বিয়ে করে সপ্তাহ এখনও পেরোয়নি। নতুন সংসারে গোছগাছ বাকি। শুধু দুটি ঘরে ঠাঁই নিয়েছেন বর-বধূ। টুকিটাকি অনেক জিনিসের দরকার। ১০১টি বই দেনমোহরানায় বিয়ে করে দেশজুড়ে আলোচিত নবদম্পতি নিখিল-শান্তনা এখন সংসার সাজাতে ব্যস্ত।
ব্যস্ততার ফাঁকে বুধবার বিকেলে একটু সময় চেয়ে নেয়া হয়েছিল তাদের। কথামতো যাওয়া হয় শহরের খান্দার এলাকায়। সবে দুপুরের খাওয়া শেষ করেন তারা। হাসিমুখে প্রতিবেদককে অভিবাদনের সঙ্গে বিকেলে টিউশনির কথাও জানালেন শান্তনা খাতুন।
হাসতে হাসতে নিখিল বলেন, ‘আমাদের বিয়েটা হওয়ার কথা ছিল সাদামাটা, অনেকটা গোপনে। কিন্তু আপনারা তো সব গোমর ফাঁস করে দিলেন। এখন পথে-ঘাটে দেখামাত্র সবাই বলে ওঠে: আপনিই বই দিয়ে বিয়ে করা সেই ব্যক্তি।’
দুজনের প্রেম বেশি দিনের নয়। এ বছরের জানুয়ারিতে শান্তনার প্রিয় এক শিক্ষকের জন্য একটি লেখা ফেসবুকে পোস্ট করেন নিখিল নওশাদ। সেই লেখা দেখে ফেসবুকে পরিচয়। তবে তখনই সাক্ষাৎ করেননি তারা। মাসখানেক পর দুজনের দেখা হয়। দিনটি ছিল ১৬ ফেব্রুয়ারি। এরপর আলাপ আরও জমতে থাকে। দুজনেই সাহিত্য-অন্তপ্রাণ, তাই মনের মিথষ্ক্রিয়া বাড়তে সময় লাগেনি মোটেও। একসময় উপলব্ধি করেন একসঙ্গে থাকতে হবে। সংসার বাঁধবেন তারা।
নিখিল বলেন, ‘১৬ তারিখকে প্রতীক হিসেবে রাখতে চেয়েছিলাম আমরা। এ জন্য বিয়ে করেছি ১৬ সেপ্টেম্বর। অন্য কোনো মাস হলেও তারিখ এটাই থাকত। বইয়ের বিষয়টি শান্তনার আগে থেকেই পরিকল্পনা। আমি না হয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করলেও সে এমনটাই চাইত।’
এসব কথার মাঝে শান্তনা এ-ঘর ও-ঘরে টুকিটাকি সাংসারিক কাজও করছিলেন।
কথার রেশ ধরে শান্তনা বলেন, ‘আসলে নিখিল সবে চাকরিতে এসেছে। ওর আয় থেকে এখনও এমন কোনো সঞ্চয় হয়নি যে কনেকে চার-পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে।
‘মেয়েদের স্বামীর সামর্থ্য বুঝে ওই অর্থ দাবি করা উচিত। আমার প্রয়োজন ছিল বই। তার সাধ্যের মধ্যে সেই বই সংগ্রহের চেষ্টা করা হয়েছে। অন্য কাউকে জীবনসঙ্গী করলে তার কাছেও বই চাইতাম। এই বই সারা জীবনের জন্য থেকে যাবে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সেটি কাজে লাগবে।’
এর মাঝেই জানা গেল নিখিল একটি বেসরকারি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি। বেশ কিছুদিন গাইবান্ধায় কাজ করেছেন। এখন বগুড়ায়। আর শান্তনা শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করে এ বছরের ৩১ জানুয়ারি শহরের উত্তর চেলোপাড়া দাখিল মাদ্রাসার ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছেন।
মাদ্রাসার বিষয় আসতেই প্রতিষ্ঠানের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়। কথা শুনেই আবার হাসলেন দুজনে।
শান্তনা বললেন, ‘এখানেও তো আপনারা ভাইরাল করে দিয়েছেন। তবে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা এমন ঘটনায় আনন্দিত। তাদের অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে হয়রান হয়ে পড়েছিলাম। কেন বিয়ের দাওয়াত দেইনি– এই একটাই অভিযোগ। এর পাশাপাশি শিক্ষকদের আরও একটি কৌতূহল ছিল, দেনমোহরের বইগুলোর মধ্যে ধর্মীয় বিষয়ের বই ছিল কি না।'
শান্তনা বলেন, ‘আমার তালিকায় সব ধরনের বই রাখা হয়েছে। মাদ্রাসায় তারা যেহেতু ধর্মপ্রাণ, এ জন্য তারা ওই প্রশ্ন করেছিলেন। হাদিস, ধর্মীয় নিয়ম-কানুনের বই কেনা হয়েছে শোনার পর তারা খুশি।’
