× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
The OC first shot the shotgun then the SI
google_news print-icon

‘শটগান ঠেকিয়ে প্রথমে গুলি করেন ওসি, পরে এসআই’

শটগান-ঠেকিয়ে-প্রথমে-গুলি-করেন-ওসি-পরে-এসআই
সাইফুল ইসলাম সাইফু। ছবি: নিউজবাংলা
লিমনের মতোই কাছ থেকে গুলি করার পর পা কেটে ফেলতে হয়েছে চট্টগ্রামের এক যুবকের। লিমনের ঘটনায় তাও তদন্ত হয়েছিল। কিন্তু চট্টগ্রামের সেই ঘটনায় এক বছরে কোনো তদন্ত হয়নি, উল্টো এক পা হারানো অবস্থায় সেই তরুণকে কারাগারে কাটাতে হয়েছে ৯ মাস। সম্প্রতি তার মা পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এরপর নিউজবাংলাকে সাইফু জানিয়েছেন কীভাবে কী হলো। এর জবাবে পুলিশ বলছে, ‘বন্দুকযুদ্ধের’ সেই নিয়মিত বর্ণনার কথা। একদল দুর্বৃত্ত হামলা করেছিল। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে পা যায় এই যুবকের।

১১ বছর আগে এক তরুণের জীবনের মর্মান্তিক যে ঘটনা দেশকে আলোড়িত করেছিল, সেই বিষয়টি ফিরে এসেছে আবার।

২০১১ সালের ২৩ মার্চ র‌্যাবের গুলিতে ঝালকাঠির তরুণ লিমন হোসেনের পা হারানোর মতোই ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামে। সাইফুল ইসলাম সাইফ নামের এক যুবককে ধরে নিয়ে কাছ থেকে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এতে কেটে ফেলতে হয়েছে পা।

লিমনের পক্ষে সে সময় সোচ্চার কণ্ঠ তৈরি হয়েছিল, সাইফের পক্ষে তেমনটি দেখা যাচ্ছে না।

সে সময় র‌্যাবের বিরুদ্ধে তদন্তও হয়েছিল, শাস্তিও পেয়েছেন দোষীরা। কিন্তু পুলিশের এই ঘটনাটি তদন্তের কোনো উদ্যোগই নেয়া হয়নি। পরে ঘটনার সোয়া এক বছর পর ভুক্তভোগীর পরিবার মামলার আবেদন করেছে আদালতে। তারা বলছে, ভয়ে এতদিন মামলাও করা হয়নি।

সাইফুল ইসলাম সাইফ ছাত্রদল করতেন। তার বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা ছিল ধরে নেয়ার সময়। এখন আছে ২৪টি। তার বিরুদ্ধেও এলাকায় নানা অভিযোগ ছিল। কিন্তু সেগুলোর প্রমাণ এখনও হয়নি আদালতে। বিচার চলছে।

সাইফের অভিযোগ, তাকে ধরে নিয়ে পাঁচ লাখ টাকা না পেয়ে কাছ থেকে দুইবার গুলি করে পুলিশ। এতে কেটে ফেলতে হয় পা। এরপর তাকে জেলেও পোড়া হয়। ৯ মাস বন্দি থাকার পরও নানা হুমকি দেয়া হয়। বলা হয়, অন্য পা-ও এভাবে যাবে। এ কারণে এতদিন মামলাও করার সাহস পায়নি পরিবার।

তবে সম্প্রতি তার মা মামলা করেছেন। কিন্তু তার অভিযোগের বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কিছুই বলতে চাইছেন না। তার দাবি, এটা তদন্তাধীন বিষয়। তাই কথা বলার সুযোগ নেই। অন্য এক পুলিশ কর্মকর্তা দাবি করেন, সাইফকে ধরে নেয়ার পর একটি সশস্ত্র দল আক্রমণ করেছিল। তখন গুলিবিদ্ধ হন তিনি।

গুলিতে পা গেছে, সেটির তদন্ত হয়নি। উল্টো তার বিরুদ্ধে হয়েছে ছয়টি মামলা। এসব মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে নিত্য হয়রানি আর ভালো লাগে না সাইফের। বলছেন, ‘রাষ্ট্রদ্রোহী ট্যাগ লাগিয়ে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলুক আমাকে।’

