কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের ছয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেছেন জেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক নওরিন রহমান।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া মডেল থানায় নওরিনের দেয়া একটি অভিযোগ বুধবার পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে জেলা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ইউনিটকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এ মামলায় অভিযুক্ত নেতাকর্মীরা হলেন জেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক ফারদিন সৃষ্টি, সদস্য মোহাম্মদ হৃদয়, সদস্য রেফাউল ইসলাম, সদস্য শাকিল আহমেদ তুষার, সদস্য রাহাতুল ইসলাম ও কর্মী মুহায়মিনুল মিরাজ।
ছাত্রলীগের সহসম্পাদক নওরিন রহমান অভিযোগ করেছিলেন, তার কিছু ব্যক্তিগত গোপন ছবি অভিযুক্তরাসহ আরও কয়েকজন সম্প্রতি তাদের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেন।
লিখিত অভিযোগে নওরিন দাবি করেন, তাকে হেয় করতেই অভিযুক্তরা এসব ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেন।
এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার বেলা ১১টায় কুষ্টিয়া শহরের এনএস রোডে জেলা ছাত্রলীগের কার্যালয়ে অভিযুক্ত নেতাকর্মীরা এবং শহরের বড়বাজার এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় নওরিন রহমান একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন।
এ সময় বিচার না পেলে আত্মহত্যার হুমকিও দেন নওরিন। এর পরই বিকেলে গত ১৯ সেপ্টেম্বর দেয়া তার অভিযোগটি মামলা হিসেব নথিভুক্ত করে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ।
নাটোরে পৃথক দুই দুর্ঘটনায় পানিতে ডুবে চার শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার নলডাঙ্গায় হালতি বিল ও সিংড়ায় বারনই নদীতে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
হালতি বিলে ঘুরতে এসে নৌকা ডুবে মারা যায় দুই সহোদর ১১ বছরের সাদমান আব্দুল্লাহ ও ৯ বছরের আব্দুর রহমান। আর সিংড়ায় নদীতে ডুবে মারা গেছে ৫ বছরের ফাতেমা খাতুন ও ৯ বছরে বয়সী আব্দুস সবুর।
নৌকা ডুবে মারা যাওয়া দুই সহোদরের বাবার নাম আরিফুল ইসলাম। বাড়ি লালপুর উপজেলার আড়বাব এলাকায়।
নলডাঙ্গা থানার ওসি আবুল কালাম জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় হালতি বিলে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসেন আরিফুল ইসলাম। নৌকায় চড়ে বিলের মধ্যে বেড়ানোর সময় খোলাবাড়িয়া এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের তারের সঙ্গে বেঁধে ১৭ জন যাত্রী নিয়ে নৌকাটি উল্টে যায়।
নৌকার অন্য যাত্রীরা সাঁতার কেটে পাড়ে উঠতে পারলেও দুই ভাই সাদমান আব্দুল্লাহ ও আব্দুর রহমান নিখোঁজ হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নাটোর ফায়ার সার্ভিসকে ঘটনা জানায়। পরে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা এসে দুই ভাইকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন।
বারনই নদীতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
এদিকে সিংড়া উপজেলার উলুপুর গ্রামে বারনই নদীতে অপর দুর্ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার দুপুরের দিকে। তাদের মধ্যে ফাতেমা একই এলাকার সাইফুল ইসলামের মেয়ে। অপর শিশু সবুরের বাবার নাম সাহাদ ইসলাম।
সিংড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম জানান, সম্পর্কে চাচাতো ভাই-বোন ফাতেমা ও সবুর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাদের বাড়ি সংলগ্ন বারনই নদীতে গোসল করতে নামে। এক পর্যায়ে স্রোতের টানে ফাতেমাকে ডুবে যেতে দেখে সবুর তাকে বাঁচাতে যায়। এ সময় সে-ও পানিতে ডুবে যায়।
স্থানীয়রা ঘটনাটি দেখে নদীতে নেমে শিশু দুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশের মাধ্যমে রাজশাহীর ফায়ার সার্ভিসের ডুবইর দলকে খবর দেয়া হয়। ডুবুরি দল এসে দীর্ঘ সময়ের চেষ্টায় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঘটনাস্থলের কিছু দূর থেকে শিশু দুটির মরদেহ উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে যাত্রীবাহী স্পিডবোট ডুবির ঘটনায় এক নারী নিহত হয়েছেন।
শাহপরীর দ্বীপে নাফ নদীর মোহনায় শুক্রবার দুপুরে এ দুর্ঘটনায় পড়ে স্পিডবোটটি।
