রাঙ্গামাটির সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সদস্য ফিরোজা বেগম চিনুর মেয়ে নাজনীন আনোয়ার ছয় সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করে যে মামলা করেছেন, তাতে ফেসবুকে অপপ্রচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই সাংবাদিকরা কী করেছেন, সেটির খোঁজখবর নিতে গিয়ে দেখা যায়, একজন লিখেছেন, ‘চিনু বেগম কি আইনমন্ত্রীর চেয়ে শক্তিশালী’।
গত জুনে যে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল, তার জামিনের পর অন্য একজন লেখেন- ‘পাহাড়ের ডন চিনু বেগমের কী হবে।'
চিনুকন্যার দাবি, তিনি ও তার মা এসব ফেসবুক পোস্টে মারাত্মক মানসিক আঘাত পেয়েছেন। তাই মামলা করেছেন।
১৪ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তাদের মধ্যে রাজধানীকেন্দ্রিক দুটি টেলিভিশনের দুজন রিপোর্টার ও রাঙ্গামাটির চারজন সাংবাদিকের নাম রয়েছে।
বিচারক মোহাম্মদ জহিরুল কবির মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করে আগামী ১৩ নভেম্বর প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
যাদের বিরুদ্ধে মামলা
যাদের এই মামলায় আসামি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে দুজন জাতীয় টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিক। তারা হলেন দীপ্ত টিভির বিশেষ প্রতিনিধি বায়েজিদ আহমেদ ও সংবাদভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার অনির্বাণ শাহরিয়ার।
বাকি যে চারজনের নাম আছে তারা হলেন দৈনিক পার্বত্য চট্টগ্রাম ও পাহাড় টোয়েন্টিফোর ডটকম সম্পাদক ফজলে এলাহী, জাগো নিউজের রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি সাইফুল হাসান, টিবিএসের খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি দিদারুল আলম ও বণিক বার্তার রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি প্রান্ত রনি।
অজ্ঞাতনামা আরও অনেককে আসামি করা হয়।
গত জুনেও ফজলে এলাহীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছিলেন চিনুকন্যা নাজনীন আনোয়ার। এই মামলার কারণ ছিল, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও পাহাড় টোয়েন্টিফোর ডটকমের একটি প্রতিবেদন, যেটি ছিল রাঙ্গামাটির ডিসি বাংলো পার্ক অবৈধভাবে দখল করে রাখার বিষয়ে।
দুই বছরের জন্য অন্য একজনের নামে পার্কটি ব্যবহারের অনুমতি নিয়ে নির্ধারিত সময়ের পরও তা দখলে রেখেছিলেন নাজনীন আনোয়ার নিপুণ।
সেই মামলার প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকরা ফেসবুকে যে লেখালেখি করেন, সেটিই নতুন মামলার উপজীব্য।
যে ফেসবুক পোস্টের কারণে মামলা
নাজনীন আনোয়ার নিপুণের নতুন মামলায় বলা হয়েছে, আসামিরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করার কারণে মামলার বাদী এবং তার মা ফিরোজা বেগম চিনু সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে অপদস্থ হয়ে মানসিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন।
আসামিরা কী লিখেছিলেন
বায়েজিদ আহমেদ ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘কে বেশি ক্ষমতাবান, আইনমন্ত্রী নাকি রাঙ্গামাটির আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি চিনু?’
আইনমন্ত্রী একাধিক আলোচনায় জানিয়েছিলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করতে হলে মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু অনুমতি ছাড়াই সেই মামলা নেয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন রায়েজিদ।
আরেক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘রাঙ্গামাটিতে আওয়ামী লীগের বিতর্কিত নেত্রী ও সাবেক এমপি চিনু করা আইসিটি আইনের মামলায় গ্রেপ্তার সাংবাদিক ফজলে এলাহীর অনতিবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি চাই।’
অনির্বাণ শাহারিয়ারের পোস্টটি ছিল এমন, ‘জামিন হয়েছে, মিথ্যা মামলা দেয়ার। লেডি ডন চিনুর বিচার কে করবে?’
