কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে একটি মাদ্রাসার বারবার স্থান পরিবর্তন করা হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত হওয়ার পরে নিজস্ব জায়গা থাকা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত স্থানান্তর হয়েছে পাঁচবার। শিক্ষার্থীদের সুবিধা অসুবিধার কথা চিন্তা করে নয়, মাদ্রাসা সুপারের ইচ্ছামতো স্থানান্তর হয় যখন তখন।
কখনও স্থানান্তর করে আনা হয়েছে সুপারের বাড়ির সামনে, কখনও বা যাতায়াতের অনুপযোগী হাওরে, কখনও আনা হয়েছে সুপারের বাড়ির কাছের বাজারে। এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড়েও একবার হয়েছে লণ্ডভণ্ড। বর্তমানে সেই মাদ্রাসার অবস্থান উপজেলার ধলাই-বগাদিয়ার বাজারের একটি টিনশেড ঘরে।
তবে যে ঘরটিকে মাদ্রাসা হিসেবে দেখানো হয়েছে সেটি মূলত ধলাই-বগাদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি পরিত্যক্ত ঘর। রবি, সোম ও মঙ্গলবার সকালে গিয়ে দেখা সেই ঘরের দরজা বন্ধ। ভেতরে ঢুকতেই দেখা যায় পুরো ঘরটাই ফাঁকা। এক কোণায় একটি টেবিল, একটি ভাঙা চেয়ার আর পাঁচটি বেঞ্চ।
মাদ্রাসা সুপারের দাবি, এখানেও অনেক কিছু ছিল স্থানীয়রা শত্রুতা করে নিয়ে গেছে।
অস্তিত্ববিহীন এই প্রতিষ্ঠানটির নাম শ্যামপুর দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা। মিঠামইন উপজেলার গোপদিঘী ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামে নিজস্ব জায়গায় কেবল একটি সাইনবোর্ড আছে। শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা আসেন ইচ্ছে মতো, চলেও যান যখনতখন। শিক্ষার্থীরা কেবল ফি দিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেই খুশি কর্তৃপক্ষ। উপস্থিতির ব্যাপারে কারও কোনো দুশ্চিন্তা নেই তাদের।
মাসে পাঁচদিন এলেও প্রত্যেকের উপস্থিতি আছে কমপক্ষে পঞ্চাশ শতাংশ। শিক্ষকরা মাসের পরে মাস না এসেও হাজিরা খাতায় প্রতিদিনের সাক্ষর আছে সবারই।
মাদ্রাসাটি স্থাপিত হয় ১৯৯৯ সালে। পাঠদানের জন্য অ্যাকডেমিক স্বীকৃতি পায় ২০০৫ সালে। আর এমপিওভুক্ত হয় ২০১০ সালে।
১৯৯৯ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত নিজস্ব জায়গা জমি না থাকায় শ্যামপুর বড়হাটি মসজিদের পিছনে অস্থায়ীভাবে পাঠদান চলে। এর পরে মাদ্রাসা পরিচালনার কমিটির সভাপতি প্রয়াত জজ মিয়া এক একর জায়গা দান করেন। এক পর্যায়ে মাদ্রাসার আয়-ব্যয়ের হিসেব নিয়ে তৎকালীন সভাপতি জজ মিয়ার সাথে দ্বন্দ্ব বাঁধে মাদ্রাসা সুপারের। আর এই দ্বন্দ্বের জেরেই মাদ্রাসার নামে জায়গা থাকা সত্ত্বেও সেখানে মাদ্রাসা স্থাপনে অসম্মতি জানান সুপার আমিনুল হক।
পরে হঠাৎ একদিন রাতের আঁধারে মাদ্রাসার সব নথিপত্র নিজের বাড়িতে নিয়ে যান মাদ্রাসা সুপার। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকে কার্যক্রম। পরে ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে তিনি তার নিজের বাড়ির কাছে একটি ছোট বাজারে অস্থায়ীভাবে ঘর নির্মাণ করে কার্যক্রম শুরু করেন।
শ্যামপুর থেকে মাদ্রাসার ঘর ভেঙে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে। সুপারের অভিযোগ, শ্যামপুরের লোকজনের ব্যবহার ভালো না। তিনি যেখানে ভালো মনে করেন সেখানেই মাদ্রাসা চলবে।
২০১২ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ধলাই বগাদিয়া বাজারে নামেমাত্র দুইটা টিনের তৈরি করে প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে বেতন-ভাতা তুলে আসছেন ১৭ জন শিক্ষক। পরে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি কালবৈশাখি ঝড়ে ঘর ভেঙে পড়েছে দেখিয়ে পাঠদান বন্ধ থাকে ছয় মাস।
এরপর একটা ঘর তুলে কার্যক্রম শুরু হয় বগাদিয়া গ্রামের হারিছ মিয়ার বাড়িতে। পরের তিনমাস পাঠদান দেখানো হয় বগাদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি টিনশেড ঘরে।
এরপর আবার স্থানান্তর করা হয় মাদ্রাসা, এবার সুপারের নিজস্ব জমিতে। মাদ্রাসার নামে দান করা ১০০ শতাংশ জায়গা থাকা সত্ত্বেও তিনি আবারও ঘর নির্মাণ করতে থাকেন ফসলি জমিতে। যেখান যাতায়াত করাও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে শিক্ষার্থীদের। এক পর্যায়ে শ্যামপুরবাসী ক্ষুদ্ধ হয়ে সেখান থেকে ঘর ভেঙে নিয়ে যায় স্থায়ী জায়গায়।