নিহত ৫৫ বছর বয়সী ফিরোজা খাতুন সেন্টমার্টিন দ্বীপের ডেইলপাড়ার এলাকার বাসিন্দা ছিলেন এবং তিনি সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক নারী সদস্য।
টেকনাফ উপজেলার ইউএনও আদনান চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘দুপুরে দ্বীপের বাসিন্দা নুরুল আলমের মালিকানাধীন স্পিডবোটটি ২১ জন যাত্রী নিয়ে যাওয়ার পথে নদীর মাঝামাঝি মোহনায় হঠাৎ তলা ফেটে সেটি ডুবে যায়। দুর্ঘটনার খবরে কোস্টগার্ড তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ওই নারীকে মৃত ঘোষণা করেন। অবৈধভাবে এ রুটে চলাচলকারী স্পিডবোটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, ‘নাফ নদীতে যাত্রীবাহী স্পিডবোট ডুবিতে সাবেক এক নারী ইউপি সদস্য নিহত হয়েছেন। আরও কয়েকজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকিদের বিষয়ে আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি।’
মহাসড়কে ফেনীর ছাগলনাইয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাসের ধাক্কায় সাবেক সেনা কর্মকর্তাসহ একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন আরোহী নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার নিজকুঞ্জরা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন সেনাবাহিনীর সাবেক সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার ও সেনা কল্যাণের চট্টগ্রাম শাখার কর্মকর্তা ৫৯ বছরের আবু তাহের, তার স্ত্রী ৪৮ বছলেরর সালমা আক্তার ও অজ্ঞাত আরেকজন।
নিহতের আবু তাহেরের ভাই ছাগলনাইয়ার ঘোপাল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, তার ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বাংলাবাজারে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে তারা নিহত হন।
সাদেক হোসেন আরও বলেন, বিপরীত দিক থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের একটি গাড়ি সিএনজিটিকে চাপা দিলে মারা যান তারা।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. রুহুল মহসিন সুজন বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
শহরের সুপার মার্কেট এলাকায় মুন্সীগঞ্জ পৌরসভা আয়োজিত অনুষ্ঠানে শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে এ সংঘর্ষ হয়।
পৌরসভার কাউন্সিলর মকবুল হোসেন ও গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমেদ জিন্নাহর লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
সংঘর্ষে আহত আব্দুল মালেক, মো. জামাল, সোহাগ, রাসেল, সাদ্দাম ও আফসার হোসেনকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
গুরুতর আহত ৪৮ বছর বয়সী মনির হোসেনকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতা-কর্মী ও সংঘর্ষের সময় উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরের পর থেকেই মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার আয়োজনে মেয়র ফয়সাল বিপ্লবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। মিছিলে মিছিলে মুখরিত ছিল পুরো এলাকা।
অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গজারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনসুর আহমেদ জিন্নাহর নেতৃত্বে বেশ কয়েকটি ট্রলারে নেতা-কর্মীরা আসছিলেন।
তারা মিছিল নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলের দিকে রওনা দিয়ে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আসলে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মকবুল হোসেনের ভাই মনির হোসেনের সঙ্গে কথা কাটাকাটির হয়। এক পর্যায়ে তা সংঘর্ষে রুপ নেয়। এ সময় লাঠিসোটা নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর মকবুল হোসেন বলেন, ‘ট্রলারে করে গজারিয়ার সাধারণ সম্পাদক জিন্নাহর লোকজন শহরের হাটলক্ষীগঞ্জ এলাকার লঞ্চঘাটের অদুরে বেড়িবাঁধে আসেন। সেখানে আমার ছোট ভাইয়ের পায়ে ধাক্কা লাগে জিন্নাহর লোকজনের। এরপর তারা মিছিল নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে যাওয়ার পথে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা আমার বড় ভাই মনির হোসেনকে বেধড়ক মারধর করে।’
গজারিয়া উপজেলার আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মনসুর খান জিন্নাহ বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। তবে আমার সঙ্গে ঘটনাটা ঘটেনি, এতে আমার কয়েকজন লোক আহত হয়েছে।’
