× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
After the rescue Maryams mother is in the custody of the asylum seekers
google_news print-icon

উদ্ধারের পর নিশ্চুপ মরিয়মের মা, আশ্রয়দাতারা হেফাজতে

উদ্ধারের-পর-নিশ্চুপ-মরিয়মের-মা-আশ্রয়দাতারা-হেফাজতে
ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করে রাতে খুলনার দৌলতপুরে নেয় পুলিশ। ছবি: নিউজবাংলা
কেএমপির উপকমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘রহিমা বেগম নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার সকল ডিজিটাল ডিভাইস বন্ধ করে রেখেছিল। তাকে আমরা কোনোভাবেই ট্র্যাক করতে পারছিলাম না। গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে যে বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে, সেই বাড়ির দুই নারীর সঙ্গে তিনি বসে গল্প করছিলেন, তবে আমাদের অফিসাররা তাকে উদ্ধারের পর কোনো কথার জবাব দেননি। সেই থেকে তিনি নির্বাক রয়েছেন।’

ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে উদ্ধারের পর খুলনার দৌলতপুরে নেয়া পর্যন্ত রহিমা বেগম মুখ খোলেননি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

প্রায় এক মাস ধরে দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা থেকে মা নিখোঁজের অভিযোগ করে মরিয়ম মান্নানের পোস্টগুলো ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার মধ্যে শনিবার রাতে রহিমাকে উদ্ধার করে পুলিশ।

বোয়ালমারীর সৈয়দপুর গ্রামের একটি ঘর থেকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় পঞ্চাশোর্ধ্ব নারীকে। সেখান থেকে পৌনে ১১টার দিকে খুলনার উদ্দেশে রওনা হয় পুলিশ। রাত ২টা ১০ মিনিটে মরিয়মের মাকে দৌলতপুর থানায় নেয়া হয়।

উদ্ধারের পর নিশ্চুপ মরিয়মের মা, আশ্রয়দাতারা হেফাজতে
ফরিদপুর থেকে উদ্ধার করে খুলনার দৌলতপুরে নেয়া হয় রহিমাকে। ছবি: নিউজবাংলা

রহিমাকে যে বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে, সেখান থেকে তিনজনকে আটক করে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। তারা হলেন কুদ্দুস মোল্লার স্ত্রী, তার ছেলে এবং কুদ্দুসের ভাইয়ের স্ত্রী।

ব্রিফিংয়ে কী জানাল পুলিশ

ফেসবুকে ব্যাপক আলোচনায় আসা মরিয়ম মান্নানের মাকে উদ্ধার নিয়ে শনিবার গভীর রাতে খুলনার দৌলতপুর থানায় ব্রিফিং করেন মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন।

তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে আমরা নিশ্চিত হয়েছিলাম, রহিমা বেগম ফরিদপুরে আছেন। পরে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) কমিশনারের নির্দেশে আমাদের দক্ষ কিছু কর্মকর্তা সেখানে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।’

রহিমার অবস্থান শনাক্ত করা যাচ্ছিল না জানিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘রহিমা বেগম নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে তার সকল ডিজিটাল ডিভাইস বন্ধ করে রেখেছিল। তাকে আমরা কোনোভাবেই ট্র্যাক করতে পারছিলাম না।

‘গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে যে বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে, সেই বাড়ির দুই নারীর সঙ্গে তিনি বসে গল্প করছিলেন, তবে আমাদের অফিসাররা তাকে উদ্ধারের পর কোনো কথার জবাব দেননি। সেই থেকে তিনি নির্বাক রয়েছেন।’

পুলিশের ভাষ্য, ফরিদপুরের সেই বাড়ি আটক কুদ্দুস মোল্লার, যিনি রহিমাদের খুলনার বাসায় ভাড়া থাকতেন। খুলনা শহরে পাটকলের শ্রমিক ছিলেন কুদ্দুস।

পুলিশ আরও জানায়, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে রহিমার ছেলে মিরাজ একবার কুদ্দুসের বোয়ালমারীর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। রহিমাদের সঙ্গে কুদ্দুসের তেমন সম্পর্ক ছিল না।

কুদ্দুসের বাড়ি থেকে তিনজনকে আটকের কথা জানিয়ে কেএমপির কর্মকর্তা মোল্লা জাহাঙ্গীর বলেন, ‘ওই বাড়ি থেকে আমরা তিনজনকে হেফাজতে নিয়ে এসেছি। তারা হলেন কুদ্দুস মোল্লার স্ত্রী, ছেলে ও তার (কুদ্দুস) ভাইয়ের স্ত্রী। এই তিনজনের কাছ থেকে জানতে পেরেছি, গত ১৭ আগস্ট ওই বাড়িতে রহিমা বেগম গিয়েছিলেন। প্রথমে তারা রহিমাকে চিনতে পারেনি। পরে একপর্যায়ে তাকে চিনতে পারে।

