কোটি টাকা তার কাছে ১০ টাকার নোটের মতো! শতকোটির বিদেশি জাহাজ যেন বাড়িতে ব্যবহারের বাইসাইকেল!
নানা মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে অসংখ্য প্রতারণায় তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক শ কোটি টাকা। ভুক্তভোগী আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধোঁকা দিতে বদলে ফেলেছেন নিজের চেহারাও।
একসময়ের টাক মাথার মেজবাহ এখন হেয়ার প্ল্যান্টেশন করে মাথায় চুল বসিয়ে পুরোদস্তুর অন্য মানুষ।
সাত বছরের প্রতারক জীবনে তার ঝুলিতে জমেছে ২২টি মামলা। এর মধ্যে রায় হয়েছে ১১টির। বাকি ১১টিতে ছিল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা।
কিন্তু কথায় আছে- ‘চোরের দশ দিন আর গৃহস্থের এক দিন’। মেজবার ক্ষেত্রেও তার প্রমাণ মিলল। সাত বছর ধরে প্রতারণার পর অবশেষে র্যাবের হাতে ধরা পড়েছেন ধুরন্ধর এই প্রতারক।
সোমবার দুপুরে র্যাব-৭-এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতারক মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীকে আটকের কথা জানান বাহিনীর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ।
রোববার রাত ১০টার দিকে নগরীর হামজারবাগে আজাদ কমিউনিটি সেন্টারের ওপরের একটি বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক মেজবাহ হাটহাজারী উপজেলার কাটিরহাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের চৌধুরীর ছেলে।
র্যাব অধিনায়ক জানান, বাবা একসময়ের ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ায় মেজবাহ ছিলেন অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের ছেলে। প্রচুর ধনসম্পদ ছিল তাদের। আট ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি উচ্চ মাধ্যমিকের পর ব্যবসায় ঢুকে পড়েন। ১৯৯৮ সালে বাবার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা নিয়ে জাহাজের স্ক্র্যাপ ব্যবসা শুরু করেন।
অল্প পুঁজিতে শুরু করা ব্যবসায় কিছু লাভের পর তিনি অংশীদার নিয়ে আসেন। অনেকের কাছ থেকে টাকা-পয়সা নেন। পরে আরও ভালো করার পর তার মধ্যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়। বড় বিনিয়োগের চিন্তা শুরু করেন তিনি।
এ অবস্থায় লাভের টাকা দেয়ার কথা বলে মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয়া শুরু করেন। এভাবে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তার ব্যবসা চলতে থাকে।
২০০৮ সালের পর ক্ষতির মুখে পড়ে তার ব্যবসা। ধার করা টাকা ফেরত দিতে না পেরে চাপে পড়েন তিনি।
এ সময়ই প্রতারণার পথে পা বাড়ান মেজবাহ।
প্রতারণার পথে পা বাড়ানো
লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, ‘সে যেহেতু এই ব্যবসায় অনেক দিন ছিল, তাই অভিজ্ঞ হয়ে গেছে। অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে খুব তাড়াতাড়ি বড়লোক হওয়ার চেষ্টা করে।’
এম এ ইউসুফ জানান, ২০১৪-১৫ সালের দিকে শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে একটা জাহাজ দেখিয়ে এবং এটা নিজে কিনেছেন জানিয়ে স্ক্র্যাপ বিক্রির পর লভ্যাংশ ভাগ করার কথা বলে বিভিন্ন জনকে বিনিয়োগে আহ্বান করেন। এ সময় কেউ ৫০ লাখ, কেউ ১ কোটি, কেউ দেড় কোটি টাকাও তাকে দেন।
কিন্তু বেশ কিছুদিন চলে যাওয়ার পরও সেই জাহাজ যখন কাটা হচ্ছিল না, তখন সবাই তাকে চাপ দেয়া শুরু করেন। এ সময় নতুন আরেক গল্প নিয়ে আসেন তিনি। পাওনাদারদের এবার আরেকটি জাহাজ দেখান। সেই জাহাজে কিছু পরিত্যক্ত বক্স ছিল কনটেইনারের মতো। এগুলো দেখিয়ে পাওনাদারদের তিনি বলেন, বিদেশ থেকে জাহাজটি কেনার পর এটিতে প্রচুর সোনা পাওয়া গিয়েছিল। সেগুলো তিনি ৫০০ কোটি দামে দেশের বাইরেই বিক্রি করে দিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক তার টাকাটা বড় অঙ্কের হওয়ায় আটকে দিয়েছে। এটা উদ্ধার হলে তিনি সবার টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন।
এ ছাড়া আরও একটি গল্প তৈরি করেন তিনি। দাবি করেন, ওই জাহাজে পাঁচটি ডায়মন্ড রয়েছে। প্রতিটির মূল্য ২ হাজার কোটি টাকা। ডায়মন্ডগুলোর জন্য সরকারের বিভিন্ন লোকজনকে ম্যানেজ করতে হচ্ছে। এতদিন যে টাকাগুলো লোকজনের কাছ থেকে নিয়েছিলেন সেগুলো দিয়েই তিনি সরকারের লোকজনকে ম্যানেজ করেছেন। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। জাহাজে থাকা পাঁচটি ডায়মন্ডের একটি তিনি পাবেন। বাকিগুলো দিয়ে সরকারের বিভিন্ন জনকে ম্যানেজ করতে হবে।