সদর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে। এ সময় উভয় পক্ষের লোকজন সরে পড়ে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।’
চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষে ছাত্রলীগের এক কর্মী নিহত হয়েছেন।
উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার ওসমানপুর এলাকায় শুক্রবার বিকেল পাঁচটার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে জোরারগঞ্জ থানার ওসি জাহিদ হোসেন নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
নিহত মোহাম্মদ নোমান ওসমানপুর এলাকার প্রয়াত নুরুজ্জামানের ছেলে।
ওসি জাহিদ হোসেন বলেন, ‘বিকেলে ওসমানপুর ইউনিয়নে বিএনপির প্রোগ্রাম ছিল। এ সময় ছাত্রলীগও পাশাপাশি অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে বিএনপির লোকজন মিছিল নিয়ে ছাত্রলীগের ওপর হামলা করে।
‘হামলায় নোমান নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়রা তাকে ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে দাবি করছেন। ঘটনায় ৫ থেকে ৬ জন আহত হয়েছেন, তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
ওসমানপুর ইউনিয়ন যুবলীগের প্রচার সম্পাদক সঞ্জয় মল্লিক বলেন, আজমপুর বাজারে বিএনপির সংসদ সদস্য প্রার্থী নুরুল আমিনের প্রোগ্রাম ছিল। এ সময় খবর পেয়ে আমরা এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিই। তাদের প্রোগ্রাম শেষে লাঠিসোটা ও অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে এসে মুহুরি প্রজেক্ট থেকে আজমপুর বাজার পর্যন্ত ভাঙচুর চালায়।
তিনি বলেন, ‘আমাদের পার্টি অফিসেও হামলা করা হয়। আমাদের কোনো প্রস্তুতি ছিল না, তারা আমাদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ নেতা হাসান রাফি আরফিন, যুবলীগ নেতা সাত্তার সুজন দুখু, ছাত্রলীগ কর্মী নোমানসহ বেশ কয়েকজনকে আহত করে। তাদের মধ্যে নোমানের মৃত্যু হয়েছে।’
সঞ্জয় মল্লিক বলেন, পুরো হামলাটা বিএনপি নেতা নুরুল আমিনের নির্দেশেই হয়েছে বলে ধারণা আমাদের।
যান্ত্রিক জীবন থেকে কিছুটা সময় দূরে থাকার আকাঙ্ক্ষা মনে মনে সবাই পোষণ করে। বাংলাদেশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে তাইতো দুই-একদিনের ছুটি পেলেই মানুষ ছুটে যায় ঘুরতে।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ও সরকারি টানা ছুটিতে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছে এবার সিলেটের মৌলভীবাজার।
জেলার কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার টিলাঘেরা সবুজ চা বাগান, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ, নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, হামহাম জলপ্রপাত, মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, ডবলছড়া খাসিয়া পুঞ্জিসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে যেন পা ফেলার জায়গা নেই।
অন্যদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য কমলগঞ্জ থানার ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিমকে সকাল থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত প্রতিটি জায়গায় টহল দিতে দেখা যায়।
ওসি সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কমলগঞ্জের সকল পর্যটন এরিয়ায় পুলিশের একটি টিম নিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখছি। নিরবিঘ্নে পর্যটকরা যেন ঘুড়তে পারেন সে জন্য আমরা তাদের নিরাপত্তার জন্য পর্যবেক্ষণ করছি।’
জীব বৈচিত্র্যে ভরপুর বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, পদ্মকন্যা নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, ঝর্ণাধারা হামহাম জলপ্রপাত, ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী ধলই চা বাগানে অবস্থিত মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্যের বাহক বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ, বন্যপ্রাণির অভয়ারণ্য রাজকান্দি বন, শমসেরনগর বিমানবন্দর, প্রাচীন ঐতিহ্যের বাহক লক্ষ্মীনারায়ণ দিঘী, ২০০ বছরের প্রাচীন ছয়চিরী দিঘী, শমসেরনগর বাঘীছড়া লেক, আলিনগর পদ্মলেক, মাগুরছড়া পরিত্যক্ত গ্যাসফিল্ড, ডবলছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, অপরূপ শোভামণ্ডিত উঁচু নিচু পাহাড়বেস্টিত সারিবদ্ধ পদ্মছড়া চা বাগান, শিল্পকলা সমৃদ্ধ মনিপুরী, প্রকৃতির পূজারী খাসিয়া, গারো, সাঁওতাল, মুসলিম মনিপুরী, টিপরা ও গারোসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার জীবন ধারা ও সংস্কৃতিসহ প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এ জনপদ পর্যটকদের মন ও দৃষ্টি কেড়ে নেয়।