× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Closed culvert mouth Waterlogged 600 acres of cropland
google_news print-icon

বন্ধ কালভার্টের মুখ: জলাবদ্ধ ৬০০ একর ফসলি জমি

বন্ধ-কালভার্টের-মুখ-জলাবদ্ধ-৬০০-একর-ফসলি-জমি
কালভার্টের মুখ বন্ধ করে রাস্তা নির্মাণ করায় জলাবদ্ধতায় নষ্ট ফসল নিয়ে কৃষকদের মানববন্ধন। ছবি: নিউজবাংলা
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জল হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি, দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চেয়ারম্যানকে বলেছি। তা না হলে আমি নিজে গিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।’

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ৬০০ একরের বেশি ফসলি জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে সড়কে থাকা কালভার্টের মুখ বন্ধ করে দেয়ায়। এতে নষ্ট হতে বসেছে এসব জমির ফসল।

স্থানীয়রা ফসল বাঁচাতে মাটির রাস্তা নির্মাণ করে কালভার্টের মুখ বন্ধ করে দেয়ার প্রতিবাদ জানিছেন। সেই সঙ্গে তাদের দাবি, কালভার্টের মুখ খুলে দিয়ে তাদের আবারও ফসল চাষের সুযোগ দেয়া হোক।

এই দাবিতে স্থানীয়রা শনিবার সকালে উল্লাপাড়ার পূর্ণিমাগাতীতে মানববন্ধন করেছেন।

কৃষক মতিয়ার রহমান নিউজবাংলাকে জানান, সম্প্রতি পূর্ণিমাগাতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ইউপি সদস্য প্রায় চারটি গ্রামের ফসলি জমির পানি নিষ্কাশন করা খালের মুখ বন্ধ করে একটি মাটির রাস্তা নির্মাণ করেছেন। এতে চার গ্রামের প্রায় ৬০০ একর ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

তিনি বলেন, এসব জমিতে লাগানো বোরো ধান নষ্ট হয়েছে। পরে রোপা ও আমন চাষ করা হলে সেগুলোও নষ্ট হয়। এমনকি সামনে সরিষা মৌসুমে এসব জমিতে চাষ নিয়েও শঙ্কায় রয়েছেন চাষিরা।

কৃষক শরিফ আহম্মেদ বলেন, ‘জলাবদ্ধতার কারণে আমাদের ফসলের জমি আজ ডুবে গেছে। তাই অনতিবিলম্বে এই মাটির রাস্তা অপসারণ করে জলাবদ্ধতা নিরসনের মাধ্যমে এসব জমিকে আবারও চাষ উপযোগী করার ব্যবস্থা নেয়া হোক।’

উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন সুমি বলেন, ‘আমাদের এই অঞ্চলে তিন ফসল চাষ করেন কৃষকরা। একটি ব্রিজের মাথা বন্ধ করে দেয়ার কারণে মাত্র একটি ফসল চাষ করতে পারছেন তারা। এই খালের মাথা খুলে না দিলে আগামীতে সরিষা চাষ সম্ভব হবে না।’

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে তার কথা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সমস্যা সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জল হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমি জেনেছি, দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চেয়ারম্যানকে বলেছি। তা না হলে আমি নিজে গিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।’

পূর্ণিমাগাতী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম তপনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি নিয়ে তিনি কোনো কথা বলবেন না বলে জানান।

আরও পড়ুন:
আর্থ কালভার্ট অকেজো, দুর্ভোগে ৪ ইউনিয়নের মানুষ
৩৪ ঘণ্টা পর শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কে যান চলাচল শুরু
শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কে কালভার্ট দেবে ভোগান্তি
কালভার্টের মুখে খামার, জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রশাসনের বিকল্প উদ্যোগ
বর্জ্যে ঠাসা বক্স কালভার্ট পরিষ্কার করা কঠিন

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Black gold onion production in Faridpur will exceed Tk 300 crore

‘কালো সোনা’য় ফরিদপুরের কৃষকদের দিনবদল

‘কালো সোনা’য় ফরিদপুরের কৃষকদের দিনবদল নিজের জমির পেঁয়াজ বীজ ছুঁয়ে দেখছেন ফরিদপুরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষাণী লাভলী আক্তার। ছবি: নিউজবাংলা
ফলে গত বছরের চেয়ে কিছু বেশি জমিতে চাষ হলেও এবার উৎপাদন তুলনামূলক কম হবে বলে ধারণা করছে কৃষি বিভাগ। এই সুযোগে ভারত থেকে পেঁয়াজ বীজ আমদানি ও বাড়তি মূল্য গোনার আশঙ্কাও রয়েছে। ভারত থেকে পেঁয়াজ বীজের আমদানি ঠেকানো না গেলে বিপদে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছেন চাষিরাও।

