× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
The OC first shot the shotgun then the SI
google_news print-icon

‘শটগান ঠেকিয়ে প্রথমে গুলি করেন ওসি, পরে এসআই’

শটগান-ঠেকিয়ে-প্রথমে-গুলি-করেন-ওসি-পরে-এসআই
সাইফুল ইসলাম সাইফু। ছবি: নিউজবাংলা
লিমনের মতোই কাছ থেকে গুলি করার পর পা কেটে ফেলতে হয়েছে চট্টগ্রামের এক যুবকের। লিমনের ঘটনায় তাও তদন্ত হয়েছিল। কিন্তু চট্টগ্রামের সেই ঘটনায় এক বছরে কোনো তদন্ত হয়নি, উল্টো এক পা হারানো অবস্থায় সেই তরুণকে কারাগারে কাটাতে হয়েছে ৯ মাস। সম্প্রতি তার মা পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এরপর নিউজবাংলাকে সাইফু জানিয়েছেন কীভাবে কী হলো। এর জবাবে পুলিশ বলছে, ‘বন্দুকযুদ্ধের’ সেই নিয়মিত বর্ণনার কথা। একদল দুর্বৃত্ত হামলা করেছিল। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে পা যায় এই যুবকের।

১১ বছর আগে এক তরুণের জীবনের মর্মান্তিক যে ঘটনা দেশকে আলোড়িত করেছিল, সেই বিষয়টি ফিরে এসেছে আবার।

২০১১ সালের ২৩ মার্চ র‌্যাবের গুলিতে ঝালকাঠির তরুণ লিমন হোসেনের পা হারানোর মতোই ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামে। সাইফুল ইসলাম সাইফ নামের এক যুবককে ধরে নিয়ে কাছ থেকে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এতে কেটে ফেলতে হয়েছে পা।

লিমনের পক্ষে সে সময় সোচ্চার কণ্ঠ তৈরি হয়েছিল, সাইফের পক্ষে তেমনটি দেখা যাচ্ছে না।

সে সময় র‌্যাবের বিরুদ্ধে তদন্তও হয়েছিল, শাস্তিও পেয়েছেন দোষীরা। কিন্তু পুলিশের এই ঘটনাটি তদন্তের কোনো উদ্যোগই নেয়া হয়নি। পরে ঘটনার সোয়া এক বছর পর ভুক্তভোগীর পরিবার মামলার আবেদন করেছে আদালতে। তারা বলছে, ভয়ে এতদিন মামলাও করা হয়নি।

সাইফুল ইসলাম সাইফ ছাত্রদল করতেন। তার বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা ছিল ধরে নেয়ার সময়। এখন আছে ২৪টি। তার বিরুদ্ধেও এলাকায় নানা অভিযোগ ছিল। কিন্তু সেগুলোর প্রমাণ এখনও হয়নি আদালতে। বিচার চলছে।

সাইফের অভিযোগ, তাকে ধরে নিয়ে পাঁচ লাখ টাকা না পেয়ে কাছ থেকে দুইবার গুলি করে পুলিশ। এতে কেটে ফেলতে হয় পা। এরপর তাকে জেলেও পোড়া হয়। ৯ মাস বন্দি থাকার পরও নানা হুমকি দেয়া হয়। বলা হয়, অন্য পা-ও এভাবে যাবে। এ কারণে এতদিন মামলাও করার সাহস পায়নি পরিবার।

তবে সম্প্রতি তার মা মামলা করেছেন। কিন্তু তার অভিযোগের বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কিছুই বলতে চাইছেন না। তার দাবি, এটা তদন্তাধীন বিষয়। তাই কথা বলার সুযোগ নেই। অন্য এক পুলিশ কর্মকর্তা দাবি করেন, সাইফকে ধরে নেয়ার পর একটি সশস্ত্র দল আক্রমণ করেছিল। তখন গুলিবিদ্ধ হন তিনি।

গুলিতে পা গেছে, সেটির তদন্ত হয়নি। উল্টো তার বিরুদ্ধে হয়েছে ছয়টি মামলা। এসব মামলায় হাজিরা দিতে গিয়ে নিত্য হয়রানি আর ভালো লাগে না সাইফের। বলছেন, ‘রাষ্ট্রদ্রোহী ট্যাগ লাগিয়ে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলুক আমাকে।’