কী ঘটেছিল সেদিন

নিউজবাংলাকে সাইফ জানান, ২০২১ সালের ১৬ জুন তাকে ধরে নেয়া হয়। এরপর ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা দিতে বলা হয়। টাকা দিতে না পারার পর করা হয় গুলি।

তাকে ধরে নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “বায়েজিদ থানার পাশে বাসা হওয়ার সুবাদে পুলিশের সোর্স আকাশের সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল। সে আমাকে রাতে ফোন দেয়, বলে ‘সাইফুল কোথায় তুই, মামলার বিষয়ে কথা আছে, দেখা কর আমার সঙ্গে।’

'মামলার বিষয়ে বলায় আমি তাড়াতাড়ি গেলাম। যাওয়ার পর ওসি, এসআই মেহের অসীম, এসআই সাইফুল, এসআই তানভীর, এসআই নুর নবীসহ তারা আমাকে ঘিরে ফেলছে। একপর্যায়ে আমার পেটে পিস্তল ঠেকায় দিছে আর মুখে মাস্ক পরায় দিছে। কারণ সেখানে সিসি ক্যামেরা ছিল।

'ওসি আমাকে বলল, সাইফুল, বাইরে প্রাইভেট কার আছে, চুপচাপ ওঠ। আমি কোনো কথা না বলে প্রাইভেট কারে উঠলাম। এরপর আমার চোখ-মুখ বেঁধে ফেলছে গামছা দিয়ে, সঙ্গে হ্যান্ডকাপ।'

সাইফ জানান, তাকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা ঘোড়ানো হয়। এর মধ্যে তিনি এক ফাঁকে ‘রওশন গার্ডেন’ নামের একটি রেস্টুরেন্ট দেখতে পান। সেটি চট্টগ্রাম শহরের অক্সিজেন মোড়ের আশপাশে।

ছাত্রদল নেতা জানান, সেই রেস্টুরেন্টের পার্কিং পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে নামানো হয়নি তাকে। গাড়ি থেকে নামায়নি। গাড়িতে ঘোরানোর সময় ওসি কামরুজ্জামান অজ্ঞাত কোনো একজনকে ফোন করে বলেন, ‘আমরা সাইফুলকে কট করছি, ওকে আজকে ফিনিশ করব। তোমরা ইউনিফর্ম পরে হোটেল জামানে যাও।’

সাইফ জানান, ফোনে ওসি সেই রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজ ডিলিট করার নির্দেশ দেন ‘ওপরের কথা বলে’।

সেটা কে হতে পারেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কাকে বলছে আমি জানি না। আমি শুনছি, কারে বসা অবস্থায়।’

তার ভাষ্য মতে, ফোনে ওসির আলাপন শেষে সাইফকে নিয়ে যাওয়া হয় লিংক রোডে। তিনি বলেন, ‘আমি দেখলাম যে আকাশ একটি থলে (ব্যাগ) নিয়ে আসছে। আমার ধারণা সেখানে আর্মস জাতীয় কিছু ছিল। কারণ একজন আরেকজনকে বলতেছে ৬ হাজার টাকা দাও ওরে, জিনিস নিয়ে আসছে।’

তিনি জানান, থলে নিয়ে আসার পরই তার কাছে টাকা চাওয়া হয়। তিনি বলেন, “ওটা আনার পর আমাকে অসীম (সোর্স) বলতেছে, ‘সাইফুল, টাকা ৫ লাখ দে'। আমি বললাম, '৫ লাখ টাকা দেয়ার হেডাম (সামর্থ্য) আমার নাই'।"

সাইফ জানান, অসীম তার এক বন্ধুর বড় ভাইয়ের বন্ধু, তাই তাকে তুই করে বলতেন।

তিনি বলেন, ‘টাকা যখন নাই, আমি দিতে পারব না বলছি। আর কিছু বলেনি আমাকে।’

‘শটগান ঠেকিয়ে প্রথমে গুলি করেন ওসি, পরে এসআই’
পুলিশের গুলিতে পা হারানোর অভিযোগে মামলা করার পর আদালতে চট্টগ্রামের যুবক সাইফুল ইসলাম সাইফু