ফরিদপুরে ফসলি মাঠে ‘কালো সোনা’ খ্যাত পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন ও চাষে কৃষকের দিনবদল হচ্ছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে এবার তারা বিঘাপ্রতি দুই থেকে আড়াই মণ বীজ পাবেন বলে আশা করছেন।

প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করতে এক লাখ টাকার বেশি খরচ হয়। সে হিসাবে জেলাজুড়ে চাষিদের সবমিলিয়ে এবার প্রায় কোটি টাকার মতো করে লাভ থাকবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

ফরিদপুরের অম্বিকাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক দম্পতি লাভলী আক্তার ও ইনতাজ মোল্লা। ১২ বছর আগে মাত্র দুই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ বীজের চাষ করেন এই দম্পতি। সেবার ভালো লাভ পেয়ে প্রতিবছর বাড়িয়ে চলেছেন আবাদি জমির পরিমাণ। এবছর ৪০ বিঘা জমিতে তারা পেঁয়াজ বীজের আবাদ করেছেন।

এক সময় নুন আনতে পান্তা ফুরাতো তাদের। তবে পেঁয়াজ বীজের কল্যাণে এই পরিবারটি এখন কোটিপতি। নিজস্ব জমিতে তাদের রয়েছে পাকা ইমারতের বাড়ি।

‘কালো সোনা’য় ফরিদপুরের কৃষকদের দিনবদল

দশম শ্রেণি পড়ুয়া এক ছেলে আর চতুর্থ শ্রেণিতে পড়া একটি মেয়ে নিয়ে এখন তাদের সুখের সংসার। প্রতিবছর তারা পেঁয়াজ উপার্জনের টাকায় নিজেদের সম্পত্তি বাড়াচ্ছেন, কিনছেন জায়গা-জমি।

কৃষক লাভলি আক্তার বলেন, ‘বিয়ের পর স্বামীর বাড়িতে এসে দেখি শ্বশুর বাড়ির লোকেরা পেঁয়াজ বীজের চাষ করে। আমিও স্বামীকে সহায়তায় নামি। এতে প্রথম বছরেই ভালো আয় হয় আমাদের। এরপর আর থেমে থাকিনি আমরা।

‘আমি এই পেঁয়াজ বীজের টাকা দিয়েই ৭৫ লাখ টাকা খরচ করে বাড়িতে বিল্ডিং তুলেছি। প্রতিবছরই নতুন জমি কিনেছি। একসময় আমাদের পক্ষে এসব সম্ভব ছিল না। তবে এখন তা আমাদের কাছে বাস্তব।’

পেঁয়াজ বীজ গাছের সাদা কদম তথা গোলাকারের বড় ফুল শুকিয়ে বের হয় কালো দানা। আকাশ ছোঁয়া বাজার দরের কারণে একে বলা হয় ‘কালো সোনা’। একটা সময় পুরোপুরি আমদানি নির্ভর থাকলেও দিন দিন দেশে এই ‘কালো সোনা’র আবাদ বাড়ছে।

‘কালো সোনা’য় ফরিদপুরের কৃষকদের দিনবদল

পেঁয়াজ চাষে দেশের মোট বীজ চাহিদার ৫০ শতাংশ উৎপাদিত হয় ফরিদপুরে। চলতি মৌসুমে যদিও প্রাকৃতিক পরাগায়নের অভাবে আবাদের তুলনায় পেঁয়াজ বীজের উৎপাদনের পরিমাণ কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা, তারপরও এবার জেলার চাষিদের সবমিলিয়ে পেঁয়াজ বীজের উৎপাদন তিন শ’ কোটি টাকার বাজার ছাড়িয়ে যাবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, চলতি মৌসুমে ফরিদপুর জেলার ৯টি উপজেলায় মোট এক হাজার ৮৯০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ হয়েছে। গত বছর যা ছিল এক হাজার ৮৬৭ হেক্টর। এসব জমি থেকে এবার প্রায় সাড়ে সাত টনের বেশি বীজ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। ভালো লাভ পাওয়ার কারণেই এই ফসলের দিকে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে।

এবার জেলাটিতে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে জেলা সদরে, প্রায় ২০৮ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজের চাষ করেছেন কৃষকরা। এরপর ভাঙ্গায় ১৭৬, সদরপুরে ১৪৬, চরভদ্রাসনে ৬৮, মধুখালীতে ৬৮, বোয়ালমারীতে ৩৪, নগরকান্দায় ২৮, সালথায় ২২ ও আলফাডাঙ্গায় ৬ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ করা হয়েছে।

তবে এ বছর মৌমাছির অভাবে পেঁয়াজ ফুলে পরাগায়ণের মাত্রা কমেছে। নিরুপায় কৃষক নিজ হাতে এক ফুলের রেণুর সঙ্গে আরেক ফুলের রেণুর পরাগায়ণের পন্থাও বেছে নেন অনেক খেতে, কিন্তু এতে প্রাকৃতিক পরাগায়ণের মতো ভালো ফলন হয়নি।