এ ঘটনাটি গত ৯ সেপ্টেম্বর সকালের। পরদিন রাতে মাদ্রাসা সুপার শ্যামপুর গ্রামের ৮২ জনের নাম উল্লেখসহ আরও শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মিঠামইন থানায় মামলা করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, শ্যামপুর গ্রামের লোকজন তার মাদ্রাসার তিনটি টিনের ঘর, চেয়ার-টেবিল ও নথিপত্র লুটে নিয়ে গেছে। এতে তার প্রায় ২০ লক্ষ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।
যদিও বাস্তবচিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত। তিনি সবেমাত্র ঘর নির্মাণ করতে শুরু করেছিলেন। এখনও সেখানে পাঠদানের উপযোগী কোনো পরিবেশেরই সৃষ্টি হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, তাদেরকে শায়েস্তা করতেই এমন অভিযোগ তুলেছেন সুপার।
পাঁচ বেঞ্চে ১০ শ্রেণির ২৭৪ জনের ক্লাস!
গত ১৮, ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর পরপর তিনদিন মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায় ভেতরে একটি টেবিল, একটি ভাঙা চেয়ার আর পাঁচটি বেঞ্চ ছাড়া আর কিছুই নাই। মাদ্রাসা সুপার আমিনুল হক বলেন তার প্রতিষ্ঠানে সব মিলিয়ে ২৭৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তার দাবি, উপস্থিতির হার ৫০ শতাংশ।
তাহলে শিক্ষার্থী-শিক্ষক কাউকেই মাদ্রাসায় পাওয়া যায়নি কেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আগে আসত, এখন দাখিল পরীক্ষা চলছে আর মাদ্রাসা নিয়েও একটু ঝামেলা চলছে জেনে শিক্ষার্থী আসেনি। কয়েকদিন পর থেকে আবারও আসবে।’
আপনার প্রতিষ্ঠানে তো পর্যাপ্ত পরিমাণ চেয়ার-টেবিলই নেই। তাহলে পৌনে তিন শ ছাত্রের পাঠদান কীভাবে সম্ভব?- এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে চাননি মাদ্রাসা সুপার।
সুপারের বাড়ির পাশেই বসবাস করেন মো.হারুনূর রশিদ। তিনি একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘এই মাদ্রাসাটি একটি আজব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও মন চাইলেই আসেন আবার কিছুক্ষণ চা পান করেই আবার চলে যান। যে প্রতিষ্ঠানের সুপারই অনিয়মিত সেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কথা আর নাই বললাম। পরীক্ষা ছাড়া ২০ জনকে একসঙ্গে ক্লাস করতে দেখিনি।’
তিনি বলেন, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অনিয়ম নিয়ে প্রতিবাদ করতে করতে আমি মামলার আসামি হয়েছি। এই মাদ্রাসার বিরুদ্ধে ফেসবুকে লিখতে গিয়ে স্থানীয় এক সাংবাদিকের নামেও অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
সহকারী কৃষি শিক্ষক আসেন না ৪ বছর ধরে
এই শিক্ষকের নাম হাসান মোহাম্মদ ফরহাদ। বাড়ি ঘাগড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে। তিনি মাদ্রাসায় যোগ দেন ২০০৫ সালে। সর্বশেষ কবে এসেছিলেন এ বিষয়ে সঠিক বলতে পারেন না স্থানীয়রা।
তবে তাকে চার বছর পূর্বে একবার দেখেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল হক। তিনি বলেন, ‘অন্য শিক্ষকরা তো মন চাইলে মাঝে মাঝে আসেন। তবে ফরহাদ সাহেবকে দেখেছিলাম আরও চার বছর আগে। পরে আর কোনোদিন দেখিনি।’
তার অনুপস্থিতির বিষয়ে গত মার্চ মাসে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম।
তবে হাসান ফরহাদ সকল অভিযোগকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তার দাবি, সামাজিকভাবে হেয় করতে এই অভিযোগ আনা হয়েছে।
নিয়মিত পাঠদান না থাকায় মাদ্রাসা ছেড়ে অন্যত্র
মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত তামান্না আক্তার। পরে ভর্তি হয় অন্য একটি মাদ্রাসায়।
কারণ কী- প্রশ্ন করতেই জবাব মিলল, ‘সারা বছরে মাত্র ১৫ থেকে ২০ দিন ক্লাস করার সুযোগ পেয়েছিলাম। এমন অনেক সময় মাদ্রাসায় গিয়ে দেখি কেউই আসেনি। পরে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে ক্লাস না করেই বাড়ি ফিরেছি। যদি বাড়িতে প্রাইভেট না পড়তাম তাহলে কিছুই শিখতে পারতাম না। পরে কোনোমতে এই বছরটা শেষ করে শহরে গিয়ে আরেকটা মাদ্রাসায় সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছি।
