পরতে হয়। অ্যাপসভিত্তিক পরিবহন সেবা এখানে জনপ্রিয় না হওয়ায় পর্যটকদের কাছ থেকে ইচ্ছেমত ভাড়া হাকান চালকরা। মাঝিরা নৌকা ভাড়াও বাড়তি রাখেন বলে অভিযোগ আছে।
হাওর পর্যটন নিয়ে গবেষণা করা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইমদাদুল হক, ‘এখানকার চালকরা সিলেটে মানুষ না হলে ভাড়া বেশি রাখেন। এছাড়া ভাড়া গাড়ি নেয়ার মতো কোনো কাউন্টার বা টিকিটের ব্যবস্থা নেই। ফলে যাত্রীদের যেমন বাড়তি ভাড়া গুনতে হয়, তেমনি নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কায় থাকতে হয়।’
একই মত জানিয়ে পরিবেশবাদী সংগঠন ভূমিসন্তান বাংলাদেশের সমন্বয়ক আশরাফুল কবীর বলেন, ‘নৌকা ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়া উচিত। একইসঙ্গে সেগুলোকে নিবন্ধন ও নজরদারির আওতায় আনা প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর জাফলং ও লালাখালে পানিতে ডুবে অনেক মৃত্যু হয়। প্রতি বছর এমন ঘটনা ঘটলেও পর্যটকদের নিরাপত্তায় তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। পর্যটন পুলিশ বলে একটি বিশেষ ইউনিট থাকলেও তাদের তেমন কার্যক্রম চোখে পড়ে না।’
পর্যটন কেন্দ্রগুলোর নৌকার ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে জানিয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিলুর রহমান বলেন, ‘বিছনাকান্দি, রাতারগুলসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র্রে নৌকা ভাড়া নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। প্রতিটি নৌকায় লাইফ জ্যাকেট রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া সাঁতার না জানা কেউ পানিতে না নামার অনুরোধ জানিয়ে সাইনবোর্ডও টানানো হয়েছে।’
প্রচারের অভাব, তথ্যের দুস্প্রাপ্যতা
সিলেটের প্রচার বা ব্র্যান্ডিং নেই বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এখানে এলে কোথায় কীভাবে ঘুরে বেড়ানো যাবে, এ নিয়ে সঠিক তথ্যও এক স্থান থেকে পাওয়ার ব্যবস্থা নেই।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সহ-সভাপতি এমাদউল্লাহ শহীদুর ইসলাম শাহীন বলেন, ‘ধর্মীয় পর্যটন সারাবিশ্বেই পর্যটনের অন্যতম একটি শাখা। সিলেটেও এর সুযোগ ছিল। কিন্তু প্রচারের অভাবে তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না।
‘এখানে শাহজালাল (র.) শাহপরান (র.) সহ ৩৬০ আওলিয়ার মাজার রয়েছে। শ্রীচৈতন্যের পিতৃভূমি রয়েছে। কিন্তু এগুলো কোথায় অবস্থিত, কোনটি কী বৈশিষ্ট্য তা নিয়েও প্রচার নেই।’
তিনি বলেন, ‘নগরের চাষনী পীর এলাকার মাজারে প্রচুর বানর রয়েছে। এটি ভালোভাবে প্রচার করা হলে পর্যটকরা সেখানে যেতেন। আবার অনেক ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ও প্রত্মতাত্ত্বিক নির্দশন রয়েছে। এগুলো সংরক্ষণ ও ভালোভাবে ব্র্যান্ডিং করা গেলেও অনেক পর্যটক আসতেন।’
পর্যটকদের জন্য আলাদা একটি তথ্য বাতায়ন গড়ে তোলা প্রয়োজন জানিয়ে সিলেট ইতিহাস ও ঐতিহ্য ট্রাস্টের সভাপতি শাহ জামান মোস্তফা বাহার বলেন, ‘সিলেটে যারা বেড়াতে আসেন তারা কোথায় যাবেন, কোথায় থাকবেন, এখানে ঘুরে দেখার মতো কী কী আছে এসব ব্যাপারে এক জায়গা থেকে তথ্য পাওয়ার মতো কোনো ব্যবস্থা নেই। ফলে পর্যটকদের বিভিন্ন জনকে জিজ্ঞেস করে ঘরে বেড়াতে হয়। এতে তারা অনেক সময় বিপত্তিতে পড়েন।’
