জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল থেকে এসে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে বসার অভিযোগ যখন আলোচনায়, তখনই রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলাম রানার বিরুদ্ধে চাকরি পাইয়ে দেয়ার নামে অর্থ আত্মসাতের মামলা হয়েছে। রাজশাহীর দুর্গাপুর আমলি আদালতে বৃহস্পতিবার সকালে মামলাটি করেন দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামি রানা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি পাইয়ে দেয়ার নাম করে আতিকের কাছ থেকে ৩১ মার্চ নগদ ৯০ হাজার টাকা এবং ডাক বিভাগের অনলাইন (নগদ) মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা নেন। ২০২২ সালের মে মাসে তিনি বাদীকে চাকরি পাইয়ে দেয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু আজ অবধি চাকরি না হওয়ায় রানার কাছে টাকা ফেরত চান আতিক। রানা দুই মাসের মধ্যে টাকা ফেরতের আশ্বাস দিলেও কোনো টাকা পাননি আতিক।
আতিকুর রহমানের পক্ষে মামলাটি করেন আইনজীবী ইমরান কলিম খান। তিনি জানান, দুর্গাপুর আমলি আদালতে এই মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। ৪০৬ ও ৪২০ ধারার প্রতারণা মামলায় টাকা গ্রহণের কাগজপত্রও আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। বিচারক মো. লিটন হোসেন ১২ ডিসেম্বর আসামিকে স্বশরীরে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছেন।
এদিকে সম্প্রতি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রানাকে নিয়ে দলের বিভিন্ন ফোরামে আলোচনা হচ্ছে। এক সময়ের ছাত্রদল নেতা কিভাবে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হলেন তা নিয়ে চলছে গুঞ্জন।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ২৪ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের ৩০ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কমিটি অনুমোদন দেন। সেখানে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান সাকিবুল ইসলাম রানা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাকিবুল ইসলাম রানা ছাত্রলীগে যোগদানের আগে ছাত্রদলের রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাস শাখা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। সে সময়ে ছাত্রদলের ওই কমিটিতে আহ্বায়ক ছিলেন শরিফুল ইসলাম নয়ন। রানা ছিলেন ওই কমিটির ৬ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক। ২০১৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেই কমিটির অনুমোদন দেন তৎকালীন রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মূর্ত্তজা ফামিন ও খন্দকার মুখসুদুর রহমান সৌরভ।
রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়ন সহ-সভাপতি মূর্ত্তজা ফামিন বলেন, ‘সাকিবুল ইসলাম রানা বর্তমানে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু সে রাজশাহী কলেজে পড়ার সময় ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল। সে হোস্টেল কমিটিতেও ছিল। সে সক্রিয়ভাবে আমাদের সঙ্গে মিটিং-মিছিল করত।
‘২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আমরা দায়িত্বে ছিলাম। সে সময় রাজশাহী কলেজের ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত ছিল রানা। আমার যতটুকু মনে আছে, রাজশাহী কলেজ হোস্টেলে ৫/৬টি কমিটি ছিল। এর একটিতে সে ছিল।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের এক সদস্য বলেন, ‘সাকিবুল ইসলাম রানা ছাত্রলীগের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে সংগঠনে একের পর এক অঘটন ঘটে চলেছে। জেলা ছাত্রলীগের মধ্যে ছাত্রদলের অনুপ্রবেশ বেশ কষ্টদায়ক। আমরা অনেক কষ্ট করেই রাজপথে লড়াই করে আসছি।
