ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সাবেক এক সেনাসদস্যকে চুরির বানোয়াট মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। এই দ্বন্দ্বটি আরেকজন অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্যের সঙ্গে। সেই সেনাসদস্যের স্ত্রী ও আশুলিয়া থানার এক পরিদর্শক একই এলাকার বাসিন্দা এবং সেই সুবাদে তাদের মধ্যে সখ্য আছে আর সেটি ব্যবহার করেই এই মামলার অভিযোগ উঠেছে।
অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য দুলাল হোসেন ও তার স্ত্রী আছমা সুলতানার মামলা করার আগেই গত মঙ্গলবার রাতে আশুলিয়ার দক্ষিণ গাজীরচট এলাকা থেকে আটক করা হয় অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য রাজু আহম্মেদকে। পরদিন আশুলিয়া থানায় মামলা হয়। এরপর তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
ভুক্তভোগীর স্ত্রী ও ফ্ল্যাটের অন্য মালিকদের অভিযোগ, বাদীর সঙ্গে ওসির কর্মকর্তার সখ্য থাকায় ওই সেনাসদস্যকে চুরির মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
আছমার সঙ্গে যে পুলিশ কর্মকর্তার সখ্য আছে তিনি হলেন জিয়াউল ইসলাম; যিনি আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে কর্মরত। এর আগেও তার বিরুদ্ধে আশুলিয়ার কবিরপুর এলাকায় অন্যকে ঝুট ব্যবসা দখল পাইয়ে দিতে মূল মালিককে দুটি মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ ওঠে। নিউজবাংলায় এ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদনও প্রকাশ হয়েছিল।
গ্রেপ্তার রাজুর স্ত্রী আসমা আহম্মেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গাজীরচট এলাকার চতুর্থ তলায় আমার একটা ফ্ল্যাট আছে। তখন আমাদের এক শেয়ারমেট (দুলাল হোসেন ও তার স্ত্রী আছমা সুলতানা) বলছে তিনি কিনবেন। সম্পর্ক ভালো থাকায় ১০ হাজার টাকায় তার সঙ্গে ফ্ল্যাটটি মৌখিক বায়না করি। কথা ছিল বাকি ৭ লাখ টাকা পরে দেবে।
‘কিন্তু ফ্ল্যাটের ৭ লাখ টাকা না দিয়েই দুলাল-আছমা দম্পতি ফ্ল্যাটের ভেতরে গোপনে নির্মাণকাজ করে যাচ্ছিল। বিষয়টি জানতে পেরে আমি প্রতিবাদ করতে গেলেই আমাদের মারধর করতে আসেন ওনারা। অনেকবার থানায় গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য ওনাদের ডাকা হলেও তারা বসেননি। পরে আমরা ফ্ল্যাটটি অন্যজনের কাছে বিক্রি করি।’
তিনি জানান, গত বুধবার দুলাল ও আছমারা জোরপূর্বক ফ্ল্যাট দখল করতে আসলে তাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে দুলালের স্ত্রী থানায় ফোন করে পুলিশ ডেকে আনেন। তখন রাজুকে ধরে নিয়ে যান এসআই মিলন ফকির। পরদিন চুরি, জখম, ভাঙচুরের মামলা করেন দুলালের স্ত্রী আছমা।
রাজুর স্ত্রী বলেন, ‘মূলত থানার ওসি জিয়া ও আছমার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়। সখ্যতার কারণে ওসি সাহেব ওই মহিলার পক্ষ নিয়ে মিথ্যা মামলায় আমার স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছেন।’
ওই ভবনের আগের ফ্ল্যাট মালিক সাবেক সেনাসদস্য গোলজার হোসেনও একই কথা বললেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আটজন সেনাসদস্য নিজেদের জমানো অর্থ দিয়ে চারতলা এই বাড়িটি নির্মাণ করেছি। পুরো বাড়ি আমার তত্ত্বাবধানেই হয়েছে।