ফজলে এলাহী গত জুনে গ্রেপ্তারের পর জামিন পাওয়ার পর এই প্রতিক্রিয়া ছিল অনির্বাণের।
জামিন হওয়ার আগে তিনি লিখেছিলেন, ‘ফজলে এলাহীর মুক্তি কেন হবে না। লেডি ডন চিনু কেন মিথ্যা মামলার শাস্তি পাবে না?’
আরেক পোস্টে লেখেন, ‘মগের মুল্লুক…! স্বাধীন সাংবাদিকতা বাধাদানে মামলা হওয়া উচিত…! চিনু দ্য লেডি ডন…!’
প্রথম মামলাটি যার বিরুদ্ধে হয়েছিল, সেই ফজলে এলাহী তাকে গ্রেপ্তারের সময় লিখেছিলেন, ‘ফিরোজা বেগম চিনু ও তার মেয়ের মামলায় আমার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি ওয়ারেন্ট দেখিয়ে আমায় নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। সাংবাদিকতার এই প্রতিদান? আমার মৃত্যুর জন্য চিনু ও তার মেয়েকে দায়ী করে গেলাম। রাঙ্গামাটিবাসী এদের বিচার করিও।’
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তরে এসে চিনুকন্যা দাবি করেছেন, ফেসবুকে এমন লেখার কারণে তার ও তার মায়ের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। যে কেউ যে কোনো সময় মারা যেতে পারেন, কিন্তু এই ঘটনা ঘটলে এখন তার মাকেই দায়ী করা হবে।
সাংবাদিক সাইফুল হাসানের পোস্টে কারও নাম উল্লেখ ছিল না। ফজলে এলাহীকে গ্রেপ্তারের পর তিনি লেখেন, ‘এলাহীকে নিয়ে চিন্তা করছি না, চিন্তা করছি ভাই তোদের নিয়ে… কী যে হবে তোদের! এটা এলাহী, ওরে নিয়ে বড্ড ভয়। সে বের হয়ে যে কী করবে! আজ রাতে সেসব ছক আঁকবে আমার যা অভিজ্ঞতা। সাধু সাবধান।’
এক পোস্টে সাইফুল লেখেন, ‘খুশি হইও না মনু, খেলা আবি বাকি হে।’ অর্থাৎ এই গণমাধ্যমকর্মীর কোনো লেখাতেই চিনু বা তার মেয়ের নাম উল্লেখ নেই।’
আরেক গণমাধ্যমকর্মী দিদারুল আলম লেখেন, ‘‘ফজলে এলাহী কিন্তু বেশ সুবিধার না। এই লোকটাকে যত তাড়াতাড়ি কারাগার থেকে মুক্তি করা যায় ততই ভালো, নইলে আবার দেখবেন যে, কারাগার থেকে বেরিয়ে ‘অচলায়তনের ফিরিস্তি’ লেখা শুরু করে দিয়েছে।’’
পরে আরও এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘এই প্রতিবেদনটি সম্পাদনা করার দায়ে যদি ফজলে এলাহী ভাইকে কারাভোগ করতে হয়, তবে আমাকেও কারাগারে নেয়া হোক।’ অর্থাৎ তিনিও কারও নাম উল্লেখ করেননি।
একটি জাতীয় দৈনিকে ২০১৪ সালে প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যে অমার্জনীয় ভুল’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনের লিংক শেয়ার করে দিদারুল আরেক পোস্টে লেখেন, ‘পড়েছি ২০১৪ সালে। দুর্বল মেধার হলেও মনে রেখেছি চিনু ও এলাহীর নাম দুটো।’
গণমাধ্যমকর্মী প্রান্ত রনি পোস্ট দিয়েছেন, ‘সাংবাদিক ফজলে এলাহীর প্রতিবেদন ১০০ ভাগ সত্য। পুলিশের গোপন প্রতিবেদন ও জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন তার প্রমাণ। ১০০ ভাগ সত্য সংবাদ করার পরও সাংবাদিককে জেলে যেতে হবে?’