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ও সরকারি টানা তিন দিনের ছুটিতে এসব আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছিল। বৃহস্পতিবার থেকে মাধবপুর লেক ও লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে দেখা মেলে দূর-দূরান্ত থেকে আগত পর্যটনপ্রেমী ভ্রমণ পিয়াসুদের। এদের মধ্যে সপরিবারে ও দম্পতিদের ঘুরতে আসা পর্যটকদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। এ সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার লোকজনের উপস্থিতি ছিল অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। জীব বৈচিত্র্যের অপরূপ সমাহার ঘুড়ে দেখতে পর্যটকরা ছুটে এসেছেন এখানে।
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ, মাধবপুর লেক ও লাউয়াছড়া ঘুরতে যাওয়া সিলেট মহিলা কলেজের ছাত্রী আয়েশা সিদ্দিকা বললে, ‘এখানে এসে খুবই ভালো লাগছে। আব্বু-আম্মুর সঙ্গে ঘুরতে এসেছি। বানরের লাফালাফি দেখেছি। তা ছাড়া হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ যাদুঘড় ও লেকের পানি সব মিলিয়ে অসাধারণ লাগছে। মন চাচ্ছে না ফিরে যেতে। যেকোন ছুটি পেলে আবার আসবো।’
লাউয়াছড়া টিকেট কালেক্টর শাহিন আহমদ জানান, শুক্রবার পর্যটকের উপচেপড়া ভির ছিল। সামাল দিতে তাদের হিমসিম খেতে হচ্ছে। এমন আগে কখনও হয়নি। শুক্রবার মোট পর্যটক এসেছেন ১ হাজার ৩২৩ জন। প্রাপ্তবয়স্ক ১ হাজার ১১২জন, ছাত্র ১৯০ জন ও বিদেশী ২১ জন। মোট রাজস্ব আয় হয়েছে ৭১ হাজার ৮০০ টাকা।
লাউয়াছড়া ইকো টুরিস্ট গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক আহাদ মিয়া বলেন, ‘ছুটিতে লাউয়াছড়াসহ সব পর্যটনকেন্দ্রে প্রচুর পর্যটকের আগমন হয়। তবে এখন পর্যটকদের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। শনিবার পর্যন্ত পর্যটক আরও বাড়বে বলে আশা করছি।’
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সময়ের তুলনায় পর্যটকের সমাগম অধিক ঘটেছে। তবে লাউয়াছড়ায় পর্যটকদের উপস্থিতি সব সময়েই বেশি হয়ে থাকে যা আমাদের জন্যে অত্যন্ত আনন্দের।’
শ্রীমঙ্গলের ওয়াটারলিলি রিসোর্টে এমডি ওয়ালিদ আহসান নাহিদ বলেন, ‘গত কয়েকদিন থেকে আমার হোটেলে কোনো রুম খালি নেই। মানুষ আমাদের শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে আসছেন এটা আমাদের জন্য আনন্দের। তবে তাদের রুম দিতে পারতেছি না এতে একটু খারাপই লাগছে।’
ট্যুরিস্ট পুলিশ শ্রীমঙ্গল জোনের ইনচার্জ প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আমরা সবসময় নিয়োজিত আছি। পর্যটকরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করতে পারেন সেজন্য আমরা কাজ করছি।’
আরও পড়ুন:বাগেরহাটে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী এক কিশোরিকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রতিবেশী এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জেলার শরণখোলায় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ফয়জুল ইসলাম ওরফে মিজানকে গ্রেপ্তার করে।
ওই কিশোরীকে শুক্রবার দুপুরে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শরণখোলা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুব্রত কুমার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শরণখোলা উপজেলার একটি গ্রামে ওই কিশোরীর বাবা গত ২৩ সেপ্টেম্বর সুন্দরবনে মাছ ধরতে যায়। এ সময় তার মা তাকে পাশের ফুফুর বাড়িতে রেখে ছেলেকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য খুলনায় যান।
এ সুযোগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে প্রতিবেশী ফয়জুল ইসলাম মিজান ওই কিশোরিকে ধর্ষণ করে। খুলনা থেকে তার মা বাড়িতে আসলে ওই কিশোরী ধর্ষণের কথা খুলে বলে।
পুলিশ পরিদর্শক বলেন, ‘ঘটনা শুনে কিশোরীর মা শরনখোলা থানায় মামলা করলে আমাদের অভিযানে গভীর রাতে অভিযুক্ত গ্রেপ্তার হয়। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’
মন্তব্য