একপর্যায়ে ওসি তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে হ্যান্ডকাপ খুলে গামছা দিয়ে হাত বাঁধেন। সে সময় একটা গামছা দিয়ে বাঁধা হয় মুখ, আরেকটা দিয়ে হাত। তারপর তাকে প্রধান সড়ক থেকে রাস্তার অপর পাশে নেয়া হয়।

এরপর তারা ‘ডাকাত, ডাকাত, ডাকাত’ বলে কয়েকটি গুলি করা হয়।

তখন রাস্তায় চলাচল করা সব গাড়ি ব্লক করে ফেলা হয়। সাইফকে কাঁচা রাস্তার মধ্যে উপুড় করে ফেলে রাখা হয়।

তিনি বলেন, ‘ওসি কামরুজ্জামান এসে শটগান দিয়ে আমার পায়ে শ্যুট করছে। গুলি করার এক মিনিট পর এসআই অসীম এসে আবার গুলি করছে।

‘এক্স-রে রিপোর্ট দেখলে বোঝা যাবে ওটা শটগানের গুলি। পিস্তল দিয়ে গুলি করলে একটা বুলেট ঢুকবে। শটগান দিয়ে সচরাচর গুলি করা হয় বিক্ষোভ মিছিলে বা কোনো ঝামেলা হলে।’

তিনি বলেন, ‘আমার পায়ে শটগান দিয়ে করছে যেন পা-টা রাখতে না পারি। এরপর আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। জ্ঞান ফিরে নিজেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে আবিষ্কার করি। পরবর্তী সময়ে সেখানে থেকে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে গেল। দেরি হওয়ার কারণে আমার পা কেটে ফেলতে হয়েছে।’

গুলিতে পা হারানোর পরও ছয় মামলা

২০২১ সালের ১৭ জুন সাইফকে অস্ত্রসহ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয় বলে দাবি করেছিল পুলিশ। সে সময় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে ১৮টি মামলা থাকার কথা জানায় বাহিনীটি।

এসব মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ঘটনার সময় পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা ছিল। তবে এর মধ্যে চাঁদাবাজি, মাদক, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন বা কোনো অস্ত্র মামলা ছিল না। এখনও এসব মামলা নাই, তবে অস্ত্র মামলা আছে।

‘২০২১ সালে গুলি করার পর পুলিশ মামলা দিছে। এটা ছাড়া আমার বিরুদ্ধে কোনো অস্ত্র মামলা নাই। তবে মারামারির মামলা আছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বা ঝগড়াঝাটিতে আমি একটা মারছি, আমাকে একটা মারছে এ রকম। যেহেতু রাজনীতি করি, অনেক মামলা রাজনৈতিক। এখন ২৪টা মামলা, এর ৬টা দিছে গুলি করার পর বিভিন্ন সময়।’

সাইফ বলেন, ‘গুলি করার পর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল থেকে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয় পঙ্গু হাসপাতালে। সেখানে পা কেটে ফেলার পর ১৬ দিন চিকিৎসা শেষে আমাকে দুটি মামলায় চালান করা হয়। একটি অস্ত্র মামলা, দেশীয় অস্ত্র এলজি, দুটি কার্তুজ দেয়, তিনটি খালি কার্তুজ। আরেকটি হলো পুলিশের ওপর হামলা।’

‘আর সইতে পারি না, আমাকে ক্রসফায়ারে দিন’

একটা পা না থাকা অবস্থায় চলাফেরায় কষ্টের বিষয়টি তুলে ধরে সাইফ বলেন, ‘ফ্যামিলির লোকজন আমাকে ধরে ধরে হাজিরা দিতে নিয়ে যায়। আবার গাড়িতে করে নিয়ে আসে। আমি যখন ওয়াশরুমে যাই, আমাকে একজনে ধরে নিয়ে যেতে হয়, ধরে বের করতে হয়। এই অবস্থায় আমি যদি জেল খানায় যাই, আমার কী হবে চিন্তা করেন?’