‘তখন তাকে সাবেক বাড়িওয়ালা হিসেবে বেশ সেবাযত্ন করেন (কুদ্দুস ও তার বাড়ির লোকজন)। পরবর্তী সময়ে তাদের কাছে (রহিমা) জানান, এর আগে তিনি গোপালগঞ্জের মকছেদপুর ও চট্টগ্রামে ছিলেন।’

উদ্ধার হওয়া রহিমাকে শুরুতে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হবে। নিখোঁজ রহস্য উদঘাটনে সেখান থেকে তাকে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হবে।

রহিমার প্রতিবেশীর অভিযোগ

রহিমা বেগমকে অক্ষত অবস্থায় থানায় আনার পরে মহেশ্বরপাশা থেকে ছুটে আসেন স্থানীয় ব্যক্তিরা।

প্রতিবেশী রবিউল ইসলাম অভিযোগ করেন, ‘মরিয়মের বাবা মান্নান হুজুরের তিনটি বিবাহ ছিল। রহিমা বেগমদের পক্ষ ও আগের একটি পক্ষ স্বামীর মৃত্যুর সূত্রে একই জমি পেয়েছিলেন, তবে রহিমা বেগম অন্য পক্ষকে জমি ভোগ দখল করতে দিতেন না। তাই তারা ক্ষিপ্ত হয়ে নিজেদের অংশের জমি প্রতিবেশীদের কাছে বিক্রি করে দেন। তারপর থেকে কখনোই প্রতিবেশীরা সেই জমি দখলে নিতে পারেনি।’

তিনি বলেন, ‘জমি দখল করতে গেলে তারাই (রহিমা বেগমরা) মারামারি শুরু করে। থানা পুলিশ বা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এক বছর আগে এ নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে তাদের মারামারি হয়েছিল। সেই থেকে স্থানীয় মানুষ তাদের সঙ্গে মিশতে চায় না।

‘ওই দখলে রাখতে তারাই নাটক সাজিয়েছে। আমরা আগেও থানা পুলিশকে জানিয়েছিলাম। কারণ অন্যদের কেনা জমি তারা দখল করে রাখলেও আদালত একদিন রহিমা বেগমের বিপক্ষে রায় দেবে। সেদিন জমি ছেড়ে দিতে হবে। শুধু জমি দখলছাড়া না করতে তারা এই নাটক সাজিয়েছেন।’

রবিউল আরও বলেন, ‘স্থানীয় মানুষ হিসেবে আমরা যতদূর জানি, রহিমা বেগমকে তার মেয়েরা তেমন ভালোবাসত না। মেয়েরা মায়ের কথাও তেমন শুনত না। তার মা মেয়েদের বিয়ের জন্য বেল্লাল হাওলাদার ওরফে বেল্লাল ঘটককে নিয়মিত বাড়িতে ডাকতেন।

‘মেয়েদের ওপর বিরক্ত হয়ে একপর্যায়ে তিনি সেই বেল্লাল ঘটককেই বিয়ে করেন। মেয়েরা তাকে দেখত না বলেই তিনি নতুন করে আরেকটি বিয়ে করেন।’

অপহরণের জিডি, মামলা ও সংবাদ সম্মেলন

গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে রহিমা নিখোঁজ হন বলে অভিযোগ করে তার পরিবার। রাত সোয়া ২টার দৌলতপুর থানায় অপহরণের অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন রহিমার ছেলে মিরাজ আল সাদী।

সে জিডি থেকে জানা যায়, নিখোঁজের সময় রহিমার দ্বিতীয় স্বামী বেল্লাল হাওলাদার বাড়িতে ছিলেন। পানি আনতে বাসা থেকে নিচে নেমেছিলেন রহিমা। দীর্ঘ সময় পরও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।

মাকে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে ২৮ আগস্টে দৌলতপুর থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন রহিমার মেয়ে আদুরী।

রহিমা নিখোঁজ হয়েছেন জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সোচ্চার হন মরিয়ম মান্নানসহ তার অন্য মেয়েরা।

গত ১ সেপ্টেম্বর খুলনায় সংবাদ সম্মেলন করেন রহিমার বাড়ির লোকজন। সে সময় জানানো হয়, রহিমার সঙ্গে জমি নিয়ে স্থানীয়দের মামলা চলছে। রহিমার করা সেই মামলায় আসামিরা হলেন প্রতিবেশী মঈন উদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, রফিকুল ইসলাম পলাশ, মোহাম্মাদ জুয়েল ও হেলাল শরীফ।

আদালত ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর নথিপত্র বুঝে নেয় পিবিআই।

দৌলতপুরে যে বাড়ি থেকে রহিমা নিখোঁজ হয়েছেন সেখানে শুক্রবার গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির দ্বিতীয় তলা (যেখানে রহিমা থাকতেন) তালাবদ্ধ। নিচ তলায় ভাড়াটিয়ারা রয়েছেন।