‘নির্মাণ শেষ হওয়ার পর অংশীদারদের ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু চারতলার দুলাল-আছমা দম্পতি জোর করে নিচের একটি দোকান ও নিচতলার আরেকটি ফ্ল্যাট দখল করে ভাড়া আদায় করছেন। প্রতিবাদ করতে গেলে নানা হুমকি দিয়ে আসছেন। এমনকি এলাকাভিত্তিক মীমাংসার জন্য বসা হলে সেখানে দুলাল ও তার ছেলে লোকজন ভাড়া করে এনে আমাদের মারধর করে। থানায় গিয়েও এর কোনো প্রতিকার পাইনি।’
গোলজার বলেন, ‘তখন ওসি (আসলে পরিদর্শক-তদন্ত) জিয়া মামলা না নিয়ে আমাদের বলেন, সব মিটমাট করে ফেলেন। পরে আমরা জানতে পারলাম জিয়ার গ্রামে নাকি আছমা-দুলাল দম্পতির বাড়ি। পক্ষ নিয়ে তখনও আমাদের সঙ্গে উনি খারাপ আচরণ করেছেন।’
এই সাবেক সেনাসদস্য বলেন, ‘ওসি জিয়ার ক্ষমতাবলে তারা (দুলাল ও আছমা) ফ্ল্যাটের অন্য কোনো মালিককে পরোয়া করেন না। একই কারণে রাজু আহমেদকেও মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে তারা। এখানে মামলা দেয়ার কোনো কারণ দেখি না আমরা। কারণ এখানে কোনো মারামারি, চুরির ঘটনা ঘটে নাই।’
আরেক ফ্ল্যাট মালিক সাবেক সেনাসদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশকে দিয়ে রাজুকে হয়রানি করছে দুলাল ও আছমা দম্পতি। জবরদখল করে রাখছে ফ্ল্যাটও।’
আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক জামাল উদ্দিন ভূঁইয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য ডাকা হলেও দুলাল-আছমা দম্পতি আসেননি। এখন তারা পুলিশের প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে ফ্ল্যাট দখল করেছেন। পুলিশ একতরফাভাবে দুলাল-আছমা দম্পতির পক্ষে কাজ করেছে। পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে এটাই সবার কাম্য।’
মামলা করার বিষয়ে বাদী আছমা সুলতানা বলেন, ‘ওনারা আমার ফ্ল্যাটে ঢুকে আমার স্বামী, ছেলে-মেয়েসহ আমাকে রড, লাঠি দিয়ে মারধর করেছে। স্বর্ণ, টাকা নিয়ে গেছে। তাই মামলা করেছি।’
তিনি বলেন, ‘করোনাকালীন ৭ লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট কিনেছি। বিশ্বাসের জায়গা থেকে কোনো স্ট্যাম্প কিংবা ডিডে লিখিত কোনো ডকুমেন্ট রাখিনি। এটাই আমাদের ভুল হইছে।’
পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলামের সঙ্গে কোনো সখ্য আছে কি না এমন প্রশ্নে আছমা বেগমের স্বামী দুলাল হোসেন বলেন, ‘আমার বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকা। আর তার বাসা ময়মনসিংহে।’
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, 'এটা ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব। চেয়ারম্যান বলেছিল মীমাংসা করে দেবে। কিন্তু ওরা (রাজু আহম্মেদ) শোনেনি। দিনেদুপুরে লোকজন নিয়ে মহিলার (বাদীর) ফ্ল্যাটে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।'
মামলায় যে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেটি তো সত্য নয় বলে পাশের ফ্ল্যাটের মালিকরা বলছেন, এমন প্রশ্নে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘অভিযোগ দিলেই তো হলো না। ওইটা তো আমরা তদন্ত করে যেটা প্রমাণ হবে ওইটাই হবে। মামলার তো আর চার্জশিট হয় নাই। অভিযোগ তো অনেকে অনেক কিছু দেয়। কিন্তু তদন্তসাপেক্ষে আমরা তো অনেক কিছু পাই, অনেক কিছু দিই।
‘প্রাথমিক তদন্তে তো দুই গ্রুপের মারামারির খবর পেয়েছি। ঘরে গিয়া তালা মাইরা দিছে। তখন গিয়া ওনাকে (রাজু আহম্মেদ) আনা হইছে।’
বাদীর সঙ্গে সখ্যের বিষয়ে তথ্য নিয়ে তিনি বলেন, ‘না না। বাড়তি সুবিধা পেলে তো অনেক আগেই পেত। এতদিন কেন সে বাড়তি সুবিধা পায় নাই?'
ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যদি এ ধরনের কোনো ঘটনা হয়ে থাকে। তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:কেশবপুরের ঐতিহ্য কালোমুখো হনুমান খাদ্য সংকট ও বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় খাবার না পেয়ে মারাও যাচ্ছে। কালোমুখো হনুমান রক্ষার দাবি উঠেছে।
জানা গেছে, একসময় কেশবপুরে ছিল কালোমুখো হনুমানের অভয়ারণ্য। বন উজাড় হয়ে যাওয়ায় এবং খাদ্য সংকটে সময়ের গতির সঙ্গে কমে যাচ্ছে হনুমান। বর্তমানে ১৮০ থেকে ২০০টি হনুমান কেশবপুরে রয়েছে বলে স্থানীয় বন বিভাগ জানায়। এখান থেকে ৪/৫ বছর আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দেশ বিভক্তির আগে ভারতের মাড়োয়াররা ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য যশোরের কেশবপুরে বসবাসের পাশাপাশি আসা-যাওয়া করত। এ সময় তাদের যানবাহনে করে দুটি কালোমুখো হনুমান ভারত থেকে কেশবপুরে আসে। সেই থেকে হনুমানের এখানে পত্তন শুরু হয়। ওই এক জোড়া হনুমান থেকে এখানে শত শত হনুমানের কালের আবর্তনে ওরা আজ বিলুপ্তির পথে। একসময় কেশবপুর অঞ্চলে ঘন বনজঙ্গল ছিল। এসব বনের ফল ও লতাপাতা খেয়ে ওরা জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বন উজাড়সহ ঘনবসতি এবং এলাকায় অবৈধ ইটভাটায় গিলে খাচ্ছে এসব বনের কাঠ। এতে উজাড় হচ্ছে বন। এদিকে কেশবপুর উপজেলায় পল্লীবিদ্যুতের তারে কভার সিস্টেম না থাকায় প্রায়ই বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ওরা মারা যাচ্ছে। খাদ্য সংকটের কারণে কেশবপুরের হনুমান দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে।
উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন বলেন, কেশবপুর এলাকায় বনজঙ্গল কমে যাওয়ার কারণে হনুমানের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। ওদের রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন বলেন, হনুমান রক্ষায় সরকারিভাবে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও ব্যক্তি গত ভাবেও অনেকেই খাদ্য দেয়, যার কারণে ওরা গ্রামাঞ্চল ছেড়ে বর্তমানে শহরে বেশি বিচরণ করছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জেবল হক (৮০) কবিরহাট উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের লামছি গ্রামের মৃত গনু মিয়ার ছেলে।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ১০টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তার মৃত্যু হয়।
ডা. রাজীব আহমেদ চৌধুরী বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ওই বৃদ্ধ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের এক জনের নমুনা পরীক্ষায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা.মরিয়ম সিমি বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তি সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়। দুপুরে তার করোনা শনাক্ত হওয়ার পর সেখানে রাতে তার মৃত্যু হয়। এখন পর্যন্ত নোয়াখালীতে মোট ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। কিট সল্পতার কারণে উপজেলা পর্যায়ে করোনা টেস্ট এখনো শুরু করা হয়নি।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে চলমান বিরোধের জেরে ক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেমসহ সাংবাদিকদের উপর অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৩০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, ক্লাবের কথিত সভাপতি মাদকাসক্ত আওয়ামী দোসর আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান ও অমিত ঘোষ বাপ্পাসহ ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা এই হামলা চালায়।
সোমবার (৩০ জুন) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এই হামলায় ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম, ভোরের আকাশের সাংবাদিক আমিনুর রহমান, ডিবিসি নিউজের সাংবাদিক বেলাল হোসেন, অনির্বানের সোহরাব হোসেনসহ অন্তত ৩০ সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে একটি সভা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা আমাদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক ও সদস্য আহত হয়েছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও আব্দুল বারী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের মতের বিরুদ্ধে গেলেই এভাবে হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়।
এই ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সাংবাদিকরা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনার পর থেকে প্রেসক্লাব এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কুমিল্লার দাউদকান্দি পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষণা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে পৌরসভা হলরুমে এ বাজেট ঘোষণা করা হয়। বাজেটে সর্বমোট আয় ৪২ কোটি ৯১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ও মোট ব্যয় ৩৬ কোটি ৭৪ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়। পৌর প্রশাসক রেদওয়ান ইসলাম তার প্রস্তাবিত বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থ বছরে রাজস্ব খাত থেকে ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৪১ হাজার ৩ শত ৩১ টাকা ও উন্নয়ন খাত থেকে ২৯ কোটি ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৪৫ টাকা আহরনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। বাজেটে উদ্ধৃত্ত ধরা হয়েছে ৬ কোটি ১৭ লাখ ২ হাজার ৩ শত ৭৮ টাকা।