ফলে গত বছরের চেয়ে কিছু বেশি জমিতে চাষ হলেও এবার উৎপাদন তুলনামূলক কম হবে বলে ধারণা করছে কৃষি বিভাগ। এই সুযোগে ভারত থেকে পেঁয়াজ বীজ আমদানি ও বাড়তি মূল্য গোনার আশঙ্কাও রয়েছে। ভারত থেকে পেঁয়াজ বীজের আমদানি ঠেকানো না গেলে বিপদে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছেন চাষিরাও।

স্থানীয় এক কৃষকের ভাষ্য, ‘ভারত থেকে পেঁয়াজ বীজ আমদানি করা হলে তা সার্বিকভাবে ক্ষতিই ডেকে আনবে। কারণ, ভারত থেকে আনা বীজ নিম্নমানের হয়, তাতে ভালো ফলন হয় না।’

‘কালো সোনা’য় ফরিদপুরের কৃষকদের দিনবদল

পেঁয়াজ বীজ আবাদে ছোট্ট শিশু প্রতিপালনের মতোই যত্নশীল থাকতে হয়। কোনোরকম অযত্ন হলে ফলন নষ্ট হয়ে যায়। নভেম্বর-ডিসেম্বরে খেতে বীজের আবাদ শুরু হয় যেখান থেকে ফলন পেতে লেগে যায় এপ্রিল-মে মাস। জমি থেকে তোলার পর এক বছর পর্যন্ত এই বীজ সংরক্ষণ করতে হয়। পরবর্তী বছর কৃষকরা এই বীজ সংগ্রহ করে বপন করে।

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দাম ভালো পাওয়ায় এ বছর আমাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি পেঁয়াজ বীজের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া ঠিক থাকলে জেলার কৃষকরা এবার সাড়ে সাত টন বীজ উৎপাদন করবে। যার বাজার মূল্য কমপক্ষে ৩০০ কোটি টাকা।’

তিনি বলেন, ‘ফরিদপুর জেলার বীজ চাষিদের সমস্যা নিরসনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর তাদের সব ধরনের পরামর্শসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করে আসছে। এতে তারা এ সেক্টরে দিন দিন উন্নতি করতে পারছেন।’

আরও পড়ুন:
পেঁয়াজ রপ্তানি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করল ভারত

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Farmers of Madaripur are losing interest in mustard cultivation

সরিষা চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে মাদারীপুরের কৃষক

সরিষা চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে মাদারীপুরের কৃষক ফলন আশানুরূপ না হওয়া আগেভাগেই জমি পরিষ্কার করছেন কৃষক আনোয়ার মোল্লা। ছবি: নিউজবাংলা
বিদ্যাবাগীশ গ্রামের কৃষক লিটন উদ্দিন বলেন, ‘গত বছর সরিষার ফলন ও দাম ভালো ছিল। এ কারণে এবার সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। তবে এবার গতবারের মতো ফলন হয়নি; দামও কম। গত বছরের চেয়ে এবার প্রতি মণে অন্তত ৬ থেকে ৮ শ’ টাকা কমে সরিষা বিক্রি হচ্ছে।’

গত মৌসুমে ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় এবার মাদারীপুরে সরিষার আবাদ বেশি হয়েছে। মাঠে মাঠে সরিষার ফুলের সমারোহ দেখে বাম্পার ফলনের আশা করলেও এবার আশানুরূপ ফলন পাননি কৃষক। এমনকি গতবারের তুলনায় এবার দামও কম পাচ্ছেন সরিষা চাষিরা। ফলে আগামীতে সরিষা চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে জেলার কৃষক।

ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়ার পর থেকে মাদারীপুরে সরিষার আবাদ বেড়েছে। কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, গত দুই মৌসুমের তুলনায় এবার অন্তত ৫ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে সরিষা চাষ করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পরপর দুবছর নিজের তিন বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন জেলার কালকিনির বিদ্যাবাগীশ এলাকার চাষি আনোয়ার মোল্লা। তবে এবার রোপন মৌসুমে তিনবার বৃষ্টিতে বীজ নষ্ট হয়। এরপরও হলুদের আভরণে হাসি ছিল তার মুখে, কিন্তু গাছে ফলন কম হওয়ায় আগেভাগেই ক্ষেত পরিষ্কার করছেন পরিবার নিয়ে। ফলে এমন লোকসানে আগামীতে আর সরিষার দিকে ঝুঁকতে চান না তিনি।

তার মতো একাধিক সরিষা চাষি জানান, প্রতি বিঘা জমিতে সরিষা চাষে আট থেকে দশ হাজার টাকা খরচ হয়। ওই পরিমাণ জমিতে সরিষা উৎপাদন হয় ৬ থেকে ৮ মণ। বাজারে দাম ভালো থাকলে প্রতি বিঘার সরিষা ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি সম্ভব। এতে খরচ বাদে ভালোই লাভ থাকে। কিন্তু এবার সরিষার ফলন ও দাম দুটোই কম থাকায় তেমন লাভবান হতে পারছেন না চাষিরা।