ভাড়াটিয়ারা জানান, ওই বাড়িতে রহিমা ও তার স্বামী বেল্লাল নিয়মিত থাকতেন না।

ভাড়াটিয়া আকলিমা বেগম বলেন, ‘প্রতিবেশীদের সঙ্গে রহিমার জমি সংক্রান্ত বিরোধ হয়। তারপর থেকে রহিমা ও তার স্বামী খুলনা শহরের দিকে কোথাও ভাড়া থাকতেন। দেড় থেকে ২ মাস পরপর একবার এই বাড়িতে আসতেন। এক-দুই দিন থেকে আবারও চলে যেতেন।’

তিনি বলেন, ‘নিখোঁজের আগের দিন তিনি এখানে এসেছিলেন। রাতে বাড়ির দ্বিতীয় তলায় তার স্বামীর সঙ্গে ছিলেন।

‘পরে রাত ১১টার দিকে শুনি, তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি দ্বিতীয় তলা থেকে একটি বালতি নিয়ে নিচে এসেছিলেন পানি নিতে। পরে তার স্বামী কিছু দূরে এগিয়ে গিয়ে জানান, রহিমার এক জোড়া স্যান্ডেল ও ওড়না পাওয়া গেছে।’

অন্য নারীকে মা দাবি

২২ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহে ১২ দিন আগে উদ্ধার হওয়া এক নারীর মরদেহকে রহিমা বেগমের বলে দাবি করেন তার মেয়েরা। ওই রাত পৌনে ১২টার দিকে মরিয়ম মান্নান ফেসবুক এক পোস্টে বলেন, ‘আমার মায়ের লাশ পেয়েছি আমি এইমাত্র।’

উদ্ধারের পর নিশ্চুপ মরিয়মের মা, আশ্রয়দাতারা হেফাজতে

২৩ সেপ্টেম্বর সকালে রহিমার মেয়ে মরিয়ম মান্নান, মাহফুজা আক্তার ও আদুরী আক্তার ফুলপুর থানায় পৌঁছান।

ওই সময় পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয় ওই নারীর ছবিসহ পরনে থাকা আলামতগুলো মেয়েদের দেখান। মরিয়ম মান্নান ছবিসহ সালোয়ার-কামিজ দেখে দাবি করেন, এটিই তার মায়ের মরদেহ।

মরিয়ম মান্নান সে সময় সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘২৭ দিন ধরে আমার মা নিখোঁজ। আমরা প্রতিনিয়ত মাকে খুঁজছি। এরই মধ্যে গত ১০ সেপ্টেম্বর ফুলপুর থানায় অজ্ঞাতপরিচয় নারীর মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে আমরা এখানে এসেছি। সালোয়ার-কামিজ ছাড়াও ছবিতে আমার মায়ের শরীর, কপাল ও হাত দেখে মনে হয়েছে, এটাই আমার মা।’

উদ্ধারের পর নিশ্চুপ মরিয়মের মা, আশ্রয়দাতারা হেফাজতে

সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে মরিয়মকে জানানো হয়, ডিএনএ টেস্ট ছাড়া মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

ফুলপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মোতালেব চৌধুরী শুক্রবার নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘মরিয়মের মায়ের বয়স ৫৫ বছর। আমরা যে গলিত মরদেহটি উদ্ধার করেছি, তার আনুমানিক বয়স ২৮ থেকে ৩২ বছর মনে হচ্ছে। এসব দিক বিবেচনায় মরদেহটি তার মায়ের নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।’

আরও পড়ুন: বস্তাবন্দি মরদেহ মরিয়ম মান্নানের মায়ের কি না সংশয়

ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘গত ১০ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বওলা ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রাম থেকে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহটির পরনে তখন গোলাপি রঙের সালোয়ার, গায়ে সুতির ছাপা গোলাপি, কালো-বেগুনি ও কমলা রঙের কামিজ এবং গলায় গোলাপি রঙের ওড়না প্যাঁচানো ছিল।

‘পরে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে না পেরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে ১২ সেপ্টেম্বর দাফন করা হয়। ডিএনএ টেস্ট করতে প্রয়োজনীয় আলামতও সংরক্ষণ করা হয়েছে।’

ওসি বলেন, ‘মরিয়ম মান্নান ওই মরদেহটি তার মা রহিমার দাবি করলেও নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করতে পারেননি। চূড়ান্তভাবে মরদেহ শনাক্তে মরিয়মের ডিএনএ টেস্ট করা প্রয়োজন।’

এখন কী বলছেন মরিয়ম মান্নান

মা রহিমা বেগমকে উদ্ধার নিয়ে ফেসবুকে কয়েকটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন মরিয়ম মান্নান। শনিবার রাত ১১টা ৩৭ মিনিটে দেয়া স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ! আলহামদুলিল্লাহ! এখন আমার থেকে খুশি আর কেউ নেই! খুলনার মহেশ্বরপাশায় নিখোঁজ আমার মাকে অক্ষত অবস্থায় ফরিদপুর থেকে উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

‘এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা দৌলতপুর থানার এসআই লুৎফুল হায়দার। কেএমপি পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি আমাকে নিশ্চিত করেছেন।’