কী ঘটেছিল সেদিন

নিউজবাংলাকে সাইফ জানান, ২০২১ সালের ১৬ জুন তাকে ধরে নেয়া হয়। এরপর ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা দিতে বলা হয়। টাকা দিতে না পারার পর করা হয় গুলি।

তাকে ধরে নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “বায়েজিদ থানার পাশে বাসা হওয়ার সুবাদে পুলিশের সোর্স আকাশের সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল। সে আমাকে রাতে ফোন দেয়, বলে ‘সাইফুল কোথায় তুই, মামলার বিষয়ে কথা আছে, দেখা কর আমার সঙ্গে।’

'মামলার বিষয়ে বলায় আমি তাড়াতাড়ি গেলাম। যাওয়ার পর ওসি, এসআই মেহের অসীম, এসআই সাইফুল, এসআই তানভীর, এসআই নুর নবীসহ তারা আমাকে ঘিরে ফেলছে। একপর্যায়ে আমার পেটে পিস্তল ঠেকায় দিছে আর মুখে মাস্ক পরায় দিছে। কারণ সেখানে সিসি ক্যামেরা ছিল।

'ওসি আমাকে বলল, সাইফুল, বাইরে প্রাইভেট কার আছে, চুপচাপ ওঠ। আমি কোনো কথা না বলে প্রাইভেট কারে উঠলাম। এরপর আমার চোখ-মুখ বেঁধে ফেলছে গামছা দিয়ে, সঙ্গে হ্যান্ডকাপ।'

সাইফ জানান, তাকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা ঘোড়ানো হয়। এর মধ্যে তিনি এক ফাঁকে ‘রওশন গার্ডেন’ নামের একটি রেস্টুরেন্ট দেখতে পান। সেটি চট্টগ্রাম শহরের অক্সিজেন মোড়ের আশপাশে।

ছাত্রদল নেতা জানান, সেই রেস্টুরেন্টের পার্কিং পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে নামানো হয়নি তাকে। গাড়ি থেকে নামায়নি। গাড়িতে ঘোরানোর সময় ওসি কামরুজ্জামান অজ্ঞাত কোনো একজনকে ফোন করে বলেন, ‘আমরা সাইফুলকে কট করছি, ওকে আজকে ফিনিশ করব। তোমরা ইউনিফর্ম পরে হোটেল জামানে যাও।’

সাইফ জানান, ফোনে ওসি সেই রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজ ডিলিট করার নির্দেশ দেন ‘ওপরের কথা বলে’।

সেটা কে হতে পারেন- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কাকে বলছে আমি জানি না। আমি শুনছি, কারে বসা অবস্থায়।’

তার ভাষ্য মতে, ফোনে ওসির আলাপন শেষে সাইফকে নিয়ে যাওয়া হয় লিংক রোডে। তিনি বলেন, ‘আমি দেখলাম যে আকাশ একটি থলে (ব্যাগ) নিয়ে আসছে। আমার ধারণা সেখানে আর্মস জাতীয় কিছু ছিল। কারণ একজন আরেকজনকে বলতেছে ৬ হাজার টাকা দাও ওরে, জিনিস নিয়ে আসছে।’

তিনি জানান, থলে নিয়ে আসার পরই তার কাছে টাকা চাওয়া হয়। তিনি বলেন, “ওটা আনার পর আমাকে অসীম (সোর্স) বলতেছে, ‘সাইফুল, টাকা ৫ লাখ দে'। আমি বললাম, '৫ লাখ টাকা দেয়ার হেডাম (সামর্থ্য) আমার নাই'।"

সাইফ জানান, অসীম তার এক বন্ধুর বড় ভাইয়ের বন্ধু, তাই তাকে তুই করে বলতেন।

তিনি বলেন, ‘টাকা যখন নাই, আমি দিতে পারব না বলছি। আর কিছু বলেনি আমাকে।’

‘শটগান ঠেকিয়ে প্রথমে গুলি করেন ওসি, পরে এসআই’
পুলিশের গুলিতে পা হারানোর অভিযোগে মামলা করার পর আদালতে চট্টগ্রামের যুবক সাইফুল ইসলাম সাইফু