‘এখন দলের মধ্যে যদি সাবেক ছাত্রদল কর্মী ডুকে যায় তবে এটি আগামীতে আমাদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। বিএনপি-জামায়াত আমাদের সব তথ্য গোপনে তার মাধ্যমেই পেয়ে যাবে। এটি আমাদের রাজনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এজন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উচিত এখনই বিষয়টি ভেবে দেখা এবং তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া।’
তবে সাকিবুল ইসলাম রানা বলেন, ‘আমি কোনোদিন ছাত্রদল করিনি। রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত কে বা কারা আমার নাম বসাতে পারে। আমি কোনোদিনই ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। আমি ২০১৪ সাল থেকে ছাত্রলীগের সদস্য। আমার কখনও কোনো সময়ে আমার ছাত্রদল করার প্রশ্নই আসে না।’
রাজশাহী মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মূর্ত্তজা ফামিনের বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত এমনটা বলেছেন। আমি যে তাদের সঙ্গে ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িত ছিলাম সে সম্পর্কিত একটি ছবি তাদেরকে দেখাতে বলুন। না হয় তারা এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফুটেজ দেখান। ২০১৬ সাল খুব আগে কথা নয়। সে সময়ও সবার হাতে স্মার্ট মোবাইল ফোন ছিল। এরকম মনগড়া স্টেটমেন্ট দিলে তো হবে না।’
‘বহুত চিটারি-বাটপারি কইরি ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট হইসি, আমি চিটারের সর্দার’
এ দিকে সংগঠনের এক নারী কর্মীর সঙ্গে রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাকিবুল ইসলাম রানার কথোপকথনের একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। বুধবার রাতে ৪ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে রাজশাহীতে তোলপাড় শুরু হয়।
ওই অডিওতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়া সাকিবুল ইসলাম রানা বলেন, ‘বহুত চিটারি-বাটপারি কইরি ছাত্রলীগের প্রেসিডেন্ট হইসি, আমি সব চিটারের সর্দার।’
অডিওর কথোপকথন তুলে ধরা হলো:
কর্মী: হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম।
রানা: তুমি আমার সাথে নাটক করিচ্চো, তাই না?
কর্মী: কিসের নাটক ভাইয়া?
রানা: তোমার তো কথা-কাজের একটাও মিল পাচ্ছি না।
কর্মী: কিন্তু আমার কথা ও কাজের মিলতো সব সময় থাকে।
রানা: কই আজ কার সাথে ঘুরতে গেলা, বললা ভাইয়া...
কর্মী: বুঝি নাই।
রানা: তুমি কার সাথে গেলা, বললা এডা আমার ভাইয়া। তোমার তো ভাইয়াই নাই। এইডা হইলো?
কর্মী: কে বলল?
রানা: শোনো, আমার চোখ চারদিকেই থাকে...। এসব চিটারি করতে পারবা না। বহুত বড় চিটারি-বাটপারি কইরি আমি প্রেসিডেন্ট হইছি...। সব চিটারের দলের সর্দার আমি।
কর্মী: জ্বী ভাইয়া।
রানা: তুমি না আসলে, না আসলে; তুমি কাউকে পাঠাইতে চাইলে সে কই?
কর্মী: এখন আমি তো ব্যস্ত ছিলাম। এর জন্যই তো হয় নাই।
রানা: এখন কই?
কর্মী: আমি বাসায় ভাইয়া।
রানা: তুমি যে বাসায় চইলা গেলা, নিজে শান্তি পাইলে সব শান্তি! আর আমরা এভাবেই থাকি, নাকি? তোমাকে কত বিশ্বাস করি তুমি বলো তো?
কর্মী: আমি তো বিশ্বাসের মর্যাদা সব সময় রাখার চেষ্টা করি।
রানা: তুমি যার সাথে ঘোরো, তার চেয়ে যদি বড় নেত্রী হও, সেটা মানুষ মাইনা নিতে পারে না। এটা বোঝো না?
কর্মী: জ্বী ভাইয়া। এখন তৃষা আপু কি আমার সত্যিই খারাপ চাচ্ছে?
রানা: মসজিদে উঠে বললে বিশ্বাস করবে?