তিনিও কারও নাম উল্লেখ করে পোস্ট দেননি।
কেন মামলা করেছেন
মামলা করার মূল কারণ হিসেবে নাজনীন আনোয়ার দাবি করছেন, আসামিরা ফেসবুকে কটাক্ষ করেছেন।
ফেসবুকে স্ট্যাটাসের কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করাটার কি যুক্তি আছে- জানতে চাইলে নাজনীন আনোয়ার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার কাছে এটা আমার এবং আমার পরিবারের আত্মসম্মানের জায়গা মনে হয়েছে। আমার মায়ের প্রভাব খাটানোর বিষয়ে বলা হয়েছে যেটা আমার আত্মসম্মানের বিষয়।
‘আমার আত্মসম্মানের যে জায়গাটা খর্ব হয়েছে সেই আবেদনের সর্বোচ্চ যে জায়গাটা সেখানে দিয়েছি। আমার জায়গা থেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে বলেই আমি মামলা করেছি।’
কারও নাম উল্লেখ না থাকলেও দিদারুল আলমের একটি পোস্টে তাদের হুমকি দেয়া হয়েছে ভেবেছেন চিনুকন্যা। বলেন, ‘আমি এলাহীকে চিনি। সে বের হলে খবর আছে। হ্যান করবে, ত্যান করবে ইত্যাদি।’
দিদারুলের স্ট্যাটাসে কারও নাম উল্লেখ নেই, তাহলে মামলা কেন?- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এই পোস্টে সমস্যা আমি বলিনি। এটা আদালত বিশ্লেষণ করবে। আমি বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না।’
‘এই স্ট্যাটাসে মামলা!’
ফেসবুকে এই সাধারণ একটি পোস্টের কারণে মামলা খেতে হবে জেনে বিস্মিত দীপ্ত টিভির বিশেষ প্রতিনিধি বায়েজিদ আহমেদ। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘রাঙ্গামাটিতে সাংবাদিক ফজলে এলাহী ফিরোজা বেগম চিনুর বিরুদ্ধে রিপোর্ট করেছেন। এই কারণে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন। একজন সংবাদকর্মী দুর্নীতি ও অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের পর তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা খান, আমার নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে এর প্রতিবাদ করা। তাই আমি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়েছি।’
আইনমন্ত্রীর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আইনমন্ত্রী বলেছেন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার আগে অবশ্যই আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিতে হবে। আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া এই ভদ্র মহিলা ক্ষমতার অপব্যবহার করে ফজলে এলাহীকে জেলে নিয়েছেন। এ কারণে আমি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছি যে, ‘কে বেশি ক্ষমতাবান, আইনমন্ত্রী নাকি রাঙ্গামাটির আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি চিনু’।”
তিনি বলেন, ‘এর কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আটটি ধারায় আমিসহ ছয়জন সাংবাদিককে আসামি করে মামলা করেছেন। আমার কাছে মনে হয়েছে উনি ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে গণমাধ্যমের টুঁটি চেপে ধরার চেষ্টা করছেন।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই ধরনের মামলা নিন্দনীয়। আমরা চাই যে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সেটা প্রত্যাহার করা হোক।’
নাম উল্লেখ না করে এসব পোস্টের কারণে মামলার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মামলাটি এখনও আদালত আমলে নেয়নি। তদন্ত করার জন্য পিবিআইকে বলেছে। পিবিআই যদি তদন্ত করে কিছু না পায় তাহলে মামলা বাতিলও করে দিতে পারে।’
আরও পড়ুন:ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান চলাকালে গত ৫ আগস্ট রাজধানীর চানখাঁরপুলে গুলি করে ছয় জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ে দ্বিতীয় দিনের শুনানি শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আসামি পক্ষে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চাওয়ার শুনানি শুরু হয়। ট্রাইব্যুনালে এই মামলায় গ্রেফতার চার আসামি হাজির রয়েছেন।
ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ গঠন সংক্রান্ত প্রথম কোন শুনানি শুরু হওয়ায়, সে দিনটিকে ঐতিহাসিক বলে উল্লেখ করেন চিফ প্রসিকিউটর।
এর আগে, এই মামলার পলাতক চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে গত ৩ জুন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দেয়া হয়।