উদ্ধারের পর নিশ্চুপ মরিয়মের মা, আশ্রয়দাতারা হেফাজতে

রোববার ভোর ৪টা ২৮ মিনিটে দেয়া আরেক স্ট্যাটাসে মরিয়ম তাকে ভুল না বোঝার আকুতি জানিয়েছেন। তিনি লেখেন, ‘সন্তান মাকে খুঁজবে খুব স্বাভাবিক। আপনার মা হারিয়ে গেলে আপনিও খুঁজতেন। ফুলপুরের লা* পর্যন্ত গিয়েছি মাকেই খুঁজতে। ফুলপুর থানার ওসিকে আমি তাদের দেয়া একটা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেই কল দেই। ওখানে যাই, ডিএনএ টেস্টের জন্য আবেদন করি।

‘আমার মাকে আমি খুঁজেছি। সব জায়গায় যেয়ে একটা কথাই বলেছি, আমার মাকে চাই। মা যদি আত্নগো** করেন, তাকে এনে শাস্তি দিন। তাও আমার মা আমার চোখের সামনে এনে দিন দয়া করে।’

উদ্ধারের পর নিশ্চুপ মরিয়মের মা, আশ্রয়দাতারা হেফাজতে

তিনি বলেন, ‘আজকে মাকে পাওয়া গিয়েছে। আমি মায়ের উদ্দেশ্যে যাচ্ছি। মায়ের সঙ্গে এখনও দেখা হয়নি, কথাও হয়নি। মায়ের কোনো ভিডিও অথবা অডিও পাইনি যেখানে মা বলেছেন তিনি আত্মগোপন করেছেন।

‘সকলের কাছে কাছে গিয়েছি মাকে খুঁজে পেতে। যাদের কাছে গিয়েছি তারা জানেন কী চেয়েছি আমি। মাকে চাওয়া ছাড়া আর কিছু চাওয়া আমার ছিল নাহ; এখনও নেই। দয়া করে আমার মাকে আমার মায়ের সঙ্গে আমার দেখা না হওয়া পর্যন্ত আমাকে ভুল বুঝবেন না। আমি মাকে খুঁজেছি; সন্তান হিসেবে আমার দায়িত্ব তাকে খোঁজা।’

মরিয়ম লেখেন, ‘মা এই তিরিশ দিন কোথায় ছিল, কীভাবে ছিল, সেটা আপনাদের মতো আমারও প্রশ্ন। আমার মায়ের সঙ্গে আমাকে কথা বলতে দিন। আমার মায়ের কাছে পৌঁছানো পর্যন্ত আমাকে সহযোগিতা করুন। মা যদি আত্মগোপন করেও থাকেন, তবুও তাকে খোঁজার দায়িত্ব আমার। আমি মাকে খুঁজতেছি বলে আমাকে বলা হচ্ছে মায়ের আত্মগোপনে আমি জড়িত? তাহলে আমার কী করা উচিত ছিল? যখন শুনেছি আমার মা নিখোঁজ, তখন চুপ করে বসে থাকা উচিত ছিল? যারা প্রথম দিন থেকে বলছিলেন মা আত্মগোপন করেছেন তাদের কথা শুনে মাকে আর খুঁজতাম না? মাকে খুঁজেছি বলে আমাকে দোষী করা হবে?’

‘আপনারা আমাকে যে যাই দোষ দিন না কেন, প্রথম দিন থেকে আমি ছুটতেছি মায়ের জন্য। আজকে পেয়েও গিয়েছি। বারবার বলেছি মা আত্মগোপন করলে সামনে আনুন, শাস্তি দিন। আমার কলিজা জুড়াক। আমার কলিজা শান্ত হইছে। মায়ের চেহারাটা দেখেই আমার শান্তি। আপনারা যে যাই বলেন, এখন আমার মা আমার সামনে।’

মাকে পেতে ‘সহায়তা করায়’ অনেককে ধন্যবাদ জানিয়ে মরিয়ম মান্নান লেখেন, ‘মাকে খুঁজে পাওয়ার লড়াই ছিল আমার। আপনারা সহোযোগিতা করেছেন। আপনাদের সহযোগিতায় আজকে আমার মাকে খুঁজে পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ! প্রথম দিনের মতোই আজকেও আমার একটাই চাওয়া, মাকে ছাড়া কিছুই চাই না। মাকে নিয়ে এই খুলনা শহর ছেড়ে দিব, মাকে নিয়ে দূরে চলে যাব। মাকে চাওয়া ছাড়া কিছুই চাওয়ার নাই।

‘যে জায়গা নিয়ে মামলা, সেই জায়গাও চাই না। শুধু মাকে চাই। মাকে আমার কাছে ন পাওয়া পর্যন্ত আপনাদের সকলের সহোযোগিতা কামনা করছি এবং আমি জানি একজন মাকে তার সন্তানদের কাছে ফিরিয়ে দিতে পৃথিবীর সকল মানুষ আমার পাশে থাকবেন।’