দক্ষ জনশক্তির অভাবও সিলেটের পর্যটন বিকাশের অন্যতম বাধা বলে মনে করেন সিলেট ক্যটারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন বাবলু। তিনি বলেন, ‘এখানে হোটেল ম্যানেজমেন্ট, হসপিটালি, রেস্টুরেন্ট, ট্যুর অপারেটর বা ট্যুর গাইড হিসেবে দক্ষ মানুষজন পাওয়া যায় না। এসব খাতে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা প্রয়োজন ‘
যা বলছেন দায়িত্বশীলরা
এসব সমস্যা সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান বলেন, ‘আমরা একটা ওয়েবসাইট করব। যেখানে পর্যটকরা সিলেট সম্পর্কে সব তথ্য পাবেন।’
তিনি বলেন, ‘বন্যায় সিলেটের বেশিরভাগ সড়কেরই ক্ষতি করেছে। এসব সড়ক সংস্কারের একাধিক প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে।’
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সিলেটে সবই আছে। প্রকৃতি আমাদের সবই দিয়েছে। আমাদেরকে এগুলোর সদ্ব্যবহার করতে হবে। কিছু প্রতিবন্ধকতা আছে। এগুলো দূর করতে সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। এখানকার মানুষজনকেও সচেতন হতে হবে, পর্যটকবান্ধব হতে হবে।
‘পরিবেশ রক্ষায় আমরা জাফলং ও ভোলাগঞ্জ থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ করেছি। কিন্তু কিছু সংখ্যক মানুষ পাথর উত্তোলন শুরুর জন্য দৌড়ঝাঁপ চালিয়ে যাচ্ছে। অনেকে লুকিয়ে তুলছেও। তাদের বুঝতে হবে পাথর থেকে পর্যটন আয়ের বড়ক্ষেত্র হতে পারে। তাদের পেশা পরিবর্তন করার মানসিকতা থাকতে হবে।’
আরও পড়ুন:দিনভর রোজা রেখে ইফতারে দরকার হয় পুষ্টিকর কিছু। পিনাট বাটার স্মুদিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। তাই ইফতারে রাখতে পারেন পিনাট বাটারের মজাদার স্মুদি। এনডিটিভি ফুডের পিনাট বাটার স্মুদির রেসিপি তুলে ধরা হলো নিউজবাংলার পাঠকদের জন্য।
উপকরণ (এক কাপ পরিমাণ)
১. ১টি কলা
২. ১ কাপ দুধ
৩. ২থেকে ৩ টেবিল চামচ পিনাট বাটার
পিনাট বাটার যদি চিনি ছাড়া হয়,সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত চিনি বা মধু দিতে হবে স্বাদমতো।
প্রস্তুত প্রণালি
টুকরো করে রাখা কলা, দুধ, পিনাট বাটার একটি ব্লেন্ডারে দিয়ে মসৃণ না হওয়া পর্যন্ত ব্লেন্ড করুন। তারপর গ্লাসে স্মুদি ঢেলে বরফ কুচি দিয়ে মনমতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
চাইলে বাড়িতেও পিনাট বাটার বানিয়ে নিতে পারেন। এর জন্য প্রয়োজন হবে তিন থেকে চারটি উপকরণ। চিনা বাদাম, বাটার অথবা অভিল অয়েল ও মধু ও সামান্য লবণ।
পিনাট বাটার যেভাবে বানাবেন
বাদাম দুই থেকে তিন মিনিট ওভেনে বেক করে নিন অথবা চুলায় হালকা ভেজে নিন। এরপর ব্লেন্ডারে সব উপকরণ দিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করুন।
আরও পড়ুন:অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায় ত্রুটি এবং ভোক্তা অধিকার আইন অমান্য করার দায়ে কক্সবাজার শহরের হোটেল-মোটেল জোনে অভিযান চালিয়ে সাতটি প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ ৮১ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