কর্মী: ছি ছি ভাইয়া। আমি তো আপনাকে বিশ্বাস করি। এটার জন্য এতদূর তো করতে হবে না।
রানা: তাহলে কেউ চায়, তার চেয়ে তুমি বড় হও? সে সাংগঠনিক, তুমি পার্টির যদি ভাইস প্রেসিডেন্ট হও, তার চাইতে দুই গুণ রাস্তা উপরে তোমার। যুগ্মদের চাইতেও সিনিয়র তুমি...।
কর্মী: আমি তো আপনার কথামতো তৃষা আপুকে ছেড়ে দিলাম ভাইয়া। কিন্তু আপনাকে মেইনটেন যে করব, মানে একটা ব্যবহার আমার খুব খারাপ লেগেছে।
রানা: আমাকে তুমি মেইনটেন করবে, আমি তো সরাসরি বলেছি। তোমার ফিনান্সিয়াল সাপোর্ট লাগবে আমি দেব। আমার কোন ন্যাচার খারাপ লাগল বলো?
কর্মী: আছে তো, অনেক কারণই আছে।
রানা: শান্ত?
কর্মী: অবশ্যই শান্ত ভাইয়ার ব্যবহার। সেই দিনের ওইটা আমার খারাপ লেগেছে।
রানা: ওই যে তুমি বলছিলা, তোমার আরও লাগবে। তাই ভাবলাম তুমি একটু সুখে থাকো, খুশি থাকো।
কর্মী: এগুলো তো ভাইয়া অবান্তর কথা। আর আমার ফাইনান্সিয়াল সাপোর্টের কোনো প্রয়োজন নেই। সংগঠনটাকে ভালবেসেই আমি আসছিলাম।
রানা: তাহলে শোন, শান্ত-মান্ত কেউ থাকবে না। আমি একা...
কর্মী: তো ভাইয়া আপনি মেয়ের কথা কালকে বলছিলেন, যেটা ছবি পাঠাইছিলাম। এখন আপনি বললে তাহলে...
রানা: দেখো তো, দেখো তো পাঠাতে পার নাকি।
কর্মী: এখন ভাইয়া উনিও তো ফ্যামিলির সাথে থাকে।
রানা: কেবল তো ৮টা বাজে রে। রাত হয়নি। একটু ফোন দাও দ্রুত। দিয়ে দেখো তো...। কেউ যেন না জানে।
কর্মী: না না, কে জানবে! আপনি আমাকে ভরসা করতে পারেন।
রানা: কী রকম ভরসা করি দেখো না?
কর্মী: জ্বী ভাইয়া।
এই অডিও রেকর্ডটির বিষয়ে কথা বলতে সাকিবুল ইসলাম রানাকে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কথোপকথনে থাকা নারী জেলা ছাত্রলীগের একজন কর্মী।
ফরিদপুরের মধুখালীর ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীতে সংঘবদ্ধ পিটুনিতে দুই নির্মাণশ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ সময় আরো পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার দুইজন শ্রমিক নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
প্রাণ হারানো দুজন হলেন মধুখালী উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের ঘোপেরঘাট গ্রামের শাহজাহান খানের ছেলে আশরাফুল (২১) ও তার ভাই আশাদুল (১৫)।
পঞ্চপল্লী গ্রামে একটি কালী মন্দিরে আগুন দেয়ার খবরে ঘটনার সূত্রপাত। গ্রামবাসীর সন্দেহ এখানে একটি নির্মাণাধীন প্রাইমারি স্কুলের নির্মাণশ্রমিকরা আগুন দিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নির্মাণশ্রমিকদের গণপিটুনি দেয় এলাকাবাসী। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাদের নির্মাণাধীন একটি স্কুল ভবনের কক্ষে হাত-পা বেঁধে মেঝেতে ফেলে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে সন্ধ্যার পর প্রথমে মধুখালী থানার ইউএনও এবং ওসির নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ওপরেও হামলা করা হয়।
এ সময় ফরিদপুর ও রাজবাড়ী থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলাকারীরা আরও উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এ সময় এলাকাবাসী পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে পুলিশ।
খবর পেয়ে ফরিদপুর থেকে জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
তিনি জানান, প্রায় ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় অবরুদ্ধ থাকার পর আহতদের উদ্ধার করে মুমূর্ষু অবস্থায় ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই এলাকার অতিরিক্ত র্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অতিরিক্ত নিরাপত্তার স্বার্থে ঘটনাস্থলে ৪ প্লাটুন বিজিবি পাঠাতে বলা হয়েছে।