কারাগারে পরিবার নাই যে ধরে ধরে গোসল করাবে, ওয়াশরুমে নিয়ে যাবে, থাকা-খাওয়া, কাপড় ধুয়ে দেবে- বলেন তিনি।

ছাত্রদল নেতা বলেন, ‘আমাকে এভাবে মিথ্যা মামলা না দিয়ে হয়রানি না করে প্রশাসন ও সরকারের কাছে দাবি জানাই যে, যদি পারেন আমাকে সঠিক বিচার পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন, আর না হয় এভাবে মিথ্যা মামলা না দিয়ে, হয়রানি না করে জনসমক্ষে নিয়ে আমাকে ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলুক।

‘আমি রাষ্ট্রের বোঝা হয়ে থাকলে, রাষ্ট্রের শত্রু হয়ে থাকলে আমাকে জনসমক্ষে নিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহী ট্যাগ লাগিয়ে ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলেন, আমার কোনো আফসোস নাই। আমার পিতামাথা সম্মতি জানাবে, আমিও সম্মতি জানাব।’

মামলা করতে দেরি কেন

এক বছরেরও বেশি সময় আগের ঘটনা হলেও মামলা করতে সোয়া এক বছর লাগল কেন- এমন প্রশ্নে সাইফ বলেন, ‘অনেকে প্রশ্ন করতেছে আমি তখন মামলা করিনি কেন। আমাকে গুলি করার পর অস্ত্র পেয়েছে বলে অস্ত্র মামলা দিয়ে চালান করে দেয়। আমি ৯ মাস জেলে ছিলাম। এরপর দুই মাস বাইরে ছিলাম, এরপর আবার আমাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ পাঠিয়ে দিল জেলে। আমি সময়ের অভাবে করতে পারিনি।

‘আমি জেলখানা থেকে বের হওয়ার পর বাসায় যাইনি, বাইরে বাইরে থেকেছি। তখন বায়েজিদ থাানর পুলিশ এসআই রবিউল আমার বাসায় গিয়ে হুমকি দিয়ে আসছে যে, একটা পা ফেলে দিছি, যদি কোনো পদক্ষেপ নেও আরেকটি পাও ফেলে দিব। মানে মামলা করলে পা আরেকটাও ফেলে দিবে বলছে আরকি।’

কিছুই বলবেন না ওসি

সাইফের তোলা এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান কোনো কিছুর জবাব দিতে রাজি হননি। তিনি বলেন, “আমি আগেও বলেছি, যেহেতু এটি তদন্তাধীন বিষয়, তাই এটা নিয়ে আমি কোনো কথা বলব না। তবে ‘বার্মা সাইফুল’ লিখে গুগলে সার্চ করলে ২০১০ সালের পর অনেক কিছুই পাবেন।”

এই পুলিশ কর্মকর্তার কথামতো গুগলে সার্চ দেয়ার পর অনলাইন পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের একটি সংবাদ পাওয়া গেছে। এতে লেখা হয়, ‘পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী মো. সাইফুল ইসলাম প্রকাশ ওরফে বার্মা সাইফুলকে গ্রেপ্তার করেছে বায়েজিদ থানা পুলিশ।

‘বুধবার (১৭ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে বায়োজিদ লিংক রোডের এলাকা থেকে তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়।

‘শটগান ঠেকিয়ে প্রথমে গুলি করেন ওসি, পরে এসআই’
চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান। ছবি: নিউজবাংলা

‘নগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার (ডিবি- দক্ষিণ) শাহ আব্দুর রউফ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।’

“তিনি বলেন, ‘বুধবার রাতে সাইফুলকে লিংক রোড এলাকার এশিয়ান ওম্যান ইউনিভার্সিটির গেটের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি এলজি ও ৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়’।”