সরিষা চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে মাদারীপুরের কৃষক

বিদ্যাবাগীশ গ্রামের কৃষক লিটন উদ্দিন বলেন, ‘গত বছর সরিষার ফলন ও দাম ভালো ছিল। এ কারণে এবার সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। তবে এবার গতবারের মতো ফলন হয়নি; দামও কম। গত বছরের চেয়ে এবার প্রতি মণে অন্তত ৬ থেকে ৮ শ’ টাকা কমে সরিষা বিক্রি হচ্ছে।’

গত মৌসুমে তিন বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছিলেন কুনিয়া গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর শরীফ। এবার তিনি দুই বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন।

এই কৃষক বলেন, ‘এবার ফলন কম হয়েছে। গত বছর বিঘায় ৭ মণ থেকে ৮ মণ ফলন হয়েছিল, কিন্তু এবার ৫ মণ থেকে ৭ মণ পর্যন্ত ফলন হয়েছে। গত বছর কাঁচা সরিষা ২ হাজার ৮শ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। আর শুকনো সরিষা বিক্রি করেছি ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২ শ’ টাকায়, কিন্তু এবার দাম খুবই কম।’

মাদারীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক দিগ্বিজয় হাজরা জানান, ২০২২-২৩ মৌসুমে জেলায় ১৫ হাজার ৫৮৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছিল। এবার ২০২৩-২৪ মৌসুমে আবাদ করা হয়েছে ১৬ হাজার ৯৮২ হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ চাষ বেড়েছে ১ হাজার ৩৯৭ হেক্টর বেশি। এবার সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২২ হাজার ৭৬ মেট্রিক টন।

তিনি বলেন, ‘এবার চাষিরা দেরি করে সরিষা চাষ শুরু করেছেন। তাছাড়া আবহাওয়াও অনুকূলে না থাকায় এবার সরিষার উৎপাদন গতবারের তুলনায় কিছুটা কম হয়েছে।’

তবে প্রণোদনা দিয়ে চাষিদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন এ কর্মকর্তা।

আরও পড়ুন:
সরিষা ক্ষেতের পাশে বাক্স, বিপুল মধু আহরণের আশা
সরিষার হলুদে ছেয়ে গেছে প্রান্তর

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Bumper yield of pesticide free rice in the eye corner

নেত্রকোণায় কীটনাশকমুক্ত চালকুমড়ার বাম্পার ফলন

নেত্রকোণায় কীটনাশকমুক্ত চালকুমড়ার বাম্পার ফলন চলতি রবি মৌসুমে জেলায় ২৬৫ হেক্টর জমিতে চালকুমড়ার আবাদ করা হচ্ছে। ছবি: নিউজবাংলা
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক বছরের প্রচেষ্টায় নেত্রকোণায় দুই হাজার ৯৫৫ হেক্টর অনাবাদি পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনা সম্ভব হয়। চলতি রবি মৌসুমে জেলায় ২৬৫ হেক্টর জমিতে চালকুমড়ার আবাদ করা হচ্ছে।

নেত্রকোণায় এবার চালকুমড়ার ফলন বেশ ভালো হয়েছে। বাজারে ভালো মূল্য পাওয়ায় চাষিরাও বেশ খুশি। কীটনাশকমুক্ত এ চালকুমড়া স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন ঢাকাসহ সরবরাহ করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোণায় নানাবিধ কারণে শত শত হেক্টর জমি অনাবাদি অর্থাৎ পতিত থাকতো। তাই ‘এক ইঞ্চি জমিও পতিত রাখা যাবে না’- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ ঘোষণায় কৃষি বিভাগ নানান রকম প্রচার প্রচারণা ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু করে। কৃষকদের মাঝে প্রণোদনা দিয়ে তাদের অনাবাদি পতিত জমিতে বিভিন্ন জাতের শস্যসহ চালকুমড়া চাষাবাদে উৎসাহিত করা হয়।

গত কয়েক বছরের প্রচেষ্টায় নেত্রকোণায় দুই হাজার ৯৫৫ হেক্টর অনাবাদি পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনা সম্ভব হয়। চলতি রবি মৌসুমে জেলায় ২৬৫ হেক্টর জমিতে চালকুমড়ার আবাদ করা হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ আশা করছে, নেত্রকোণা জেলায় এ বছর আনুমানিক ৬ থেকে সাড়ে ৬ হাজার টন চালকুমড়া উৎপাদিত হবে।

এদিকে জেলার বারহাট্টা উপজেলার ধলপুর, সিংধাসহ প্রায় ৩০টি গ্রামে এবার ধান চাষের পাশাপাশি শাকসবজি চাষে ভালো লাভবান হওয়ায় এসব এলাকার কৃষকরা চালকুমড়ার পাশাপাশি লাউ, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ডাটাসহ বিভিন্ন জাতের শাকসবজি চাষ করছেন।