ডুমাইন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান তপন সমকালকে জানান, পাঁচ গ্রাম নিয়ে সেখানে পঞ্চপল্লী অবস্থিত। এলাকাটি হিন্দু বসতি অধ্যুষিত। এর মাঝে কৃষ্ণনগর নামে এক গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজের জন্য সেখানে কয়েকজন নির্মাণশ্রমিক কাজ করছিলেন। পঞ্চপল্লীর একদল মানুষ ওই নির্মাণশ্রমিকদের পিটিয়ে আহত করে নির্মাণাধীন স্কুল ঘরে আটকে রাখে। স্কুল ভবনের দরজা, জানালা, গ্রিল ভেঙে ফেলেন তারা। এ সময় বাইরে থেকে কেউ ওই গ্রামে যেতে পারেনি। সেখানে একটি কালী মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
তপতি মন্ডল নামে ওই গ্রামের এক নারী বলেন, ‘আমি বাড়ি গিয়েছিলাম ঘোষি নিতে। তখন ওরা (শ্রমিকরা) রড ওঠানামা করছিল আর নিজেরাই বকাবাজি করছিল। তারপর আমি চিৎকার শুনতে পাই। এগিয়ে গিয়ে দেখি, মা একদম পুড়ে গেছে। তারপর লোকজন জড়ো হয়ে গেল, এই যা। তারপর কী হলো, তা দেখিনি।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফরিদপুর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী রাজবাড়ী জেলা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ আনা হয়েছে পরিস্থিতি মোকাবিলায়। পাশাপাশি ফরিদপুর থেকে র্যাব সেখানে পৌঁছেছে। থেমে থেমে সেখানে ফাঁকা গুলির আওয়াজ শোনা গেছে।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম বলেন, ‘এখানে কয়েকজন নির্মাণশ্রমিক কাজ করছিলেন। উত্তেজিত জনতা ভেতরে ঢুকে তাদের লাঠি দিয়ে বেদম প্রহার করে ও ইট দিয়ে থেতলিয়ে গুরুতর আহত করে। খবর পেয়ে মধুখালী থানার ওসি ফোর্সসহ এখানে আসে। তাদের সঙ্গে মধুখালী উপজেলার ইউএনও ছিলেন।
‘তারা এখানে এসে উত্তেজিত জনতার হাতে আটকে পড়েন। খবর পেয়ে আমরা ফরিদপুর থেকে অতিরিক্ত ফোর্সসহ এসে তাদেরসহ আহতদের উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সে ফরিদপুরে হাসপাতালে পাঠাই।’
পুলিশ সুপার বলেন, ‘এ ঘটনায় অনেক পুলিশ আহত হয়েছেন। তাদের দিকে ইটপাটকেল মারা হয়েছে। আমরা সারা রাতই পাহারা দিয়েছি। বিষয়টি ঢাকা থেকে আইজি স্যার নিজেও সবসময় খবরা-খবর রাখছেন।’
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার জানান, পঞ্চপল্লী গ্রামে একটি কালী মন্দিরে আগুন দেয়ার খবরে ঘটনার সূত্রপাত। গ্রামবাসীর সন্দেহ এখানে একটি নির্মাণাধীন প্রাইমারি স্কুলের নির্মাণশ্রমিকরা আগুন দিয়েছেন। তারা এই শ্রমিকদের বেদম পিটিয়ে ও ইট দিয়ে থেতলিয়ে গুরুতর আহত করে।
রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পঞ্চপল্লী গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, সকাল থেকে এখানে বিজিবি মোতায়েনের জন্য চার প্লাটুন বিজিবি চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:নেত্রকোণার মোহনগঞ্জে পারিবারিক গাছ থেকে পাড়া নারকেল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষে নারীসহ আটজন আহত হয়েছেন।
তাদের মধ্যে সেলিম মিয়া নামে গুরুতর আহত একজনকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সেলিম মিয়ার ভাই মজনু মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, পৌর শহরের টেংগাপাড়া এলাকায় বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ও বৃহস্পতিবার সকালে দুই দফা সংঘর্ষে আটজন আহত হন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেলে নিজেদের পারিবারিক গাছ থেকে নারকেল পাড়েন সেলিম। সেই নারকেল অপর তিন ভাই মজনু মিয়া, ফজলুর রহমান ও আজিজুল হকের বাসায় ভাগ করে দেন, তবে ভাগ কম বেশি হওয়ায় কারণে ভাতিজারা সেলিমের সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু করেন। একপর্যায়ে সেলিমকে তারা মারধর করে সামান্য আহত করেন।
এ ঘটনায় ওই রাতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরদিন সকালে সেলিম দোকানে গেলে তার হাতে ও পিঠে ক্ষুরের আঘাতে গুরুতর জখম করে প্রতিপক্ষের লোকজন।
আহত সেলিমের পক্ষের লোকজন জানায়, অপর তিন ভাই ও ভাতিজারা মিলে সেলিম ও তার শ্বশুর-শ্বাশুড়ির ও শ্যালিকার ওপর হামলা চালান।
এদিকে সেলিমের বড় ভাই ফজলুর রহমান বলেন, ‘প্রথমে নারকেল নিয়ে ভাতিজারা সেলিমকে কিছুটা হেনস্তা করে। আমরা রাতে বিষয়টা সমাধান করব ভেবেছি, কিন্তু রাতে বড়কাশিয়া থেকে সেলিমের আত্মীয়রা এসে বাড়িতে ঢুকে নারী-পুরুষ সবাইকে ক্ষুর ও রামদা দিয়ে কোপানো শুরু করে। এতে আমাদের পক্ষের চারজন গুরুতর আহত হয়। ক্ষুরের আঘাতে রাজিমুলের পেট বের হয়ে গেছে। হাত কেটেছে একজনের।
