রাজধানীতে বাসে প্রতি দিন সাড়ে আট কোটি টাকা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয় বলে দাবি করেছে যাত্রী অধিকার নিয়ে সোচ্চার সংগঠন যাত্রীকল্যাণ সমিতি।
একই সঙ্গে সিএনজি অটোরিকশায় সোয়া পাঁচ কোটি আর হিউম্যান হলারে সাড়ে ছয় কোটি টাকার মতো বাড়তি আদায় করা হয়। অ্যাপের গাড়িও এখন নির্ধারিত ভাড়ায় চলে না। যাত্রী পিছু বাড়তি আদায় হয় ৭৫ টাকা।
সংস্থাটি জানাচ্ছে, কোনো যানবাহনেই সরকারনির্ধারিত ভাড়া আদায় হয় না। আর অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নিয়ে তর্কের জেরে বাসগুলোতে ২৫ টি যাত্রী নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছে। বাস থেকে ফেলে ১৪ যাত্রীকে হত্যা করা হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছে ১০ জন যাত্রী।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ চাই’ বিষয়ে এক আলোচনায় এসব তথ্য জানান সংগঠনটির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
বাস আর অটোরিকশা ভাড়ায় অনিয়মের বিষয়টি যেমন নতুন নয়, তেমনি অনিয়ম ঠেকাতে সড়ক পরিবহন নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানার অকার্যকর পদ্ধতির ব্যবহারও নতুন নয়। একইভাবে নতুন নয় সড়ক মন্ত্রীর হুঁশিয়ারি।
এই অনিয়মে যুক্ত হয়েছে রাইড শেয়ারিং বাহনগুলো, যেগুলো অ্যাপের মাধ্যমে নির্ধারিত ভাড়ায় চলার কথা। কিন্তু সেগুলোও এখন চলছে চুক্তিতে, অতিরিক্ত ভাড়ায়।
বেসরকারি বাস তো বটেই, সরকারি সংস্থা রাজউক পরিচালিত চক্রাকার বাসে সরকার নির্ধারিত হারের তিন গুণেরও বেশি ভাড়া আদায়ে বিআরটিএর চোখ বুজে থাকায় ক্ষুব্ধ যাত্রীরা বলছেন, তাদের করের টাকায় একটি অপদার্থ সংস্থা পালা হচ্ছে।
গত ৫ আগস্ট থেকে ডিজেলের দর লিটারে ৩৪ টাকা বাড়ানোর পর ঢাকায় বাসভাড়া ঠিক করা হয় কিলোমিটারপ্রতি আড়াই টাকা। এই টাকায় সর্বনিম্ন চার কিলোমিটার যাওয়ার কথা। কিন্তু এই চার কিলোমিটারের মধ্যে দুটি ওয়েবিলের চেক বসিয়ে আগে থেকেই সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা করে ২০ টাকা আদায় করা হচ্ছিল। ভাড়া বাড়ার পর তা ১৫ করে ৩০ টাকা আদায়ের চেষ্টা করা হয়। যাত্রীদের প্রতিরোধের মুখে অনেক ক্ষেত্রে অবশ্য স্বল্প দূরত্বে এটা পারেনি শ্রমিকরা।
কিন্তু কোন পথের দূরত্ব কতটুকু, সেটি উল্লেখ করে যে চার্ট থাকার কথা, তা দেখা যাচ্ছে না বাসে, কোনো বাস কোনো চেকে সর্বনিম্ন ভাড়া ২৫ টাকাও রাখছে, যা যাত্রী দুই কিলোমিটার যাক আর ছয় কিলোমিটার যাক।
২৯ আগস্ট তেলের দর লিটারে ৫ টাকা কমানোর দুই দিন পর রাজধানীতে প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া ঠিক করে দেয়া হয় ২ টাকা ৪৫ পয়সা। এই হিসাবে কমার কারণে রাজধানীতে বাসভাড়ায় কোনো প্রভাব এ কারণে পড়েনি যে, এক টাকা ভাড়া কমেছে ২০ কিলোমিটারে। কিন্তু রাজধানীতে ২০ কিলোমিটার গন্তব্যে বাসের রুট নেই বললেই চলে। থাকলেও এত দূরের যাত্রী থাকে না বললেই চলে। তারা চলে ছোট গন্তব্যে।
দুইবারই বাসভাড়া নির্ধারণের পর বিআরটিএর পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে কঠোর হুঁশিয়ারি। বলা হয়েছে, বাড়তি ভাড়া আদায় করা যাবে না। কিন্তু এসব হুঁশিয়ারির পরোয়াই করে না বাসগুলো।
আর অটোরিকশা মিটারে চলাচল কখনও নিশ্চিত করতে পারেনি বিআরটিএ। আড়াই কিলোমিটার সড়কের জন্য দেড় থেকে দুই শ টাকাও আদায় করা হয়।
প্রতিদিন বাহনগুলো মোট কত টাকা অবৈধ আদায় করে, সে পরিসংখ্যান জানিয়ে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘রাজধানীর ৫ হাজার বাস-মিনিবাসে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০ লাখ ট্রিপ যাত্রীর যাতায়াত হয়। এসব বাস-মিনিবাসে যাতায়াতে যাত্রী প্রতি মাথাপিছু গড়ে ১৭ টাকা পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া দিতে হয়। এতে ৫০ লাখ ট্রিপ যাত্রী দৈনিক গড়ে সাড়ে ৮ কোটি টাকা বাড়তি ভাড়া পরিশোধ করতে বাধ্য হচ্ছে।’
বাসের পাশাপাশি অন্য যানবাহনেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয় বলেও জানানো হয়। এতে বলা হয়, ১৫ হাজার বৈধ অটোরিকশার পাশাপাশি আরো ১৫ হাজার ঢাকা ও আশেপাশের জেলায় নিবন্ধিত অটোরিকশা অবৈধভাবে চলাচল করে।
‘৩০ হাজার অটোরিকশা দৈনিক গড়ে ১২ ট্রিপ হিসেবে ৩ লাখ ৬০ হাজার ট্রিপ যাত্রী বহন করে। এসব অটোরিকশায় প্রতিট্রিপে গড়ে ১৪৫ টাকা বাড়তি ভাড়া আদায় হয়। এতে দৈনিক ৩ লাখ ৬০ হাজার ট্রিপ যাত্রীকে অটোরিকশা খাতে কেবল বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছে ৫ কোটি ২২ লাখ টাকা।’