যেভাবে ধরা পড়লেন মেজবাহ
প্রতারণায় সিদ্ধহস্ত মেজবাহকে ধরতে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল উল্লেখ করে র্যাব অধিনায়ক জানান, শুরুতে তারা ভেবেছিলেন- মেজবাহ দেশে নেই। কারণ কোনোভাবেই তার অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছিল না।
এম এ ইউসুফ বলেন, ‘গত সাত বছরে সে কয়েক শ মোবাইল সিম ব্যবহার করেছে। কোনো সিম সে তার কাছে রাখত না। চট্টগ্রাম শহরে স্থায়ীভাবে কোথাও বসবাসও করত না। চট্টগ্রামে এলে খুব অল্প সময়ের জন্য ভাই-বোনদের বাসায় থাকত।
‘ঢাকায়ও তার কোনো স্থায়ী নিবাস ছিল না। বিভিন্ন হোটেলে অবস্থান করত। সব মিলিয়ে খুবই চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার ছিল। আমরা যে ছবি পেয়েছি তার মাথায় চুল নেই।’
র্যাব জানায়, মাঝেমধ্যে অ্যাপস ব্যবহার করে বিভিন্নজনকে কল দিতেন মেজবাহ। কিন্তু সবগুলো নম্বরই দেশের বাইরের নম্বরের মতো দেখা যেত। তার পরও র্যাব তাকে ধরার প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়। হেডকোয়ার্টারের গোয়েন্দা বিভাগেরও সাহায্য নেয় এ বাহিনী। অফিসাররা নিয়মিত চেষ্টা করছিলেন কোনো একটা ক্লু বের করার জন্য।
অবশেষে রোববার হঠাৎ খবর পাওয়া যায়, চট্টগ্রামে বোনের বাসায় এসে উঠেছেন মেজবাহ। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানের শুরুতে মেজবাহর বোন প্রায় ১ ঘণ্টা বিভিন্ন অজুহাতে ঝামেলা তৈরির চেষ্টা করেন বলে জানায় র্যাব। পরে তারা সফল হয়।
গ্রেপ্তারের পর মেজবাহর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানান লে. কর্নেল।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে ঘরে ঢুকে এক নারী ও তার মেয়েকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগটি করেন ছেনুয়ারা বেগম নামের নারী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত সোমবার রাত দুইটার দিকে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব উত্তরপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগমের ঘরের দরজা ভেঙে আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন প্রবেশ করেন। তারা ছেনুয়ারা ও তার মেয়ের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি ও ঘুষি মারেন। একপর্যায়ে মা ও মেয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করেন আইয়ুব ও তার লোকজন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বিষয়ে কাউকে জানানো হলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান৷
এ বিষয়ে ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘সন্ত্রাসী আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক আমার বাড়িতে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রবেশ করে। পরে বাড়ি থেকে আমাকে জোরপূর্বক কয়েকজন লোক বের করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং আমার মেয়েকে নির্যাতন করে স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া বিষয়ে কাউকে বললে মেরে ফেলা হবে বলে চলে যায়।’
থানায় অভিযোগের পর আয়ুব হুমকি দিয়েছে জানিয়ে ছেনুয়ারা বলেন, ‘সেই আয়ুব খান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বলে, মামলা হলে কী হবে? জামিন নিয়ে বাহির হয়ে আমাকে আর আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে বলে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমি টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি এবং সঠিক তদন্ত করে পুলিশকে সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমি ঘটনার সত্যতা পেয়েছি এবং আমি মামলা করার জন্য ওসি বরাবর সুপারিশ করেছি।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি ওসমান গণি বলেন, ‘আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা নাশকতা মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এমএ মুহিতসহ ১৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উচ্চ আদালতের মঞ্জুরকৃত জামিন শেষ হওয়ায় তারা আদালতে হাজির হন।
মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০২৩ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে করা দুটি রাজনৈতিক মামলার ১৪ জন আসামি হাজির হলে আদালত তাদের সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহিতুর রহমান হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমেদ আহাদ, যুবদলের এমএ নিশাদ, যুবদলের সিরাজুল ইসলাম পিরুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নুরুল ইসলাম, যুবদলের ওয়াহিদুর রহমান জুনেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল হান্নান, স্বেচ্ছাসেবক দলের রোহেল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের মামুনুর রশিদ ও যুবদলের জাহেদ আহমেদ।
মৌলভীবাজার জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. ইউনুছ মিয়া জানান, ২০২৩ সালে নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিরা। আদালত শুনানি শেষে আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি থানাধীন সাজেকে শ্রমিকবাহী ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
বাঘাইছড়ি থানার সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল আওয়াল বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তিনজনকে মৃত বলে জানান।
এর আগে বিকেলে সাজেকের উদয়পুর সীমান্ত সড়কের ৯০ ডিগ্রি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশের ভাষ্য, খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের উদয়পুর সীমান্তবর্তী সড়ক নির্মাণের জন্য ডাম্প ট্রাকে ১৪ জন শ্রমিক জামান ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সেতুর কাজে যাচ্ছিলেন। পথে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের ঢালে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয়জনের মৃত্যু হয়।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার সাংবাদিকদের জানান, যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি খুবই দুর্গম এলাকা। আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী, তবে তাৎক্ষণিকভাবে কারও নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলায় ৭ (সাত) বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সৈয়দ সরাফত আলী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক রিপন চন্দ্র গোপের নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
৬০ বছর বয়সী সৈয়দ সরাফত আলী রাজনগর থানার করিমপুর চা বাগান এলাকার বাসিন্দা।
পিবিআই জানায়, শিশুটিকে বাঁশের বাঁশি বানিয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে গত ১৪ এপ্রিল বেলা পৌনে দুইটার দিকে সৈয়দ সরাফত আলী তার বাড়ির পাশের বাঁশ ঝাড়ের নিচে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হলে তিনি আত্নগোপন করেন।
অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে গত প্রথমে রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হয়।
এ বিষয়ে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে রাজনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
পিবিআই মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, ‘শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীর পার পাওয়ার সুযোগ নেই। আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার করা হবে। মামলার খুঁটিনাটি বিষয় বিবেচনায় রেখে নিখুঁত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।’
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে দায়িত্ব পালনকালে রুহুল আমিন নামে এক ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি যশোরের বেনাপোলে। বাবার নাম কোরবান আলী।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের অধীন সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ট্রাফিক ইন্সপেক্টরের দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
শিবগঞ্জ থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, সোনামসজিদ স্থলবন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের মধ্যে ট্রাক পরিদর্শন শেষে দুপুর পৌনে ১টার অফিস কক্ষে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন রুহুল আমিন। সহকর্মীরা তাকে দ্রুত শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন এসএম মাহমুদুর রশিদ জানান, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর রুহুল আমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার আগেই মারা যান। হাসপাতালে যারা নিয়ে এসেছিলেন তারা বলেছেন যে তিনি তৃষ্ণার্ত ছিলেন, পানি খেতে চেয়েছিলেন।
