ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণকাজ এরই মধ্যে ৪৪ শতাংশ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ পরিদর্শন শেষে সোমবার সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘তৃতীয় টার্মিনালের কাজের অগ্রগতি অনেক এগিয়েছে। এ পর্যন্ত ৪৪ দশমিক ১৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করতে পারব।’
আকাশ থেকে যেন দেশের উন্নয়ন দেখা যায়, সেদিকেও নজর দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমান পরিবহনসংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান মাহবুব আলী।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চান আকাশপথে মানুষ আসার পথে যেন বাংলাদেশের উন্নয়ন অনুভব করতে পারেন। সে অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী কাজ করে যাচ্ছেন।’
মাহবুব আলী বলেন, ‘ইতোমধ্যে সিলেট, চট্টগ্রাম ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরের কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। যারা সৈয়দপুর এয়ারপোর্টে গিয়েছেন, প্রত্যেকেই এর ডিজাইন দেখে পছন্দ করেছেন। রাজশাহী এয়ারপোর্ট, বরিশাল এয়ারপোর্টের কাজেও হাত দেয়া হবে।’
বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সিভিল এভিয়েশন সারা পৃথিবীর আকর্ষণ। জার্মানি-সুইজারল্যান্ড সবারই দেশের এয়ারপোর্টের প্রতি আকর্ষণ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী চান বাংলাদেশের আকাশপথ আরও উন্নত করতে। যেন সবাই আকাশপথে বাংলাদেশের উন্নয়ন অনুভব করতে পারেন।’
কোভিডের এই দুঃসময়ে এসে কাজ অব্যাহত রাখতে পেরেছি। যেখানে সারা বিশ্ব করোনায় বিপর্যস্ত, সেখানে সবার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়েই বিমানের উন্নয়নকাজ চলমান আছে বলেও জানান তিনি।
মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়ার জন্ম এবং মৃত্যু দিনে পাঁচ গুনি নারীকে তার নামে প্রবর্তিত পদক তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় জীবনে বিভিন্ন খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান ও গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালনের স্বীকৃতি স্বরূপ তাদের বেগম রোকেয়া পদক-২০২৩ দেয়া হয়।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শনিবার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ পদক দেন প্রধানমন্ত্রী। পদক প্রাপ্তরা হলেন নারী শিক্ষায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রথম নারী উপাচার্য খালেদা একরাম, (মরণোত্তর), নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় চিকিৎসক হালিদা হানুম আখতার, নারীর আর্থসামাজিক উন্নয়নে নেত্রকোনার কামরুন্নেছা আশরাফ দিনা (মরণোত্তর), পল্লি উন্নয়নে ঠাকুরগাঁওয়ের রনিতা বালা এবং নারী জাগরণে উদ্বুদ্ধকরণে নিশাত মজুমদার।
অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় বর্তমান সরকার নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়ার প্রত্যাশা অনেকটাই পূরণ করতে সক্ষম হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শনিবার বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে পাঁচ বিশিষ্ট নারী ও তাদের স্বজনদের হাতে পদক তুলে দেন সরকারপ্রধান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন ইসলাম ধর্মের কথা বলে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে নারীদের কেউ আটকে রাখতে পারবে না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে মেয়েরা আর পিছিয়ে নেই। রাজনীতি থেকে খেলাধুলা সবক্ষেত্রে নারীরা সফলতার সঙ্গে কাজ করছে। সাংবাদিকতা থেকে শিল্পকলা সবখানেই নারীরা সফল। প্রশাসন, বিচারালয়, সশস্ত্র বাহিনীসহ সব জায়গায় কাজ করছেন তারা।’