২৪ জুন দৈনিক যুগান্তরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় সরকারি জমি দখল করে বার্মা কলোনি গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে বসবাসকারী বেশির ভাগই মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। এ কারণে এটি বার্মা কলোনি হিসেবে পরিচিত। এখানে সাইফুলের গোটা পরিবার বাস করে। দুই ভাইকে নিয়ে সাইফুল এখানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। লোকজনকে তারা আতঙ্কের মধ্যে রেখেছেন। স্থানীয়রা তাদের ভয়ে কথাও বলতে পারে না। বার্মা কলোনির সরকারি জমি তারা বিভিন্ন সময় মানুষের কাছে বিক্রিও করেছেন। এ ছাড়া সেখানে বসবাসকারীদের মাসে মাসে চাঁদা দিতে হয়। ওই এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, সাইফুল ও তার অপর দুই ভাই সবুজ ও সামশু সরকারি জমি দখল করে বিক্রি করে। কেউ ভবন নির্মাণ করলে তাদের চাঁদা দিতে হয়। নয়তো তাদের কাছ থেকে চড়া দামে ইট-বালুসহ নির্মাণসামগ্রী নিতে হয়।’

আরেক পুলিশ কর্মকর্তা বললেন বন্দুকযুদ্ধের চিরাচরিত গল্প

সাইফ কীভাবে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন জানতে চাইলে তার মায়ের করা মামলার দ্বিতীয় আসামি বায়েজিদ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অসীম মেহের দাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর হয়তো তাকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে গিয়েছিল। তখন ওর লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করে। হামলায় অভিযানে থাকা অফিসারদের কয়েকজনও আহত হয়েছিলেন।’

কারা হামলা করেছিল, তাদের চিহ্নিত করা গেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কারা বলতে সাইফুলের লোকজন।’

এই লোকজনগুলোই বা কারা, তদন্ত বা সাইফুলকে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের নাম বেরিয়ে এসেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুজনকে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছিলাম। তারা মোটরসাইকেলযোগে এসেছিল। বাকিদের শনাক্ত করা হয়নি বিধায় বাকিদের নামে চার্জশিটও দেয়া হয়নি। তবে এই মুহূর্তে নামগুলো মনে পড়ছে না আমার।’

‘শটগান ঠেকিয়ে প্রথমে গুলি করেন ওসি, পরে এসআই’
বায়েজিদ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অসীম মেহের দাস

তার বিরুদ্ধে মামলায় করা অভিযোগের বিষয়ে এই ‍পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘সে সময় তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছিল; একটা অস্ত্র আইনে ও অন্যটি পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায়। দুই মামলায় আমি তদন্ত কর্মকর্তা ছিলাম। যেহেতু ওই দুই মামলার সবকিছু আমি যাচাই-বাছাই করেছি, ওই দৃষ্টিকোণ থেকে আক্রোশের বশবর্তী হয়ে আমার নাম জড়িয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা বলছে।

‘দিন-রাত যেভাবে সত্য, সে যা বলেছে তা এর বিপরীতভাবে মিথ্যা। তার ওই কথার একটা যৌক্তিকতা, কোনো প্রমাণ সে উপস্থাপন করতে পারবে না। এবং যেটা সত্য না, সেটা সে কীভাবে বলবে?’

অন্য এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সে (সাইফ) মামলা করেছে আদালতে, পুলিশ কমিশনার মহোদয়কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন, সেটা তদন্তে স্যাররা দেখবেন।’

‘পুলিশের জবাবদিহি চাই’

পুলিশের কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি অভাবে এসব ঘটনা ঘটছে বলে মনে করেন নাগরিক সংগঠন সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আখতার কবির চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এই যেসব ঘটনা ঘটছে, পুলিশ তো নিজেরা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সব জানে। তারা যদি অভিযুক্তদের রক্ষা না করে জবাবদিহির আওতায় আনত, তাহলে এসব ঘটনা ঘটত না।’

তিনি বলেন, ‘একজন মানুষের নামে অনেক মামলা দেখে অনেকের মনে হতে পারে তাকে তো গুলি করে মেরে ফেলা উচিত। কিন্তু এসব তো আদালতে প্রমাণের বিষয়। আর যারা নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, তারা নিরাপত্তাহীনতার কারণ হয়ে গেলে বাংলাদেশ চলবে কীভাবে? ওরা মূলত আর কোনো যুৎসই গল্প পাচ্ছে না বলেই দীর্ঘদিন এই অস্ত্র উদ্ধার ও গোলাগুলির গল্প দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে।’