একপর্যায়ে ওসি তাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে হ্যান্ডকাপ খুলে গামছা দিয়ে হাত বাঁধেন। সে সময় একটা গামছা দিয়ে বাঁধা হয় মুখ, আরেকটা দিয়ে হাত। তারপর তাকে প্রধান সড়ক থেকে রাস্তার অপর পাশে নেয়া হয়।

এরপর তারা ‘ডাকাত, ডাকাত, ডাকাত’ বলে কয়েকটি গুলি করা হয়।

তখন রাস্তায় চলাচল করা সব গাড়ি ব্লক করে ফেলা হয়। সাইফকে কাঁচা রাস্তার মধ্যে উপুড় করে ফেলে রাখা হয়।

তিনি বলেন, ‘ওসি কামরুজ্জামান এসে শটগান দিয়ে আমার পায়ে শ্যুট করছে। গুলি করার এক মিনিট পর এসআই অসীম এসে আবার গুলি করছে।

‘এক্স-রে রিপোর্ট দেখলে বোঝা যাবে ওটা শটগানের গুলি। পিস্তল দিয়ে গুলি করলে একটা বুলেট ঢুকবে। শটগান দিয়ে সচরাচর গুলি করা হয় বিক্ষোভ মিছিলে বা কোনো ঝামেলা হলে।’

তিনি বলেন, ‘আমার পায়ে শটগান দিয়ে করছে যেন পা-টা রাখতে না পারি। এরপর আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। জ্ঞান ফিরে নিজেকে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে আবিষ্কার করি। পরবর্তী সময়ে সেখানে থেকে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে গেল। দেরি হওয়ার কারণে আমার পা কেটে ফেলতে হয়েছে।’

গুলিতে পা হারানোর পরও ছয় মামলা

২০২১ সালের ১৭ জুন সাইফকে অস্ত্রসহ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয় বলে দাবি করেছিল পুলিশ। সে সময় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে ১৮টি মামলা থাকার কথা জানায় বাহিনীটি।

এসব মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ঘটনার সময় পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা ছিল। তবে এর মধ্যে চাঁদাবাজি, মাদক, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন বা কোনো অস্ত্র মামলা ছিল না। এখনও এসব মামলা নাই, তবে অস্ত্র মামলা আছে।

‘২০২১ সালে গুলি করার পর পুলিশ মামলা দিছে। এটা ছাড়া আমার বিরুদ্ধে কোনো অস্ত্র মামলা নাই। তবে মারামারির মামলা আছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বা ঝগড়াঝাটিতে আমি একটা মারছি, আমাকে একটা মারছে এ রকম। যেহেতু রাজনীতি করি, অনেক মামলা রাজনৈতিক। এখন ২৪টা মামলা, এর ৬টা দিছে গুলি করার পর বিভিন্ন সময়।’

সাইফ বলেন, ‘গুলি করার পর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল থেকে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয় পঙ্গু হাসপাতালে। সেখানে পা কেটে ফেলার পর ১৬ দিন চিকিৎসা শেষে আমাকে দুটি মামলায় চালান করা হয়। একটি অস্ত্র মামলা, দেশীয় অস্ত্র এলজি, দুটি কার্তুজ দেয়, তিনটি খালি কার্তুজ। আরেকটি হলো পুলিশের ওপর হামলা।’

‘আর সইতে পারি না, আমাকে ক্রসফায়ারে দিন’

একটা পা না থাকা অবস্থায় চলাফেরায় কষ্টের বিষয়টি তুলে ধরে সাইফ বলেন, ‘ফ্যামিলির লোকজন আমাকে ধরে ধরে হাজিরা দিতে নিয়ে যায়। আবার গাড়িতে করে নিয়ে আসে। আমি যখন ওয়াশরুমে যাই, আমাকে একজনে ধরে নিয়ে যেতে হয়, ধরে বের করতে হয়। এই অবস্থায় আমি যদি জেল খানায় যাই, আমার কী হবে চিন্তা করেন?’