কৃষি বিভাগ জানায়, এবার প্রতি হেক্টর জমিতে ২৫ থেকে ২৬ টন চালকুমড়া উৎপাদিত হচ্ছে।

কৃষকরা জানান, প্রতি ১০ শতক জমিতে ৫০ থেকে ৬০ মন চালকুমড়া উৎপাদিত হচ্ছে। স্থানীয় পাইকারদের কাছে প্রতিটি চালকুমড়া গড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি করা হয়। যার ফলে এক কাঠা জমি থেকে কৃষকদের আয় হচ্ছে আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা।

নেত্রকোণা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার সীমান্তবর্তী ভারতীয় নূরুল্লাপাড়া গ্রামের কৃষক শফিকুল আলম বলেন, বিগত কয়েক বছর এ সমস্ত সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকায় শত শত একর জমি অনাবাদি কিংবা পতিত থাকতো। এখন সরকারের কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে অনাবাদি, পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনায় ধানসহ বিভিন্ন জাতের শাকসবজির আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া আমরা যারা কৃষক তাদের বাড়ির আঙ্গিনায় বা আবাদি, অনাবাদি ও পতিত জমিতে চালকুমড়াসহ বিভিন্ন জাতের লাউ, শসা, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটোসহ নানান ধরনের রবিশস্য আবাদ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছি।’

কৃষক শফিকুল জানান, তিনি গত বছর দেড় একর জমিতে চালকুমড়া, মিষ্টিকুমড়াসহ ফুলকপি চাষাবাদ করে প্রায় ৯ লাখ টাকা আয় করেন। এ বছর আড়াই একর জমিতে চালকুমড়া পাশাপাশি টমেটো, বেগুন ও বাদাম চাষ করা হয়েছে।

নেত্রকোণা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের কালিহালা গ্রামের বর্গাচাষি কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, ‘পাঁচ কাঠা পতিত জমি বর্গা নিয়ে চালকুমড়া চাষ করি। চলতি সময়ে প্রায় ৩০ হাজার টাকার চালকুমড়া বিক্রি করেছি। আরও বিক্রি করা যাবে।’

জেলার বারহাট্টা উপজেলার ধলপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম ও আব্দুর রশীদ জানান, এ বছর ৩০ কাঠা জমিতে চালকুমড়ার আবাদ করা হয়। ভালো ফলনও হয়েছে। স্থানীয় পাইকাররা জমি থেকেই মন প্রতি প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকায় কিনে নিচ্ছে।

নেত্রকোণা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মুহাম্মদ নুরুজ্জামান জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বসতবাড়ির আশপাশের জমিজমা এবং অনাবাদি পতিত জমিতে বিভিন্ন জাতের শাকসবজির আবাদ বাড়াতে কৃষি বিভাগ স্থানীয় কৃষকদের নানান ধরনের পরামর্শ, প্রণোদনা ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে কীটনাশকমুক্ত ফসলাদি উৎপাদনে কৃষকদের ব্যাপক উদ্বুদ্ধ করা হয়।

তিনি জানান, পতিত জমিতে চালকুমড়ার বাম্পার ফলন হওয়ায় বিভিন্ন জাতের শাকসবজি আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা। ফলে নেত্রকোণা জেলায় দুই হাজার ৯৫৫ হেক্টর অনাবাদি, পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।

আরও পড়ুন:
উদ্ভাবনী পদমর্যাদায় ‘ইনফেকশাস-ডিজিজ’ বিষয়ে প্রথম স্থান সিকৃবির
আউশের উৎপাদন বাড়াতে ৬৪ কোটি টাকার প্রণোদনা
বসতভিটায় ফিরতে চায় হামলা-মামলায় বাস্তুহারা ৫ পরিবার
কাউকে এখন না খেয়ে থাকতে হয় না: কৃষিমন্ত্রী
বিএডিসির বীজ ধান ও গম এখন পাখির খাবার

মন্তব্য

বাংলাদেশ
In Comilla five taka per kg 100000 kg of brinjal is sold at taka 500

‘১০০ কেজি বেগুন ৫০০ টাকায় বিক্রি করি’

‘১০০ কেজি বেগুন ৫০০ টাকায় বিক্রি করি’ কুমিল্লার একটি ক্ষেতে বেগুন হাতে চাষি। ছবি: নিউজবাংলা
ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক আছাদুল ইসলাম বলেন, ‘কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় সরকার এখন কৃষি শেড তৈরি করছে, যেখানে কৃষকরা ন্যায্য মূল্যে তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারেন। এ কার্যক্রম যখন বাস্তবায়িত হবে, তখন কৃষকরা উপকৃত হবেন। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমবে।’