তিনি আরও লেখেন, ‘আমি খুশি, এক মুহূর্তের জন্যও বিচলিত নই। মাকে খুঁজতে যেয়ে যদি আমাকে দোষী হতে হয়, আমি সেই দোষ মাথা পেতে নেয়ার শক্তি এবং সাহস রাখি, ইনশাআল্লাহ।’

আরও পড়ুন:
মায়ের আত্মগোপনে মরিয়ম মান্নানও জড়িত!
মরিয়ম মান্নানের মাকে উদ্ধার, ছিলেন আত্মগোপনে

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Former Chief Secretary and MP Abul Kalam Azad arrested

সাবেক মুখ্য সচিব ও এমপি আবুল কালাম আজাদ গ্রেপ্তার

সাবেক মুখ্য সচিব ও এমপি আবুল কালাম আজাদ গ্রেপ্তার আবুল কালাম আজাদ। ফাইল ছবি
ডিএমপি ডিবি প্রধান বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর কলাবাগানে একটি বাসায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় আবুল কালাম আজাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও মামলা রয়েছে। তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে। রিমান্ড চেয়ে আগামীকাল রোববার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব ও জামালপুর-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে শনিবার সন্ধ্যায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ডিএমপি ডিবি প্রধান বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর কলাবাগান এলাকার একটি বাসায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় আবুল কালাম আজাদকে শনিবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও মামলা রয়েছে। তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়েছে। রিমান্ড চেয়ে আগামীকাল রোববার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

মো. আবুল কালাম আজাদ ২০১৫ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব হিসেবে নিয়োগ পান। এর আগে তিনি একই কার্যালয়ে সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তারও আগে তিনি অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ও বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আবুল কালাম আজাদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়কের দায়িত্বও পালন করেন।

সবশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জামালপুর-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন সাবেক আমলা আবুল কালাম আজদ। গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি এই পদ হারান।

আরও পড়ুন:
সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র বসুন্ধরা থেকে গ্রেপ্তার
নোয়াখালীর সাবেক এমপি একরাম কারাগারে
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা কামাল নাসের চৌধুরী গ্রেপ্তার
সাবেক এমপি সালাম মুর্শেদী গ্রেপ্তার
সাভার থানার মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক এমপি জ্যাকব

মন্তব্য

বাংলাদেশ
DB chief vows to end mirror room and rice hotel culture

‘আয়না ঘর’ ও ‘ভাতের হোটেল’ সংস্কৃতির অবসানে ডিবি প্রধানের অঙ্গীকার

‘আয়না ঘর’ ও ‘ভাতের হোটেল’ সংস্কৃতির অবসানে ডিবি প্রধানের অঙ্গীকার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে শনিবার প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেন অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক। ছবি: নিউজবাংলা
ডিবি অফিস এক সময় তারকাদের আড্ডাস্থল হয়ে ওঠার সমালোচনা করে অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, ‘ডিবি অফিস নায়ক-নায়িকাদের আড্ডাখানা নয়। এটা ক্ষতিগ্রস্তদের আস্থার জায়গা হবে, ন্যায়বিচার পাওয়ার জায়গা হবে।’

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়কে ক্ষতিগ্রস্তদের আস্থার জায়গা হিসেবে পরিণত করার দৃঢ় অঙ্গীকার করেছেন সংস্থাটির অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক। এখানে কোনো ‘আয়না ঘর’ ও ‘ভাতের হোটেল’ সংস্কৃতি থাকবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে শনিবার আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক ডিবি অফিস এক সময় তারকাদের আড্ডাস্থল হয়ে ওঠার বিষয়টিরও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘ডিবি অফিস নায়ক-নায়িকাদের আড্ডাখানা নয়। এটা ক্ষতিগ্রস্তদের আস্থার জায়গা হবে, ন্যায়বিচার পাওয়ার জায়গা হবে।’

জবাবদিহি ও সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘ডিবি একটি জনবান্ধব সংগঠনে পরিণত হচ্ছে। কারও বিরুদ্ধে অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

‘আমরা ডিবি অফিসকে জনগণের আস্থা ও ভালোবাসার জায়গা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। অসহায় ও ভুক্তভোগীদের সমস্যার কথা শোনা হবে, তারা আইনি সহায়তা পাবেন।’

রেজাউল করিম আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘আমার নজরদারিতে কেউ নির্যাতনের শিকার হবেন না। ডিবি অফিসের কথা শুনলে মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। শুধু অপরাধীরাই আমাদের ভয় পাবে। আমি যতদিন এই পদে আছি ততদিন সততা ও পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাব।’

অতীতের পুলিশি ব্যর্থতা তুলে ধরতে গিয়ে রেজাউল করিম মল্লিক আগের ঘটনার কথা তুলে ধরেন যেখানে ‘উচ্চাভিলাষী ও অপেশাদার’ কর্মকর্তারা পুরো পুলিশ বাহিনীর অবস্থানের সঙ্গে আপস করেছিলেন।

তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়া এবং পূর্ববর্তী সরকারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান ছিল নজিরবিহীন। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন আমরা আগে কখনও হইনি।

‘আমার নেতৃত্বে এ ধরনের ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি হবে না। ডিবি অফিসে অন্যায় সহ্য করা হবে না।’

বাহিনীর কলঙ্কিত ভাবমূর্তি পুনর্গঠনে মল্লিক বলেন, ‘ডিবিতে দক্ষ ও পেশাদার কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, যারা সংগঠন পুনর্গঠনে সমন্বিতভাবে কাজ করছেন।

‘ডিবির হারানো ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার এবং সাধারণ মানুষ যাতে অন্যায় নিপীড়ন থেকে মুক্ত হতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা আইনের যথাযথ প্রক্রিয়ার মধ্যে থেকে কাজ করছি।’

স্বচ্ছতার প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে রেজাউল করিম বলেন, ‘আমি আইনের ঊর্ধ্বে নই। ডিবির কোনো সদস্য অনৈতিক বা অপেশাদার কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে তাদের জবাবদিহি থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে না।’

আরও পড়ুন:
ডিএমপি ডিবির সাবেক ডিসি মশিউর গ্রেপ্তার
বাংলাদেশকে ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি ডলার দেবে আইএসডিবি
গণমাধ্যমে মিথ্যা বিবৃতি দেয়ানো হয়: ৬ সমন্বয়ক
ডিবি থেকে ছাড়া পাওয়ার পর যা বললেন চার সমন্বয়ক
ডিবি হেফাজত থেকে ছাড়া পেলেন ৬ সমন্বয়ক

মন্তব্য

বাংলাদেশ
A fire on a ship can be sabotage BSC

জাহাজে আগুন নাশকতা হতে পারে: বিএসসি

জাহাজে আগুন নাশকতা হতে পারে: বিএসসি চট্টগ্রামে আগুন ধরে যাওযা ট্যাংকার। ছবি: সংগৃহীত
মাহমুদুল মালেক বলেন, ‘রাত সাড়ে ১২টায় জাহাজে কোনো কাজ ছিল না। জাহাজে চারটা পয়েন্টে আগুন দেখা যায়। তাই আমাদের আশঙ্কা নাশকতা।’

বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) দুইটি অয়েল ট্যাংকারে আগুন জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার অপচেষ্টা বলে আশঙ্কা করছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কমোডর মাহমুদুল মালেক।

বিএসসির সম্মেলনকক্ষে শনিবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আশঙ্কার কথা জানান।

মাহমুদুল মালেক বলেন, ‘রাত সাড়ে ১২টায় জাহাজে কোনো কাজ ছিল না। জাহাজে চারটা পয়েন্টে আগুন দেখা যায়। তাই আমাদের আশঙ্কা নাশকতা।

‘কেননা কয়েক দিন আগে বাংলার জ্যোতিতে আগুন লেগেছিল। এবার আগুন লাগল বাংলার সৌরভে। তাই আমরা ধারণা করছি, এ ঘটনা জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা হুমকিতে ফেলার অপচেষ্টা। এই ঘটনায় কারা জড়িত, তা শনাক্ত করা উচিত।’

মাহমুদুল মালেক বলেন, ‘এটি লাস্ট সার্ভিস হওয়ার কথা ছিল বাংলার সৌরভের। নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড ও বন্দরের সাতটি টাগ একযোগে কাজ করে। আগুন নেভানোর দেড় ঘণ্টা পর আবার আগুন ধরে যায়।’

বিএসসির এমডি বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে নাশকতার বিষয় নিশ্চিত হলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি বলেন, বাংলার সৌরভে ১১ হাজার ৫৫ টন অপরিশোধিত তেল ছিল। ৪৮ জন ক্রু ও ওয়াচম্যান ছিল। তাদের জীবিত উদ্ধার করা হয়েছিল। এর মধ্যে বিএসসির স্টুয়ার্ট সাদেক মিয়া হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান।

তিনি জানান, বিএসসির টেকনিক্যাল ডিরেক্টরকে প্রধান করে আট সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৩০ হাজার টনের একটি বিদেশি জাহাজ চার্টারিং করা হয়েছে। এসপিএম চালু হলে লাইটারিং বন্ধ হবে।

এর আগে শুক্রবার রাত পৌনে ১টার দিকে ‘বাংলার সৌরভ’ নামের জাহাজে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে যায়। নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড ও বন্দরের সাতটি টাগবোট একযোগে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে, কিন্তু আগুন নেভানোর দেড় ঘণ্টা পর আবার আগুন ধরে যায়।

পরে প্রায় চার ঘণ্টা পর আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। একইভাবে গত সোমবার বিএসসির আরেক জাহাজ বাংলার জ্যোতিতেও বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে যায়। তখন তিনজনের প্রাণহানি হয়।