শিক্ষার্থীদের নিয়ে উচ্ছ্বসিত শান্তনা। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজির পাঠদান করান তিনি। অল্প কয়েক দিনে তাদের প্রিয় শিক্ষক হয়ে উঠেছেন। বিয়ে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ছিল নানা প্রশ্ন, আর আফসোস। বিয়েতে তাদের উপস্থিত থাকার খুব ইচ্ছা ছিল।
তার ভাষায়, ‘স্কুল ও মাদ্রাসার একই কারিকুলাম। কিন্তু মাদ্রাসায় আরবি বিষয়ে পড়ার চাপ একটু বেশি থাকে। ফলে স্বভাবতই শিক্ষার্থীরা ইংরেজিতে সময় কম দেয়। কিন্তু আমি তাদের ইংরেজি বিষয়টি পড়াই গল্পের ছলে। ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে ওদের সঙ্গে গল্প হয়। আর তাদের সব প্রশ্নের জবাব দেই।
‘মাদ্রাসায় জয়েন করার পরপরই তাদের মন থেকে ইংরেজির ভীতিটা দূর করার চেষ্টা করেছি। এ জন্য এখন দেখা যায় আমার শ্রেণিকক্ষে ঢোকার আগেই তারা বই খুলে বসে থাকে।’
এসব কথার মাঝে জানা গেল দুজনেই পড়াশোনা করেছেন বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজে। শান্তনা সোনাতলা উপজেলার কামালেরপাড়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের মেয়ে। নিখিলের বাড়ি বগুড়ার ধুনটের গোসাইবাড়ী। শান্তনার পরিবারে মা, বাবা ও এক বোন রয়েছে। নিখিলের পরিবার একটু বড়। মা, বাবা, নিখিলসহ তিন ভাই ও তিন বোন।
শান্তনার পরিবারে তিনিই প্রথম গ্র্যাজুয়েট মেয়ে। তাই একটু বড় হওয়ার পর থেকেই লাইব্রেরি গড়া, পড়ার অভ্যাস রাখার জন্য কিছু করার স্বপ্ন ছিল। সেটা থেকেই বই সংগ্রহের ইচ্ছার জন্ম নেয় তার।
শান্তনা বলেন, ‘বই আগে থেকে পড়তাম। কিন্তু আজিজুল হক কলেজে ইংরেজিতে ভর্তি হওয়ার পর সাহিত্যের রস বুঝতে শুরু করি।’
এ দম্পতি জানান, দেনমোহরের এখনও প্রায় ৩০টি বই সংগ্রহের বাকি আছে। সেগুলো সময় নিয়েই কিনবেন। সংগ্রহের তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কিছু লেখকের বই রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভারতীয় লেখক অরুন্ধতী রায়। এ ছাড়া আইরিশ ও আফ্রিকান সাহিত্যের কিছু বই রাখবেন তারা।
এরপর পাশের ঘরে নিয়ে গেলেন দুজনে। ঘরটি প্রায় ফাঁকা। পূব দিকে একটি জানালা। একধারে কিছু রান্নার সরঞ্জাম। জানালেন, এখানেই বইগুলো সাজিয়ে রাখবেন। আর পুবালী জানালার নিচে একটি চৌকি খাট বসানো হবে। মাঝেমধ্যে সেই খাটে হেলান দিয়ে বসে বই পড়বেন তারা। আপাতত বইগুলো শান্তনার বাবার বাড়িতে আছে। আর কিছুদিন পর নিয়ে আসবেন।
এ নবদম্পতি নিজেদের আরেকটি অভিজ্ঞতা জানান, খ্যাতির বিড়ম্বনা! নিখিল বলেন, ‘যখন বিয়ের জন্য কাজী পাচ্ছিলাম না, তখনও অনেকের ফোনে প্রশ্নের জবাব দিতে হচ্ছিল। এক ভাই তো রাত দেড়টায় ফোন দিয়েছিলেন ইন্টারভিউ নেয়ার জন্য। বিয়ের পর অনেকে বইয়ের তালিকা চেয়ে ফোন দিচ্ছেন, বলছেন তারা বই দিতে আগ্রহী।’
শান্তনা বলেন, ‘আত্মীয়-স্বজনদের কাছে জবাবদিহিতে পড়েছি। তখন খুব খারাপ লেগেছিল। আর সত্যি কথা বলতে কী, আমরা নিজেদের প্রাইভেসিটাও পাচ্ছিলাম না। কিন্তু এটাও ঠিক নিউজ হওয়ায় এ ঘটনাটি দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। এটি একটি ইতিবাচক বিষয়। এ জন্য আমরাও বিড়ম্বনা মেনে নিয়েছি।’
আলাপ ফুরায় না, সময়ও বসে থাকে না। ঘড়িতে ৫টা পার হয়ে যায়। সূর্য হেলে পড়ে পশ্চিমে। টিউশনিতে যেতে হবে। শান্তনা আবদার করলেন নিখিলকে, এগিয়ে দিতে। জানালা-দরজা বন্ধ করে বেরিয়ে পড়লেন দুজনে। এতটুকু পথের আলাপেও তাদের জড়িয়ে রয় কবিতা। ভালো থাকুক কাব্যপ্রেমীরা।
আরও পড়ুন:কুমিল্লার বুড়িচং সীমান্তে ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক আহত হয়েছেন।
উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের চড়ানল তেঁতুলতলা সীমান্তে সোমবার রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহত বিল্লাল হোসেন (২৮) রাজাপুর ইউনিয়নের লড়িবাগ এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিল্লাল হোসেন ভারত থেকে অবৈধ পথে চিনি ও অন্য পণ্য ওঠা-নামার শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সোমবার রাত ৮টার দিকে তেঁতুলতলা সীমান্ত দিয়ে আসা চিনি নামানোর সময় বিএসএফের সদস্যরা গুলি করে তাকে। তার শরীরে ৩০টির মতো ছররা (ছোট গুলি) গুলি লাগে।
পরে বিল্লালকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। গুলিতে তার চোখ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান চিকিৎসক।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) কামরান হোসেন জানান, গুলিতে আহত ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা নেই। সীমান্তের ঘটনা সম্পর্কে বিজিবি বলতে পারবে।
বিজিবির সংকুচাইল বিওপির কামান্ডার ফারুক কামাল জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তারা এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে পারবেন না।
আরও পড়ুন:মাদারীপুরের ডাসারে তীব্র গরমের মধ্যে জমিতে কাজ করতে গিয়ে এক বৃদ্ধ কৃষক হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন।
মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছে তার পরিবার।
মারা যাওয়া আজগর আলী বেপারী (৭৫) উপজেলার গোপালপুর এলাকার পশ্চিম বনগ্রাম গ্রামের মৃত বরম আলীর ছেলে।
প্রচণ্ড গরমে শরীর উত্তপ্ত হয়ে অজ্ঞান হওয়াসহ নানা লক্ষণ দেখা দিলে তাকে বলা হয় হিট স্ট্রোক।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কৃষক আজগর আলী বেপারী প্রচণ্ড রোদের মধ্যে তার বাড়ির পাশের একটি জমিতে কাজ করতে যান। এ সময় তিনি প্রচণ্ড গরমের ফলে হিট স্ট্রোকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে বাড়িতে নওয়ার পথেই তিনি মারা যান।
ইউপি সদস্য হালিম জানান, গরমের ভেতর জমিতে কাজ করতে গিয়ে আজগর আলণী হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন।
এ ব্যাপারে ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম শফিকুল ইসলাম জানান, বৃদ্ধ বয়সে আজগর আলী জমিতে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে তাপমাত্রা সইতে না পেরে হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন। ঘটনাটি দুঃখজনক। পারিবারিকভাবে তাকে দাফন করা হয়েছে।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় গাইবান্ধার সাঘাটায় ও মুন্সীগঞ্জ সদরে নির্বাচনের আগেই চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন চারজন।
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটের আগেই এমনকি প্রতীক বরাদ্দের আগেই চেয়ারম্যান নিশ্চিত হয়েছেন আইনজীবী এস এম সামশীল আরেফিন টিটু।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের তিনজন প্রার্থীর মধ্যে অপর দুজন প্রার্থী নিজেদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
বিষয়টি মঙ্গলবার সকালে নিশ্চিত করেছেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গাইবান্ধার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোত্তালিব।