কুমিল্লার দুটি উপজেলায় বেগুন চাষ করে খরচই তুলতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন চাষিরা।

বুড়িচং ও দেবিদ্বারের চাষিদের ভাষ্য, বাজারে যে পরিমাণ বেগুন নিয়ে যান, তা বিক্রি করে গাড়ি ভাড়াও জোগাড় করতে পারেন না। এমন বাস্তবতায় আগামী বছর আর চাষ করবেন না সবজিটি।

বুড়িচংয়ের মিথলমা এলাকার কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘চলতি মৌসুমে ৩৬ শতক জমিতে শিংনাথ বেগুন চাষ করি। গাছে ফলন ভালো হয়। ৩৬ শতক জমিতে বেগুন চাষ করতে আমার অন্তত দুই লাখ টাকা খরচ হয়।

‘ভালো ফলনে স্বপ্ন দেখেছি ভালো মুনাফার, তবে বাজারে দালালদের দৌরাত্ম্যের কারণে দাম পাচ্ছি না। আমরা নিমসারসহ বিভিন্ন বাজারে বেগুন পাঁচ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে পারছি না।’

কৃষক মিজানুর বলেন, ‘এ সপ্তাহে ১০০ কেজি বেগুন নিয়ে বাজারে যাই। বহু অনুনয়-বিনয় করে পাঁচ টাকা কেজি দরে বেগুন বিক্রি করি। ১০০ কেজি বেগুন ৫০০ টাকায় বিক্রি করি।

‘এ টাকায় কৃষি শ্রমিকের মজুরি, গাড়ি ভাড়া দিয়ে শেষ হয়েছে। বাজার থেকে ফেরার সময় নিজের পকেট থেকে আরও ২০০ টাকা খরচ করতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমি বেগুন চাষ করে যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, আগামীতে আর বেগুন চাষ করব না। পাশের বাড়ির আমার এক ভাই ২০০ টাকা কেজি দরে বেগুন বিক্রি করেছে।’

দেবিদ্বার উপজেলার ব্রাহ্মণখাড়া গ্রামের সায়েদ আলী বলেন, ‘৩৬ শতক জমিতে বেগুন চাষ করি। বাজারে নিয়ে গেলে চার থেকে পাঁচ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হয়। শ্রমিক, সার, বীজসহ যেসব খরচ হয়েছে, বেগুন বিক্রি করে তার অর্ধেক খরচও আসবে না।’

হতাশার একপর্যায়ে বেগুন ছিঁড়ে মাঠে ছুড়ে ফেলেন সায়েদ আলী।

ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক আছাদুল ইসলাম বলেন, ‘কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় সরকার এখন কৃষি শেড তৈরি করছে, যেখানে কৃষকরা ন্যায্য মূল্যে তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারেন। এ কার্যক্রম যখন বাস্তবায়িত হবে, তখন কৃষকরা উপকৃত হবেন। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবসময় কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকি, তারা যখন কৃষি পণ্য বিক্রয় করবেন তারা যেন তাদের মোবাইল ফোন নম্বরটাও দিয়ে দেন। এতে করে আমরা যখন অভিযান করব, তখন যেন কৃষকদের ফোন করে বিক্রয়কৃত ফসলের সঠিক দামটা জানতে পারি।’

আরও পড়ুন:
এমপি আজাদকে আওয়ামী লীগের পদ থেকে অব্যাহতি
কুমিল্লা সিটির মেয়র হলেন বাহার-কন্যা সূচনা
কুসিক উপনির্বাচন: মেয়র প্রার্থীদের কে কোথায় দিলেন ভোট
ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটিতে ভোট শুরু
অটোরিকশার চালককে গলা কেটে হত্যায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Ashraful has responded to colorful cauliflower cultivation

রঙিন ফুলকপি চাষে সাড়া ফেলেছেন আশরাফুল

রঙিন ফুলকপি চাষে সাড়া ফেলেছেন আশরাফুল
রঙিন ফুলকপি চাষে সফল কৃষক আশরাফুল। ছবি: নিউজবাংলা
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলশাদ জাহান বলেন, ঘাটাইল উপজেলায় প্রথমবার কৃষক আশরাফুল ইসলাম বাহারি রঙের ফুলকপি চাষ করে সফল হয়েছেন। দাম ভালো থাকায় কৃষকদের মাঝে বেশ আগ্রহ তৈরি হচ্ছে।

হলুদ ও বেগুনি রঙের ফুলকপি চাষ করে সফল হয়েছেন টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের কৃষক আশরাফুল ইসলাম। বাহারি রঙের ফুলকপি চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন তিনি। এসব রঙিন ফুলকপি দেখতে ও কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। আকারে বড় এবং দামেও বেশি এসব ফুলকপি থেকে লাভবানও হচ্ছেন আশরাফুল।