দণ্ডিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে হোটেল লং-বিচ ও হোটেল সী-প্যালেসের মতো অভিজাত হোটেলও রয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কক্সবাজার শহরের হোটেল-মোটেল জোনে এসব অভিযান চালানো হয় বলে জানান কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. ইয়ামিন হোসেন।
তিনি জানান, পর্যটন শহর কক্সবাজারকে অগ্নি-দুর্ঘটনা থেকে এবং পর্যটকদের নিরাপদ রাখতে জেলা প্রশাসনের দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে দুটি দল মঙ্গলবার দুপুর থেকে হোটেল-মোটেল জোনে অভিযান চালায়। এ সময় আবাসিক হোটেলগুলোতে অগ্নি-নির্বাপন ব্যবস্থা যথাযথভাবে অনুসরণ না করা এবং রেস্তোরাঁয় মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করাসহ নিরাপদ খাদ্য পরিবেশনে ব্যত্যয়ের দায়ে সাতটি প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ ৮১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এডিএম বলেন, ‘জরিমানা আদায় করা এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অগ্নি-প্রতিরোধক দরজার বিপরীতে কাঠের দরজা, অকেজো স্মোক ডিটেক্টর, অপর্যাপ্ত ফায়ার এক্সটিংগুইশার, হোটেলের আয়তন অনুপাতে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকা, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স চূড়ান্ত সনদ না থাকা এবং রেস্তোরাঁগুলোতে খাবারের মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করার পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য পরিবেশনে ত্রুটির প্রমাণ মিলেছে।
‘এসব কারণে অভিজাত হোটেল লং বিচকে এক লাখ টাকা, হোটেল সী প্যালেসকে ৫০ হাজার, হোটেল কল্লোলকে ৫০ হাজার, হোটেল মিডিয়াকে ১০ হাজার, কাচ্চি ডাইন রেস্তোরাঁকে ২০ হাজার এবং হোটেল মিডিয়ার রেস্তোরাঁকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া হোটেল মিডিয়ার পাশে অনুমোদনহীন একটি ক্ষুদ্র দোকানকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ইয়ামিন হোসেন আরও জানান, দণ্ডিত প্রতিষ্ঠানগুলোকে ত্রুটিগুলো দ্রুত কাটিয়ে উঠতে নির্দেশনা দেয়ার পাশাপাশি সতর্কও করা হয়েছে। প্রশাসনের এই অভিযান আরও কয়েকদিন চলবে।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের রামুর ঐতিহাসিক রাংকুট বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজার সফরে আসা ৩৪ কূটনীতিক।
বুধবার সকালে রাংকুট বৌদ্ধ বিহারে এসে পৌঁছালে কূটনীতিকদের স্বাগত জানান বিহারাধক্ষ্য জ্যোতিসেন মহাথেরো।
তিনি জানান, এ সময় দুই হাজার ৩০০ বছরের পুরোনো মহামতি বুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এই স্থান দেখে মুগ্ধ হন অতিথিরা। সেইসঙ্গে সম্রাট অশোক, চীনা পর্যটক হিউয়েন সাংয়ের আবক্ষ মূর্তিসহ বৌদ্ধ পুরাকীর্তি দেখে অভিভূত হন। অতিথিরা বিহারের বিভিন্ন দিক ঘুরে দেখেন।
পরিদর্শনকালে কক্সবাজার অঞ্চলের বৌদ্ধ ইতিহাস, স্থাপনা এবং সমুদ্র সৈকত- সব মিলিয়ে অপার পর্যটন সম্ভাবনাকে তোলে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরার আশ্বাস দেন কূটনীতিকরা।
কূটনীতিকদের আগমনে বিহারে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এবং ঐতিহ্যবাহী পিঠাপুলি দিয়ে তাদের আপ্যায়ন করা হয়।
পরে তারা সমুদ্র সৈকতের লাবনীর ট্যুরিস্ট মার্কেটে যান। সেখানে ঝিনুকের দোকানসহ অন্যান্য হস্তশিল্প পণ্যের দোকান পরিদর্শন করেন।