মোজাম্মেল বলেন, ‘হিউম্যান হলারের ভাড়া নির্ধারণের আইন থাকলেও সরকার ভাড়া নির্ধারণ না করায় এখানে বরাবরই দ্বিগুণ-তিনগুণ বাড়তি ভাড়ায় যাতায়াত করতে হচ্ছে নিন্ম আয়ের যাত্রীদেকে।
‘১২ হাজার বৈধ হিউম্যান হলারের পাশাপাশি মেয়াদোত্তীর্ণ, লক্কড়-ঝক্কড়, স্থানীয় গ্যারেজে তৈরি আরও প্রায় ১৮ হাজার হিউম্যান হলারসহ ৪০ হাজার হিউম্যান হলার রাজধানীতে দৈনিক গড়ে ৮০ লাখ ট্রিপ যাত্রী বহন করে। প্রতিট্রিপে যাত্রীপ্রতি গড়ে ৮ টাকা পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া দিতে বাধ্য হয়। এতে ৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা কেবল হিউম্যান হলারের যাত্রীদের বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে।
রাইডশেয়ারিং মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার, ট্যাক্সিক্যাবে যাত্রীপ্রতি গড়ে ৭৫ টাকা পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে জানান মোজাম্মেল।
যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, ‘ভাড়া নৈরাজ্যের কারণে সামাজিক অস্থিরতা বেড়েছে, পণ্যমূল্য বেড়েছে, সামাজিক অপরাধ বাড়ছে।’
তিনি বলেন, মালিকের দৈনিক জমা, জ্বালানির উচ্চ মূল্য, সড়কের চাঁদাবাজি, গাড়ির মেরামত খরচ ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে এই ভাড়া নৈরাজ্য।
আরও পড়ুন:পার্বত্য চট্টগ্রামে বুধবার এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি ও পরবর্তীতে তার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে চলমান হামলা, আক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনায় সরকার গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে। সূত্র: বাসস
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় দুঃখ প্রকাশ করে বলা হয়, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) খাগড়াছড়ি ও আজ (শুক্রবার) রাঙামাটিতে সৃষ্ট সমস্যা নিরসনে আন্তরিকভাবে কাজ করছে সরকার।
বার্তায় উল্লেখ করা হয়, সরকারের পক্ষ থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সব বাহিনীকে সর্বোচ্চ সংযম দেখাতে এবং পার্বত্য তিন জেলায় বসবাসকারী সব জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেখানে শান্তি, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি নিশ্চিতকরণে সরকার বদ্ধপরিকর।
আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়া এবং ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত না হওয়ার জন্য সবাইকে নির্দেশ প্রদান করে ওই বার্তায় বলা হয়, আইন নিজ হাতে তুলে নেয়া এবং যে কোনো সম্পত্তি ধ্বংস করা দণ্ডনীয় ও গর্হিত অপরাধ। সহিংসতার সঙ্গে সম্পর্কিত সব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করা হবে।
বার্তায় বলা হয়, এ লক্ষ্যে সরকার খুব শিগগির একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করবে। এছাড়া আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল আগামীকাল শনিবার খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি পরিদর্শন করবে। প্রতিনিধি দলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এবং প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়ন বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী থাকবেন।
আরও পড়ুন:আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে শুক্রবার হুঁশিয়ারি করে দিয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘবদ্ধ পিটুনিতে দুজন নিহত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ এমন হুঁশিয়ারি দেয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি কোথাও কোথাও গণপিটুনি দিয়ে মানুষ হত্যার নৃশংস ঘটনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ ধরনের মব জাস্টিস কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে বাংলাদেশ পুলিশ বদ্ধপরিকর।
‘কেউ অন্যায় করলে বা অপরাধী হলে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ওই ব্যক্তির বিচারের বিধান রয়েছে। আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার অধিকার কারো নেই। কোনো ব্যক্তি অন্যায় এবং অপরাধ করলে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে; কোনোভাবেই আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া যাবে না।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘কোনো ব্যক্তি অন্যায় বা অপরাধ করলে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ অথবা নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করুন। আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়ার জন্য পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স সকলের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছে। মব জাস্টিস বা গণপিটুনির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স দেশের সকল সচেতন নাগরিকের সহযোগিতা কামনা করছে।