এছাড়াও বাজেটে খাতওয়ারী ব্যয়ের হিসেবে দেখা যায় রাজস্ব খাতে ব্যয় ৯ কোটি ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা এবং উন্নয়ন ব্যয় দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.হাবিবুর রহমান,পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম, হিসাবরক্ষক শাহাদাত হোসেনসহ পৌরসভার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদকাসক্ত হয়ে মাতলামি করার প্রতিবাদ করায় ইয়াছিন (৩৮) ও সিপন( ৩২) নামে দুই যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অপরজনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মুড়াপাড়া টঙ্গীরঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ ইয়াছিন মুড়াপাড়ার হাউলিপাড়া এলাকার ইদু মিয়ার ছেলে এবং সিপন টঙ্গীরঘাট এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ইয়াছিন তার স্ত্রীকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে খালাতো বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে স্থানীয় সোহরাব নামের এক যুবক মাদকাসক্ত অবস্থায় তাদের উদ্দেশে গালিগালাজ করলে ইয়াছিন প্রতিবাদ করেন। পরে তিনি খালাতো ভাই সিপনকে নিয়ে স্থানীয় অহিদুল্লার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার কথা জানান। সেখানেই সোহরাব ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ইয়াছিনের মাথায় ও সিপনের পায়ে গুলি লাগে।
তাদের প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সিপনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং ইয়াছিনকে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
নোয়াখালীতে গ্রাম আদালত সম্পর্কে ব্যাপক সচরতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের অংশ গ্রহণের সমন্বিত পরিকল্পনা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বুধবার সকাল ১১ টার দিকে (২৫ জুন) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় তৃতীয় তলায় মিনি কনফারেন্স হলরুমে কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক জালাল উদ্দিন,নোয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইয়াসিন, গ্রাম আদালত নোয়াখালী ম্যানেজার আহসানুল্লাহ চৌধুরী মামুনসহ এনজিও প্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ,সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি বিচারাধীন মামলার নথি থেকে এজাহারের কপি রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। আদালতের নথি থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই কাগজ হারিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে মামলার বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির ও আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুলকে শোকজ করেছেন বিচারক। তাদের তিন কার্যদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানায়, ঘটনাটি ঘটে গত ২২ জুন যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। ওই দিন মামলাটির (এসসি-১৬৬৯/২০১৮) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছিল। আদালতে আসামি, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও আসামিপক্ষের আইনজীবী—সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ চলাকালে বিচারক মো. সালেহুজ্জামান মামলার নথি পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, নথিতে মামলার এজাহারের কপি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জানান, সাক্ষ্য গ্রহণের আগে আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল তার কাছ থেকে নথি নিয়ে গিয়েছিলেন এবং এজাহার দেখে প্রয়োজনীয় তথ্য লিখে নিয়েছিলেন। এরপর তিনি আবার নথি বিচারকের কাছে জমা দেন।
এরপর এজলাসেই বিচারক আইনজীবীর কাছে জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে মন্তব্য করেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির নেতারাসহ সিনিয়র আইনজীবীরা এজলাসে হাজির হন। একপর্যায় বিচারক ওই দুইজনকে শোকজ করে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিচারক এজলাসে ওঠার আগে আইনজীবী মামলার নথি নিয়েছিলেন। পরে ফেরত দেন। আমি নিজে নথিতে কোনো হেরফের করিনি। আইনজীবী কিংবা আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে এই ঘটনা ঘটতে পারে।’
অন্যদিকে, আইনজীবী আহসান হাবিব মুকুল জানান, তিনি নথি নিয়েছিলেন ঠিকই, তবে বিচারক এজলাসে চলে আসায় তা যথাযথভাবে বেঞ্চ সহকারীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি আসামির চালান কপি থেকে তথ্য নিয়েছেন। এজাহার সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন।
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ গফুর বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে। একজন আইনজীবী এমন কাজ করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করছি।’
আদালত ও আইনজীবী সমিতি সূত্র আরও জানায়, আদালতে থাকা মামলার মুল কপি থেকে মামলার এজাহারের কপি সরিয়ে নিয়ে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া এজাহার কপি হারিয়ে গেলেও মামলার বিচারের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ ওই মামলার এজাহারের ফটোকপি রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলির কাছে সংরক্ষিত থাকে। এর বাইরেও অনেক মাধ্যমে মামলার এজাহারের কপি পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
তবে, মুল নথিতে এজাহারের কপি না থাকাটা সমীচীন নয়। এ বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে জানায় সূত্র।
মন্তব্য