পাকিস্তান আমলের প্রসঙ্গ টেনে সরকারপ্রধান বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে আইন ছিল জুডিশিয়াল সার্ভিসে নারীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন। স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশে জাতির পিতা এ আইনগুলো পরিবর্তন করেন। তারপর থেকে আমাদের দেশের মেয়েরা জুডিশিয়াল সার্ভিসে যোগ দিতে পারছে, কিন্তু আমি সরকারের এসে দেখি আমাদের উচ্চ আদালতে কোনো নারী বিচারক নেই।
‘তখন আমি উদ্যোগ নিলাম, রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা বলেছি, আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বলেছি, উচ্চ আদালতে কোনো জজ নিয়োগ দেয়া হলে তাতে যদি কোনো নারী জজের নাম না থাকে, আমি কখনও ওই ফাইল সই করব না, রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাব না। সেই থেকে যাত্রা শুরু।’
ওই সময় একটি আফসোসের কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘একটা আফসোস রয়ে গেছে আমার। খুব ইচ্ছা ছিল একজন নারীকে আমি প্রধান বিচারপতি করে যাব, কিন্তু আমাদের সমাজে এত বেশি কনজারভেটিভ, এগুলো ভাঙতে সময় লাগে। সে জন্য করতে পারিনি। এ আফসোসটা থেকে গেল।’
তিনি বলেন, ‘বেগম রোকেয়ার সময় মুসলমান মেয়েরা ঘরে অবরুদ্ধ থাকত। লেখাপড়ার কোনো সুযোগ ছিল না, তবে তার স্বামী সবসময় তাকে সহযোগিতা করেছেন, তার ভাই তাকে সহযোগিতা করেছেন। তিনি নিজের প্রচেষ্টায় উর্দু, বাংলা, আরবি, ইংরেজি, শিক্ষা যেগুলো গ্রহণ করা, সেগুলো তার স্বামীর কাছ থেকে শিখেছেন। স্বামীর কাছে আক্ষরিক জ্ঞান এবং বই পড়ার শিক্ষা গ্রহণ করেন।
‘স্বামীর মৃত্যুর পর তিনি (বেগম রোকেয়া) তার ভাইয়ের কাছ থেকেও একটি অনুপ্রেরণা পান। তার স্বামীর নামে একটি স্কুল তৈরি করেন। স্কুল তৈরির পরও তাকে অনেক বাধাবিপত্তি মোকাবিলা করতে হয়। কারণ, স্বামীর নামে যে স্কুল করেছিলেন, সেখানে ছাত্রী পড়ানো যেত না। তিনি নিজের বাড়ির বাইরে গিয়ে ছাত্রী সংগ্রহ করে নিয়ে আসতেন। এটা করতে গিয়ে অনেক পরিবারের বাধা এবং অনেক প্রতিবন্ধকতা এসেছে। তিনি দমে যাননি কখনও। তার সাহসী ভূমিকা সবসময় আমরা স্মরণ করি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সালে আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের মানুষ যুদ্ধ করেছিল; বিজয় অর্জন করেছিল। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীদের অনেক অবদান আছে।
‘তারা যেমন ট্রেনিংয়ে গেছে, তেমনি যুদ্ধক্ষেত্রেও সহযোগিতা করেছে। তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে নানা নির্যাতনের শিকার হন। অনেকে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।’
তিনি বলেন, ‘আমি চাই নারী স্বাবলম্বী হোক। নারীরা স্বাবলম্বী হলে পরিবার ও সমাজে তার অবস্থান সুদৃঢ় হয়। সব জায়গায় তার কথার মূল্যায়ন হয়। আমরা বলতে পারি, এরই মধ্যে বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন অনেকাংশে পূরণ করতে পেরেছি।’
মায়ের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার বাবা বেশির ভাগ সময় জেলে ছিলেন। সংসার চালানো, দল সুসংগঠিত করাসহ সব কাজই আমার মা করেছেন।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী পাঁচ নারীকে বেগম রোকেয়া পদক দেন। পদকপ্রাপ্তদের ১৮ ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম স্বর্ণের একটি পদক, পদকের রেপ্লিকা, প্রত্যেককে চার লাখ টাকার চেক ও সম্মাননাপত্র দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। স্বাগত বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমা মোবারেক।