এ সময় জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের নেতৃত্বে ২৪ দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার মিশন প্রধানসহ ৩৪ জন কূটনীতিক রেলে চড়ে কক্সবাজার যান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘অ্যাম্বাসেডরস আউট রিচ’ প্রোগ্রামের আওতায় যেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া, চীন, কোরিয়া, ইতালি, ডেনমার্ক, কসোভো, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, নেপাল, শ্রীলংকা, ভিয়েতনাম, ভ্যাটিকান, ভুটান, স্পেন, আর্জেন্টিনা, লিবিয়া, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মিশর, ফ্রান্সের মিশন প্রধানসহ এফএও, আইইউটি ও একেডিএন-এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার কূটনীতিকরা দুদিনের সফরে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার যান।
বাংলাদেশের মহান স্থপতি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টকে ‘বঙ্গবন্ধু বীচ’ এবং সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টের মাঝখানের খালি জায়গাটি ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা বীচ’ নামকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সোমবার বিকেলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মো. সাহেব উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘মুক্তিযুদ্ধা সংসদ কমান্ডের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান মো. সোলায়মান মিয়ার আবেদনের প্রেক্ষিতে একাদশ জাতীয় সংসদের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১৩তম বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা বীচকে ‘বঙ্গবন্ধু বীচ’ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে সুগন্ধা বীচ ও কলাতলী বিচের মাঝখানের খালি জায়গা ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা বীচ’ নামকরণ করা হলো। একইসঙ্গে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা দেয়া হলো।’
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। এখানে জেলা প্রশাসন ও ট্যুরিস্ট পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের এটি বাস্তবায়নে আদেশ দেয়া হয়েছে।’
মিয়ানমার সীমান্তে চলমান উত্তেজনার কারণে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে নৌ-রুটে ভ্রমণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। আগামী শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) থেকে কক্সবাজার ও টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে ভ্রমণ করা যাবে না।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) ইয়ামিন হোসেন।
তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে ১০ ফেব্রুয়ারি শনিবার থেকে সেন্টমার্টিনে নৌ-রুটে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।’
এর আগে সকালে বিজিবির কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের (৩৪ বিজিবি) দায়িত্বপূর্ণ বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু ও ঘুমধুম সীমান্ত এবং তৎসংলগ্ন বিওপি পরিদর্শনকালে বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুল জামান সিদ্দিকী ওই রুটে ভ্রমণ বন্ধ রাখার পরামর্শ দেন।