‘বাংলাদেশ পুলিশ দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
আরও পড়ুন:আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংকের সফররত ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার বলেছেন, বিশ্বব্যাংক অন্তর্বর্তী সরকারের মূল অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ হতে প্রস্তুত।
বিশ্বব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের এই কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার ঢাকার তেজগাঁও কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এ মন্তব্য করেন।
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা অর্থনীতির সমস্যা কাটিয়ে ওঠা, দুর্নীতি দূর করা এবং বিচার ব্যবস্থার মতো ক্ষেত্রগুলোতে মৌলিক সংস্কার পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রয়াসে ব্যাপকতর সহায়তার আহ্বান জানান। প্রতিক্রিয়ায় বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাইসার বলেন, ‘আমাদের ওপর আস্থা রাখুন। আমরা সাহায্য করতে প্রস্তুত।’
রাইসার বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক সরকারের সংস্কার এজেন্ডা দেখে উচ্ছ্বসিত। আমি মনে করি এখন বাংলাদেশ সফর করা মূল্যবান। অনেক প্রত্যাশা রয়েছে।’
সফররত বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ব্যাংকিং, কর, শুল্ক, ভ্যাট, ডিজিটাইজেশন, দুর্নীতিবিরোধী পদক্ষেপে সংস্কার প্রয়াসে সহায়তা করতে বিশ্বব্যাংক প্রস্তুত।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাংকের সহায়তাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দুর্নীতি থেকে মুক্তি পেতে এবং একটি নতুন যাত্রার সূচনা করতে জনগণের কাছ থেকে ব্যাপক ম্যান্ডেট পেয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এটি সংস্কারের মৌসুম। আমরা এখনই শুরু করতে চাই। জুলাই-আগস্টে ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণ-অভ্যুত্থান বিদ্যমান ব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কারের জন্য মাঠ প্রস্তুত করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পেছনে ফিরে যেতে চাই না। এই আন্দোলন অতীতকে পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে। এখন এটি একটি পরিচ্ছন্ন স্লেট।’
অধ্যাপক ইউনূস তার সরকার এখন পর্যন্ত যেসব সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে তার রূপরেখা তুলে ধরে বলেন, ‘অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে পদক্ষেপগুলোর মধ্যে দুর্নীতি, শ্রম সংস্কার এবং যুব সমাজের উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।
‘সরকার শ্রম সংস্কারে আইএলও কনভেনশন বাস্তবায়ন করবে, যা বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে এবং স্থানীয় উৎপাদনকারীদের আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে স্থান পেতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এ কাজটি সম্পন্ন করতে চাই। বৈশ্বিক খাতে তৈরি পোশাক ছাড়া অন্যান্য খাতেও বাংলাদেশের ভূমিকা রাখা উচিত।’
সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পদক্ষেপের প্রশংসা করে রাইসার বলেন, ‘বাংলাদেশে বার্ষিক এফডিআই দেশের জিডিপির প্রায় অর্ধ শতাংশ এবং এই অঞ্চলে এটি সর্বনিম্ন।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক রোহিঙ্গা মানবিক সংকট এবং কক্সবাজারের স্বাগতিক জনগোষ্ঠীর জন্য ৭০ কোটি ডলার অনুমোদন করেছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বেড়ে ওঠা লাখ লাখ তরুণ-তরুণীর জন্য সহায়তা লাভের বিষয়ে আমরা আগ্রহী। আমাদের এ বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে।’
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, সিনিয়র সচিব ও এসডিজি বিষয়ক প্রধান লামিয়া মোরশেদ, বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী প্রমুখ।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত কমিশনগুলো আগামী অক্টোবরে কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, এসব কমিশন ডিসেম্বরের মধ্যে সংস্কারের প্রতিবেদন জমা দেবে।
আইন উপদেষ্টা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর হেয়ার রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার কার্যালয়ে সংস্কার কমিশনগুলোর প্রধানগণ বৈঠক করেন।