‘নিজেদের লোকজনের এমন রক্তাক্ত অবস্থা দেখে আমাদের ঘরের ছেলেরা উত্তেজিত হয়ে মারধর করতে গেলে তারা ঘরের দরজা লাগিয়ে ফেলে। সেলিম ছাড়া অন্যদের মারধরের ঘটনা সাজানো। এ ঘটনায় আমাদের পক্ষ থেকেও মামলার আবেদন করা হচ্ছে।’
এদিকে রাতের ঘটনায় সেলিম মিয়া বাদী হয়ে মজনু মিয়াসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। পরে সকালে মজনু মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, এ ঘটনায় থানায় দায়ের করা মামলায় মজনু মিয়া নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন:নওগাঁর ধামইরহাটে রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল নামে সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দেয়া এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা পরিচয় দিলেও তিনি আসলে তা নন, প্রতারণার স্বার্থে ভুয়া পরিচয় ধারণ করেছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার রুপনারায়নপুর গ্রাম থেকে তিনি গ্রেপ্তার হন।
২৫ বছর বয়সী রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামের বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী ম্যানুয়েল তপন জানান, ভয়ভীতি দেখিয়ে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে তিনি (পিয়াল) তার কাছ থেকে ২৯ হাজার ৫৩৮ টাকা গ্রহণ করেন এবং আরও টাকা দাবি করলে স্থানীয় জনতা তাকে চ্যালেঞ্জ করে। এরপর সংশ্লিষ্ট থানায় খবর দেয়া হয়। পরে থানা পুলিশ গিয়ে প্রতারক পিয়ালকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে।
তপন বলেন, ‘বেশকিছু দিন ধরে আমার মতো এলাকার অন্য লোকজনের কাছেও বিভিন্ন ফন্দি এঁটে প্রতারণা করে আসছে এই প্রতারক।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে ধামইরহাট থানার ওসি মো. বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, ‘প্রতারক রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় নিজেকে সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতেন। ইতোমধ্যে একজনের কাছে থেকে ২৯ হাজার টাকা নিয়েছে। এছাড়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাও নিতেন তিনি।
‘এদিনও প্রতারণা করতে গেলে জনগণ তাকে আটক করে রাখে। এরপর পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে আসে। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ মামলা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।’
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর হাতিয়ায় ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মো. সুলতান নামে এক রোহিঙ্গা নাগরিকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাৎক্ষণিক এই হত্যাকাণ্ডের কারণ জানাতে পারেনি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১১৬ নম্বর ক্লাস্টার থেকে পুলিশ সুলতানের মরদেহ উদ্ধার করে। তিনি ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৭৮ নম্বর ক্লাস্টারের বাসিন্দা ছিলেন।
ভাসানচর থানার ওসি কাওসার আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি বলেন, সুলতান ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৭৮ নম্বর ক্লাস্টারে বসবাস করতেন। ১১৬ নম্বর ক্লাস্টারের খালি জায়গায় তিনি সবজি চাষ করতেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ছেলে তার জন্য দুপুরের খাবার নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে বাবাকে দেখতে না পেয়ে তার ছেলে ওই ক্লাস্টারে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি শুরু করেন। একপর্যায়ে তার বাবার গলা কাটা মরতেজ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দেন। এ সময় অন্য ক্লাস্টারের লোকজন এগিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