শক্তিশালী পাসপোর্ট সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৯৭তম। সে হিসাবে চলতি ২০২৪ সালের শুরুতে গত বছরের তুলনায় অবস্থানটা এক ধাপ কমেছে। বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক-স্বীকৃত পাসপোর্ট রেটিং, হেনলি সূচকে বাংলাদেশের এমন অবস্থান জানানো হয়েছে।
মূলত আগাম ভিসা ছাড়াই পাসপোর্টধারীরা কতগুলো দেশে প্রবেশ করতে পারে, তার ওপর ভিত্তি করে হেনলি সূচক প্রস্তুত করা হয়। ১০৫টি দেশে ভ্রমণের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এই র্যাঙ্কিং প্রকাশ করা হয়।
বিদেশ ভ্রমণে ইচ্ছুক অধিকাংশ বাংলাদেশির ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট দেশের ভিসা সংগ্রহ করাটা বড় ঝক্কির ব্যাপার। ভিসা পাওয়ার এই ধকল সামলাতে গিয়ে অনেকে মাঝপথেই দেশের বাইরে ভ্রমণের আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। অন্যদিকে এসব ঝামেলা নিমেষে উধাও হয়ে যায়, যখন সেই ভিসা করার কোনও বাধ্যবাধকতা থাকে না।
উদ্ভূত অবস্থায় প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, তাহলে বাংলাদেশি পাসপোর্টে আগাম ভিসা ছাড়া দুনিয়ার কোন কোন দেশ ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা কোন দেশগুলোতে অন-অ্যারাইভাল ভিসায় যেতে পারবেন।
ভিসা ছাড়াই যাওয়া যাবে যেসব দেশে
বিভিন্ন দেশের অভিবাসন ব্যবস্থার সবচেয়ে আকর্ষণীয় কার্যনীতি হচ্ছে ভিসা-মুক্ত প্রবেশ। যেখানে বিদেশে প্রবেশের জন্য নির্দিষ্ট দেশের নাগরিকের আগে থেকে কোনও রকম ভিসা-প্রাপ্তির প্রয়োজন পড়ে না। এই নিয়মে ভ্রমণরতদের ভিসা ফি দিয়ে কোনও ধরনের আনুষ্ঠানিক ভিসা প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হয় না।
ঘুরে বেড়ানো বা ব্যবসা; যে কোনও উদ্দেশ্যেই এই সুবিধা নেয়া যায়। তবে এভাবে গন্তব্যের দেশটিতে অবস্থান করার একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকে, যা বিভিন্ন দেশের জন্য বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে।
হেনলি পাসপোর্ট সূচক অনুসারে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা ২২টি দেশে ভিসা ছাড়াই যেতে পারবেন। এই দেশগুলোতে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশি নাগরিকদের নিজ দেশের ভেতরে থেকে ভিসাপ্রাপ্তির জন্য অগ্রিম আবেদন করতে হবে না। এমনকি বিমানবন্দর পেরিয়ে সেই দেশগুলোতে প্রবেশের সময়ও কোনও ধরনের আনুষ্ঠানিক অনুমতির প্রয়োজন হবে না।
এই অভিবাসন নীতিতে ভ্রমণকারীকে গন্তব্যের দেশে প্রবেশের ঠিক আগ মুহূর্তে ভিসা দেয়া হয়। এই ভিসা প্রদানের জায়গাটি হতে পারে সমুদ্র বন্দর, স্থল চেকপয়েন্ট অথবা বিমানবন্দর। এই প্রবেশাধিকার প্রাপ্তির জন্য তাদেরকে যাত্রা শুরুর আগে নিজেদের দেশে থাকা অবস্থায় কোনও আবেদন করতে হয় না।
অন-অ্যারাইভাল ভিসা দেয়া দেশগুলো হলো- বাহামাস, বার্বাডোস, ভুটান, ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ, কুক দ্বীপপুঞ্জ, ডমিনিকা, ফিজি, গ্রেনাডা, হাইতি, জ্যামাইকা, কিরিবাতি, লেসোথো, মাদাগাস্কার, মাইক্রোনেশিয়া, মন্টসেরাট, নিউয়ে, রুয়ান্ডা, সেন্ট কিটস ও নেভিস, সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইনস, গাম্বিয়া, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো এবং ভানুয়াতু।