আসিফ নজরুল জানান, সংস্কার কমিশনগুলো রিপোর্ট দিলে সেগুলো প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় পর্যালোচনার পর অনলাইনে উন্মুক্ত করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘সংস্কারের বিষয়ে আওয়ামী লীগ ছাড়া সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা হবে। যারা গণহত্যা চালিয়েছে, হাজারের ওপর মানুষকে হত্যা করেছে, হাজার হাজার মানুষকে আহত করেছে, যারা বিচারের ভয়ে পালিয়ে আছে তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে না। এটা আমাদের পরিষ্কার বক্তব্য।’
মব জাস্টিস বা গণপিটুনিতে হত্যার মতো ঘটনার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যার ঘটনায় আমরা মর্মাহত। এ ধরনের প্রতিটি ঘটনার বিচার করা হবে। আমরা এটা নিয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছি।’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের পানি সরবরাহ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. ফজলুর রহমান।
বুধবার স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মো. আব্দুর রহমানের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ আইন ১৯৯৬-এর ২৮(২) ধারা অনুযায়ী ঢাকা ওয়াসার দৈনন্দিন কার্যক্রম সুচারুরূপে পরিচালনা এবং চলমান উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের পানি সরবরাহ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে তার নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে সাময়িকভাবে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব দেয়া হলো।
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনকালে তিনি বিধি মোতাবেক দায়িত্ব ভাতা পাবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কয়েক দফায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত এমডি তাকসিম এ খানের চুক্তি বাতিল করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তার স্থলে ডেপুটি এমডি ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব পালন করছিলেন।
ভোলায় গ্যাসের প্রকৃত মজুত দুই ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএফ) বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
ভোলায় ৫ দশমিক ১০৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুত রয়েছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং বিশেষজ্ঞদের নিয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার প্রেস ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভোলায় ৫ দশমিক ১০৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুত রয়েছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এই তথ্যটা যদি সঠিক হতো, তাহলে আজ আমরা উৎসব করতাম। তাহলে আমাদের গ্যাসের কোনো সংকট থাকত না; আমদানির প্রয়োজন হতো না। ‘তাই যারা গ্যাস সেক্টর সম্পর্কে এবং গ্যাসের মজুত সম্পর্কে ভালো জানেন তাদের সঙ্গে আমরা আজ বসেছি।
‘জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম, কানাডায় গ্যাসের মজুত বিশেষজ্ঞ হোসনে আরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমামসহ কয়েকজনকে নিয়ে বসেছি। তাদের সঙ্গে আলোচনায় এই তথ্যের সত্যতা মেলেনি।’
ব্রিফিংয়ে তিনি বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স) লিমিটেডের কর্মকর্তাকে ভোলায় গ্যাসের মজুতের বিষয়ে তথ্য তুলে ধরার অনুরোধ জানান।
বাপেক্স কর্মকর্তার বরাতে তিনি বলেন, ‘ভোলার চরফ্যাশনে আমাদের কোনো সিসমিক সার্ভের ডাটা নেই। শাহবাজপুর, ভোলা এবং ইলিশা গ্যাসক্ষেত্রে ২ দশমিক ০৪৭ টিসিএফ (উত্তোলনযোগ্য ১.৪৩২ টিসিএফ) প্রমাণিত গ্যাস রিজার্ভ রয়েছে। ভোলা জেলার অন্তর্গত তিনটি (শাহবাজপুর, ভোলা ও ইলিশা) গ্যাসক্ষেত্রে এ পর্যন্ত সর্বমোট ৯টি কূপ খনন করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক (ডিজি) হয়েছেন লেখক ও সাংবাদিক ফারুক ওয়াসিফ।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে বুধবার তার নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
উপসচিব এ টি এম শরিফুল আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) আইন, ২০১৮-এর ধারা ৯ (২) অনুযায়ী ফারুক ওয়াসিফকে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সাথে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী ২ বছর মেয়াদে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর মহাপরিচালক পদে নিয়োগ দেয়া হলো।
‘এই নিয়োগের অন্যান্য শর্ত অনুমোদিত চুক্তিপত্র দ্বারা নির্ধারিত হবে।’
মন্তব্য