‘আমাদের এলাকায় মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতে পারলে খরচটা কম হতো, কিন্তু এখন তো অনেক বেশি খরচ পরে।’
আরেক শিক্ষার্থী মাকসুদা আক্তার এই মাদ্রাসায় পড়াশুনা করেছে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। এরপর আর পড়েনি।
মাকসুদা বলেন, ‘ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার পর থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত মন চাইলে মাদ্রাসায় যেতাম, আবার যখন ইচ্ছা চলে আসতাম। যাওয়া না যাওয়া একই কথা। কারণ, গেলেও কোনো ক্লাস হতো না। কয়েকজন স্যার এসে কিছুক্ষণ চা-পান খেয়ে চলে যেত। আমাদেরকে বলত বাড়িতে গিয়ে ভালো করে পড়তে। পরীক্ষার সময় ভালো করলেই হবে।’
সব শিক্ষককে চেনে না ছাত্ররা
মাদ্রাসা সুপারের দেওয়া তথ্যমতে, তার প্রতিষ্ঠানে ২৭৪ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন ১৭ জন।
শিক্ষার্থী মাহফুজ মিয়া বলে, ‘আমরা খালি জানি আমাদের ১৭ জন স্যার। তবে সবাইকে একসঙ্গে দেখার সুযোগ হয়নি।’
সুযোগ না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে সে বলে, ‘একজন আসলে আরেকজন আসেন না। আবার আমরাও নিয়মিত যাই না। এজন্য সবাইকে চেনার সুযোগ হয়নি।’
বাড়িতে থেকে বেতন
শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা ৭০ বছর বয়সী আব্বাস উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘মাদ্রাসাটা প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর প্রথমে কিছুদিন ভালোই চলছিল। এমপিওভুক্ত হওয়ার পর ভেবেছিলাম এখানে পড়াশোনা করে আমাদের সন্তানেরা শিক্ষিত হবে। কিন্তু মাদ্রাসা সুপারের তেলেসমাতির কারণে সব ভেস্তে গেছে।
তিনি বলেন, পরিচালনা কমিটির কাছে তারা আয়-ব্যয়ের হিসাব চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা দেয়নি। একদিন রাতের আঁধারে মাদ্রাসার সব নথিপত্র নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। বলেন, শ্যামপুর গ্রামেই মাদ্রাসা রাখবেন না। যারা পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক তারা মাদ্রাসা যেখানে থাকবে সেখানেই আসবে। আর না এলে নাই৷
আব্বাস বলেন, ‘এই মাদ্রাসায় ১৭ জন শিক্ষক রয়েছেন। তারা তিনভাগে ভাগ হয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা করেন। একদিন যে পাঁচজন আসেন পরদিন আসেন ভিন্ন পাঁচজন। এভাবেই মিলেমিশে বাড়িতে বসেও বেতন তুলছেন তারা। এ বিষয়ে বহুবার প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু লাভ হয়নি।’
একই এলাকার বাসিন্দা ৬৬ বছর রইছ উদ্দীন বলেন, ‘মাদ্রাসাটি নিয়ে যে তেলেসমাতি আমরা দেখেছি তা বলার ভাষা নেই। মাদ্রাসা সুপার তার ইচ্ছেমতো মাদ্রাসাটি নিয়ে ফেরি করে বেড়ান।
‘মাদ্রাসার নিজস্ব জায়গা থাকা সত্ত্বেও তিনি সেখানে পরিচালনা করতে নারাজ। কারণ, এখানে থাকলে নিয়মিত ক্লাস করতে হবে। আর তার বাড়িতে থাকলে মন চাইলে আসলেন, না চাইলে ঘরে ঘুমালেন। এই হলো অবস্থা।’
সবাই আমার শত্রু: মাদ্রাসা সুপার
আমিনুল হক। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই মাদ্রাসার সুপারের দায়িত্বে আছেন। তার বাড়ি একই ইউনিয়নের ধলাই গ্রামে।
তিনি বলেন, ‘মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে জায়গা সংকটে ভুগেছি। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি তৎকালীন সভাপতি আমাকে নানা অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন। রাজি না হওয়ায় তিনি আমাকে বিভিন্নভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে কথাবার্তা বলতেন। পরে আমি বাধ্য হয়ে মাদ্রাসা স্থানান্তর করেছি।’
নিয়মিত পাঠদান না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বন্যা আর করোনার কারণে উপস্থিতি কমে গেছে।’
আপনার বিরুদ্ধে স্থানীয়দের এত অভিযোগ কেন-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সবাই আমার শত্রু তাই মিথ্যা অভিযোগ করে।’