রঙিন এই ফুলকপি চাষি বারোমাসি সবজিও চাষ করেন। ৩৫ বছর বয়সী আশরাফুল উপজেলার পাঁচটিকরী গ্রামের আকবর হোসেন তালুকদারে ছেলে।

আশরাফুল জানান, এ মৌসুমে তাকে রঙিন ফুলকপি চাষের পরামর্শ দেন উপজেলার পাঁচটিকরী কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌকির আহমেদ। তিনি তাকে ভারত থেকে উন্নতজাতের রঙিন ফুলকপির বীজ সংগ্রহ করে দেন।

কৃষক আশরাফুল ইসলাম বাড়ির পাশে প্রায় ৭৫ শতক জমিতে রঙিন ফুলকপির বীজ রোপণ করেন। রোপণের প্রায় আড়াই মাসের মধ্যে খেত থেকে হলুদ ও বেগুনি রঙের ফুলকপি সংগ্রহ করে প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি করছেন। এতে তার খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। বিক্রি করেছেন দুই লাখ টাকার ফুলকপি।

কৃষক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি যখন জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষ করি, তখন অনেকেই বলেছিলেন ভালো ফলন হবে না। এ বিষয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌকির আহমেদ আমাকে পরামর্শ দেন। আমি জমিতে সঠিকভাবে পরিচর্যা করেছি। ভালো ফলনে বেশ সাড়া পেয়েছি এবং আর্থিকভাবেও সফল হয়েছি। ৭৫ শতক জমিতে দুই রকমের ফুলকপি চাষে খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকার মতো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষ দেখে এলাকার কৃষকরা বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। আগামী বছর অনেকে বাহারি রঙের ফুলকপি চাষ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।’

ওই এলাকার বাসিন্দা কৃষক মিনহাজ উদ্দিন বলেন, আগামী মৌসুমে রঙিন ফুলকপির চাষ করার চিন্তা করছেন তিনি। কারণ রঙিন ফুলকপি বাজারে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি হয়ে যায়।

উপজেলার পাঁচটিকরী কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌকির আহমেদ বলেন, এ উপজেলায় সর্বপ্রথম আশরাফুল ইসলামের মাধ্যমে এ বাহারি ফুলকপির আবাদ শুরু হয়। সফলতা আসায় আগামীতে এ অঞ্চলে সবজিটি ব্যাপকভাবে চাষাবাদ বাড়বে। এই উপজেলার কৃষিতে এটি একটি নতুন সংযোজন।

তিনি আরও জানান, বাহারি রঙের ফুলকপি চীনে খাওয়া হয় সালাদ হিসেবে। সাদা ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপির পুষ্টিগুণ বেশি। বাজারেও চাহিদা বেশি। কম খরচ ও কম পরিশ্রমে চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ময়মনসিংহ অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মোটিভেশনের মাধ্যমে ঘাটাইলে রঙিন ফুলকপি চাষ করা হয়েছে।

তিনি জানান, জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের বদলে ব্যবহার করা হয়েছে জৈব সার। পোকা দমনে ফেরোমন ও হলুদ ফাঁদ ব্যবহার করা হয়েছে। চারা রোপণের ৭০-৮০ দিনের মধ্যেই রঙিন ফুলকপি বিক্রি করা যায়। একেকটি কপির ওজন হয় প্রায় এক থেকে দেড় কেজি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলশাদ জাহান বলেন, ঘাটাইল উপজেলায় প্রথমবার কৃষক আশরাফুল ইসলাম বাহারি রঙের ফুলকপি চাষ করে সফল হয়েছেন। দাম ভালো থাকায় কৃষকদের মাঝে বেশ আগ্রহ তৈরি হচ্ছে। সাধারণ ফুলকপি যেখানে প্রতিকেজি ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হয়, সেখানে এটি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। আশা করছি আগামীতে রঙিন ফুলকপি চাষ আরও বাড়বে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
64 crores incentive to increase the production of Aus

আউশের উৎপাদন বাড়াতে ৬৪ কোটি টাকার প্রণোদনা

আউশের উৎপাদন বাড়াতে ৬৪ কোটি টাকার প্রণোদনা
উচ্চফলনশীল আউশ ধানের উৎপাদন বাড়াতে এ প্রণোদনার আওতায় একজন কৃষক এক বিঘা জমিতে চাষের জন্য প্রয়োজনীয় ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিনামূল্যে পাবেন।

আউশের আবাদ ও উৎপাদন বাড়াতে ৬৪ কোটি ১৫ লাখ টাকার প্রণোদনা দেয়া হবে। সারা দেশের ৯ লাখ ৪০ হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক এ প্রণোদনার আওতায় বিনামূল্যে বীজ ও সার পাবেন।