কারাগারে পরিবার নাই যে ধরে ধরে গোসল করাবে, ওয়াশরুমে নিয়ে যাবে, থাকা-খাওয়া, কাপড় ধুয়ে দেবে- বলেন তিনি।

ছাত্রদল নেতা বলেন, ‘আমাকে এভাবে মিথ্যা মামলা না দিয়ে হয়রানি না করে প্রশাসন ও সরকারের কাছে দাবি জানাই যে, যদি পারেন আমাকে সঠিক বিচার পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন, আর না হয় এভাবে মিথ্যা মামলা না দিয়ে, হয়রানি না করে জনসমক্ষে নিয়ে আমাকে ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলুক।

‘আমি রাষ্ট্রের বোঝা হয়ে থাকলে, রাষ্ট্রের শত্রু হয়ে থাকলে আমাকে জনসমক্ষে নিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহী ট্যাগ লাগিয়ে ক্রসফায়ার দিয়ে মেরে ফেলেন, আমার কোনো আফসোস নাই। আমার পিতামাথা সম্মতি জানাবে, আমিও সম্মতি জানাব।’

মামলা করতে দেরি কেন

এক বছরেরও বেশি সময় আগের ঘটনা হলেও মামলা করতে সোয়া এক বছর লাগল কেন- এমন প্রশ্নে সাইফ বলেন, ‘অনেকে প্রশ্ন করতেছে আমি তখন মামলা করিনি কেন। আমাকে গুলি করার পর অস্ত্র পেয়েছে বলে অস্ত্র মামলা দিয়ে চালান করে দেয়। আমি ৯ মাস জেলে ছিলাম। এরপর দুই মাস বাইরে ছিলাম, এরপর আবার আমাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ পাঠিয়ে দিল জেলে। আমি সময়ের অভাবে করতে পারিনি।

‘আমি জেলখানা থেকে বের হওয়ার পর বাসায় যাইনি, বাইরে বাইরে থেকেছি। তখন বায়েজিদ থাানর পুলিশ এসআই রবিউল আমার বাসায় গিয়ে হুমকি দিয়ে আসছে যে, একটা পা ফেলে দিছি, যদি কোনো পদক্ষেপ নেও আরেকটি পাও ফেলে দিব। মানে মামলা করলে পা আরেকটাও ফেলে দিবে বলছে আরকি।’

কিছুই বলবেন না ওসি

সাইফের তোলা এই অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান কোনো কিছুর জবাব দিতে রাজি হননি। তিনি বলেন, “আমি আগেও বলেছি, যেহেতু এটি তদন্তাধীন বিষয়, তাই এটা নিয়ে আমি কোনো কথা বলব না। তবে ‘বার্মা সাইফুল’ লিখে গুগলে সার্চ করলে ২০১০ সালের পর অনেক কিছুই পাবেন।”

এই পুলিশ কর্মকর্তার কথামতো গুগলে সার্চ দেয়ার পর অনলাইন পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের একটি সংবাদ পাওয়া গেছে। এতে লেখা হয়, ‘পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী মো. সাইফুল ইসলাম প্রকাশ ওরফে বার্মা সাইফুলকে গ্রেপ্তার করেছে বায়েজিদ থানা পুলিশ।

‘বুধবার (১৭ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে বায়োজিদ লিংক রোডের এলাকা থেকে তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়।

‘শটগান ঠেকিয়ে প্রথমে গুলি করেন ওসি, পরে এসআই’
চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান। ছবি: নিউজবাংলা

‘নগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার (ডিবি- দক্ষিণ) শাহ আব্দুর রউফ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।’

“তিনি বলেন, ‘বুধবার রাতে সাইফুলকে লিংক রোড এলাকার এশিয়ান ওম্যান ইউনিভার্সিটির গেটের সামনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি এলজি ও ৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়’।”