তিনি জানান, এর আগে সোমবার বিকেলে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকতার কাছে লিখিতভাবে স্বেচ্ছায় নিজেদের প্রার্থীতা প্রত্যাহারপত্র দেন ওই দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী। প্রার্থীতা প্রত্যাহার করা দুই প্রার্থী হলেন, হাসান মেহেদী বিদ্যুৎ এবং অপরজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল আজাদ শীতল।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালিব বলেন, ‘আজ প্রতীক বরাদ্দ শেষে দুপুরের পর তার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি ঘোষণা করা হবে।’
নির্বাচনে সাঘাটা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদ ছাড়াও সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রার্থী এবং সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জনসহ ১১ জন প্রার্থীর চূড়ান্ত হয়েছে।
সাঘাটা উপজেলায় পুরুষ ভোটার এক লাখ ২০ হাজার ৬৫৩ জন এবং নারী এক লাখ ২১ হাজার ৫৮ জনসহ মোট ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৪১ হাজার ১২ জন। এ ছাড়া ১০৩ টি ভোট কেন্দ্র এবং বুথ রয়েছে ৬৬১টি। উপজেলায় অতি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৩৮। এ উপজেলায় ব্যালটে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন।
মুন্সীগঞ্জে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত তিনজন
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আনিস উজ্জামান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নাজমুল হাসান সোহেল এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাসিনা গাজী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
বিষয়টি সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নিশ্চিত করেছেন মুন্সীগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বশির আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী ছিলেন আনিস উজ্জামান। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুই জন করে প্রার্থী থাকলেও ওই পদগুলোতে একজন করে প্রার্থী নিজেদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।’
তিনি জানান, এতে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আনিস উজ্জামান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নাজমুল হাসান সোহেল এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাসিনা গাজী নির্বাচিত হয়েছেন।
এ কারণে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে না এবং যথাসময়ে তাদের গেজেট প্রকাশিত হবে বলে জানান তিনি।
ষষ্ঠ ধাপের এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে আগামী ৮ মে ১৫০ উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন:সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরের জেটিতে ভিড়েছে।
জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার ৯ দিন পর সোমবার আমিরাতের স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৭টার দিকে জাহাজটি সমুদ্রবন্দরের জেটিতে নোঙর করে।
জাহাজের মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপ সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
রাতে জাহাজ পরিদর্শনে যান মালিকপক্ষের লোকজন, আমিরাতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আবু জাফর ও বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল বিএম জামালসহ কর্মকর্তারা।
এ সময় বাংলাদেশ মিশনের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয় তাদের। জাহাজের ২৩ নাবিক সুস্থ রয়েছেন।
এদিকে কেএসআরএম গ্রুপের ডিএমডি শাহরিয়ার জাহান রাহাতের নেতৃত্বে একটি টিম দুবাই গেছে। বাংলাদেশ থেকে যাওয়া কেএসআরএম গ্রুপের টিমটি নাবিকদের বরণ করে নেয়।