আরও পড়ুন:সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, ভারতের উপমহাদেশীয় উচ্চতাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে জানানো হয়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। শেষ রাত থেকে ভোর পর্যন্ত সারা দেশে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণত শীত বাড়ে। সে ক্ষেত্রে রাতে শীত কিছুটা বাড়তে পারে।
ঢাকায় বাতাসের গতি ও দিক নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার।
ঢাকায় শনিবার সন্ধ্যা ৫টা ১১ মিনিটে সূর্য অস্ত যাবে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, রোববার ঢাকায় সূর্যোদয় ভোর ৬টা ৩০ মিনিটে।
আরও পড়ুন:প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইল ব্যবহারসহ বিভিন্ন অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে দেশের ছয় জেলার বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে মোট ৮৭ জনকে আটক করার খবর পাওয়া গেছে। ওই ৮৭ জনসহ মোট ৯৩ জনকে কেন্দ্র থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শুক্রবার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০২৩-এর প্রথম পর্বের পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ৩৭ জনকে আটক করা হয়েছে গাইবান্ধা জেলায়। এ ছাড়া দিনাজপুরে ১৮, লালমনিরহাটে ১৩, কুড়িগ্রামে ১২, ঠাকুরগাঁওয়ে ৭ ও ঝালকাঠিতে একজনকে আটক করা হয়েছে বলে খবর মিলেছে।
গাইবান্ধায় ৩৭ জনের নামে মামলা
গাইবান্ধায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইল ব্যবহারের মাধ্যমে জালিয়াতির অভিযোগে আটক পরীক্ষার্থীসহ ৩৭ জনের নামে মামলা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে পরীক্ষা চলাকালে জেলার বিভিন্ন কেন্দ্র ও স্থান থেকে তাদের আটক করে র্যাব-১৩ গাইবান্ধা ক্যাম্পের সদস্যরা।
আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৩২ জন এই নিয়োগ পরীক্ষার পরীক্ষার্থী এবং পাঁচজন বহিরাগত বলে জানান র্যাব-১৩ রংপুর বিভাগের অধিনায়ক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।
গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) দেওয়ান মওদুদ আহমেদ মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রথম ধাপের গাইবান্ধার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও নকলমুক্ত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তা নেয়া হয়েছে। তারা বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও মোবাইল ব্যবহার করে অসদুপায়ে পরীক্ষা দেয়ার সময় ৩৭ জনকে আটক করে এবং কেন্দ্র থেকেই ৩৬ জনকে বহিষ্কার করা হয়।’
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১৩ রংপুর বিভাগের অধিনায়ক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম জানান, অভিযান চালিয়ে গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে থেকে ৩২ জন পরীক্ষার্থী ও এই চক্রের হোতা মারুফ, মুন্না, সোহেল, নজরুল ও সোহাগসহ মোট ৩৭ জনকে আটক করা হয়। পরে তাদের কাছ থেকে ২২টি মাস্টার কার্ড, ১৯টি ব্লুটুথ ডিভাইস, ১৬টি মোবাইল, স্ট্যাম্প ও ব্যাংক চেক উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, ‘আটককৃত পরীক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস এবং মোবাইলের মাধ্যমে সুকৌশলে পরীক্ষা দিয়ে আসছিলেন। চক্রের এই পাঁচ হোতা বিভিন্ন পরীক্ষার্থীকে ১৪ থেকে ১৮ লাখ টাকায় চাকরি দেয়ার শর্তে অংশগ্রহণ করায়। এর মধ্যে এই চক্রের সোহেল নামে এক সদস্য ডিভাইস সংগ্রহ ও বিতরণ করতেন, নজরুল পরীক্ষার্থী সংগ্রহ করতেন এবং মারুফ ও মুন্না বেইরে থেকে প্রশ্নপত্র সমাধান করে পরীক্ষার্থীদের কাছে সরবরাহ করতেন।
‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদের জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে। পাশাপাশি আটককৃতদের নামে মামলা করে গাইবান্ধা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গাইবান্ধার সাত উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে প্রায় ৭০০টি শূন্য পদের বিপরীতে চাকরিপ্রার্থী ৩০ হাজার ৮৮ জন। এর মধ্যে উপস্থিত ২২ হাজার ৮১৩ জন পরীক্ষার্থী জেলার সদর, পলাশবাড়ি ও ফুলছড়িসহ তিন উপজেলার মোট ৪৭টি কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টার লিখিত (বহু নির্বাচনি) প্রথম ধাপের পরীক্ষায় অংশ নেন।
দিনাজপুরে আটক ১৮ পরীক্ষার্থী
দিনাজপুরের ৮টি পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ ১৮ জন পরীক্ষার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। আটকের পর তাদের বহিষ্কার করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এ নিয়োগ পরীক্ষার ৮টি কেন্দ্র থেকে তাদের আটক করা হয় বলে জানান দিনাজপুর কোতয়ালী থানার ওসি ফরিদ হোসেন।
আটককৃতরা হলেন- বিরল উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের মো. আজহারুল ইসলামের ছেলে ৩২ বছর বয়সী মো. কামরুজ্জামান, একই উপজেলার রানীপুর গ্রামের আবুল কাদেরের স্ত্রী ২৬ বছর বয়সী রাহেনা খাতুন; বীরগঞ্জ উপজেলার এলেঙ্গা গ্রামের প্রদীপ রায়ের স্ত্রী ৩৩ বছর বয়সী শেফালী রায়, একই উপজেলার পশ্চিম কালাপুকুর গ্রামের তাশদিকুল আলমের ছেলে ৩০ বছর বয়সী মো. মনিরুজ্জামান, কগিরপাড়ার সিরাজুল ইসলামের ছেলে ৩১ বছর বয়সী জামিল বাদশা ও বনগাঁও গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে ২৮ বছর বয়সী মো. রাকিব; দিনাজপুর সদর উপজেলার মুরাদপর গ্রামের বেলাল হোসেনের স্ত্রী ২৮ বছর বয়সী মুসলিমা খাতুন, একই উপজেলার দাইনুর গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে ২৮ বছর বয়সী শরিফুল আলম, ঘুঘুডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল সালামের মেয়ে ২৮ বছর বয়সী উম্মে সালমা ও খানপুর গ্রামের সুলতান মাহমুদের মেয়ে ২৯ বছর বয়সী নাসরিন জাহান; চিরিরবন্দর উপজেলার দক্ষিণ আলোকদিঘী গ্রামের ২৭ বছর বয়সী কবিতা রানী রায়, একই উপজেলার দক্ষিণ আলোকদিঘী গ্রামের যতিশ চন্দ্র রায়ের ছেলে ৩৪ বছর বয়সী সবজ চন্দ্র রায়; হাকিমপুর উপজেলার মাধবপাড়ার গোলাম বিকরিয়ার স্ত্রী ২৬ বছর বয়সী জাকিয়া ফেরদৌস; বিরামপুর উপজেলার দক্ষিণ দায়োরপুর গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে ৩২ বছর বয়সী মহিদুল ইসলাম; নবাবগঞ্জ উপজেলার মতিহারা গ্রামের আবু তালেব সরকারের মেয়ে ৩১ বছর বয়সী তানিয়া মোশতাবী; বোচাগঞ্জ উপজেলার শহিদপাড়ার আব্দুল গফুর মোল্যার ছেলে ২৯ বছর বয়সী সায়েম মোল্যা তন্ময়; ফরিদপুর জেলার নগরবান্দা থানার দফা গ্রামের ফারুক মাতব্বরের মেয়ে ২০ বছর বয়সী উর্মিলা আক্তার এবং ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার বকুয়া গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ছেলে ২৭ বছর বয়সী সুজন আলী।
ওসি ফরিদ হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের ৮টি পরীক্ষা কেন্দ্রে কর্মকর্তারা ১৮ জনকে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষা দেয়ার অভিযোগে আটক করেন। পরে তাদেরকে পুলিশে কাছে সোপর্দ করেন তারা।
‘আটককৃত ১৮ জনের মধ্যে ৯ জন নারী ও ৯ জন পুরুষ রয়েছেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’
লালমনিরহাটে বহিষ্কার ১৬, ১৩ জনের নামে মামলা