তাহলে আপনি শত্রুতার জেরেই তাদের নামে মামলা করেছেন- এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে রাগ দেখান সুপার।
এ বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামসুন নাহার মাকছুদা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই মাদ্রাসার বিষয়ে আমি মৌখিকভাবে শুনেছি। তবে এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ হবে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে বলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের পর নিরাপত্তাহীনতায় পুনরায় বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় গারো পাহাড় সীমান্তে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্যসহ ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি।
সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল পৌণে সাতটার দিকে শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার নকশি সীমান্ত পথে নকশি ক্যাম্পের টহলরত বজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে বিকেলে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
বিষয়টি ২৬ আগষ্ট সকালে বিজিবি পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়।
আটককৃতরা হলো মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রমজান আলী (২৪) ও আসমত আলীর ছেলে রাসেল (১৬)। আটক অনুপ্রবেশকারীরা হলো, নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বোমবাঘ গ্রামের শামীম শেখ (২৩), আফসানা খানম (২২), রুমা বেগম (৩২), মিলিনা বিশ্বাস (২৮) ও তিন বছর বয়সী শিশু কাশেম বিশ্বাস।
বিজিবি এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, মাথাপিছু ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে গত ২৩ আগস্ট রাতের আধারে নালিতাবাড়ীর সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধ পথে নারী এবং শিশুসহ ৫ বাংলাদেশীকে ভারতে পাঠায় মানব পাচারকারী রমজান আলী ও রাসেল। কিন্তু ভারতীয় পুলিশের তৎপরতায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে এ পাঁচ বাংলাদেশী। এ কারণে ২৫ আগষ্ট সোমবার সকাল পৌণে সাতটার দিকে ঝিনাইগাতির নকশি সীমান্তের কালিমন্দির এলাকা দিয়ে পুনরায় তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এসময় টহলরত বিজিবি সদস্যরা টের পেয়ে সবাইকে আটক করে। পরে মানব পাচারে জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে এবং অন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করা হয় এবং সবাইকে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ময়মনসিংহ বিজিবি’র ৩৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিজিবির পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
ঝালকাঠিতে গ্রাহকদের চাহিদা বিবেচনায় এনে ব্রান্ডশপ লোটো ও লি কুপার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ১৩২তম ফ্লাগশিপ আউটলেট উদ্বোধন করেছে।
এক্সপ্রেস লেদার প্রোডাক্ট লিঃ এর ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর কাজী জাভেদ ইসলাম সহ কোম্পানির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের সাথে নিয়ে ফিতা কেটে আউটলেটটি উদ্বোধন করেন ঝালকাঠির পুলিশ সুপার উজ্জ্বল কুমার রায়।
পৌর শহরের সাধনার মোড়ে মঙ্গলবার ২৬ আগষ্ট সকাল ১০টায় লোটো ও লি কুপারের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটদ্বয়ের শুভ উদ্বোধন আনুষ্ঠানে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রাহক ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠিতে কোম্পানীর এ যাত্রার প্রথম দিনে স্থানীয় ফ্যাশন সচেতন তরুণ তরুণীরা তাদের পছন্দের পন্য কালেকশন বেছে নিতে ভীর জমায়।
কোম্পানীর পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রথম তিনদিনের প্রতিদিন প্রথম ৩০ জন পাবেন ৫০% ছাড়, ২য় ৩০ জন পাবেন ৪০% ছাড়, ৩য় ৩০ জন পাবেন ৩০% ছাড়, ৪র্থ ৩০ জন পাবেন ২০% ছাড় এবং তৎপরবর্তী সকল কাস্টমার পাবেন ১০% ছাড়। এই বিশেষ ছাড় ২৬শে আগষ্ট থেকে শুরু হয়ে ২৮ তারিখ পর্যন্ত চলমান থাকবে