তবে তার মৃত্যু যে হিট স্ট্রোকে হয়েছে এটা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবে না। অন্য কোনো রোগেও তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে এখন যেহেতু প্রচণ্ড গরম চলছে তাই এটার প্রভাব থাকতে পারে।
সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ২৮৮ জন সদস্যকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়া বিআইডব্লিটিএ জেটি ঘাট থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাদের টাগবোটে তুলে দেয়া হয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন জানান, গভীর সাগরে নিয়ে যাওয়ার পর সেখানে অপেক্ষায় থাকা মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ চিন ডুইনে তাদের তুলে দেয়া হবে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া সেনা ও সীমান্তরক্ষীদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওই জাহাজ বুধবারই বাংলাদেশের জলসীমায় পৌঁছায়। ওই জাহাজে করেই ১৭৩ জন বাংলাদেশি ফিরে এসেছেন। যারা বিভিন্নভাবে মিয়ানমারে আটকা পড়েছিলেন বা সাজা পেয়ে জেলখানায় ছিলেন।
মিয়ানমার নৌবাহিনীর ওই জাহাজে করে দেশটির ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলও বুধবার দুপুরে কক্সবাজার পৌঁছায়। পরে তারা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ ব্যাটালিয়নে বিজিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর তারা মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্যদের যাচাই-বাছাইসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়।
বিজিবি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ১১টি বাসে করে মিয়ানমারের বিজিপি ও সেনা সদস্যদের কক্সবাজার শহরের বিআইডব্লিউটিএ জেটি ঘাটে নিয়ে আসা হয়।
সেখানে আনার পর ইমিগ্রেশন ও ডকুমেন্টেশনের আনুষ্ঠানিকতা সেরে শুরু হয় হস্তান্তর প্রক্রিয়া। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও কোস্ট গার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশশে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতসহ দেশটির প্রতিনিধি দলের কাছে তাদের হস্তান্তর করেন।
এরপর সকাল ৭টার দিকে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের কর্ণফুলি টাগবোটে তুলে দেয়া হয়। কোস্ট গার্ডের একটি ট্রলার টাগবোটটিকে পাহারা দিয়ে গভীর সাগরে নিয়ে যায়।
দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারে সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে, যার আঁচ লেগেছে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকাতেও। সীমান্তের ওপারের মর্টার শেল ও গুলি এসে এপারে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
ওই সংঘাতের মধ্যে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসহ ৩৩০ জনকে প্রথম দফায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ফেরত পাঠিয়েছিল সরকার।
তাদের মধ্যে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ-বিজিপি ৩০২ জন, তাদের পরিবারের চার সদস্য, দুজন সেনা সদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য এবং চারজন বেসামরিক নাগরিক ছিলেন।
এরপর বান্দরবান ও কক্সবাজার সীমান্ত নিয়ে কয়েক দফায় আরো ২৮৮ জন সীমান্তরক্ষী ও সেনা সদস্য এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এবার তাদের ফেরত পাঠানো হলো।
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা নদীতে বুধবার রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় দুটি ড্রেজার জব্দ করেছে নৌ-পুলিশ।
মাওয়া নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে উপজেলার মেদিনীমণ্ডল ইউনিয়নের যশিলদিয়ায় বুধবার রাত দেড়টার দিকে পদ্মা নদীতে অভিযান চালানো হয়। ওই সময় নিয়ম অমান্য করে বালু উত্তোলন করায় ওই দুটি ড্রেজার জব্দ করা হয়।
তিনি আরও জানান, ড্রেজার জব্দ করার সময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। জব্দকৃত ড্রেজার দুটির বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য