× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Ignoring the obstacles the pilgrims got into the boat like a current
google_news print-icon
করতোয়ায় নৌকাডুবি:

বাধা উপেক্ষা করে স্রোতের মতো নৌকায় উঠেছিলেন পুণ্যার্থীরা

বাধা-উপেক্ষা-করে-স্রোতের-মতো-নৌকায়-উঠেছিলেন-পুণ্যার্থীরা
প্রত্যক্ষদর্শী ও উদ্ধারকারী নিরঞ্জন রায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নৌকাটিতে অনেক লোক উঠতেছিল, কেউ কারো কথা শুনতেছিল না। অনেকে বউ-বাচ্চা নিয়ে উঠতেছিল। একজন আরেকজনকে নিষেধ করতে করতে বহু লোক ওঠে। কাইও (কেউ) কারো কথা শোনেনাই। যখন নৌকাটা ছাড়ি দিছিল, তখন ডোবা ডোবা ভাব। সবাই ভয় পাইতেছিল। কিছুদূর যাওয়ার পর পানির স্রোত শুরু হয়। ঢুলতে ঢুলতে নৌকাটা ডুবে যায়।’

পঞ্চগড়ের বোদায় করতোয়া নদীতে ইঞ্জিনচালিত নৌকাডুবিতে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৬১ জনের মরদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এই দুর্ঘটনায় কেউ হারিয়েছেন স্ত্রী-সন্তান, কেউ বাবা-মা; কেউ বা হারিয়েছেন পুরো পরিবার।

স্থানীয়রা বলছেন, এর আগে কোনো দুর্ঘটনায় একসঙ্গে এত লাশ দেখেননি এই জনপদের মানুষ। সারি সারি এমন লাশে পঞ্চগড়ের আকাশ ভারী হয়ে উঠছে।

তবে, এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য অসচেতনভাবে অতিরিক্ত যাত্রী ওঠাকেই দায়ী করছেন নৌকার মাঝি ডিপজল ও ঘাট ইজারাদার আব্দুল জব্বারসহ স্থানীয় প্রশাসন।

গত রোববার বেলা আড়াইটার দিকে আউলিয়া ঘাট থেকে বদেশ্বরী মন্দিরে যাওয়ার জন্য একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় মানুষ হুড়োহুড়ি করে উঠতে থাকেন। সেই দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিওতে দেখা যায়, ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়ার সময় নৌকাটিতে ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী ছিল। এ সময় অনেকেই নৌকাটিকে যেতে নিষেধ করছিলেন এবং কেউ কেউ ‘ডুবে যাবে’ বলেও চিৎকার করছিলেন। তবে সে চিৎকার আটকাতে পারেনি নৌকাটিকে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের করতোয়া নদীর অপর পাড়ে বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া পূজা উপলক্ষে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। সেদিন দুপুরের দিকে মূলত ওই ধর্মসভায় যোগ দিতে সনাতন ধর্মালম্বীরা ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে নদী পার হচ্ছিলেন।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী নিউজবাংলাকে জানান, সেদিন নির্দিষ্ট ঘাট থেকে ২০০ গজ ভাটিতে নৌকায় যাত্রী তুলছিলেন মাঝি ডিপজল। সেসময় ঘাটে পুলিশ সদস্য ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উপস্থিতি ছিলেন। হ্যান্ড মাইকে বার বার অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে পারাপারে নিষেধ করছিলেন তারা। পাড়ে থাকা অন্য লোকজনও তাদের নিষেধ করেন।

বাধা উপেক্ষা করে স্রোতের মতো নৌকায় উঠেছিলেন পুণ্যার্থীরা

নৌকাটিতে যখন অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হচ্ছিল, তখন প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত যাত্রীদের নৌকা থেকে নামতে বলা হচ্ছিল; কিন্তু সে নির্দেশনা কানে তোলেননি কেউ। কানায় কানায় পূর্ণ যাত্রীসহ ঝুঁকি নিয়েই নৌকাটি ছাড়েন মাঝি।

ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও উদ্ধারকারী নিরঞ্জন রায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নৌকাটা যখন মন্দিরের দিকে যাবে, তখন অনেক লোক উঠতেছিল, কেউ কারো কথা শুনতেছিল না। অনেকে বউ-বাচ্চা নিয়ে উঠতেছিল। একজন আরেকজনকে নিষেধ করতে করতে বহু লোক ওঠে। কাইও (কেউ) কারো কথা শোনে নাই।’

তার বর্ণনায়, ‘যখন নৌকাটা ছাড়ি দিছিল, তখন ডোবা ডোবা ভাব। সবাই ভয় পাইতেছিল। কিছুদূর যাওয়ার পর পানির স্রোত শুরু হয়। ঢুলতে ঢুলতে নৌকাটা ডুবে যায়। কেউ লাফ দিয়ে পানিত নামছে। কেউ চিৎকার দিছে, আর বলছে বাঁচাও বাঁচাও। আমরা কয়জনকে উদ্ধারও করছি।’

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামন হাট ইউনিয়নের বাসিন্দা মাহমুদুল হক। ওই সময় নদীতে মাছ ধরছিলেন তিনি।

নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আউলিয়া ঘাট থেকে বদেশ্বরী মন্দিরে যাওযার নৌকায় এত লোক ছিল যে, দাঁড়াবার জায়গা ছিল না। তখন পুলিশ বার বার নিষেধ করছে। ওখানে যারা ছিল তারাও নিষেধ করছে। কেউ কথা শোনে নাই। পুলিশের কথা শুনলে এত বড় ঘটনা ঘটত না।’

তিনি যোগ করেন, ‘একবার যায়া তো আবার আসি লোক নিতে পারিল হয় নৌকাটা। একবারে এত লোক ওঠার দরকার কী আছিল।’

রায়হান নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘যখন নৌকাটি ছাড়ে, তখন তো বহু লোক ছিল। সবাই আতংকে ছিল। হঠাৎ মাঝ নদীতে গিয়ে নৌকার যাত্রীরা চিল্লানো শুরু করে। এ সময় নৌকায় থাকা অনেকে যাত্রীদের নড়াচড়া না করতে বলেন। পর মুহূর্তেই নৌকাটি তলিয়ে যেতে শুরু করে।’

তার ভাষ্য, ‘ওই সময় অনেকে পাড়ে থাকা ছোট নৌকায় করে ১২ জনকে জীবিত এবং ছয়জনের মরদেহ উদ্ধার করে। মহিলা মানুষ সাঁতার না জানায় বেশি মারা গেছে, ছোট ছোট বাচ্চারাও মারা গেছে।

‘আমি জীবনে এতগুলো লোক মরা দেখি নাই, রাইতোত ঘুমাইতে পারি নাই’, যোগ করেন তিনি।

ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে কতজন যাত্রী ছিলেন সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। তবে স্থানীয়দের দাবি, তবে ৫০ থেকে ৬০ জনের ধারণক্ষমতার হলেও নৌকাটিতে যাত্রী ছিল শতাধিক।

দুর্ঘটনাকবলিত নৌকার দৈর্ঘ্য ৩৪ হাত, প্রস্থ্য ১১ হাত। নৌকায় প্রতি এক হাত দূরত্বে একজন করে থাকলেও ৩৪ জন যাত্রী বহন করবে নৌকাটি। একটু চাপাচাপি করে যাত্রী তুললেও সংখ্যাটি ৫০ এর বেশি হওয়ার কথা নয়। সেখানে শতাধিক যাত্রী উঠে কীভাবে? প্রশ্নের জবাবে ইজারাদার জব্বার আলী বলেন, ‘প্রশাসনের লোকজন দেখেছে। তাদের নিষেধ উপেক্ষা করে নৌকা ছাড়ার সময় হুরমুর করে যাত্রীরা নৌকায় উঠে পড়ে।’

বাধা উপেক্ষা করে স্রোতের মতো নৌকায় উঠেছিলেন পুণ্যার্থীরা

বেঁচে ফেরা নৌকার মাঝি ডিপজলের বরাতে তিনি আরও বলেন, ‘কিছুদূর যাওয়ার পর নৌকাটি টলমল করলে আবার পেছনে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন মাঝি। সে সময় যাত্রীরা ভয়ে বেশি নড়াচড়া করলে কাত হয়ে নৌকাটি ডুবে যায়।’

জেলা পরিষদ থেকে এক বছরের জন্য আব্দুল জব্বারের নামে ইজারা দেয়া হয়েছে খেয়া ঘাটটি। অংশীদার রয়েছেন একাধিক। ঘাটে মোট চারটি নৌকা রয়েছে। দুইটি ঠেলা নৌকা ও দুইটি শ্যালো ইঞ্জিনচালিত। পারাপারে যাত্রী প্রতি ১০ টাকা করে নেয়া হয়।

আব্দুল জব্বার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অসাবধানতা ও অসচেতনার জন্য এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’ ঘাটে নিরাপত্তা জোরদার ছিল না, এমনটাও দাবি করেছেন তিনি।

বেশি লাভের আশায় ইজারাদার ঘাটে যাত্রীর তুলনায় পর্যাপ্ত নৌকা ব্যবহার করেননি দাবি করে স্থানীয় বাবুল হোসেন। বলেন, ‘পূজার কারণে লোকজনের চাপ অনেক। তারা চারটি নৌকা ব্যবহার করতে পারতেন। কিন্তু একটি ছোট নৌকা ও বড় নৌকা দিয়েই দিন পার করেন তারা। যাত্রীর তুলনায় নৌকা বেশি ছিল না। তাই সময়ের কথা চিন্তা করে মানুষ ঝুঁকি নিয়েছে। এজন্য এই সর্বনাশ হয়েছে।’

বোদা থাকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজয় কুমার রায় নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওই ঘটটি ইজারা দেয়া। একটি ছোট আরেকটি বড় নৌকা ছিল। কিন্তু নৌকাটি আগের ঘাটে ছিল না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপনি ভিডিও দেখলে বুঝতে পারবেন যে একজন চিৎকার করতেছে, সেই লোকটি আমাদের একজন এসআই। আমরা অনেক চেষ্টা করেও অতিরিক্ত লোক ওঠা বন্ধ করতে পারিনি। বেশি লোক ওঠায় এই দুর্ঘটনা।’