তবে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরেও পলাতক আসামীরা হাজির না হওয়ায়, তাদের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী মো. কুতুবউদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এই মামলার অভিযোগে বলা হয়, রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় আসামিগণ কর্তৃক নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা হয় এবং শহীদ শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদি হাসান জুনায়েদ, শহীদ মো ইয়াকুব, শহীদ মো রাকিব হাওলাদার, শহীদ মো ইসমামুল হক ও শহীদ মানিক মিয়াকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে।
জাজ্বল্যমান এ সব অপরাধের বিচার এখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
আদালত অবমাননার একটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার অপসারণের পর এটাই প্রথম কোনো আদালতের রায়, যাতে তাকে দণ্ডিত করা হয়েছে।
বুধবার (২ জুলাই) আইসিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
একই মামলায় গাইবান্ধা জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন নেতা শাকিল আকন্দ বুলবুলকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এই ধরনের মামলায় পলাতক আসামির জন্য আইনজীবী নিয়োগের পূর্ব নজির না থাকলেও ন্যায়বিচারের স্বার্থে শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রীয় খরচে একজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, গত বছরের ২৫ অক্টোবর শেখ হাসিনা ছাত্রলীগ নেতা শাকিলের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন।
সেই অডিও ক্লিপে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, ‘২২৬ জনকে মারার লাইসেন্স পেয়ে গেছি’—যা বিচারব্যবস্থার প্রতি সরাসরি হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে আদালত। পরে এই ঘটনায় আইসিটিতে মামলা করেন রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ৩০ এপ্রিল এ-সংক্রান্ত শুনানিতে দুই আসামিকে ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। ধার্য তারিখে তারা হাজির হননি। কিংবা আইনজীবীর মাধ্যমেও ব্যাখ্যা দেননি। সেদিন ট্রাইব্যুনাল দুই আসামিকে সশরীর হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দেওয়ার জন্য সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিতে নির্দেশ দেন।
পরদিন দুটি সংবাদপত্রে এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞপ্তিতে দুজনকে গত ৩ জুন ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়। সেদিনও তারা হাজির হননি। পূর্ণাঙ্গ শুনানির জন্য ১৯ জুন তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল।
১৯ জুন এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য করা হয় ২৫ জুন।
২৫ জুন মামলায় প্রস্তুতি নিতে অ্যামিকাস কিউরি মশিউজ্জামানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে এক সপ্তাহ সময় দেন ট্রাইব্যুনাল। সেদিনই এই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করা হয় ২ জুলাই। আজ দুই আসামিকে কারাদণ্ড দিয়ে রায় দিলেন ট্রাইব্যুনাল।
পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগে প্রাথমিকভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার দুদকের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকার পরও এই মামলা পরিসমাপ্তি করা হয়। গেল জানুয়ারিতে শুরু হওয়া অনুসন্ধানে ইতোমধ্যে পদ্মা সেতুর পরামর্শক নিয়োগে প্রাথমিকভাবে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণও মিলেছে।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, গায়ের জোরেই পদ্মা সেতু দুর্নীতি মামলায় আসামিদের অব্যাহতি দিয়েছিল তৎকালীন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সংস্থাটির চেয়ারম্যানের দাবি, বেশকিছু দুর্নীতির তথ্য মিলেছে। এই মামলায় আসামির অব্যাহতির পেছনে তৎকালীন কমিশনের দায় আছে কি না তাও খতিয়ে দেখার কথা জানান তিনি।
আব্দুল মোমেন বলেন, নতুন তদন্তে কারো সংশ্লিষ্টতা মিললে, তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতু পরামর্শক নিয়োগের বিষয়ে করা মামলা নিষ্পত্তির দীর্ঘ একযুগ পর; গত জানুয়ারি মাসে সেই মামলা পুনরায় অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় দুদক। গঠন করা হয় উচ্চ পর্যায়ে কমিটি।
জানা যায়, ২০১২ সালে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে সাতজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে মামলা করে দুদক। তবে ২০১৪ সালে অদৃশ্য কারণে মামলাটি পরিসমাপ্তি করে তৎকালীন বদিউজ্জামান ও শাহাবুদ্দিন চুপ্পু কমিশন।
প্রহসনের নির্বাচন ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমানের আদালতে এ জবানবন্দি দেন তিনি।