বছরে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) ১২ থেকে ১৪ লাখ টন অপরিশোধিত তেল পরিবহন করে বিএসসি। বড় জাহাজে বিদেশ থেকে এসব তেল আমদানি করে বহির্নোঙরে আনা হয়। এরপর সাগরে বিএসসির বাংলার জ্যোতি ও বাংলার সৌরভে লাইরারিং করে কর্ণফুলী নদীর ডলফিন জেটিতে ইস্টার্ন রিফাইনারিকে দেয়া হয়।

আরও পড়ুন:
ধানমণ্ডিতে বহুতল ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে, আহত তিনজনকে উদ্ধার
গোপালগঞ্জে আ.লীগের বিক্ষোভ, সেনাবাহিনীর গাড়িতে অগ্নিসংযোগ
কুমিল্লায় সাবেক কাউন্সিলরের বাড়িতে আগুন দিতে গিয়ে ছয়জনের মৃত্যু
চট্টগ্রামে রিয়াজউদ্দিন বাজারে আগুন, দম বন্ধ হয়ে তিনজনের মৃত্যু
৫ ঘণ্টায় নির্বাপণ গাজীপুরের ঝুট গুদামের আগুন

মন্তব্য

বাংলাদেশ
I want to run Badda Ekkana

‘বদ্দা, এক্কানা চালাই চাই’

‘বদ্দা, এক্কানা চালাই চাই’ চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজার এলাকা থেকে চোরাই মোটরসাইকেলসহ গ্রেপ্তার সাইফুল। ছবি: নিউজবাংলা
মোটর সাইকেলটি বিক্রি হবে ৬৫ হাজার টাকায়। দরদাম ঠিক হওয়ার পর ক্রেতা একটু চালিয়ে দেখতে চায়। পরে চাবি নিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চোখের সামনে দিয়েই শাঁ করে চালিয়ে পালিয়ে যায় ক্রেতারূপী চোর।

মোটর সাইকেলটি বিক্রি হবে ৬৫ হাজার টাকায়। দরদাম ঠিক হওয়ার পর ক্রেতার আবদার- ‘বদ্দা, এক্কানা চালাই চাই (একটু চালিয়ে দেখতে চাই)। পরে বিক্রেতার কাছ থেকে চাবি নিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চোখের সামনে দিয়েই শাঁ করে চালিয়ে পালিয়ে যায় ক্রেতারূপী চোর।

ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জার টেক এলাকায়। শুক্রবার সেই প্রতারককে বন্দর নগরীর লালখান বাজার থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ভুক্তভোগী পোশাক কারখানার নিরাপত্তা রক্ষী পটিয়ার কোলাগাঁও এলাকার রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘২৬ সেপ্টেম্বর পটিয়া উপজেলা থেকে একজন ক্রেতা আসেন আমার ১০০ সিসি চট্ট-মেট্রো হ-১৮-০১৭৮ মোটর বাইকটি কেনার জন্য। দরদামের পর ৬৫ হাজার টাকায় মোটরসাইকেলটি বিক্রি করতে রাজি হই।

‘এরপর দুই-এক চক্কর চালিয়ে দেখতে চাইলে আমি তাকে চাবি দেই। হঠাৎ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সে বাইক নিয়ে উধাও! চারদিকে খোঁজ করে পরে থানায় মামলা করি। আজ পুলিশ সেই প্রতারককে গ্রেপ্তার ও আমার বাইক উদ্ধার করতে সমর্থ হয়।’

প্রতারক যেভাবে পুলিশের জালে

মোবাইল ফোন থেকে কল করাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করেও মোটর সাইকেল নিয়ে হাওয়া হয়ে যাওয়া প্রতারকের সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে বন্ধুর মাধ্যমে ক্রেতা সেজে ওই প্রতারকের সঙ্গে যোগাযোগ করে চট্টগ্রামের লালখান বাজারে দেখা করার দিনক্ষণ ঠিক হয়। শুক্রবার পুলিশের সাহায্য নিয়ে হাতেনাতে ধরা হয় প্রতারক সাইফুল ইসলামকে।

জানা যায়, প্রতারক সাইফুল ইসলাম প্রকাশ মানিক নগরীর ডবলমুরিং থানাধীন ধনিয়াপাড়া মাজার গলির আবু জাফরের বাড়িতে থেকে এভাবে প্রতারণা করে বেড়ায়। তবে তার বাড়ি ফেনী জেলায় বলে জানায়। নিজেকে কখনও পটিয়া শান্তির হাট এলাকার ব্যবসায়ী পরিচিয় দেয়, কখনও নগরীতে চাকরি করে বলে জানায়।

পুলিশ জানায়, ৩ অক্টোবর দায়ের হওয়া মামলার সূত্র ধরে বাদীর সহযোগিতায় প্রতারককে নগরীর লালখান বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো হয়।

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, এ ঘটনায় ভিকটিমের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি আমলে নিয়ে থানায় একটি মামলা হয়। পরে প্রতারককে গ্রেপ্তার ও গাড়িটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Hizb ut Tahrir media coordinator Imtiaz Saleem arrested