ঘটনাস্থলে থাকা মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু আনসার মো রেজাউল করিম শামিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নৌকাটা মূল ঘাট থেকে ২০০ মিটার উজানে দাঁড়াইছে। আমরা মূল ঘাটে ছিলাম, প্রশাসনও ছিল। সেখানে লোক তুলছে, মানুষজন হুড়াহুড়ি করে উঠছে। আমরা দূর থেকে চিল্লাইছি লোক বেশি না উঠতে, কিন্তু শোনে নাই। তাছাড়া মাঝ নদী থেকে নৌকা ফিরতেছিল, কিন্তু তখন নৌকা ঘোরানোর সময় পানি ওঠে ডুবে গেছে।’

পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক শেখ মো. মাহমুদুল ইসলাম বলেন, ‘নৌকার ধারণক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি লোক ছিল। অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের কারণেই এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নৌকাডুবির ঘটনায় পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দ্বীপংকর রায়কে প্রধান করে একটি ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদেরকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।’

আরও পড়ুন:
করতোয়ায় নৌকাডুবিতে মৃত বেড়ে ৪৩
নৌকাডুবি: করতোয়ার পাড়ে ৫ নিখোঁজের অপেক্ষায় ধীরেন
পঞ্চগড়ে নৌকাডুবি: মৃত বেড়ে ৩২
বাধা না মেনে অতিরিক্ত যাত্রী ওঠায় নৌকাডুবি: ডিসি
করতোয়ায় নৌকাডুবিতে প্রাণহানির ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর শোক

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Colors and colors of cotton

রং আর তুলির আঁচড়ে বর্ণিল হাওর

রং আর তুলির আঁচড়ে বর্ণিল হাওর কিশোরগঞ্জের হাওরের ১৪ কিলোমিটারজুড়ে আঁকা হয়েছে আলপনা। ছবি: নিউজবাংলা
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাওরে যেভাবে পর্যটকরা আসেন, গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকে যখন ১৪ কিলোমিটার আলপনা স্থান করে নিতে পারবে, তখন আন্তর্জাতিকভাবে স্থানটি আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হবে। এই বিশ্বরেকর্ড গড়ার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি নববর্ষ উদযাপন ১ বৈশাখকে তুলে ধরতে পারছি।’

রং আর তুলির আঁচড়ে বর্ণিল হয়েছে কিশোরগঞ্জের হাওর। অলওয়েদার সড়কের ১৪ কিলোমিটারজুড়ে আঁকা হয়েছে আলপনা।

এর মধ্য দিয়ে অলওয়েদার সড়কের পর আরেকটি নতুন রেকর্ড হলো এ জনপদে।

কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে হাওরের আরেক উপজেলা অষ্টগ্রামের জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ‘আলপনায় বৈশাখ ১৪৩১’ নামের ১৪ কিলোমিটারব্যাপী আলপনা আঁকা হয়েছে।

আয়োজকদের দাবি, এটি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ আলপনা। একে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান দেয়ার প্রয়াস চালানো হবে।

মিঠামইন জিরো পয়েন্টে রোববার সকাল ১০টার দিকে তুলির শেষ আঁচড় দিয়ে আলপনা আঁকার সমাপ্তি ঘোষণা করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

রং আর তুলির আঁচড়ে বর্ণিল হাওর

ওই সময় হাওরের উন্নয়নের রূপকার হিসেবে পরিচিত কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর রহমান, বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

রং আর তুলির আঁচড়ে বর্ণিল হাওর

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাওরে যেভাবে পর্যটকরা আসেন, গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকে যখন ১৪ কিলোমিটার আলপনা স্থান করে নিতে পারবে, তখন আন্তর্জাতিকভাবে স্থানটি আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হবে। এই বিশ্বরেকর্ড গড়ার মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি নববর্ষ উদযাপন ১ বৈশাখকে তুলে ধরতে পারছি।

‘যেভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা আমাদের মঙ্গল শোভাযাত্রা এখন ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ডকুমেন্টে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, একই রকমভাবে আজ গিনেস ওয়ার্ল্ড বুকেও নতুন একটি রেকর্ড করতে যাচ্ছি ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ আলপনা অংকনের মধ্য দিয়ে। এ অবস্থায় বিদেশি পর্যটকরাও হাওরে আসার জন্য আগ্রহী হবে।’

সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক বলেন, ‘একসময় হাওর ছিল অবহেলিত। মানুষকে দাওয়াত দিয়েও হাওরে আনা যেত না। আর এখন সারা বাংলাদেশ থেকেই মানুষ হাওরের উন্নয়ন দেখতে আসে।’

আলপনা উদ্বোধন শেষে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের এমপি রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিককে নিয়ে মোটরসাইকেলে পুরো সড়ক ঘুরে বেড়ান ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বৈচিত্র্যময় সব উৎসব উদযাপনে বাংলালিংক গভীরভাবে দায়বদ্ধ। দেশের সবচেয়ে বড় সাংস্কৃতিক উৎসব পহেলা বৈশাখ এ সকল উৎসবের মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

‘বাংলালিংকের এই আয়োজন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও দেশীয় উৎসবকে তুলে ধরার একটি প্রয়াস।’

বার্জার ও এশিয়াটিকের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ১৪ কিলোমিটারজুড়ে আলপনা আঁকার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলালিংক। ৬৫০ জন শিল্পী অংকনে অংশ নেন।

এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে কিশোরগঞ্জের হাওরের মিঠামইন উপজেলার অলওয়েদার সড়কের জিরো পয়েন্টে এই আলপনা অংকনকাজের উদ্বোধন করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এমপি আসাদুজ্জামান নূর।

আরও পড়ুন:
জলধারা ছড়িয়ে থাকা ‘হাইল হাওর’
নদীগুলোতে বাড়ছে পানি, হাওরে ফেরি চলাচল বন্ধ
হাওরাঞ্চলে কৃষকের মুখে রোদের হাসি
মাছের উৎপাদন বেড়েছে হাকালুকি হাওরে
হাওরে বাঁধের কাজ শেষের সময় জানাল পাউবো

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Sadarghat launch tragedy Five accused on three day remand

সদরঘাট লঞ্চ ট্র্যাজেডি: তিন দিনের রিমান্ডে পাঁচ আসামি

সদরঘাট লঞ্চ ট্র্যাজেডি: তিন দিনের রিমান্ডে পাঁচ আসামি সদরঘাটে এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চটির ছিঁড়ে যাওয়া দড়ির আঘাতেই আশপাশে থাকা পাঁচজন প্রাণ হারান। ছবি: মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ/নিউজবাংলা
রিমান্ড পাওয়া আসামিরা হলেন এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার (চালক) আবদুর রউফ হাওলাদার (৫৪), দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার (চালক) সেলিম হাওলাদার (৫৪), ম্যানেজার ফারুক খান (৭০), এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার (চালক) মিজানুর রহমান (৪৮) ও দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার (চালক) মনিরুজ্জামান (২৮)।

রাজধানীর সদরঘাট টার্মিনালের পন্টুনে দুই লঞ্চের মধ্যে ধাক্কা লেগে রশি ছিঁড়ে পাঁচ যাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় হওয়ায় মামলায় গ্রেপ্তার পাঁচ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।

পাঁচজনের মধ্যে তিনজন এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের মাস্টার ও ম্যানেজার। বাকি দুজন এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের মাস্টার।

ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফা চৌধুরী হিমেল শুক্রবার রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের এ আদেশ দেন।

ওই আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির বাবুল নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, শুক্রবার সদরঘাট নৌ পুলিশের সদস্যরা আসামিদের আদালতে হাজির করেন। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের সাত দিনের পুলিশি রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা সদরঘাট নৌ থানার উপপরিদর্শক নকীব অয়জুল হক। আসামিদের পক্ষে তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করা হয়।

শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেক আসামিকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।

রিমান্ড পাওয়া আসামিরা হলেন এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার (চালক) আবদুর রউফ হাওলাদার (৫৪), দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার (চালক) সেলিম হাওলাদার (৫৪), ম্যানেজার ফারুক খান (৭০), এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার (চালক) মিজানুর রহমান (৪৮) ও দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার (চালক) মনিরুজ্জামান (২৮)।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে এ ঘটনায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের যুগ্ম পরিচালক ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন।

মামলার এজহারে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার ২টা ৫৫ মিনিটে সদরঘাট টার্মিনালের ১১ নম্বর পল্টুনে এমভি তাসরিফ-৪ নোঙর করা অবস্থায় এমভি ফারহান-৬-এর চালক বেপরোয়া গতিতে লঞ্চ চালিয়ে ১১ নম্বর পন্টুনে ঢোকার সময় তাসরিফ লঞ্চকে ধাক্কা দেয়। এতে তাসরিফ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে যায়। সেটি দ্রুত গতিতে এসে পন্টুনে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের আঘাত করলে তারা নদীতে পড়ে যায়। এতে এক পরিবারের তিনজনসহ পাঁচ যাত্রীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ফারহান এবং তাসরিফ লঞ্চের দায়িত্ব অবহেলা আছে।

লঞ্চ ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারিয়েছেন পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার মাটিচোরা গ্রামের প্রয়াত আবদুল মালেকের ছেলে বিল্লাল (৩০), তার স্ত্রী মুক্তা (২৬), তাদের মেয়ে সাইমা (৩)। প্রাণ হারানো বাকি দুজন হলেন পটুয়াখালী সদরের জয়নাল আবেদিনের ছেলে রিপন হাওলাদার (৩৮) এবং ঠাকুরগাঁও সদরের নিশ্চিতপুর এলাকার আব্দুল্লাহ কাফীর ছেলে রবিউল (১৯)।

এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ।

কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবেদন পেশ করতে বলা হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে মৃত প্রত্যেকের নমিনির কাছে দাফন-কাফন বাবদ ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন:
সদরঘাটে দুই লঞ্চের সংঘর্ষে পাঁচ যাত্রী নিহত
ঈদের সকালে হরিয়ানায় স্কুলবাস উল্টে ৬ শিশু নিহত, ‘মদ্যপ ছিলেন’ চালক
নোয়াখালীতে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ নিহত ৩
চট্টগ্রামে ট্রাকের পেছনে বাসের ধাক্কা, চালকসহ নিহত ২
শেষ কর্মদিবসে সদরঘাট ছেড়েছে যাত্রীভর্তি লঞ্চ