এর আগে দুই দফায় চার দিন করে আট দিনের রিমান্ড শেষে নূরুল হুদাকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক শামসুজ্জোহা সরকার। এরপর নূরুল হুদা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মতি হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন এই তদন্তকারী কর্মকর্তা।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
নূরুল হুদার পক্ষে অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম সজিব এ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, নূরুল হুদার রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করেন পুলিশ। আমরা তার জামিনের দরখাস্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতে উপস্থিত হই। এরপর আদালতে এসে জানতে পারি তিনি দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিচ্ছেন।
গত ২২ জুন সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার ৫ নম্বর সেক্টরে নূরুল হুদার বাড়িতে গিয়ে ‘স্থানীয় জনতা’ তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরদিন প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। চার দিনের রিমান্ড শেষে একই মামলায় গত ২৭ জুন আবারও চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকার সিএমএম আদালত।
একই মামলায় গত ২৯ জুন তিন দিনের রিমান্ড শেষে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২২ জুন দশম থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করা তিন সিইসি যথাক্রমে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহ উদ্দিন খান। পরবর্তীতে গত ২৫ জুন এ মামলায় নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারা যুক্ত করা হয়।
সাবেক আমলা নূরুল হুদা ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সিইসি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন দেশের দ্বাদশ সিইসি। তার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিশনের অধীনে ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনসহ স্থানীয় পর্যায়ের সব ভোট হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আরও পাঁচ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তারা অবৈধ সম্পদ অর্জন, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং পক্ষপাতিত্বের সঙ্গে জড়িত। মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুদক এই তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে এই কর্মকর্তারা বড় পরিসরে কর ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এতে করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের উল্লেখযোগ্য রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।
এমন সব অভিযোগে যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে তারা হলেন— বড় করদাতা বিভাগের (ভ্যাট) অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল রশিদ মিয়া, সদস্য মো. লুৎফুর আজিম, কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের (সিআইআইডি) সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আলমগীর হোসেন, ঢাকার কর অঞ্চল-১৬ এর উপকর কমিশনার মো. শিহাবুল ইসলাম এবং যুগ্ম কমিশনার মো. তারেক হাসান।
এর আগে ২৯ জুন দুদক এনবিআরের আরও ছয়জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। যাদের বিরুদ্ধে কর্তৃত্বের অপব্যবহার ও গত দুই দশক ধরে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
ছয় কর্মকর্তা হলেন— আয়কর নীতি বিভাগের সদস্য একেএম বদিউল আলম, ঢাকা কর অঞ্চল-৮ এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, বিসিএস কর একাডেমির যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দিন খান, ঢাকার কর অঞ্চল-১৬ এর উপকর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, অডিট-গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর-ভ্যাটের ঢাকার অতিরিক্ত কমিশনার হাসান তারেক রিকাবদার এবং কাস্টমস-আবগারি ও ভ্যাট কমিশনারেট, ঢাকা (দক্ষিণ) এর অতিরিক্ত কমিশনারসাধন কুমার কুন্ডু।
এই ছয় কর্মকর্তার মধ্যে হাসান তারেক এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হিসেবে পরিচিত। তার নেতৃত্বাধীন পরিষদটি রাজস্ব বোর্ড ভেঙে দেওয়ার পরিবর্তে এর অভ্যন্তরে কাঠামোগত সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছে।