উচ্চফলনশীল আউশ ধানের উৎপাদন বাড়াতে এ প্রণোদনার আওতায় একজন কৃষক এক বিঘা জমিতে চাষের জন্য প্রয়োজনীয় ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিনামূল্যে পাবেন। অধিক ফলনশীল ব্রিধান ৪৮, ব্রিধান ৮২, ব্রিধান ৮৫, ব্রিধান ৯৮, বিনাধান ১৯ ও বিনাধান ২১ এর বীজ দেয়া হবে। খবর বাসসের

কৃষি মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত বাজেট কৃষি পুনর্বাসন সহায়তা এবং বীজ ও চারা খাত থেকে এ প্রণোদনা প্রদান করা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত সরকারি আদেশ ইতিমধ্যে জারি হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে শিগগিরই এসব প্রণোদনা বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Shajan stalks coming from India

ভারত থেকে আসছে সজনে ডাঁটা

ভারত থেকে আসছে সজনে ডাঁটা ফাইল ছবি
দেশীয় সজনে ডাঁটা এখনো বাজারে আসেনি। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে সজনে ডাঁটার চাহিদা থাকায় ভারত থেকে এই পুষ্টিযুক্ত সবজি আমদানি করা হচ্ছে।

দিনাজপুরের হাকিমপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ৭ দিনে ২৭ ট্রাকে এসেছে ২৮৫ টন সজনে ডাঁটা। যা থেকে ৫২ লাখ ২৫ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।

হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ হারুন রোববার রাতে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। খবর বাসসের

তিনি বলেন, দেশীয় সজনে ডাঁটা এখনো বাজারে আসেনি। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে সজনে ডাঁটার চাহিদা থাকায় ভারত থেকে এই পুষ্টিযুক্ত সবজি আমদানি করা হচ্ছে।

হারুন উর রশীদ বলেন, ৭ দিনে হিলি স্থল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে ২৭টি ট্রাকে ২৮৫ টন সজনে ডাঁটা আমদানি করা হয়েছে। আমদাানি করা সজনে ডাঁটা রোববার দুপুর পর্যন্ত সব সজনে ডাঁটা হিলি থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকাররা নিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, এ মৌসুমে পবিত্র রমজান মাসের আগে এবং রমজান মাসের মধ্যে সজনে ডাঁটার প্রচুর চাহিদা থাকায় আমদানিকারকেরা আরও হাজার ডাঁটা আমদানি করতে এলসি খুলেছে। দেশীয় সজনে ডাঁটা বাজারে না আসা পর্যন্ত ভারত থেকে সজনে ডাঁটা আমদানি চলমান রাখা হবে।

তিনি বলেন, আমদানি করা এ সবজি বগুড়া, ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হচ্ছে। আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে এর চাহিদা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকেরা। প্রতি টন আমদানিতে ১৫০ ডলার এবং কেজিতে ২০ টাকা হারে শুল্ক পরিশোধ করতে হচ্ছে। বন্দরের পাইকারি পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায় কেজি হিসেবে।

পাকাইকার আব্দুল মমিন বলেন, ভারত থেকে আমদানি করা সজনে ডাঁটার মান ভালো হওয়ায় এর চাহিদা বাড়ছে। তিনি হিলি স্থলবন্দর থেকে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে কিনে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে পারছেন। এতে তার লাভ ভালোই হচ্ছে।

আমদানিকারক মো. রাশিদুজ্জামান জানান, তিনি গত ৭ দিনে ৯টি ট্রাকে ৪২ টন সজনে ডাঁটা ভারত থেকে আমদানি করেছেন। তার আমদানি শজনের ডাঁটা বাংলাদেশ শুল্ক পরিশোধ করে যে মূল্যে বিক্রি করেছেন তাতে তিনি ভালো লাভ করেছেন। দেশি সজনে ডাঁটা বাজারে না আসা পর্যন্ত ভোক্তাদের কাছে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাই তিনি আরও ২০ টন সজনে ডাঁটা আগামী দু দিনের মধ্যে ভারত থেকে আমদানি করবেন। তিনি আশা করছেন আগামী ৫ মার্চের মধ্যেই তার এলসি খোলা সজনে ডাঁটাগুলো হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করবে।

হিলি স্থল বন্দর কাস্টম গণসংযোগ বিভাগের পরিচালক সোহরাব হোসেন মল্লিক প্রতাপ জানান, ভারতীয় সজনে ডাঁটার চাহিদা থাকায়, স্থলবন্দর দিয়ে সজনে ডাঁটার ট্রাক প্রবেশের পর কাঁচামাল হওয়ায় দ্রুত খালাস করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এরপর আমদানিকারকেরা বাইরে থেকে আসা পাইকারদের কাছে সহজে সজনে ডাঁটা বিক্রি করে দিতে পারছেন। এ কাঁচামাল আমদানি করে আমদানিকারকেরা এখন পর্যন্ত কেউ ক্ষতির সম্মুখীন হয়নি। সজনে ডাঁটা আমদানি থেকে এ পর্যন্ত ৫২ লাখ ২৫ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হয়েছে।

মন্তব্য

p
উপরে