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Sadarghat accident Five arrested including master manager of two launches

সদরঘাটে দুর্ঘটনা: দুই লঞ্চের মাস্টার ম্যানেজারসহ পাঁচজন আটক

সদরঘাটে দুর্ঘটনা: দুই লঞ্চের মাস্টার ম্যানেজারসহ পাঁচজন আটক ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে অন্য লঞ্চের সঙ্গে এমভি ফারহান-৬। ছবি: মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ/নিউজবাংলা
নৌ পুলিশের ঢাকা জোনের এসপি গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, আটককৃতদের ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ দুর্ঘটনায় বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বিআইডব্লিউটিএ বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

রাজধানীর সদরঘাট টার্মিনালের পন্টুনে বৃহস্পতিবার লঞ্চ দুর্ঘটনায় দুই লঞ্চের মাস্টার ও ম্যানেজারসহ পাঁচজনকে আটক করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।

আটক পাঁচজন হলেন এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের দুই মাস্টার ও একজন ম্যানেজার এবং এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের দুই মাস্টার।

রাতে তাদের আটক করা হয়েছে বলে নিউজবাংলাকে জানান নৌ পুলিশের ঢাকা জোনের পুলিশ সুপার (এসপি) গৌতম কুমার বিশ্বাস।

এসপি গৌতম জানান, আটককৃতদের ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ দুর্ঘটনায় বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বিআইডব্লিউটিএ বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

আটক পাঁচজন হলেন এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার মো. মিজানুর রহমান (৪৮) ও দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার মো. মনিরুজ্জামান (২৪) এবং এমভি ফারহান-৬ লঞ্চের প্রথম শ্রেণির মাস্টার মো. আবদুর রউফ হাওলাদার (৫৪), দ্বিতীয় শ্রেণির মাস্টার মো. সেলিম হাওলাদার (৫৪) ও ম্যানেজার মো. ফারুক খাঁন (৭৬)।

যেভাবে দুর্ঘটনা

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঈদুল ফিতরের দিন বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে কোতোয়ালি থানাধীন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের ১১ নম্বর পন্টুনের সামনে ঢাকা থেকে ভোলাগামী এমভি তাশরিফ-৪ ও এমভি টিপু নামে দুটি লঞ্চ রশি দিয়ে পন্টুনে নোঙর করা ছিল। লঞ্চ দুটির মাঝখান দিয়ে ফারহান নামের আরেকটি লঞ্চ প্রবেশের চেষ্টা চালায়। ওই সময় এমভি ফারহান-৬ লঞ্চটি এমভি টিপু-১৩কে সজোরে ধাক্কা দেয়। পরবর্তী সময়ে এমভি টিপু-১৩ ধাক্কা দেয় এমভি তাসরিফ-৪-কে। ওই সময় এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে যায়।

তারা আরও জানান, ছিঁড়ে যাওয়া সেই দড়িটিই পন্টুনের আশপাশে থাকা পাঁচজনকে সজোরে আঘাত করে। সেখানে গুরুতর আহত অবস্থায় মিটফোর্ড হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানকার জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে কর্মরত প্রধান ডোম মোহাম্মদ মিলন শেখ জানান, পাঁচজনেরই মৃত্যু হয়েছে মাথায় আঘাত লেগে।

এদিকে লঞ্চের দড়ির আঘাতে পাঁচজনের প্রাণ যাওয়ার পর ধুয়েমুছে স্বাভাবিক করা হয়েছে সদরঘাটের পন্টুন। এ দুর্ঘটনায় সদরঘাট সাময়িক থমকে গেলেও দেড় ঘণ্টা পরই শুরু হয় স্বাভাবিক কার্যক্রম। দুর্ঘটনায় জড়িত এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের যাত্রীদের এমভি কর্ণফুলী-১২ লঞ্চে তুলে দেয়া হয়েছে।

তদন্ত কমিটি

এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। সংস্থাটির ক্রয় ও সংরক্ষণ পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম কমিটির আহ্বায়ক, নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো. আজগর আলী এবং বন্দর শাখার যুগ্ম পরিচালক মো. কবীর হোসেন কমিটির সদস্য।

কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবেদন পেশ করতে বলা হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে প্রাণ হারানো প্রত্যেক ব্যক্তির স্বজনের কাছে দাফন-কাফন বাবদ ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন:
চট্টগ্রামে ট্রাকের পেছনে বাসের ধাক্কা, চালকসহ নিহত ২
শেষ কর্মদিবসে সদরঘাট ছেড়েছে যাত্রীভর্তি লঞ্চ
ময়মনসিংহে এক দিনে সড়কে ঝরল ৮ প্রাণ
সদরঘাটে ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড়
ময়মনসিংহে অটোরিকশায় ট্রাকের ধাক্কায় নিহত ২

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The committee canceled the route permit of two launches in the investigation of launch accident at Sadarghat