ওসি কাওসার আহমেদ জানান, পেছনের দিক থেকে গলা কেটে এই রোহিঙ্গা নাগরিককে হত্যা করা হয়। শুক্রবার সকালে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটনে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন:চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। ঢাকার সাভারের বোট ক্লাবের পরিচালক নাছির উদ্দিন মাহমুদকে মারধর, হত্যাচেষ্টা, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে করা মামলাটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছে।
এই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম সাইফুল ইসলামের আদালতে বৃহস্পতিবার এই আবেদন করেন বাদী পক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম মোহাম্মদ সোহেল। শুনানি শেষে আদালত আদেশের জন্য রেখেছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম মোহাম্মদ সোহেল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা জেলার পরিদর্শক মো. মনির হোসেন সম্প্রতি ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরীমনি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমের বিরুদ্ধে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তবে আরেক আসামি ফাতেমা তুজ জান্নাত বনির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি।
ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন ২০২২ সালের ৬ জুলাই আদালতে মামলাটি করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, পরীমনি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহলসেবী। সুযোগ বুঝে তারা বিভিন্ন নামিদামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করেন না। পরীমনি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করে হয়রানির ভয় দেখান। ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে দ্বিতীয় তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন।
পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন। বাদী ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত সোয়া ১টার দিকে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরীমনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাদী নাসির উদ্দিনকে ডাক দেন এবং তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসার অনুরোধ করেন।
একপর্যায়ে পরীমনি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নাসির উদ্দিনকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে পার্সেল দেয়ার জন্য বাদীকে চাপ দেন। বাদী এতে রাজি না হওয়ায় পরীমনি বাদীকে গালমন্দ করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, বাদী ও আসামিদের মধ্যে বাদানুবাদের এক পর্যায়ে পরীমনি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিও ছুড়ে মারেন। এতে নাসির উদ্দিন মাথা ও বুকে আঘাত পান। এ সময় পরীমনি ও তার সহযোগীরা নাসির উদ্দিনকে মারধর ও হত্যার হুমকি দেন ও ভাঙচুর করেন।
বাদী মামলায় আরও উল্লেখ করেন, এ ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য পরীমনি সাভার থানায় বাদী নাসির উদ্দিনসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা করেন।
২০২১ সালের ১৪ জুন ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তার বন্ধু অমির নাম উল্লেখ করে এবং চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করে পরীমনি সাভার থানায় মামলা করেন।
ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।
২০২২ সালের ১৮ মে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এর বিচারক হেমায়েত উদ্দিন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। অভিযোগ গঠনের সময় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন নাসিরসহ তিন আসামি। বর্তমানে মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