মাদাগাস্কার, রুয়ান্ডা এবং ভানুয়াতু গত বছর পর্যন্ত বাংলাদেশিদের জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসা চালু রেখেছিল। আর ওশেনিয়া মহাদেশের দ্বীপ দেশ কিরিবাতি এ বছর এই তালিকায় নতুন সংযোজন।
এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ৬ মাস মেয়াদে ফ্রি ভিসায় থাকা যাবে বার্বাডোস, ডোমিনিকা, জ্যামাইকা এবং মন্টসেরাটে।
ফিজিতে ভ্রমণ করার জন্য বরাদ্দ রয়েছে সর্বোচ্চ ৪ মাস। ৯০ দিনের মেয়াদে অবস্থান করা যাবে কিরিবাতি, সেন্ট কিটস ও নেভিস এবং লেসোথোতে। আর বাহামা, গ্রেনাডা ও হাইতিতে অবস্থানের সময়সীমা তিন মাস।
এছাড়া কুক আইল্যান্ডসে ফ্রি ভিসার মেয়াদ ৩১ দিন; গাম্বিয়া, মাইক্রোনেশিয়া, রুয়ান্ডা, ভানুয়াতু ও ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডস এবং ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইনসে ৩০ দিন; ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে ৩০ থেকে ৯০ দিন এবং মাদাগাস্কারে সবচেয়ে কম মাত্র ১৫ দিন অবস্থান করা যাবে।
বিনা ফি-তে অনঅ্যারাইভাল ভিসা
কোনও কোনও দেশে প্রবেশের সময় অন-অ্যারাইভাল ভিসার জন্য ফি দিতে হয়। হেনলি পাসপোর্ট সূচক অনুসারে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা অন-অ্যারাইভাল ভিসা নিয়ে ১৮টি দেশে বিনা ফিতে প্রবেশ করতে পারবে।
এই দেশগুলো হলো- বলিভিয়া, বুরুন্ডি, কম্বোডিয়া, কেপ ভার্দে দ্বীপপুঞ্জ, কমোরো দ্বীপপুঞ্জ, জিবুতি, গিনি-বিসাউ, মালদ্বীপ, মৌরিতানিয়া, মোজাম্বিক, নেপাল, সামোয়া, সেশেলস, সিয়েরা লিওন, সোমালিয়া, তিমুর-লেস্তে, টোগো ও টুভালু।
এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় অর্থাৎ ৯০ দিন ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে গিনি-বিসাউ, নেপাল ও বলিভিয়ায়। সামোয়া ও সেশেলসে থাকা যাবে ৬০ দিন। কমোরো আইল্যান্ডসে অবস্থানের জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসার মেয়াদ ৪৫ দিন। জিবুতি ও মৌরিতানিয়ায় থাকা যাবে ৩১ দিন।
এছাড়া মালদ্বীপ, কেপ ভার্দে, সোমালিয়া, মোজাম্বিক, সিয়েরা লিওন, তিমুর-লেস্তে এবং কম্বোডিয়া বেড়ানোর জন্য পাওয়া যাবে ৩০ দিন, যেখানে বুরুন্ডি এবং টুভালুর ক্ষেত্রে বলা হয়েছে এক মাসের কথা। আর আফ্রিকার দেশ টোগোতে অবস্থানের জন্য পাওয়া যাবে মাত্র ১৫ দিন।
ইটিএ প্রয়োজন হবে যেসব দেশে
ইলেক্ট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন (ইটিএ) মূলত ইলেক্ট্রনিকভাবে তথা অনলাইনে একজন ভ্রমণকারীর পাসপোর্টের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত থাকে। এক কথায় এটিও একটি ভিসা ফ্রি প্রবেশাধিকার। ডিজিটাল অনুমতিটি দেশের ভেতরে থেকে ঘরে বসেই অনলাইনে নিবন্ধন করার মাধ্যমে নিয়ে নেয়া যায়।
এমনকি এর জন্য আবেদনকারীকে সশরীরে নিজ দেশের অভিবাসন সেন্টারে উপস্থিত হওয়ার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। যে দেশে ইটিএ কার্যকর আছে সে দেশের অভিবাসন বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ইগয়ে সহজেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়।