সদরঘাটে লঞ্চ দুর্ঘটনা তদন্তে কমিটি, দুই লঞ্চের রুট পারমিট বাতিল

সদরঘাটে লঞ্চ দুর্ঘটনা তদন্তে কমিটি, দুই লঞ্চের রুট পারমিট বাতিল সদরঘাটে এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চটির ছিঁড়ে যাওয়া দড়ির আঘাতেই আশপাশে থাকা পাঁচজন নিহত হন। ছবি: মেহেরাবুল ইসলাম সৌদিপ/নিউজবাংলা
ঈদুল ফিতরের দিন বিকেলে সদরঘাট টার্মিনালের পন্টুনে বাঁধা দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে আরেকটি লঞ্চ প্রবেশের সময় একটি লঞ্চের রশি ছিঁড়ে পাঁচ যাত্রীর প্রাণহানি হয়। এ ঘটনায় নিহত পাঁচজনের মধ্যে তিনজন এক পরিবারের সদস্য।

রাজধানীর সদরঘাট টার্মিনাল এলাকায় বৃহস্পতিবার লঞ্চ দুর্ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠনের পাশাপাশি তাৎক্ষণিকভাবে দুটি লঞ্চের ‍রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ঈদুল ফিতরের দিন বিকেলে সদরঘাট টার্মিনালের পন্টুনে বাঁধা দুটি লঞ্চের মাঝখান দিয়ে আরেকটি লঞ্চ প্রবেশের সময় একটি লঞ্চের রশি ছিঁড়ে পাঁচ যাত্রীর প্রাণহানি হয়।

এ ঘটনায় নিহত পাঁচজনের মধ্যে তিনজন এক পরিবারের সদস্য।

মর্মান্তিক এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

তদন্ত কমিটি

লঞ্চ দুর্ঘটনায় প্রাণহানির বিষয়টি তদন্ত করতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে বিআইডব্লিউটিএ।

বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (ক্রয় ও সংরক্ষণ) রফিকুল ইসলাম কমিটির আহ্বায়ক। এ ছাড়া সংস্থাটির নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো. আজগর আলী এবং বন্দর শাখার যুগ্ম পরিচালক মো. কবীর হোসেনকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে।

কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবেদন পেশ করতে বলা হয়েছে।

ঢাকার সদরঘাট নদীবন্দরের দায়িত্বে থাকা বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন জানান, এমভি ফারহান-৬ লঞ্চটি জোরে পার্কিং করতে যাওয়ায় এমভি তাসরিফ-৪-এর রশি ছিঁড়ে গেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এ দুর্ঘটনার পর এমভি ফারহান-৬ ও এমভি টিপুর যাত্রা বাতিল করেছে বিআইডব্লিউটিএ।

রুট পারমিট বাতিল

বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘লঞ্চের রশি ছিঁড়ে ঘটা এ দুর্ঘটনার পর এমভি ফারহান-৬ ও এমভি তাসরিফ-৪-এর রুট পারমিট তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করা হয়েছে।’

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর শোক

সদরঘাটে লঞ্চের ছিঁড়ে যাওয়া রশির আঘাতে পন্টুনে থাকা পাঁচ যাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

প্রতিমন্ত্রী এক শোকবার্তায় নিহত যাত্রীর আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তিনি আহত যাত্রীদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

প্রতিমন্ত্রী জানান, দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যে লঞ্চ দুর্ঘটনা

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে কোতোয়ালি থানাধীন সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের ১১ নম্বর পন্টুনের সামনে ঢাকা থেকে ভোলাগামী এমভি তাশরিফ-৪ ও এমভি টিপু নামের দুটি লঞ্চ রশি দিয়ে পন্টুনে বাঁধা ছিল। লঞ্চ দুটির মাঝখান দিয়ে এমভি ফারহান-৬ নামের আরেকটি লঞ্চ প্রবেশের চেষ্টা চালায়। ওই সময় এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চের রশি ছিঁড়ে গেলে পাঁচজন যাত্রী লঞ্চে ওঠার সময় গুরুতর আহত হন। এদের মধ্যে বাবা-মা ও সন্তান ছিল।

তারা আরও জানান, সদরঘাট ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা অ্যাম্বুলেন্সে করে আহত ব্যক্তিদের মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পাঁচজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

ফেয়ারী শিপিং লাইনস লিমিটেডের মালিকানাধীন এমভি তাসরিফ-৪ লঞ্চটি ঢাকা-চরফ্যাশন-বতুয়া রুটে চলাচল করে।

গুরুতর আহত পাঁচজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিউজবাংলাকে জানান স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (মিটফোর্ড) জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক হিমাদ্রি শেখর।

তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে নিয়ে আসার পর তাদের শরীরে পালস না পাওয়া যাওয়ায় তাদের মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। গুরুতর আহত হওয়ায় পাঁচজনের শরীর থেকেই প্রচুর রক্তক্ষরণ হওয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে।

‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে, তবে এ ঘটনায় এখন কোনো রোগী হাসপাতালে ভর্তি নেই। এ ঘটনায় পুলিশ পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’

সদরঘাট নৌ থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ জানান, নিহত পাঁচজনের মধ্যে এক নারী, তিন পুরুষ ও এক শিশু আছে। তাদের মরদেহ মিটফোর্ড হাসপাতালে রাখা আছে। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

এদিকে ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত এমভি ফারহান-৬-এর চালক পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন সদরঘাট নৌ থানা পুলিশ।