লালমনিরহাটের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় একই অভিযোগে ১৬ পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। এদের মধ্যে অপরাধ বিবেচনা করে ১৩ জনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয় যাদের নামে পরে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া বাকি তিনজনকে কেন্দ্র থেকে সরাসরি বহিষ্কার করা হয়।
লালমনিরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার স্বপন কুমার চৌধুরী বলেন, ‘জেলায় মোট ১৬ হাজার ৩২৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১২ হাজার ৪২৭ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে পরীক্ষা চলাকালে ইলেকট্রনিক ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে জালিয়াতি করার কারণে ১৬ জনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে অপরাধ বিবেচনায় ১৩ জনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
ওই ১৩ জন পরীক্ষার্থীকে আসামি করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস মামলা করেছে বলে জানান তিনি।
লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘আটককৃতদের মধ্যে ১০ জন নারী ও তিনজন পুরুষ রয়েছে। পরীক্ষা কেন্দ্রের হল সুপার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটরা তাদের আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। পরীক্ষা আয়োজক কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আটক আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।’
কুড়িগ্রামে বহিষ্কার ১৫, পুলিশে দেয়া হয়েছে ১২ জনকে
কুড়িগ্রামে নিয়োগ পরীক্ষা চলাকালে ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ ধরা পড়ে মোট ১৫ পরীক্ষার্থী বহিষ্কার হয়েছেন। এদের মধ্যে ১২ জনকে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নবেজ উদ্দিন সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার এ কুড়িগ্রামের ৪৫টি কেন্দ্রে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় মোট ২৬ হাজার ৮০৫ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়ার কথা থাকলেও পরীক্ষায় অংশ নেন ২০ হাজার ৭১ জন। অনুপস্থিত ছিলেন ৬ হাজার ৭৩৪ জন।
ঠাকুরগাঁওয়ে আটক ৭ পরীক্ষার্থী
ঠাকুরগাঁওয়ে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় কেন্দ্রে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যাবহার ও অবৈধভাবে ওএমআর শিট নিয়ে প্রবেশের অভিযোগে মোট সাত পরীক্ষার্থী আটক হয়েছেন। এদের মধ্যে চার যুবক ডিভাইস ব্যবহার করার অভিযোগে এবং তিন নারী পরীক্ষার্থী ওএমআর শিট নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের অভিযোগে আটক হন। ধরা পড়ার পর ওই সাতজনকে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার করে পুলিশে দেয়া হয়।
আটককৃত চার যুবক হলেন- রাণীশংকৈল উপজেলার বাজে বকশা গ্রামের পঞ্চানন চন্দ্রের ছেলে টংকনাথ বর্মণ; তিনি পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে আটক হন। একই উপজেলার আলশিয়া গ্রামের মো. হুমায়ুনের ছেলে সোহানুর রহমান; তিনি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে আটক হন। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আলোকসিপি গ্রামের হাসান আলীর ছেলে আনোয়ার খালিদ সরকারি কলেজ কেন্দ্র থেকে আটক হন। পীরগঞ্জ উপজেলার পাটুয়া পাড়া গ্রামের আজিম উদ্দীনের ছেলে ওমর ফারুক। তিনি কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে আটক হন।