২৪ জুন দৈনিক যুগান্তরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় সরকারি জমি দখল করে বার্মা কলোনি গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে বসবাসকারী বেশির ভাগই মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। এ কারণে এটি বার্মা কলোনি হিসেবে পরিচিত। এখানে সাইফুলের গোটা পরিবার বাস করে। দুই ভাইকে নিয়ে সাইফুল এখানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। লোকজনকে তারা আতঙ্কের মধ্যে রেখেছেন। স্থানীয়রা তাদের ভয়ে কথাও বলতে পারে না। বার্মা কলোনির সরকারি জমি তারা বিভিন্ন সময় মানুষের কাছে বিক্রিও করেছেন। এ ছাড়া সেখানে বসবাসকারীদের মাসে মাসে চাঁদা দিতে হয়। ওই এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, সাইফুল ও তার অপর দুই ভাই সবুজ ও সামশু সরকারি জমি দখল করে বিক্রি করে। কেউ ভবন নির্মাণ করলে তাদের চাঁদা দিতে হয়। নয়তো তাদের কাছ থেকে চড়া দামে ইট-বালুসহ নির্মাণসামগ্রী নিতে হয়।’

আরেক পুলিশ কর্মকর্তা বললেন বন্দুকযুদ্ধের চিরাচরিত গল্প

সাইফ কীভাবে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন জানতে চাইলে তার মায়ের করা মামলার দ্বিতীয় আসামি বায়েজিদ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অসীম মেহের দাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গ্রেপ্তারের পর হয়তো তাকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে গিয়েছিল। তখন ওর লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করে। হামলায় অভিযানে থাকা অফিসারদের কয়েকজনও আহত হয়েছিলেন।’

কারা হামলা করেছিল, তাদের চিহ্নিত করা গেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কারা বলতে সাইফুলের লোকজন।’

এই লোকজনগুলোই বা কারা, তদন্ত বা সাইফুলকে জিজ্ঞাসাবাদে তাদের নাম বেরিয়ে এসেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দুজনকে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছিলাম। তারা মোটরসাইকেলযোগে এসেছিল। বাকিদের শনাক্ত করা হয়নি বিধায় বাকিদের নামে চার্জশিটও দেয়া হয়নি। তবে এই মুহূর্তে নামগুলো মনে পড়ছে না আমার।’

‘শটগান ঠেকিয়ে প্রথমে গুলি করেন ওসি, পরে এসআই’
বায়েজিদ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অসীম মেহের দাস

তার বিরুদ্ধে মামলায় করা অভিযোগের বিষয়ে এই ‍পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘সে সময় তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছিল; একটা অস্ত্র আইনে ও অন্যটি পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায়। দুই মামলায় আমি তদন্ত কর্মকর্তা ছিলাম। যেহেতু ওই দুই মামলার সবকিছু আমি যাচাই-বাছাই করেছি, ওই দৃষ্টিকোণ থেকে আক্রোশের বশবর্তী হয়ে আমার নাম জড়িয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা বলছে।

‘দিন-রাত যেভাবে সত্য, সে যা বলেছে তা এর বিপরীতভাবে মিথ্যা। তার ওই কথার একটা যৌক্তিকতা, কোনো প্রমাণ সে উপস্থাপন করতে পারবে না। এবং যেটা সত্য না, সেটা সে কীভাবে বলবে?’

অন্য এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সে (সাইফ) মামলা করেছে আদালতে, পুলিশ কমিশনার মহোদয়কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন, সেটা তদন্তে স্যাররা দেখবেন।’

‘পুলিশের জবাবদিহি চাই’

পুলিশের কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি অভাবে এসব ঘটনা ঘটছে বলে মনে করেন নাগরিক সংগঠন সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আখতার কবির চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এই যেসব ঘটনা ঘটছে, পুলিশ তো নিজেরা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সব জানে। তারা যদি অভিযুক্তদের রক্ষা না করে জবাবদিহির আওতায় আনত, তাহলে এসব ঘটনা ঘটত না।’

তিনি বলেন, ‘একজন মানুষের নামে অনেক মামলা দেখে অনেকের মনে হতে পারে তাকে তো গুলি করে মেরে ফেলা উচিত। কিন্তু এসব তো আদালতে প্রমাণের বিষয়। আর যারা নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, তারা নিরাপত্তাহীনতার কারণ হয়ে গেলে বাংলাদেশ চলবে কীভাবে? ওরা মূলত আর কোনো যুৎসই গল্প পাচ্ছে না বলেই দীর্ঘদিন এই অস্ত্র উদ্ধার ও গোলাগুলির গল্প দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে।’