হিযবুত তাহরীরের মিডিয়া সমন্বয়ক ইমতিয়াজ সেলিম গ্রেপ্তার

হিযবুত তাহরীরের মিডিয়া সমন্বয়ক ইমতিয়াজ সেলিম গ্রেপ্তার হিযবুত তাহরীরের মিডিয়া সমন্বয়ক ইমতিয়াজ সেলিম। ছবি: ডিএমপি
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের  মিডিয়া সমন্বয়ক ইমতিয়াজ সেলিমকে (৪২) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ ভোরে (৪ অক্টোবর, ২০২৪) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করে।’

নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের মিডিয়া সমন্বয়ক ইমতিয়াজ সেলিমকে (৪২) গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।

ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান শুক্রবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের মিডিয়া সমন্বয়ক ইমতিয়াজ সেলিমকে (৪২) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ ভোরে (৪ অক্টোবর, ২০২৪) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করে।

‘তার বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা রয়েছে। এ ছাড়া পল্লবী ও খিলগাঁও থানার আরও দুটি মামলার এজাহারনামীয় আসামি সে।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘উল্লেখ্য, তার বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তাকে বিজ্ঞ আদালতে হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন।’

আরও পড়ুন:
সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র বসুন্ধরা থেকে গ্রেপ্তার
নোয়াখালীর সাবেক এমপি একরাম কারাগারে
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা কামাল নাসের চৌধুরী গ্রেপ্তার
সাবেক এমপি সালাম মুর্শেদী গ্রেপ্তার
সাভার থানার মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক এমপি জ্যাকব

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Former Food Minister Sadhan Chandra arrested from the capital

সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র বসুন্ধরা থেকে গ্রেপ্তার

সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র বসুন্ধরা থেকে গ্রেপ্তার সাধন চন্দ্র মজুমদার। ফাইল ছবি
ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) তালেবুর রহমান জানান, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারকে বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর ভাটারা থানাধীন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) তালেবুর রহমান।

গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়ার পর সাধন চন্দ্র মজুমদারের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়।

ডিবির ওই কর্মকর্তা জানান, সাধন চন্দ্র মজুমদারকে কোন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে তা পরে জানানো হবে।

প্রসঙ্গত, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সবশেষ ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে নওগাঁ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাধন চন্দ্র মজুমদার। ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে। সাপাহার, পোরশা ও নিয়ামতপুর এই তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত নওগাঁ-১ সংসদীয় আসন।

আরও পড়ুন:
পতিত সরকারের চার মন্ত্রী আরও দুই হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার
আরেক হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে মোজাম্মেল বাবুকে
সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ গ্রেপ্তার
সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বারিধারা থেকে গ্রেপ্তার
সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান কারাগারে

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Pir killed in his own house on the roof

ছাতকে নিজ ঘরে পীর খুন

ছাতকে নিজ ঘরে পীর খুন আব্দুল হান্নান পীরকে হত্যার খবরের পর ছাতকের সৈদেরগাঁওয়ে তার বাড়ির সামনে ভক্ত-শুভানুধ্যায়ীরা ভিড় জমান। ছবি: নিউজবাংলা
আব্দুল হান্নান পীর ছাতকের সৈদেরগাঁওয়ের নিজ বাড়িতে প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবারও ফজরের নামাজের পর বাইরের একটি ঘরে এসে বসে ছিলেন। ওই সময় দুর্বৃত্তরা তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেটে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

সুনামগঞ্জের ছাতকে আশি বছরের বেশি বয়সী এক পীর খুন হয়েছেন। সকালে নিজ গ্রাম সৈদেরগাঁওয়ের (ধারণ) বাড়িতে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ওই পীরের নাম সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ওরফে আব্দুল হান্নান পীর।

গ্রামের লোকজন জানান, বয়োজ্যেষ্ঠ এই পীর বাড়ির সামনের দিকের একটি ঘরে প্রতিদিন ফজরের নামাজ পড়ে এসে বসতেন। অনেকে তার কাছ থেকে এসে পানিপড়াও নিতেন।

আব্দুল হান্নান পীর প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবারও ফজরের নামাজের পর ওই ঘরে এসে বসেছিলেন। ওই সময় দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেটে নিয়ে যাওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।

আব্দুল হান্নান পীরের মৃত্যুর খবর শুনে ভক্ত-শুভানুধ্যায়ীরা তার বাড়ির সামনে ভিড় জমান।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসাইন জানান, ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন আব্দুল হান্নান পীর। কারা, কেন তাকে হত্যা করলো এ বিষয়ে জানার জন্য ঘটনাস্থলে পুলিশ কাজ করছে।

আরও পড়ুন:
জন্মদিনের অনুষ্ঠানে তরুণীকে ডেকে নিয়ে হত্যা, কথিত প্রেমিক আটক 
গুলশানে মুদি দোকানে বৃদ্ধসহ দুজনের গলাকাটা মরদেহ

মন্তব্য

p
উপরে