কেএসআরএম গ্রুপের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম জানান, জাহাজটি বন্দরের জেটিতে ভিড়েছে। নাবিকরা সবাই সুস্থ আছেন। নাবিকরা ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে বলে তিনি জানান।
কেএসআরএম গ্রুপের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে নাবিকরা চাইলে বাইরে আসতে পারবেন না। কারণ, আরব আমিরাতে প্রবেশের জন্য এখনও তাদের ভিসা হয়নি। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের ভিসার জন্য আবেদন করা হবে।
জাহাজের মালিকপক্ষ জানায়, এখন জাহাজের কয়লা খালাসের প্রক্রিয়া শুরু হবে। এরপর নতুন করে কার্গো ভর্তি করার পর দেশে ফেরার প্রস্তুতি নেয়া হবে।
এদিকে প্রশাসনিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দেশটির আজমান প্রদেশে বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেএসআরএম গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাহরিয়ার জাহান।
জাহাজটি ২১ এপ্রিল বিকেলে আল হামরিয়া বন্দরের বহির্নোঙরে নোঙর করে। ২২ এপ্রিল এটি নোঙর ফেলে জেটিতে।
আগে জাহাজটি ২২ এপ্রিল নোঙর করবে বলে জানিয়েছিল জাহাজটির মালিকপক্ষ। তারা আরও জানিয়েছেন, পণ্য খালাসের কার্যক্রম শেষ করার পর শুরু হবে নাবিকদের দেশে ফেরার প্রক্রিয়া।
১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় রাত ৩টার দিকে জলদস্যু মুক্ত হয় জাহাজটি। এরপর আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে নাবিকরা।
গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে পড়ে ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। জলদস্যুরা জাহাজে উঠে নাবিকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে দস্যুদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় নিয়ে যেতে বাধ্য করে। একপর্যায়ে সুবিধাজনক স্থানে জাহাজটি নোঙর করায় দস্যুরা। এরপর মুক্তিপণের বিষয়ে দেনদরবার শুরু হয়।
২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আব্দুল জব্বারের বলী খেলা। বলীখেলা উপলক্ষে ২৪ এপ্রিল থেকে ২৬ এপ্রিল শুক্রবার পর্যন্ত ৩ দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন থাকছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) সোমবার এ নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে। খবর বাসসের
সিএমপি জানিয়েছে, বলী খেলা ও বৈশাখী মেলা চলাকালে ক্রেতা-বিক্রেতাসহ আগত লোকজনের সমাগমের কারণে মেলা সংলগ্ন নির্ধারিত স্থানগুলোতে বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত লালদিঘি অভিমুখী সব প্রকার যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
সিএমপির ট্রাফিক-দক্ষিণ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এনএম নাসিরুদ্দিন জানিয়েছেন, লালদিঘির পাড় মাঠে মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পণ্য বিক্রেতারা তাদের পণ্য-দ্রব্যাদি নিয়ে আসবেন এবং ক্রেতা সাধারণসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ লোকজনের সমাগম ঘটবে। বলী খেলা ও বৈশাখী মেলা চলাকালে নগরীর আন্দরকিল্লা মোড় (জামে মসজিদের সামনে), পুরাতন টেলিগ্রাফ রোড, বোস ব্রাদার্স মোড় (পুলিশ প্লাজার সামনে), রাইফেল ক্লাব, কোতোয়ালী মোড় (সিডিএ গেট), আমানত শাহ মাজার রোডের মুখ ও টেরিবাজার ফুলের দোকানের (তিন রাস্তা মুখ) সামনে রোড ব্লক স্থাপনের মাধ্যমে ডাইভারশন প্রদান করা হবে। ফলে উক্ত সময়ে লালদিঘি অভিমুখে সব ধরনের যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক আমদানি-রপ্তানিসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ডভ্যানসহ অন্যান্য যানবাহনসমূহ কোতোয়ালী মোড় হয়ে ফিরিঙ্গীবাজার মেরিন ড্রাইভ রোড ব্যবহার করে চাকতাই ও রাজখালী হয়ে চাকতাই-খাতুনগঞ্জে যাতায়াত করবে।