চলতি বছরে দুটি দেশে প্রবেশের জন্য বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ইটিএ প্রয়োজন হবে- শ্রীলঙ্কা ও কেনিয়া।
আগে শুধু শ্রীলঙ্কা থাকলেও এ বছরই ইটিএ সেবা নিয়ে নতুন সংযোজন হলো কেনিয়া। এখন থেকে এই ডিজিটাল ছাড়পত্রের মাধ্যমে সব বিদেশি নাগরিক ৯০ দিনের জন্য কেনিয়াতে প্রবেশ করতে পারবে।
আর শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে এই অনুমতির সময়সীমা প্রাথমিকভাবে শ্রীলঙ্কায় প্রবেশের তারিখ থেকে ৩০ দিন পর্যন্ত। এই সিঙ্গেল এন্ট্রির পাশাপাশি শ্রীলঙ্কায় ডাবল এন্ট্রির জন্যও ইটিএ রয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশি নাগরিকরা ইটিএ ইস্যু করার তারিখ থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে দু’বার শ্রীলঙ্কায় প্রবেশ করতে পারবেন।
অনুমোদন একবার হয়ে যাওয়ার পর ভিসাপ্রাপ্ত ব্যক্তি শ্রীলঙ্কায় প্রবেশের সময় যে কোনো চেকপয়েন্ট অনায়াসেই অতিক্রম করতে পারবেন।
হেনলি পাসপোর্ট সূচক অনুযায়ী ভিসা ছাড়া, অন-অ্যারাইভাল এবং ইটিএ সব মিলে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীরা মোট ৪২টি দেশ ভ্রমণ করতে পারবে। তবে পাসপোর্টের মেয়াদ ন্যূনপক্ষে ছয় মাস থাকতে হবে। সূত্র: ইউএনবি
আরও পড়ুন:২০২৪ সালে শক্তিশালী পাসপোর্ট সূচকে গত বছরের তুলনায় এক ধাপ কমেছে বাংলাদেশের অবস্থান। বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক-স্বীকৃত পাসপোর্ট রেটিং, হেনলি সূচকে ২০২৪ সালের শুরুতে বাংলাদেশের পাসপোর্টের অবস্থান ৯৭তম।
একই সূচক নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একই অবস্থান রয়েছে উত্তর কোরিয়া। তাদের অবস্থানও ৯৭তম।
মূলত আগাম ভিসা ছাড়াই পাসপোর্টধারীরা কতগুলো দেশে প্রবেশ করতে পারে, তার ওপর ভিত্তি করে হেনলি সূচক প্রস্তুত করা হয়। এখানে ১০৫টি দেশে ভ্রমণের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে র্যাঙ্কিং প্রকাশ করা হয়।
২০২৪ সালের হেনলি পাসপোর্ট সূচক অনুসারে, বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে ৪২টি দেশে ভিসামুক্ত বা অন-অ্যারাইভাল ভিসায় ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে বলে সিএনএনের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে।
এ তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ায় দেশ নেপালের অবস্থান ৯৮তম, পাকিস্তান রয়েছে ১০১-তে এবং আফগানিস্তান ১০৪-এ।
মালদ্বীপের অবস্থান বেশ উপরে। সূচকে তারা রয়েছে ৫৮তম স্থানে। ৯৪টি দেশে তাদের ভিসামুক্ত প্রবেশাধিকার রয়েছে দেশটির পাসপোর্টধারীদের, যা দেশটিকে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী পাসপোর্টের অধিকারী করেছে। এ ছাড়া সূচকে ভারত, ভুটান এবং শ্রীলঙ্কার পাসপোর্টের অবস্থান যথাক্রমে ৮০, ৮৭ এবং ৯৬তম।
এদিকে ২০২৪ সালে এসে ছয়টি দেশের নাগরিকরা ১৯৪টি দেশে ভিসা-মুক্ত বা অন-অ্যারাইভাল ভিসায় প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছে। এ দেশগুলো হচ্ছে- ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, সিঙ্গাপুর ও স্পেন।
অন্যদিকে তালিকার তলানির পাঁচটি দেশ হচ্ছে- ইয়েমেন, পাকিস্তান, ইরাক, সিরিয়া ও আফগানিস্তান।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য