দুদকের মুখপাত্র আক্তারুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্ত কর্মকর্তারা কর দায় কমানোর বিনিময়ে ঘুষ গ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার কেউ কেউ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাও দায়ের করেছেন—যারা তাদের অবৈধ দাবি পূরণে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগও রয়েছে যে, করদাতাদের কর ফেরত ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্বিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে করদাতাদের তাদের পাওনা পেতে ঘুষ দিতে বা উপহার দিতে বাধ্য করা হয়েছে। কখনো কখনো এই ঘুষের পরিমাণ ছিল করদাতাদের পাওনার অর্ধেকের সম পরিমাণ।
প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১০০ জনকে আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
আজ ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২০ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত।
দুদক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বাসস’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির ছয়টি মামলার আজ ধার্য তারিখ ছিল। পাঁচ মামলায় শেখ হাসিনাসহ আসামিরা পলাতক অবস্থায় রয়েছেন মর্মে প্রতিবেদন এসেছে। অপর এক মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১২ জন আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আজ দিন ধার্য ছিল। এদিন গেজেট প্রকাশ হয়ে আসেনি। আদালত ছয় মামলারই গেজেট প্রকাশের জন্য নির্দেশ দেন। ছয় মামলারই আগামী ২০ জুলাই পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এসব মামলায় চার্জশিট আমলে নিয়ে শেখ হাসিনাসহ ১০০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। এরপর গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত। আসামিদের গ্রেফতার করতে পারেনি বলে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর আইনুযায়ী আসামিদেন আদালতে হাজির হতে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন আদালত। গেজেট প্রকাশ হয়ে আসলে মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে।
শেরেবাংলা নগর থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনে করা মামলায় ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিনের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার একটি আদালত।
অপর দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর ধানমন্ডি থানার আব্দুল মোতালেব হত্যা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কার্যনির্বাহী সদস্য শাহে আলম মুরাদের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
আজ কারাগার থেকে তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ।
এরপর তুহিনের সাত দিন ও শাহে আলম মুরাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
এ সময় তাদের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র এ আদেশ দেন।
গত ২২ জুন গভীর রাতে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের আওনা গ্রামে বাবার বাড়ি থেকে তুহিনকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ।
গত ১৭ এপ্রিল সকালে উত্তরা এলাকা থেকে শাহে আলম মুরাদকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
তুহিনের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ৪ এপ্রিল সকাল ৭টার দিকে যুব মহিলা লীগের সাবেক সহ-সভাপতি ইশরাত জাহান নাসরিনসহ অজ্ঞাতনামা ১৪ থেকে ১৫ জন দুষ্কৃতকারীরা শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সামনে নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী ও যুব মহিলা লীগের নেতা-কর্মীরা মিছিল করে।
পরে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। আসামিরা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের কার্যক্রমকে গতিশীল ও সন্ত্রাসী সংগঠনকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্য প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের পদত্যাগের দাবি করে স্বাধীন দেশের সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার ষড়যন্ত্র করে।
এ ঘটনায় ৪ এপ্রিল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করে পুলিশ।
মোতালেব হত্যা মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে জিগাতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ছাত্র-জনতার মিছিলে থাকা আবদুল মোতালেব নামের এক কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরে ২৬ আগস্ট তার বাবা আব্দুল মতিন বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৭৬ জনকে আসামি করা হয়।
মন্তব্য