ঐতিহ্যবাহী আব্দুল জব্বারের বলী খেলা উপলক্ষে অনুষ্ঠিতব্য বৈশাখী মেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের নিমিত্তে উল্লিখিত নির্দেশনাগুলো সব প্রকার যানবাহনের চালক ও যাত্রী সাধারণসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথভাবে মেনে চলার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে এ ৩ দিন ওই এলাকার সড়কগুলো এড়িয়ে বিকল্প সড়ক ব্যবহারের জন্যে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের টেকনাফে অপহরণের শিকার দুজনকে ফিরে পাওয়া গেছে।
উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর-হোয়াইক্যং ঢালার সড়কে সোমবার রাতে তাদের পাওয়া যায় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এর আগে রোববার রাতে ফার্মেসি থেকে বাড়ি ফেরার পথে অপহরণের শিকার হয়েছিলেন ওই দুজন।
তারা হলেন উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের পশ্চিম থাইংখালী এলাকার জাকের হোসাইনের ছেলে মো. জহির উদ্দিন (৫১), বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর নয়াপাড়া এলাকার মৃত মো. শফিকের ছেলে মোহাম্মদ রফিক (৩২)।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার রাত ১১টার দিকে পুলিশ ও স্থানীয় জনতার তৎপরতায় অপহৃত পল্লী চিকিৎসক জহির ও অন্যজনকে অক্ষত অবস্থায় বাহারছড়া ইউনিয়নের শীলখালীতে পাওয়া গেছে।
এদিন সকাল থেকে উখিয়া সার্কেল ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেল, টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মছিউর রহমান, হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ শাহাদাত হোসেনসহ একদল পুলিশ এবং বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকনসহ স্থানীয় লোকজন উদ্ধার কাজ চালিয়েছিল। অভিযানে উদ্ধার করতে না পারলেও রাতে অপহৃত দুজনকে ছেড়ে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওসমান গনি জানান, সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দুর্গম পাহাড়ে পুলিশের অভিযানের ফলে অপহরণকারীরা অবশেষে দুই অপহৃতকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে।
নাটোরের সিংড়ায় ট্রাকচাপায় সুকাশ ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য সচিব নিহত হয়েছেন।
নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের জোলারবাতা এলাকায় সোমবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো ইলিয়াস আহমেদ রনি (৩২) উপজেলার কাকিয়ান গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে।
সিংড়া থানার ওসি আবুল কালাম জানান, সোমবার বিকেলে নাটোর থেকে বগুড়াগামী একটি মিনি ট্রাক জোলারবাতা এলাকায় রনির বাইককে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই বাইক চালক রনি মারা যান। এ সময় রনির চাচাত ভাই মান্নাফ হোসেন আহত হন।
পরে আহত মান্নাফকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এবং রনির মরদেহ পরিবারে কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ওসি জানান, এ ঘটনার পর ট্রাকের চালক ও সহকারী পালিয়ে গেছে। ট্রাকটি জব্দ করে থানায় নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য