মানবাধিকার কমিশনের ডেপুটি গভর্নর এবং বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি আমিনুল হক বাবু বলেন, ‘পুলিশ মানুষ যেহেতু তাদেরও ভুল হয়, তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আসে। অভিযোগের পর গুরুত্ব সহকারে এটাকে বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে যে অভিযোগ সত্য কি না। তিনি যেহেতু আদালতে মামলা করেছেন, আমরা ধরে নিতে পারি তিনি আদালতে ন্যায়বিচার পাবে।

‘যেহেতু এখনও তদন্তাধীন, আমরা সেভাবে মন্তব্য করতে চাই না। যেহেতু অভিযোগ এসেছে, এটা তদন্ত করতে হবে, তদন্তে সত্য-মিথ্যা যাচাই করে ঘটনার বিন্দুমাত্র সত্যতা পেলেও ব্যবস্থা নিতে হবে।’

আরও পড়ুন:
র‍্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ‘ইয়াবা কারবারি’ নিহত
র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ২
ট্রাকচালক হত্যা মামলার আসামি গোলাগুলিতে নিহত
র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ যুবক নিহত
র‍্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত রোহিঙ্গা যুবক

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
The trial of Abu Saeeds murder began in the tribunal tearful father

আবু সাঈদ হত্যার বিচার শুরু, ট্রাইবুনালে অশ্রুসিক্ত বাবা

আবু সাঈদ হত্যার বিচার শুরু, ট্রাইবুনালে অশ্রুসিক্ত বাবা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হলো।

বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ আজ এই মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

এরপর আবু সাঈদকে গুলি করার দুটি ভিডিও ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শন করা হয়। এ সময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন মনিটরে ছেলেকে গুলির দৃশ্যের ভিডিও দেখে বার বার চোখ মুছছিলেন।

এরপর প্রসিকিউসনের আবেদনে আগামীকাল এই মামলায় প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।

গত ৩০ জুলাই প্রসিকিউসনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এই মামলায় অভিযোগ গঠনের প্রার্থনা করেন।

অন্যদিকে, আসামী পক্ষে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চাওয়া হয়।

এরপর গত ৬ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল এই মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ২৭ আগস্ট দিন ধার্য করেন।

এই মামলার যে ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ আনা হয়, তাদের মধ্যে গ্রেফতার ৬ জন আজ ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন।

এরা হলেন-বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান রাসেল, রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক সাবেক কর্মচারী মো. আনোয়ার পারভেজ, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী ওরফে আকাশ।

আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গত ৩০ জুন ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ।

২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদের পুলিশ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে, সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদেই সোচ্চার হন বহু মানুষ, যাতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন।

ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে বলে, একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে।

জাজ্জ্বল্যমান এসব অপরাধের বিচার এখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Transferred to 20 judges simultaneously

একযোগে ২৩০ বিচারককে বদলি

একযোগে ২৩০ বিচারককে বদলি

ঢাকাসহ ১৯ জেলায় ৪১ জন জেলা জজসহ একযোগে জেলা আদালতের ২৩০ বিচারককে বদলি করা হয়েছে। বদলি করা এসব বিচারকের মধ্যে রয়েছেন ৫৩ জন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, ৪০ জন যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ এবং ৯৬ জন সিনিয়র সহকারী জজ ও সহকারী জজ পর্যায়ের কর্মকর্তা।

গতকাল সোমবার আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে পৃথক চারটি প্রজ্ঞাপনে তাদের বদলির আদেশ দেয়।

বদলি করা জেলা ও দায়রা জজদের আগামী ২৮ আগস্টের মধ্যে বর্তমান পদের দায়িত্বভার বুঝিয়ে দিয়ে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিতে বলা হয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The policeman accused of raping a woman policeman in the police jail

নারী পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগ অভিযুক্ত সেই পুলিশ সদস্য কারাগারে

নারী পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগ অভিযুক্ত সেই পুলিশ সদস্য কারাগারে