নওগাঁয় সপ্তম শ্রেণীর এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে আটক রেখে ধর্ষণ মামলায় আ: সালাম (৩৮) নামে এক আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে নওগাঁর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মেহেদী হাসান তালুকদার এ রায় দেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আ: সালাম সদর উপজেলার বর্ষাইল মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম ওই শিক্ষার্থীর পরিবার পত্নীতলা উপজেলায় ভাড়া থাকতেন। ভাঙ্গারী ব্যবসার সুবাদে আসামী আ: সালামও পাশাপাশি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। ভিকটিম মাদ্রাসায় যাওয়া আসার পথে আ: সালাম বিভিন্ন সময় কু-প্রস্তাব দিতো এবং রাস্তাঘাটে বিরক্ত করতো। বিষয়টি জানাজানি হলে আসামী আ: সালাম ওই ভিকটিমের পরিবারকে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখাতো। এরই একপর্যায়ে ২০২২ সালের ১১ জুলাই বিকেল তিনটার দিকে আসামী আ: সালাম একটি বাজার এলাকা থেকে ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর দক্ষিন পাড়া গ্রামের মোজাফ্ফর রহমানের ভাড়া বাড়িতে আটক রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা পত্নীতলা থানায় অভিযোগ করলে র্যাব ওই বাড়ি থেকে আসামিকে গ্রেফতার ও মেয়েকে উদ্ধার করে। পরে তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা থাকায় আসামী আ: সালামসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। আদালত ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন শেষে আজ আ: সালামকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদন্ড ও অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়। বাকি আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় তাদেরকে খালাস দেওয়া হয়।
মামলার এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম সন্তোষ প্রকাশ করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ফাহমিদা কুলসুম উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা জানান।
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালী ইউনিয়নের বালুকাপাড়া গ্রামে রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করায় এক দম্পতিকে দেড় বছর ধরে 'সমাজচ্যুত' করে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে নালিশ দেওয়ার জের ধরে পেটানো হয় দিনমজুর আব্দুল জলিল প্রামানিককে। প্রতিপক্ষের লোকজনের মারধরে এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে গেছে।
এঘটনায় তিনি একটি থানায় অভিযোগ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে সেটি মামলাটি হিসেবে রের্কড করা হয়। তবে মামলার এজাহারে সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
সরেজমিনে বালুকাপাড়া গ্রামে গিয়ে আব্দুল জলিলকে ১৮ মাস ধরে সমাজচ্যুত করে রাখার তথ্য জানা গেছে। আব্দুল জলিলের সমাজচ্যুত করার ঘটনাটি স্থানীয় রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রশীদ মন্ডলও অবগত আছেন। তিনি দুই পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকেও সমাজচ্যুত করে রাখার বিষয়টি সমাধান করতে পারেনি।
গ্রামবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিক কলহের কারণে আব্দুল জলিল প্রামানিক রাগের মাথায় তার স্ত্রীকে তালাক দেন। এঘটনার ২৯ দিন পর তিনি আবারও স্ত্রীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরেরা ক্ষুব্ধ হয়ে আব্দুল জলিল প্রামানিকের পরিবারকে সমাজচ্যুত করে রাখেন। সেই সময় জলিল প্রামানিক বিষয়টি আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)কে জানান। ইউএনও রায়কালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মণ্ডলকে বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব দেন। ইউপি চেয়ারম্যান উভয়পক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তবে কার্যত কোন কোনো সমাধান করতে পারেননি। এতে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলের ওপর আরও ক্ষুব্ধ হন। সমাজচ্যুত করে রাখা আব্দুল জলিল গত ১৫ আগস্ট রাত আটটার দিকে গ্রামের মসজিদের দিকে রওনা হন। এসময় মাতব্বরেরা তাকে দুই দফায় প্রচন্ড মারধর করেন। এতে তার বাম হাতের হাঁড় ভেঙে যায়। তিনি চিকিৎসা নিয়ে থানায় আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
বালুকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। কয়েক দিন পর আবার সংসার শুরু করেন। এনিয়ে গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিল প্রামানিককে সমাজচ্যুত করেন। এনিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বৃদ্ধা লুৎফন নেছা বলেন, আমি কাজ করতে পারিনি। আব্দুল জলিলের বউ আমার বাড়িতে এসে জবাই করা মুরগির তরকারি রান্না করে দিয়েছিল। আমি জলিলের বাড়িতে গিয়ে এক বাটি মুরগির মাংসের তরকারি দিয়ে এসেছি। এতে আমাকেও সমাজচ্যুত করার হুমকি দিয়েছিল।
বালুকাপাড়া গ্রামের মোড়ের দোকানি হাফিজার রহমান বলেন, বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় আব্দুল জলিল প্রামানিককে গ্রামের মাতব্বরেরা সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল গ্রামের সামাজিক কোন কর্মকান্ডে অংশ নিতে দেয় না।
আব্দুল জলিল প্রামানিক বলেন, আমি রাগের মাথায় স্ত্রী তালাক দিয়েছিলাম। ২৯ দিন পর আবার বিয়ে পড়ে নিয়েছি। একারণে গ্রামের মাতব্বর রকি খান, মিল্টন খাঁ, আবু সুফিয়ানসহ আরও ১০-১২ জন আমাকে সমাজচ্যুত করেছেন। রাগের মাথায় স্ত্রীক। তালাক দিলে পুনরায় বিয়ে করা যাবে ঢাকার একজন মুফতির মতামত নিয়ে আসার পরও তারা মানেনি। তারা বলছে হিল্লা বিয়ে ছাড়া আমার বিয়ে বৈধ হবে না। তারা আমাকে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে গ্রামের মসজিদে নামাজ আদায়ে করতে ও জানাজায় শরিক হতে বা দেননি। মিলাদ মাহফিল দাওয়াত দেওয়ার মাতব্বরদের চাপে পর ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এমনকি গ্রামের কারও জমিতে দিনমজুরি কাজও করতে পারব না বলে লোকজন জানিয়ে দেন। একারণে কেউ আমাকে কাজে নেয় না। সমাজচ্যুত করার জের ধরে মসজিদে যাওয়ার সময় মাতব্বরদের একাংশের লোকজন আমাকে মেরে হাত ভেঙে দিয়েছেন।
গ্রামের মাতব্বদের একজন মো. মিল্টন খাঁ। তিনি আব্দুল জলিলের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি। তাকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কাজ করেছেন। একারণে গ্রামের লোকজন তাকে সমাজচ্যুত করেছেন। আব্দুল জলিল সমাজ বিরোধী কি কাজ করেছেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আব্দুল জলিল তার স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আবার স্ত্রীকে নিয়েছেন। এটা সমাজ বিরোধী কাজ।
আক্কেলপুর রায়কালী ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মন্ডল বলেন, আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তিনি রাগের মাথায় স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলেন। এঘটনায় গ্রামের মাতব্বরেরা আব্দুল জলিলকে সমাজচ্যুত করেন। আব্দুল জলিল ইউএনও স্যারের কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। ইউএনও স্যার আমাকে ঘটনাটি সমাধানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। উভয়পক্ষকে ইউপি কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে বৈঠক করেছি। আব্দুল জলিল যেন সামাজিকভাবে মিশতে পারে সেটি বলেছি। সমাজচ্যুতের ঘটনার জের ধরে আব্দুল জলিলকে মারধর করা হয়েছে। এতে তার বাম হাত ভেঙেছে বলে জেনেছি।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আব্দুল জলিল প্রামানিক থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছিলেন। অভিযোগটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় সেটি মামলা হিসেবে রের্কড করা হয়েছে। আসামি আট জনের মধ্যে ইতিমধ্যে আদালত থেকে পাঁচজন আসামি জামিন নিয়েছেন, অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
মন্তব্য