তিন নারী পরীক্ষার্থী হলেন- পীরগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের সামিরুল ইসলামের স্ত্রী মোছা. আর্জিনা; তিনি আর কে স্টেট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে আটক হন। এ ছাড়া বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিণমারি গ্রামের আনিসুর রহমানের স্ত্রী হাসনা হেনা এবং সদর উপজেলার রুহিয়া মধুপুর গ্রামের আজহারুলের স্ত্রী রোড ডিগ্রি কলেজ থেকে আটক হন।
এসব তথ্য নিশ্চিৎ করে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি ফিরোজ কবির জানান, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় চারজন ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার ও অবৈধভাবে ওএমআর শিট নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ ও ব্যবহার করার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ আটককৃতদের পুলিশে সোপর্দ করে। এ বিষয়ে আইনগত পক্রিয়া চলমান রয়েছে।
ঝালকাঠিতে প্রক্সি দিতে এসে ধরা যুবক
অন্যের হয়ে সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিতে এসে ঝালকাঠিতে আটক হয়েছেন এক পরীক্ষার্থী। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০২৩-এর প্রথম পর্বের জেলা পর্যায়ের লিখিত পরীক্ষা চলাকালে অবৈধ ইলেকট্রনিক ডিভাইসহ তাকে আটক করা হয়।
আটককৃত ওই যুবকের নাম অভি চন্দ্র দাস। ২২ বছর বয়সী অভির বাড়ি ঝালকাঠি সদর উপজেলার কীর্তিপাশা ইউনিয়নে। সেখানকার গোবিন্দ ধবল গ্রামের অরুণ চন্দ্র দাসের ছেলে তিনি।
রাজাপুর উপজেলায় গালুয়া ইউনিয়নের কানুদাসকাঠি গ্রামের গণি হাওলাদারের ছেলে ইব্রাহীম নামের মুল পরীক্ষার্থীর পক্ষে প্রক্সি দিতে আসেন তিনি। শুক্রবার ঝালকাঠি সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ডিভাইসে যান্ত্রিক ত্রুটি কল্যাণে তিনি ধরা পড়েন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এক ঘণ্টার পরীক্ষার ৩০ মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পর অভির কানে বসানো ইলেট্রনিক ডিভাইসটিতে টিট টিট আওয়াজ দিতে থাকে। বিষয়টি হল পরিদর্শকের নজরে এলে তিনি অভিকে আসন থেকে উঠিয়ে কেন্দ্র পরিদর্শক মো. আব্দুল করিমের কাছে নিয়ে যান। সেখানে থাকা নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট হাসান মোহাম্মদ সোয়াইব এবং কেন্দ্রের সুপারইন্টেনডেন্ট অধ্যক্ষ জিন্নাত রেহানা ফেসদৌসী ওই পরীক্ষার্থীর কাগজপত্র যাচাই করে তার প্রক্সির বিষয়টি নিশ্চিত হন।
এ ঘটনায় প্রকৃত পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার এবং দুপরে অভিকে সদর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
সদর থানার ওসি নাসির উদ্দিন সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রীয়া চলছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জড়িতদের তথ্য বের করা হবে।’
নিউজবাংলার গাইবান্ধা, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও ও ঝালকাঠি প্রতিনিধির পাঠানো তথ্য নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:জাতিসংঘ জেনোসাইড স্মরণ দিবস উপলক্ষে একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতির দাবিতে দেশের বিভিন্ন পেশা ও স্তরের ১ হাজার জন যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন।
‘আমরা একাত্তর' সংগঠনের পক্ষ থেকে শুক্রবার বীর মুক্তিযোদ্ধা, লেখক, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বাক্ষরিত এ বিবৃতি দেয়া হয়।
বিবৃতিতে অনতিবিলম্বে বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে পাকিস্তান কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যা নিয়ে জাতিসংঘ স্বীকৃতির দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়। খবর বাসসের