এ ঘটনায় প্রাণ হারানো যাত্রীরা হলেন পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার মাটিচোরা গ্রামের প্রয়াত আবদুল মালেকের ছেলে বিল্লাল (৩০), তার স্ত্রী মুক্তা (২৬), তাদের মেয়ে সাইমা (৩)। তারা তিনজন একই পরিবারের সদস্য। বাকি দুজন হলেন পটুয়াখালী সদরের জয়নাল আবেদিনের ছেলে রিপন হাওলাদার (৩৮) ও ঠাকুরগাঁও সদরের নিশ্চিতপুর এলাকার আব্দুল্লাহ কাফীর ছেলে রবিউল (১৯)।

এ ঘটনায় নৌ পুলিশ কাজ করছে বলে জানিয়েছেন নৌ পুলিশের ঢাকা জোনের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস।

আরও পড়ুন:
ময়মনসিংহে এক দিনে সড়কে ঝরল ৮ প্রাণ
সদরঘাটে ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড়
ময়মনসিংহে অটোরিকশায় ট্রাকের ধাক্কায় নিহত ২
ভোলাগামী ওয়াটার বাসে আগুন
ধামরাইয়ে বাইক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আরোহীর মৃত্যু

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Committee to investigate Volvo bus fire incident in Demra

ডেমরায় ভলভো বাসে আগুনের ঘটনা তদন্তে কমিটি

ডেমরায় ভলভো বাসে আগুনের ঘটনা তদন্তে কমিটি সোমবার রাতে ডেমরার কোনাপাড়ায় গ্যারেজে লাগা আগুনে ১৪টি ভলভো বাস পুড়ে যায়। ফাইল ছবি
সোমবার রাত ৮টা ৫০ মিনিটে ডেমরার ধার্মিকপাড়া এলাকার কোনাপাড়ায় একটি গ্যারেজে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও গ্যারেজে থাকা ১৪টি বাস পুড়ে যায়।

রাজধানীর ডেমরার ধার্মিকপাড়ায় আগুনে লন্ডন এক্সপ্রেস-এর ১৪টি বাস পুড়ে যাওয়ার ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেল জানিয়েছে, তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ছালেহ উদ্দিনকে। কমিটির সদস্য সচিব ডিএডি মো. শামসুজ্জোহা এবং সদস্য ডেমরা ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার ওসমান গণি।

প্রসঙ্গত, সোমবার রাত ৮টা ৫০ মিনিটে ডেমরার ধার্মিকপাড়া এলাকার কোনাপাড়ায় একটি গ্যারেজে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও গ্যারেজে থাকা ১৪টি বাস পুড়ে যায়।

আগুনের খবর পেয়ে রাত ৮টা ৫৯ মিনিটে ডেমরা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট প্রথমে ঘটনাস্থলে যায়। পরে সিদ্দিকবাজার স্টেশন থেকে আরও চারটি ইউনিট তাদের সঙ্গে যোগ দেয়। ছয়টি ইউনিটের সম্মিলিত চেষ্টায় রাত ৯টা ৪৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউজ ইনস্পেক্টর মো. আনোয়ারুল ইসলাম ওইদিন মিডিয়াকে জানান, গ্যারেজে দাঁড়ানো কয়েকটি ভলভো বাসে আগুন লেগেছে। তবে বাসে কীভাবে আগুন লেগেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ঢাকা ফায়ার সার্ভিসের ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর ফয়সালুর রহমান জানান, গ্যারেজে থাকা লন্ডন পরিবহনের ১২ থেকে ১৪টি বাসে আগুন লাগে।

আরও পড়ুন:
ডেমরায় গ্যারেজে থাকা কয়েকটি ভলভো বাসে আগুন

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Savar oil tanker overturned and caught fire 2 dead 7 injured

সাভারে তেলের ট্যাংকার উল্টে আগুন: নিহত বেড়ে ২, দগ্ধ ৭

সাভারে তেলের ট্যাংকার উল্টে আগুন: নিহত বেড়ে ২, দগ্ধ ৭ সাভারে তেলবাহী লড়ি উল্টে গিয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। ছবি: নিউজবাংলা
প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ সোলায়মান জানান, ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে হেমায়েতপুর এলাকায় তেলের ট্যাংকার আইল্যান্ডের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে পাশের তরমুজের ট্রাকসহ অন্য চারটি গাড়িতে আগুন ধরে যায়।

সাভারের হেমায়েতপুরে তানজিব কোয়েল ফ্যাক্টরির সামনে একটি তেলের লরি উল্টে গিয়ে পাঁচটি গাড়িতে আগুন লাগার ঘটনায় দগ্ধ আটজনের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ঘটনাস্থলে মারা যান একজন।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনিস্টিটিউটে মঙ্গলবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় নজরুল ইসলামের মৃত্যু হয়। দগ্ধ বাকি সাতজন একই ইনিস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তারা হলেন মিম (১০), আল-আমিন (৩৫), নীড়াঞ্জন (৪৫), মিলন মোল্লা (২২), সাকিব (২৪), ট্রাকের হেলপার হেলাল (৩০) ও তরমুজ ব্যবসায়ী সালাম (২৪)। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জোড়পুল এলাকায় মঙ্গলবার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মহাসড়কে আইল্যান্ডের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একটি তেলবাহী লরি উল্টে গিয়ে পেছনে থাকা প্রাইভেটকার ও ট্রাকসহ চারটি গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে আগুন লেগে যায়। এতে ঘটনাস্থলে একজনের মৃত্যু হয়, দগ্ধ হন আটজন।