আরও পড়ুন:গাইবান্ধায় ভাঙারির দোকানে চুরি করা রেলপাত (রেললাইন) বিক্রির সময় এক অটোচালকসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এসময় দোকান মালিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের ব্রিজ রোড এলাকার আশা ভাঙারি দোকানে সরকারি এসব রেলপাত বিক্রির সময় তাদের হাতেনাতে আটক করে গাইবান্ধার রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)।
এ সময় চুরি করে বিক্রি করতে নিয়ে আসা রেলপাত এবং সেসব পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি অটোরিকশাও জব্দ করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- সদর উপজেলার পশ্চিম দুর্গাপুর এলাকার ৩০ বছর বয়সী সাগর মিয়া, ফুলছড়ি উপজেলার উত্তর কঞ্চিপাড়া এলাকার ৪০ বছর বয়সী ওয়াহেদ মিয়া ও আশা ভাঙারি দোকানের শ্রমিক সদর উপজেলার বালুয়া বাজারের পাকারখুটি এলাকার ৩৩ বছর বয়সী মোকলেছুর রহমান। এদের মধ্যে ওয়াহেদ মিয়ার অটোরিকশায় এসব মালামাল পরিবহন করা হয়েছিল।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বোনারপাড়া রেলওয়ে পুলিশের ওসি খাইরুল ইসলাম তালুকদার।
তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের ব্রিজ রোডের একটি ভাঙারির দোকানে সরকারি রেলপাত অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয়কালে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় দোকান মালিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘এ সময় তাদের কাছ থেকে খণ্ড খণ্ড তিন ফুট দৈর্ঘ্যের ৯ টুকরা রেললাইনের পাত উদ্ধার করা হয়, যা সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দেয়া হবে।’
রেলপাতগুলো বালাসিঘাটের পরিত্যক্ত রেলপথ থেকে খুলে আনা হয়েছে বলে জানান রেলওয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এ সময় এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আটককৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পদ অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া এদের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তাও খতিয়ে দেখবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।’
অপহরণের ৬ ঘণ্টার মধ্যে সিরাজগঞ্জ থেকে তামিম হোসেন নামের ৭ বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করেছে র্যাব। এ সময় এ মামলার আসামি আল-আমিন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ভোরে বেলকুচি উপজেলার চন্দনগাতী গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে র্যাব ১২-এর একটি দল। বুধবার দুপুর তিনটার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলার হানুরবাড়াদি গ্রাম থেকে তাকে অপহরণ করা হয়।
অপহৃত তামিম হোসেন চুয়াডাঙ্গার হানুরবাড়াদি গ্রামের মো. সুন্নত আলীর ছেলে। অপরদিকে গ্রেপ্তার হওয়া ২৯ বছর বয়সী আল-আমিন কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানায় মেষতলী বাজারের বাসিন্দা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব ১২-এর অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মারুফ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, অপহরণের পর শিশুটির বাবা সুন্নত আলী চুয়াডাঙ্গা থানায় মামলা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিষয়টি র্যাবকে জানালে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামির অবস্থান নির্ণয় করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, তামিমের বাবার সঙ্গে আল আমিনের দুই মাস আগে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়েই সুকৌশলে তামিমকে অপহরণ করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মুক্তিপণের জন্যই শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছিল।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় হস্তান্তর করার আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য