মানবাধিকার কমিশনের ডেপুটি গভর্নর এবং বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি আমিনুল হক বাবু বলেন, ‘পুলিশ মানুষ যেহেতু তাদেরও ভুল হয়, তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আসে। অভিযোগের পর গুরুত্ব সহকারে এটাকে বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে যে অভিযোগ সত্য কি না। তিনি যেহেতু আদালতে মামলা করেছেন, আমরা ধরে নিতে পারি তিনি আদালতে ন্যায়বিচার পাবে।

‘যেহেতু এখনও তদন্তাধীন, আমরা সেভাবে মন্তব্য করতে চাই না। যেহেতু অভিযোগ এসেছে, এটা তদন্ত করতে হবে, তদন্তে সত্য-মিথ্যা যাচাই করে ঘটনার বিন্দুমাত্র সত্যতা পেলেও ব্যবস্থা নিতে হবে।’

আরও পড়ুন:
র‍্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ‘ইয়াবা কারবারি’ নিহত
র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ২
ট্রাকচালক হত্যা মামলার আসামি গোলাগুলিতে নিহত
র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ যুবক নিহত
র‍্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত রোহিঙ্গা যুবক

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Corruption at Nuclear Power Center Palaya Limited is banned from departure from 5 people

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুর্নীতি : প্রচ্ছায়া লিমিটেডের ৮ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুর্নীতি : প্রচ্ছায়া লিমিটেডের ৮ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রচ্ছায়া লিমিটেডের আট পরিচালকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।

দেশ ত্যাগে যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে তারা হচ্ছেন: প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক বুশরা সিদ্দিক, শেহতাজ মুন্নাসী খান, শহিদ উদ্দিন খান, শাহিন সিদ্দিক, শফিক আহমেদ শফিক, পারিজা পাইনাজ খান, নওরিন তাসমিয়া সিদ্দিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারজানা আনজুম।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এই আদেশ দেন।

আবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা ও তাঁর ছোট বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকী ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের নামে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ সংক্রান্ত অভিযোগ অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সাত সদস্য বিশিষ্ট অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।

প্রচ্ছায়া লিমিটেড নামীয় প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারহোল্ডারগণ যাতে সপরিবারে গোপনে দেশ ত্যাগ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি দেশত্যাগ করে বিদেশে পালিয়ে গেলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র প্রাপ্তিতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে। তাছাড়া সার্বিক অনুসন্ধানকাজে বিঘ্ন সৃষ্টিসহ সমূহ ক্ষতির কারণ রয়েছে। এজন্য অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ যাত্রা রোধে আদালতের আদেশ দেয়া একান্ত প্রয়োজন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

মন্তব্য

তন্ময়সহ শেখ পরিবারের চারজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

তন্ময়সহ শেখ পরিবারের চারজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা শেখ তন্ময়। ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়, খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সালাউদ্দিন, তার ভাই শেখ সোহেল ও শেখ জালাল উদ্দিন রুবেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিন দুদকের পক্ষে সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, বিগত সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অকল্পনীয় অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট এই ব্যক্তিরা তাদের নামে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি হস্তান্তর করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন মর্মে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়।

তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে তদন্ত কার্যক্রম দীর্ঘায়িত বা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অভিযোগটি সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া একান্ত প্রয়োজন।

শুনানি শেষে আদালত তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Former DB chief Aarons flat and plot seizure order

সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের ফ্ল্যাট ও প্লট জব্দের আদেশ

সাবেক ডিবি প্রধান হারুনের ফ্ল্যাট ও প্লট জব্দের আদেশ

সাবেক ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নামে রাজধানীর উত্তরায় থাকা একটি ফ্ল্যাট ও মোট ১৮ কাঠার তিনটি প্লট জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব দুদকের আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।

দুদকের আবেদন সূত্রে জানা যায়, হারুনের নামে থাকা পৃথক তিনটি প্লট রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত। এছাড়াও জব্দের আদেশ দেয়া ১৫৭০ বর্গফুটের ফ্ল্যাটটিও উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত।