প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ সোলায়মান জানান, ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে হেমায়েতপুর এলাকায় তেলের ট্যাংকার আইল্যান্ডের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে পাশের তরমুজের ট্রাকসহ অন্য চারটি গাড়িতে আগুন ধরে যায়। এই ঘটনায় ড্রাইভার, হেলপার ও তরমুজ ব্যবসায়ীসহ আট জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসলে নজরুলকে চিকিৎসক মৃত বলে জানান।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘হেমায়েতপুরে দগ্ধ হয়ে আমাদের এখানে আটজন এসেছে। তাদের মধ্যে নজরুল ইসলাম নামে একজন মারা যায়, বাকি সাতজনকে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।’

আরও পড়ুন:
মাইক্রোতে বাসের ধাক্কায় দুই সন্তান নিহত, আহত মা-বাবা
পাহাড়ে মাটিখেকোদের ডাম্পার ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল বন কর্মকর্তার
দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনে ইঞ্জিনের ধাক্কা, আহত ৫০
সাজেকে পণ্যবাহী মাহেন্দ্র খাদে, চালক নিহত
দক্ষিণ আফ্রিকায় বাস খাদে পড়ে নিহত ৪৫

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The parents and brother left alone and the partner also went to the hospital
গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে দগ্ধ

চলে গেলেন মা-বাবা ও ভাই, একা হয়ে পড়া সাথীও হাসপাতালে

চলে গেলেন মা-বাবা ও ভাই, একা হয়ে পড়া সাথীও হাসপাতালে মা-বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে এই ছবি ইশরাত জাহান সাথীর কাছে আজ কেবলই স্মৃতি। ছবি: সংগৃহীত
ধামরাই পৌরসভার মোকামটোলা এলাকায় ভাড়া বাসায় ২৬ মার্চ সেহরির রান্না করার সময় গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ ও আগুন ধরে যায়। এতে পরিবারের চার সদস্যই দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে তিনজন বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সোমবার।

গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। নিমিষেই ফ্ল্যাট জুড়ে ছড়িয়ে পড়া আগুনের লেলিহান শিখায় দুই সন্তানসহ দগ্ধ হন মা-বাবা। ২৬ মার্চ ধামরাই পৌরসভার মোকামটোলা এলাকায় ভাড়া বাসার নিচতলায় নুরুল ইসলামের ফ্ল্যাটে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

দগ্ধ চারজনকে দ্রুত রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে তিনজনই মারা গেছেন।

তারা হলেন- সাভার উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের সাবেক স্বাস্থ্য পরিদর্শক নুরুল ইসলাম, তার স্ত্রী সুফিয়া বেগম ও ছেলে সাভার মডেল কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী সোহাগ হোসেন। বেঁচে আছেন কেবল পরিবারের একমাত্র মেয়ে ইশরাত জাহান সাথী।

সোমবার সুফিয়া বেগমের ভাই জাহিদুল ইসলাম তিনজনের মৃত্যুর বিষয়টি জানান। সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদাও বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) গভীর রাতে অচেনা নম্বরের ফোনে ঘুম ভাঙে আমার। তখন ধামরাই পৌরসভার মোকামটোলা আমার বোনের ভাড়া বাসায় আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে দ্রুত রওনা হই। আসার আগেই আমার বোন সুফিয়া, তার স্বামী নুরুল ইসলাম, ভাগ্নে সোহাগ ও ভাগ্নি ইশরাত জাহান সাথীকে হাসপাতালে পাঠায় স্থানীয়রা। সবাই বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলো।’

তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল (রোববার) দুপুরে আমার বোন সুফিয়া মারা যায়। আমাদের গ্রাম ধামরাইয়ের বাইশাকান্দা ইউনিয়নে পারিবারিক কবরস্থানে বোনকে দাফন করে আজ লাশ নিতে এসেছি বোনজামাই আর ভাগ্নের।

‘আজ (সোমবার) শেষ রাতে দুলাভাই নুরুল ইসলাম মারা গেছেন। আর দুপুরের দিকে ভাগ্নে সোহাগের মৃত্যু হয়। অথচ গতকালও সে অনেক ভালো ছিলো। আমাদের সঙ্গে কথাও বলেছে।’

স্বজনহারা এই ব্যক্তি বলেন, ‘ভাগ্নি সাথীর অবস্থা কিছুটা ভালো আছে। তবে পুরো পরিবারটা নিমিষেই শেষ হয়ে গেলো। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই আমরা। জানতে চাই- কিভাবে কার অবহেলায় এই ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলো।

সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, ‘মারা যাওয়া নুরুল ইসলাম শিমুলিয়া ইউনিয়নের স্বাস্থ্য পরিদর্শক ছিলেন। তিনি ২৪ ফেব্রুয়ারি অবসর গ্রহণের পর থেকে তিনি ধামরাইয়ে বসবাস করতেন। আর আজ পরিবারটির তিনজন সদস্যই নেই।’

মন্তব্য

p
উপরে