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার দ্বিতীয়তলার নারী ব্যারাকে ঢুকে নারী পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠা একই থানায় কর্মরত সাফিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ২১ আগস্ট একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি আমলে নেয় বাংলাদেশ পুলিশ। পুলিশ সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৫ দিন ধরে ঘুরে মামলা দায়ের করতে না পারা ভুক্তভোগীকে পুলিশ লাইন্স থেকে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় নিয়ে তাকে বাদী করে ধর্ষণ মামলা রুজু করানো হয়েছে। আর ওই মামলাতেই সাফিউরকে আটক দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে ভুক্তভোগীর শারীরিক পরীক্ষা করানোর জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোহাম্মদ আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের অভিযোগের যাচাই-বাছাই শেষে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল সাফিউরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভুক্তভোগী নারী পুলিশ সদস্য নিজে বাদী হয়ে শুক্রবার মামলাটি দায়ের করেন। ওই মামলাতেই গত শুক্রবার রাতে সাফিউরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার সকালে তাকে আদালতে চালান করা হয়। বিষয়টি আরও গভীরভাবে জানতে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল সাফিউরের বিরুদ্ধে আদালতের কাছে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। একইসঙ্গে ভুক্তভোগীর শারীরিক পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুরো বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এর আগে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার দ্বিতীয়তলার নারী ব্যারাকে ঢুকে এক নারী পুলিশ সদস্যকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে একই থানায় কর্মরত সাফিউর রহমান নামে আরেক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ওই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে গত ৬ মাস ধরে থানা ব্যারাকেই ওই নারী সদস্যকে ধর্ষণ করে ওই পুলিশ সদস্য। সবশেষ গত ১৫ আগস্ট রাত আড়াইটার দিকেও সাফিউর থানা ব্যারাকের ওই নারীর রুমে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে। এর প্রতিকার চেয়ে গত ৫ দিন ধরে ঘুরেও থানায় মামলা করতে না পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান ভুক্তভোগী নারী পুলিশ সদস্য। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Chief Justice of the proposal to establish a separate commercial court

পৃথক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব প্রধান বিচারপতির

পৃথক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব প্রধান বিচারপতির

দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও বিচার ব্যবস্থার চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি পৃথক বাণিজ্যিক আদালত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

গতকাল রোববার সিলেটের দ্য গ্র্যান্ড সিলেট হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টে বাণিজ্যিক আদালত শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রস্তাব দেন।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

প্রধান বিচারপতি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য কোনো পৃথক বিচারিক ফোরাম নেই। এখন কোটি কোটি টাকার বাণিজ্যিক বিরোধগুলো ছোটখাটো দেওয়ানি মামলার সঙ্গে একই সারিতে নিষ্পত্তি করতে হওয়ায় দ্রুত, কার্যকর বিচার প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। এটি আমাদের বিচারকদের প্রতি কোনো সমালোচনা নয়। তাদের নিষ্ঠা প্রশ্নাতীত। বরং এটি একটি কাঠামোগত অসংগতি। ফলে মামলার জট যেমন বাড়ছে, তেমনি ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও বিনিয়োগ পরিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, ২০২৫ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত শুধু অর্থঋণ আদালতে প্রায় ২৫ হাজারের বেশি মামলা অমীমাংসিত রয়ে গেছে।

পৃথক বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি কারও একক কোনো দাবি নয় বরং বাণিজ্যিক মামলাগুলো বিশেষায়িত আদালতে নির্দিষ্ট সময়সীমা ও কার্যকর রায়ের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হওয়ার জন্য বৃহৎ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী সবাই দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন সভা-সেমিনারে এই দাবি জানিয়ে আসছে।

প্রধান বিচারপতি বৈশ্বিক উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, রুয়ান্ডা, ভারত ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলো বাণিজ্যিক আদালত গড়ে তুলে একটি দক্ষ, স্বচ্ছ ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করেছে। তিনি বলেন, এসব দেশের অভিজ্ঞতাগুলো বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা বহন করে।