এদিন হারুনের এসব সম্পদ জব্দের আবেদন করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন।

আবেদনে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে সাবেক ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে শত শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে।

অনুসন্ধান চলাকালে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, তিনি এসব সম্পদ বিক্রয় বা হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন। এজন্য সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে হারুনের এসব সম্পদ জব্দের আদেশ দেয়া প্রয়োজন।

এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি হারুন অর রশিদের ১০০ বিঘা জমি, পাঁচটি ভবন ও দুটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে তার নামে বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি হিসাবে থাকা ১ কোটি ২৬ লাখ ৯০ হাজার ৪৬৮ টাকা অবরুদ্ধের আদেশ দেয়া হয়।

পাশাপাশি এদিনই তার ভাই এবিএম শাহরিয়ারের ৩০ বিঘা জমি জব্দ, ১১টি ব্যাংক হিসাব এবং তিনটি কোম্পানির শেয়ার অবরুদ্ধের আদেশ দেন ঢাকার আদালত।

মন্তব্য

পারভেজ হত্যার এজহারনামীয় আরও ২ আসামি গ্রেপ্তার

এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার ৬
পারভেজ হত্যার এজহারনামীয় আরও ২ আসামি গ্রেপ্তার

রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলার এজহারনামীয় আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বুধবার তাদের গাইবান্ধা ও চট্টগ্রাম থেকে পৃথক অভিযানে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব ও পুলিশ।

এর মধ্যে এজাহারনামীয় ১ নম্বর আসামি মো. মেহেরাজ ইসলামকে (২০) গাইবান্ধা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১৩ এবং ৩ নম্বর আসামি মাহাথির হাসানকে (২০) চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে বনানী থানা পুলিশ।

বিকেলে র‌্যাব সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মেহরাজ ইসলামকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এছাড়া বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল সারওয়ার মাহাথির হাসানের গ্রেপ্তারের বিষয়িটি দৈনিক বাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।

র‌্যাব-১৩ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) বিপ্লব কুমার গোস্বামী জানান, তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যে জনা যায়, পাভেজ হত্যা মামলার এজহারনামীয় ১ নম্বর আসামি মেহেরাজ ইসলাম গাইবান্ধায় অবস্থান করছে। পরে গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে গাইবান্ধা সদরের ভবানীপুর গ্রামে অভিযান চলানো হয়। অভিযানে এরশাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে মেহরাজ ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এদিকে বনানী থানার ওসি মো. রাসেল সারওয়ার দৈনিক বাংলাকে বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যে পারভেজ হত্যা মামলার ৩ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি মাহাথির হাসানের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে গতকাল সকালে চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে বনানী থানায় আনা হয়েছে।

এর আগে গত রোববার রাতে পারভেজ হত্যা মামলায় তিন আসামিকে রাজধানীর মহাখালী ও আশপাশের এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হলেন- আল কামাল শেখ ওরফে কামাল (১৯), আলভী হোসেন জুনায়েদ (১৯) এবং আল আমিন সানি (১৯)। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া গত সোমবার রাতে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার মনাইরকান্দি গ্রাম থেকে হৃদয় মিয়াজি (২৩) নামে মামলার এজহারনামীয় আরেক আসামিকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব ১ ও র‌্যাব-১১ ব্যাটালিয়নের যৌথ দল। পরে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তাকে বনানী থানায় হস্তান্তর করা হয়। সব মিলিয়ে পারভেজ হত্যা মামলায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে একটি দোকানে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রী সিঙ্গারা খাচ্ছিলেন। একই সময় পারভেজ তার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলার সময় হাসছিলেন। ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রীর অভিযোগ পারভেজ তাদের দেখে হাসছিলেন। তাদের মধ্যে একজন প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী পিয়াসের বান্ধবী। পরে বান্ধবীরা মুঠোফোনে খবর দিলে পিয়াস ও তার দুই বন্ধু মেহরাজ ও মাহথির এসে পারভেজের সঙ্গে তর্ক-বিতর্কে জড়ান। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।