এতে বলা হয়, প্রতি বছর ৯ ডিসেম্বর জাতিসংঘ বিশ্বব্যাপী সংঘটিত নৃশংস-ভয়াবহ-বীভৎস জেনোসাইডসমূহ স্মরণ করে কোটি কোটি নিহত-বিপন্ন ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। আমরা বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে জাতিসংঘের জেনোসাইড স্মরণ দিবসের সাথে সংহতি ও একাত্মতা ঘোষণা করছি। একই সঙ্গে আমরা এই তিক্ততম সত্যের কথা উচ্চারণ করছি যে, ১৯৭১ সনে বাংলাদেশে পাকিস্তানি শাসকবর্গ মানব ইতিহাসের অত্যন্ত বর্বর যে জেনোসাইড সংঘটিত করেছে, ত্রিশ লক্ষ লোক যে জেনোসাইডে নিহত হয়েছে, কোটি লোক শরণার্থী হয়েছে, নির্যাতিত-অবমানিত-দু:স্থ হয়েছে, অসংখ্য নারী যৌন-অত্যাচারিত হয়েছে। জাতিসংঘ এখনও এমন হিংস্রতম জেনোসাইডের স্বীকৃতি দেয়নি। যে কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জেনোসাইড এখনও চলছে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন ড. বিনায়ক সেন, ড.এম এম আকাশ, নাট্যজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ম হামিদ, প্রাবন্ধিক ও লেখক মফিদুল হক, স্থপতি মসিহ উদ্দিন শাকের, চলচ্চিত্র নির্মাতা তানভীর মোকাম্মেল, প্রামাণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা মানজারে হাসিন মুরাদ, নাট্যজন শংকর সাঁওজাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ হিলাল উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃণাল সরকার, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, অধ্যাপক সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন (প্রাক্তন উপাচার্য), শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. রফিক উল্লাহ খান, সাবেক সচিব বেগম আখতারী মমতাজ, অধ্যাপক শেখ জিন্নাত আলী, অধ্যাপক নাজিয়া চৌধুরী, অধ্যাপক আব্দুল গনি, উপাচার্য অধ্যাপক ইলিয়াস উদ্দিন বিশ্বাস, কবি শুভেন্দু ইমাম, কবি তুষার, সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন মনজু, দৈনিক সংবাদের বার্তা সম্পাদক কাজী রফিক, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মনজুরুল আহসান বুলবুল, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, আসিফ মুনীর, সাংবাদিক ও সেক্টরস কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবিব, বিভূরঞ্জন সরকার, সাংবাদিক প্রণব সাহা, ইসরাফিল শাহীন, প্রভাস আমিন, রাশেদ চৌধুরী, কাজী নাজমুল আলম তাপস, মুন্নী সাহা, প্রচ্ছদ শিল্পী ধ্রুব এষ, মানবাধিকার কর্মী অ্যারোমা দত্ত এমপি, শহীদ সন্তান জাহিদ রেজা নূর, শহীদ সন্তান জেনোসাইড গবেষক ড. তৌহিদ রেজা নূর, শহীদ সন্তান ও প্রকৌশলী প্রদীপ কুমার দত্ত, ডা. অঞ্জনা দত্ত, কর অ্যাডভোকেট জাহিদুল বারী, অধ্যাপক সুমিতা নাহা, ব্যারিস্টার আরশ আলী, অধ্যাপক দুলেন্দ্রনাথ ভৌমিক, অ্যাডভোকেট মায়া ভৌমিক, চিত্রকর জাহিদ মোস্তফা, মানিক দে, বিপুল শাহ, চিত্রশিল্পী অশোক কর্মকার, চিত্রশিল্পী কিরীটি রঞ্জন বিশ্বাস, রেজাউল হক লিটন, সঙ্গীতশিল্পী মঞ্জুয়ারা, চলচ্চিত্র শিল্পী চঞ্চল চৌধুরী, শাহনাজ খুশি, বৃন্দাবন দাস প্রমুখ।
সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়। ওই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ২৫১ জন।
এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানি হয়েছে এক হাজার ৬৫০ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে বৃহস্পতিবার পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয় ২৫১ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৬৪ এবং ঢাকার বাইরের ১৮৭ জন।
চলতি বছরের ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন লাখ ১৬ হাজার ৪১১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা এক লাখ আট হাজার ৮১৮ জন। ঢাকার বাইরে আরও দুই লাখ ৭ হাজার ৫৯৩ জন আক্রান্ত হন।
এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়েছেন তিন লাখ ১২ হাজার ৩৭৭ জন। এর মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা এক লাখ ৭ হাজার ২৫০ আর ঢাকার বাইরের দুই লাখ ৫ হাজার ১২৭ জন রয়েছেন।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ’ বলে জাতিসংঘকে জানিয়েছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে বিরোধী দল ও তাদের মিত্ররা বিক্ষোভের নামে সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি পোড়ানো এবং মানুষের জীবন পোড়ানো সহ্য করবেন না বলেও জানানো হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জাতিসংঘ মহাসচিবের কার্যালয়ের প্রধান আর্লে কোর্টনে রাট্রেকে পাঠানো এক চিঠিতে বলেন, আমরা আশা করি জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জাতিসংঘের বিশ্বাসযোগ্যতা ও সম্মান সমুন্নত রাখতে নির্দলীয়তা, সততা ও বস্তুনিষ্ঠতার সর্বোচ্চ মান বজায় রাখবেন। খবর ইউএনবির
মোমেন লিখেছেন, যদি তাদের প্রতিবেদনগুলো মিথ্যা ও বস্তুনিষ্ঠতা ব্যতীত হয় এবং যদি সত্যভিত্তিক না হয়, তাহলে তারা তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারাতে পারে যা জাতিসংঘ ব্যবস্থার জন্য একটি খারাপ লক্ষণ হবে।
চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন মহল থেকে আমরা যে অযৌক্তিক, অযাচিত ও স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক চাপের সম্মুখীন হচ্ছি, তার প্রেক্ষাপটে আমরা আশা করি, জাতিসংঘের সচিবালয়, এজেন্সি ও কান্ট্রি অফিসসহ জাতিসংঘের বিভিন্ন ব্যবস্থা বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় অবিচল থাকতে গঠনমূলক ও সহযোগিতামূলক ভূমিকা পালন করবে।
গত ১৯ নভেম্বর চিঠিটি লেখা হয় এবং ২০ নভেম্বর জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন তা পাঠায়।
চিঠিতে ড. মোমেন লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের একজন নির্ভীক কর্মী এবং তিনি ভোটাধিকার, খাদ্যের অধিকার এবং একটি উন্নত জীবনের অধিকার নিশ্চিত করতে অনেক কষ্ট করছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা তার ১৫ বছরের শাসনামলে উপনির্বাচন, জাতীয় নির্বাচন, আঞ্চলিক নির্বাচন, মেয়র নির্বাচনসহ হাজার হাজার নির্বাচন পরিচালনা করেছেন। এসব নির্বাচনে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া সবই অবাদ ও সুষ্ঠু হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ তার নাগরিকদের মানবাধিকার এবং মৌলিক স্বাধীনতার প্রচার ও সুরক্ষায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী এবং আশাবাদী যে জাতিসংঘ ব্যবস্থা জাতীয় পর্যায়ে সবার জন্য একটি শান্তিপূর্ণ, ন্যায়সঙ্গত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সমৃদ্ধ ভবিষ্যত নিশ্চিত করার বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় বিশ্বস্ত অংশীদার হিসাবে কাজ করে যাবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। ‘এটি বিশ্বের একমাত্র দেশ যারা গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য ৩০ লাখ জীবন উৎসর্গ করেছে।
মোমেন বলেন, তারা শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার পক্ষে একটি শক্তিশালী কণ্ঠস্বর হিসাবে তাদের অবস্থান বজায় রেখেছে।
চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একটি সক্রিয় ও সহায়ক সদস্য রাষ্ট্র। আমাদের জনগণের রাজনৈতিক অগ্রগতি ও আর্থ-সামাজিক মুক্তির লক্ষ্যে আমাদের জাতীয় যাত্রায় সহযোগিতা ও সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে উচ্চ প্রত্যাশা রয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য