প্রধান বিচারপতি প্রস্তাবিত বাণিজ্যিক আদালত ব্যবস্থার সাতটি মূল স্তম্ভের কথা উল্লেখ করেন। সেগুলো হলো- স্পষ্ট ও একীভূত এখতিয়ার নির্ধারণ, আর্থিক সীমারেখা ও স্তরভিত্তিক কাঠামো, বাধ্যতামূলক কেস ম্যানেজমেন্ট ও কঠোর সময়সীমা, সমন্বিত মধ্যস্থতা ব্যবস্থা, প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার (যেমন, ই-ফাইলিং, ডিজিটাল ট্র্যাকিং, হাইব্রিড শুনানি), সবার জন্য ন্যায়সংগত প্রবেশাধিকার এবং জবাবদিহি ও কর্মক্ষমতা পর্যবেক্ষণ। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাণিজ্যিক আদালতের কার্যক্রম হবে পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যকর, জবাবদিহিমূলক এবং বাণিজ্যের পরিবর্তনশীল চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

সেমিনারে সূচনা বক্তব্য দেন সিলেটের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান। হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি জাফর আহমেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফান লিলার।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Sagar Rooney Murder Report Report is a record of 120 times

সাগর-রুনি হত্যা মামলা তদন্ত প্রতিবেদন ১২০ বার পেছানোর রেকর্ড

সাগর-রুনি হত্যা মামলা তদন্ত প্রতিবেদন ১২০ বার পেছানোর রেকর্ড

বহুল আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল আবার পেছানো হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমানের আদালত গতকাল সোমবার আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর নতুন দিন ধার্য করেন।

এ পর্যন্ত এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময়সীমা মোট ১২০ বার পিছিয়ে এসেছে।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি নির্মমভাবে খুন হন। ঘটনার সময় বাসায় তাদের সাড়ে চার বছরের ছেলে মাহির সরওয়ার মেঘ উপস্থিত ছিলেন। সাগর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙা এবং রুনি এটিএন বাংলায় কর্মরত ছিলেন।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। মামলার প্রধান আসামিরা হলেন — রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মাসুম মিন্টু, কামরুল ইসলাম ওরফে অরুন, আবু সাঈদ, সাগর-রুনির বাড়ির দুই নিরাপত্তা রক্ষী পলাশ রুদ্র পাল ও এনায়েত আহমেদ এবং তাদের ‘বন্ধু’ তানভীর রহমান খান।

এদের মধ্যে তানভীর ও পলাশ জামিনে রয়েছেন, বাকিরা বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছেন।

তদন্ত প্রতিবেদন বারবার পিছিয়ে আসায় এ মামলার দ্রুত বিচার ও ন্যায়বিচার প্রত্যাশায় সংশ্লিষ্ট পক্ষের মাঝে উদ্বেগ বিরাজ করছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Abu Saeed Murder Hearing the charges against the accused today

আবু সাঈদ হত্যা: ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ

আবু সাঈদ হত্যা: ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় পুলিশের সদস্যসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের শুনানি আজ।

সোমবার (২৮ জুলাই) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ এই শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ আজ এই মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি করবেন বলে জানানো হয়েছে।

এর আগে, শুক্রবার (২৫ জুলাই) কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ছয় আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

এই ছয় আসামি হলেন— সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরীফুল ইসলাম, রাফিউল, আনোয়ার পারভেজ এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী আশেক।

গত ১০ জুলাই পলাতক ২৬ আসামিকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন আদালত।

এর আগে, ৩০ জুন আবু সাঈদ হত্যায় পুলিশের সদস্যসহ মোট ৩০ জনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী আন্দোলনের সময় ১৬ জুলাই বিকালে পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন। আবু সাঈদ ছিলেন জুলাই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত প্রথম শিক্ষার্থী।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Former Chief Justice ABM Khairul Haque arrested

সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক গ্রেপ্তার

সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক গ্রেপ্তার

সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ধানমণ্ডির বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূঁইয়া তার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কোন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেননি এই পুলিশ কর্মকর্তা।

তিনি জানান, তথ্য এলে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে ২০১০ সালে খায়রুল হক শপথ নেন। পরের বছর ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় তিনি অবসর গ্রহণ করেন।

২০১৩ সালে তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা একই পদে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয় সাবেক এই বিচারপতিকে।

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে ১৩ আগস্ট তিনি আইন কমিশন থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছিল না।

মন্তব্য

p
উপরে