একপর্যায়ে দুই পক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টি মীমাংসার করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার পর পারভেজকে একদল যুবক ছুরিকাঘাত করে। তার বুকে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরদিন রোববার তার ভাই হুমায়ুন কবির প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বহিরাগতসহ আট জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত পরিচয় ২৫-৩০ জনের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Arrested across the country in a special police operation

পুলিশের বিশেষ অভিযানে সারাদেশে গ্রেপ্তার ১৬১০

পুলিশের বিশেষ অভিযানে সারাদেশে গ্রেপ্তার ১৬১০

রাজধানীসহ সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ৬১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত ৯০৬ জন আসামি এবং অন্যান্য ঘটনায় ৭০৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) ইনামুল হক সাগর এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, এসব অভিযানে বিভিন্ন ধরণের অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- ১টি দেশীয় পাইপগান, ১টি একনালা বন্দুক, ১ রাউন্ড কার্তুজের খোসা ও ২ রাউন্ড অকেজো কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে গত সোমবার ২৪ ঘন্টায় সারাদেশে বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল ১ হাজার ৬৩১ জনকে। তার মধ্যে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত ১ হাজার ১৩ জন আসামি এবং অন্যান্য ঘটনায় ৬১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার আগে গত রোববার ২৪ ঘণ্টায় বিশেষ অভিযানে ১ হাজার ৫৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Death Reference and Appeal Hearing Major Sinha Kill Tomorrow

মেজর সিনহা হত্যার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি আগামীকাল

মেজর সিনহা হত্যার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি আগামীকাল

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি আগামীকাল।

সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেখা যায় মামলাটি বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চে বিষয়টি আগামীকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে মূলতবি/নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে প্রধান বিচারপতি আলোচিত এই মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য এই হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠান।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এই ঘটনায় করা মামলার বিচার শেষে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত দুজনকে মৃত্যুদণ্ড, ছয়জনকে যাবজ্জীবন ও সাতজনকে খালাস দিয়ে রায় দিয়েছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন পরিদর্শক বরখাস্ত লিয়াকত আলী ও টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত, সাগর দেব, রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানায় পুলিশের করা মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।

বিচারিক আদালতের রায়ের পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের দণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। অন্যদিকে, দণ্ডিত আসামিরা আপিল ও জেল আপিল করেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The news of the burning of the Sagar Rooney murder case is not correct

সাগর-রুনি হত্যা মামলার নথি পুড়ে যাওয়ার খবর সঠিক নয়

সাগর-রুনি হত্যা মামলার নথি পুড়ে যাওয়ার খবর সঠিক নয়

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ডিবিতে থাকা নথি আগুনে পড়ে গেছে বলে দাবি করা হয়েছে, সঠিক নয়।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগে নতুন উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এমন তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচারিত সাগর-রুনি হত্যা মামলার নথিপত্র ডিবি হেফাজতে পুড়ে যাবার তথ্যটি সঠিক নয়।’

‘সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্তের সময় আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে। এ নিয়ে কেউ কেউ ডিবির নথি পুড়ে যাওয়ার নিউজ করছেন, যা সঠিক না,’ যোগ করেন তিনি।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আদালতে আগুনে এসব নথি পুড়ে যাওয়ার কথা বলা হয়নি। এডিশনাল অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদ রউফ বলেছেন, ডিবির অধিকাংশ অফিসার বদলি হওয়ায় পুরনো নথি খুঁজে পাওয়া সময়সাপেক্ষ।’

‘এ জন্য রাষ্ট্রপক্ষ নয় মাস সময় চাইলে বাদীপক্ষ তিন মাস সময়ের কথা বলেন। পরবর্তীতে আদালত ছয়মাস সময় দেন,’ যোগ করেন তিনি।

এরআগে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হয়েছে, সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার ডিবিতে থাকা নথি আগুনে পুড়ে গেছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আরসাদুর রউফ বলেন, ‘আমি এমন কোনো কথা কখনোই বলিনি। সাগর-রুনি হত্যা মামলার নথি পোড়েনি। আমি বলেছি, এটা পুরনো মামলা।’

মন্তব্য

p
উপরে